বেদনার_রঙ_নীল শেষ ভাগ

0
682

#বেদনার_রঙ_নীল
শেষ ভাগ
লিখা- Sidratul Muntaz

পরিশিষ্ট – মাঝরাত্রে একটা দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ছুটে গেল আজমীরের। লামিকে পাশে না পেয়ে কপালে ভাঁজ সৃষ্টি হলো। তাদের বিবাহিত জীবনের একবছর হতে চলেছে। এখনও লামিকে সে চোখে হারায়। এক মুহূর্তের জন্যেও লামি চোখের আড়াল হলে তার হাঁসফাঁস লাগে। মনে হয়, এই বুঝি কেউ এসে লামিকে তুলে নিয়ে যাবে। লামি হারিয়ে গেলে আজমীরের জীবন দুঃসহ হয়ে উঠবে। আতঙ্ক নিয়ে আজমীর প্রথমে বাথরুমে দেখল কিন্তু লামি সেখানে নেই। তারপর বারান্দায় খুঁজতেই পাওয়া গেল লামিকে। আজমীর হাঁফ ছাড়ল। পেছন থেকে লামিকে জড়িয়ে ধরেই কাঁধে মুখ গুঁজে বলল,” এখানে কি করছ হানি?”

লামি উদাস মুখে বলল,” তেমন কিছু না। ঘুম আসছিল না তাই এসেছিলাম।”

” আগে বললে আমি ঘুম পাড়িয়ে দিতাম তোমাকে!”

লামি লাজুক হেসে বলল,” তুমি উঠে এলে কেন?”

” তোমাকে ছাড়া আমার ঘুম হয় না যে!”

আজমীর এই কথা বলেই লামিকে কোলে নিয়ে বিছানায় এলো। লামির খুব অস্থির লাগছে আজ। মাঝেই মাঝেই তার এমন অদ্ভুত অনুভূতি হয়। আজমীরকে খুব অচেনা লাগে। তখন মনে হয়, এই জীবনটা আসলে তার জন্য নয়। সে বুঝি কোনো ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। তার হয়তো অন্যকোথাও থাকার কথা ছিল। অন্যকিছু করার কথা ছিল।

তৈমুর সব খোঁজ-খবর নিয়ে এসেছে। সকালে আজমীরের স্ত্রী ইউনিভার্সিটিতে চলে যায়। সেই সময়টা আজমীর বাড়িতে একাই থাকে। প্রণয় সবকিছুর ব্যবস্থা করে ফেলল। একবার তৈমুর বলল,” স্যার, আপনি চাইলে কিন্তু আমরা মিসেস লামিকেও কিডন্যাপ করতে পারি। আজমীর যেমন আপনার স্ত্রীকে হত্যা করেছিল তেমনিও আপনিও তার স্ত্রীকে হত্যা করবেন। এটাই হবে আসল প্রতিশোধ।”

প্রণয় একটু হেসে বলল,” আমি নির্দোষকে শাস্তি দিতে চাই না তৈমুর। অন্যায় আজমীর করেছিল, তাই সে-ই শাস্তি পাবে। তাকে আমি সবচেয়ে নিষ্ঠুর মৃত্যু দেবো!”

প্রণয়ের হিংস্র দৃষ্টি দেখে তৈমুরের শিরদাঁড়া ঠান্ডা হয়ে গেল। পরদিন তারা পরিকল্পনা মতো আজমীরের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নিল। আজমীর লামিকে ইউনিভার্সিটিতে ছেড়ে কিছুক্ষণ বাইরে সময় কাটিয়ে বাড়ি ফিরল। গোসল করতে বাথরুমে ঢুকল। সেই সময় শাওয়ার থেকে পানি আসা বন্ধ হয়ে যায়। মুখভর্তি সাবান ফেনা নিয়ে বাথরুম থেকে বের হতেই আজমীর দেখতে পেল প্রণয়কে। হাতে ইয়া বড় একটি পিস্তল নিয়ে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে সে। আজমীরের প্রথমে মনে হলো সে বিভ্রমে আছে। নিশ্চয়ই ভুল দেখছে। কিন্তু কয়েক মুহূর্তেই বুঝতে পারল, এটা ভুল নয়।

