প্রেমবিভ্রাট ২৩ তানভীর তুহিন

0
540

প্রেমবিভ্রাট
২৩
তানভীর তুহিন

দুপুর ২ টা ১৮ বাজে। দীপ্তি গোসল সেড়ে এসে চুল মুছছে। চুল মুছতে মুছতেই ফোনটা হাতে নিয়ে তুহিনের নাম্বারে ডায়াল করে দীপ্তি। তুহিন লাঞ্চ করেছে কিনা তা জানার জন্যই ফোন করা। তুহিন ড্রাইভ করছে। দুবার রিং পড়তেই ফোনটা রিসিভ করে নেয় তুহিন। দীপ্তি জিজ্ঞেস করে, ” দুপুরে খেয়েছো? ”
তুহিন কানে গোজা ব্লুটুথটাকে চেপে ধরে দ্রুতভঙ্গিতে বলে, ” দীপ্তি আমি গাড়িতে, বাড়ি আসছি। বাড়ি এসে কথা বলবো। ”

দীপ্তি ভীষন অবাক হয়। বিয়ের পরে একদিনও তুহিন এসময়ে বাড়ি ফেরেনি। হয় ক্লিনিকে যায়নি নাহয় সন্ধ্যায় তাড়াতাড়ি ফিরেছে। কিন্তু এরকম দুপুরে কোনোদিনই বাড়ি ফেরেনি তুহিন। দীপ্তি কৌতুহলি কন্ঠে প্রশ্ন যোগ করে, ” এখন বাড়ি আসছো মানে? ”
– ” এসে বলছি। ” বলেই ফোনটা কেটে দেয় তুহিন।
দীপ্তি কিছুই বুঝতে পারছে না। কী এমন হলো যে আজ এরকম দুপুরবেলা বাড়ি ফিরছে? শরীর-টরীর খারাপ নাকি?

তুহিন গাড়িটাকে পার্ক করেই তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে ঢোকে। কারন খানিকবাদেই আবার বেড়োতে হবে। পুরো ড্রয়িং, ডাইনিং, কিচেন খালি। হয়তো সবাই যে যার রুমে আছে। তুহিন তাড়াতাড়ি করে সিড়ি বেয়ে উঠে সোজা রুমে চলে যায়। রুমে ঢুকেই তুহিন দীপ্তিকে বলে, ” দীপ্তি আমার ৪-৫ দিনের মতো জামাকাপড় ব্যাগপ্যাক করো। ”

তুহিন দুপুরে বাড়ি ফিরেছে তাতে দীপ্তি যতটা না অবাক হয়েছে তারচেয়ে বেশি অবাক হচ্ছে তুহিনের এখনকার কথা শুনে। দীপ্তি অস্থির ভঙ্গিতে তুহিনকে বলে, ” ব্যাগ প্যাকিং মানে? কোথায় যাবে তুমি? ”

তুহিন রিতিমতো হাপাচ্ছে। ঘেমে নেয়ে গেছে প্রায়। তুহিন কপালের ঘামটুকু হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুছতে মুছতে বলে, ” আমি কিছুদিনের জন্য বার্সেলোনা যাচ্ছি। ফিরতে চার থেকে ছয় দিন মতো লাগবে। ”

