#আরোও_একবার_বসন্ত,০৮,০৯
#৮ম_পর্ব
আরশাদ দুই ডিগ্রী উপরে। সে মোটামোটি সময় দিয়ে দিয়েছে। আজ বিকেলেই মামলা ডিসমিশ করে আসামী খালাস দিতে হবে। চিন্তায় মগ্ন ছিলেন রাফিজা বেগম তখন আরশাদ এসে তার সামনে ঝড়ের গতিতে এসে দাঁড়ায়। বাঁজখাই কন্ঠে বলে উঠে সে,
– কি চিন্তা করলে?
আরশাদের এমন ধারা কথা শুনেই চমকে উঠলেন রাফিজা বেগম। আরশাদের কথা শুনে মনে হচ্ছে সে বাজারে যেয়ে সবজি কেনার কথা বলছে। আরে এটা তো বাড়ির বউ আনার কথা হচ্ছে। এভাবে কি কয়েকঘন্টায় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়!
– আমি কি বাজারে যেয়ে টমেটো কিনতে যাবো?
– আমি বলি একটা কথা বোঝো আরেক কথা! আমি বললাম রুপুর ব্যাপারে কি ভাবলে?
– বাহ! রুপু, কি উন্নতি আমার ছেলে বাহ বাহ! তা তোর এই রুপু কি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়? যে আমি ঘন্টাখানেকের মধ্যে চিন্তা করেই কিনে ফেলবো?
– পাগল হয়ে গেলা নাকি ডেট এক্সপায়ার গঞ্জিকা সেবন করলা? শরীর ঠিক আছে?
– একটা চড় দিয়ে চব্বিশটা দাঁত ফেলায়ে দেবো। মায়ের সাথে ফাযলামি করিস কত্তবড় সাহস।
– ফাযলামি করছি না যা চোখে দেখছি সেই প্রেক্ষিতে কথা বলছি। রুপু বাজারের পণ্য নাকি। তোমার ঘরের হবু বউ৷
– আমি এখনো ঠিক করি নি সে আমার হবু পুত্রবধু
জড়তাহীন গলায় হিনহিনে কন্ঠে প্রতিবাদ করে উঠলেন রাফিজা বেগম। তার কপালে ভাঁজ স্পষ্ট। আরশাদের বেয়াদবি আর সহ্য হচ্ছে না তার। আহসান সাহেবের মৃত্যুর পর একা হাতে দুই ছেলেকে তিনি মানুষ করেছেন। হ্যা, তার পরিবার তাকে বটগাছের মতো তাকে ছায়া দিয়েছে। অবশ্য এই নানাবাড়ির জোরেই ছেলে দুটো এতো বেহুল্লা হয়েছে। অনেকটা আদরে বাদর যাকে বলা হয়। তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে উঠলেন,
– আমি যদি না চাই তাহলে ওই রুপু না ফুপু আমার এই ঘরের চৌকাঠ ও পার হতে পারবে না কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নাও
– আর তুমিও কথাটা মুখস্ত করে করে নাও, আমার বউ রুপু ই হবে। সেটা তুমি চাও বা না চাও। দরকার হলে নাই বা উঠলাম তোমার ঘরে বউ নিয়ে। ছোট মামা,মামীর বিয়েতে আপত্তি নেই। বড় মামার মেয়ে পছন্দ। নানু এক পায়ে রাজী। পারলে আজ বিকেলে মেয়ে দেখতে যাবেন। বিয়ের পর ওখানে বউকে তুলবো।
আরশাদ ও কম যায় না। মার কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে বুলেটের গতিতে কথাগুলো বলে দিলো। আরশাদের এমন কথায় দমে যাবার মানুষ রাফিজা বেগম একেবারেই নন। বাঁকা হাসি হেসে বললেন,
– আর খাওয়াবি কি? সে মুরোদ আছে তোমার? এই বয়সে চাকরি তো দূরে থাক, পকেট মানি টুকু বড় ভাই দেয়। মাস্টার্স ও শেষ হয় নি। তা বউকে কি তার মামাশ্বশুর খাওয়াবে।
– জানতাম এটাই বলবে। আমার বউকে আমি খাওয়াবো। তা নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না। সেই ব্যবস্থা করা হয়ে গেছে। পনেরো হাজার টাকার চাকরি পেয়েছি। এখন স্যালারি কম কিন্তু ছয়মাস পর বাড়বে। হাহ! এখন বলো কি করবে?
