মন_গোপনের_কথা #পর্ব_১,০২

0
1962

#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_১,০২
লেখনীতে পুষ্পিতা প্রিমা
০১

[ মন কেমনের বৃষ্টি সিজন ২ এর ভিত্তিতে এটি লিখা হয়েছে। তাই মন কেমনের বৃষ্টি গল্পটি না পড়ে থাকলে চরিত্রদের মধ্যেকার সম্পর্ক কিছু বুঝবেন না। মন কেমনের বৃষ্টি সিজন ১ ও ২ লিংক কমেন্টে দেওয়া হলো। ]

মাহিদ তখন বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর পিহু মেডিক্যালে। একদিন মেডিকেলে থেকে ফেরার সময় রাস্তার মোড়ে মাহিদকে দেখতে পেল সে। হাতে কিছু কাগজপত্র। পায়ে দু কালো ফিতার চটি। পড়নে চেইক শার্ট। আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বন্ধুদের সাথে হাসতে হাসতে সিগারেট টানছে। সাদা এপ্রোনের পকেটে হাত পুড়ে অনেক্ক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাহিদের কান্ড দেখছে পিহু। ব্যারিস্টারের ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে? মামা কি জানে এসব? আর ওমেন কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে হাসাহাসি কেন?
রাগে বেলুনের মতো ফুলতে লাগলো পিহু।

এদিক সেদিক তাকানোর পর মাহিদের চোখে পড়লো পিহু। দেখে ও না দেখার ভান করে এড়িয়ে গেল সে পিহুকে। পিহু অনেক্ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো। কিন্তু মাহিদ এল না। পিহু এক পা ও সরলো না। আরেকটু এগিয়ে গেল। দাঁড়িয়ে থাকলো। ফোন টিপতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর মাহিদ এল। হাতে থাকা ফাইলপত্র দিয়ে ধপাস করে পিহুর মাথায় মারলো পেছন থেকে। পিহু চেঁচিয়ে বলল

‘ তুমি সিগারেট খাও? আর সেটা মামা জানে?

‘ জানে না। ভাবছি তোর ব্যারিস্টার মামাকে আমি ঢাকঢোল পিটিয়ে বলব যে আমি সিগারেট খাচ্ছি। আর আমি সিগারেট খাইলে সেটা তোর বাপের কি?

পিহু থমথমে মুখে চেয়ে থাকলো।

‘ তোমাকে বলতে হবে না। আমি বলে আসি। তোমার একটু উপকার করি।

পিহু হনহনিয়ে এগিয়ে গেল। মাহিদ বাঁকা হেসে উল্টোপথে হাঁটা ধরলো। বন্ধুদের বলল

‘ আরেকটা ধরা। খবরদার সাবধান! আমার ব্যারিস্টার বাপের চামচা ঘুরাঘুরি করে এখানে। শালাদের আর কোনো কাজ নাই।

খান বাড়িতে পরী আর ছিকু আছে। তারা আজ পাঁচদিন সেখানে বেড়াতে গিয়েছে। পিহুকে আসতে বলেছিল মুনা। পিহু সেই সুযোগে ভাবলো নীরাকে কথাটা বলবে। মামা শুনলে নিশ্চয়ই মাহিদ ভাইয়ের উপর চটে যাবে।
পিহু খান বাড়ি পৌঁছতেই ছিকু দৌড়ে আসলো। পিহু পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলল

‘ পিহু চকলেট আনিনি কেন?

পিহু হেসে তাকে কোলে নিল। বলল

‘ আব্বার জন্য তো চকলেট আনা বারন। ডাক্তার বারণ করে দিয়েছে ছিকুসোনা চকলেট খেতে পারবে না। দাঁতে পোকা হবে। পেটে ব্যাথা হবে।

‘ বিথা হবে কেন? চকলেট আনিনি কেন? কেন বাপ কেন?

পিহু তার গালে চেপে চুমু দিল। বলল

‘ আব্বার জন্য কেক বানাবে পিহু। আব্বা তখন খাবে।

‘ কেক বানাবে কেন?

