মন_গোপনের_কথা #পর্ব_৪৮

0
328

#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_৪৮
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা

সকাল সাতটা বেজে গেছে। ছিকুর জন্য ফিমেল টিউটর রাখা হয়েছে। যাতে আদর করে করে পড়ায়। মেয়েটার নাম শিমুল। চিকনচাকন পাতলা গড়নের হাসিখুশি মেয়ে। ছিকুর সাথে প্রথম দিন বেশ ভালো ভাব হয়েছে। ভাব বলতে অবশ্য ছিকুর কেন কেন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাওয়া। অন্য কিছু নয়। মানে পড়ালেখার কোনো বিষয় নিয়ে নয়। আজ দুদিন হয়েছে পড়াতে আসছে। পরী বলেছে সকালে পড়িয়ে যেতে। সকালে যাও পড়তে চায়। কিন্তু বিকেলে খেলা ছাড়া কিছু বুঝেনা। হাত থেকে বল নিয়ে ফেললে মেঝেতে গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদবে। মারলে ও পড়বেনা। বরং কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়বে।

শিমুল এসেছে অনেকক্ষণ হলো। ছিকুর খাওয়া এখনো শেষ হয়নি। নিজের হাতে সে পুডিং খাচ্ছে। পরী বলল
তাড়াতাড়ি করেন। টিচার এসেছে।

ছিকু ভুরু কুঁচকে তাকালো। খেতে খেতে বলল

পরী খেতি দেয় না কেন? দিরি হবে কেন?

দেরী হবে না। তাড়াতাড়ি খান ৷ এদিকে দেন আমি খাইয়ে দেই।

ছিকু পেয়ালা নিয়ে সোফা থেকে নেমে পড়লো। হেঁটে হেঁটে খেতে খেতে বলল

পুডি মুজা মুজা।

পরী তার পেছন পেছন ঘ্যানঘ্যান করতেই আছে। রেহান অফিসে বের হবে। পরীকে ছিকুর পেছনে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখলো। সে গিয়ে ছিকুকে কোলে তুলে নিল। পানি খাইয়ে মুখ মুছে দিয়ে টিচারের কাছে নিয়ে গেল। বলল

টিচারকে সালাম দাও।

ছিকু হাত কপালে ঠেকিয়ে টিচারের দিকে তাকিয়ে থাকলো। শিমুল হেসে বলল

আচ্ছা আপনারা যান ভাইয়া। পড়া শুরু করি।

রেহান তাকে আদর করে বেরিয়ে পড়লো। ছিকু তাকে ডেকে বলল

বিশিবিশি ললিপপ, বিশিবিশি চকলেট।

রেহান বলল

আচ্ছা। বিশিবিশি আনব। কিন্তু আপনাকে পড়তে হবে।

ছিকু হাত নাড়িয়ে টা টা দিল। শিমুল বলল

গতদিন পড়তে বসার পর টিচারকে কি জিজ্ঞেস করতে বলেছিলাম রাহিয়ান?

ছিকু কপাল কুঁচকে কিছু একটা ভাবলো। তারপর মনে পড়তেই খিক করে হেসে বল

হাউ আর ইউ, আয়েম ফেন টেংকিউ।

শিমুল চোখ তুলে তাকালো।

ওহহো। এইভাবে না।

বলবেন, হাউ আর ইউ টিচার?

আম ফেন টেংকিউ চিটার।

শিমুল হাসি চাপা দিল। বলল

ঠিক করে শুনুন। বলবেন হাউ আর ইউ টিচার?
আমি বলব, আ’ম ফাইন। থেংকিউ। এন্ড ইউ?
তুমি বলবে,
আম অলসো ফাইন।
যাইহোক আমরা এখন অ আ শিখব। দেন এলপাবেট শিখবো।

বলো সরিঅ (অ), সরাইয়া ( আ)।

ছিকু শিমুলের মুখে মুখে বলল,

চনিঅ, চনাইয়া। চিটার পুঁচাইয়া।

শিমুল বলল

কিহ?

