মন_কেমনের_বৃষ্টি #পর্ব_৬ (সিজন ২)

0
815

#মন_কেমনের_বৃষ্টি
#পর্ব_৬ (সিজন ২)
#পুষ্পিতা_প্রিমা

পরী আর কোনো ঝামেলা করল না। চুপচাপ বিয়ের পিরিতে গিয়ে বসল। কথা বলল না। মাথা তুলল না। কাঁদল না। হাসল না। ইশা অনেকক্ষণ পরীর সামনে যায়নি। যখন দেখল পরী শান্ত হয়ে বসে আছে তখন তারপাশে গিয়ে বসল। পরী মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখল। বলল, কি চাই?????
ইশা পরীর মুখের সামনে তার মুখ বাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করে বলল,

‘ তুমি এই বিয়েতে খুশি না?

পরী অন্যদিকে মুখ করে রাখা অবস্থায় বলল,

‘ যদি না বলি আপনি কি করবেন? হ্যা বললে ও কি করবেন?

ইশা মাথা নামিয়ে কিঞ্চিৎ হাসল। দূরে দাঁড়ানো আদি ইশাকে ইশারায় জিজ্ঞেস করল, কি বলছে?
ইশা মাথা নাড়াল।
ইশা পরীকে আবার জিজ্ঞেস করল, রেহানকে পছন্দ তোমার?
পরী চেঁচিয়ে বলল, হ্যা খুব পছন্দ। এতটাই যে তাকে দেখলেই আমার খুন করতে ইচ্ছে করে।
ইশা সরে গেল তাড়াতাড়ি। এ মেয়ের রাগগুলো আকাশ ছোঁয়া ।
_________

পরীর দিকে পেপার এগিয়ে দিলে কষেকষে সাইন বসাল। বলার সাথে সাথে দাঁতের সাথে দাঁত চেপে কবুল ও বলে দিল। ঠিকঠাক বিয়েটা হয়ে গেল। রেহান ও পুরোটা সময় চুপচাপ ছিল। রাইনা খেয়াল করল তাকে। কিছু বুঝে উঠতে পারল না। আফি তো বেজায় খুশি। পরীকে একদম কোলে করে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিল। রিককে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না পরীর বিদায়ের সময়। পরী শক্ত ভঙ্গিতে বসে রইল। রিপ পাগলের মতো রিককে খুঁজল। কিন্তু পেল না। মাহিদ গাড়িতে পরীর পাশে গিয়ে অনেকক্ষণ বসে থাকল। বলল, দিদিয়া আমি তোমার শ্বশুড়বাড়ি চলে যাব প্রতিদিন। তোমাকে দেখার জন্য।
পরী মাহিদের দিকে একবার তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে বসে রইল। আড়চোখ ঘৃণা নিয়ে একবার রেহানের দিকে তাকাল। এদিকওদিক থেকে চোখ সরাতেই রেহানের চোখ ও পরীর চোখে পড়ে গেল। রেহান ও পরীর মতো ঘৃণিত চোখে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিল। রিপ এসে পরীর মাথায় হাত বুলিয়ে ডাকল, পরী?

পরী মাথা তুলল না। রিপ বলল, মাম্মার সাথে ও একবার কথা বলবে না?
পরী মাথা নাড়াল। রিপ বলল, রিইইরর সাথে ও কথা বলবে না?
পরী সাথে সাথে তাকাল রিপের দিকে। একদৃষ্টে তাকিয়ে থেকে ফুঁপিয়ে উঠল। মাথা নেড়ে বলল, নাআআআ।
রিপ ছলছলে চোখে ও হেসে ফেলল। বলল, তোমার পাপা কোথায় দেখেছ???

পরী টলমলে চোখ উপরে তুলে রিপের দিকে সরাসরি তাকাল। বলল, কুথাইইই……….
রিপ হেসে দিল। বলল, পাপা নাই। পাপা কোথায় যেন চলে গেছে। আজ পরী চলে যাচ্ছে সবাইকে ছেড়ে,তা ও আবার রাগ করে। পাপার কষ্ট হয়েছে তাই হয়ত সামনে আসতে চাইছে না।

পরী নেমে গেল গাড়ি থেকে। বলল, আমি যাব না কোথাও। কিছুটা দূরে দাঁড়ানো আদি। পরী তাকে দেখার সাথে সাথে বলল, আমার পাপা কোথায়?
আদি চোখ সরিয়ে নিল। পরী চেঁচিয়ে বলল,

‘ পাপা কোথায়??

