স্নিগ্ধ_অনুভব #পার্ট:২২

0
549

#স্নিগ্ধ_অনুভব
#পার্ট:২২
“পিচ্চি_লেখিকা

অনা তেড়ে আসতে গেলে ওর হাত ধরে শরীরে সব শক্তি দিয়ে একটা থাপ্পড় দিলাম।

” কারো বিষয়ে সব না জেনে কমেন্ট করার সাহস কই পাও? আরে তোমার বোনকে তো অনুভব মার্ডার করেনি। তাহলে অনুভবকে দোষ দেও কেন সাহসে? এত বোনের মায়া বোন কি করতো বা কেন আত্মহত্যা করেছে তার পুরোটা খোজ নিয়েছো? অনুভবকে তোমার বোন ইরা ভালোবাসতো পরে অনুভব সাফ সাফ না করে দেয়। না করার কারণ ছিলাম একান্তই আমি। অনুভব না করে দেওয়ার পরও ইরা অনুভবকে বোঝাতো। পরে অনুভব ইগনোর করতে থাকে। এর মধ্যে ইরার রিলেশন হয় একটা বড়লোক প্লে বয়ের সাথে। যার কাছে মেয়ে মানেই ভোগপন্য। তোমার বোনও ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে ওই ছেলের সাথে রুম ডেট করে যার ফলে ইরা হয় প্রেগন্যান্ট। তখন রবিন ইরার বফ ওকে অস্বীকার করে। অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে। তোমার বোন লোক সম্মুখে মুখ কিভাবে দেখাবে এটা ভেবে ভুল পদক্ষেপ নেয়। আর তোমার বোনের লাশ দেখে তোমার মা হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায়। এতে অনুভবের কি দোষ? সব সত্যি না জেনে কখনোই কারো কাছে রিভেঞ্জ নিতে যেয়ো না। নিজের জালে নিজেরাই ফেঁসে যাবে যেমন গেছে তোমার বাবা। তোমাদের বোকামির জন্যই তোমার বাবাা মারা যায়।”
“সাট আপ,,জাস্ট সাট আপ। আর একটাও বাজে কথা বলবে না। ইরা আপু শুধু অনুভবকে ভালোবাসতো আর ও প্রেগন্যান্ট ছিলো না।”
“এই গলা নামিয়ে কথা বলো। এত বড় বড় কথা না বলে যাও পোষ্টমটমের রিপোর্ট দেখে আসো। আর প্রেগন্যান্সির রিপোর্ট ও আছে,, দাঁড়াও। ”
অনা কে ছেড়ে নিজের হ্যান্ডব্যাগ থেকে একটা রিপোর্ট এনে ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম। অনা রিপোর্ট দেখেই ধপ করে বসে পড়লো। এতক্ষণে অনুভবের দিকে তাকিয়ে দেখি ও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হয়তো ভাবছে আমি এত কিছু কিভাবে জানলাম?আমি জানি এই প্রশ্ন অনা মিরা ২ জনেই করবে। তাই ওদের প্রশ্নের অপেক্ষায় আছি।
“আপু যে অনুভব ভাইয়ার জন্য প্রেগন্যান্ট হয় নাই তা তুমি কিভাবে শিওর হচ্ছো?”
“বিশ্বাস করতে হয় করো নাা করলে না করো! যাও রবিনের কাছে শুনে এসো। আর হ্যাঁ তোমার বোন যখন রবিনের সাথে রিলেশনে ছিলো তখন অনুভব দেশের বাইরে ছিলো।”
“এত কিছু তুমি কিভাবে জানলে?”