ছিকু ভড়কে গেল। শিমুল পরীর দেয়া বেতটা দেখিয়ে দেখিয়ে বলল

খুব মারব দুষ্টুমি করলে।

ছিকু কিছুক্ষণ থম মেরে চেয়ে রইলো শিমুলের দিকে। শিমুল বলল

পড়ুন।

ছিকু নিচের ঠোঁট উল্টে বলল

চবাইকে বুলে দিবো।

একদম চুপ। চুপচাপ পড়ুন।

দাদুউউউ চিটার বুকা দিচে। দাদুউউ। কিউ নাই কেন?

হা করে গালটা ছেড়ে দিয়ে কাঁদতে লাগলো ছিকু। শিমুল মাথায় হাত দিল। এ ধরণের কত বাচ্চা সে পড়িয়েছে। এরকম তো কেউ ছিল না। এটা এত বিচ্ছু কেন?

রাইনা ছুটে আসতেই পরী আটকালো। বলল

তুমি ওকে লাই দিয়ে দিয়ে বাঁদড় বানাচ্ছ মা। যেওনা।

ওকে কি মারতেছে নাকি?

মারছেনা। বকেছে তাই চিল্লাচ্ছে। কেউ না গেলে চিল্লিয়ে আপনাআপনি ঠিক হয়ে যাবে।

যাই না? একটু আদর করে দিয়ে আসি। কিভাবে ডাকতেছে আমাকে।

ডাকুক। এ সময় কে লাই দেবে সেটা সে জানে তাই ডাকছে। তুমি যেতে পারবে না। ওর পাপা বারণ করেছে পড়ার সময় কাউকে না যেতে।

এটা কোনো কথা হলো? আমার নাতিটা কিভাবে কাঁদে। একটু কম বকাঝকা করতে বলিস।

রাইনা বকবক করতে করতে চলে গেল। পরী রুমে উঁকি দিয়ে দেখলো কান্না থেমে গিয়েছে। শিমুল মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দিয়ে আদর করে পড়াচ্ছে। নিজের অজান্তেই হাসলো পরী। এটুকুনি এটাকে এত পাম্প দিতে হয়। বড় হলে কিভাবে পড়াতে হবে কে জানে?

পিহু এসে বলল

ও কোথায়?

পড়ছে। শিমুল এসেছে। তুমি যেওনা।

পিহু উঁকি দিল সেই ঘরে। দেখলো শিমুলের মুখে মুখে পড়ছে ছিকু। পিহু ফিসফিসিয়ে ডাকলো

কলিজা!

ছিকু চট করে দরজার কাছে চোখ দিল। পরী বলল

আহা কি করছ?

পিহু কথা শুনলো না। বলল

মন দিয়ে পড়েন। পড়া শেষ হলে এত্তগুলা আদর দিবো।

আদর খিতে মন চায় না কেন?

তো কি খাবেন?

ললিপপ খিতে মন চায় কেন?

আচ্ছা মিহিকে বলব ললিপপ আনার জন্য । এখন পড়েন মন দিয়ে। টা টা।

চি ইউ।

শিমুল গালে হাত দিয়ে ছিকুর দিকে তাকালো। গালে আদর হাত বুলিয়ে গালটা টেনে দিয়ে বলল

পাকা পাকা কথা তো কাউকে শিখিয়ে দিতে হয় না। পড়া কেন শিখিয়ে দিতে হয়?

ছিকু বলল

চনিঅ। চনাইয়া।

এভাবে না।

সরি অ। সরাইয়া।

চরাইয়া।

শিমুল হেসে উঠলো। ছিকু বলল

চিটার বিটিফুল কেনন?

শিমুল এবার জোরে হেসে ফেলল।

_____________

ইশা প্লেটে করে ভাত নিয়ে আসলো। পিহুর ঘরে প্রবেশ করে বলল

মাহি কই তুই?