দীপ্তি অবাকের ওপর অবাক হয়ে যাচ্ছে।

দীপ্তি ভ্রুকুটিয়ে জিজ্ঞেস করে, ” হঠাৎ বার্সেলোনা যাচ্ছো মানে? সকাল অবধিওতো বার্সেলোনা যাবার কথা বলোনি আমায়। ”
– ” কিছুক্ষন আগেই আমি বার্সেলোনাতে যে মেডিকেল ইন্সটিটিউটে পড়তাম। সেখান থেকে ফোন দিয়েছিলো আমায়। আসলে ওদের কিছু যান্ত্রিক আর কাগজপত্রের ত্রুটির জন্য আমায় কন্টাক্ট করতে লেট হয়েছে। ওদের সেমিনারটা আগামিকালই শুরু হচ্ছে। বার্সেলোনার ন্যাশনাল মেডিকেল সেমিনার। যেটার অর্গনাইজার আমার মেডিকেল ইন্সটিটিউট। এখন যেখান থেকে ডিগ্রি নিয়েছি সেই ইন্সটিটিউটকে কীভাবে না করে দেই বলো? তাছাড়া ওরা সব এরেঞ্জ করে দিয়েছে। বিকাল পাচটায় ফ্লাইট। আমার শুধু এম্বাসিতে গিয়ে কিছু পেপারওয়ার্কস কম্পলিট করতে হবে। হাতে তেমন সময় নেই। সো হারি আপ এন্ড ডু ইট ফাস্ট। ”

কথাগুলো রীতিমতো একদমে বলে ফেলে। দীপ্তির কোনো কথা শোনার জন্য না দাড়িয়েই তুহিন কাপড় নিয়ে গোসল করার জন্য বাথরুমে ঢুকে যায়। দীপ্তি চেয়ার দিয়ে আলমারির উপর থেকে সুটকেস নামিয়ে তুহিনের জিনিসপত্র গুছিয়ে দেয়। তুহিন বাথরুম থেকে বের হয়েই গায়ে ফর্মাল ড্রেস জড়িয়ে নেয়। তারপর দীপ্তিকে বলে, ” তুমি লাগেজ নিয়ে নিচে নামো। আমি আব্বু-আম্মুর রুম হয়ে আসছি। ”

দীপ্তি লাগেজ নিয়ে নিচে চলে যায়। তুহিন আম্মু! আম্মু! ডাকতে ডাকতে আসাদ সাহেব আর শায়লা বেগমের রুমের দিকে এগোয়। রুমে শুধু শায়লা বেগম ছিলেন। শায়লা বেগম তুহিনের কন্ঠ শুনে বেশ অবাক হয়। কারন তুহিন ক্লিনিকে গেলে এসময়ে কখনই বাড়ি ফেরেনা। তুহিন রুমে ঢোকে। শায়লা বেগম জিজ্ঞাসাসুচক দৃষ্টিতে তুহিনের দিকে তাকিয়ে বলে, ” কীরে তুই বাড়ি ফিরলি কখন? ”
– ” একটু আগে। ”
– ” সকালে তো এসব পড়ে বের হসনি। তাহলে এখন এসে আবার এখনই এসব পড়ে কোথায় যাচ্ছিস? কোনো ইভেন্ট আছে নাকি? ”
– ” হ্যা আম্মু সেমিনার আছে একটা। আসলে আমি বার্সেলোনা যাচ্ছি ওখানকার একটা মেডিকেল সেমিনার এটেন্ড করতে। ফিরতে চার থেকে ছয় দিন লেগে যাবে। আব্বু কোথায়? ”
– ” তুই বার্সেলোনা যাবি। কই সকালে তো কিছু বললি না। ”
– ” আমিই একটু আগে জেনেছি। ”
– ” বার্সেলোনা যাচ্ছিস। তোর ফ্লাইট কয়টায়? টিকিট কখন কনফার্ম করলি? আমি তো কিছুই বুঝছি না। ”
– ” টিকিট বার্সেলোনার মেডিকেল অথরিটি কনফার্ম করেছে। আর ফ্লাইট পাচটায়। আমার এম্বাসিতে কিছু পেপারওয়ার্কস আছে তাই একটু ঝলদি বের হতে হবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমি গেলাম। ” বলেই তুহিন নতজানু হয়ে শায়লা বেগমকে সালাম করে। তারপর আবার বলে, ” আব্বু কোথায়? ”
– ” তোর আব্বু তো ক্লিনিকের শেয়ার হোল্ডারসদের সাথে মিটিং এ। ”
– ” ও আচ্ছা। আব্বু রাতে ফিরলে বলে দিও। আমি এখন ফোন করলে নানান প্রশ্ন করবে। আমার এতো সময় হবে না এখন। ”