‘ খাওয়ার জন্য।

পিহুকে দেখে নীরা মুনা খুশি হলো। পরী এসে বলল

‘ তাড়াতাড়ি গোসল নাও পিহু। খেতে এসো।

পিহু চলে গেল। মাহিদ এল অনেকটা পরে। ছিকুর জন্য আইসক্রিম আনলো। ছিকু তার কোলে উঠে বসে থাকলো। মিহি ভালো। তার জন্য আইসকিম আনিছে।
মাহিদ অনেক্ক্ষণ আদরটাদর করে ছুঁড়ে ফেলে দিল সোফায়। পিঠে চাপড়ে দিয়ে বলল
‘ শালা তোরে আদর করলে ও সমস্যা। কোল থেকে নামোস না। যাহ ভাগ বাপ।
ছিকু কেঁদে দিয়ে বলল
‘ মিহি মারিছে কেন? কেন বাপ কেন?
সবাই তার কথা শুনে হেসে কুটিকুটি। নীরা এসে বলল

‘ আব্বা পিহু ও এসেছে।
‘ জানি। যেভাবে বলছ যেন প্রধানমন্ত্রী এসেছে।
‘ ধুর তোর সাথে কথা বলে লাভ নাই। যাহ গোসল সেড়ে নে।
মাহিদ চলে গেল।
পিহু গোসল সেড়ে রুম থেকে বের হতেই মাহিদের মুখোমুখি। পিহু মুখ মোচড়ে সরে পড়তেই মাহিদ মাথায় চটাস করে চাটি মেরে কেটে পড়লো। পিহু মাথার পেছনে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। বিড়বিড় করল
‘ গুন্ডা।
খাওয়ার টেবিলে চুপচাপ খেল সবাই। নীরা রিপকে ফোন করে বলল
‘ আপনি কখন আসবেন ব্যারিস্টার?
রিপ সে কথার উত্তর না দিয়ে বলল
‘ মাহি বাড়ি ফিরেছে?
‘ হ্যা কেন?
‘ আমি লাঞ্চ অফার পেয়েছি। রাতে খাব। মাহিকে সন্ধ্যায় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বলো। আমি এসে যাতে দেখি। কথা আছে।

নীরা ভয়ে ভয়ে বলল

‘ কি হয়েছে ব্যারিস্টার।
‘ কিছু হয়নি নীরা। ফোন রাখো। খেয়ে নাও।

নীরা মাহিদকে কিছু বলল না। ভাত খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মাহিদকে বলল, যাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে।

মাহিদ রিপের কথা ফেলতে পারেনা। এক আল্লাহ ছাড়া পুরো পৃথিবীতে এই একজন মানুষকেই সে ভয় পায়। তাই সে মাগরিবের পরপর ফিরে এল বাড়িতে। রিপ এল এশার নামাযের পরে। মাহিদ আর ছিকু তখন খেলছে। পিহু আর পরীর মাথা খাচ্ছে। মাহিদ তার ঘরে যাওয়ার সময় পিহুর সাথে একাকী দেখা। তখন ফিসফিস করে বলল
‘ যদি আব্বাকে কিছু বলিস তোর খবর আছে।
‘ বলে দিয়েছি অলরেডি। দেখ মামা তোমাকে এসে কি করে?
মাহিদ দাঁতে দাঁত কিছু একটা বলতে চাইলো। না বলেই চলে গেল হনহনিয়ে।

রাতের খাবার দাবার শেষ হলো। রিপ চুপচাপ। মাহিদ ও পাশে বসে খেল। খাওয়ার পর চুপচাপ মাহিদকে ঘরে ঢেকে নিল রিপ। মাহিদ সামান্য অবাক। বিস্ময় তার চোখেমুখে। পিহু সত্যিই আব্বাকে বলে দিয়েছে? চাপা রাগ চেপে রাখলো মাহিদ। মাথা নামিয়ে বাবার সামনে দাঁড়িয়ে বলল

‘ কি হয়েছে আব্বা? ডেকেছ কেন?

রিপ ফোন করে বের করে ফোনের ওয়াল মাহিদের সামনে তুলে ধরলো। বলল

‘ এটা কে?

মাহিদ চমকে গেল। নীরা ভয়ে ভয়ে বলল

‘ শুনুন না, অনেক রাত,,,

‘ চুপ। তুমি যাও এখান থেকে। একটা কথা ও বলবে না। আমরা বাপ ছেলে কথা বলছি।

নীরা মাহিদের দিকে তাকিয়ে থাকলো কাঁদোকাঁদো হয়ে। তার বাচ্চাটার গায়ে যদি হাত তুলে? আর এই ছেলেটা ও পারে। তার দুটো দিতে ইচ্ছে করছে এখন।

মাহিদ কোনো জবাব দিল না। রিপ বলল
‘ তুই স্বীকার করছিস যে তুই সিগারেট খাস? চুপ থাকবি না মাহি।

মাহিদ মাথা নামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো।

‘ কখন থেকে খাওয়া হচ্ছে এসব?

