#অরুণিকা
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-২০||
৩৬.
তূর্যের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে অরুণিকা। তূর্যও চুপচাপ মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে আছে। বাকীরা একবার অরুণিকাকে দেখছে, আরেকবার তূর্যকে।
তূর্যের গিটার নিয়ে খেলতে গিয়ে অরুণিকা গিটারের সব তার ছিঁড়ে ফেলেছে। তাই তূর্য তাকে অনেক বকা দিয়েছে। এর আগে অরুণিকা কখনো তূর্যের বকা খায় নি। আর তূর্যও তার টুইংকেলকে ধমক দিয়ে কিছুই বলে নি। তাই অরুণিকা তূর্যের সাথে অভিমান করে বসে আছে। কিন্তু তূর্য তার অভিমান ভাঙাতে যায় নি।
অরুণিকা আরাফের কাছে গিয়ে বলল,
“আরাফ, আমি রকস্টারের সাথে কথা বলবো না। ও আমাকে বকা দিয়েছে।”
আরাফ বলল,
“তোমাকে বারণ করার পরও তুমি গিটার নিয়ে কেন খেলছিলে?”
অরুণিকা চুপ করে রইলো। এবার ইভান বলল,
“এই মেয়ে কি এক মিনিটও শান্ত হয়ে বসে থাকে? সারাদিন এটা ওটা নিয়ে গুঁতোগুঁতি করবে। ব্যস এখন সবগুলো তারই ছিঁড়ে ফেলেছে। এই মেয়ে কি জানে ও শুধু তূর্যের স্বপ্ন নষ্ট করে নি, নিজের ভবিষ্যতও শেষ করে দিয়েছে। তূর্য যা টাকা পায়, সব ওর পেছনেই তো খরচ করে।”
আহনাফ চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,
“চুপ। একদম চুপ।”
আহনাফের চিৎকারে ইভান চুপ হয়ে গেল। বাকীরা অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। আহনাফ বলল,
“খোঁচা দিচ্ছিস? এই কথা বারবার বলার কোনো প্রয়োজন আছে? অরুর খরচ তূর্য দিচ্ছে এইটা বলে কি বোঝাতে চাচ্ছিস?”
ইভান শান্ত কন্ঠে বললো,
“আমি এমন কিছু বোঝাতে চাই নি।”
“গিটারের তার আবার লাগানো যাবে। আমি না হয় লাগিয়ে দেবো।”
তূর্য বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। গিটারটা নিয়ে বাইরে চলে গেলো। অরুণিকা আরাফের কাছে এসে দাঁড়িয়ে রইলো।
আরাফ অরুণিকার বিষণ্ণ মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, “অরু, কিছু হবে না।”
অরুণিকা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। আহনাফ অরুণিকার হাত ধরে তাকে বাইরে নিয়ে গেলো।
সেদিনই তূর্য আবার গিটারের তার লাগিয়ে নিলো। কিন্তু বাসায় আসার পর সে অরুণিকার দিকে একবারো তাকালো না। অরুণিকাও তূর্যের কাছে যাচ্ছে নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পর তূর্যের দিকে তাকাচ্ছে।
পরের দিন সকালে অরুণিকা স্কুলের জামা পরে গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো। আরাফ তৈরী হয়ে এলেই তারা বের হবে। তখন তূর্য গিটার কাঁধে নিয়ে বাসা থেকে বের হতেই অরুণিকার মুখোমুখি হলো। অরুণিকা তূর্যকে দেখে একপাশে সরে দাঁড়ালো। তূর্যও কোনো কথা না বলে চলে গেলো। যতোক্ষণ তূর্যকে দেখা যাচ্ছিলো অরুণিকা ততোক্ষণই সেদিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু তূর্য একবারো পেছনে ফিরে তাকালো না।
স্কুলে যাওয়ার সময় রিকশায় বসে অরুণিকা আরাফকে বলল,
“আরাফ, একটা কথা জিজ্ঞেস করি?”
“হ্যাঁ, করো।”
“আমাদের বাবা-মা কোথায়?”
আরাফ একবার অরুণিকার দিকে তাকালো। তারপর চোখ সরিয়ে সামনে তাকিয়ে বলল,
“আমাদের বাবা-মা নেই।”
“সবার তো বাবা-মা আছে।”
“কিন্তু তোমার জন্য আমরা আছি।”
“কিন্তু রকস্টার আমাকে ভালোবাসে না?”
“আমি তো ভালোবাসি।”
“ইভানও আমাকে ভালোবাসে না। সবাই আমাকে বকা দেয়। তুমিও বকা দাও। বাবা-মা থাকলে বকতো না।”
“কে বলেছে বকতো না?”