শায়লা বেগম উদাস কন্ঠে বলে, ” আচ্ছা। সাবধানে যাস। ”

তুহিন নিচে নামে। সাথে শায়লা বেগমও নামে। তুহিন দীপ্তির থেকে লাগেজ নিয়ে গাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়। সাথে দীপ্তি আর শায়লা বেগমও আসে। তুহিন দীপ্তি আর শায়লা বেগমের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির ড্রাইভারের গাড়ি নিয়ে এম্বাসির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যায়। যাবার সময় দীপ্তির চোখদুটো স্পষ্ট তুহিনকে বলছিলো যে, ” কপালে একটা চুমু খেয়ে যাও। ”

তুহিনেরও খুব ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু শায়লা বেগম থাকায় আর চুমু খাওয়া হয় না তুহিনের। চুমু দিতে না পারায় বেশ মনখারাপ আর আক্ষেপ হচ্ছে তুহিনের। দীপ্তিরও বেশ মনখারাপ। এভাবে বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই বিদেশ চলে গেলো। আর যাবার আগে একটু আদরও করে গেলো না। এমনিতে সারাদিন পিছনে পড়ে থাকে অথচ এতোদিনের জন্য বিদেশ গেলো একটু চুমুও খেলো না। তুহিন এম্বাসির পেপারওয়ার্কস মিটিয়ে পাচটার ফ্লাইটেই বার্সেলোনা চলে যায়।

বার্সেলোনা এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করেই তুহিন আসাদ সাহেবকে ফোন দেয়। তারপর তাকে সবটা খুলে বলে। আসাদ সাহেব সবটা শুনে বলে, ” কাজ মিটিয়ে তাড়াতাড়ি চলে আসিস। ”
– ” আচ্ছা আব্বু। ”

তুহিন ফোন রেখে দেয়। তারপর সোজা ফোন দেয় দীপ্তির কাছে। দীপ্তিকে ভিডিও কল দেয়। দীপ্তি ফোন রিসিভ করতেই তুহিন দীপ্তিকে বলে, ” ফোনটা আম্মুর কাছে দাও। ”
দীপ্তির এমনিতেই মন খারাপ ছিলো। কথাটা শুনে দীপ্তির মন খারাপের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। কেনো আমার সাথে দুমিনিট কথা বলেও তো আম্মুকে দেবার কথা বলা যেতো নাকি? নাকি আমার সাথে বলার মতো কথাই ফুরিয়ে গেছে? দীপ্তি নিশ্চুপভাবে মুখ ভার করে ফোনটা নিয়ে শায়লা বেগমের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, ” আম্মু নাও, তোমার ছেলে ফোন করেছে। ”

তুহিন প্রায় দুই মিনিটের মতো শায়লা বেগমের সাথে কথা বলে। এই ঠিকমতো পৌঁছেছে, খাবার খেয়ে নিয়েছে, এদিকে কোনো সমস্যা হচ্ছে না, এখন হোটেলে যাচ্ছে অর্গনাইজাররা গাড়ি পাঠিয়েছে এসব কথাই হয় শায়লা বেগমের সাথে। কথা বলতে বলতে তুহিনের আয়েশার কথা মনে পড়ে। সকালেও বেচারি আপসেট ছিলো। এতোদুর এলাম আসার সময় একটু বলেও এলাম না। সঙ্গে সঙ্গেই তুহিন শায়লা বেগমকে বলে, ” আম্মু ফোনটা দীপ্তিকে দিয়ে বলো আশুর কাছে দিতে। ”
শায়লা বেগম বলে, ” আচ্ছা বলছি। আর শোন ঠিক টাইমে খাওয়া দাওয়া করবি, নিজেই সময় করে ফোন দিবি আর ফোন-টোন যাতে অফ না থাকে, বিদেশ গেছিস ভালোকথা কিন্তু অযথা টেনশন দিস না আব্বু। ”

