যদি_দেখা_না_হতো Season_02,পর্ব_১২,১৩

0
218

#যদি_দেখা_না_হতো Season_02,পর্ব_১২,১৩
#Writer_Tanisha_Esu
পর্ব_১২

আমাদের পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে গেলো,,সাজেক থেকে বেশ খানিক দূরে একটা রিসোর্ট ভাড়া করলো শুভ্র,,রাতের ডিনার করে আমরা শুয়ে পরলাম।কাল সকালেই আমার আর শুভ্রের যাএা শুরু হবে কি যে আনন্দ লাগছে বলে বোঝাতে পারবো না,, এসব ভাবতে ভাবতে শুভ্রকে জড়িয়ে ঘুমাই পরলাম

আমরা ভোরে উঠলাম,, ব্রেকফাস্ট করে রওনা শুরু করলাম,,,এখানে একবারই স্কট হয় ৯টায়,,মিস করলে আর সাজেক ঘুরা হবেনা ওই দিনের জন্য।গাড়ি করে যাএা শুরু করা সাজেক যাওয়ার যাএা শুরু হলো,,প্রায় ২ ঘন্টা আঁকা-বাঁকা রাস্তার পার করার পর শেষ ঢাল পৌছালাম।অবশেষে সাজেক পোঁছালাম,,, সেখানে আলো রিসোর্টে আমরা রুম বুক করলাম,, আশেপাশের জায়গা এতো সুন্দর যা প্রকাশ করা যাবেনা।

দুপুরে,,

মনটানা হোটেলে খাবার খেয়ে রেষ্ট করতে লাগলাম আমরা।

মেঘের রাজ্য ও রিসোর্টের জন্য সাজেক বিখ্যাত,,,সারি সারি টিনের ঘর আর সবুজ সবুজ গাছপালা যেন দু-পাহাড়কে আরও সুন্দর করে তুলেছে।দুটো পাহাড় পরিষ্কার করে দেখাই যাচ্ছে না মেঘের জন্য।আর এখানের মানেষের পোষাক,, আর দৃশ্য অনেক সুন্দর

বিকেলে আবার ঘুরতে বের হলাম,,

স্টোন গার্ডেন,,বাংলাদের স্টোন যেখানে ২০ টাকার টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকতে হয়।বিভিন্ন স্টোন,,আর চারিদিকে তাকালে গাছপালা ভর্তি পাহাড়,,পিক তোলার জন্য বেষ্ট প্লেস,,আমি আর শুভ্র অনেক কাপল পিক তুললাম,,বেশ ধারে একটা দোলনা আছে ভয়ে ভয়ে শুভ্রকে নিয়ে বসলাম আসলেই আজ মনে হচ্ছে আমি খুবই লাকি।এখানের মানুষের ব্যবহার পোশাক বেশ বৈচিত্র্য ধরনের,,পোশাক নিয়ে কোন কমেন্ট করলে তারা যদি বুঝতে পারে তাহলে আপনার খবর আছে,,

রাতে হেলিপেটে সময় কাটিয়ে রিসোর্ট এ চলে আসলাম।

শুভ্রঃ তো মহারানি আজ কেমন লাগলো বাএখানে ঘুরে

তানিশাঃ just amazing ?,,আচ্ছা কাল কোথায় যাবো

শুভ্রঃ কংলাক পাড়া

তানিশাঃ আমরা এখানে কতোদিন থাকবো

শুভ্রঃ আরও দুইটা দিন,,কেন তোমার ভালো লাগছেনা

তানিশাঃ অনেক ভালো লাগছে

শুভ্রঃ কাল সকালে উঠবে

তানিশাঃ কেনো

শুভ্রঃ তা পরে জানতে পারবে,,এখন কাছে এসো

শুভ্র আমাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরলো,, আমি ওর মায়া ভরা মুখটা দেখতে ছিলাম।চোখের পাতায় চুমু একে দিয়ে আমিও ওকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।

শুভ্রের ডাকা-ডাকিতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো,,,

তানিশাঃ কি হয়ছে,,আরেকটু ঘুমাবো আমি

শুভ্র আমাকে এমন দেখে কোলে তুলে নিলো,,নিয়ে বাইরে চলে আসলো।চারিদিকে আলোতে আমি চোখ মিলে তাকালাম,,,পাহাড়কে মেঘগুলো ঢেকে রেখেছে,,,তার ফাঁক দিয়ে ভোরের আলো উকি দিচ্ছে,,,একেক সিজনে একেক রকম লাগে,,, সত্যিই মনোমুগ্ধকর

