চিরসাথী_তুমি_আমার – পর্ব ০৪,০৫

0
403

#চিরসাথী_তুমি_আমার – পর্ব ০৪,০৫
লেখনীতেঃ #রাফিজা_আখতার_সাথী
০৪

আর মাত্র কয়েকটা দিন। এরপর সারাক্ষণ মানুষটা আমার আসেপাশে থাকবে। দুইজন এক ছাদের নিচে, এক বিছানায় থাকবো। ইস, কি লজ্জা লজ্জা!

সায়নের দেওয়া মেসেজের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম আমি। জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছিলাম এমন সময় বড়আপা আর মেজআপা আমার ঘরে আসলো। আমাকে দেখে বড়আপা বলল, “সায়ন যাওয়ার সময় তো আমাদের তোর সাথে থাকতে বলে গেলো। তাই আমরা চলে আসলাম এখানে। তোর সমস্যা হবে নাকি?”
“আমার আবার কি সমস্যা হবে আপা! আমিতো তোদেরকে ডাকতে যাবো বলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কালকে থেকে তো বাড়িতে মানুষ ভরে যাবে। এরপর ওই বাড়ি চলে যাবো। আর কোনোদিম একসাথে থাকায় হবেনা আমাদের তিন বোনের।”

আমার কথা শুনে দুজনই হাসি দিয়ে উঠলো। মেজআপা আমার হাতে টোকা দিয়ে বলল, “সারাদিন কি স্বামীর লেজে লেজে ঘুরবি নাকি যে আমাদের সাথে আর তোর থাকাই হবেনা?”
আমি কোনো জবাব দিলাম না দেখে বড় আপা বলল, “আহ রিয়া, ওকে জ্বালাস না। বেচারির প্রথম বিয়ে হচ্ছে তাই কথা ঠিকঠাক লাইনে দাড়াচ্ছে না।”
“আপা তোদেরকে এখানে মজা করতে আসতে বলা হয়নি। সিরিয়াস কথাটাও মজা হিসেবে নিস তোরা।”
ওরা কিচ্ছুক্ষণ চুপ থাকলো। মেজ আপা বলল, “হ্যা রে সাথী, সায়ন ভাই আমার সাথে কথা বলেনা কেন? তখন থেকে কত কিছুই বললাম, উত্তর পেলাম না কোনো কথার।”
বড় আপা বলল, “তোর কোথাও বোঝার ভুল হয়েছে রিয়া। কই আমার সাথে তো এমন করলোনা সায়ন! দেখলিনা যাওয়ার সময়ও আমাকে বলে গেলো সাথীর ঘরে আসতে!”
মেজ আপা বলল, “সেটাই তো আপা। তোমাকে বলেছে আমাকে তো বলে নি। একটু আগেও যখন এই ঘরে এসেছিলাম আমি কত কি জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু সায়ন ভাই জবাব দেয়নি।”
বড় আপা খানিকক্ষণ ভেবে বলল, “তোর উপর ও কোনোভাবে রেগে নেয়তো?”
“আমার উপর রেগে থাকবে কেন আপা? আমিতো সায়ন ভাইকে কোনোদিন কষ্ট দিইনি, তার সাথে খারাপ কথা বলিনি।”, মেজআপা হতাশ কণ্ঠে বলল।

আমি গাধীর মত কাজ করে বসলাম। এক কথায় পেট পাতলা যাকে বলে, কোনো কথায় আটকে রাখা যায়না। এটাও আটকাতে পারলাম না। বলেই ফেললাম, ” তোমার দোষ নেই, কিন্তু বাবা-মায়ের দোষ আছে। তারা সায়নের সাথে তোমার বিয়ে দেয়নি। ফুফু নাকি সায়নের সাথে তোমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়েছে এসেছিলো অনেক আগে।”

মেজ আপা আমার কথা শুনে অবিশ্বাস্যভাবে আমার দিকে তাকালো। আমি সমস্ত ঘটনা বলে ফেললাম, শুধু একটা ঘটনা বাদে। সায়ন মেজ আপাকে ভালোবাসতো এটা আমি তাকে বলিনি। আমার স্বামীর দূর্বলতা আমি তাকে কেন বলবো! যত পেট পাতলা হইনা কেন স্বামীকে ছোটো করবোনা আমি। মেজ আপা এমনিতেই এখন বেশ লজ্জা পাবে সায়নের সামনে যেতে আর যদি ভালোবাসার কথা বলতাম তাহলে কোনোদিন সায়নের সামনেই যেতে পারবেনা।
বড় আপা আমার ফোন হাতে নিয়ে সায়নের নাম্বারে কল দিলো লাউডস্পিকার দিয়ে।
প্রায় সাথে সাথেই ওপাশ থেকে রিসিভ করেই সায়ন বলল, “তোকে ঘুমাতে বললাম না? কল দিয়ে সুন্দর মেসেজটার মূল্যটাই নষ্ট করে দিলি তুই।”
সায়ন হয়তো ভেবেছি আমি কল করেছি তাই ইচ্ছামত ঝাড়ি দিয়ে দিলো।

