শব্দহীন_বৃষ্টি (২৩)

0
927

শব্দহীন_বৃষ্টি
(২৩)
#ফারহানা_আক্তার_রুপকথা
_________________________
এত ধোঁয়াশা কেন লাগে কাছ থেকে যা বারবার ধোঁকায় ফেলে সাগরকে৷ তবে বেশি সময় ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন থাকার সুযোগ তার হয়নি৷ বন্ধু জুয়েলের বলা কথা শুনে মাহিকে সোজা করে দাঁড় করায়।

–” চোখ বন্ধ করে হাঁটো নাকি মাহিয়া? ” সাগরের কথা শুনতেই কান ঝা ঝা করে উঠলো মাহির। সে কি ঠিক শুনছে? মানুষটা কি তবে সত্যিই সাগর! ভ্রম নয় তবে এটা তার।

–” আপনি এখানে “!

–” তোর পরিচিত”?জুয়েল জানতে চাইলো সাগর কিছু বলার আগেই মাহি জবাব দিলো ” না”।মাহি আর এক সেকেন্ড ও দেরি না করে নিচে চলে গেল। সিঁড়িতে আলো ভালোই ছিলো তাই যাওয়ার সময় মাহির শাড়ির হালাত চোখ এড়ায়নি সাগরের। প্রায় ঘন্টা খানিক সময় আর মাহির দেখা পায়নি কেউ । একটা সপ্তাহ সাগরের দৃষ্টি সীমানার বাইরে থেকে আজ একেবারে তারই গায়ে পড়তে হলো! আগে তো তেমন লজ্জা লাগেনি সাগরকে দেখলে বরং ভালোই লাগতো তার আশেপাশে থাকতে। কিন্তু আজ দমবন্ধ হয়ে আসছিলো। মাহি যখন আবার ছাঁদে গেল তখন নিরব স্টেজে বসে নিপাকে হলুদ লাগাচ্ছিলো৷ সম্পর্কে যেহেতু বন্ধুর বউ হবে তাই একটু আধটু রসিকতা ও চলছিলো। আর নিরবই খোঁজ করছিলো মাহি কোথায়। বাধ্য হয়ে মাহিকে আসতেই হলো ছাঁদে তবুও আঁড়চোখে দেখার চেষ্টা করছে মানুষটা কোথায়।

–” আমায় ডাকছিলে ভাইয়া”!

–” কোথায় ছিলি তুই?”

–” নিচে আন্টির সাথে একটু কাজ ছিলো।” একদম মিথ্যে কথা বলল মাহি। সে সাগরের কাছ থেকে দূরে থাকতেই আর এখানে আসেনি। তাতে লাভ কি হলো নিরব এখানেই ডেকে নিলো সাগরকে।

–” সাগর ভাইয়া ” হাত উঁচিয়ে ইশারা করে ডাকতেই সাগর এগিয়ে এলো।

–” কি ব্যাপার নিরব” বলেই একবার তাকালো মাহির দিকে।

–“ভাবিকে হলুদ লাগাবেন না “?। নিরবের এ কথায় নিপা একটু চমকে গেল। সাগর ভাইয়া তাকে হলুদ না লাগাক। এমনিতেই সমুদ্র কে খুব মনে পড়ছে সাগর ভাইয়াকে দেখার পর
থেকে মন খারাপ লাগা আরও বেড়ে যাচ্ছে।

–” এই না না হলুদ লাগাতে হবে না। আর নিরব ও আমার ভাবি নয় ছোট ভাইয়ের বউ বলতে পারো। সেই হিসেবে ছোট বোন ও বলা যেতে পারে। ” সাগর হাসি হাসি মুখে বলল। মাহির অস্থির লাগছে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে। এত জড়তা আগে কখনো ছিলো না সাগরের সামনে তার। কত গুলো মাস পড়েছে তার কাছে কত কথা কত জ্বালাতন করেছে তাকে৷

