বেদনার_রঙ_নীল,২২,২৩

0
296

#বেদনার_রঙ_নীল,২২,২৩
বাইশতম পর্ব
লিখা- Sidratul Muntaz

ঘড়িতে এখন আড়াইটা বাজে। নিঝুম রাতের অন্ধকারাচ্ছন্ন নীরব শহর। নাইট গার্ড ছাড়া সড়কে মানুষ নেই। তুলি দাঁড়িয়ে আছে তৃতীয় তলার করিডোরের কার্নিশ ঘেঁষে। শীতল বাতাস তার গা ছুঁয়ে দিচ্ছে। তার ভালো লাগছে।

রাইফার কাছে যখন ফোন এসেছিল তখন রাত বারোটা বাজে। তারা দেরি না করে বেরিয়ে পড়েছিল। তুলি উন্মত্ত ছিল। তন্বিও আসতে চাইছিল কিন্তু সূচির ঘুম ভেঙে গেলে যাতে সে পরিস্থিতি সামলাতে পারে এই অযূহাতে তাকে আনা হয়নি!

হসপিটালে আসার পর দেখা গেল অনেক ভীড়। প্রণয়ের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এসে হুলুস্থুল অবস্থা এখানে। পুলিশ পর্যন্ত হাজির। আজমীরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। প্রণয়ের বয়স্ক ফুপু কপাল চাপড়ে এমনভাবে কাঁদছিলেন যেন বেচারা ম-রে গেছে৷ তুলি এই অবস্থা দেখে আতঙ্কে আরও অস্থির হয়ে পড়ল। তারপর মিষ্টি এসে জানাল প্রণয় ভালো আছে তবে ঘুমাচ্ছে। অজান্তা দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে বললেন,” তোমরা এতোরাতে কেন আসতে গেলে?”

তুলি মিষ্টির দিকে তাকাল,” আপু, আপনি আমাকে আসতে বলেছিলেন।”

মিষ্টি অবাক হয়ে গেল। সে বলল,” আমি? কই নাতো! আমি শুধু রাইফাকে জানানোর জন্যে ফোন করেছিলাম। তখন রাইফাই বলল সে আসছে। তোমাকে নিয়েও যে আসবে বুঝিনি। তবে থ্যাংকস আসার জন্য।”

তুলি আঁড়চোখে রাইফাকে দেখল। রাইফা জীভ বের করে হাসল। অর্থাৎ সে মিথ্যা বলে তুলিকে এইখানে এনেছে। তুলি অবশ্য এই নিয়ে রাগ দেখাল না। সে নিজেই আসার জন্য অস্থির ছিল। রাইফা না বললেও এসে পড়তো।

যেখানে পুলিশ জেরা করছে সেখানে গিয়ে জানা গেল প্রিয়ন্তী নামের একটি মেয়ে প্রণয়ের জান বাঁচিয়েছে। সে পেছনেই ট্যাক্সিতে ছিল। যদি ওইসময় দ্রুত পদক্ষেপে সে প্রণয়কে হসপিটালে না আনতো তাহলে ঝামেলা হয়ে যেতো। আজমীর তার বিভিন্ন কথার মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাইছে এটা এক্সিডেন্ট। তবে প্রণয়ের বন্ধুরা সাক্ষী হিসেবে তার সাথে প্রণয়ের ঝামেলার কথা জানালো। এখানে যেহেতু ঝামেলার মূল উদ্যোক্তা তুলি, তাই তাকেও ডাকা হলো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তুলি যা সত্যি তাই বলে দিল। পুলিশ পুরো ঘটনা এমনভাবে শুনছিলেন যেন খুব উপভোগ করছেন। তুলির অস্বস্তিবোধ হচ্ছিল। ইন্সপেক্টর একবার জিজ্ঞেস করলেন,” আপনার সাথে এখন প্রণয় আহসানের কি সম্পর্ক? ”

তুলি উত্তর দেওয়ার আগেই রাইফা আগ বাড়িয়ে বলল,” গার্লফ্রেন্ড।”

তখন ইন্সপেক্টর বিভ্রান্ত হলেন।

” এটা কিভাবে হয়? তাহলে ইনি কে? ইনিও প্রণয় আহসানের গার্লফ্রেন্ড।”

প্রিয়ন্তীর সাথে তুলির তখনি প্রথমবার দেখা। প্রিয়ন্তী মনে মনে তুলিকে সজোরে একটা থাপ্পড় মারল। তারপর চুলের মুঠি ধরে বলল,” তামাশা দেখতে এসেছো এখানে? তোমার জন্যই প্রণয়ের এই অবস্থা। ফালতু মেয়ে!”