তুহিন খিটখিট করে হেসে দিয়ে বলে, ” তুমিও না মা আমি কী নতুন এলাম নাকি? এর আগে তো কতবছরই বিদেশ পড়ে ছিলাম। দেশে গিয়েও তো নানারকম অপারেশন, সেমিনারের জন্য নানান দেশে গিয়েছি। তারপরেও এসব বলছো কেনো? ”
– ” আগে ছিলি তাই জানি যে ফোন অফ থাকলে ঠিক কেমন চিন্তা হয়। কলিজা কাপতে থাকে। কি না কি হয়ে গেলো এই ভেবে। তাই বলছি নিজের যত্ন নিবি, নিজেই সময় করে ফোন দিবি আর তাড়াতাড়ি কাজ সেড়ে চলে আসবি। ”
– ” আচ্ছা আম্মু। এবার আশুর কাছে দাও। ”

শায়লা বেগম ফোনটা দীপ্তিকে দিয়ে বলে, ” এই নে আম্মু। আশুর কাছে দিতে বলেছে। আশুর সাথে কথা বলবে নাকি। ”

দীপ্তি যথারীতি চুপচাপ ফোন নিয়ে আয়েশার কাছে দেয়। আয়েশা ফোন হাতে নিয়ে নিজেই আগে বলে,
– ” কিরে ভাইয়া? ভুলেই গেছিলি আমায় না? সোজা বার্সেলোনা চলে গেলি অথচ আমায় বলে গেলি না। ”
– ” সরি রে আশু। বিশ্বাস কর এম্বাসির কাজের চক্করে একদম ভুলেই গেছিলাম। আচ্ছা সকালে তোর মুড অফ ছিলো কেনো? ”
আয়েশা অনিচ্ছার হাসি হেসে বলে, ” কিছু না এমনি। ”
তুহিন বুঝতে পারে এ হাসি অনিচ্ছার। তুহিন আবার জিজ্ঞেস করে, ” সব ঠিকঠাক তো? ”
আয়েশা আগেরবারের মতোই বলে, ” হু। ”
তুহিন বলে, ” টাকা নিয়ে কোনো সমস্যা? তোর টাকা লাগলে বল, আমি দিয়ে দিচ্ছি। বড় এমাউন্ট হলেও বল, দিয়ে দিচ্ছি। ফর্মালিটি করিস না। ”
– ” আরে না ভাইয়া। টাকা লাগলে তো আমি এমনিতেই বলতাম। আমি এতো ফর্মালিটি করি নাকি এসব নিয়ে। ”
– ” তুই যে নির্লজ্জ শয়তানি সেটা আমি জানি। ” বলেই হেসে ওঠে তুহিন।
– ” আমার বাপ-ভাইয়ের টাকা আমি নিবো এখানে এতো লজ্বা রাখার কী আছে? আজিব! ”
– ” আচ্ছা এবার তাহলে বল না কীজন্য আপসেট ছিলি সকালে? ”
– ” কিছু না। এতো প্যাঁচাচ্ছিস কেনো? বলার মতো ইস্যু হলে তো আমি বলেই দিতাম নাকি? ”

তুহিন আর জোর করে না। তুহিন মুচকি হেসে আয়েশাকে বলে, ” আচ্ছা ঠিক আছে। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করিস। এবার তোর জানুকে ফোন দে। ”
– ” আচ্ছা তুইও তাড়াতাড়ি আসিস। টেক কেয়ার। ”
আয়েশা ফোনটা দীপ্তিকে দিয়ে বলে, ” জানু নে ভাইয়া কথা বলবে। ”