বড়আপা বলল, “আরে থাম থাম, আমি তোর বউ না। হিমা বলছি। বাসায় পৌঁছে গেছিস নাকি?”
“হ্যা, গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কেন কিছু বলবি নাকি? সাথী ঘুমিয়েছে?”

“তুই গেলি ১০ মিনিটও হয়নি। এতো তাড়াতাড়ি ঘুমাবে কিভাবে ও! শোন তুই বাড়িতে ঢুকিসনি যেহেতু এদিকে আয়, খুব দ্রুত আসবি।”
সায়ন উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,”সাথীর কিছু হয়েছে নাকি? ও ঠিক আছে তো? সুগার কি আবার লো হয়ে গেলো? আমি আসছি এক্ষুনি।” শেষ কথাটা বলতে বলতে সায়নের গলাটা কেমন যেন চুপসে গেলো।
বড়আপা বলল, “সব ঠিক আছে হাইপার হোস না। তোর আর রিয়ার বিয়ের বিষয়ে ডেকেছিলাম এখানে। আমার কিছু জানার ছিলো!”

ওপাশ থেকে কপাট রাগ দেখিয়ে বলল, “এই কথা কে বলেছে তোকে? সাথী না? ধুর, এমন একটা মেয়েকে জীবনসঙ্গী করাটা আমার বেশ ভুল হয়েছে বুঝতে পারছি। ওর সাথে কি আমি কোনো গোপন কথা বলতে পারবোনা? স্বামী-স্ত্রীর একান্ত গোপন তথ্যও তো সবাইকে বলে দেবে মনে হচ্ছে। বিয়েটা আগে না হলে, আই সোইয়ার এই বিয়েটা ভেঙে দিতাম আমি।”

আর কথা বলল না সায়ন। ওপাশ থেকে কলটা কেটে দিলো। আমি সব দিক থেকে হতাশ হলাম। সত্য চেপে না রাখতে পারাই হতাশ হলাম, আপা সায়নকে এসব বলে দেওয়ায় হতাশ হলাম, সায়নের এমন রাগে হতাশ হলাম।
আসলে সব দোষ আমার। কেন কথাটা বললাম আপাদের।
আমি হতাশ কন্ঠে বড়আপাকে বললাম, “তোরা কথাটা জেনেছিস এটা কেন সায়নকে বলতে গেলি তুই। দেখলি কত কথা শুনালো আমাকে! আমি এখন ওর সামনে দাড়াবো কিভাবে? তোরা আমার মায়ের পেটের বোন হয়েও এটা করতে পারলি?”

মেজ আপা কোনো কথায় বলছেনা। সে এখনো যেন কোনো ভাবনার ভিতর ডুবে রয়েছে। বড় আপা বলল, “রিয়াকে তো সায়ন শেষে আর বিয়ে করতে চায়নি আমি যতটুকু জানি, এই জন্যই তো বাবা-মা ওকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়।” আমি অবাক হয়ে বললাম, “তুই এটা জানতিস যে মেজ আপা আর সায়নের বিয়ের কথা বলা ছিলো? কোনোদিন তো বলিস নি!”

বড় আপা বলল, “বড় সন্তান হিসেবে বাবা-মা আমাকে সব জানায়, তোদেরকে জানাতে নিষেধ করে, তাই জানানো হয়নি। কিন্তু বিয়েতো সায়ন করবে না বলছিলো, আর তুই বলছিস ভিন্ন কথা। তাইতো সায়নকে ডাক দিলাম। কিন্তু ও তো উল্টো বুঝে রাগ দেখালো।”

আপা যা বলল এটা শুনেতো আমি আরও অবাক হলাম। সমীকরণের উভয় পাশ মেলানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। আজকের সময়টা মজা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার দোষে সব গোলমেলে হয়ে গেলো। আমার মত বোকা আর ভুল বোঝা মানুষ এই দুনিয়ায় বোঝা ছাড়া কিছুই না।