ইন্সপেক্টর ডাকলেন,” মিস প্রিয়ন্তী, আপনার সাথে প্রণয় আহসানের সম্পর্ক কি?”

প্রিয়ন্তীর সম্বিৎ ফিরল তখন। তুলিকে দেখে উল্টা-পাল্টা ভাবনা মাথায় এসে যাচ্ছিল। ব্যাপারটা অস্বস্তিজনক। প্রিয়ন্তী নিজেকে সামলে বলল,” জাস্ট ফ্রেন্ড।”

” ওহ আচ্ছা স্যরি। তাহলে আমারই ভুল হয়েছিল। আমি তখন শুনেছিলাম গার্লফ্রেন্ড।” ইন্সপেক্টর খানিক লজ্জিত হলেন। তুলি তখন প্রিয়ন্তীর দিকে তাকিয়ে ছিল। আর প্রিয়ন্তী তুলির দিকে। তারা কি ভাবছিল নিজেরাও জানে না হয়তো।

আজমীরকে থানায় নেওয়া হলো। সে যাওয়ার আগে তুলি সবার সামনেই তার কলার ধরে বলল,” আপনাকে আমি ছাড়বো না আজমীর ভাই। আপনি মারাত্মক ভুল করেছেন। এতোটা জঘন্য হবেন আশা করিনি।”

আজমীর নরম সুরে বলল,” তুলি তুমিও সবার মতো আমাকে ব্লেইম করছো।”

তুলি চেঁচিয়ে বলল,” শাট আপ৷ একটা শব্দও শুনতে চাই না আপনার মুখ থেকে। ”

আজমীরকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হলো। তার বিরুদ্ধে ‘এটেন্ড টু মার্ডার’ এর অভিযোগ করেছে সবাই। তবে বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ বলছিল আজমীর প্রণয়কে মে-রে ফেলতে চায়নি। সে ক্রোধ প্রকাশ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে এনেছে।

ধীরে ধীরে সবাই চলে যেতে লাগল। হসপিটাল ফাঁকা হয়ে গেল। তুলিকে একাকি করিডোরের কোণায় দাঁড়ানো দেখে মিষ্টি বলল,” চলে যাও তুলি। আর থেকে কি করবে?”

মিষ্টির এমন প্রশ্নে তুলি হতবাক। একবার প্রণয়ের সঙ্গে দেখাও হলো না। সে কিভাবে চলে যাবে? অবশ্য তুলির মনের অবস্থা মিষ্টির পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। সে শান্ত ভঙ্গিতে প্রশ্ন করল,” রাইফা কোথায় মিষ্টি আপু?”

” রাইফাকে দিয়ে ছোটমাকে বাড়ি পাঠাবো। শান বাড়িতে একা। তুমিও চলে যাও।”

” হসপিটালে কে থাকবে তাহলে?”

মিষ্টি মিষ্টি হেসে বলল,” এসব নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না৷ আমি আছি, প্রণয়ের বন্ধুরা আছে। ওরাই দেখবে।”

বন্ধু বলতেই তুলির সর্বপ্রথম মাথায় এলো প্রিয়ন্তীর কথা। মেয়েটির প্রতি তার কৃতজ্ঞতাবোধ হওয়া উচিৎ। কারণ সে ছিল বলেই প্রণয় ভালো আছে, বেঁচে আছে। সে না থাকলে কি হতো? তবে অদ্ভুতভাবে, তুলির মন থেকে কৃতজ্ঞতাটা আসছে না। সে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে। তুলি দৃঢ় কণ্ঠে বলল,” আমি এখানে থাকতে চাই আপু। প্লিজ?”

” আচ্ছা। সমস্যা নেই থাকো।”

রাইফা তুলিকে বিদায় জানিয়ে অজান্তাকে নিয়ে বের হয়ে গেল। যাওয়ার আগে সে বলল,” আমি দ্রুত ফিরে আসবো। তুই থাক।”

কিন্তু রাইফা আর ফিরে এলো না। সকাল হয়ে গেল। মাঝরাতে মিষ্টি জোর করে তুলিকে গাড়িতে এনে ঘুম পাড়িয়েছিল। ভোরে ঘুম ভাঙার পর সবার আগে তুলি প্রণয়কে দেখতে ছুটে এলো। কিন্তু সে দেরি করে ফেলেছিল। প্রিয়ন্তী ইতোমধ্যে প্রণয়ের কেবিনে উপস্থিত। সে প্রণয়কে নাস্তা খাওয়াচ্ছিল। প্রণয়কে দেখে বোঝাই গেল না তার এক্সিডেন্ট হয়েছে। শুধু বামহাতের মাসলে আর কপালে ব্যান্ডেজ। গালের কাছে একটু কেটে গেছে। এই অবস্থাতেই প্রণয় হাসছে। তাকে অত্যন্ত খুশি দেখাচ্ছে। প্রিয়ন্তী বলল,” নড়বি না খবরদার। তোর পায়ে মালিশ লাগাচ্ছি।”