দীপ্তি আয়েশার সামনে দাঁড়িয়ে ফোন নিয়ে মুখের সামনে ধরে বলে, ” হ্যা বলো। ”

তুহিন বলে, ” রুমে যাও। ”

কথাটা আয়েশা শুনতে পায়। আয়েশা চেঁচিয়ে তুহিনকে শুনিয়ে বলে, ” আহারে প্রেম! আহারে প্রেম! ”
দীপ্তি আয়েশার দিকে তাকিয়ে বলে, ” চুপ চুন্নি! ” বলেই দীপ্তি আয়েশার রুম ছেড়ে নিজের রুমে চলে যায়।

দীপ্তি ফোনটা মুখের সামনে ধরে রেখে খাটে শুয়ে আছে। মুখ ভার করে তাকিয়ে আছে তুহিনের দিকে। তুহিনও তাকিয়ে আছে দীপ্তির দিকে। কেউই কোনো কথা বলছে না। দুজনেই নিশ্চুপ। তুহিন দীপ্তির চোখের ভাষা পড়ছে। দীপ্তির মুখে লেগে থাকা অভিমানটুকুর মাত্রা মাপছে তুহিন। নিরবতা ভেঙে তুহিন বলে, ” এতো হিংসুটে কেনো তুমি? ”
তুহিনের কথার আগা-গোড়া কিছুই বোঝে না দীপ্তি। দীপ্তি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, ” কী নিয়ে হিংসে করলাম? ”
– ” এই যে তোমার সাথে আগে দুদণ্ড কথা না বলে আম্মু আর আশুর সাথে কথা বললাম তা নিয়ে তো হিংসায় জ্বলে যাচ্ছো একদম। আবার অভিমানও জমেছে মুখে। অভিমানে একদম চেহারার স্কিনটোন পাল্টে কালো করে ফেলেছো। ”
– ” আমি মোটেই হিংসুটে না। আর আমি মোটেই অভিমান-টভিমান করিনি। ”
– ” আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি অভিমান। ”
– ” হ্যা করেছি। করারই কথা, একটা চুমুও খাওনি কেনো যাবার সময়? ”
– ” আম্মু সামনে ছিলো। চুমু খেতাম কীভাবে? ”
– ” যখন রুমে ছিলে তখন কী আম্মু ছিলো নাকি? এমনিতে তো ক্লিনিক যাবার সময় কত আলহাদ করে তারপর রুম ছেড়ে বের হও। আর এখন অতোদুর গেলে অথচ একটা শুকনো চুমুও খেলে না। এসো না! আবার এসে চুমু খেতে এসো। মশার কয়েল দিয়ে একদম ঠোট পুড়িয়ে দেবো তোমার। ”
– ” ঐ পোড়া ঠোটে তোমায় চুমু দিয়ে তোমার ঠোটও পুড়িয়ে দেবো। ”
– ” হু হয়েছে। বাসা থেকে তো না খেয়ে বের হয়েছো। খেয়েছো তো বাইরে? ”
– ” হ্যা ফ্লাইটে খেয়েছি। ”
– ” ওহ। ”
– ” শোনো না! আজকে ফ্লাইটে যে হট হট এয়ারহস্টেজ ছিলো। মন চাচ্ছিলো একটাকে তোমার সতিন বানিয়ে ফেলি। ”

দীপ্তি ভালো করেই জানে যে তুহিন এসব ওকে ক্ষ্যাপানোর জন্য বলছে। দীপ্তি হালকা হেসে বলে, ” তা বানালেনা কেনো আমার সতিন? ”
– ” এমনভাবে বলছো যেনো তুমি মেনে নিতে একদম। ”
– ” সব যখন নিজে জেনেই বসে আছো। তাহলে আবার এই ঢং এর কথাগুলো কেনো বলছো? ”
– ” কীগো তোমার বুকের ওখানকার তিলটা ফোনের স্ক্রিনে এতো সুন্দর লাগছে কেনো? ”