রেহানের বন্ধু-বান্ধব সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল পরীর চেঁচামেচি শুনে। রেহান ও তাকাল। পরী শাড়ি ধরল দুহাতে। দৌড়ে দৌড়ে গেল মুনার কাছে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। জোড়াল শ্বাস ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে বলল, মাম্মা আমি চলে যাচ্ছি। পাপা কোথায়???
মুনা কেঁদে দিল আওয়াজ করে। পরী ফুঁপিয়ে উঠে বলল, মাম্মা পাপা আমার সাথে রাগ করেছে। কোথায় পাপা??
মুনা কিছু বলল না। পরী আবার জিজ্ঞেস করল কোথায় পাপা? আমি তো সত্যি সত্যি বিয়ে করে নিয়েছি। কিন্তু পাপা এসময় কোথায় চলে গেল?
রিপ ছাড়িয়ে নিল পরীকে। বলল, পাপা যাবে কিছুক্ষণ পর। তোমার পিছু পিছু যাবে। কাঁদতে হচ্ছে কেন? তুমি তো নিজের বাড়িই যাচ্ছ। তোমার মা বাবা থাকবে সেখানে। পিহু আছে।
পরী নিজের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিল নিজেকে। বলল, আমি যাব না পাপাকে না দেখে। পাপা কুথাইইই? আসতে বলো।

প্রায় অনেক্ষণ নিস্তব্ধতায় কেটে গেল। পরী জোরে জোরে কাঁদল। কিছুক্ষণ পর দেখল রেহান হাত ধরে টেনে আনছে রিককে। পরী দেখার সাথে সাথে দৌড়ে গেল। জাপটে জড়িয়ে ধরল রিককে। এলোমেলো সুরে কাঁদল। বলল, পাপা আমি চলে যাচ্ছি। তুমি রাগ কোথায় চলে গিয়েছ???

রিক জড়িয়ে ধরল পরীকে । মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, না। আমি ওই একটু বাইরে গিয়েছিলাম। রেহান ডেকে আনল। তুমি নাকি খুঁজছিলে। কেন খুঁজছিলে?

পরী আর জোরে কেঁদে দিল। বলল, তুমি রাগ করে থাকলে আমি কোথাও যাব না। বলো রাগ করোনি। হাসো। আদর দাও।

রিক হেসে দিল পরীর বাচ্চামো দেখে। বলল, হেসেছি। রাগ করে নেই। পরীর উপর পাপা কখনো রাগ করে থাকতে পারে????

পরী রিককে একদম শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখল। মিনমিন করে বলল,

‘ পাপা আমি যাব না। কিছুতেই যাব না। আমি ওই বাড়িতে যাব না। তোমার মতো করে কেউ আমাকে ভালোবাসেনা। বুঝেনা। আমি যাব না। পাপা আমাকে যেতে বলোনা। আমি তোমার সব কথা শুনব। আদি চৌধুরী আর ইশা আফরোজা আমাকে একটু ও ভালোবাসেনা। কিছুক্ষণ আগে ও মাহিদ মেরেছে বলে পিহুকে আদর করছে। কিন্তু আমার দিকে ফিরে ও তাকায় না। আমি ভালো আছি কিনা জানতে চাইনা। ওখানে আমি ভালো থাকব না। আমাকে সেখানে কেউ বুঝবে না। আমার রাগগুলোকে কেউ বুঝবে না। আমি ভালো থাকব না পাপা। আমি ভালো নেই।

রিক রেহানের দিকে তাকাল। রেহান ইশারায় আশ্বস্ত করল। পরী রিকের বুক থেকে মুখ তুলে একবার তাকাল রেহানের দিকে। রেহান তার বন্ধুদের পাশে দাঁড়াতে দাঁড়াতে হাসল। পরী আবার জড়িয়ে ধরল রিককে। মিনমিন করে বলল,

‘ যাব না। যাব না। পাপা যাব না। দেখো ওই ছেলেটা হাসছে।

রিক মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, ‘ এসময় কেউ এমন কথা বলে???