লামি তার জরুরী জিনিস নিতে ভুলে গেছিল। তাই ট্যাক্সি করে আবার বাড়ি ফিরল। অনেকক্ষণ ধরে কলিংবেল চাপছে। কিন্তু দরজা খোলার নাম নেই। আজমীরের র/ক্তা*ক্ত নিথর দেহ মেঝেতে কাতরাচ্ছে। প্রণয় তাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য ব্লেড দিয়ে তার শরীরের শিরা কেটে নিচ্ছে। প্রত্যেকবারই আজমীর গগনবিদারী চিৎকারে বাড়ি কাঁপাচ্ছে। যেই হাত দিয়ে সে তুলিকে স্পর্শ করেছিল সেই হাতে পেরেক গেঁথে ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে প্রণয়। ঠিক সেই সময় কলিংবেল বেজে উঠল। আজমীর যাতে চিৎকার করতে না পারে সেজন্য তার মুখ বাঁধা হয়। তৈমুর গিয়ে দরজা খুলল এবং প্রণয় লামির মাথায় আঘাত করল। লামি তৎক্ষণাৎ মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। কিন্তু ততক্ষণে লামির মুখ দেখে প্রণয়ের দুনিয়া ঘুরে উঠেছে। আজমীর কাতরাচ্ছে অসহায়ের মতো। জ্যান্ত ছাগলের চামড়া টেনে ছিঁড়লে যত যন্ত্রণা হয় তার চেয়েও দ্বিগুণ যন্ত্রণা হচ্ছে আজমীরের। প্রণয় হতবিহ্বল হয়ে গেল। একবার মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। তারপর আবার দাঁড়াল। লামিই তুলি। তুলিই লামি। সে স্বপ্ন দেখছে না তো? বিধ্বস্ত আজমীর যন্ত্রণা সইতে না পেরে তার চেতনা হারিয়ে ফেলার উপক্রম হলো। প্রণয় দ্রুত তার কাছে গিয়ে গাল চাপড়ে প্রশ্ন করতে লাগল,” এই, এই, আজমীর, কথা বল। কে এটা? কে এটা? বল?”

আজমীর ফ্যাঁসফ্যাঁসে কণ্ঠে আওড়ালো,” তুলি।”

প্রণয়ের মাথায় বজ্রপাত হলো৷ অশ্রুসিক্ত দৃষ্টিতে তুলির দিকে চেয়ে আবারও প্রশ্ন করল,” ও এখানে কিভাবে? কি করে? বল, সবকিছু বল নয়তো মেরে ফেলবো। যেভাবে তোর বাবাকে মেরেছি, তার চেয়েও ভয়ংকরভাবে তোকে মারবো।”

প্রণয় গর্জন করে উঠল। আজমীর দূর্বল কণ্ঠে বলল,” এক্সিডেন্টের পর স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিল ও। তারপর আমি এখানে নিয়ে এসেছি। পরিচয় বদলে ওকে বিয়ে করেছি। ও এখন আর তুলি না। ও লামি। আমার লামি।”

প্রণয় আজমীরের শেষ কথা সহ্য করতে না পেরে তীব্র আক্রোশে তার বুকে ছুরি গেঁথে দিল। এতো জোরে হঠাৎ আক্রমণ করায় আজমীরের চোখ বেরিয়ে আসে। মুখ থেকে র-ক্ত ছলকে বের হয়। কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানের তার মৃত্যু ঘটে। রক্তাক্ত হাত নিয়ে নির্লিপ্ত বসে রইল প্রণয়। মাথা ফাঁকা লাগছে তার। আজমীরের শেষ কথা বার-বার কানে বাজতে লাগল,” ও এখন আর তুলি না। ও লামি। আমার লামি।”

কিছুক্ষণ পর তুলির জ্ঞান ফিরে আসে। আজমীরকে নিথর হয়ে পড়ে থাকতে দেখে সে গুমরে উঠল। চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। প্রণয় তার কাছে গিয়ে কোমল কণ্ঠে বলল,” কেঁদো না তুলি, প্লিজ।”

তুলি বড় বড় চোখে তাকাল,” আপনি কে? আমার স্বামী আপনার কি ক্ষতি করেছিল? কেন তাকে মা-রলেন এভাবে বলুন?”

তুলির আর্তনাদ প্রণয়ের হৃদয় ভেঙে দেয়। তার অপরিচিত সম্বোন্ধনে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় প্রণয়। সত্যিই কি তুলি চিনতে পারছে না তাকে? প্রণয় দুই হাতে তুলির মুখ আঁজলায় নিয়ে বলল,” আমাকে দেখো তুলি, আমি প্রণয়। আমাকে চিনতে পারছো না তুমি?”

তীব্র ঘৃণায় চোখমুখ কুচকে প্রণয়কে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিল তুলি। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে দূরে চলে গেল। বলতে লাগল,” আমি আপনাকে চিনি না। আপনি খু*নী। আমার স্বামীকে আপনি খু*ন করেছেন। আমি আপনাকে ছাড়বো না। হে আল্লাহ!”