“আমার বন্ধুদের তো বকে না।”
“বকে। সবাইকেই বকে।”
আরাফ অরুণিকার হাত ধরে বলল,
“যখন ইমন ছোট ছিল তখন সন্ধ্যায় দেরীতে বাসায় ফিরলে মা কান টেনে দিতো। এখন সেই কান ইভান টেনে দেয়। যখন তূর্য ভাত খেতে চাইতো না, মা এক ধমক দিয়ে তাকে ভাত খাওয়ানোর জন্য ডায়নিংয়ে বসাতো। আর এখন তাহমিদ অরুকে ধমক দিয়ে খেতে বসায়। আহনাফ একটুও পড়তে চাইতো না। মা বকা দিয়ে পড়তে বসাতো। এখন ইভান তোমাকে আর তূর্যকে বকা দিয়ে পড়তে বসায়। মা নেই তো কি হয়েছে? ইভান আর তাহমিদ আছে, আহনাফ আছে, ইমন, তূর্য আর আমি আছি। আর আমাদের সাথে অরুণিকা আছে। আমরা সবাই একজন আরেকজনের জন্য আছি।”
“বাবা-মা কি আর কখনো আসবে না?”
“না। ওরা চলে গেছে। আমাদের বলে গেছে একসাথে থাকার জন্য। সবার বাবা-মা থাকে না, অরু। কিন্তু কেউ না কেউ থাকেই। সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনো আপনজন তার কাছ নিয়ে আসে। হয়তো কোনো নামের সম্পর্ক, হয়তো বা আত্মার।”
“আরাফ, আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি না।”
আরাফ হেসে অরুণিকাকে বলল,
“বাসায় গিয়ে তোমার রকস্টারকে সরি বলবে, ঠিক আছে? তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।”
অরুণিকা স্কুল থেকে ফেরার পর খাতা-কলম নিয়ে বসে পড়লো। ইভান তা দেখেই বলল,
“আজ নিজ থেকেই পড়তে বসেছো। বাহ, গুড গার্ল।”
অরুণিকা ইশারায় ইভানকে চুপ থাকতে বললো। এরপর তূর্য বাসায় আসার পর অরুণিকা তার সামনে এসে দাঁড়ালো। তূর্য অরুণিকার দিকে তাকিয়ে রইলো। অরুণিকা একটা চিরকুট এগিয়ে দিলো। তূর্য অরুণিকার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে চিরকুটটি নিলো। অরুণিকা তার দুই কান ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। তূর্য অরুণিকার দিকে অবাক হয়ে তাকাতে তাকাতেই চিরকুটটি খুললো। চিরকুটে কাঁচা হাতে ইংরেজি অক্ষরে লেখা সরি। পাশে কাঁচা হাতে আঁকা ফুল আর হাসির চিহ্ন। তূর্য চিরকুটটি দেখে চোখ বন্ধ করলো।
অরুণিকা বলল,
“সরি, রকস্টার। আমি আর তোমার গিটার ধরবো না।”
তূর্য চোখ খুলে অরুণিকার হাত দু’টি তার হাতের মুঠোয় আবদ্ধ করে বলল,
“সরি টুইংকেল। আমার অনেক রাগ উঠে গিয়েছিল, তাই বকা দিয়ে ফেলেছি। পরে অনেক কষ্ট লাগছিলো, কিন্তু কিভাবে তোমার অভিমান ভাঙাবো বুঝতেই পারছিলাম না। তুমি কি এখনো রাগ করে আছো আমার সাথে?”
“না, আমি কেন রাগ করবো বলো? রকস্টার, তুমি কি রাগ করেছো আমার সাথে?”