পরী কেঁদে আড়চোখে আবার তাকায় রেহানের দিকে। রেহান পরীকে দেখে দেখে আর ও বেশি করে করে হাসছে। পরী এবার রিককে বেশ শক্ত করে আঁকড়ে ধরে চিকন সুরে কেঁদে উঠে বলে,

‘ পাপা পাপা যাব না। আমি যাব না। কোথাও যাব না। আমি রেহান চৌধুরীর কাছে যাব না। কিছুতেই যাব না।

রেহানের হাসি দেখে তার বন্ধুরা তাকে ধমক দিল। মেয়েটা কাঁদছে আর তুই হাসছিস?

রেহান হেসে বলল, ভিডিও কর। ভাইরাল করে দে সিংগার আদিশা খানমকে। যে শ্বশুড়বাড়িতে না যাওয়ার জন্য হাউমাউ করে কাঁদছে।
রেহানের বন্ধু বলল,
‘ তুই ও একটু গিয়ে কেঁদে আয়। তোর উচিত তোর বউকে জড়িয়ে তার সাথে কেঁদে বেচারির কষ্টের একটু ভাগ নেওয়া। যাহ যাহ। কেঁদে আয়। আওয়াজ করে কাঁদবি কিন্তু।

রেহান হো হো করে হেসে উঠল। বলল, আজ কেঁদে নিক। কাল থেকে আমাকে কাঁদানোর লড়াইয়ে নামবে। বড্ড চিন্তায় আছি মামা। কে বলেছে আমাকে দেশে আসতে? এরকম বোম্বা মরিচকে আমি বিয়ে করে নিলাম। আল্লাহ আমার উপর রহম করো।

রেহানের বন্ধু-বান্ধবগণ হেসে লুটোপুটি খেতে লাগল রেহানের কথায়। বলল,

‘ তোর বউয়ের কান্না দেখে তুই জোক করছিস? ডেন্জারাস জামাই তুই।

রেহান ঠোঁট ভেঙে বলল, ডেন্জারাস বউ আমার কাঁদতে কাঁদতে যেন বেহুশ হয়ে যায় সেই দোয়া করছি। বেহুশ হয়ে গেলে সমস্যা নেই। চাচ্চু আছে। বাড়িতে গিয়ে হুশ ফিরলেই হবে।

সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আবার ও হাসিতে ফেটে পড়ল। ওদিকে পরীর কান্না আর এদিকে এদের অট্রহাসি। আফি রেগে তাকানোর সাথে সাথে রেহান চুপ হয়ে গেল। বলল, এই ড্যাডের জন্য আমি বউ পিটাইতে পারব না। নাহলে এক মাইরে সোজা করে ফেলতাম। রেহান চৌধুরীর সাথে ত্যাড়ামো??????
রেহানের বন্ধুরা বলল,
‘ তুই সোজা করার আগে তোকে না মাইরে সোজা করে দেই দেখ। তারা বউ শ্বশুর এক হলে তোকে হারানো কঠিন কিছু হবেনা।

রেহান ভয় পেল। বুকে থু থু ছিটিয়ে বলল,’ এই মাসুম বাচ্চাটাকে এভাবে ভয় দেখানোর কোনো মানে হয়??

____________

মাহিদ ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িটাতে বসে থাকল। পিহু গালে হাত দিয়ে গাল ঘষে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখল মাহিদ গাড়ির ভেতর। পিহু ভ্রু কুঞ্চন করে তাকাল। বলল,
‘ আরেকটা গাড়ির ভেতর বসে কি করছে? বেশভূষা দেখে মনে হচ্ছে সেই বর? রঙচঙ মার্কা পান্জাবী ও পড়েছে। ডংয়ের শেষ নেই।