শুভ্রঃ এটা দেখার জন্যই তোমাকে এতো তারাতারি উঠতে বলেছিলাম

আমি শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলাম খুশির জন্য,,পরে দেখলাম লোকেরা কেমন মুচকি মুচকি হাসছে,,তারাতারি ছেড়ে রুমে চলে আসলাম

তানিশাঃ ইসস,,কি লজ্জাটাই না পেলাম সকাল সকাল

শুভ্রঃ লজ্জা পরে পাবা এখন রেডি হয়ে নাও বেড়াতে হবে(পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে)

আমিও লক্ষ্ণী মেয়ের মতো শাওয়ার নিয়ে,, ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে নিলাম।ঠিক ৯টার দিকে আমরা বেড়ালাম।সাজেক ভ্যালি থেকে কংলাক পাড়া খুব একটা বেশি দূরে না।এটা হাইকিং এর জন্য আরামদায়ক জায়গা।অবশেষে কংলাক পাড়াতে পৌছালাম,,,ওখান থেকে চারিদিক স্পষ্ট দেখা যায়।এখানেও অনেকগুলো পাথড় আছে,,যেগুলো অনেক পিচলা,,উঠলেও যদি পা ফসকে যায় তাহলে আর বাঁচার আশঙ্কা নাই।

কিছুক্ষণ পর দেখতে পারলাম একটা মেয়ে পাথড়ে উঠতে গিয়ে ফসকে যেই পরতে যাবে তখন শুভ্র মেয়েটিকে চেপে ধরে,,তাও আবার ফ্লিমি স্টাইলে,,,একে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে,,মন বলছে দুজনকেই ধাক্কা মেরে ফেলে দি।একজন মেয়ে গিয়ে বলতে লাগলো,,

মেয়েটিঃ সাবু তুই ঠিক আছিস তো

শুভ্র মেয়েটিকে ছেড়ে আমার পাশে এসে দাড়ালো শুভ্র,,ঘুরার ইচ্ছেই মাটি করে দিলো এই লোকটা।

সাবুঃ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য,,হাই আমি সাবরিনা,,সবাই আমাকে সাবু বলেই ডাকে,,আপনার পরিচয়(হাত বারিয়ে)

শুভ্রঃ আমি শুভ্র আহম্মেদ(হ্যান্ডসেক করে)

সাবুঃ আপনি কি ট্রাভেলের জন্য এসেছেন

শুভ্রঃ নাহহ হানিমুনের জন্য,,এই তো আমার ওয়াইফ তানিশা ঈশু

হানিমুনের কথা শুনতেই মেয়েটির মুখটা কালো হয়ে গেলো। তারপর আমরা আসার পথে একটা ক্যান্টিন দেখতে পেলাম,ক্যান্টিনের নাম ছিলো “প্রশান্ত বেকারিয়া ক্যান্টিন” ওখান থেকে লান্চ করলাম।এখানেও একটা স্পেশাল সুন্দর্য লেগ থাকায়। তারপর আমরা রওনা দিলাম রিসাং ঝর্ণা দেখার উদ্দেশ্যে,,,

শুভ্রঃ কি হয়ছে তোমার,,, শরীর কি খারাপ লাগছে, এমন মন মরা হয়ে আছো কেনো??

তানিশাঃ কিছুনা

এই বলে আমি আগে আগে হাটতে লাগলাম।অনেকগুলো সিঁডি অতিক্রম করার পর পৌছে গেলাম রিসাং ঝর্ণা।পাহাড়ের বুক চিড়ে লাইন বেয়ে নেমে আসছে অতিবেগে ঝর্ণা,,,,,সবুজের মধ্যে নীলাভ আর মেঘগুলো ভাসছে…..কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার মুডটা ঠিক হয়ে গেলো আবার খুশি হয়ে গেলাম।পাশেই ছিলো আলুটিলা গুহা,,এটা সন্ধ্যা ৬টার পর বন্ধ করে দেয়,,স্পেশাল পারমিশন নিয়ে আমরা অনেকেই গুহার মধ্যে ঢুকলাম মশাল হাতে নিয়ে,,সন্ধ্যার সময় অন্ধকার হওয়াটা স্বাভাবিক,,,ভালোভাবে দেখে না চললে পা মুচকে যাবে তা কোন অস্বাভাবিক কিছুনা কারণ উঁচু নিচু গর্ত আছে,,,,এখানে আসতে হবে নিরিবিলি সময় তাহলে মনটা প্রশান্ত হবে।রাত ৯টায় আগের রিসোর্ট পৌছালাম।আর হাতে থাকলো একটা দিন,,এই একটা দিন সাজেক ভ্যালিতেই একটু এনজয় করবো পরের দিন আবার বাড়িতে ফিরতে হবে।