রাত তখন প্রায় একটা বেজে গেছে। মেজআপা আর বড় আপা ঘুমিয়ে গেছে কিন্তু আমার ঘুম কোনোভাবেই আসছেনা। তাই নিঃশব্দে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম, উদ্দেশ্য ছাদে হাটাহাটি করবো। রাতে গ্রামের পরিবেশ কেমন যেন ভুতুড়ে হয়ে থাকে। কিন্তু আমার সেসব যেন মাথায় নেই একদম, নাহলে এই রাতে একা একা কেউ কিভাবে ছাদে যাওয়ার কথা ভাবতে পারে! ঘর থেকে বাইরে বের হতেই দেখলাম বাবা-মায়ের ঘরে আলো জ্বলছে এখনো। আমি দরজায় টোকা দিতে বাবা বলল দরজা খোলা আছে। ভিতরে গিয়ে দেখলাম মা ঘুমিয়ে গেছে। বাবা তার প্রিয় চেয়ারে চুপচাপ বসে আছে। আমি গিয়ে বাবার পায়ের কাছে রাখা টুলে বসে তার হাটুতে মাথা রাখি।

এই মানুষগুলোকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্টটা খুব বেড়ে যাচ্ছে। আমি তো একটা আলাভোলা মানুষ, সব কাজে খুতখুতে, সন্দেহ নিয়ে চলি। ওই বাড়িতে গিয়ে আমার এসব উটকো আহ্লাদ কেও মেনে নেবে তো!

বাবার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, “তুই বলতে পারিস মা তোর সাথে সায়নের বিয়ে হয়েছে বলে খুশি হবো নাকি রিয়াকে সায়নের সাথে বিয়ে দেয়নি বলে দুঃখ পাবো?”

আমি মাথা তুলে বাবার দিকে তাকালাম। বাবা আবার বলল, “আমরা গ্রামীণ মানুষ। নিজের অঢেল থাকা সত্ত্বেও চাই মেয়ের যেন সরকারি চাকরিজীবির সাথে বিয়ে হয়। সায়নকে আমি সময় দিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু আমি আমার কথা রাখিনি। আমার কাছে তোর মেজ আপার জন্য পারফেক্ট ছিলোনা সায়ন। সে তখন বেকার তাই তোর মেজ আপার বিয়েটা অন্যকারো সাথে দিয়ে দিলাম। কিন্তু দেখ কপাল, সায়নকে তোর সাথে বিয়েটা দিয়েই দিলাম।
তোর মেজ দুলাভাইয়ের থেকে চাকরি যোগ্যতায় সায়ন অনেক উপরে, তাই ওর মা বিয়ের কথা তুলতেই আমি সাথে সাথে বিয়ে দিতে চাই। কিন্তু সায়নের মা ধুমধামের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলো। আমিও রাজি হয়ে গেলাম তবে আগেই বিয়ে করিয়ে রাখতে বললাম ওকে। পরে যদি ওদের সিদ্ধান্ত পালটে যায় এই ভয়ে।”

আস্তে আস্তে ধোয়াশা থেকে বের হতে লাগলাম। বাবা একটু সাহায্য করলো, বলল, “হিমা জানতো সবকিছুই। পরে ওকে বলি সায়ন বিয়ে ভেঙে দিয়েছে। ও সায়নের কাছে জানতে কল দেয়। সায়ন কল ধরেনি একবারো। এভাবেই আমি একটা অন্যায় করে ফেলি। আমি সবার চোখে দোষী হতে পারি তবে নিজের চোখে দোষী ছিলাম না। প্রত্যেক বাবায় চায় তার মেয়েকে একটা প্রতিষ্ঠিত ছেলের হাতে তুলে দিতে আমিও দিয়েছি। হিমাকে দিয়েছি, রিয়াকে দিয়েছি, তোকেও দিয়েছি। তবে আজকে কেন যেন আমার খুব দোষী লাগছে। তোর মেজআপা ভালো নেয় শুনলেই আমি যেন অবশ হয়ে যাচ্ছি। মেয়েকে কষ্ট পেতে দেবোনা আমি। দরকার হলে…..” আমি বাবাকে থামিয়ে দিয়ে বলি, “এসব কথা বাদ দাও বাবা।”

বাবা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “হ্যা আপাতত বাদই রাখছি এসব, আনুষ্ঠানিকতা সব শেষ হোক তারপর রিয়ার ব্যাপারে মিমাংসা হবে।”
এখন আমার একমাত্র দ্বায়িত্ব বাবার মন ভালো করার তাই এসব চিন্তা থেকে বের করার জন্য আমি উঠে দাড়ালাম। বাবার হাত ধরে বললাম, “বাবা চলো না ছাদে যাই! আজকে খুব ছাদে যেতে ইচ্ছা করছে। চাঁদটা আকাশের বিশাল একটা জায়গা দখল করে আলো ছাড়াচ্ছে। কেমন বাকা চোরা চাঁদ, তবুও কতটা স্নিগ্ধতায় ভরা। চলো যাবে!” বাবা অমায়িক হেসে উঠে দাড়ালো।