কনে পক্ষের হলুদ সন্ধ্যা বেশ আনন্দমুখর কেটেছে সবার শুধু মাহি ছাড়া। তার অর্ধেকটা সময় কেটেছে সাগরের দৃষ্টি থেকে নিজেকে লুকিয়ে। আর সাগর ছিলো সম্পূর্ণ নির্বিকার স্বাভাবিক ভঙ্গিতে। বরং কয়েকবার মনে হয়েছে তারা বুঝি অপরিচিত৷ আজই প্রথম দেখা। রাত কাটলো ছটফট করে সকাল হলো উত্তেজনা নিয়ে৷ আজ ছেলে বাড়িতে সে যাবে না ঘুম থেকে উঠেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিপার রাতে ভালো ঘুম হয় নি। হবু বর তমাল রাত ভর ফোনে কথা বলে জ্বালিয়েছে। এ অবশ্য নতুন নয় গত এক সপ্তাহ ধরে এসব শুরু। প্রথম প্রথম নিপার রাগ লাগতো অসহ্য হয়ে কল কেটে ও দিতো। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে কল না কাটলে প হু হা দিয়ে কাজ চালায়। শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়েছিলো বলে নিপাকে আর সকালে ডাকা হয় নি। মাহি নাশতা সেরে কিছুক্ষণ মায়ের সাথে কথা বলল তারপর বসে বসে রাতের তোলা কয়েকটা ছবি বেছে বেছে নিজের ফেসবুক একাউন্টে আপলোড দিলো। মিনিট দশেক পর টুং করে শব্দ হলো নোটিফিকেশন এসেছে সেটা চেক করেই একটু চমকালো। ” চমৎকার সুন্দরী লাগছে কনেকে আর মোহনীয় লাগছে কনের পাশের কন্যাকে” আয়ান রশীদ নামের এক ব্যক্তি কমেন্ট করেছে । এই প্রথম এই আইডি থেকে কমেন্ট দেখলো মাহি তাই কৌতুহলবশত তার প্রোফাইলে ঢুকল। একেবারে থ হয়ে রইলো কয়েক মিনিট সে। মুখটা পরিচিত মনে হলেও নামটা আগে শুনেছে বলে মনে হয়নি৷ কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটি করার পর মনে হলো অনেক পুরনো একটা কথা। লোকটা তাদের বাড়িতে এসেছিলো একবার। এই সেই ডক্টর যার জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছিলো তার জন্য ।

–” উফ, এই বদখত লোকটা আমার সাথে এড কবে থেকে “! বিরক্তি নিয়েই মনে মনে বলছে মাহি। কমেন্ট এর রিপ্লাই তে ছোট্ট করে ‘ধন্যবাদ ‘ লিখে দিলো সে। এরপর সারাদিন আর ফোন ছুঁয়ে ও দেখলো না। মায়ের সাথে সকালেই একবার কথা হয়েছিলো এরপর আর হয়নি। বিকেলে নিরব এসে নিয়ে গেল পার্লারের জন্য৷ নিরবের হয়েছে জ্বালা বন্ধুর বিয়ে খেতে গিয়েও কনের বাড়ি আসতে হচ্ছে মাহির জন্য যখন তখন। তবে মনে মনে অনেক ভাবনা চিন্তারা ও জ্বালাচ্ছে খুব তাকে বারবার মনে হচ্ছে মাহি বড় হয়ে যাচ্ছে। বিয়ে দিতে হবে, আমাদের ছেড়ে চলে যাবে আমি তো বড় ভাই কত দ্বায়িত্ব থাকবে আমার। নিজের অজান্তেই চোখের কোণে জ্বল চলে এলো তার। আর এই জল খুশির।