“আরো অনেক কিছুই জানি। এই যেমন ধরো মিরা, ইরা আর তুমি ৩ বোন। মিরা অনুভবের কাছে কাছে থাকতো যাতে ওকে সহজেই কিছু করতে পারে। তুমি যেদিন আমাকে ধাক্কা দাও সেদিন আমি তোমাকে দেখেছি। সব সময় ভাবতাম তোমার সাথে আমার কি শত্রুতা যার জন্য আমাকে রাস্তা ধাক্কা পর্যন্ত দিয়ে মারতে চাইলে। তারপর দেখা হয় অনুভবের সাথে। তন্নির সাথে দেখা করে জানতে পারি রাহাত তোমাকে বিয়ে করেছে। অদ্ভুত! যে তোমাকে চেনে না জানে না সে কেন তোমাকে বিয়ে করলো? তখন আমার মাথায় আসে রাহাত তো জানতো না আমার আর অনুভবের বিয়ের বিষয়ে। আমার ফ্যামিলির সাথে তো ওর যোগাযোগ ছিল না তাহলে জানলো কি করে? তোমার বাড়িতে হিডেন ক্যামেরা লাগানো ছিলো। সেটা থেকে জানতে পারি তোমরা রিলেশন করে বিয়ে করছো। তোমাকে মাঝে মাঝেই ফোনে কথা বলাও দেখেছি। তারপর অনেক কষ্টে তোমার ফোন থেকে কল ডিটেইলস বের করে জানতে পারি তুমি অনেক আগে থেকেই রাহাতের সাথে অ্যাটাচে আছো। তুমিই ওকে বলেছিলে বিডিতে আসতে। হুটহাট ও সব জায়গায় কিভাবে আসতো তখন বুঝেছি। এদিকে মিরাও তোমার বোন। ইরার কথা জেনেছি তোমার মুখ থেকেই। সেদিন তুমি মিরাকে ফোন করে বলেছিলে ইরার মারা যাওয়ার জন্য অনুভব দায়ী। আর এবার অনুভব কে মারবেই। যায় হোক অনেক কাঠ খড় পুরাই এত কিছু করছি আমরা সবাই। আহ হাপায় গেছি্। এখন তোমাদের ব্যবস্থা করে রেস্ট নিবো😌। আর মামুনি তোমরা কত বোকা গো,,যে অনুভব কে ৫ টা মানুষ ১ সেকেন্ডের জন্য একা ছাড়তো না তারা আজ অনুভবকে রুমে একা রেখে বাইরে ঘুরছে সন্দেহজনক না? তোমাদের এত ক্রিমিনালি বুদ্ধির মাথায় এটুকু সন্দেহ হয়নি। হাউ ফানি!”
“তা..তার মানে তোরা ইচ্ছে করে….
” ইয়াহ। এই তো তোমাদের ব্রেইন খুলছে।”
“অনুভব তো অসুস্থ ছিলো তাহলে ও সুস্থ কিভাবে হলো? ওর ওপর যে ডোজ গুলো পড়তো তাতে ওর এত সহজে সুস্থ হওয়ার কথা না।”
“আরে তোমাদের দেখি অনেক ইন্টারেস্ট। দাঁড়াও এটা তোমাদের বলবে অন্য একজন।”
আমমি সিমা কে কল করতেই সে বাড়ির ভেতর এলো। সিমাকে দেখেই মামুনি রা চমকে উঠলো।
“তো আপু তুমি বলো অনুভবের ওপর এত কড়া ডোজ পড়া স্বত্বেও সে কি করে সুস্থ হয়ে গেলো? আমার সো কলড কাকিয়ারা এসব শুনতে চাচ্ছে তুমি একটু বলো!”
“অনুভব স্যার কে যখন কারেন্ট শকড দিতো তখন ওরা ফুল পাওয়ার দিতো বাট আমি চুপি চুপি পাওয়ার একদম লো করে দিতাম। যখন ওরা ওষুধের ডোজ বা ড্রাগস দিতো আমি তখন সেটা বদলে ঘুমের ইনজেকশন দিতাম। যার ফলে স্যারের তেমন কোনো ক্ষতি হতো না। এটা হসপিটালের ওই ডক্টররা প্রথমে খেয়াল না করলেও পরে খেয়াল করে। আর তখন নিজেরা দাঁড়িয়ে সব করতো। আমি তখন যায়তে পারতাম না স্যারের কাছে। বাট যতটা পারছি করছি আমি। লাস্ট ২ মানথ অনুভব স্যারকে মাঝে মাঝে ডোজ দিতো। আর কড়া ডোজ যার ফলে উনি সাময়িক ভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তবে পুরোপুরি মেন্টাল পেশেন্ট হয় না। তারপর তো স্নিগ্ধা স্যারকে নিয়ে আসে। আর প্রোপার ট্রিটমেন্ট কেয়ার এসবের ফলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। ওরা যেমন কড়া ডোজে স্যার কে পাগল করতো তেমনই কড়া ডোজেই স্যার সুস্থ হয়েছে।”
“হয়ে গেছে শোনা। এবার বলো কার মাথায় এসেছিলো অনুভব কে শকড দেওয়ার বিষয়টা?”
কেউ কোনো কথা না বলে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কাকি শুকনো ঢোক গিললো। আমি কাকির সামনে গিয়ে বললাম,,
“ইচ্ছা তো করছে তোমাকেও শকড দিয়ে দেখায় কিন্তু তুমি অপরাধী হলেও আমারই কাকি। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে তুমি তুষার ভাইয়া আর তুবার মা। নয়তো তোমাকে এখানেই শকড দিয়ে দেখাতাম কেমন লাগে?”