মাহিদ কি করে বুঝাবে সে শখের বশে সিগারেট টেনেছিল। তাই সে চুপ করে থাকলো।

‘ তুই ছেলে বড় হয়েছিস। তোর গায়ে হাত তুলতে ও আমার লজ্জা হয়। তার চাইতে বেশি লজ্জা হচ্ছে নিজের উপর। সঠিক শিক্ষা দিতে পারিনি। মানুষ শাসন করি, ন্যায় ভাষণ দিই কোর্টে, সেখানে নিজের ছেলেকে,,,

আর কিছু বলল না রিপ। মাহিদ চোখ তুলে বাবার মুখের দিকে তাকালো। বলল

‘ আব্বা আমি,,

‘ থাক। সিগারেট খাচ্ছিস খা। ভালো কাজ তো। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হয়ে খা।
যাতে আমার কানে না আসে আমার ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বখাটেদের মতো সিগারেট টানছে। বের হ বাড়ি থেকে। এই বাড়ির চৌ সিমানায় ও দাঁড়াবি না। যাহ।

মাহিদ মায়ের দিকে তাকালো। নীরা গুনগুন করে কাঁদছে। মিনমিন করে বলে উঠলো

‘ ঝড় বাতাস হচ্ছে বাইরে। আমার বাচ্চাটা এখন কোথায় যাবে? সামান্য ব্যাপার নিয়ে,,,

‘ যাহ। দাঁড়িয়ে আছিস কেন? এই বাড়িতে ত্রি সীমানায় ও যেন না দেখি তোকে। কত বড় হয়েছিস দেখি!

সোজা বের হয়ে এল মাহিদ। গলার রগ ফুলে উঠেছে। চোখ লালচে। রিপের গর্জনের আওয়াজ শুনে পরী পিহু এসে দাঁড়িয়েছিল বাইরে। মাহিদ বের হয়ে যাওয়ার সময় পিহুর মুখোমুখি। পিহু ঘনঘন মাথা নাড়িয়ে বুঝাতে চাইলো

‘ আমি মামাকে কিচ্ছু বলিনি। সত্যি!

মাহিদ গটগট পায়ে হেঁটে চলে গেল। ঝড় বাতাস বইছে ভালো করে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। নীরা কেঁদে ফেলল মাহিদকে বাড়ি থেকে বের হতে দেখে। পরী এসে বলল

‘ পাপা এটা কি করেছ? ভাই এখন কোথায় যাবে? শাস্তিটা একটু বেশি হয়ে গেল। এই বয়সে এমন করে,

‘ ঘুমাতে যাও পরী। পিহু তুমি ও ঘুমাতে যাও। নীরা ঘুমিয়ে পড়ো।

নীরা কেঁদে উঠে চলে গেল সেখান থেকে। তার ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তাকে ঘুমাতে বলা হচ্ছে। পাষাণ লোক!

__________

ছাতা হাতে পিহু বাইরে বেরিয়ে পড়লো। বাতাস ও বইছে ভালোভাবে। রিপ ব্যালকণি থেকে সরে পড়ে বিছানার কাছে গেল। বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদা নীরাকে বলল

‘ ডেকে নিয়ে এসো। বাগানে কাছে আছে দেখলাম। নীরা?

নীরা ফুঁপিয়ে উঠে বলল

‘ ও আমার কথায় আসবে না। আপনি যান।

‘ আমি পারব না।

‘ তাহলে কথা বলতে আসবেন না আমার সাথে।

রিপ চুপ করে বসে রইলো। একদম বাপের মতো ত্যাড়া হয়েছে ওই ছেলে।

পিহু ছাতা হাতে নিয়ে এদিকওদিক তাকাতেই মাহিদকে চোখে পড়লো। বাগানের উঁচু ঢিবির উপর বসে রয়েছে। পড়নের অফ হোয়াইট কালার শার্ট ভিজে পিঠে লেগে রয়েছে। পিহু পেছন থেকে ছাতা বাড়িয়ে দিল মাথার উপর। ভিজে টুইটুম্বুর হয়ে থাকা মাহিদ ঘাড় ঘুরালো। ভয়ংকর শীতল চক্ষুকোটর। পিহুর অন্তরআত্মা কেঁপে উঠলো। কাঁপা-কাঁপা গলায় সে বলল

‘ মামি কাঁদছে। বাড়ি চলো। মামা ওসব রাগের মাথায় বলেছে।

মাহিদ ছাতাটা নিল একহাতে। মোচড় দিয়ে চোখের সামনে সেটিকে আধমরা করে দূরে ছুঁড়ে মারলো। সাথে সপাটে চড় বসালো পিহুর গালে। পিহু ছিটকে পড়লো কাঁদায়।