সাগর আজ আর ছুটি নেয়নি। আজকে ছেলেপক্ষেরই হলুদ যখন ইচ্ছে যাওয়া যাবে বরং আজ ইচ্ছে করেই লেট যাবে ঠিক করেছে। নয়তো সবাই মিলে নিশ্চিত গান গাওয়ার জন্য ফাঁসাবে তাকে। এমনিতেই নিরব ও আছে ওই অনুষ্ঠানে। নিরব থেকেই মনে পড়লো মাহির কথা। মাহি কাল এমন অচেনা আচরণ করলো কেন! ভেবে পায় না সাগর যে মেয়ে তার জন্য এতোটা উদগ্রীব থাকতো সবসময় সে মেয়ে এমন হঠাৎ করে পাল্টে গেল কি করে। এর পেছনে কি তার নিজেরই কোন ভুল ছিলো? ওই রাতে মাহি নিজে থেকে তাকে চুমু খেয়েছিলে সে তো ছুঁয়ে ও দেখেনি মাহিকে। বরং স্থির হয়ে মূর্তি বনে ছিলো। কি থেকে কি হলো জানা নেই তবে আজকাল অধৈর্য্য হয়ে রাতে পায়চারী করে সে ছাঁদে। মাহিকে দেখার জন্যই সেই ছটফট ভাব। বড় অদ্ভুত পরিবর্তন এসে গেছে তার মধ্যে মাহির জন্য । নাহ, আজ আর তমালের হলুদে যাবে না। বন্ধুর ছোট একটা ভাইয়ের বিয়ে বন্ধুর তো আর না। কেউ কিছু মনে করবে না গেলে এই ভেবে ধীরে সুস্থে কাজে মন দিলো আবার। কিন্তু ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথেই অতিষ্ঠ করে তুলল নিরব,জুয়েল আর অন্যান্য বন্ধুরা। গান গাইতে হবে তাকে সবাই নাকি আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছে। সেই যে ভার্সিটির এক ফাংশনে নিরব সুযোগ পেয়েছিলো সাগরের সাথে গিটার বাজানোর এরপর আর কোথা ও সুযোগ হয় নি তাই আজ হাতছাড়া করতে চায় না৷ বাধ্য হয়ে সাগরকে বাড়ি ফিরেই আবার রওনা দিতে হলো তমালদের বাড়ির উদ্দ্যেশে। কালকে একটা মেরুন রঙের পাঞ্জাবি পড়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আজ আর মোটে ও ইচ্ছে নেই পাঞ্জাবী পড়ার তাই কোন রকমে একটা নতুন সাদা টি-শার্ট ছিলো সেটাই পড়ে বেরিয়েছে। কাঁধে সমুদ্রের প্রিয় গিটারটা। কি মনে করে একবার আয়নায় নিজেকে দেখে নিলো সে মাথার চুল গুলো সবসময়ই এলোমেলো থাকে কিন্তু আজ এদের পরিপাটি করে যাওয়ার ইচ্ছে জাগলো। আঙ্গুল চালিয়ে কিছুটা ঠিক করে ও নিলো৷

” আজও শাড়ির সাথে কোমড়ের বিছা নেই। মন খারাপ হচ্ছে খুব” কথাটা মুখ ফুলিয়ে বলতে বলতে গাড়িতে বসে গেল মাহি৷ আজ আর আটপৌড়ে শাড়ি নয় কুঁচি করে শাড়ি পড়েছে সে। দু’হাত ভর্তি চুড়ি, খোলা চুল আর মোটা করে কাজল টানা। লিপস্টিক লাল আর ছোট্ট একটা স্টোন নাকে। দেখলে মনে হয় নোজপিন পড়েছে। আজ নিপা বাড়িতে একা সবাই যাচ্ছে বরের বাড়ি৷ কিছু মুরব্বি শুধু রয়ে গেছে বাড়িতে। মাহির অবশ্য মাথা ভর্তি কু বুদ্ধি ঘোরে তাই অনেক জোর করেছে বোরকা পরিয়ে নিপাকে নেওয়ার জন্য । নিপা রাজী হয়নি।

ছেলে বাড়ির মানুষ খুবই সৌখিন তা তাদের অভ্যর্থনায় টের পাওয়া গেল। বিশাল নামি-দামি কমিউনিটি সেন্টারে হলুদ হচ্ছে। গেইট থেকে মেইন হল পর্যন্ত রেড কার্পেট সাথে ফুলের বর্ষণ। মাহি অবাক হয়ে সবটা দেখতে দেখতে ভেতরে গেল৷