“না, একদমই না। আই লাভ ইউ মাই টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার।”
অরুণিকা তূর্যকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো। তূর্য অরুণিকার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। শেষমেশ একদিন পর তাদের মান-অভিমান ভাঙলো। বাকী পাঁচজন তাদের দিকে তাকিয়ে রইলো।
এরপর তূর্য ইভানের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“তোরা পাঁচজন আমার ছোটবেলার বন্ধু। আমি আমার পরিবার হারানোর আগে থেকেই তোদের পেয়েছি। তোরা এখনো আছিস। তোরা সবাই আমার প্রেরণা। কিন্তু বাবা-মাকে হারানোর পর টুইংকেলকে পেয়েছি। হয়তো আল্লাহ ওকে দিয়ে আমার কষ্টটা হালকা কমিয়ে দিয়েছিলো। এর আগে টুইংকেল আমার জন্য কিছুই ছিল না। তাই এই কথা কেউ বলিস না যে আমি টুইংকেলের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। আমার স্বপ্নের একটা অংশ আমার টুইংকেল। আমরা সবাই এক। ওর খরচ আমি দেই, আরাফ দিক একই কথা। আমি ওর আপন ভাই না। আমি নিজেও ওকে কখনো আমার বোন বলবো না। কিন্তু আমার কাছে রক্তের সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আত্মার সম্পর্ক। টুইংকেলের সাথে আমার একটাই সম্পর্ক, আর সেটা হলো আত্মার। আমি হাজার বার বলবো, আমি ওর ভাই না। আমি চাই না ওর ভাই হতে। কিন্তু একটা ভাই যেই দায়িত্ব নিতে পারে না, তার সব দায়িত্ব আমি নিবো।”
আরাফ তূর্যকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। আহনাফের চোখ ছলছল করছে। সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো। তাহমিদ আর ইমনের ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি। ইভান মাথা নিচু করে বলল,
“অরুণিকা আমার জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমি কাউকে বলবো না। রাগের মাথায় মানুষ অনেক কিছুই বলে ফেলে। মাও আমাকে আর ইমনকে কতো কিছু বলতো।”
এবার ইমন বলল,
“জানি ভাই, তুই কাকে কতোটা ভালোবাসিস। তোর আর আহনাফের সমস্যা এক জায়গায়। ভালোবাসাটা প্রকাশ করতে পারিস না। আর হুটহাট রেগে যাস।”
ইভান অরুণিকার দিকে তাকালো। অরুণিকা তার ড্রয়িং খাতা উল্টেপাল্টে দেখছে। ইভান তার পাশে বসে বলল, “পড়বে না?”
অরুণিকা আরাফের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আজ না পড়ি?”
ইভান হেসে বলল,
“আচ্ছা। কালকে তো ছুটি। এখন খেলো।”
৩৭.
আহনাফ বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে। যতি চোখের পানি ফেলতে ফেলতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। বাকিরা অবাক হয়ে তামাশা দেখছে। তাদের সাথে বসে অরুণিকাও সেই তামাশা দেখায় সঙ্গ দিচ্ছে। আহনাফ যতিকে বলল,
“দাঁড়াও প্লিজ। এভাবে আমার পায়ের সামনে বসে থেকো না।”
যতি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলল,
“আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি কেন বুঝতে পারছো না?”
“তোমার মতো ন্যাকাবোকা মেয়ের সাথে আমি সম্পর্কে জড়াতে ইচ্ছুক নই।”
“আমি ন্যাকাবোকা?”
আহনাফ বিরক্ত হয়ে বলল,
“এটা কেমন অভ্যাস! কিছু হলেই পায়ে ধরে ফেলো। তোমার কি কোনো ব্যক্তিত্ববোধ নেই? এতোগুলো ছেলের সামনেও তোমার এসব পাগলামো বন্ধ হচ্ছে না!”
তূর্য বলল,
“ভাই, মেয়েটা তোকে ভালোবাসে। সম্পর্কে গেলে সমস্যা কোথায়?”
আহনাফ চোখ বড় বড় করে তূর্যের দিকে তাকালো। এবার ইমন বলল,
“মেনেই নে, ভাই। কতো মাস ধরে তোর পেছনে পড়ে আছে!”
তাহমিদ বলল,
“হয়তো যতি তোকে সত্যিই ভালোবাসে।”
আহনাফ চেঁচিয়ে বললো,
“ভালোবাসে না। পাগল হয়ে গেছে। আর আমি ওর পাগলামোগুলো নিতে পারছি না।”
আহনাফ ধাক্কা দিয়ে যতিকে ঘর থেকে বের করে দিলো। ইভান বলল,
“আমি বুঝি না এই মেয়েগুলোর সমস্যা কি!”