প্রণয় রসিকতা করে বলল,” আপনার আদেশ শিরধার্য।”

প্রিয়ন্তী হাসল। প্রণয় আবার বলল,” সকাল থেকে একটার পর একটা আদেশ করেই যাচ্ছিস। এখন থেকে কি আমাকে তোর আদেশ মতোই চলতে হবে?”

” অবশ্যই। তোর জীবন আমি বাঁচিয়েছি। তাই এখন তোর জীবন আমার হয়ে গেছে।”

” তাই নাকি? এইটা আবার কেমন রুল?”

“এটা এমনি রুল। এবার হাঁ কর।”

” তোর হাত থেকে ঔষধের গন্ধ আসছে। আমি আর তোর হাতে খাবো না। স্টে অ্যাওয়ে।”

” আচ্ছা বাবা। তাহলে নিজের হাতে খা।”

” আর খাবোই না। গালের এই সাইডে এখনও জ্বলছে। চাবানোর সময় ব্যথা লাগে।”

” ওহহো! আগে বলবি না এটা? বরফ নিয়ে আসছি দাঁড়া।”

” লাগবে না।”

” অবশ্যই লাগবে। ”

প্রিয়ন্তী ছুটে বের হলো বরফ আনতে। তুলি দেয়ালের সাথে লেগে দাঁড়িয়ে ছিল। তার ইচ্ছে করল প্রিয়ন্তী বের হতেই পাটা বাড়িয়ে দিতে। তুলির পায়ের সাথে উষ্টা খেয়ে ধপ করে মেঝেতে উল্টে পড়ুক প্রিয়ন্তী। কিন্তু ইচ্ছে হলেই সব করা যায় না।

প্রিয়ন্তী চলে যাওয়ার পর তুলি ভেতরে প্রবেশ করল। প্রণয় তুলিকে দেখে বিস্মিত হয়ে বলল,” আরে, আপনি কখন এলেন?”

তুলি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য বলল,” আমাকে না ‘তুমি’ করে বলতেন? আমি তো আপনার স্টুডেন্ট!”

” স্টুডেন্ট তো ক্লাসরুমে। এটা ক্লাসরুম না।”

” ও। ভুলে গেছিলাম। আপনি কেমন আছেন এখন?”

” ভালো ছিলাম না। কিন্তু এখন অনেকটা ভালো বোধ করছি।”

তুলি মুচকি হেসে জানতে চাইল,” এখন ভালো বোধ করার কারণটা কি?”

প্রণয় মোবাইল হাতে নিয়ে বলল,” কারণ রাতে অনেক ভালো ঘুম হয়েছে।”

তুলির হাসি নিভে গেল। সে প্রণয়ের কাছে অন্য রকম উত্তর আশা করেছিল। মিষ্টি এসে তুলিকে দেখেই হাসল।

” তুমি এখানে? আমি আরও তোমাকে ক্যান্টিনে খুঁজে এলাম৷ চলো তুলি, কিছু খেয়ে নিবে।”

তুলি বিরস মুখে বলল,” আমার ক্ষিদে নেই।”

মিষ্টি চোখ বড় করে বলল,” এখন কিন্তু আমার হাতে মার খাবে। রাত থেকে পাগলামি করছো। একটুও ঘুমাতে চাওনি। আর এখন বলছো ক্ষিদেও পায়নি?”

প্রণয় ভ্রু কুচকে বলল,” রাত থেকে মানে? আপনি কখন এসেছেন তুলি?”

তুলি জবাব দেওয়ার আগেই মিষ্টি বলল,” কালরাত বারোটায় এসেছিল রাইফার সাথে। রাইফা তো ছোটমাকে নিয়ে বাড়ি চলে গেছে। আমি ওকেও যেতে বললাম, কিন্তু গেল না কিছুতেই। তোর সঙ্গে দেখা করেই নাকি যাবে।”

প্রণয় তুলির দিকে তাকিয়ে রইল। তুলি লজ্জায় অস্থির হয়ে বলল,” চলো আপু নিচে যাই৷ আমার ক্ষিদে পেয়েছে এখন।”

মিষ্টি হেসে বলল,” আসো।”

তুলি চলে যাওয়ার সময় প্রণয় ডেকে বলল,” একটু দাঁড়ান।”

তুলি দরজার কাছে গিয়ে থামল। মিষ্টি ততক্ষণে বের হয়ে গেছে। তুলি না তাকিয়েই প্রশ্ন করল,” কিছু বলতে চান?”