phir chand ban jaon teri gali ka… গানের লাইন কানে আসতেই ঘাড় বাকায় মাহি। বরের স্টেজের ডান দিকে আরো একটা বড়সড় স্টেজ। অনেকরকম বাদ্যযন্ত্র আর অনেকেই আছে । কয়েকজন বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছে সেখানে নিরব ভাইয়া ও গিটার বাজাচ্ছে। কিন্তু দৃষ্টি তো এক জায়গাতেই আটকে আছে মাহির। ঠিক দেড় বছর আগের সেই রাতের মত৷ আবছা আলোয় সাদা টি-শার্ট পড়া একজন হাতে গিটার নিয়ে গেয়ে চলছে গান। মানুষটার চোখ খোলা নাকি বন্ধ ঠিক বুঝতে পারলো না মাহি। সম্মোহিতের মত এক জায়গায় স্থির হয়ে মাহি শুনতে লাগলো।

Main wo khawb hoon jo
Kisi ne na dekha
Wo kissa ho main jo
Bin tere hoon adha…

দম আটকে আসছে যেন শুনতে শুনতে। হিন্দি এই গানের লাইন গুলো যেন মাহির অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্যই লেখা হয়েছে। সাগর কি জানে তার কন্ঠস্বর এই মুহুর্তে কারো মনে রক্তক্ষরণের মত মনেরক্ষরণ হয়ে ভাসছে। এত আবেগি মাহি কবে হলো কে জানে মন টিকছে না তার এই অনুষ্ঠানে। বারবার মনে হচ্ছে সাগরের সামনে পড়লে নিজেকে সামলাতে পারবে না সে। আজ আবারও মনের ভাষা মুখে আসবে। একসময় সাগরের গান শেষ হতেই সে স্টেজ ছেড়ে কোথা ও চলে গেল। মাহির মনে হলো নিঃশ্বাস নেওয়ার একটা সুযোগ হলো তার। এক কোণে দাঁড়িয়ে চুপটি করে ছিলো হঠাৎ হাতে টান পড়তেই পেছনে ফেরে। কিন্তু তারপর শুধু হাত নয় কেউ তার মুখ ও আটকে দেয় নিজের হাতে। টেনে নিয়ে যায় সেন্টারের বাইরে। ততক্ষণে মাহি খুব কসরত করেই মুখটা দেখে আর সঙ্গে সঙ্গেই কলিজা কেঁপে উঠে৷

“সাগর” মনে মনে নামটা বললেও মুখ খোলার মত শক্তি তার হয় না। সেন্টারে বাইরে বন্ধ একটা দোকানের সামনে এনে দাঁড় করায়। মাহির মুখের থেকে হাত ও সরায় কিন্তু কোন কথা বলেনি। কিছু মুহুর্ত দু’জনেই চুপচাপ ছিলো৷ মাহি প্রথমে বলতে যাচ্ছিলো, ” এভাবে টেনে আনলেন কেন?” মুখের কথা মুখে থাকতেই সাগর বলল, ” কি হয়েছে তোমার!”

–” আমার কি হবে?” অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে মাহি।

–“পুরো সপ্তাহ কোথায় ছিলে?”

–” বাড়িতেই “।

–” তবে ছাঁদে এলে না যে!” কথাটা বলেই সাগর স্তব্ধ হলো৷ এ কি বলছে কি করছে সে? নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে এই বাচ্চা মেয়েটির সামনে৷ সে নিজেই তো চাইতো মাহি তার আশেপাশে না আসুক।তবে! চোখ দু’টো বন্ধ করে লম্বা একটা শ্বাস টেনে নেয় নিজের ভেতর।

–” আপনি কি আমায় ছাঁদে খুজেছিলেন?” মাহি পাল্টা প্রশ্ন করে ঠিকই কিন্তু উত্তরটা তার জানার ইচ্ছে নেই। সাগর তাকে কেন খুঁজবে সে তো তেমন কেউ নয়। তবুও জবাবটা এলো সাগরের কাছ থেকে ” হ্যা, দু’একদিন খুঁজেছিলাম৷ ভাবলাম কিছু হলো নাকি হঠাৎ করে আসা বন্ধ করলে যে!”