মাহিদ ঘাড় ঘুরিয়ে চাইলো। পিহু ঘড়িটা এনে মাহিদকে দিল। বলল

ভাত খাবে না বলছে।

কেন খাবেনা। নাশতা ও তো বেশি খাইনি। মাহি আমি খাইয়ে দেই।

না না খাব না। সকালে ভাত খাইনা আমি।

ইশা বলল

না খাহ। এখানে খেতে হবে। তোর মা কি বলবে? বলবে আমার ছেলেটাকে খালি পেটো পাঠিয়ে দিয়েছে।

মাহিদ খাবেনা মানে খাবে না। ইশা বলল

এটা তোর শ্বশুরবাড়ি এখন। আর আমি তোর শ্বাশুড়ি। শ্বাশুড়ির কথা শুনতে হয়।

মাহিদ ভুরু কুঁচকে তাকালো। ইশা বলল

এভাবে দেখছিস কেন? ঠিকই বলেছি।

পিহু হেসে ফেলল। ইশা বলল

এদিকে আয়। খাহ। নইলে যেতে পারবি না। আয়। খাবার ফিরিয়ে দিতে নেই।

মাহিদ ইশার জোরাজোরিতে খেল। খেতে খেতে ধনেপাতা পেঁয়াজ দেখিয়ে বলল

এগুলো সাইডে সরাও।

ইশা হেসে বলল

এত বদঅভ্যেস কেন তোর?

কত বদঅভ্যেস সবই তো জানো। তারপরেও মেয়ে দিছো কেন?

ইশা চোখ ছোট ছোট করে তাকালো। পিহুকে এক লোকমা খাইয়ে দিয়ে বলল

সেটা তুই নিজেকে জিজ্ঞেস কর। উত্তর পেয়ে যাবি।

মাহিদ হাসলো। বলল

ঠিক আছে।

দুজনকে পানি খাইয়ে দিয়ে ইশা চলে গেল। মাহিদ পেটে হাত বুলিয়ে বলল

তোর বাপের বাড়ি দুইদিন থাকলে আমি ঢোল হয়ে যামু বাপ।

পিহু নাকমুখ কুঁচকে বলল

আমি তোমার বাপ না। কথায় কথায় একদম বাপ বাপ বলবানা মাহিদ ভাই।

মাহিদ চোখ সরু করে চাইলো। পিহু জিভে কামড় দিয়ে দু পা পিছিয়ে গিয়ে বলল

সরি।

মাহিদ নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে এগিয়ে গিয়ে বলল

কি বললি?

পিহু হেসে উঠে পালাতে গেল। মাহিদ খপ করে ধরে টেনে এনে বলল

তোর বাচ্চাকাচ্চা আমারে মামু ডাকবো। সমস্যা কি? তুই ভাই ডাকতে থাক।

আরেহ সরি বলছি তো। তো কি ডাকবো তোমাকে? আমি তো ওটাই ডেকে আসছি।

কি ডাকবি? আমারে কি আমার মা বাপে নাম দেইনাই?

পিহু লজ্জা পেয়ে বলল

যাহ। আমি জীবনে ও নামটাম ধরে ডাকতে পারব না।

মাহিদ ভঙ্গিমা করে বলল

কেন? ডাকতে পারবেন না কেন?

যাহহ।

মাহিদ হো হো করে হাসতে হাসতে বলল

আচ্ছা, তোর বেশি কিছু ডাকা লাগবো না। তুই আমারে ছিকু শালার শ্বশুর ডাকিস। বুঝছোস?

পিহু জিভে কামড় দিয়ে বলল

শ্বশুর?

মাহিদ মাথা নাড়লো। পিহু বলল

তারমানে ছিকুর বউ। তো ছিকুর বউ কে?
মাহিদ হেসে পিহুর মাথা টেনে এনে বুকে রাখলো। হাতের বাঁধনে পিষ্ট করে বলল

আমার বাপের নাতিন। তোর বাপের নাতিন।

পিহু উঃ উঃ করে মাথা তুলতে চাইলো। মাহিদ চেপে ধরে হেসে পিহুর মাথার উপর থুঁতনি রেখে বলল

না বাপ তোরে আমি ভিলেন হইতে দিমু না। আমি ছিকুশালারে জামাই বানামু মানে বানামু। শালা বহুত কিউট। বহুত পাকা।

পিহু শেষমেশ মুখ তুললো। বলল

ছিঃ ছিঃ এখনো কোথায় কি? তুমি বেশিবেশি করো মাহিদ ভাই।

বলতে না বলতে পিহু আবার জিভে কামড় দিল। মাহিদ হেসে বলল

তুই ভাই ডাকতে থাক। আমি তোর বাচ্চাকাচ্চার বাপ ও হমু, মামা ও হমু। তোর আণ্ডাবাচ্চার তো মামু টামু নাই। আমি পূরণ কইরা দিমু। সমস্যা নাই। তোর মুখ ভাই ডাক শুনলে পরাণ জুড়াইয়া যায়।