মাহিদের চোখ পড়ল পিহুর দিকে। বলল, ওই আরিশের বাচ্চা তুই ফটরফটর করছিস কেন রে? আমাকে এই গাড়িতে বসতে দেখে তোর কি গা জ্বলছে? আমার ভালো তুই দেখতে পারিস না কেন? তোর বসতে ইচ্ছে হলে তুই ও আয়। আয় বোস। এভাবে জ্বলিস না। আয় আয়।
পিহু মুখ মোচড়াল। আহা ডং কত? আমার কেন জ্বলবে? তুমি বসো গিয়ে,আমার জ্বলেনা।
মাহিদ বলল,

‘ এক থাপ্পড়ে কান লাল করে দেব বেয়াদব মেয়ে। মুখে মুখে কথা বলিস কেন? বড় ভাই যেটা বলে সেটাই শুনবি। মুখে মুখে তর্ক করলে গাড়ির নিচে চাপা দিয়া খতম করে ফেলমু।

পিহুর কষ্ট লাগল। তার নাক কেঁপে উঠল। বলল,

‘ কে বড় ভাই। আমার শুধু একটাই ভাই। রেহান চৌধুরী। তুমি আমার ভাই নও।

মাহিদ ব্যঙ্গ করে বলল,

‘ তো আমি কি তোর জামাই?

‘ আমি কি তোমার বউ লাগি। কথায় কথায় গালি, মাইর দাও কেন?

মাহিদ বলল,

‘ ধুরর তুই বউ লাগবি ক্যান? আমার বউরে কি আমি মারুম নাকি??

পিহু ভেংচি কাটল। বলল, বুকের ভেতর ডুকায় রাখো। আমাকে কেন বলছ? বেয়াদব ছেলে।

মাহিদ নেমে এল গাড়ি থেকে। পিহু দৌড় লাগাল। পড়নের লেহেঙ্গা ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে এলোমেলো দৌড়াল। হাঁপিয়ে উঠল। নির্জন জায়গায় গিয়ে একটু শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে জোড়াল শ্বাস নিতে লাগল।
আচমকা মাহিদ পেছনে এসে তাকে ধাক্কা দিল। পিহু টাল সামলাতে না পেরে কেঁদে ডাক দিল, মাহিদ ভাই।
মাহিদ এবার ভয় পেয়ে গেল। তাড়াতাড়ি ধরে ফেলল পিহুকে। টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসল। পিহুর মাথা একহাতে ধরে পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলল,

‘ কান্দিস না বাছা। কান্দিস না। আর এমন করুম না। কান্না থামা শালী।

পিহু মাহিদের পান্জাবী শক্ত করে আঁকড়ে ধরে জড়িয়ে ধরল। বলল, মাহিদ ভাই আমি তোমার বাছা না?
তোমার বাছার………

মাহিদ বলল,
‘ ওই আরিশের বাচ্চা দম নিতে পারলে এবার ছাড়। একেবারে বুকের উপর এসে পড়েছিস? তুই দেখছি ওই নিহা আর আনিসার বাচ্চার চাইতে ও বেশি লুইচ্চা। তোর ভবিষ্যৎ ফিউচার জামাই এই দৃশ্য যদি দেখত আহা আমার চাইতে ও খুশি কেউ হতোনা। বেচারা কেঁদেকেটে সাগর বানিয়ে ফেলত। আর আমি সেখানে সাঁতার কাটতাম। আহঃ কতদিন সাঁতার কাটিনা।

পিহু বলল, মাহিদ ভাই আমি পড়ে যাচ্ছি। তুমি আমাকে শক্ত করে ধরো। আমি পড়ে যাচ্ছি।

মাহিদ তার হাত দুটো আলগা করে বলে,

‘ ওই আরিশের বাচ্চা পড়িস না পড়িস না। ছাড় আমাকে। আমি শ্বাস নিতে পারছিনা। দমবন্ধ লাগছে। ছাড়। ছাড়। দূরে গিয়ে দাঁড়া। ওই হারামির বাচ্চা।

পিহু ছাড়ল না তাকে। মাহিদকে আর ও শক্ত করে ধরে বলল,

‘ মাহিদ ভাই আমি লজ্জা পাচ্ছি। তাকাতে পারছিনা। মুখ তুলতে পারছিনা। আমার লজ্জা লাগছে।