ছাদে প্রায় ১ ঘন্টা বাবার সাথে গল্প করলাম। বাবার একটুও মন খারাপ হতে দেয়নি আমি। বাবাও যেন সব ভুলে গেলো কিছু সময়ের জন্য। এরপর বাবা সায়নের গল্প শুরু করলো। সে গল্পে সায়নের নামের সাথে ভদ্রতা, নম্রতা সব ছিলো। সায়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
আমার একটা দীর্ঘশ্বাস বের হলো। বাবা সেদিন সায়নের উপর বিশ্বাস রেখে আপাকে তার সাথে বিয়ে দিতে পারতো। আপা অন্তত একটা সুখী লাইফ পেতো। আমার তো কোনো কষ্টই হতো না। সায়ন নামক মানুষটাকে ঘিরে বর্তমানে যে অনুভূতিগুলো আছে তখন এসবের কিছুই থাকতো না।

অনেক রাত হওয়ায় আমরা ছাদ থেকে নেমে চলে এলাম। বাবা হাসি মুখে তার ঘরে চলে গেলো। জানি এই হাসি আমাকে দেখানোর জন্য ছিলো। তবুও কষ্টের ভিতর একটু হাসি অনেক ভালো।

ঘরে এসে দেখলাম মোবাইলে আলো ব্লিংক হচ্ছে। এতো রাতে কে কল দিলো ভেবে হাতে ফোন নিতেই সায়নের নামটা ভেসে উঠলো ফোনের স্ক্রিনে। সাইলেন্ট মুডে ছিলো তাই আপারাও বুঝতে পারেনি কিছু। যায়হোক, ভাবলাম ফোন রিসিভ করতেই বকা খাবো কিন্তু তার কিছুই ঘটলো না। ফোন ধরলাম, ওপাশ থেকে কোনো কথা নেই। অনেক্ক্ষণ চুপ থাকার পর আমিই প্রথম কথা বললাম। তবুও বললাম, “দেখুন আমাকে বকা দেবেন,মারবেন তবে সব বিয়ের অনুষ্ঠানের পর। এই দিনগুলোকে আমার শ্রেষ্ঠতম দিন হিসেবে কাটাতে চাই।”
ওপাশ থেকে এবার কথা শুনলাম, “একদিন সবাইকে সব কিছু বলা লাগতো কিংবা জেনে যেতো। তবে তোর একটু ধৈর্য্য ধরে থাকা উচিৎ ছিলো। বিয়ের অনুষ্ঠানের পর বললেও পারতিস। তবে যা করেছিস তা নিয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছিনা। তখন হিমার সাথে তোকে নিয়ে অনেক কিছু বলে ফেলেছিলাম। ও বলেছে কিনা জানিনা, তবে আমি বলতে চাই এবং সে কথার জন্য সরিও বলতে চাই।”

আমি গাল ফুলিয়ে বললাম, “ফোন লাউডস্পিকারে ছিলো আমি সব শুনেছি। খুব বাজে বাজে কথা বলেছেন আপনি।”
“এমনিতে তুই অসুস্থ ছিলি, তার উপর এসব নির্বোধের মত কথা, আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি তখন। সরি রে।”
আমি মুখ ভাঙিয়ে বললাম, “সরি রে! এটা কেমন সরি হলো শুনি। প্রেমিকদের মত সরি বলবেন তাও একটা সাদা কাগজে লিখতে হবে।”

“তারপর!”

“আমাদের বাড়ির সামনে এসে সেই কাগজ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। আমি ক্লাস সিক্সের নিব্বিদের মত খুশিতে গদগদ হয়ে যাবো।”
সায়ন হাসতে হাসতে বলল, “তোর বয়সটাই বেড়ে ২১ হয়েছে বুদ্ধিতে এখনো ক্লাস সিক্সেরই আছিস। শোন দোষ করেছিস তুই তাও সরি বলেছি। এরথেকে বেশি কিছু আশা করিস না। ঘুমা।”

গাল ফুলিয়ে ফোন রেখে দিলাম। এই কয়দিন তো আলাদা থাকবো মাত্র একটু প্রেমিকের মত করলে কি হয়! নাকি আমাকে মেজআপার জায়গায় বসাতে পারছেনা! আর মেজ আপাকে নিয়ে ভাববোনা আমি, সে না বসালেও জোর করে বসবো আমি। ভাবতে ভাবতে কিছুক্ষণ পার হয়ে গেলো। সায়নের কল এলো আবার। রিসিভ করতেই বললো ছাদে যেতে।

