প্রণয়_কোন্দল #মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম) পর্ব:১৭

0
886

#প্রণয়_কোন্দল
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:১৭

উৎসকে তখনি হাসপাতালে নিয়ে এসেছে তৌসিফ আর দু’জন কনস্টেবল মিলে। হাতে গু’লি লাগায় বড় কিছু হয়নি।ডাক্তার বুলেট বের করে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় রক্ত দেওয়া হচ্ছে। ইসতিয়াক আহমেদ ফ্যাক্টরিতে ছিলেন, ছেলের এমন একটা খবর পেয়ে সব কাজ ফেলে চলে এসেছেন।উৎস বাবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

– বাবা আমার বউ কোথায়?

– খবর দেওয়া হয়েছে মনে হয় রাস্তায় আছে।

উৎস এবার ডাক্তারের উদ্দেশ্যে বলল,
– ডাক্তার শুনুন।

– জ্বি বলুন।

– আমার বউ আসলে তাকে বলবেন আপনার হাজব্যান্ডের অবস্থা খুব খারাপ এক মুহূর্তের জন্যও একা ছাড়া যাবে না মনে কষ্ট দেওয়া যাবে না উনার যা পছন্দ তাই করার চেষ্টা করবেন।

– এসবের দরকার নেই ঠিকমতো ওষুধ খেলে আর ড্রেসিং করালেই ঠিক হয়ে যাবেন।

– আপনাকে এতো পাকামি করতে কে বলেছে?যা বলেছি তাই করবেন নইলে আপনার বউকে বলে দিব নার্সের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক আছে।

– কিন্তু আমার তো নার্সের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

– সেটা আপনি জানেন আপনার বউ তো আর জানে না।

ডাক্তার হাসার চেষ্টা করে বলল,
– আপনি যা বললেন আপনার ওয়াইফকে তাই তাই বলবো।

– এইতো ভালো ডাক্তার।

ডাক্তার চলে গেল ইসতিয়াক আহমেদ মেকি ধমক দিয়ে বললেন,
– তুই জীবনেও শুধরাবি না ডাক্তারকে কেউ এসব বলে?

– বউয়ের ভালোবাসা পাওয়ার এটাই তো সুযোগ তুমি ওসব বুঝবে না।

– আমি বুঝবো কি করে? আমার তো বিয়েই হয়নি তোমারই শুধু বিয়ে হয়েছে।

– তাহলে আমরা আসলাম কোত্থেকে?

– চুপ থাক।

মিসেস উপমা আর ঊষা কেবিনে প্রবেশ করলো। মিসেস উপমা উৎসের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
– এখন কেমন লাগছে বাবা?

উৎস অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
– ভালো না আম্মু।

– ঠিক হয়ে যাবে বিশ্রাম নে।

– আমার উকিল বউ কোথায় আম্মু?

শতাব্দীর নাম নিতেই শতাব্দী হাজির। শতাব্দীকে দেখেই উৎস ইসতিয়াক আহমেদকে ইশারা দিল।ছেলের ইশারা বুঝতে পেরে সবাইকে নিয়ে বাইরে চলে গেলেন ইসতিয়াক আহমেদ। শতাব্দী উৎসের মাথার কাছে বসলো, উৎসের হাত ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলল,

– কেন ওখানে গেলেন? বড় কোনো বিপদ হয়ে গেলে কি হতো বলুন তো?

– কি আর হতো ম’রে যেতাম আর তোমার হিটলার বাপ তোমাকে আরেক জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিত।

– আবারও আজেবাজে কথা বলছেন কেন? মুখ দিয়ে ভালো কথা বের হয় না?

– যার বউ ভালোবাসে না তার আবার ভালো কথা।

– ডাক্তার বলেছে আপনাকে কাল রিলিজ করে দিবে।

– তাহলে আজ তো তোমার ঈদ।

– কিভাবে?