এই মুহুর্তে মাহির খুব ইচ্ছে জাগলো একটি বার সাগরের মুখটা স্পষ্ট দেখার। কিন্তু এ পাশটায় আলো খুব অল্প। এত লম্বা মানুষটার মুখে চোখে ঠিকঠাক আলো পড়ছে না।

–” আপনার ফোনটা একটু দেবেন টর্চ জ্বালিয়ে”।

–” এ্যা”!

–” এ্যা নয় হ্যা একটু দিন না”।

–” ওকে” বলেই সাগর নিজের ফোনটা মাহির কাছে দিলো। অদ্ভুত ব্যাপার হলো মাহি ফোনটা নিয়েই টর্চ জ্বেলে সাগরের মুখের উপর ধরলো।

–” এই কি করছো” বলেই চোখ মুখ কুঁচকালো সাগর। তীব্র আলোয় চোখ ঝলসে যাবার উপক্রম।

–” আপনাকে একটু দেখার ছিলো। আসলে কি বলেন তো, আপনি আমাকে খুঁজেছিলেন দেখতে না পেয়ে!আ’ম শকড”। শেষের বাক্যটা মাহি একদম ভেঙে ভেঙে বলল। দু’জনের কথার মাঝেই হঠাৎ কানের কাছে ভনভনানি আওয়াজ হলো। দু’জনেই সজাগ কান রাখলো আওয়াজটা কিসের আর কোথা থেকে আসছে। চৌকস লোক সাগর হুট করেই মাহির হাত থেকে মোবাইল নিয়ে আলোটা ফেলল দোকানের সিলিং এর দিকে। শাটারের বাইরে যতখানি জায়গা চোখে পড়ে সেখানে খুব বড় নয় আবার একেবারে ছোট ও বলা যায় না এমন একটা মৌচাক। কিন্তু মৌচাকের মৌমাছি গুলো এমন তেড়েফুঁড়ে আসছে কেন বুঝে এলো না সাগরের। ওদিকে তো কোন ঢিল ছোঁড়া হয় নি বা তাদের ডিস্টার্ব হয় এমন কিছুই করে নি। সাগর যখন মাহিকে নিয়ে সেখান থেকে সরে আসার কথা ভাবছে মাহি তখন অবাক চোখে সেই মৌমাছির চাকটাকে পর্যবেক্ষণ করছে। টর্চের আলোয় বেশ লাগছে দেখতে। মাহির মনে হলো এখানে একটা ঢিল ছুঁড়লে কেমন হবে? একটু দূরে গিয়ে ছুঁড়বে ভেবে সাগরকে বলল, ” এখান থেকে যাওয়া উচিত”।

–” হ্যা, চলো” বলেই মাহির হাতটা ধরতে গিয়ে ও ধরলো না সে। সামনে এগিয়ে গেল সাগর মাহি দু’পা এগিয়েই একটু ঝুঁকে রাস্তা থেকে একটা কংক্রিটের টুকরো কুড়িয়ে নিলো।

–” কি খুঁজছ মাহিয়,,, আর কিছু বলার আগেই মাহি তার কাজ করে দিলো। এই অন্ধকারে সাগর খপ করেই মাহির হাত ধরেই টেনে দৌড় দিলো কিছুটা। টের পাচ্ছে তারা মৌমাছি তাদের পেচনে আছেই কয়েকটা। কয়েক কদম এগোতেই কমিউনিটি সেন্টার দুজনে সেদিকে যেতেই থেমে গেল। সাগর আলতো করে নিজের একটা হাত ঘাড়ে তুলেই “আহ” করলো। যা ভেবেছে তাই একটা মৌমাছি তার ঘাড়ে হুল ফুটিয়েছে। হাতেই টেনে সেটাকে নিচে ফেলে পা দিয়ে পিষে দিলো। মাহি অবিশ্বাস্য নয়নে তাকিয়ে আছে সাগরের দিকে। এখানো আলোকরশ্মি যথেষ্ট থাকায় দেখতে পেল সাগরের চোখ কেমন লালবর্ণ ধারণ করেছে। কপালের রগটা ও যেন ফুলে গেল মুহুর্তে।

–” সরে দাঁড়াও মাহিয়া।”

চলবে
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here