আমি পায়ের উপর পা তুলে ক্যামেরাতে পিক গুলো দেখছি,,,দু একটা পিক খারাপ এসেছে সেগুলো ডিলিট করলাম।

শুভ্রঃ এভাবে বসে থাকলে হবে চলো ডিনার করতে যায়

তানিশাঃ আচ্ছা চলো

চার সিট ওয়ালা টেবিলে বসলাম,,শুভ্র খাবার অর্ডার করলো,,তার কিছুক্ষণ পর দুটো মেয়েকে আমাদের পাশে বসার জন্য রিকুয়েষ্ট করলো ওয়েটার।মেয়ে দুটি আর কেউ না সাবুটাবু আর তার বান্ধবী,, মেজেজটা এতো খারাপ হয়ে গেলো আর বলার কথা না।

সাবুঃ আরে আপনি,,কয় নাম্বার রুমে উঠেছেন

শুভ্রঃ ১০১ (মুচকি হেসে)

তারপর তারা কথা বলতে লাগলো মনে হচ্ছে বিএফ-জিএফ।খাবার শেষ করে আমি চলে আসলাম,,শুভ্র ডাকলেও আর পেছনে তাকালাম না। এসে লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পরলাম।শুভ্র এসে শুয়ে পরলো,,

কিছুক্ষণ পর,,,

শুভ্রঃ জানি তুমি এখনো ঘুমাও নি,,,কি হয়ছে তোমার

তানিশাঃ নিশ্চুপ

শুভ্রঃ কি হলো বলো

তানিশাঃ কিছুনা

শুভ্রঃ তোমার কি নিশ্চুপ হওয়ার কারণ সাবু

তানিশাঃ নিশ্চুপ

শুভ্রঃ তোমার জায়গাটা অন্য কাউকে দেওয়া অসম্ভব বুঝছো,,আমি তোমাকেই ভালোবাসি

তানিশা শুভ্রের দিকে ঘুরে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো

শুভ্রঃ এই পাগলি কাঁদছো কেনো??

তানিশাঃ আমি এখানে থাকবো না

শুভ্রঃ তুমি কি কাল চলে যেতে চাও

তানিশাঃ হুম

শুভ্রঃ আচ্ছা,, কালই চলে যাব প্রমিস। কান্না করা অফ করো

তানিশা শান্ত হয়ে গেলো,,সিন্ধ্যান্ত নিলো কালই চলে যাবে,,তানিশা ঘুমানোর পর শুভ্র ব্যাগ গুছিয়ে ঘুমিয়ে পরলো



চলবে,,,,,

#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১৩ (# Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu


হানিমুন থেকে এসেছে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলো,,তানিশার শরীর খুব একটা ভালো না,,শুভ্রও তানিশাকে নিয়ে অনেক টেনশনে আছে।তানিশা গোপনে চেকআপ করতে গেছিলো আজ তার রিপোর্ট আসবে,,শুভ্র অফিসে চলে যাওয়ার এক ঘন্টা পর তানিশা ও হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো,মাঝপথে আয়ুশি আর নিতির সাথে দেখা।

নিতিঃ আরে তানিশা দোস্ত কেমন আছিস(জড়িয়ে)

তানিশাঃ আলহামদুলিল্লাহ তোরা

নিতিঃ ভালো না,তোকে ছাড়া একটুও ভালো লাগেনা

আয়ুশিঃ আরে এসব বাদ দে,, দুলাভাই কেমন আছে

তানিশাঃ আলহামদুলিল্লাহ ও ভালোই আছে

নিতিঃ তো দুলাভাইকে নিয়ে মিট কর একদিন ক্যাম্পাসে

তানিশাঃ কবে??

আয়ুশিঃ এই সপ্তাহে

তানিশাঃ ওকে,,তো আকাশ আবির কোথায়??