আরশাদের কথায় কি উত্তর দিবেন বুঝে উঠতে পারছেন না রাফিজা বেগম। একেবারে কিস্তিমাত করে দিলো এই হাটুর বয়সী ছেলে। তার কিছু বলার আগেই পাশ থেকে স্পষ্ট কন্ঠে আরাফাত বলে উঠলো,
– ওর কোনো ভাই টাই থাকলে নাম্বারটা দিস। কথাতো আগে পারতে হবে। হুট করে দল নিয়ে গেলেই তো হবে না। সবকিছুর নিয়ম আছে।
আরাফাতের কন্ঠ শুনেই আরশাদ চুপ হয়ে গেলো। শুধু আরাফাতকেই জমের মতো ভয় পায় আরশাদ। মাথাটা হেলিয়ে নিঃশব্দে হ্যা বললো সে। আরাফাতের কথাটা শুনেই সোফায় বসে পড়লেন রাফিজা বেগম। ভেবেছিলেন আরাফাত আসলে সে হয়তো তার দলে নাম লিখাবে। কিন্তু কিসের কি! উলটো মেয়ের ভাইয়ের নাম্বার চাচ্ছে। মার অখুশি মুখটা যেনো সবচেয়ে অপছন্দ আরাফাতের। ধীরে মায়ের পাশে গিয়ে বসলো সে। ধীর কন্ঠে বললো,
– কি হয়েছে মা?
– কি হবে? আমার কোনো সিদ্ধান্তের কোনো দাম আছে নাকি? সব তোরাই ঠিক লরে ফেলছিস! আমার কোনো দরকার নেই। এখন আছি তো বুঝছিস না, মরে গেলে কাঁদবি দেখিস
এই সংলাপটি যেনো মায়েদের স্লোগান। যখনই কিছু মন মতো হয় না এই সংলাপ দিয়ে সন্তানের সাথে জিতে যেতে চান। রাফিজা বেগম ও কোনঠাসা হয়ে এই সংলাপ ই দিলেন। আরশাদের তাতে ভ্রুক্ষেপ না হলেও আরাফাতের ঠিক ই হবে। এবং সেটা হয়েছেও। কোমল কন্ঠে বললো,
– মা তোমার সিদ্ধান্ত ই শেষ সিদ্ধান্ত। তোমার মেয়ে পছন্দ না হলে বিয়ে হবে না। ব্যাস। তবে তারজন্য আগে মেয়ে দেখতে হবে। আমার তো মনে হয় মেয়ে বেশ গুনি। তোমার অকর্মা ছেলেকে কর্মঠ করে ফেলেছে। সে চাকরি করবে ভাবা যায়! মেয়েটাকে আগে দেখি কি বলো! আর তোমার ছেলেকেও তো তাদের পছন্দ হতে হবে
– এটা কেমন কথা বাবু! কেনো হবে না আমার ছেলেকে পছন্দ?
– তুমি মেয়ের মা হলে দিতে এই ছাগলের সাথে মেয়ের বিয়ে?
– এহহহহহ! আমার ছেলে একশ তে একটা। উনাদের ভাগ্য ভালো আমি তাদের বাড়ি ছেলে বিয়ে দিতে যাবো।
– তাহলে তো হয়েই গেলো। আমি তাহলে কথা বলি?