– এই যে আমি হাসপাতালে থাকব বাড়িতে বিরক্ত করার জন্য এখন কেউ নেই।

শতাব্দী বিরক্ত হয়ে বলল,
– আমিও আজকের রাতটা এখানেই থাকছি তাই রং ঢং বাদ দিন।

উৎস মনে মনে অনেক খুশি হলো কিন্তু খুশিটা প্রকাশ না করে বলল,
– তোমাকে ডাক্তার বলেনি অসুস্থ হাজব্যান্ডের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে?

– কই এমন কিছু বলেনি তো।

– বলতে হয়তো ভুলে গেছে সমস্যা নেই আমি বলে দিচ্ছি অসুস্থ মানুষদের সবকথা শুনতে হয় কখনও খারাপ ব্যবহার করা যাবে না।

তখনি ভেতরে শাওন হাসান আসেন মুখ বাঁকিয়ে বলেন,
– হাতে গু’লি লাগলে এত কিছু করতে হয় না।

উৎস হতাশা প্রকাশ করে মিনমিনিয়ে বলল,
– ভিলেন এসে পড়েছে।

– কি বললে?

– কিছু না, আপনি এখানে কি করছেন?

– তোমাকে দেখতে এসেছি।

– আপনাকে কেউ ডাকেনি।

– একমাত্র মেয়ের জামাই গু’লি খেয়ে হাসপাতালে পড়ে আছে না আসলে লোকে খারাপ বলবে তাই বাধ্য হয়ে এসেছি নইলে এখানে আসার কোনো ইচ্ছে ছিল না।

– আপনি লোক দেখাতে এসেছেন! ছি ছি ছি আপনি শ্বশুর নামের কলঙ্ক।

– এখনও সময় আছে ভালো হয়ে যাও জামাই বাবাজি।

শতাব্দী দু’জনকে ধমক দিয়ে বলল,
– উফ তোমরা থামবে বউ শ্বাশুড়িও অতোটা ঝগড়া করে না যতটা না তোমরা করো।

– তোমার বাবা আস্ত ঝগড়ুটে একেবারে তোমার মতো।

– আপনি চুপ থাকেন।

– সত্যি কথা তোমরা বাপ মেয়ে কেউ হজম করতে পারো না।
__________

উৎসকে আজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে শতাব্দী উৎসের কাছ থেকে এক মুহূর্তের জন্যও সরছে না এতে অবশ্য উৎসের ভালোই লাগছে।উৎস বিছানায় আধশুয়ে আছে, শতাব্দী স্যুপ এনে এক চামচ উৎসের মুখের সামনে ধরে বলল,

– গরম গরম স্যুপ খেয়ে নিন।

– স্যুপ খেলে কি হবে?

– শরীরের দুর্বলতা কেটে যাবে।

– আমার শরীরের কোথাও কোনো দুর্বলতা নেই।

– তার মানে স্যুপ খাবেন না?

– না

– হা করুন।

– না বললে বুঝো না?

– হা না করলে বন্দুক বের করে গু’লি দিব।

– তোমার বন্দুককে আমি ভয় পাই না।

– না খেলে নেই।

শতাব্দী মুখ বাঁকিয়ে বাটি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। শতাব্দী যেতেই উৎস বিছানা থেকে উঠে গেল, পোশাক বদলে নিজের মোবাইল আর ওয়ালেট জিন্সের পকেটে ঢুকিয়ে নিলো,আয়না দেখে চুল গুলো ঠিক করে নিয়ে ঘর থেকে বের হতে যাবে তখনি শতাব্দীর সামনে পড়লো। শতাব্দী উৎসকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে জিজ্ঞেস করলো,

– অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?

– বাহিরে যাচ্ছি কাজ আছে।

– কোনো কাজ নেই সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আপনি কোথাও যাচ্ছেন না।

– আমি যখন যাব ভেবেছি আমি যাবোই।

উৎস শতাব্দীকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলো কিছু একটা ভেবে শতাব্দীর উদ্দেশ্যে বলল,
– উকিল সাহেবা…

– কি?