” আপনি সারারাত এখানে কেন ছিলেন? মানে কি করেছেন?”

তুলি ইতস্তত করে বলল,” রাইফার আমাকে নিতে আসার কথ ছিল। সে আসেনি। তাই আমি যেতেও পারিনি। ”

প্রণয় মৃদু হাসল। সেই হাসি দেখতে পেল না তুলি। তবে সে আন্দাজ করতে পারল যে প্রণয় হাসছে। প্রণয়ের পরবর্তী প্রশ্ন শুনেই তা বোঝা গেল। সে বলল,” শুধু রাইফা আসেনি বলেই আপনি যাননি? অদ্ভুত! ”

তুলি বিব্রত কণ্ঠে বলল,” রাইফা না এলে আমি কার সঙ্গে যাবো? এতোরাতে একা যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।”

” ওকে। বুঝলাম। আপনি তাহলে রাইফার জন্যই যাননি।”

” আপনি আর কিছু না বললে আমি কি যাবো? মিষ্টি আপু চলে গেছে।”

” যান।”

তুলি বের হতে নিলেই প্রিয়ন্তীর সঙ্গে দেখা হলো। হাতে করে দু’টো আইসক্রিম নিয়ে এসেছে সে। তুলির উদ্দেশ্যে বলল,” আরে তুলি, তুমি কখন এলে?”

” এইতো। একটু আগে।”

” চলে যাচ্ছো? তোমার সাথে তো ভালোমতো আলাপও হয়নি। আইসক্রিম খাবে?”

” না। থ্যাংকস।”

” ওয়েলকাম।”

তুলি বেরিয়ে এলো। প্রিয়ন্তী প্রণয়ের কাছে যাচ্ছে। তুলি কৌতুহল সামলাতে না পেরে দাঁড়িয়ে রইল। জানালা দিয়ে ভেতরে তাকাল। প্রিয়ন্তী প্রণয়ের গালে আইসক্রিম ঘঁষছে। প্রণয় জিজ্ঞেস করল,” দুইটা আইসক্রিম কেন?”

” একটা তোর আরেকটা আমার।”

” আমি কি তোকে বলেছি যে আইসক্রিম খাবো?”

” খাবি না?”

” না।”

” ঠিকাছে তাহলে দুইটাই আমার। আমি বসে খাবো আর তুই আমাকে দেখবি।”

তুলি বিষণ্ণমনে স্বগতোক্তি করল,” কেন তোকে দেখতে হবে? তুই কি বিশ্ব সুন্দরী? ছাগী কোথাকার!”

চলবে

#বেদনার_রঙ_নীল
তেইশতম পর্ব
লিখা- Sidratul Muntaz

রিসব বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফিতে চুমুক দিচ্ছে। কফির সুগন্ধের চেয়েও প্রখর তার ঘাড় অবধি চুলের শ্যাম্পুর সুগন্ধ! রাইফা বিমোহিত! ছেলেদের শ্যাম্পুর ঘ্রাণও বুঝি এতো সুন্দর হয়? এখন থেকে সে বয়েজ শ্যাম্পু ব্যবহার করবে। তাহলে মনে হবে রিসব সারাক্ষণ আশেপাশে আছে। আহারে, মানুষটি কারণে-অকারণে দূরে চলে যায়। আজ সে চোখ ভরে তাকে দেখে নিচ্ছে। কতদিন পর দেখা! রাইফা কত অস্থির হয়ে অপেক্ষায় ছিল। অথচ মানুষটি জানেও না।

গতরাতে যখন রাইফা এখানে এসেছিল তখন শান রিসবের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। তাকে দেখে খুশি আর বিস্ময়ে রাইফার হিঁচকি উঠে যাওয়ার উপক্রম। রিসব ফিসফিস করে কথা বলছিল। যাতে শানের ঘুম না ভাঙে। সেই কথা শোনার জন্য রাইফাকে তার কাছাকাছি যেতে হচ্ছিল। কি ভালো-লাগার মুহূর্ত ছিল! রিসব হাসপাতালে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু মিষ্টি তাকে যেতে নিষেধ করল। সকালে সবাইকে নিয়ে আসতে বলেছিল। রিসবও খুব ক্লান্ত ছিল। সে ঘুমিয়ে পড়েছিল। আর রাইফা তার পাশেই জেগে বসেছিল। ঘুমন্ত রিসবের মাথায় খুব সাবধানে হাত বুলিয়েছিল। সেই কথাও রিসব জানে না।