– হুম, বল। দেখি যেয়ে
আরাফাতের দ্বারাই রাফিজা বেগমকে সামলানো সম্ভব। অনেকটা খোলা বাঘিনী সে। কখন কার উপর হামলা করবে তার ঠিক নেই। তবে এই বাঘিনী ছেলে বলতে পাগল। বিশেষ করে আরাফাত। তার বাবু যদি বলে দিন তো দিন! তার বাবু যদি বলে রাত তো রাত। শুধু বাবুর বিয়েটা দিতে পারলেই তার যেনো শান্তি।
________________________________________________________________________
রাত আটটা,
বইয়ের মাঝে ডুবে আছে সে। বিসিএসটা হয়ে গেলে একটা শান্তি প্রিয়ন্তীর। সরকারি চাকরি নিতে পারবে। বাবার খুব ইচ্ছে ছিলো মেয়েও সরকারী চাকরিজীবি হবে। বাবার ইচ্ছে পূরণের চেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত করেছে সে। এবার যেভাবেই হোক বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে। পড়াশোনার ভেতর কোনো ব্যাঘাত তার পছন্দ নয় কিন্তু তার পরিবার কেনো যেনো পড়ার সময়ই তাকে বিরক্ত করবে এবং সেটা মাত্রাতিরিক্তভাবে। বসার ঘরে শিপন জোরে জোরে চেচাচ্ছে। কারণটা অবশ্য প্রিয়ন্তীর বেশ ভালো করেই জানা। সে চেঁচামেচিটা নিজের ব্যর্থতার জন্য করছে। তার প্রমোশন হচ্ছে না। কারণ প্রিয়ন্তী বসের বোনকে অপমান করেছে। আবার ছুটকির বিয়ের জন্য সম্বন্ধ আসছে কিন্তু প্রিয়ন্তীকে বিয়ে তা দিয়ে নাকি তাদের সম্মতি দেওয়া যাবে না। এর উপরে যা একটু ছুটকির বিয়েটার কথা সে আগাচ্ছিলো প্রিয়ন্তী তাতে বাধ সেধেছে। এ বিয়েতে মোটেও প্রিয়ন্তীর সম্মতি নেই। মোটকথা প্রিয়ন্তী তার চক্ষুশুল হয়ে গেছে৷ প্রিয়ন্তীর সাথে বেশ কথা কাটাকাটি ও হয়েছে। আগামীকাল বিকেলে রুপন্তীকে দেখতে আসবে ছেলেরা। তখন যদি প্রিয়ন্তী থাকে তবে নাকি ছুটকির বিয়েটাই হবে না। শিপনের সাথে চিৎকার করার ইচ্ছে প্রিয়ুর হচ্ছে না। তাই দরজা লাগিয়ে বই নিয়ে পড়তে বসেছে সে। বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিলো তখনই তার দরজায় কড়া নাড়া পড়ে। নিশ্চয়ই জাহানারা বেগম এসেছেন। নিজের ছেলের তরফদারি করতে। বিরক্তির সাথে দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে রুপন্তী ঘরের ভেতর ঢুকে। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই….………….
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি
#আরোও_একবার_বসন্ত
#৯ম_পর্ব
বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিলো তখনই তার দরজায় কড়া নাড়া পড়ে। নিশ্চয়ই জাহানারা বেগম এসেছেন। নিজের ছেলের তরফদারি করতে। বিরক্তির সাথে দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে রুপন্তী ঘরের ভেতর ঢুকে। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই রুপন্তী হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। রুপন্তীকে এভাবে কাঁদতে দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে উঠে প্রিয়ু। উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে উঠে,
– ছুটকি কি হয়েছে? কাঁদছিস কেনো? শিপন কিছু বলেছে? ছুটকি
– বুবু আমি বিয়ে করবো না। প্লিজ ভাইকে নিষেধ করে দাও।
রুপন্তী কেঁদেই যাচ্ছে, তার কান্না থামাবার কোনো উপায় পাচ্ছে না প্রিয়ন্তী। কি বলে শান্তনা দেওয়া উচিত বুঝে উঠতে পারছে না সে।সে নিজেও চায় না রুপন্তীর এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে হোক। কিন্তু শিপনের সাথে চেঁচামেচি করে ক্লান্ত সে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ধীর কন্ঠে বললো,
– শান্ত হো, কান্নাকাটি থামা। এবার শান্ত হয়ে বল কি হয়েছে?