আয়ুশিঃ ওরা তো ওই রেষ্টুরেন্টে(ইশারা করে দেখিয়ে)

নিতিঃ চল দোস্ত তুই,,অনেক দিন আড্ডা দি নাই একসাথে,,চল প্লিজ

তানিশাঃ আমি??

আয়ুশিঃ হুম চল প্লিজ

তানিশাঃ আচ্ছা চল(খুশি হয়ে)

আমরা তিনজনে মিলে রেষ্টুরেন্টে গেলাম,,,গিয়ে দেখি আকাশ আবির অলরেডি বসে আছে,,,আকাশ আর আবির আমাকে দেখে খুবই খুশি হলো,,,,,,,,,

আকাশঃ আরে এটা কে রে,,তানিশার মতো লাগে

তানিশাঃ হারামজাদা,,,আমি তানিশাই(মাথায় মেরে)

আকাশঃ এতোক্ষণ বিশ্বাস হয়ছিলো না মার খেয়ে জ্ঞান আসলো

সবাই হাসা শুরু করলো,,ওয়েটারকে ওর্ডার দিয়ে আমরা বেশ মজাই করছি,,আবির কয়েকটা পিক তুললো সবাইকে নিয়ে।।

তানিশাঃ তো আবির,,নিতির সাথে সব ঠিক আছে তো

দুইজনই আমার আমার দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকলো,,,

নিতিঃ তা,,,তানিশা এগুলো কি বলছিস

তানিশাঃ আমি অনেক আগে থেকেই জানি,,ট্রিট টা তোলা থাকলো,,আজ আমি সবাইকে খাওয়াবো

আয়ুশিঃ আহহ,,,সবাই প্রেম করে আর আমি সিঙ্গেল মরলাম(ঢং করে)

তানিশাঃ তো আকাশের সাথে বিয়ের ডেট কবে??

আকাশঃ তুই জানলি কেমনে?

তানিশাঃ এখন ভার্সিটিতে যায় না বলে কি তোমাদের খবরও রাখা বন্ধ করে দিছি,,তোরা আপন না ভাবলেও আমি আপন ভাবি(অভিমানি সুরে)

আয়ুশিঃ সরি বেবি এমন আর কখনো হবেনা

নিতিঃ সরি(তানিশাকে জড়িয়ে)

তানিশাঃ হয়ছে হয়ছে

খাবার চলে আসলো,,সবাই খাইতে লাগলো,আর টুকটাক কথা হচ্ছে। এমন সময় আমার চোখ আটকে গেলো,,শুভ্র আর আরেকটা মেয়ে হাতে হাত দিয়ে বসে আছে,,ভালো করে মুখটা দেখে চমকে উঠলাম এতো সেই সাবরিনা মেয়েটা।খাবার খাওয়ার ইচ্ছে ই মরে গেলো

তানিশাঃ শোন আজ আসি রে,,একটা ইমারজেন্সি কাজ মনে পরে গেছে

আবিরঃ আরে একটু খেয়ে তো নে

তানিশাঃ আমি বিল প্রে করে চলে যাচ্ছি,,আবির ট্রিটের কথা মনে রাখিস আসি

আমি সেখান থেকে চলে আসলাম।।।।

আবিরঃ এই তানিশার কি হলো

আয়ুশিঃ কি জানি কি হলো,,,

নিতিঃ হয়তো কোন ইম্পটেন্ট কাজ মনে পরে গেছে

আকাশঃ হবে হয়তো,,কি বলিস তানিশা বিয়ের পর অনেক সুন্দর হয়ে গেছে তাইনা

আবিরঃ একদম

তানিশা বিল প্রে করে বেড়িয়ে আসলো রেষ্টুরেন্ট থেকে,,,আজ আর হাসপাতালে যাওয়া হলো না তাই বাড়িতে চলে আসলো।তানিশার কেমন জানি অসস্তি হতে শুরু করলো,,চোখের সামনে তার হাজবেন্ড অন্য কোন মেয়ের সাথে হাতে হাত দিয়ে বসা দেখলে এমনি হয়।

রাতে,,

টংটং…. টিং টং….টিং টং….