রাইফা এখন লুকিয়ে আছে জানালার আড়ালে। রিসব যদি ভুলবশতও এদিকে তাকায়, তাহলেই রাইফা সরে যাবে ফট করে।

রিসবের গালভরা উসকোখুসকো দাড়ি। চুল উড়ছে বাতাসে। তার উজ্জ্বল গায়ের রঙ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। তবে শরীরের খুব উন্নতি হয়েছে। মাসল বেড়ে ভয়ানক অবস্থা। তাকে ঠিক দেখাচ্ছে তামিল নায়ক বিজয় দেবেরাকন্দার মতো। রাইফা ফিসফিসিয়ে বলল,” আমার ব্যক্তিগত বিজয়।”

হঠাৎ শান বিকট শব্দে চেঁচিয়ে উঠল,” হোয়াট আর ইউ ডুয়িং হেয়ার? লুকিয়ে ভাইয়াকে দেখছো কেন? সামনে গিয়ে দেখো! নাকি সাহস নেই?”

রিসব চমকে পেছনে তাকাল। রাইফা থতমত খেয়ে সরে গেল। রিসব মুচকি হেসে ডাকল,” রাইফা? এদিকে আসো।”

রাইফা শানের দিকে চেয়ে কিড়মিড়িয়ে বলল,” ফাজিল ছেলে! তোমাকে থাপ্পড় দিবো।”

শান চকলেট খেতে খেতে নির্বিকারচিত্তে বলল,” দিয়ে দেখাও।”

রাইফা শানের হাত থেকে চকলেট কেঁড়ে নিয়ে ফেলে দিল।তারপর ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বলল,” ইডিয়েট।”

শান হাসি মুখে বলল,” আমার কাছে আরেকটা আছে।”

সে পকেট থেকে দ্বিতীয় চকলেট বের করল। রাইফা বারান্দায় ঢুকল। বিব্রত কণ্ঠে বলল,” আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে এসেছিলাম, হসপিটালে কখন যাবেন?”

রিসব ভদ্রলোকের মতো হাসি দিয়ে বলল,” এইতো, এখনি। কফি খাওয়া শেষ হোক। টায়ার্ড খুব। এখনও ঘুম আসছে। কফি না খেলে ক্লান্তি ছাড়বে না।”

” বুঝতে পেরেছি। আমি তো আপনাকে বলেছিলাম আরেকটু ঘুমান। আপনিই উঠে গেলেন।”

” তুমি কফি খাবে?”

” না। আমি যাই। আমার ফ্রেন্ডকে ফোন করতে হবে। কি জানি ওইদিকে কি অবস্থা!”

” আমার মিষ্টি আপুর সাথে কথা হয়েছিল। অবস্থা ভালো। টেনশনের কিছু নেই।”

” ওকে।”

রাইফা দ্রুত বারান্দা থেকে বের হতে নিয়ে হোচট খেল। শান এই দৃশ্য দেখে ফিক করে হাসল৷ রাইফা কটমট করে বলল,” ফালতু ছেলে।”

শান মজা করে বলল,” ভাইয়াকে দেখলেই তুমি এমন আউট অফ মাইন্ড হয়ে যাও কেন? ব্যাপারটা অনেক সিলি!”

” শাট আপ। আরেকটা কথা বললে তোমার চুল টেনে ছিঁড়ে দিবো আমি।”

তুলি মিষ্টির সাথে ক্যান্টিনে বসে আছে। গরম গরম পরোটা আর ডিম ভাজি অর্ডার করা হয়েছে। মিষ্টি আবার তুলির জন্য চিকেন স্যান্ডউইচও আনিয়েছে। তুলি অনীহা প্রকাশ করল,” আমি এতো খাবো না আপু।”

” কেন খাবে না? সারারাত ধরে এখানে আছো৷ তোমার কি ক্ষিদে পায়নি?”

তুলি আর কথা না বলে খেতে লাগল। কিন্তু তার বমি আসছে। খাবারের ঘ্রাণও সহ্য হচ্ছে না। ওইদিকে প্রিয়ন্তী আর প্রণয় কি করছে আল্লাহ মালুম। মিষ্টির ফোন বাজল। সে মোবাইলটা তুলির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,” নাও তুলি। রাইফা ফোন করেছে। তোমার সঙ্গে কথা বলবে।”

তুলি মোবাইল নিয়ে রিসিভ করল,” হ্যালো রাইফা।”

” স্যরি তুলি। রাতে আসতে পারিনি। তুই রাগ করিসনি তো?”

তুলি মুচকি হেসে বলল,” একদম না। তোর উপর আমি রাগ করি কিভাবে?”

