##শেষ_বয়সের_প্রাপ্তি
পর্বঃ ৪
লেখনীতেঃ আয়েশা সিদ্দিকা (লাকী)
বাবাকে এমন অবস্থায় দেখে কলিজাটা কেঁপে উঠলো। পরিবেশ স্বাভাবিক করতে বললাম,
– বাবা, এভাবে তাকালে হবেনা!! সত্যি সত্যি আপনার বিচার আছে।
বাবা কোনো কথা না বলে উঠে আমার হাতটা ধরে দাঁড়িয়ে বললো.,
– আমার ভুল হয়ে গেছেরে মা এমন ভুল আর কখনো হবেনা এবারের মত মাফ করে দে মা।
কথা গুলো বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো বাবা। আমিও চুপ হয়ে গেলাম আসলে কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। বাবার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বাবার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললাম,
– বাবা এভাবে আর কোনো কান্না কাটি না। না আপনি কাঁদবেন না মা এভাবে কান্না কাটি করলে আল্লাহ পাক নারাজ হবেন। আর যা কিছু হয়েছে এতে কারো কোনো হাত নেই।
– মারে আমার চিন্তা হচ্ছে রবিনকে নিয়ে। বুঝতে পারছি না রবিন কিভাবে নিবে বিষয়টা।
– আপনার যা ভাবছেন এমন কিছুই হবেনা বাবা। আমার মন বলছে রবিন সব কিছু স্বাভাবিক ভাবেই নিবে। এবার উঠুন তো ফ্রেস হয়ে খেতে আসুন খাবার দিয়েছি সেই কখন।
– আচ্ছা তুমি যাও আমরা আসছি।
আমি গিয়ে টেবিলে বসলাম তার কিছুক্ষণ পর বাবা মা দুজনেই আসলো খেতে। রবিনও আসে প্রতিদিন দুপুরে খেতে কিন্তু আজ নাকি ওর মিটিং আছে তাই আসবেনা বললে একেবারেই রাতে আসবে। তাই আমরা তিন জন খাওয়া দাওয়া শেষ করে সব গুছিয়ে চলে আসলাম যে যার রুমে। শরীরটা খুব ক্লান্ত লাগছিলো তাই শুয়ে থাকতে থাকতে কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি। আসরের আজান কানে যেতে ঘুম ভাঙলো। উঠে নামাজ পড়ে রান্না রুমে গেলাম নাস্তা বানাতে।
কলিং বেল বাজতেই মা গেছে দরজা খুলতে। আমি জানি যে রবিন এসেছে ইচ্ছে করেই যাইনি দরজা খুলতে অনেক্ষণ পর মা গেছে খুলতে। মাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো,
– মা এখন শরীর কেমন আছে?
– এখন ভালো আছে বাবা।
বলেই মা সেখান থেকে দ্রুত সরে এলো। আমি রান্না রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখলাম সবটাই। রবিন রুমে চলে গেলো আমিও গিয়ে বললাম,
-তুমি ফ্রেস হও আমি নাস্তা বানিয়ে আসছি।
– আচ্ছা যাও।
আমি তাড়াতাড়ি নাস্তা বানানো শেষ করে। বাবা মাকে ডাক দিলাম নাস্তা করতে আসতে। ডেকে দিয়ে আমার রুমে এসে দেখি রবিন ফ্রেস হয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে বললো,
– মায়ের রিপোর্ট গুলো কই? দেখি রিপোর্ট গুলো দরকার পড়লে অন্য ডাক্তার দেখাতে হবে।
– রিপোর্ট মায়ের রুমে। টেবিলে নাস্তা দিয়েছি খেয়ে তারপর দেখো।
– আচ্ছা চলো।
এসে দেখি বাবা মা এখনো আসেনি বুঝতে পারছিলাম উনারা রবিনের সামনে আসতে চাইছেনা। তাই আবারও ডাক দিলাম। কিছুক্ষণ পর বাবা মা দুজনেই এসে বসলো। খেয়াল করে দেখলাম অন্যদিন বাবা মা যেমন রবিনের সাথে ফ্রী ভাবে কথা বলে আজ তাদের মধ্যে সেই জিনিসটা নাই। আজ রবিনই আগে বললো,
– আজ বাবা দেখি তাড়াতাড়ি চলে এসেছো? কখন আসলে বাবা?