দীপ্তি ভালো করেই জানে ওর বুকে ঠিক কোথায় তিল আছে। কিন্তু সেটা তো ফোনে দেখার কথা না। দীপ্তি বুকের দিকে তাকাতেই দেখে বুক থেকে ওড়নাটা সড়ে গেছে। আর ফোনটা বাকিয়ে উচু করে ধরেছে তাই তিলটা দেখা যাচ্ছে। দীপ্তি সঙ্গে সঙ্গে হাত দিয়ে বুক আর গলার মাঝখানকার খালি অংশটা ঢেকে নেয়।

তুহিন দীপ্তিকে হাত দিয়ে বুক ঢাকতে দেখে বলে, ” এতো ঢাকাঢাকি করছো যে? ঠিক কয়হাজার বার হবে আমি তোমার সারা শরীরের সব তিল দেখেছি?

দীপ্তি ফিক হাসে। দীপ্তি হাসতে হাসতে তুহিনকে বলে, ” আমি তোমার মতো অতো চরম মাত্রার ইতর-অসভ্য না। যে ওসব গুনে-গুনে রাখবো। ”
– ” হাতটা সড়াও না। তিলটা দেখি। ”

দীপ্তি লজ্বা পেয়ে যায়। দীপ্তি হেসে বলে, ” ফোনে না দেখে বাড়ি ফিরেই মন ভরে দেখো। অসভ্য একটা! ”

এরমধ্যেই তুহিনের গাড়ি হোটেলের কাছাকাছি চলে আসে।

তুহিন বলে, ” আচ্ছা গাড়ি প্রায় হোটেলের কাছাকাছি চলে এসেছে। এদিকের টাইম অনুযায়ী তো প্রায় রাত দুইটা বাজে। তাহলে তো দেশে এখন রাত ১০ টা বাজে। ডিনার করেছো তোমরা? ”
– ” উহু এখন করবো। ”
– ” আচ্ছা খেয়ে কোলবালিশ জড়িয়ে ঘুমিয়ে যেয়ো। তোমার তো আবার স্বভাব ভালো না আমায় জড়িয়ে ধরা ছাড়া ঘুমোতেই পারো না। ”
দীপ্তি মুখ বাকিয়ে বলে, ” আহা! আর তোমার স্বভাব খুব ভালো না? ”
তুহিন হেসে বলে, ” আচ্ছা টায়ার্ড লাগছে খুব এখন হোটেলে গিয়ে ঘুম দেবো। আবার কাল ফোন দেবো ফ্রি হয়ে। এখন একটা চুমু দাও ফোন রাখবো! ”
– ” এই না খেয়ে একদম ঘুমাবে না। তাহলে আরো বেশি টায়ার্ড লাগবে। খেয়ে দ্যান ঘুমাবে। ”
– ” হু আচ্ছা এবার চুমু দাও। ”

দীপ্তি একটা চুমু দিয়ে লজ্বামাখা মুখে বলে, ” এবার তুমিও একটা দাও। ”

তুহিন দাত কেলিয়ে বলে, ” আমার অতো শখ নেই যে চুমু খাবো। তোমার মতো নাকি আমি? আমার নিজের ওপর যথেষ্ট কন্ট্রোল আছে। ”
দীপ্তি দাত খিটে তাকায় তুহিনের দিকে। তুহিন চুমু দিয়ে বলে, ” আচ্ছা ফোন রাখছি গুড নাইট। ”
– ” গুড নাইট। টেক কেয়ার। ”

তুহিন হোটেলে ঢুকে খেয়ে গোসল করে ঘুমিয়ে যায়। দীপ্তিও ডিনার করে ঘুমিয়ে যায়।

চলবে!
#thetanvirtuhin

প্রিয় গল্পপ্রেমিরা যুক্ত হয়ে যান পরিবারে ►
” Tanvir’s Writings “

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here