বিশ্বাস ছিলো সে আসবে তাই রাতে ভয় না পেয়েই ছাদে গিয়েছিলাম। বাড়ির পিছনের ইটের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে সায়ন। চাঁদের আলোয় বেশ লাগছে তাকে। হাতে কোনো সাদা কাগজে সরি লিখে আনেনি। মন খারাপ হলো। সায়ন বলল, “এই রাতে যদি কেও চোর মনে করে পেদানি দেয় তখন কি করবো আমি?” আমি মুখ ভার করে বললাম, “তার নামে কেস ঠুকে দেবেন, এএসপি সাহেব।”

সায়ন বলল, “চল হাটতে যাবি? আজকে আর ঘুম হবেনা।”
আমি বললাম,” এই রাতে?”
সায়ন বলল, “দুইদিন পর তো বউ হয়ে যাবি। আজকে রাতটা জোনাকিপোকা দেখবো দুইজন। তোর ইচ্ছাটা পুরোন করবো। আজকের দিনটা প্রেমিকের মত উপহার দেবো।”
মনে মনে ভাবলাম, “এই লোক আমার ডায়েরি পড়ে ফেললো নাকি!”

কিছুক্ষণ চুপ থাকলাম। এই লোকটা আমার সাথে কেন যেন শুধু ভালোথাকতে চায়না, ভালোবাসতেও চায়। আমিও চাই এই প্রেমিকার প্রেমিকা হয়ে থাকতে।
কখনোই শুনিনি প্রেমিক প্রেমিকা রাত দুইটা তিনটার সময় ঘুরতে বের হয় তাও গ্রামে। লোকটা আমার থেকেও বেশি মাথামোটা নাকি!

,
চলবে ইনশাআল্লাহ

বিঃদ্রঃ গল্পের সাথে বাস্তবতার মিল নেই।

#চিরসাথী_তুমি_আমার – পর্ব ০৫
লেখনীতেঃ #রাফিজা_আখতার_সাথী

“আজকের সারাটা দিন কেমন একটা স্বপ্নের মত গিয়েছে বলুন? জ্ঞান হারানো, আপনাকে পাশে পাওয়া সব যেন স্বপ্ন। আজকের দিনটা স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন।” আমার রোমান্টিক কথার বারোটা বাজিয়ে দিলো এর উত্তরদাতা। রসকষহীন, কাঠখোট্টা কন্ঠে বলল, “আজকে এখনো সকাল হয়নি, কেবল ভোর। স্বপ্নের মত দিনটা ছিলো গতকালকে।”
এই লোকটা রোমান্টিকতার কিছুই বোঝেনা। জীবনে প্রেম করেনি নাকি! প্রেম নাহয় নাই-বা করলো। প্রেমের উপন্যাসও কি পড়েনি কোনোদিন!

মাঠ পুকুরের পাড়ের মাচানে বসে আছি দুইজন। জোনাকিপোকা দেখাবে বলে নিয়ে এসেছে কিন্তু একটাও জোনাকিপোকা নেয়।
এমনকি দুরবিন দিয়ে খুজলেও আশেপাশে জোনাকি পাওয়া যাবেনা। মাঝে মাঝে শেয়ালের ডাক শুনছিলাম, ঝিঝি ঝিঝি করেও একটা শব্দ আসছে। শেয়ালের ডাকে কেমন একটা ভুতুড়ে আবহাওয়া তৈরি হয়ে রয়েছে।
রোমান্টিক সময় না ছাই, ভয়ই লাগছে শুধু। সায়ন পাশে বসে আছে তাও ভয় লাগছে। ভয় কাটানোর জন্য তার গা ঘেঁষে বসলাম একটু। সায়ন একবার আমার দিকে ফিরলো এরপর আবার শূণ্যে তাকিয়ে রইলো। আমার ভয় পাওয়া অনুমান করতেই সে বলল, “ভয় পাওয়ার কিছু নেয়। আমি আছিতো নাকি!”