ইমন বলল,
“তুই বুঝবি না, ভাই। এগুলোকে ভালোবাসা বলে। যতি আহনাফকে অনেক ভালোবাসে। আমি ওর অনুভূতিটা বুঝতে পারছি।”
এবার আরাফ বলল,
“যতি একা ভালোবাসলে কি হবে? আহনাফ ওকে ভালোবাসে না। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, তোদের জোরাজুরিতেই আহনাফ ওর সাথে বন্ধুত্ব করেছে। আর তোরা যতির সামনে আহনাফের বিরুদ্ধে কেন ছিলি? এখন মেয়েটা আরো সাহস পেয়ে যাবে।”
ইভান বলল,
“ভাই এই মেয়ের যন্ত্রণাগুলো আর নিতে পারছি না। আহনাফ, তুই বরং একবার সম্পর্কটা শুরুই করে দেখ। ভালো না লাগলে বের হয়ে আসবি।”
আহনাফ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“শুধু বন্ধুত্ব করেছি, তাতেই দিনে একশো বার ফোন দিয়ে আমার মাথাটা নষ্ট করে ফেলে, যখন তখন ভিডিও কল দেয়। এখনই চাচা-চাচী, মহল্লার অনেকে ধরেই নিয়েছে ও আমার গার্লফ্রেন্ড। সম্পর্কে গেলে সবাই ভাববে একেবারে বিয়েই করে ফেলেছি।”
পুরো রাত ইমন আর তূর্যের অদ্ভুত সব ভালোবাসার যুক্তি, তাহমিদ আর ইভানেরও সেই যুক্তিকে সমর্থন করা আহনাফকে যতির সাথে সম্পর্কে যাওয়ার ব্যাপারে একপ্রকার বাধ্য করে দিয়েছে। শেষ রাতে সবাই যার যার যুক্তি দেখিয়ে ঘুমোতে গেলো। আহনাফ চুপচাপ উঠে একপাশে দাঁড়ালো। আরাফ তার কাঁধে হাত রেখে বলল,
“মাঝে মাঝে আমাদের মন যা চাই, পরিস্থিতি তার অনুকূলে থাকে না। আমি জানি তুই কি চাস।”
আহনাফ আরাফের হাত সরিয়ে দিয়ে বলল,
“না, আরাফ। আমি ওসব চিন্তাও করি না। সম্ভব না ওটা।”
“দেখেছিস, তুই বুঝেছিস আমি কি বোঝাতে চেয়েছি। কারণ আমি যা ভাবছিলাম সেটাই তুই চাস।”
আহনাফ আরাফের দিকে তাকালো। আরাফ বলল,
“অন্যের দেখানো স্বপ্ন আর নিজের দেখা স্বপ্নের মধ্যে অনেক পার্থক্য।”
আহনাফ অরুণিকার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,
“মাঝে মাঝে অন্যের দেখানো স্বপ্নগুলোই নিজের স্বপ্ন হয়ে যায়। তখন আর নিজ থেকে স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করে না।”
পরের দিন আহনাফ যতিকে হ্যাঁ বলে দেয়। যতি আহনাফের সম্মতি পেয়ে অনেক খুশি হয়। সে এরপরের দিন নিজের হাতে নাস্তা বানিয়ে আহনাফদের বাসায় চলে এলো। সবাইকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলো। ইভান, তাহমিদ আর আরাফ যতির পাগলামো দেখে একপাশে সরে বসলো। এদিকে অরুণিকা আহনাফের কাছে এসে বলল,
“আহনাফ, ফোনাপু কি এখন থেকে আমাদের সাথে থাকবে?”
যতি আহনাফের বাহু নিজের হাতের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলল,
“না, বাবু এখন না। তবে খুব শীঘ্রই।”
আহনাফ হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
“যেখানে সেখানে গায়ে পড়া উচিত না। এগুলো সুন্দর দেখায় না।”
“যেখানে সেখানে কোথায়? আমরা তো এখন তোমার বাসায়!”
আহনাফ দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। আরাফও মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। আহনাফ কতোটা চাপা স্বভাবের, আর বাস্তবতা মেনে নেওয়ার জন্য সে নিজের অনুভূতি আর ইচ্ছেগুলোকে কিভাবে ত্যাগ করতে পারে, তা আজ আরাফ আরো স্পষ্টভাবে বুঝেছে।
আরাফ মনে মনে বলল,
“এখন কি হচ্ছে আমি জানি না। কিন্তু আমি চাই ভবিষ্যতের সুখটা যাতে আহনাফের নামেই থাকুক।”
এদিকে ভালোবাসার ঢেউ একপাশে আছড়ে পড়তে না পড়তেই অন্যপাশেও এর স্পর্শ দিয়ে গেলো। ইমনের হাস্যকর কথাবার্তা, বড়দের শ্রদ্ধা করা, সবাইকে বিনাবাক্যে সাহায্য করা সায়ন্তনীর মনে দাগ কেটে দিয়েছে। সে হয়তো ইমনকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। কিন্তু ইমনের মনে মাওশিয়াতের বসবাস। আর মাওশিয়াত ডুবে আছে ইভানের ভাবনায়।
তাদের অনুভূতির চতুষ্কোণ একই শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে আছে। আর এমন অনুভূতির জন্ম হওয়া একটা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।
চলবে–