“তুই কিভাবে জানলি তুই আমাদের নিজের ভাইয়ের মেয়ে?” (কাকা)
“আরে কাকা তোমরা আমাকে মারতে চেষ্টা করার পর যারা আমাকে বাঁচিয়েছে তারাই তোমাদের ভাই। ওদের কাছে আমি তোমাদের এলবাম দেখেছিলাম। তারপর তোমাদের রুমে লাগানো ক্যামেরা থেকে জেনেছি। যায় হোক আর কিছু বলতে চায় না। এত কিছু বলতে গেলে দিন পেরিয়ে রাত হয়ে যাবে।(ক্লান্ত হয়ে গেছি এত কিছু সমাধান করতে বাপ রে😑)
কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মামুনির সামনে গিয়ে শান্ত কন্ঠে বললাম,,
“ছোট থেকে এটাই জানতাম আমার মা আমার জন্মের সময় মারা গেছে। আর আমার ৮ বছর বয়সে আমার বাবা মারা গেছে। তার পর থেকেই মা হিসেবে তোমাকে আর বাবা হিসেবে বাবাইকে মেনেছি। কখনো নিজের মা কে তো মা ডাকতে পারিনি কিন্তু তোমাকে ডেকেছি। তোমাকে নিয়েই আমার অনুভূতি ছিলো মা হিসেবে। মামুনি ডাকটাও তুমি শিখিয়েছো। আমার কথা বাদই দিলাম। অনুভব? সে তো তোমাকে মা বলেই ডাকতো। কত ভালোবাসতো তোমাকে! তুমি তো চাইলে সব ভুলে অনুভবকেই ছেলে হিসেবে মানতে পারতে।”
কথা গুলো বলার সময় চোখ ছলছল করছিলো। অনুভব আর ১ মিনিটও নিচে দাঁড়ায়নি। দ্রুত পায়ে হেঁটে চলে গেছে। জানি উনি এখন কাঁদবে। কাদুক! কাঁদলে নাকি মন হালকা হয়। উনিও কেঁদে নিজের মনকে হালকা করুক। হাজার হলেও তো আমরা ২ জনই এই মানুষগুলো কে বাবা মা ভেবেই ভালোবেসেছি।

২ ঘন্টা পর……..
আম্মুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছি। তিশা আপু, তুষার ভাইয়া আর অনুভব নিজেদের রুমে। বাবাই, মামুনি, কাকা, কাকি, অনা আর মিরা কে পুলিশ এসে নিয়ে গেছে। আব্বু আম্মু আমাকে তখন থেকে এসে আগলে বসে আছে। এত গুলো দিন পর নিজেদের মেয়েকে পেয়ে যেন ছাড়তেই চাইছে না। তন্নি কে তুবার রুমে রেস্ট নিতে পাঠিয়েছি। তুবা ভাগ্যিস বাড়ি নেই নয়তো এত কিছু সহ্যই করতে পারতো না। তামিম কে গেস্ট রুমে পাঠিয়ে দিয়েছি। আব্বু আম্মুর সাথে লিভিং রুমে বসে আছি। সবাইকে যার যার রুম দেখিয়ে দিয়ে এসেছি্। আব্বু আম্মুকে অনেক কষ্টে রুমে দিয়ে এসে নিজের রুমের দিকে যাচ্ছি। অনুভবকে তখন কান্না থামিয়ে শুইয়ে দিয়ে গেছিলাম। রুমে গিয়ে দেখি রুম অন্ধকার। লাইট অন করে অনুভবের কাছে গেলাম। অনুভব ঘুমাচ্ছে,,কান্না করার ফলে ঘুমাচ্ছে। বাচ্চাদের মতো ঘুমের মাঝেই নাক টানছে। অনুভবের গায়ে কাথা টেনে দিয়ে ফ্রেশ হতে গেলাম।

ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে সব কিছু ঠিকঠাক করে সার্ভেন্ট কে রান্না করতে বলে ছাদে চলে আসলাম। বিশুদ্ধ বাতাস শরীর ছুঁয়ে মন ছুঁয়ে যাচ্ছে্। এত কিছুর ফলে বিষন্নতায় মন ছেয়ে গেছিলো। এখন ভালো লাগছে। কিছুক্ষণ ওভাবেই থাকলাম। হঠাৎ কাঁধে কারো হাত পেয়ে পিছে তাকিয়ে দেখি অনুভব। চুল গুলো এলোমেলো। চোখ ২ টা লাল হয়ে আছে। কিছুক্ষণ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,,
“এই অবেলায় রোদে আর গরমে ছাদে কি করিস তুই?”