তানিশা গেট খুলে দেখে শুভ্র দাড়িয়ে আছে,,তানিশা সাইড করলো শুভ্র ভেতরে চলে গেলে,,তানিশা গেটটা অফ করে দিলো।তারপর টেবিলে খাবার বাড়তে লাগলো।

শুভ্রঃ আমি ফ্রেস হয়ে আসছি

তানিশাঃ নিশ্চুপ

শুভ্র গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসলো,,

শুভ্রঃ একটা প্লেট কেনো,,তুমি খাবেনা

তানিশাঃ আমি আগেই খেয়ে নিছি

শুভ্রঃ কি হলো ও কি ঠিক আছে(মনে মনে) তোমার কি শরীর খারাপ হয়ছে পাগলি

তানিশাঃ আচ্ছা,, সারাদিন কই ছিলেন

শুভ্রঃ অফিসে কেনো??

তানিশাঃ ওওও ভালো,,আমি ঘুমাতে গেলাম,,আপনি খেয়ে এসে ঘুমাই পরেন

তানিশা নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পরলো,,,চোখের জল আজ বাধ মানছে না,, তার কাছে শুভ্র মিথ্যা বললো আসলেই খুব কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে তানিশার….

শুভ্রঃ আজ কি হয়ছে ওর,,,শরীর হয়তো বেশিই খারাপ,,, নাহ কাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেই হবে(মনে মনে)

শুভ্র ডিনার করে রুমে এসে লাইট অফ করে শুইয়ে পরলো,,,তানিশাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বুঝতে পারলো তানিশা ঘুমাই গেছে,,,তারপর তানিশাকে শক্ত করে চেপে ধরে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো শুভ্র।

সকালে,,,

হাজার চেষ্টা করেও তানিশাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারলো না শুভ্র,,,হার মেনে অফিসে চলে গেলো মুখ ফুলিয়ে। তানিশা আজও একই টাইমে বেড়ালো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে,,খুব টেনশন হচ্ছে তানিশার।

হাসপাতালে পৌছে,,,

১০২ নং রুমে চলে আসলো তানিশা,,,

তানিশাঃ May i coming,,

ডাক্তারঃ জ্বী

তানিশাঃ টেষ্ট এর কাগজ আপনার কাছে ডাক্তার

ডাক্তারঃ দিপু ওই রিপোর্টটা দাও তো মিসেস তানিশা নামে

দিপু নামক ছেলেটা ডাক্তারের হাতে কাগজ গুলো দিয়ে রুম থেকে চলে গেলেন,,,

ডাক্তারঃ congratulation মিসেস তানিশা আপনি মা হতে চলেছেন,,

তানিশাঃ সত্যি

ডাক্তারঃ জ্বী এই নিন টেষ্ট গুলো

সবশেষে তানিশা বেড়িয়ে আসলো হাসপাতাল থেকে,,

তানিশাঃ তুমি আব্বু হতে চলেছো শুভ্র,,আজ তোমার আমার মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।আমি মা হবো(অনেক খুশি হয়ে)

এদিকে,,

সন্ধ্যা থেকে রাত হয়ে গেলো শুভ্র এসে দেখে তানিশা বাড়িতে নেই,,ফোনের উপর ফোন করতে লাগলো কিন্তু,,নো রিস্পন্স,,,আত্নীয়-স্বজন,, বন্ধু-বান্ধব সবার কাছে ফোন দিছে কিন্তু সবারই এক কথা তানিশা আসিনি।শুভ্র খুব টেনশনে পরে গেলো,, অনেক জায়গায় খুঁজলো কিন্তু তানিশাকে পেলো না।বাড়িতে এসে দেখলো তানিশা এখনো বাড়িতে ফিরেনি,,

শুভ্রঃ তানিশা তুমি কোথায়,,, ফোন ও ধরো না কেনো,,খুব টেনশন হচ্ছে আমার,,আর সহ্য করতে পারছিনা(চিৎকার করে)

ঠিক রাত নয়টায় ফোন আসলো,,,

শুভ্র তানিশা ফোন দিছে এই ভেবে ফোনটা হাতে নিলো কিন্তু আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসলো,,,শুভ্র রিসিভ করলো একজন মেয়ে ফোন দিছে,,,

শুভ্রঃ হ্যালো,,কে আপনি

মেয়েটিঃ আমি তোমার অতি পরিচিত

শুভ্রঃ মেজাজ গরম করাইয়েন না কি বলতে চান সেটা বলেন

মেয়েটিঃ তানিশাকে খুঁজছেন কিন্তু পাচ্ছেন না তাইতো

শুভ্রঃ তানিশা কোথায় আর আপনি কে??