– আমি এ..একজনকে পছন্দ করি বুবু, কিন্তু ভাই না জানি কার সাথে আমার বিয়ে দেবার কথা বলছে। আমি ওই মানুষটাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো না বুবু। প্লিজ তুমি একটু বোঝাও না ভাইকে। প্লিজ।
অস্পষ্ট স্বরে কথাগুলো বললো রুপন্তী। রুপন্তী কাঁদছে। নাক লাল হয়ে এসেছে। ফর্সা মেয়েটাকে কাঁদলে একেবারেই মানায় না। প্রিয়ন্তী তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ভালোবাসা জিনিসটাকে খুব ভয় হয় প্রিয়ন্তীর। এমন ভালোবাসার জালে একটা সময় সেও বাঁধা পড়েছিলো৷ বাবাকে বলেছিলো, এই ছেলেকে তার ভালোলাগে। বাবাকে যদি তখন সাহস করে বলতো,
“বাবা আমি এখন বিয়ে করবো না, লোকটাকে আমায় চিনার সময় দাও।”
তাহলে হয়তো আজ এই পরিণতি তার হতো না। রুপন্তীর সাথে এমনটা হোক সেটা সে চায় না। যদি রুপন্তীর পছন্দের ছেলেটি তার যোগ্য হয় তবে তার সাথেই প্রিয়ন্তী তাকে বিয়ে দিবে। কিন্তু আগে ছেলেটির সাথে প্রিয়ন্তী নিজে কথা বলবে। ঠোঁটের কোনায় এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে ধীর কন্ঠে বললো,
– দেখতে আসলেই বিয়ে হয় কে বলেছে তোকে?
– মানে?
– আমাকেও দেখতে আসে, এসেছিলো। আমার বিয়ে হয়েছে?
– কি করবে তুমি?
– কাল আসুক তখন দেখবো কি করা যায়
চোখ টিপ্পনী কেটে কথাটা বলে প্রিয়ন্তী৷ রুপন্তী এখনো তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। প্রিয়ন্তীর মাথায় কি ঘুরছে সেটা শুধুমাত্র প্রিয়ন্তী ই জানে। সেটা বুঝার ক্ষমতা রুপুর নেই
———————————————————————————————————————————————————————————
আরশাদের জন্য অপেক্ষা করছে রুপন্তী। লোকটার আজ আসার কথা সকাল বেলা কিন্তু কিসের কি! সকাল পেরিয়ে দুপুর হতে চললো তার আসার নাম নেই। কত কাজ লোকটাকে নিয়ে প্রিয়ন্তীর কাছে যাবে। আজ ঠিক তিনটায় সময় দিয়েছে প্রিয়ন্তী৷ এখন আড়াইটা বাজে। তাহলে কি লোকটা আসবে না! আজ বিকেল পাঁচটায় তাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। তাকে যদি তাদের পছন্দ হয়ে যায় তাহলে তো বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে। আরশাদকে কাল রাতেই সব বলে দিয়েছিলো রুপন্তি। তাহলে এখনো আসলো না কেনো মানুষটা! সময়ের কাটা পার হচ্ছে। সাথে ধৈর্য্যের বাধ ও ভাঙ্গছে রুপন্তির। এভাবে সার্কাসের জোকারের মতো ক্যাম্পাসের বটতলায় বসে থাকার কোনো মানেই হয় না। এখন আরশাদকে ফোন লাগাবে সে। আর মনে যা আসবে