‘ আমার ব্যাপারে নাক গলাতে আসবি তোর খবর আছে। এইবার শুধু চড়, পরের বার জীবন্ত কবর দেব বেয়াদব।

ঝুপঝাপ বৃষ্টির আওয়াজের মধ্যে পিহুর কান্নার আওয়াজ শোনা গেল না। মাহিদ ততক্ষণে বাড়ির গেইট পার হয়ে নিরুদ্দেশ। রিপ এসে পিহুকে কাঁদায় পড়ে থাকতে দেখলো।

চলবে

#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_২
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা

রিপের চেঁচামেচিতে সারা বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে উঠে ছুটে এল। মুনা এসে বলল

‘ কি হয়েছে রে রিপ? মাহি এসেছে?

রিপ গর্জে গর্জে বলল

‘ নাহ। বেয়াদবটা দিন দিন ছোট হচ্ছে নাকি বড় হচ্ছে? কিভাবে ওকে মেরে পালিয়েছে দেখেছ? এত বড় সাহস ওর?

নীরা অবাক চোখে চেয়ে থাকলো। গালে এখনো কান্না লেপ্টে আছে। যার জন্য কেঁদেকেটে সে সাগর বানাচ্ছে সে এই ছোট্ট মেয়েটির গায়ে হাত তুলেছে?

ঘুমঘুম চোখে পরী আর ছিকু ও উঠে এল। পিহুকে ওই অবস্থায় দেখে পরী ছুটে এল। বলল

‘ কি হয়েছে ওর? কাঁদছে কেন?

রিপ বন্ধ করা চোখ খুলে কপালে আঙুল চালালো। বলল

‘ ওকে একটু ফ্রেশ করে দাও। গালটা লাল হয়ে আছে। ওই বেয়াদব কোথায় আমি দেখি। বাদশা হয়ে গেছে সে? আসুক।

মুনা পিহুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। বলল

‘ ও তোমাকে কেন মেরেছে পিহু? ঝগড়া হয়েছে?

রিপ বলল

‘ কোনো ঝগড়া টগড়া হয়নি। আমার রাগ পিহুর উপর ঝেড়েছে।

পিহু চোখ মুছতে মুছতে বলল

‘ মাহিদ ভাই মনে করেছে আমি মামাকে বলে দিয়েছি যে ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে সিগারেট খায়। সেজন্য,,

বলতে না বলতেই আবার ও কান্নায় ভেঙে পড়লো পিহু। গালটা ভীষণ জ্বলছে তার। রিপ গিয়ে তার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল

‘ আচ্ছা আর কেঁদোনা মামা। এভাবে শরীর খারাপ করবে। পরী ওকে নিয়ে যাও। কাপড়চোপড়ে কাঁদা লেগেছে। ফ্রেশ করে একটু বরফ ম্যাসাজ করে দাও।

খালি গায়ে খালি পায়ে এলোমেলো চুলে ঘুমঘুম চোখে ঢুলে ঢুলে ছিকু এল। বলল

‘ চবাই ঘুমায় না কেন? ছিকুর ঘুম ভাঙি দিচে কেন? পিহুচুন্নি কাঁদে কেন?

বলতে না বলতেই নিজেই কেঁদে দিতে যাচ্ছিল। রিপ এসে তাকে কোলে তুলে নিয়ে কাঁধে মাথাটা রেখে পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলল

‘ তুমি আমার কোলে ঘুমাও ভাই। আম্মা এক্ষুণি চলে আসবে। পিহু কাঁদছে তো।

‘ কেন? পিহু কাঁদে কেন? পিহুকে চবাই মারে কেন?

‘ মিহি মেরেছে।

‘ মিহি মারি ফিলবো এদদম। মিহি ক্যাট। ডগ। মাংকি।

‘ হ্যা তাই।

পিহু কাপড় চোপড় পাল্টে নিল। পরী সামান্য বরফ ম্যাসাজ করে দিয়ে বলল

‘ ঘুমাও। ব্যাথা না কমলে মেডিসিন নিতে হবে।

পিহু মাথা নাড়ালো। শুয়ে পড়লো। পরী তার ঘুম না আসা পর্যন্ত বসে থাকলো। রিপ আসলো ঘুমন্ত ছিকুকে নিয়ে। পিহুর পাশে শুয়ে দিল। পরী বলল

‘ আমরা একসাথে থাকি পাপা।

রিপ বলল

‘ ওর রাতে গায়ে জ্বর আসলে আমাকে ডেকো। ঠিক আছে?

‘ ওকে পাপা।

রিপ তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে গেল।
মুনা তাকে ডেকে বলল
‘ ছবিটা কে দিয়েছে তোকে?
‘ আমার এক পরিচিত । ওনি আমার বিপক্ষ দলের হয়ে অনেক কেস লড়েছেন। কাল আমার অফিসে এসে বলল, বিচারআচার তো ভালোই চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু একমাত্র ছেলের খবর রেখেছেন? মহিলা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে আপনার ছেলে।
আমি বিশ্বাসই করলাম না প্রথমে। পরে দেখি উনি প্রমাণ হিসেবে ছবি ও তুলে রেখেছেন। আমি ছবি দেখে থ হয়ে গিয়েছি। এতদিন আমি তাকে এই শিক্ষা দিয়েছি। ও মা বাপ ছাড়া ছেলে?

নীরা চলে গেল কেঁদে উঠে। এই একটা ছেলে তাকে মেরে তবে শান্তি। এই রাতবিরেতে কোথায় চলে গেল কে জানে? কাল পিহুর আব্বা যদি জানতে পারে তার মেয়েকে এভাবে মেরেছে মাহি, কি হবে ভাবতে ও চাইলো না নীরা।

_________

সকাল সকাল বাড়ির সকলে উঠে পড়েছে ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য। রিপ মসজিদ থেকে এসেই পিহুকে দেখতে গেল। পিহু আজ উঠেনি। গা কাঁপিয়ে জ্বর এসেছে তার। বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমানো ছিকু। পরী দুজনের গায়ে ভালো করে কাঁথা দিয়ে ঢেকে দিয়ে রিপকে বলল

‘ পিহুর জ্বর এসেছে পাপা। আব্বাকে তো বলা যাবে না। ডাক্তার নিয়ে আসলে ভালো হয়। মাহির খোঁজ পেয়েছ?

‘ না,। ডাক্তার তো এত সকাল সকাল আসবেন না। মিনিমাম ন’টা বাজতে হবে।

‘ আচ্ছা ও আরেকটু ঘুমাক।

______

পিহুর ঘুম ভাঙেনি এখনো। তার আগেই ছিকুর ঘুম ভেঙে গেছে। নিজেকে সে আবিষ্কার করলো তার আরেকটা মায়ের বুকে। ঘুমঘুম চোখ কচলে বলল
‘ পিহু গুড মর্নিং! ধরি রাখছ কেন?
পিহুর সাড়াশব্দ নেই। ছিকু তার ছোট্ট হাত পিহুর গালে রাখলো। ডাকল
‘ পিহু! পিহু! উঠি যাও। চোখ খুলোনা কেন? পিহু! ও পিহু?
পিহু নড়েচড়ে উঠে ছিকুকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। খানিকটা চোখ খুলার চেষ্টা করে বলল

‘ ঘুম ভেঙেছে কলিজা?

‘ ভাঙিচে।

পিহু তার কপালে চুমু এঁকে ছেড়ে দিল। বলল

‘ যাও। ফ্রেশ হয়ে নাও। ব্রেকফাস্ট!

‘ কেন বেকফাস্ট কেন? হুজুর আসবে না কেন?

‘ এটা তো নানুর বাড়ি। আজ হুজুর পড়াবে না আপনাকে।

ছিকু খুশিতে লাফ দিয়ে উঠলো। ঢুলতে ঢুলতে নেচেনেচে বলল

‘ ওহ ওহ হলিডে হলিডে। ছিকুর হলিডে।

পিহু হেসে ফেলল। কানে ব্যাথা অনুভব হলো
ভার ভার লাগছে। ঝিমঝিম করছে। সে উঠে পড়লো। হাত মুখ ধুয়ে বসার ঘরের দিকে যেতেই দেখলো রিপ ডাক্তার নিয়ে বাড়ি ঢুকেছে মাত্র। পিহুকে দেখামাত্র বলল

‘ সোফায় বসো মামা।

পিহু সোফায় বসলো। ডাক্তার জ্বর মাপলো। ঔষধ লিখে দিল। রিপ ডাক্তারের পেছন পেছন চলে গেল। ঔষধ আনলো। পিহু ঔষধ খেয়ে বলল যে তাকে মেডিক্যালে যেতে হবে। রিপ বাঁধা দিয়ে বলল, আজ যেতে হবে না। কিন্তু দশটা বাজতেই আদির ফোন এল। সে রিপকে বলল, পিহুকে যাতে মেডিক্যালে পৌঁছে দেয়। রিপ তাকে বলল, পিহু আজ মেডিক্যালে যাবে না। কাল থেকে যাবে। আজ বেড়াতে এসেছে, বেড়াক।
আদি রিপের মুখের উপর আর কিছু বলল না। শুধু বলল, একটু দেখে রাখিস। মাহির সাথে ঝগড়া হয় সারাক্ষণ। দুজন না আবার মারামারি করে। রিপ ছোট্ট করে বলল
‘ চিন্তা করিস না। আমি আছি।

মাহিদের ফোনে ফোনের উপর ফোন দিতে লাগলো নীরা। রিং পড়ছে কিন্তু মাহিদ ফোন তুলছেনা। নীরা টেক্সট পাঠালো তার ফোনে। যদি আজকে বাড়ি না ফিরিস আমার মরা মুখ দেখবি মাহি। তুই আমাকে এখনো চিনিসনি। তাড়াতাড়ি ফোন তোল আর ফিরে আয়।
পরের বার মাহিদ ফোন তুললো। চুপ করে মায়ের বকাঝকা শুনলো। নীরা কেঁদে ফেলে বলল

‘ আমার জেঠুর ছয়টা ছেলে ছিল। কোনোদিন তাদের বাড়িতে ছেলেগুলোকে নিয়ে ঠু শব্দ ও শোনা যেত না। তুই একটা হয়ে আমাকে জ্বালিয়ে মারছিস? তুই কি এখনো ছোট আছিস? তোর না বিয়ের বয়স হয়ছে? আমাকে কি মেরে ফেলবি?

‘ বাড়ি ফিরছি। সন্ধ্যায়। কেঁদোনা তো।

বাড়ি ফিরছে বলতেই নীরা বুক কেঁপে উঠলো। ব্যারিস্টার তো ফায়ার হয়ে আছে। ভয়ে মায়ের মন আল্লাহ আল্লাহ ডাকতে লাগলো। মাহিদ ফিরলো সন্ধ্যেবেলায়। হাতে একটি ক্রিকেট ব্যাড। মুখ ভার। পরী এসে ক্রিকেট ব্যাড নিয়ে হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে গেল। বলল

‘ চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে নে। কোথায় ছিলি?

‘ নিনিতের বাসায়।

‘ পাপা খুব রেগে আছে। আমার ত ভয় লাগছে। পিহুকে ওভাবে মেরেছিস কেন? গাল আর কানের ব্যাথায় জ্বর চলে এসেছে। তুই কি মানুষ ?

মাহিদ উত্তর দিল না। পরী বলল

‘ পাপাকে আমিন আঙ্কেল তোর সিগারেট খাওয়ার ব্যাপারে বলেছে। পিহু নয়। তুই এজন্য ওকে মেরেছিলি? তা ও ওভাবে?

মাহিদ ঘাড় ঘুরিয়ে পরীর দিকে ফিরে বলল
‘ আমিন আঙ্কেল?
‘ হ্যা।
চুপ করে রইলো মাহিদ। তাহলে তো বড্ড ভুল হয়ে গেছে। গোসল সাড়তে চলে গেল সে। গোসল সেড়ে আসতেই ছোট্ট প্রধানমন্ত্রী তার কাছে জবাবদিহিতা চাইতে আসলো। প্রধানমন্ত্রীর পড়নে থ্রি কোয়াটার কালো প্যান্ট। গায়ে লাল টি শার্ট। টি শার্টের বুকে লাগানো কালো চশমা। মাহিদকে শাসিয়ে শাসিয়ে বলল

‘ মিহি পিহুকে মারি পালায়ছে কেন? মিহি পুঁচা কেন? বেরিসতার মিহিকে মারবে কেন?

মাহিদ এগিয়ে গেল তার দিকে। কোলে তুলে নিয়ে খাটে বসালো। বলল

‘ তুই বাপ শাসন করবিনা খবরদার? চুপ কইরা বইসা থাক। নইলে তোর খালার মতো অবস্থা তোর ও হইবো।

ছিকু চুপ থাকলো না। একের পর এক প্রশ্ন করা শুরু করলো। মাহিদ কানে বালিশ চেপে শুয়ে থাকলো। ছিকু তার পিঠের উপর চেপে বসলো। মাহিদের চুল হাতের মুঠোয় নিয়ে নেচেনেচ গাড়ি চালাতে চালাতে বলল,
ভুউউউ ফিপফিপ। ভুউউউ।

মাহিদ ছিকু নামক অত্যাচারকে মুখ বুঁজে সহ্য করলো। কারণ সে তখন অন্য ভাবনায় বিভোর।

____________

রিপ বাসায় এসে নীরাকে ডাকল। বলল
‘ ও এসেছে?
নীরা ভয়াতুর চোখে চেয়ে বলল
‘ মাত্রই এসেছেন। একটু,,
রিপ হনহনিয়ে এগিয়ে গেল। পড়নে অফিসের পোশাক। কালো কোর্টটি সোফায় রেখে চলে গেল সে।
নীরা দৌড়ে রান্নাঘরে গিয়ে মুনাকে বলল
‘ বড়আপা! দেখোনা মাহির ঘরের দিকে গেল তোমার ভাই। একটু যাও না। মেরে ফেলবে।
মুনা ছুটলো হন্তদন্ত হয়ে। যেমন বাপ, তেমন ছেলে। কেউ কারো থেকে কম না এরা।

দরজায় টোকা পড়তেই ছিকু গিয়ে দরজা খুলে দিল। রিপ তাকে দেখে একটু হাসলো। দরজার বাইরে বের করে দিয়ে বলল
‘ পরী ডাকছে। যাও।
ছিকু বোকাসোকা চোখে চেয়ে থাকলো। মাহিদ মাথা নামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। রিপ দরজায় খিল লাগিয়ে বলল
‘ কাল রাতে কোথায় ছিলি?
‘ নিনিতের বাসায়।
‘ পিহুকে কেন মেরেছিস?
মাহিদ মাথা নামিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।
রিপ গর্জে বলল
‘ জবাব দে। কেন মেরেছিস? তুই কে ওকে মারার? কোন সাহসে ওর গায়ে হাত তুলিস?
ও কি তোর টাকায় খায় না পড়ে?
মাহিদের চক্ষু তখন ও মেঝেতে নিবদ্ধ।
‘ উত্তর দে মাহি।
মাহিদ উত্তর দিল না। রিপ বলল,
‘ কথা বলছিস না কেন? কোন সাহসে তুই ওর গায়ে হাত তুললি? আবার অন্যের বাড়ি গিয়ে রাত কাটাস? কত্ত বড় হয়ে গেছিস তুই? আমি ভাবতেও পারছিনা তুই এত বড় দুঃসাহস দেখালি কিভাবে?

বলতে না বলতেই রেগেমেগে রিপ ওয়ারড্রবের উপর থাকা মাহিদের বেল্ট হাতে নিল।
মেঝে থেকে চোখ সরানোর আগেই মাহিদের পিঠে আঘাত পড়লো বিরতিহীন একের পর এক। আটকে রাখা শ্বাস ছাড়ার সময় ও পেল না মাহিদ। ক্লান্ত হয়ে শেষ আঘাতটা করে তারপর থামলো রিপ। তারপর বেল্টটি ছুঁড়ে মারলো ঘরের এককোণে। মাহিদ সেই একই ভঙ্গিতে দাঁড়ানো। মাথাটি এখনো ঝুঁকে আছে নিচের দিকে। ঘেমে উঠেছে তরতরিয়ে। দরজার ওপাশে চিৎকার চেঁচামেচি আর এক মায়ের কান্নার আওয়াজ। সাথে ভয় পেয়ে কাঁদছে ছোট্ট বাচ্চাটিও। রিপ দরজা খুলে বেরিয়ে পড়লো। কাউকে কিচ্ছু বলার সুযোগ না দিয়ে হনহনিয়ে চলে গেল। নীরা পাগলের মতো ছুটে গেল। গিয়ে নিজে ও কষে চড় বসিয়ে দিল মাহিদের গালে। তারপর বলল
‘ এইবার শান্ত হয়েছিস? হয়েছিস?
মাহিদ রক্তাক্ত চোখদুটো নিচ থেকে উপরে তুললো না।
নীরা কেঁদে উঠে শক্ত করে তাকে জড়িয়ে ধরলো। কেঁদেকেটে বলল
‘ কেন এমন করিস তুই? জানিস তোর বাপ এরকম। দোষ করলে একচুল ও ছাড় দেননা। তারপরও তুই শোধরাস না কেন রে?
পরী এসে নীরাকে নিয়ে যেতে যেতে মুনাকে বলল
‘ মাম্মা মাহিকে দেখ তো। আমি ছোটমাকে নিয়ে যাচ্ছি।
মুনা মাহিদের কাছে গেল।

ছিকু এখনো কাঁদছে পরীর পিছু পিছু। পরী ডাক দিল পিহুকে।
‘ পিহু? ছিকুকে একটু ধরো। কাঁদছে ও। পিহু?

মুনা মাহিদের কাছে গিয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে ঘেমে উঠা মুখটা মুছে দিতে দিতে বলল
‘ এজন্যই সাবধানে থাকতে বলি। কথা তো শুনিস না। ওদিকে বস তো। শার্টটা খোল, পিঠ দেখি।
মাহিদ চুপ করে থাকলো। মুনা বলল
‘ তুই গিয়ে বস। আমি মলম নিয়ে আসি। খবরদার কোথাও যাবি না মাহি।
মুনা চলে যেতেই দরজার পাশ থেকে ছিকুকে কোলে তুলে নিল পিহু। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে তাকালো রুমের ভেতর। ছিকুর কান্না থামলো। পিহু চোখ রাখলো রুমের ভেতর।
সাথে সাথে দুটো রক্তিম বর্ণ ধারণ করা চোখ তার দিকে তাকালো বেশ অন্যরকম ভঙ্গিতে।

পিহু তাকে পিঠ করে দাঁড়ালো। ছিকুকে নিয়ে চলে গেল। মুনা এসে টেনে ফ্যানের নিচে বসিয়ে দিল মাহিদকে । শার্ট তুলে পিঠ দেখতেই শিউরে উঠলো। ছোপছোপ দাগ পড়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে। গলা ধরে আসলো মুনার। নিজের হাতে আদর যত্ন করে বড় করা এই ছেলে। নিজ দোষে এতগুলো মাইর খেল। নিজে দিল একটা, খেল দশটা। ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে নিল মাহিদ। সরে পড়ে বলল

‘ হাত দিওনা তো। যাও। আমার ঘুম পাচ্ছে। কেউ যেন আমার ঘরে না আসে।

মুনা জোর করে খানিকটা মলম লাগাতে ও পারলো না। জ্বালা করায় মাহিদ আর ধরতে ও দিল না।

________

রাতে চারপাশটা শান্ত হয়ে আসতেই নীরা এল মাহিদের ঘরে। উপুড় হয়ে ঘুমোচ্ছে সে। পিঠ লাগাতে পারছেনা বিছানায়। নীরা এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল তার মাথায়। কপালের চুল সরিয়ে কপালে চুমু খেল। পড়নের পাতলা শার্ট সরাতেই মায়ের নরম মনে আঘাত লাগলো। এভাবে মারতে হয়? চোখ ঝাপসা হয়ে উঠলো নীরার।
পিঠে মলম লাগিয়ে দিল সে ধীরেধীরে। তারপর ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
ঘরে যেতে না যেতেই রিপ বলল

‘ খেয়েছে?

নীরা জবাব দিল না। গটগট পায়ে হেঁটে বিছানার এককোণায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে পড়লো। রিপ সেদিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

রাত তখন এগারোটা। ডিনারটা আজ একটু তাড়াতাড়ি হয়েছে।
আদির আজকে নাইট ডিউটি পড়েছে। পরীর সাথে সন্ধ্যায় কথা হয়েছে। পিহুর সাথে বলা হয়নি। কিন্তু এতরাতে ফোন দেবে কি দেবেনা ভাবতে ভাবতে আদি টেক্সট পাঠালো

‘ জেগে আছেন আম্মা?

সাথে সাথে আনসার এল।

‘ ইয়েস পাপা।

আদি ফোন লাগালো তখুনি। পিহু ফোন তুলে বাইরে বেরিয়ে গেল। বাড়িটা অন্ধকার। পিহু বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। দূরের সড়কবাতির আবছা আলোয় দু একটা গাড়ি চলতে দেখা যাচ্ছে। আদির সাথে ফোনে কথা বলা শেষ করে ঝুলবারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে রইলো পিহু। নয়নতারার পাতাগুলো দুলছে। পিহু আনমনে দূরের আকাশের দিকে চেয়ে থাকলো। তারপর চলে যেতেই কারো সাথে ধাক্কা খেল সে। দু পা পিছিয়ে গিয়ে সামনের আগন্তুককে দেখে চিনতে পেরে চুপ মেরে গেল।
ভেঙে যাওয়া ঘুম জোড়া লাগছিল না। পিঠ বিছানায় রাখতে না পারায় ঘুমটা জমছিল না মাহিদের। তাই বারান্দায় এসেছিল। পিহুকে দেখে সে অবাক হলো না। বরঞ্চ দূরের আকাশে চোখ রেখে পকেটে হাত পুরে চুপটি করে দাঁড়িয়ে রইলো। পিহু চলে যেতে উদ্যত হলো। পা বাড়ানোর আগে মাহিদ গম্ভীর গলায় শুধালো

‘ দাঁড়া।

পিহু থমকে গেল।

চলবে,

রিচেক করা হয়নি পাঠক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here