” তুই কি সিরিয়াস? আমি তো ভেবেছিলাম এতোক্ষণে রেগে বোম্ব হয়ে আছিস। একবার মিষ্টি আপুর মোবাইল থেকে আমাকে ফোন করলি না কেন?”

” এমনি। ফোন করে কি হবে? মিষ্টি আপু বলেছিল তুই সকালে আসবি।”

রাইফা তুলির ঠান্ডা আচরণ দেখে হাঁফ ছাড়ল৷ সে ভেবেছিল তুলি রাগে কথাই বলবে না। কিন্তু তাকে শান্তই মনে হচ্ছে। অবশ্য রাইফা জানে না তুলি রাতে হাসপাতালেই থাকতে চেয়েছিল। তাই রাইফা না আসায় সে খুশি।

রাইফা বলল,”এইতো কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছি আমরা।”

” আমরা মানে? তুই আর কে?”

” আমার জান।”

” ও।”

তুলি প্রথমে কথাটা ধরতে পারেনি। তবে ফোন রাখার পর তার মাথায় এলো, জানটা আবার কে?

শান হাসপাতালে যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছিল তার ঘরে। রাইফা সেখানে ঢুকতেই শান একটা ভারী পেন্সিল বক্স ছুঁড়ে মারল। রাইফা মাথায় আঘাত পেয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল। তার কপাল ছিঁলে গেল। রিসব এই দৃশ্য দিয়ে ধমক দিয়ে বলল,” শান, এসব কি?”

শান অভিযোগের সুরে বলল,” ও পারমিশন ছাড়া আমার রুমে কেন ঢুকেছে? আমি ন্যাকেড ছিলাম।”

” তুই ন্যাকেড কোথায়? তোর প্যান্ট আছে।”

” কিন্তু শার্ট নেই।”

রাইফা চোখে হাত দিয়ে বলল,” আমি কিছু দেখিনি।”

রিসব হাত বাড়িয়ে রাইফাকে তুলল,” এদিকে এসো।”

রাইফা রিসবের হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। রিসব তাকে অন্য একটা ঘরে নিয়ে ব্যাগ থেকে টিস্যু আর সেভলন বের করে ছিঁলে যাওয়া জায়গায় মালিশ করে দিতে লাগল। রিসবের ব্যাগে সবসময় প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিসপত্র থাকে। স্যাভলন লাগানোর সময় রাইফার ত্বকে খুব জ্বলছিল। রিসব তখন কপালে ফুঁ দিয়ে দিচ্ছিল। রাইফা চোখ বন্ধ করে একদম চুপ হয়ে রইল। মনে মনে শানকে ধন্যবাদ জানাল।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় শান বলল,” রাইফা আপু, আই এম স্যরি।”

শানের কণ্ঠে ‘স্যরি’ শুনে রাইফার বিষম খাওয়ার উপক্রম। শান মাথা নিচু করে আরও বলল,” আমি তোমার সাথে ঠিক করিনি।”

রাইফা শানের নাক টেনে দিয়ে বলল,” ইটস ওকে, ছোট রুস্তম!”

” তুমি সত্যি রাগ করোনি?”

” রাগ করার প্রশ্নই আসে না। বরং আমি খুশি। থ্যাঙ্কিউ। ”

শান বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,” থ্যাঙ্কিউ কেন? তোমার মাথায় পেন্সিল বক্স ছুঁড়ে মারার জন্য?”

” হ্যাঁ। ধরে নাও সেজন্যই।”

শান কিছুই না বুঝে চোখমুখ কুচকে তাকিয়ে রইল। রিসব বের হয়েই সর্বপ্রথম জানতে চাইল,” শান তোমাকে স্যরি বলেছে তো রাইফা?”

রাইফা খোশমেজাজে উত্তর দিল,” হ্যাঁ বলেছে।”

রিসব হেসে শানের চুল ঘেঁটে দিয়ে বলল,” গুড বয়।”

শান আশ্চর্যান্বিত কণ্ঠে আওড়াল,” কিন্তু রাইফা আপু আমাকে থ্যাংকস… ”

রাইফা দ্রুত শানের মুখ চেপে ধরল। রিসব তাদের কান্ড দেখে হাসতে হাসতে সামনে এগিয়ে গেল। রাইফা ফিসফিসিয়ে বলল,” চুপ থাকো প্লিজ।”

শান এবার ঘটনা বুঝে ফেলল। রাইফার মতো সেও ফিসফিসিয়ে বলল,” তোমার মাথায় ব্যান্ডেজ ভাইয়া করে দিয়েছে তাই না?এইবার বুঝেছি তুমি আমাকে থ্যাংকস কেন দিলে! ”

” তুমি দিন দিন বেশি পন্ডিত হয়ে যাচ্ছো শান। একদুম চুপ।”

” পন্ডিত মানে কি?”