মেয়েটিঃ এসএমএস এ একটা ঠিকানা দিচ্ছি চলে আসেন নাহলে আর কখনো আপনার ওয়াইফকে দেখতে পাবেননা

শুভ্রঃ আমি আসছি,,কিন্তু তানিশার গায়ে হাত দিলে আপনারা বাঁচতে পারবেননা বলে দিলাম(রেগে)





সকালে,,,

শুভ্রঃ গুড মরনিং,,পাগলি

তানিশাঃ মরনিং(মাথায় হাত দিয়ে) আমি কোথায়

শুভ্রঃ তুমি বাড়িতে আবার কোথায় থাকবে

তানিশাঃ আমি তো রাস্তায় ছিলাম কাল

শুভ্রঃ তুমি অজ্ঞান হয়ে পরছিলে তাই কিছু মনে নাই,,,আচ্ছা ব্রেকফাস্ট নিচে রাখা আছে তুমি খেয়ে নিও আমি অফিসে যাব

তানিশাঃ আজ একটু তারাতারি আসবা প্লিজ

শুভ্রঃ কেনো??

তানিশাঃ তোমাকে কিছু বলার আছে আমার??

শুভ্রঃ আমারও তোমাকে কিছু বলার আছে,,,আসি তাহলে

তানিশাঃ আচ্ছা সাবধানে যেও

শুভ্র তানিশার কপালে একটা চুমু একে দিলো,,,, তারপর চলে গেলো।তানিশা গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে রান্না করতে লাগলো।

বিকেলে,,,

তানিশাঃ আজ তোমাকে আমি অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবো শুভ্র,,,আমি তোমাকে বলার পর তোমার রিয়েকশনটা দেখার জন্য পাগলের মতো হয়ে আছি,,ইসস কখন যে রাত হবে আর কখন যে শুভ্র আসবে,,একটা ফোন করলে কেমন হয়।নাহহ সে তো এখন বিজি থাকবে,,আর তো কয়েক ঘন্টা

তানিশা বেলকনি থেকে বাইরের পরিবেশ দেখছে আর হাতে রিপোর্টগুলো নিয়ে রেখেছে মুচকি মুচকি হাসছে।

রাতে,,,

শুভ্র এসে ফ্রেস হয়ে খাবার খেয়ে নিলো,,তানিশার কাছে শুভ্রের চোখ মুখ কেমন জানি লাগছে।

তানিশাঃ ওই এবার বলি??

শুভ্রঃ রুমে চলো আগে

শুভ্র আর তানিশা রুমে চলে আসলো,,তানিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এক বুক সাহস জোগালো,,,

তানিশাঃ এবার বলি?

শুভ্রঃ আগে আমি বলি??

তানিশাঃ আচ্ছা,, বলো(মুচকি হেসে)

শুভ্রঃ আসলে তানিশা,,,আমার

তানিশাঃ কি হলো বলো তোমার কি??।

শুভ্রঃ আমার ডিভোর্স চাই

তানিশাঃ দেখ শুভ্র এখন আমার মজা করার মুড নাই

শুভ্রঃ আমি সিরিয়াস,,এই নাও পেপার আমি সাইন করে দিয়েছি তুমি সাইন করে দিও…..

এই বলে শুভ্র কোথায় যেন চলে গেলো,,আমার শরীর যেন শীতল হয়ে উঠছে,,নিজের কানকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিনা,,এটা কি আমার শুভ্র নাকি অন্য কেও,,,ডিভোর্স কেন চাইছে।

ডিভোর্সের পাতাটা উল্টে দেখি ও অলরেডি সাইন করে দিছে,,বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো,,এ কেমন কষ্ট। টেবিলের উপর রাখা টেষ্টের রিপোর্টগুলো ছিলো ছোট ছোট করে ছিড়ে পুড়িয়ে ফেললাম।সারারাত ফ্লোরে বসেই কান্না করেছি,,সে আর রাতে বাড়ি ফিরেনি,,হয়তো সকালে ফিরবে।

তানিশাঃ কেন এমন করছো শুভ্র,,আমার অন্যায়টা কি,,আমাকে তুমি বলেছিলে কখনো ছেড়ে যাবেনা তাহলে এগুলো কি??আমাকে জানতেই হবে ডিভোর্সের কারণ…

ভোরে,,,

শুভ্র বাড়ি ফিরে আসলো,,



চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here