বাচ্চা প্রেমিকার মত অভিমান হলো, বললাম, “এই আপনার সুন্দর উপহার? একটা জোনাকি নেই এখানে, ধুর ভাল্লাগেনা।” সে শূণ্যে তাকিয়েই বলল, “কল্পনা করতে তো কোনো দোষ নেয় তাইনা! কল্পনা কর সামনের দিকটায় হাজার হাজার জোনাকিপোকা উড়ে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে তোর হাতে দুই একটা বসছে আবার উড়ে যাচ্ছে।”

আমি তার কথা মত কল্পনা করার চেষ্টা করলাম। প্রেমিকের কথায় নাকি প্রেমিকা দুনিয়া ঘুরে আসতে পারে! কই আমিতো সামান্য জোনাকিপোকাও কল্পনা করতে পারলাম না।

ভাবলাম এভাবে রোমান্টিকতা আসবেনা তাই উপরোক্ত কথাগুলো বললাম, “আজকের সারাটা দিন কেমন একটা স্বপ্নের মত গিয়েছে বলুন? জ্ঞান হারানো, আপনাকে পাশে পাওয়া সব যেন স্বপ্ন। আজকের দিনটা স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন।”
সে বলল, “আজকে এখনো সকাল হয়নি, কেবল ভোর। স্বপ্নের মত দিনটা ছিলো গতকালকে।”
আমি গাল ফুলিয়ে জবাব দিলাম,”ওই হলো একই কথা। কথাটার মর্মার্থ ধরতে পারলেন না আপনি। সময় ব্যখ্যা শুরু করে দিলেন।”

আমার কথার কোনো জবাব দিলো না সে৷ তার কাছ ঘেষে বসে রইলাম, জড়িয়েও ধরলোনা। ভয় পাচ্ছি জেনেও সাহস দেওয়ার জন্যও জড়িয়ে ধরলোনা। “মাথামোটা আন-রোমান্টিক লোক কোথা কার!”, বিড়বিড় করে কথাটা বলেই ফেললাম। লজ্জা পেয়ে জ্বীভে কামড় দিলাম। মাঝে মাঝে কি যে বলি নিজেও জানিনা। আমি কি তার মনে জায়গা করতে পেরেছি এখনো যে সে রোমান্টিক হবে আমার সাথে!

আমার বিড়বিড় করা কথাটা হয়তো শুনতে পায়নি সে। কিন্তু আমার ভাবনায় পানি ঢেলে সে বলল, ” এতো রোমান্টিকতা আসা করিস মা সাথী। বেশি রোমান্টিক হলে সহ্য করতে পারবিনা।”
আমি বললাম, “বেশি তো দূরে থাকুক আপনি কম রোমান্টিকের ভিতরও পড়েন না।”
তার নির্লিপ্ত জবাব,”ভালো।”

একটু পর খেয়াল করলাম কারো একটা হাত আমার বাম কাধের উপর। না, ভুত না, সায়নের হাত ছিলো। আমাকে একপেশে করে জড়িয়ে রাখলো।

উপন্যাসে পড়েছি এমনভাবে জড়িয়ে রাখলে নাকি বুকে মাথা রাখতে হয় কিন্তু সে সাহস আমার নেই। লজ্জা হোক কিংবা ভয়ে আমি তার বুকে মাথা রাখতে পারলাম না।

সায়ন এভাবে জড়িয়ে রেখে বলল, “উপন্যাস টুপন্যাস পড়িসনি নাকি জীবনে। প্রেমিকার মত গদগদ হয়ে বুকে মাথা রাখতে পারছিস না?”
হায় হায়, এ তো দেখছি আমার কথা আমাকেই ফেরত দিলো। তখন তো কথাটা তাকে বলিইনি। ভাবলাম সে হয়তো নিজের মন মতই বলেছে, আমার কথার প্রেক্ষিতে না। যতই সে এসব বলুক আমি এসব করতে পারবোনা। লজ্জায় মরে যাবো একদম।

বেশ কিছুক্ষণ এভাবে বসে থাকার পর সায়ন বলল, “ফজরের আজানের সময় হয়ে এসেছে। চল বাসায় যায়।” এরপর সে আমার ঘাড় থেকে হাত সরিয়ে নিলো।

আমি কখনো প্রেমকে অনুভব করিনি তাকে ছাড়া, আমি কখনো ভালোবাসতে চাইনি তাকে ছাড়া। সে আমার জীবনে প্রেম নিয়ে আসা প্রথম ও শেষ পুরুষ। হ্যা শেষ পুরুষ, সে ছাড়া আমি আর কারো হতে পারবোনা। যদি ওর কিছু হয়ে যায় তবুও না।
হঠাৎ কেপে উঠলাম ওর কিছু হয়ে যায় ভেবে। এসব আমি কি ভাবছি, শুরুতেই খারাপ কিছু ভাবছি কেন!