” পন্ডিত মানে ইন্টিলিজেন্ট।”

শান খুশি হয়ে বলল,” ওহ, থ্যাংকস!”

গাড়িতে ওঠার সময় শান পেছনে গিয়ে বসল। রিসব ড্রাইভিং সিটে উঠবে। সে শানকে পেছনে যেতে দেখে বলল,” তুই তো সবসময় সামনে বসতি। আজকে ওদিকে কেন?”

শান থাম্বস আপ দেখিয়ে বলল,” আমি এখানেই ঠিকাছি৷ ইটস অলরাইট। ”

রিসব বলল,” ঠিকাছে। রাইফা, তাহলে তুমি আমার সঙ্গে বসো।”

রাইফা খুশি খুশি দৃষ্টিতে শানের দিকে তাকাল। শান বলল,” ওয়েট, এর আগে রাইফা আপু আমার জন্য কয়েকটা কিন্ডার জয় নিয়ে আসবে।”

” এখন কিন্ডার জয় কেন? প্রয়োজন নেই রাইফা। তুমি বসো।”

শান উঠে বলল,” থাক আমি তাহলে সামনেই বসছি।”

রাইফা তড়িঘড়ি করে বলল,” না থাক, আমি কিন্ডার জয় নিয়ে আসছি। কয়টা আনবো শান?”

” অনলি ফাইভ।”

” হাসপাতালে গিয়ে তারপর কিনে দিবো। ওকে?”

” ডান।”

প্রিয়ন্তী প্রণয়ের কেবিন থেকে বেরই হচ্ছে না। তুলির তাদের কথা শুনতে ভালো লাগে না। তাই সেও কেবিনে ঢুকছে না। করিডোরে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ বলল,” এই জায়গা কি খুব বেশি সুন্দর? কি আছে ওইদিকে? আমিও একটু দেখি!”

তুলি একটু চমকালো। প্রণয় উঠে এসেছে। একদম তুলির পাশে দাঁড়ালো সে। তুলি লাজুক হাসল। প্রণয় দেয়ালে কনুই ঠেঁকিয়ে গালে হাত রেখে তুলির দিকে তাকিয়ে বলল,” কিছুই তো নেই। এতো মনোযোগ দিয়ে কি দেখছেন তাহলে?”

তুলি মাথা নিচু করে বলল,” আমার এখানে করার কিছু নেই। তাই দাঁড়িয়ে আছি। আপনি তো খুব ব্যস্ত।”

প্রণয় কি যেন বলতে নিচ্ছিল। ঠিক তখনি এসে বাগড়া দিল প্রিয়ন্তী,” তুই এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস প্রণয়? আমি একটু বাথরুমে গেলাম আর ওমনি তুই উঠে চলে এলি? ”

“শুয়ে থাকতে থাকতে বোর হয়ে যাচ্ছিলাম। একটু হাঁটি।”

” হাঁটার দরকার নেই। তোর শরীর কত দূর্বল জানিস? অনেক রক্ত গেছে। আমার কথা শোন প্লিজ। ”

প্রণয় বিরক্তি ঝরা কণ্ঠে বলল,” তোর সব কথা শুনতে হবে নাকি?”

” আমার কথা না শুনেই তো এই অবস্থা। আমি তোকে আজমীরের ডাকে যেতে নিষেধ করেছিলাম। তবুও তুই গেছিলি।”

প্রিয়ন্তী তুলির চোখের সামনে দিয়েই প্রণয়কে টেনে নিয়ে যেতে লাগল৷ তুলি চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছিল। কিছুক্ষণ পর রাইফা তুলির কাছে এসে শব্দ করল,” ভাউ।”

তুলি ভয় পেয়ে বলল,” আরে, কখন এলি?”

” মাত্র।”

শানও রাইফার সাথে এসেছে। সে একটা কিন্ডার জয় তুলির দিকে বাড়িয়ে বলল,” আপনার জন্য মিস।”

তুলি অনেক খুশি হয়ে বলল,” থ্যাঙ্কিউ। ”

রাইফা কোমরে হাত রেখে বলল,” আমার টাকায় কিন্ডার জয় কিনে তুলি আপুকে দিচ্ছো? আমাকে তো একটাও দিলে না!”

শান জবাব না দিয়ে কেবিনের দিকে হেঁটে গেল। সে কিন্ডার জয়গুলো ভাগ করে নিচ্ছে,” একটা রেডলাইটের জন্য। আরেকটা মিষ্টি আপুর জন্য। আরেকটা ভাইয়ার জন্য।”

রাইফা বিড়বিড় করে বলল,” ইবলিশ!”