মাহিদ চোখ ছোট ছোট করল। বলল,

‘ আমারে ছাড় না বাপ। এভাবে পেঁচায় ধরে আবার বলিস লজ্জা লাগতাছে। ছাড়। ছাড়।

পিহু চট করে মাহিদকে ছেড়ে দিল। দুহাতের মুঠোয় লেহেঙ্গা ধরে দৌড়ে দৌড়ে চলে গেল। মাহিদের দিকে ফিরে তাকাল না। মাহিদ পিহুর দৌড়ে চলে যাওয়া দেখল। কোমরে হাত দিয়ে বলল,
এই ডাক্তারের বেটির সমস্যাটা কি? ডাক্তার কি জানে তার বেটির মাথার তার ছিড়ছে।

___________

পরীকে অনেক কাহিনী করে গাড়িতে উঠানো হলো। মাহিদকে পরীর সাথে দিয়ে দিল। রেহান বসতে গেল। মাহিদ ডাক দিল,

‘ রেহান ভাই বউয়ের পাশ থেকে সরে বসেন। বউয়ের ভাই যাইব সাথে। বউ তো কোথায় পালায় যাচ্ছেনা ভাই। সরেন সরেন।
রেহানের আচমকা এই মুখ পাতলা ছেলেটাকে ধরে দিতে ইচ্ছে করল। রেহান নেমে গেল। পিহু আদির সাথে সামনে বসা ড্রাইভারের সাথে। বলল, মাহিদ ভাই তুমি বর কনের মাঝে কি করছ? লজ্জা শরম নেই।

মাহিদ জোরে চিৎকার দিয়ে বলল, হেইইই চুপ। একদম চুপ। কিছুক্ষণ আগে তো তুই লজ্জায় মরে টরে যাচ্ছিস। এখন কোথায় গেল তোর লজ্জা?
পিহু জিভে কামর দিল। এই ছেলেটার সাথে কথা বলতে গেলেই ইজ্জত সম্মান সব শেষ।

আদি হেসে জিজ্ঞেস করল, কখন পিহু????
পিহুর আদির কাঁধে মাথা রেখে বলল, মাহিদ ভাই মিথ্যে বলছে পাপা । আমি কেন লজ্জা পাব????
রেহান মাহিদের পাশে বসল। ড্রাইভারকে বলল, গাড়ি ছাড়ুন।
গাড়ি ছাড়ার সাথে সাথে পরী ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে লাগল। মাহিদ পরীর কাঁধে মাথা রাখল। এক হাতে জড়িয়ে ধরে গাইল,,,,,

‘ পরী যাচ্ছে শ্বশুড়বাড়ি,
সঙ্গে যাবে কে?
সঙ্গে যাচ্ছে মাহিদ সাহেব
কোমর বেঁধেছে।

পরী কান্নার মাঝে ও খিক করে হেসে উঠল।
আদি পিহু রেহান,ড্রাইভার ও হেসে উঠল। মাহিদ হাত তালি দিয়ে বলল,

আহঃ পরীসোনার কান্না থেমেছে
ওররে মাহির প্ল্যান সফল হয়েছে
আহঃ পরীসোনার হাসিটা, বড্ড লেগেছে
উহঃ বড্ড লেগেছে।

ওই পিহুর বাচ্চা তুই হাসোস ক্যান। আমি তুই হাসার জন্য ছড়া কাটছিনা। তোর ডাক্তার বাপরে বল, তোর ভালোমতো চিকিৎসা করতে। পিহু জিভে কামর দিয়ে আদির দিকে তাকাল। আদি মাহিদের কথা শুনে নড়েচড়ে বসল। ফোন কানে দিয়ে বলার মতো করে বলল,

‘ রিপের বাচ্চা তোরে আমি খাইছি। ওই রিপের বাচ্চা তুই সবসময় আমারে গালি দিস ক্যান???
পিহু আদির দুষ্টুমি দেখে খিলখিল করে হেসে উঠল। মাহিদ পরীর ভারী ওড়নাটা নিজের মাথায় একটুখানি দিয়ে বলল, দিদিয়া আমায় বাঁচাও। ডাক্তার সব শুনে ফেলেছে। আমায় বাঁচাও।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here