সায়ন আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আমার বাহু ধরে দাড় করিয়ে বলল, “হঠাৎ কেপে উঠলি যে! ভয় পেয়েছিস নাকি? আমি আছিতো তোর সাথে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

আমার কাপুনি যেন বেড়েই গেলো। হঠাৎ করেই সায়ন আমাকে জড়িয়ে ধরলো। কিন্তু এই জড়িয়ে ধরার অনুভূতি নেই এখন আমার। অন্য সময় হলে হয়তো লজ্জায় লাল হয়ে যেতাম কিন্তু এখন ভয় পাচ্ছি তাকে হারাবার। তাই আমিও নিজের হাত দুইপাশ থেকে তার পিঠে রেখে খুব জোরে তাকে জড়িয়ে রইলাম।

সায়ন মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, “এতো ভয় পেলে হবে সাথী? আমি থাকতেও যদি তুই ভয় পাস তাহলে তো আম স্বামী হিসেবে ব্যার্থ হয়ে রইবো। আমাকে বল প্লিজ কিসের ভয় পেলি হঠাৎ করে।”
এই লোককে কিভাবে বলি আমি তাকে হারানোর কথা চিন্তা করে ভয় পেয়েছি।

আমাকে এক কথায় ‘ওভারথিংকার’ বলা যেতে পারে। যেকোনো বিষয় নিয়ে আগাম ভেবে নেওয়াটা আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছে। সায়নের জীবনে এসে এই বেশি চিন্তার জন্য ওর কোনো ক্ষতি করে দেবো নাতো! যদি মনে হয় আমার জন্য ওর ক্ষতি হবে তাহলে ওর থেকে দূরে চলে যাবো তবুও ওর ক্ষতি হতে দেবোনা আমি। ওর ক্ষতি আমি ভাবতেই পারিনা। মানুষ স্নিগ্ধতায় ভরা চাঁদের মত। না না চাঁদ না, চাঁদ তো বাকাচোরা। তার তুলনা সে নিজেই, স্নিগ্ধ মানুষ।

সায়ন আমাকে জোর করে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলোনা। বেশ কিছুক্ষণ পর আমিই ছেড়ে দিলাম তাকে। সে বলল, “যখন ভয় পাবি তখন মনে রাখবি তোকে ভালোবাসার অনেক মানুষ আছে এই পৃথিবীতে, দেখবি সব ভয় চলে যাবে। আর শোন ওসব জ্বীন-ভূতের ভয় পাওয়ার দরকার নেই। আমি আছি না তোর সাথে!”

আমি ছোটো করে মাথা উপর নিচ করলাম। সে একটা স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে বলল, “এইতো গুড গার্ল, চল বাড়িতে যাই আমরা।” আমার বাম হাত তার ডান হাতের নিয়ে চলতে লাগলো আমিও পা বাড়ালাম তার সাথে।

সে আমার সাথে রোমান্টিক কথা একেবারেই বলেনি, তবুও সময়টা আমার রোমান্টিকতায় কেটেছে। ওভারথিংক করতে গিয়েও ভয় পেয়েছি, সে এসব না জেনেও সাহস দিয়েছে। সত্যিই সময়টা বড্ড উপভোগ্য ছিলো।

বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে সে তার বাড়ির দিকে হাটা ধরলো। আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার যাওয়া দেখতে লাগলাম। চাঁদটা প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে আকাশের একপাশে। ভোরের আলোয় তার যাওয়া বেশিদুর পর্যন্ত স্পষ্ট হলো না। সে হালকা অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো অর্ধমিনিটের মধ্যেই। তার মিলিয়ে যাওয়া আমাকে অনেক কিছুর শিক্ষা দিয়ে গেলো। সে পাশে থাকলে আমার দুঃখ, দুশ্চিন্তা গুলোও এভাবে নম্রভাবে বিদায় নেবে।

ঘরে এসে জিরো বালব জালিয়ে দিলাম যাতে বড় লাইটের আলোয় আপাদের ঘুম ভেঙে না যায় সে জন্য। কিন্তু দেখলাম বড়আপা আমার খাটে নেয়।
এই রাতে আপা কোথায় গেলো ভেবে একটু চিন্তিত হলাম। হঠাৎ বাথরুম থেকে পানির শব্দ শুনে চিন্তা মুক্ত হলাম। প্রায় তিন-চার মিনিট পর আপা বের হয়ে আসলো। আমাকে দেখে বড়আপা বলল, ” রাত-বিরেতে প্রেমিক-প্রেমিকার মত ঘোরা ধরলি কবে থেকে তুই?”