“আপনি গরম কই পান? দেখেন না কি সুন্দর বিশুদ্ধ বাতাস। আর এই রোদ আর কি? যে নিয়ন বাতির মতো রোদ এতে আমার কিছুই হবে না।”
“তুই আজকাল অতিরিক্ত পাকনামি করিস। এতদিন কি শুধু গোয়েন্দাগিরি করেছিস নাকি একটু পড়াশোনা টাও করেছিস?”
এই রে খাইছে। গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে তো বইয়ের নাম টাও ভুলে গেছি আর পড়া তো দুর। এখন কি করি? এইটা তো এখন ঠিক হয়ে গেছে। আগের মতো কথায় কথায় ধমক মারবে। শালা বজ্জাত।
“স্নিগ্ধু কই হারালি? তোকে কিছু জিজ্ঞেস করছি তো?(ধমক)
ধমক দিলো? কি বাজে লোক রে। ওরে আমি সুস্থ করলাম কোথায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে তা না করে বকা দিচ্ছে। আহ কি কপাল। ভাইবাই আমার কান্না পাচ্ছে। আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
” ওই আসলে…
“কি আসলে নকলে? যা বলবি ক্লিয়ার বল!”
“না মানে আমার জন্য নিচে সবাই অপেক্ষা করছে্। সরেন যায়।”
“পাক্কা চুন্নি তুই। যা নিচে যা। আর আজ থেকে ঠিক মতো পড়াশোনা না করলে খবর আছে!”
“ওই কি বললেন? আমি চুন্নি? আপনাকে তো….
” এই নিচে যা তো। তোর সাথে ঝগড়া করার মুড নাই আমার।”
আর কিছু না বলে ফুঁসতে ফুঁসতে নিচে চলে এলাম। এই লোকটা আগেই ভালো ছিলো। আমিই ধমক দিতে পারতাম হুহ। এখন সুস্থ হয়ে আমারে ধমক দেয়। আবার বলে কি না আমি চুন্নি? আমি? ইচ্ছে তো করছে সব কয়টা চুল ছিড়ে হাতে ধরায় দেই। উগান্ডার খচ্চর,,এনাকন্ডা, হাতি, মহিষ, ইঁদুর তোর কপালে বউ জুটবে না রাক্ষস। আমাকে এভাবে বিড়বিড় করতে দেখে তন্নি এগিয়ে এসে বললো,,
“কিরে এভাবে বিড়বিড় করছিস কেন?”
“আরে বলিস না। একটা এনাকন্ডা আছে আমাদের বাড়িতে। সে বলে আমি নাকি চুন্নি😤😤।
” এমা তোকে চুন্নি কে বলেছে? ওইটা তো ডাকাতরানী হবে।”
“কিহহ? এত বড় কথা? তন্নির বাচ্চা তোর চুল আমি আজকে!”
“এই থাম থাম। তোর ভাই আমারে মানলোই না আর তুই কি না আমার বাচ্চাও আইনা দিলি!”
“হুরু ছেরি চুপ।”
“আচ্ছা শোন না,, একটু তুষার ভাইয়ার রুমে যাবি আমার সাথে? একা যেতে ভয় করছে! যদি থাপ্পড় খেতে হয় তোর মতো!”
“ভীতুর ডিম। আবার নাকি আমার ভাইয়ের সাথে প্রেম করবে। তুই যা ভাইয়া কিছু বলবে না।”
“না তুইও চল। তুই দরজার বাইরে থাকিস আমি ভেতরে যাবো।”
তন্নি একপ্রকার টেনে হিঁচড়ে আমাকে তুষার ভাইয়ার রুমের সামনে দাঁড় করিয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে ঢুকে পড়লো। তুষার ভাইয়া থাই গ্লাসের ওপর বসে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে বিষন্ন মন নিয়ে বসে আছে। থাকারই কথা। হাজার হলেও তাদের বাবা মা ছিলো উনারা। ছিল কি এখনো আছে। কিন্তু এভাবে থেকে কি লাভ? উনারা উনাদের অন্যায়ের শাস্তি পাচ্ছে। মার্ডার করার জন্য মৃত্যুদন্ড না হলেও আজীবন কারাবাস হবেই। তন্নি গিয়ে তুষার ভাইয়ার সামনে গলা ধাকাড়ি দিতেই চট করে তন্নির দিকে তাকালো। কয়েক মিনিট তাকিয়ে অন্য দিকে ফিরে বললো,,
“তুমি? এখানে?”
“কেন? আমার কি আসাও বারন?”