পিহু বলল

তওবা তওবা। আর জীবনে ও ডাকবো না। নানু শুনলে আমাকে লাঠির বাড়ি দিবে।

মাহিদ পিহুর কথা শুনে হেসে উঠলো।

_____________

মাহিদ চলে গেল। পিহু আরও দুতিন দিন থাকবে। মাহিদ হসপিটালে গেল। নিনিতের সাথে দেখা করবে। যখন হসপিটালে গেল নিনিতকে পেল না। নিনিত নাকি আজ ডিউটিতে নেই। মাহিদ এবার একেবারে নিনিতের বাড়িতে চলে গেল। জালিশা তাকে দেখে খুশি হলো। বলল

পিহু কেমন আছে? পিহু এখানে আসবে না?

ভালো আছে। আসবে।

আসুন। আজ ডক্টরের ডিউটি নেই। বাসায় আছে।

ফোন দিলে হসপিটালে যেতে হতো না। আমি চাচ্ছিলাম ওকে না জানিয়ে যাই। তো আর কি আপডেট?

জালিশা বোকা চোখে চেয়ে বলল

কিসের আপডেট?

মাহিদ তার মাথায় টোকা দিল। বলল

বিয়ের।

জালিশা লজ্জা পেয়ে বলল

আমি কিছু জানিনা ভাইয়া।

মাহিদ বলল

আচ্ছা। ওর সাথে দেখা করে আসি।

জালিশা মাথা নাড়ালো। নিনিতের মনোযোগ ফোনে। মাহিদ হঠাৎ করে চলে আসবে সে ভুলে ও ভাবেনি। মাহিদ প্রথমেই এসে পিঠে চড় থাপ্পড় বসিয়ে দিল। নিনিত হেসে বলল

মারোস কেন? লাগে তো।

শালা তোর কি ফোনে কথা কইতে শরম করে বাপ?

নিনিত টি শার্ট ঝেড়ে উঠে দাঁড়ালো। চশমা চোখে দিয়ে বলল

চা ঘরে খাবি? নাকি বাইরে।

না বসুম না। বাইরে দোকানে।

চল।

কথা বলতে বলতে দুজন বেরিয়ে পড়ছিল। ঘরের বাইরে পা রাখতেই জালিশা চা নিয়ে এসে বলল

চা!

নিনিত ভুরু কুঁচকালো। মাহিদ বলল

এত তাড়াতাড়ি কেমনে?

কিছুক্ষণ আগেই বানিয়েছিলাম সবার জন্য। প্লিজ!

মাহিদ জালিশার কথা ফেলতে পারলো না। চায়ের কাপ নিল। নিনিত নিল না। জালিশা মাহিদের দিকে করুণ চোখে তাকালো। মাহিদ চায়ের পেয়ালা নিয়ে নিনিতের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল

টান দে।

নিনিত চায়ের কাপ নিয়ে ঘরে চলে গেল। জালিশা বলল

ভাইয়া আমি এই ঝাল পিঠা বানিয়েছি। গরম আছে। নেন৷

মাহিদ নিল। জালিশা ভীষণ খুশি হলো। বলল

ডাক্তারকে একটা দেবেন? উনি পছন্দ করে। বাট আমি বানিয়েছি বলে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

মাহিদ মাথা নাড়লো। তুমি ওর ঘরের টেবিলে রাখো। আমি দিচ্ছি।

জালিশা উঁকিঝুঁকি দিয়ে নিনিতের ঘরে ঢুকলো। নিনিত ঘাড় ঘুরিয়ে তাকে চাইলো। চায়ের কাপে চা অর্ধেক। জালিশা পা টিপে টিপে হেঁটে প্লেটটা টেবিলে রেখে দৌড়ে বেরিয়ে পড়লো। মাহিদ চায়ের কাপ রেখে ঝাল পিঠা নিনিতের দিকে বাড়িয়ে দিল। বলল