– আমি একটা জিনিস বুঝতে পারলাম জোর করে আর যাই হোক ভালোবাসা হয় না,আমি চাই না কেউ আমার উপর তিব্র ঘৃণা নিয়ে বাধ্য হয়ে আমার জীবনে থাকুক তুমি চাইলে আমার জীবন থেকে চলে যেতেই পারো আমি আর জোর করে তোমায় আটকে রাখবো না।

সব কথা যেন শতাব্দীর মাথার উপর দিয়ে গেল উৎসের কথাগুলো শুনে চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে দাঁড়ানোর শক্তিটুকুও নেই।উৎস কথাগুলো বলেই বেরিয়ে গেল শতাব্দীর দিকে একবারের জন্যও তাকায়নি। শতাব্দীর দিকে তাকানোর সাহস নেই উৎসের,কথাগুলো সে অতি কষ্টে বলেছে, এতদিন নিজের প্রতি শতাব্দীর বিরক্ত আর রাগ দেখেছে।এছাড়া শতাব্দী নিজেই তো সরাসরি বলে তার উৎসকে ভালো লাগে না। উৎস অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দরকার হলে সারাজীবন একা থাকবে তবুও ভালোবাসার মানুষের বিরক্তির কারণ হবে না নিজের কারণে শতাব্দীর জীবনটা নষ্ট করবে না।

শতাব্দী ঢপ করে বিছানায় বসে পড়েছে কানের মধ্যে উৎসের কথাগুলো বাজছে মনে মনে বলল,’আপনি নিজেই জোর করে আমার জীবনে প্রবেশ করলেন এখন আবার চলে যেতেও চাইছেন? আমার বাহ্যিক ঘৃণাটাই দেখলেন ভেতরকার ভালোবাসাটা দেখলেন না?’

ইসতিয়াক আহমেদ ফ্যাক্টরিতে আছে উৎসকে দেখেই চমকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
– তুই এখানে?

– হুম বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগছিল না।

– এই জন্য অসুস্থ শরীর নিয়ে চলে আসতে হবে? এমনিতে তুই তো সারাদিন বাড়িতে থাকতেই পছন্দ করিস।

উৎস মলিন হেসে বলল,
– তৌসিফ কোথায় বাবা?

– তুই না ওকে ছুটি দিলি কিছুদিনের জন্য।

– ওহ ভুলে গেছিলাম আচ্ছা তুমি থাকো আমি আসি।

– কোথায় যাচ্ছিস?

– পরে বলবো।

ইসতিয়াক আহমেদ ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলেন।ছেলের মনে কখন কি চলে বুঝতেই পারেন না। উৎসের ফোন পেয়েই তৌসিফ দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে এসে বসলো টিস্যু দিয়ে বারবার কপালের ঘাম মুছছে। উৎসকে কেন জানি তৌসিফ অনেক ভয় পায় সেই কারণটা উৎসেরও বোধগম্য নয়।

উৎস এসে তৌসিফের সামনে বসলো ওয়েটারকে ডেকে একটা ব্ল্যাক কফি এবং আরেকটা কোল্ড কফি অর্ডার দিল। কয়েক মিনিট পর ওয়েটার টেবিলে কফি রেখে গেল, উৎস কোল্ড কফি তৌসিফের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,

– মনে হচ্ছে তোমার অনেক গরম লাগছে এসির মধ্যেও ঘেমে একাকার হয়ে গেছো।

তৌসিফ হাসার চেষ্টা করে বলল,
– তেমন কিছু না বস।

– ওহ কাজের কথায় আসি তাহলে।

– জ্বি বস।

– এতো বস বস করো কেন? তোমার বস বস শুনে মাঝে মধ্যে নিজেকে বড় কোনো মাফিয়া মনে হয়।

তৌসিফ মাথা নিচু করে বসে আছে।উৎস মুখে গম্ভীরতা এনে বলল,
– তোমার কি কারো সঙ্গে এফ্যায়ার আছে?

তৌসিফ ঘাবড়ে গেল তুতলাতে তুতলাতে বলল,
– নাআ বসস এম…ন কিছুই নেই।

– কখনও ছিল?

– না বস।

– তাহলে তো ভালোই।

– হঠাৎ এসব প্রশ্ন কেন বস?