তুলি আজমীরের নাম নিয়ে কাঁদতে লাগল ফুপিয়ে। প্রণয় চিৎকার করে বলল,” ও তোমার স্বামী না। ও তোমার কেউ না। আমাকে দেখো, আমি তোমার স্বামী।”

তুলি এমন কথা শুনে আরও ভয় পেল। ভীত-সন্ত্রস্তভাবে জড়োসড়ো হয়ে বলল,” কি অদ্ভুত কথা বলছেন! আপনি পাগল। সাইকো আপনি।”

প্রণয় কাছে এসে তাকে বোঝাতে নিলেই তুলি এক দৌড়ে অন্যঘরে গিয়ে দরজা আটকে দেয়। প্রণয় চিৎকার করে ডাকতে লাগল,” তুলি, আমার কথা শোনো প্লিজ। বিশ্বাস করো আমিই তোমার স্বামী। প্লিজ তুলি।”

প্রণয় মেঝেতে বসে পড়ল ধপ করে। তুলির এমন আচরণ মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। প্রচন্ড কষ্টে বুক ভেঙে আসছে। তুলি কেন তাকে চিনতে পারছে না? কেন? কেন? কেন? প্রণয় আর্তনাদ করতে লাগল।

বেশ কিছুক্ষণ পর তুলি দরজা খুলে বের হলো। চারদিক তখন থমথমে নীরব। আজমীরের দেহটাও নেই। সবকিছু পরিষ্কার করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে তৈমুর। প্রণয় তখনও তুলির জন্য অপেক্ষা করছে। তার বিশ্বাস, তুলি দরজা খুলবে। প্রণয়কে সে চিনতে পারবে। তুলি বের হতেই প্রণয় হাসি মুখে বলল,” তুলি।”

ভয়ে কয়েক কদম পিছিয়ে গেল তুলি। প্রণয় ধৈর্য্য ধরে নিজেকে শান্ত করল। ধাতস্থ হয়ে বলল,” ভয় পেয়ো না। আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না। আচ্ছা, তোমার কি কিছুই মনে নেই? আমাকে দেখেও কি কিছুই মনে পড়ছে না?”

প্রণয় কাতর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল উত্তরের আশায়। কিন্তু তুলি কোনো উত্তর দিল না। ঢোক গিলে এপাশ-ওপাশ তাকাল। প্রণয় কাছে আসতে নিলেই তুলি বলল,” খবরদার, একদম আমার কাছে আসবেন না।”

প্রণয় তাকে শান্ত করতে বলল,” আচ্ছা, আসব না। আমি প্রমিস করছি আসব না। এইতো, আমি দূরে চলে যাচ্ছি।”

তুলি আস্তে আস্তে হেঁটে ডাইনিং টেবিলের দিকে যেতে লাগল। প্রণয় তাকে দেখছে দু’চোখ ভরে। কতদিন পর দেখা! এভাবে তুলিকে সামনে পেয়েও সে জড়িয়ে ধরতে পারছে না। কপালে চুমু দিতে পারছে না। তৃষ্ণার্তের মতো তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না। এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কি হতে পারে? প্রণয়ের বাম চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। তুলি আচমকা একটি ধারালো ছুরি উঠিয়ে বলল,” নিন। যেভাবে আমার স্বামীকে মেরেছেন, সেভাবে আমাকেও মেরে ফেলুন।”

প্রণয় হতভম্ব হলো। তুলি ভাঙা কণ্ঠে বলল,” প্লিজ মেরে ফেলুন আমাকে। ও ছাড়া এই দুনিয়াতে আমার কেউ নেই। আমি অনাথ। খুব নিঃসঙ্গ। এভাবে আমি বাঁচতে চাই না। প্লিজ আমাকেও মেরে ফেলুন আপনি।”

তুলি জড়ানো কণ্ঠে কথাগুলো উচ্চারণ করেই তীব্র কান্নায় ভেঙে পড়ল। প্রণয় বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বলল,” আমি তোমাকে মেরে ফেলবো? এটা অসম্ভব তুলি। কে বলেছে তোমার কেউ নেই? এইতো, তোমার আমি আছি!”

প্রণয় এগোতে নিলেই তুলি ছ্যাঁত করে উঠল,” খবরদার। একদম আসবেন না। আমি কিন্তু নিজেকে শেষ করে ফেলব।”

তুলি এবার নিজের গলাতেই ছুরি চেপে ধরল। প্রণয়ের বুক ধড়াস করে উঠল। সে পুনরায় তুলিকে হারাতে চায় না। দ্রুত বলল,” একদম না। তুমি নিজেকে কিছু করবে না প্লিজ। তুমি যা বলবে তাই হবে। কিন্তু ছুরিটা রাখো।”

তুলি কঠিন গলায় বলল,” তাহলে আপনি মরে যান।”

প্রণয় চমকে উঠল,” কি?”

” যেভাবে আমার স্বামীকে মেরেছেন সেভাবে আপনিও মরে যান। নয়তো আমিই আপনাকে মেরে ফেলবো।”

প্রণয় এই কথা শুনে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল। হাসিমুখেই বলল,” আমাকে মেরে যদি তুমি খুশি থাকো, তাহলে মেরেই ফেলো প্লিজ!”