নে খা। তোর ভবিষ্যৎ বউয়ের হাতে বানানো পিঠা। ভালোই হয়েছে।

নিনিত নিল ভেবেচিন্তে। বলল

এত তেল! আমি এত তেলের খাবার পছন্দ করিনা।

একটা খাহ। ও খুশি হবে। আশ্চর্য! কষ্ট করে বানিয়েছে। রান্না এত সহজ যতটা আমি তুই ভাবি। খাওয়া দরকার।

আচ্ছা চল যেতে যেতে খাই৷

যাওয়ার সময় নিয়াজ সাহেবের সামনে পড়ে গেল। ডাক্তার সাহেব তাহলে বেরোচ্ছেন।

হ্যা বাবা। মাহির সাথে বেরোচ্ছিলাম। কিছু লাগবে তোমার।

নাহ। যেটা চাইছি সেটাই তো দিচ্ছ না তুমি। আর কি চাইবো? ব্যারিস্টারের পোলা, তোর গাঁধামার্কা বল্টুরে বুঝা। বুঝা যে মানুষ একা সুখী থাকতে পারেনা কখনো। কাউকে পাশে দরকার। এই যে রোগীর সেবা করে রাতে বাড়ি ফেরে, তার সেবা করার জন্য হলেও তো একজন মানুষ দরকার। নিজের মানুষ৷ বুঝা বাপ বুঝা। আমি আর বুঝাতে পারছিনা।

মাহিদ বলল

আঙ্কেল ও তো রাজী। তোমাকে লজ্জায় বলছেনা। রাজী। বিয়ে করবে তো।

সত্যি?

হ্যা করবে। মাইশাকে।

নিনিত হা করে চেয়ে রইলো মাহিদের দিকে। নিয়াজ সাহেব ও হা করে চেয়ে রইলেন। জালিশা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে যেন থমকে গেল। পা আর নড়ছেনা।

মাইশাকে বিয়ে করবে বলছে আমাকে। তোমাদের লজ্জায় বলছেনা। তোমরা মাইশার মা বাবার সাথে কথা বলো। আমরা আসি। চল চল।

নিনিতকে টেনে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো মাহিদ। নিনিত কিছুদূর গিয়ে থামলো। বলল

এসব কি বললি তুই?

মাহিদ নিনিতের কাঁধে হাত রাখলো। বলল

বিয়ে তো করতেই হবে তোকে। আজ নয়ত কয়েক বছর পর। জালিশাকে নয়ত জালিশার মতোই একটা মেয়েকে। তাহলে এখন করতে সমস্যা কোথায়? তুই ঠিকই জালিশার মতো একটা মেয়েকে পাবি, কিন্তু জালিশাকে পাবি না। আইমি আন্টি মাকে বলেছে তোর জন্য ওর এই দেশে মাটি কামড়ে পড়ে থাকা। ওর পড়ালেখার সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া ওখানে বাংলাদেশী একটা ছেলের সাথে ও বিয়ের কথাবার্তা ও হচ্ছিল। কি করতে চাস তুই? নাকি মাইশাকে করবি?

ইম্পসিবল মাহি। পাগল হয়ে গেছিস? মাইশা আমার ছোট বোনের মতো।

তাহলে বাড়িতে তাড়াতাড়ি জানা যে তুই জালিশাকেই বিয়ে করবি। নইলে তারা মাইশার মা বাবার সাথে কথা বলবে। কেউ না বললে ও তোর মা। জালিশাকে কম পছন্দ করে, মাইশাকে বেশি পছন্দ করে। সেহেতু!

নিনিত বলল

এটা কি ভালো করেছিস? সবাই কি ভাবছে আমাকে? জালিশা কি ভাবছে?

জালিশার কি ভাবলো তাতে তোর কি যায় আসে?

নিনিতের এবার উত্তর দিতে দেরী হলো। তবে বলল

কি যায় আসবে? বলবে আমি লুচ্চা। মাইশার প্রেমে পড়েছি?

তাতে তোর কি যায় আসে?

খোঁটা দেবে আমায়। ও খুব ডেঞ্জারাস মেয়ে। তুই চিনিস না ওকে, যতটা আমি চিনি।

তোকেই তো চিনতে হবে বাপ। কারণ ওটা তোর মানুষ। যাহ, আর তিড়িংতিড়িং করিস না। বিয়ার পিড়িতে বয়। তোর জন্য আমার হানিমুন আটকায় আছে।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here