– ঊষা তোমাকে পছন্দ করে ব্যাপারটা শুধু পছন্দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় ঊষা তোমাকে বিয়ে করতে চায়।

তৌসিফ বিষম খেলো।উৎস তৌসিফের দিকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল,
– এতো ভয় পাওয়ার দরকার নেই তোমার যদি ঊষাকে বিয়ে করতে আপত্তি থাকে তাহলে আমায় বলতে পারো।

তৌসিফ আগের মতো মাথা নিচু করে রেখেছে। তৌসিফ নিজেও ঊষাকে এতদিন ধরে গোপনে ভালোবেসে এসেছে কাউকে বুঝতে দেয়নি এখনও উৎসের মুখের উপর কিছু বলার সাহস নেই তাই নিরবতাকে শ্রেয় মনে করছে।উৎস হতাশা নিয়ে বলল,

– তোমার নিরবতা হ্যাঁ ধরে নিলাম।

– আঙ্কেল আন্টি জানতে পারলে কি মনে করবে এছাড়া আমি আপনার কাছে কাজ করে সংসার চালাই মালিক হয়ে নিজের বোনকে একটা কর্মচারীর হাতে তুলে দিবেন বস?

– আমার বাবা-মা সম্পর্কে তোমার এমন ধারণা ? তারা কখনও কোনো কাজকে ছোট করে দেখে না।

উৎস হতাশা প্রকাশ করে বলল,
– তোমার ভাগ্য অনেক ভালো তৌসিফ, তোমাকে একটা মেয়ে প্রচন্ড ভালোবাসে সেই মেয়েটির বড় ভাই সহজেই তোমায় নিজের বোনের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে মেয়েটির বাবা-মাও খুব ভালো রাজি হয়ে যাবে। আমার কাহিনী পুরোটাই তো জানো এতো গুলো দিন একতরফা ভালোবেসে গেলাম যাকে ভালোবাসি সে আমার হয়েও আমার না তার পরিবারও আমাকে পছন্দ করে না সেদিক দিয়ে তুমি অনেক ভাগ্যবান।

উৎস যে অনেক কষ্টে কথাগুলো বললো তৌসিফ বুঝতে পারছে উৎসের কষ্টটা উপলব্ধি করতে পারছে।উৎস আচমকা হেসে দিল দুষ্টুমি করে বলল,

– আরও একদিক দিয়ে লাভ আছে বিয়ের পর আমার মতো বউয়ের হাতে কিন্তু মা’ইর খেতে হবে না কারণ আমার বোন মারপিট জানে না।

তৌসিফ মৃদু হাসলো।উৎস চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বলল,
– ঊষা ভার্সিটির জন্য প্রতিদিন নয়টায় বাড়ি থেকে বের হয় চাইলে এই সময়টা কাজে লাগাতে পারো প্রেমের জন্য,আর হ্যাঁ আজ তিনটে বাজলে ভার্সিটি শেষ ওর।

তৌসিফ লজ্জা পেল ঊষাকে পেতে আর কোনো বাঁধা নেই বিরহ পোহাতে হবে না। কারো মনে আনন্দ আবার কারো মনে যন্ত্রনা উৎসের মনটা আজ ভিষন খারাপ কোথাও জানি একটা শূন্যতা অনুভব হচ্ছে।
.
.
উৎসের বলা সময় অনুযায়ী তৌসিফ ভার্সিটির সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে।কয়েক মিনিট পরেই বান্ধবীদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ঊষা গেইট দিয়ে বের হয়ে আসলো। তৌসিফ ঊষার পাশে চুপ করে হাঁটতে লাগলো হঠাৎ তৌসিফকে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে গেছে ঊষা। তৌসিফকে প্রশ্ন করলো,

– তৌসিফ ভাই তুমি এখানে!

– হুম।

– এখানে কেন এলে? কোনো দরকার ছিল কারো সঙ্গে?

– এমনিই এসেছিলাম দেখলাম ভার্সিটি ছুটি হয়েছে তাই ভাবলাম তোমাকে একেবারে নিয়ে যাই।

– ওহ।

ঊষা বান্ধবীদের বিদায় দিয়ে তৌসিফের সঙ্গে হাঁটছে।হুট করেই ঊষার হাত শক্ত করে ধরে তৌসিফ, এতে ঊষা কিছুটা ঘাবড়ে যায়। দু’জনে রাস্তা পার হয়ে একটা রিক্সায় উঠলো। তৌসিফ গম্ভীর মুখে ঊষাকে বলল,

– একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?