“তা বলিনি। এই সময় এলে যে তাই বললাম।”
“ধরে নিন কষ্টের ভাগ নিতে এসেছি।”
তন্নির কথা শুনে দ্রুত তুষার ভাইয়া ওর দিকে তাকালো। তন্নি মুচকি হেঁসে তুষার ভাইয়ার দিকেই তাকিয়ে আছে।
“সবাই তো সুখের ভাগই নিতে আসে তাহলে তুমি কেন কষ্টের ভাগ নিতে আসবে?”
তন্নি মৃদু হেঁসে বললো,,
“ভালোবাসার মানুষটার সুখের আর দুঃখের ২ ভাগই আমার চাই। তাই চলে আসলাম।”

দুজনের কথা শুনে মুচকি হেঁসে চলে আসলাম। ২ জন একটু আলাদা টাইম স্পেন্ড করুক। তুষার ভাইয়া বেশি সময় তন্নি কে দুরে রাখতে পারবে না। তন্নির চোখের দিকে তাকালেই তার জন্য গভীর ভালোবাসা দেখতে পাবে ভাইয়া। মেয়েটা আগে সবার সাথে ফ্লার্ট করতো। অবশ্য এতে ওর দোষ নেই। ছেলেরাই বিরক্ত করতো। ও কখনোই কাউকে সিরিয়াস নিতো না। তন্নির কথা ভাবতে ভাবতেই তিশা আপুর রুমের দিকে পা বাড়ালাম। আপুও মন খারাপ নিয়ে বসে আছে৷ কি করে আবার এদের স্বাভাবিক করবো জানি না কিন্তু করতে তো হবেই। তিশা আপু বারান্দায় দাঁড়িয়ে দুর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি গিয়ে পাশে দাঁড়ালাম।
“আপু!”
আপু আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,
“হুম!”
“রাগ করছো?”
“রাগ কেন করবো?”
“আমার জন্যই আজ তোমরা বাবা মায়ের থেকে আলাদা।”
আপু মৃদু হেঁসে বললো,,
“উনারা উনাদের পাপের শাস্তি পাচ্ছে। তাতে তোর ওপর কেন রাগ করবো? আজ উনারা অন্যায় না করলে তারাও আমাদের সাথেই থাকতো। সুন্দর একটা পরিবার হতো। উনারা উনাদের লোভের জন্য আজ এই অবস্থায়। আর আমার তো এটা ভেবে ভালো লাগছে তুই কোনো ভাবেই পিছুটান নিয়ে সরে যাস নি। সরে গেলে তো উনারা শাস্তি পেতো না আর পরে আরো অন্যায় করতো হয়তো। আর সব থেকে বড় কথা হলো আমরা সবাই জানতাম এই দিনটা আসবে।”
আমি আপুর কথায় একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললাম,,
“আপু আবিদ ভাইয়া কেমন আছে?”
“হুম ভালো আছে। তুই হঠাৎ ওর কথা জিজ্ঞেস করছিস?”
“উনার নাম্বার টা দাও না? প্লিজ প্লিজ!”
“তুই ওর নাম্বার দিয়ে কি করবি?”
“প্রেম করবো। দাও!”
“এহহ ভাইয়া শুনলে কাঁচা চিবিয়ে খাবে তোকে!”
“ধ্যাত। দাও না!”
“ফোন নিয়ে আয়।”
তারপর আপুর ফোন নিয়ে এসে ঝটপট নাম্বার নিয়ে কল দিলাম……….

চলবে…
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️ কারো ভালো না লাগলে আমার কিছু করার নাই। যেমন প্লট ছিলো তেমনই লিখছি। এখন এতে কারো স্টার জলসা, জি বাংলা, বাংলা সিনেমার কাহিনি মনে হইলে গল্প পইড়েন না। আমাদের দেশে এমন লোভী মানুষ হাজারো আছে। এত কথা বলতে ভাল্লাগে না। এই পার্ট পড়ার পর অনেকেই বলবেন হয়তো,, ওদের আরো শাস্তি দেওয়া উচিত ছিলো! কিন্তু স্নিগ্ধা আর অনুভব দুজনেই এদেরকে বাবা মা ডাকতো তাই শাস্তি দেওয়াটা অবশ্যই কঠিন। হাজার হলেও তারা ছোট থেকে লালন পালন করে বড় করেছে। যায় হোক আমি হয়তো গুছিয়ে কিছু বলতে পারিনি। এমনিতেও অনেক অসুস্থ অনেক পয়েন্ট হয়তো বাদ দিছি। তাই ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🙂)
হ্যাপি রিডিং😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here