তুলি হেসে জিজ্ঞেস করল,” তুই ওকে এতোগুলো কিন্ডায় জয় কিনে দিয়েছিস? এই ওয়েট, তোর কপালে কি হয়েছেরে?”

” আরে, ছোট একটা এক্সিডেন্ট…”

রাইফা থেমে গেল৷ কারণ প্রিয়ন্তী বের হয়ে রিসবকে জড়িয়ে ধরেছে তখন। এই দৃশ্য দেখে রাইফা হতভম্ব। তার মনে হলো কেউ বুঝি তার হৃদয় খামচে ধরেছে। প্রিয়ন্তী উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলল,” তুই কেমন আছিস দোস্ত? কতদিন পর দেখছি! একদম কালা ভূত হয়ে গেছিস। এতোবড় চুল রেখেছিস কেন? দাঁড়ির কি অবস্থা! পুরা রবীন্দ্রনাথ লাগছে।”

রিসব হাসতে হাসতে বলল,” তুই দেখি আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়ে গেছিস।”

” আচ্ছা তাই? উফ, লজ্জা পেলাম।”

রিসব প্রিয়ন্তীকে নিয়ে প্রণয়ের কেবিনে ঢুকল। রাইফা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলল,” এখান থেকে চল তুলি। ”

” প্রণয়ের সাথে দেখা করবি না?”

” পরে করবো।”

রাইফা তুলিকে নিয়ে ক্যান্টিনে এলো। তার ক্ষিদে পেয়েছে খুব। সকাল থেকে তেমন কিছুই খাওয়া হয়নি। রাইফা একা খাবে না। তাই অগত্যা তুলিকেও ভরাপেটে আবার খেতে বসতে হলো। খাওয়ার সময় তুলি জিজ্ঞেস করল,” তোদের সাথে ওই ছেলেটা কে?”

” রিসবের কথা বলেছিলাম না?”

” ও আচ্ছা। উনিই তাহলে রিসব? আমার সাথে পরিচয় করালি না কেন?”

” কিভাবে করাবো? এর আগেই তো লাল চুলের পেত্নীটা চলে এলো।”

তুলি খুব জোরে হেসে উঠল। রাইফা প্রিয়ন্তীকে ‘লাল চুলের পেত্নী’ বলায় সে ভীষণ মজা পেয়েছে। একটু পরেই রিসব আর প্রিয়ন্তী উপস্থিত হলো ক্যান্টিনে। তারা রাইফাদের টেবিলের ঠিক সামনের টেবিলেই বসল। রাইফার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তুলিরও রাগ হলো। প্রিয়ন্তীকে দেখলেই তার রাগ হচ্ছে গতরাত থেকে।

রিসব হঠাৎ রাইফাকে দেখে মুচকি হাসল। রাইফাও উত্তরে সামান্য হাসল। রিসব খাবার অর্ডার করতে উঠল। প্রিয়ন্তীও তার সাথে উঠে দাঁড়াল। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে বলল,” তুই যে কেমন ভগাব্যান্ড হয়ে গেলি দোস্ত! গ্র্যাজুয়েশনটা কম্পলিট করা উচিৎ তো। আবার ভর্তি হো না! আমরা সবাই তোকে অনেক মিস করি।”

রিসব মৃদু হেসে বলল,” এসব পড়াশুনা আমার দ্বারা আর হবে না। নেক্সট মান্থ আমি ট্রেনিং-এ যাচ্ছি।”

” আবার কিসের ট্রেনিং?”

রাইফা তাদের কথা শুনছিল আর ফুঁসছিল। একসময় সে তুলিকে বলল,” দোস্ত আমাকে একটা হেল্প করতে পারবি?”

” কি রকম হেল্প?”

” এই মেয়েটাকে একটা শিক্ষা দিবো।”

” তুই কি প্রিয়ন্তির কথা কথা বলছিস?”

” এর নাম প্রিয়ন্তী না হয়ে বিরক্তি হওয়ার দরকার ছিল। ইরিট্যাট করে দিচ্ছে একদম।”

তুলি হাসিমুখে বলল,” প্লিজ কিছু একটা কর। আমিও কালরাত থেকে অনেক ইরিট্যাট হচ্ছি।”

” সত্যি বলছিস?”

” হুম!”

” ঠিকাছে। তাহলে দ্যাখ এবার আমি কি করি!”

রাইফা আর তুলি হাত মিলিয়ে দ্রুত খাওয়া শেষ করল।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here