– কি?

– শুনলাম তুমি নাকি আমায় পছন্দ করো, বিয়ে করতে চাও।

ঊষা আরও চমকে গেল মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন হানা দিল,’তৌসিফ জানলো কিভাবে?’

তৌসিফ মৃদু হাসলো তারপর বলল,
– নিশ্চই ভাবছো আমি জানলাম কিভাবে?

ঊষা লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বলল,
– হুম কিভাবে জানলে?

– তোমার ভাইয়া বলেছে।

– ভাইয়া!

– হুম উনার বোন যাকে পছন্দ করে তার সঙ্গেই উনি তার বোনকে বিয়ে দিতে চান।

– ভাইয়া আমাদের বিয়ে দিতে রাজি!

– হুম।

ঊষা মনে মনে অনেক খুশি হলো উৎসকে আজ পৃথিবীর সেরা বড় ভাই মনে হচ্ছে তার কাছে।রিক্সা ঊষাদের বাড়ির সামনে থামতেই ঊষা নেমে গেল। তৌসিফ এক নিঃশ্বাসে বলল,

– ঊষা আই লাভ ইউ।

ঊষা ভুত দেখার মতো চমকে গেল ততক্ষণে রিক্সা চলতে শুরু করেছে।
__________

সারাদিন পার হয়ে গভীর রাত হয়ে গেল কিন্তু উৎসের বাড়িতে ফেরার নাম নেই ফোনটাও বন্ধ। শতাব্দীর অনেক চিন্তা হচ্ছে অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথায় গিয়ে বসে আছে কে জানে। মিসেস উপমাকে এই বিষয়ে বলেছে কিন্তু উনার কোনো হেলদোল নেই ছেলের প্রতি তার যেন অগাদ বিশ্বাস সময় হলে নাকি চলে আসবে শতাব্দীর মন তো আর তা মেনে নিতে চাইছে না সে তো জানে উৎস তার উপর অভিমান করে আছে।

উৎসের ফেরার আশায় জেগে থাকতে থাকতে চোখটা লেগে এসেছে শতাব্দীর। শেষ রাতে উৎস বাড়িতে আসে ঘরে এসে শতাব্দীর দিকে একপলক তাকিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়। হঠাৎ করেই কিছুর শব্দে জেগে যায় শতাব্দী, ভালো করে কান খাড়া করতেই বুঝতে পারে বাথরুম থেকে ঝর্ণার শব্দ আসছে। ঘরের দরজা ভেতর থেকে লক করা কিন্তু শতাব্দী দরজা খুলাই রেখেছিল উৎসের জন্য। এসব ভাবতে ভাবতেই উৎস টাওয়াল দিয়ে ভেজা চুল মুছতে মুছতে বাথরুম থেকে বের হলো। শতাব্দীকে দেখে মৃদু হেসে বলল,

– তোমার ঘুম এতো হালকা কেন?একটু শব্দ হলেই ভেঙে যায়?

– এতক্ষণ কোথায় ছিলেন?

– বাইরে।

– সেই বাইরেটা কোথায়?

উৎস উওর দিল না ভেজা টাওয়াল সোফায় ঢিল মে’রে বিছানায় বসলো। শতাব্দী কাছে গিয়ে হাতের ক্ষত স্থানটা দেখে রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলল,

– কোনো সেন্স নেই? আজ সকালে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন ডাক্তার বিশ্রাম নিতে বলেছে তারপরেও বাইরে বের হয়েছেন দুপুর আর রাতের ওষুধ খাওয়া হয়নি এখন আবার ক্ষত স্থান নিয়েই গোসল করে এসেছেন এখন যদি ইনফেকশন হয়ে যায়।

– কিছুই হবে না।

– আপনি তো ডাক্তার।

– তুমিও ডাক্তার নও।

শতাব্দী উৎসের ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিল।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here