প্রণয়কে অবাক করে দিয়ে তুলি তৎক্ষণাৎ এগিয়ে এসে ছুরিটা গেঁথে দিল তার বুকে। প্রণয় কুকিয়ে উঠল। ছুরিটা এসে ঠেঁকেছে ঠিক প্রণয়ের বুকের বামপাশে। গলগল করে র*ক্ত বের হচ্ছে। প্রণয়ের মেঝেতে লুটিয়ে পড়তে বেশি সময় লাগল না। তুলি প্রণয়ের উপর ঝুঁকে এসে আরও গাঢ়ভাবে ছুরিটা গাঁথল। প্রণয় তীব্র আর্তনাদে চেঁচিয়ে উঠল। তুলি ভেজা গলায় প্রশ্ন করল,” আমার স্বামী কি অপরাধ করেছিল? কেন মা-রলেন তাকে আপনি?”

প্রণয় তপ্ত নিশ্বাস ছেড়ে বলল,” তোমার জন্য!”

তুলি এই কথার অর্থ বুঝতে পারল না। প্রণয় তার জ্যাকেটের পকেট থেকে ডায়েরীটা বের করেই ছুঁড়ে মারল। তুলি কৌতুহলী হয়ে ডায়েরীটির কাছে গেল। ডায়েরী খুলতেই অবাক হয়ে লক্ষ্য করল তার নিজের ছবি। তারই লেখা কিছু কথা। কিছু ইচ্ছা। তুলি আঁড়চোখে আবার তাকাল প্রণয়ের দিকে। প্রণয়ের দেহ নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। তুলি ব্যস্ত হয়ে লেখাগুলো পড়তে লাগল। খুব পরিচিত, খুব চেনা একটা অনুভূতি তাকে গ্রাস করে নিল। তার মাথার শিরা দপদপ করছে। কিছু মনে পড়তে নিয়েও পড়ছে না। তবে একটু আগেই যে মানুষটিকে খুব হিংস্র মনে হচ্ছিল এখন তাকে খুব আপন, খুব নিষ্পাপ মনে হচ্ছে। তুলি লেখাগুলো পড়তে পড়তে কিছু পাতায় এসে থামল। একজায়গায় সে আজমীরকে খু*ন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল। প্রণয়কে ভালোবাসার প্রথম অনুভূতি ব্যক্ত করেছিল। তাদের প্রথম বাচ্চার নাম,’স্বপ্ন’ হওয়ার কথা ছিল। তাদের অনেক অপূর্ণ ইচ্ছা পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। তুলির গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। শরীর শিউরে উঠছে। সে ডায়েরী হাতে নিয়েই প্রণয়ের কাছে গেল। তার গাল ধরে এলোপাতাড়ি চাপড় মারতে লাগল,” উঠুন, প্লিজ উঠুন। কে আপনি?”

প্রণয় কোনো কথা বলছে না। তুলি চিৎকার করে ডাকল। মানুষটা কেন কথা বলছে না? অস্থির লাগছে খুব। সে প্রণয়ের দেহ ঝাঁকাতে লাগল,” উঠুন, উঠুন, প্লিজ উঠুন না!”

তুলির তীব্র ঝাঁকুনিতে আচমকা প্রণয়ের সম্বিৎ ফিরে এলো। খুব বড় করে নিঃশ্বাস ছাড়ল সে। তুলি আশার আলো খুঁজে পেয়েই হেসে উঠল। প্রণয় আবছা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখল তুলির হাসিমাখা মুখটি। ক্ষত-বিক্ষত হওয়া বুকটা যেন শীতল পরশ পেল। সে অস্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করল,” তুলি।”

তুলি ব্যাকুল হয়ে বলল,” কিছুই মনে পড়ছে না আমার। কিন্তু আপনার কথা আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে। বলুন না, আপনি কে?”

প্রণয় মৃদু হাসল। তার র*ক্ত/ক্ত হাতটা তুলির গালে রাখল। তুলির মনে হলো, এতো ভালো তার আগে কখনও লাগেনি। পৃথিবীটা এতো রঙিন তার আগে কখনও মনে হয়নি। এই ছোয়া এতো আপন! তুলি দূর্বল কণ্ঠে আওড়াল,” আমার কিছু মনে পড়ছে না। বিশ্বাস করুন, কিছুই মনে পড়ছে না।”

প্রণয় তুলিকে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকে আনল।তুলি চোখ বন্ধ করে প্রণয়ের শরীরের ঘ্রাণ নিল। মনে হলো এই সুগন্ধটা তার চিরচেনা! প্রণয় কিছু বলল না, তাও তুলি শুনতে পেল, ” ভালোবাসি, বড় ভালোবাসি। এর বেশি ভালোবাসা যায় না…”

_____

শেষ..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here