তাই বলে ঝাড়বে, পেয়েছেটা কি! দুই বছর হয়ে গেছে তাদের সম্পর্কের অথচ লোকটার কোনো গুরুত্বই নেই। কাল রাতেই তাকে জানিয়ে দিয়েছিলো রুপন্তী। অথচ সে সকালের কথা বলে এখনো আসে নি। দুপুরের চড়া রোদে মেজাজ যেনো আরো চড়াও হয়ে উঠেছে রুপন্তীর। ফোনের পর ফোন দিচ্ছে অথচ একটা বার ফোন অবধি ধরছে না। উলটো ফোন বারবার কেটে দিচ্ছে সে। এবার উঠে দাঁড়ালো রুপন্তী। ভুল মানুষের জন্য অহেতুক সময়টা নষ্ট করছিলো সে। ব্যাগটা কাধে নিয়ে হাটতে লাগলো রুপন্তী। অন্যমনস্ক হয়ে হাটতে লাগলেই মনে হলো একটা পাহাড়ের সাথে ধাক্কা লাগে রুপন্তীর। তাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে নিলে একজোড়া হাত তাকে সামলে নিলো। বাজখাঁই কন্ঠে বলে উঠলো,
– হাটতেও শিখো নি, একটু হলেই তো পড়ে যেতে।
চিরচেনা কন্ঠটি উত্তপ্ত খরার মাঝে এক পশলা বৃষ্টির ন্যায় কাজ করলো রুপন্তীর জন্য। মাথা তুলে তাকাতেই মনের কোনায় একটা স্নিগ্ধ শীতল পরশ বয়ে গেলো। কারণ মানুষটি তার যে খুব প্রিয়জন।
বিকেল ৬টা,
বসার ঘরে মানুষের অভাব নেই। মোটামোটি পাত্রপক্ষের ঘরের কেউ বাকি নেই। মোটামোটি পুরো পাড়া নিয়ে এসেছে তারা মেয়ে দেখতে। জাহানারা বেগম হিমসিম খাচ্ছেন। ছেলে বলেছিলো মাত্র তিনজন আসবে কিন্তু এ তো পুরো পাড়া চলে এসেছে। ভাগ্যিস প্রিয়ন্তী বাসায় নেই। নয়তো আপ্পায়ন তো দূরে থাক এদের এক গ্লাস পানিও সাধতে দিতো না সে। উলটো কিছু একটা বলে ভাগিয়ে দিতো। শিপন তাদের সাথে বসে কথা বলছে। স্নেহা, রুপন্তীকে সাজাচ্ছে। এর মধ্যেই বেলটা বেজে উঠলো। জাহানারা বেগমের মনে একটা কামড় পড়লো। প্রিয়ন্তী কি তবে এসে পড়লো। কথার মাঝেই শিপন উঠে দরজাটা খুললো। দরজা খুলতেই শিপনের মুখটা কালো হয়ে উঠলো। দরজার ওপারে প্রিয়ন্তী দাঁড়িয়ে রয়েছে। আজ তার এই সময়ে আসার কথা ছিলো না। তার চব্বিশ ঘন্টা ডিউটি থাকার কথা আজ৷ অস্পষ্ট স্বরে সে বলে উঠলো,
– তুমি? এখন?
– নিজের ঘরে আসতে কি এখন সময় দেখতে হবে!
প্রিয়ুর অকপটে বলা কথাটা শুনেই শিপন চটে উঠলো। হাতটা টেনে ধীর গলায় বললো,
– ছুটকিকে দেখতে মানুষ এসেছে। কোনো সিন ক্রিয়েট করবে না। আমি চাই না তারা অপমানিত হয়ে বাসা থেকে যাক।
– মাষ্টার হয়েছিস? আমাকে আদব কায়দা শিখাচ্ছিস? মনের রাখিস পৃথিবীতে তোর আগে আমি এসেছি।
বলেই শিপনকে অগ্রাহ্য করে ভেতরে ঢুকে পড়ে প্রিয়ন্তী। ভেতরে ঢুকতেই…………
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি