মন_গোপনের_কথা #পর্ব_৪৭

0
342

#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_৪৭
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা

মাহিদ গালে হাত দিয়ে ছিকুর দিকে পলকহীন তাকিয়ে রইলো। পিহু ঘর থেকে বের হয়ে গেল। ছিকু কোমর থেকে হাত নামিয়ে বলল

পিহু চলি গিচে কেন?

তোর কথার অত্যাচার সইতে না পেরে।

পুঁচা কথা বলো কেন?

চুপ। এদিকে আয়।

ছিকু এল। বলল

পিহু ছুটু কেন? পিহুকে আদর দিচো কেন? ছিকুকে আদর করোনা কেন?

মাহিদ তার গাল টেনে ধরলো। আলতোকরে ঠাসস করে গালে মেরে বলল

তুই আমাগোরে কি পেরেম টেরেম করতে দিবিনা শালা?

দিবোনা কেন? পিরিম করো কেন?

মাহিদ হো হো করে হেসে ফেলল। ছিকু তার সাথে সাথে হাসলো। মাহিদ আঙুল দিয়ে তার পেটে গুঁতো মেরে বলল

তুই আমার জামাই হবি।

হুবোনা কেন?

না না জামাই হবি।

না হুবোনা।

না না হবি।

না না জেমাই হুবো কেন?

আমার মাইয়্যারে তোর কাছে দিয়া দিমু।

মিইয়া কুথায়? ইখানে নাই কেন?

মাহিদ তার কানে কানে বলল

তোরে বলুম না।

কেন বলবে না কেন? তুমি ডগ কেন?

মাহিদ এবার তার পেটটা মুঠোতে নিয়ে টেনে আনলো। ছিকু বলল

দুক্কু দাও কেন? উফফ।

মাহিদ বলল

তুই আমারে কুত্তা ডাকছোস কিল্লাই? কিল্লাই ডাকছোস?

ডগ কুত্তা কেন?

তোর ডগ কওনের গুষ্ঠিরে কিলাই বাপ। কুত্তা ডাকবি। রাখ তোর ডগ।

মিহি কুত্তা কেন?

মাহিদ হা করে চেয়ে থাকলো। কপাল চাপড়ে বলল

আমারে ডাকতে কইনাই শালা।

মিহিকে ডগ বলতে মন চায় কেন?

মাহিদ তাকে কোলে তুলে বিছানায় ছুঁড়ে মারলো। বালিশ দিয়ে চেপে ধরলো। আবার বেডশীট তুলে ঢেকে দিল। বালিশ দুটো দিয়ে ঢেকে দিল। বলল

তুই থাক বাপ। শালা কেন কেন কইরা মাথাটা শেষ কইরা দিল। শালা ডাক্তারের নাতি।

পিহু এসে বিছানার এই অবস্থা দেখে হায় হায় করে উঠলো।

আমার বিছানার এসব কি করেছ?

মাহিদ আলাভোলা চোখে তাকালো। বলল

আমি করিনাই। তোর বোনপো করছে।

পিহু কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ালো। ছিকু কাঁথার আর বালিশ সরিয়ে মুখটা বের একটুখানি চাইলো। পিহুকে রাগতে দেখে আবার ঢুকে পড়ে বলল

পিহু রাগি গিচে কেন? মিহি আদোর করেনি কেন?

পিহু খিক করে হেসে আবার হাসি চাপা দিল। মাহিদ হাসতে হাসতে বিছানায় শুয়ে পড়লো। মাহিদের হাসি শুনে কাঁথার ভেতরে ছিকু ও হাসতে লাগলো খিকখিক করে। পিহু মাহিদকে বালিশ দিয়ে মারতে মারতে বলল

সব তুমি করেছ। ও এখন থেকে এসব বলতে থাকবে। অসভ্য মানুষ।

মাহিদ ছিকুর সাথে কাঁথার ভেতরে ঢুকে পড়ে বলল

আর মারিস না বইন। মাফ কর।

পিহু ঘর থেকে বের হয়ে গেল। ইশা আর পরীকে গিয়ে বলল

ওরা আমার ঘরের কি অবস্থা করেছে দেখে আসো।

মাহি আর ছিকু?

হ্যা।

মামা ভাগিনা এক হলে আর কি?

মাহিদ আর ছিকু মিলে বিছানা ভালো করে গুছিয়ে ফেলল। মাহিদ ছিকুকে বলল

কাম কর কাম কর। আমার এরকম জামাই পছন্দ। বিয়ার পর আমার মাইয়্যা তোর কাম করবো না। তোর কোনো কাম করতে দিবিনা খবরদার। যদি শুনি তুই কাম করাইতাছোস তাইলে তোর খবর আছে। দিনে দিনে আইসা মাইয়্যা লইয়্যা যামু আমি। আমার নাম মাহিদ খান। খান বংশের পোলাগো এখনো চিনোস নাই তুই।

মাহিদের কথাগুলো ছিকুর মাথার উপর দিয়ে গেল। ঠিক করা বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে বলল

‘ মিহি বিশিবিশি কথা বুলে কেন?

মাহিদ তার পিঠে মেরে বলল

চুপ শালা। আমার কথা হুন। তুই কুনো মাইয়্যার দিকে তাকানোর আগে দশবার ভাববি। কথা বলার আগে একশবার। খবরদার তোরে যদি দেখি কোনো মাইয়্যাগো লগে ভাবসাব করতাছোস তাইলে তোরে আমি খাইছি। তোরে সোজা মাইয়্যা দিতাম না।
ছিকু মাহিদের মুখ বরাবর মুখ আনলো। ছোট্ট দুহাত দিয়ে মাহিদের ছোট ছোট দাঁড়িগুলো আঙুল দিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে বলল

কেন মিইয়্যা দিবেনা কেন?

যা কইছি তা মাথার ভেতর ঢুকা। দুবার কথা কইতাম না। তুই আমার দাঁড়ি লইয়্যা টানাটানি লাগাইছোস কিল্লাই?

ছিকু জবাব দিল না। সে ব্যস্ত।

মাহিদ তাকে পাঁজাখোলা করে নিয়ে আদর করতে করতে বসার ঘরে নিয়ে চলে এল। ছিকু খিকখিক করে হাসতে হাসতে বলল

মিহি ছিকুকে পিহুর মুতো আদর দেয় কেন?

মাহিদ তার গাল টিপে দিয়ে বলল

কারো সামনে বললে তোরে খাইছি বাপ। মাইয়্যা দিমু না তোরে। মানে বউ পাইতি না।

ছিকুর বউ লাগবে। তাই ভয়ে সে কোনো কথা বলবে না আর। মিহি তাকে বুউ দিবে না৷

পিহু রান্নাঘর থেকে এল। বলল

আমার ঘর গুছিয়েছ দুজনে?

মাহিদ মাথা নাড়লো। পিহু বলল

গুড। নইলে তো আজ দুজনের খবর ছিল।

ছিকু গালে হাত দিয়ে খিকখিক করে হেসে বলল

পিহু মিহিকে বুকা দেয় কেন?

পিহু বলল

দুটোই পাগল।

____________________

রাতে জামাই আদরের আয়োজন। অনেক রান্নার পদ করেছে ইশা আর রাইনা মিলে। তার দুটো মেয়ে জামাইকে আজ জামাই আদর। ছিকু রেহান আর মাহিদের মাঝখানের চেয়ারে দাঁড়িয়েছে। সে সবার বড় জামাই। তাকে বাদ রেখে কোনো জামাই আদর চলবেনা। কবুতরের মাংস খেতে পছন্দ করে ছিকু। নরম নরম মাংস। গরুর মাংস আর মুরগীর মাংস খেতে দিলে চিবিয়ে চিবিয়ে ফেলে দেয়। মাছ এখনো খেতে জানেনা। মাহিদ তাই তাকে শুধু কবুতরের মাংস দিল। ছিকু খেতে খেতে মাথা দুলালো।

মুজা মুজা।

মাহিদ বলল

চুপচাপ খা।

ছিকু ধমক দিয়ে বলল

মিহি চোপপপ।

সবাই একসাথে হেসে ফেলল। আদি বলল

মামাকে চোপ দিচ্ছ?

ডততর চোপপপ করেনা কেন? বিশিবিশি কথা বুলে কেন?

রেহান বলল
এভাবে বলেনা পাপা।

রাইনা বলল

ঠিকই তো বলছে আমার ভাই। তোরা খাওয়ার সময় এত কথা বলবি কেন?

আদি আফিকে বলল

আমাদের টাইট দেওয়ার মানুষ তো চলে এসেছে দাভাই।

আফি বলল

হ। আমার ভাই তোরে সোজা করবো।

আমাকে না। তোমার সিগারেট খাওয়া বন্ধ করবে। সো নিজেরটা ভাবো আগে।

ছিকু ধমক দিয়ে বলল

ডততর পুঁচা কেন? বিশিবিশি কথা বুলে কেন?

আদি বলল

আচ্ছা চুপ করলাম ভাই।

পরী বলল

ওমা! আপনি সবাইকে শাসন করছেন? কি আশ্চর্য!

মাহিদ তাকে চিমটি মেরে ফিসফিসিয়ে বলল

পন্ডিত হয়ছে শালা।

মিহি ছিকুকে চিমুট মারে কেন?

পিহু এসে বলল

চুপচাপ খাও। ওকে নিয়ে পড়েছ কেন? আর কিছু দেব?

মাহিদকে কিছু বলতে না দিয়ে ছিকু বলল

পিহু মিহিকে বুকা দিচে কেন? মিহি পিহুকে চিমুট দেয় না কেন? আদর কচচে কেন?

পানির গ্লাসে পানি ঢালতে গিয়ে পিহু পানি ঢেলে দিল টেবিলে। খুকখুক করে মাহিদ কেশে উঠলো৷ সবাই চুপচাপ মাথা নিচু করে করে খাচ্ছে। পরী রেহানের সাথে ঠোঁট টিপে হেসে দ্রুত সরে পড়লো হাসার জন্য। এই ছেলেটা কেমনে যে এত কথা বলে! আল্লাহ!
লজ্জায় পিহুর কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
আদি ইশাকে বলল

মিষ্টি মাহিকে দেখো। ঝালে কাশি উঠেছে বোধহয়।

মাহিদ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। ইশা বলল

ওমা খাওয়া শেষ?

হ্যা হ্যা। সরো আমি যাই।

মাহিদ চলে গেল। পা টিপে টিপে পিহু ও চলে যেতেই টেবিল কাঁপিয়ে হেসে উঠলো সবাই। ছিকু শুধু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তার ছোট্ট মাথায় কিচ্ছু ঢুকলো না। শুধু ঢুকলো সবাই হাসছে তাকে ও হাসতে হবে। তাই কদুর বিচির মতো দাঁতগুলো দেখিয়ে হাসতে লাগলো।

___________

গেমস গেমস খেলতে ফোন হাতে ঘুমিয়ে পড়েছে মাহিদ। পিহু এসে দেখলো এলোমেলো হয়ে ঘুমোচ্ছে সে। পিহু ফোনটা নিয়ে ফেলল। ছিকুর কথা মনে পড়তেই হাসি পেল। ইজ্জত সম্মান কিছুর কিছুই রাখলো না ছেলেটা। এত পাকনামি কেন যে করে?
মাহিদের ফোন বেজে উঠলো তারমধ্যে। পিহু তাড়াতাড়ি ফোনটা সাইলেন্স করে দিল। ঘুম ভেঙে যাবে। দেখলো নীরার ফোন থেকে কল এসেছে। পিহু ফোন তুললো। সালাম দিতেই নানীর গলা ভেসে আসলো।

আমার ভাই কোথায় রে?

ঘুমোচ্ছে।

ওহহ। খাওয়াদাওয়া করছোস সবাই?

হ্যা, তুমি করেছ?

হ্যা করেছি। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভাবতেছি আমার ভাইরে একটা ফোন দেই। কথা বলি। নীরুরে বললাম তাই ফোন দিতে। যাওয়ার সময় তো রাগ করেই গেল।

কেন? রাগ করলো কেন?

তোর শ্বাশুড়ি বকাঝকা করছে খেলাটেলা নিয়ে। এই আর কি!

ওহহ।

আইচ্ছা রাখ। আমার ভাইয়ের খেয়াল রাখিস।

আচ্ছা রাখো।

হুন নাতবৌ।

হ্যা বলো।

তোর শ্বাশুড়ি সইরা গেছে। তোরে একটা কথা বলি।

বলো না।

আমার ভাই তোরে কিছু দিছে?

উহু। ঢুসে ঢুসে ঘুমাচ্ছে দেখছ না।

আরেহ তোর জামাইরে ঘুম থেইকা তোল। এই রাতগুলা কি আর আসবো নাকি? এখন চুটিয়ে প্রেম করবি। সাজগোজ করবি। আনন্দে থাকবি। গল্প করবি। কত শত কথা বলবি। কতশত আবদার করবি। আবদার না করলে তোরে কি দিব?

কি আবদার করব? ও টাকা পয়সা কামাই করলে তখন করবো।

ওমা তাই নাকি? আইচ্ছা তাইলে তো ভালো। তোমারে তাইলে আদরসোহাগে পোষাইতেছে। আমারে আবার শুধু আদরে পোষাইতোনা। তাই কত আবদার করতাম। ভালা ভালা। সুখে থাক। স্বামীসোহাগী হ। ফোন রাখি।

পিহু ছোট্ট করে আওয়াজ করলো, হুহহ।

তারপর মাথায় চট করে বুদ্ধি এল তারজন্য তো কিছু এনেছিল মাহিদ। কিন্তু সেগুলো কোথায়। সেগুলো খুঁজতে খুঁজতে পাগল হলো পিহু। পেল না।
ভীষণ রাগ হলো। কি এনেছে সেগুলো না দিয়ে ঘুমোচ্ছে। সারাঘরে একলা একা বকবক করতে করতে অনেক সময় পার হওয়ার পরে শপিং ব্যাগটা পেল পিহু। তাড়াতাড়ি দম বন্ধ করে খুলে দেখলো তিন রকমের কাঁচের চুড়ি। খুশিতে চোখজোড়া চকচক করে উঠলো তার। সেগুলো হাত দিয়ে ছুঁয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকলো। তারপর চুড়িগুলো পড়ে দেখলো। লাল চুড়ির সাথে লাল শাড়ি পড়লো। আবার নীল চুড়ির সাথে নীল শাড়ি পড়লো।
মাহিদ ঘুমোচ্ছে বড় বড় শ্বাস ফেলে। পিহু তার গয়নার বাক্সটা খুলে তার অন্যান্য চুড়িগুলো নিল। মাহিদের আনা চুড়িগুলো রেখে এই চুড়িগুলো দুহাত ভর্তি করে পড়ে নিল। তারপর আয়নায় বারবার চেয়ে চেয়ে নিজে নিজে হাসলো। খয়েরী রঙের শাড়িটা আর পাল্টালো না। কিছুক্ষণ একা একা ঘরে হাঁটাহাঁটি করলো। তারপর ভাবলো শাড়ি খুলে ফেলবে। কিন্তু না। আবার গিয়ে বিছানায় বসলো। ঘুমানোর চেষ্টা করলো ঘুম এল না। মাহিদের মাথার কাছে গিয়ে বসলো আবার। চুলে বিলি কাটলো। কপাল থেকে চুল সরিয়ে কপালে ঠোঁট ছুঁয়ালো। তারপর মাথার সাথে মুখ লাগিয়ে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রইলো। আঙুল দিয়ে মাহিদের মুখে আঁকিবুঁকি আঁকতে আঁকতে একসময় মনে হলো মাহিদ তার হাতটা ধরে ফেলেছে। পিহু চমকে উঠলো। চোখ খুলে তাকাতেই দেখলো মাহিদ ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রয়েছে। বলল

কি সমস্যা?

পিহু উত্তর দিল না। মাহিদ তাকে খেয়াল করলো। পিহু খানিকটা লজ্জা পেলে ও বুঝতে দিল না। পিহুর হাতের দিকে নজর গেল তার। হাত ভর্তি চুড়ি। সব নামীদামী চুড়ি। বড় বালাগুলো স্বর্ণের। এগুলো পড়েছে কেন? সে যে আনলো ওগুলো কি পছন্দ নয়?

পিহু সরে পড়লো। মাহিদ একলাফে বিছানা থেকে নেমে চুড়িগুলো খুঁজতে গিয়ে দেখলো সেগুলো আগের জায়গায় রাখা আছে। প্যাকেট খোলা হয়েছিল। তারমানে পিহু দেখেছে। তারপরও পড়েনি। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সে। নড়লো না। পিহু হাতে পড়া চুড়ি গুলোর আওয়াজ করতে করতে মাহিদের সামনে এল। হাত দেখিয়ে বলল

বলো কেমন লাগছে? সুন্দর না?

মাহিদ উত্তর দিল।

হ্যা।

পিহু হাসলো। শাড়ি দেখিয়ে বলল

শাড়িটা সুন্দর না?

মাহিদ তাকে আগাগোড়া দেখে বলল

হুহ।

শাড়িটার সাথে চুড়িগুলো খুব মানিয়েছে। তাই না?

মানাইনি।

মাহিদ হেঁটে বিছানায় গিয়ে বসলো। পিহু তার পেছনে গিয়ে বসলো। কাঁধে থু্ঁতনি রেখে বলল

রাগ করেছ কেন? রাগ তো আমার করা দরকার।

তুই রাগ করবি কেন?

করব না? আমাকে একবার ও বললে না কেমন দেখতে লাগছে। আবার বললে মানাইনি।

মানিয়েছে। দামী জিনিস অবশ্যই মানাবে। সস্তা জিনিসে মানাইনা।

মাহিদ উঠে দাঁড়ালো। চুড়িগুলো সে ফেলে দেবে। কোনো দরকার নেই। শালা দোকানদার তো ভীষণ ঠকবাজ মানুষ। কি বলে তাকে গছিয়ে দিল চুড়িগুলো।

পিহু ভাবলো, ধুরর এই ব্যাটা কিচ্ছু বুঝেনা।

মাহিদ চুড়িগুলো নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় পিহু পথ আটকালো। বলল

কোথায় যাচ্ছ?

বাইরে?

কেন? এগুলো কার জন্য এনেছ? তাকে দিতে যাচ্ছ?

মাহিদ ভুরু কুঁচকে চাইলো। পিহু মন খারাপ করে চলে গেল। চুপচাপ বসে থাকলো। মাহিদ এসে চুপচাপ পিহুর সামনে বসলো। বলল

এগুলো তো তোর জন্য আনছি। আমি তোর জন্য না এনে আর কার জন্য আনবো?

পিহু চোখতুলে তাকালো। পা গুটিয়ে নিয়ে বলল

আমার জন্য?

হ্যা।

আমার জন্য আনলে সেগুলো না দিয়ে ঘুমাচ্ছিলে কেন?

মাহিদ এবার হাসলো একটুখানি। একটু কাছ ঘেঁষে বসলো। বলল

তুই এজন্য রাগ করছিস? আমি ভাবলাম তোর এগুলো পছন্দ হইনাই। তোর পছন্দ হয়ছে?

পিহু উত্তর দিল না। মাহিদ বলল

হাত দে। এগুলো খুলে দেই।
পিহু দিল না। মাহিদ নিজেই ডান হাতটা নিল। চুড়িগুলো এক এক করে খুলে তার আনা চুড়িগুলো পড়িয়ে দিল। তারপর হাতদুটো হাতের মুঠোয় এনে দীর্ঘ চুম্বন বসালো। পিহু নাকিসুরে বলল

এখনো বলোনি আমাকে কেমন লাগছে?

মাহিদ হাসলো। পিহুর কানের দুপাশে হাত গলিয়ে মুখটা কাছে এনে নাকের ডগায়, ঠোঁটের ব্যক্তিগত কাজ সেড়ে কানে কানে বলল

তুই এলোমেলোতে সুন্দর। অগোছালোতে সুন্দর। সাজগোছে সুন্দর। সাজগোছ ছাড়া আর ও সুন্দর। তোর কালো চুল সুন্দর। তুই বুড়ো হলে, তোর কুঁচকে যাওয়া চামড়া আর পেকে যাওয়া চুল ও আমার কাছে সুন্দরই থাকবে। তুই মানুষটাই সুন্দর। তুই পুরোটা সুন্দর ডাক্তারের বাচ্চি, কারণ তুই আমার মানুষ। নিজের মানুষ কখনো অসুন্দর হয় না।

চলবে
পাঠকের গালির ভয়ে লিখে ফেলছি?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here