“আমি কি চুরি করতে গেয়েছি নাকি! নিজের স্বামীর সাথেই তো গিয়েছিলাম!”
আমি মুখ ভার করার অভিনয় করে বললাম।

আপা আমার থুতনিতে হাত দিয়ে বলল, “সায়নের সামনে এমন মুখভার করে থাকিস না যেন, টমেটো ভবে খেয়ে ফেলতে পারে কিন্তু!”
এরপর আমাকে আরও একটু আদর করে বলল, “আমি ভাবতেই পারছিনা তোরও বিয়ে হয়ে গেছে, দুইদিন পর চলে যাবি। তোর মনে আছে কিনা জানিনা ছোটোবেলায় ছোটো হিসেবে আদর কিংবা ভালোবাসা কিংবা যেকোনো খেলনা, খাওয়া, দেওয়া সব কিছুতেই বাবা-মা তোকে বেশি বেশি দিতো। আর তুই সব কিছুই আমাকে দিয়ে দিতিস। যেন মনে হতো আমি না, তুই আমার বড় আপা। তুই আমাকে এতো ভালোবাসি কেন সাথী?”

আমি মিষ্টি হেসে আপাকে বলি, “তুই এই কথা বলবিনা আপা। আমি মেজ আপাকেও, মাহফুজকেও একই রকম ভালোবাসি। একদম সমান, একগ্রামও কম হবেনা।”
জানিনা কথাটা আপাকে আমি বিশ্বাস করাতে পারিনি। কারণ সবাই জানে এই বাড়িতে আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ আমার বড় আপা। বলতে নেই, আমার মায়ের থেকেও প্রিয়।
কারণটা মা নিজেই, সে আমাকে কতটা ভালোবাসে সেটা কখনো বুঝনি পারিনি আমি। কেমন যেন দূরে দূরে থাকতে ভালোবাসে।

এইতো গতকালকেরই কথা, আমি চোখ মেলে দেখি সে বেশখানিকটা দুরেই বসে কাদছিলো আমার জন্য। আমার মাথার পাশে বসলেই তো পারতো। যাক এসব নিয়ে আমি বেশি ভাবতে চাইনা। সবার ভালোবাসা এক রকম না, মায়ের ভালোবাসাটা হয়তো চাপা ধরনের।

আপা চুপ ছিলো দেখে তাকে বললাম, “আমার মাম্মাম কেমন আছে আপা? তোর পেটে লাথি দেয় নাকি?” আপাকে আদুরে কন্ঠে বলে, “কেবল চার মাস হয়েছে। ও লাথি দেবে কিভাবে? আর হ্যা ও মাম্মাম নাকি পাপ্পা তুই কিভাবে জানলি?”

আমি একটু ভাব নেওয়া কন্ঠে বললাম, “আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষের সুখ,দুঃখ সব আমি বুঝতে পারি, তাহলে তার পেটের খবর জানবোনা কিভাবে!” আপা আমার কান টেনে বলল, “দেখেছিস স্বীকার করে নিলি আমি তোর সবচেয়ে প্রিয়। আর এই নিয়ে মিথ্যা বলিস না।”

পাশ থেকে কেও একজন বলে উঠলো, “হ্যা তোরাই একে অপরের প্রিয় হয়ে থাক আমি তো তোদের শত্রু!” মেজ আপা উঠে পড়েছে, কথাটা তারই। জানি মেজ আপা রাগ করে বলেনি কথাটা। আমার মত তারও বড় আপা সব চেয়ে প্রিয় মানুষ। সন্ধ্যা রাতটা তিন বোনের ভালো না গেলেও ভোরের মতই স্নিগ্ধ কেটেছেই ভোরের সময়টুকু।

তিন বোনের সুন্দর মুহুর্তে আরও সুন্দর একটা কন্ঠ শুনলাম। আজানের সুমধুর কন্ঠ বলে দিচ্ছে আড্ডার সময় শেষ, এবার নামাজের পালা। বড় আপা ওজু করেই এসেছিলো মেজ আপা ওজু করতে ঢুকলো। আপা ফ্লোরে বসে নামাজ পড়তে পারবে তবুও আমি বাইরে থেকে চেয়ার আনবো বললাম। আপার নিষেধ শুনলাম না। আপাও দেখলাম আমার পিছন পিছন এসেছে। আমি মানা করতেই আপা থামিয়ে অন্য প্রসঙ্গে বলল। সে বলল,
“এভাবেও কি প্রেম হয় সাথী!”

আমি মিস্টি হেসে বললাম, “হয় আপা হয়। এই প্রেমে হারানোর ভয় নেয়, ব্যাথা নেয়, ধোকা নেয়, ছেড়ে যাওয়া নেয়। এই প্রেম ভরসার আপা। এর থেকে স্নিগ্ধ প্রেম আর কিছু হতে পারে বলতো আপা?”

আপা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, “তুই আর সায়ন খুব সুখী হবি দেখিস।”
আমি মুখে মিস্টি হাসি টেনে মনে মনে বললাম, “জানি আপা।”
,

চলবে… ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here