– এই তো ২ টার দিকে চলে এসেছি।
– এতো তাড়াতাড়ি!! তোমারও কি শরীর খারাপ লাগছে নাকি? আর কতবার বলছি চাকরিটা ছেড়ে দাও আমাদের তিনজনের সংসার আমার ইনকামেই খুব ভালোভাবে সংসারটা চলে যাবে কিন্তু তুমি আমার কোনো কথাই শুনছোনা। এই বয়সে চাকরি করার কোনো মানেই হয়না।
– চাকরিটা করছি বলেই সময়টা কেটে যায়। তা না হলে সারাদিন করতামটা কি? শুয়ে বসে কি আর সময় কাটানো যায়!!
– কেনো কাটানো যানেনা? বাসায় থাকবে আর মাকে সময় দিবে দুজন গল্প করবে দেখবে সময় কোন দিক দিয়ে কেটে গেছে টেরই পাবেনা। সারাজীবন তো চাকরি বাকরি করেই জীবনটা পার করলে। এখন তো রেস্ট এর প্রয়োজন।
– এখনো তো চলতে ফিরতে পারছি। যতদিন পারি করতে থাকি, যখন আর চলতে পারবোনা তখন আর করবোনা।
– এবার তোমাদের দুজনেরই ভালো একটা ডাক্তার দেখানো দরকার। খোঁজ নিতে হবে কোথায় কোন ডাক্তার বসে। কি ব্যাপার মা তুমি আর সোহেলী দুজনেই যে আজ চুপ করে আছো কেও কথা বলছোনা যে।
– জানোই তো মায়ের শরীরটা ঠিক নেই তাই হয়তো চুপ করে আছে।
-ওহহ হ্যাঁ, আচ্ছা আমার নাস্তা শেষ আমি রুমে গেলাম। সোহেলী মায়ের রিপোর্ট টা নিয়ে রুমে এসো।
– আচ্ছা।
মা রবিনের কথা গুলো শুনে আমার দিকে তাকালো। আমি বললাম,
– এতো চিন্তা করার কোনো দরকার নেই মা।
মা কোনো কথা না বলে রুমে চলে গেলো বাবাও সাথে গেলো। আমি সব কিছু গুছিয়ে মায়ের রুমের সামনে গিয়ে বললাম,
– বাবা আসবো?
– হ্যাঁ মা এসো।
রুমে ঢুকে মায়ের কাছে রিপোর্ট গুলো চাইলাম। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম মা রিপোর্ট গুলো দিতে চাইছেনা কিছু একটা বলতে চাইছেনা। তাই আমি বললাম,
– মা, আমি জানি আপনি চাইছেন না যে রবিন জানুক বিষয়টা। কিন্তু কয়দিন না জানিয়ে থাকবেন আজ হোক বা কাল সবটাই তো জানবে।
মা আমার হাতে রিপোর্ট গুলো দিয়ে আর কোনো কথা বললেন না। আমিও আর কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম।
রুমে এসে দেখি রবিন শুয়ে আছে। আমাকে দেখে বললো,
– মায়ের রিপোর্ট গুলো আনো।
– এই নাও এনেছি।
রবিনের হাতে রিপোর্ট গুলো দিয়ে আমি রবিনের পাশে এসে বসলাম।
চলবে…..
কেমন হচ্ছে একটা কমেন্ট করে জানালে লেখার আগ্রহ বাড়ে। তাই কেমন লাগছে একটা কমেন্ট করে জানিয়ে যাবেন প্লিজ।
বাবাকে এমন অবস্থায় দেখে কলিজাটা কেঁপে উঠলো। পরিবেশ স্বাভাবিক করতে বললাম,
– বাবা, এভাবে তাকালে হবেনা!! সত্যি সত্যি আপনার বিচার আছে।
বাবা কোনো কথা না বলে উঠে আমার হাতটা ধরে দাঁড়িয়ে বললো.,
– আমার ভুল হয়ে গেছেরে মা এমন ভুল আর কখনো হবেনা এবারের মত মাফ করে দে মা।
কথা গুলো বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো বাবা। আমিও চুপ হয়ে গেলাম আসলে কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। বাবার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বাবার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললাম,
– বাবা এভাবে আর কোনো কান্না কাটি না। না আপনি কাঁদবেন না মা এভাবে কান্না কাটি করলে আল্লাহ পাক নারাজ হবেন। আর যা কিছু হয়েছে এতে কারো কোনো হাত নেই।
– মারে আমার চিন্তা হচ্ছে রবিনকে নিয়ে। বুঝতে পারছি না রবিন কিভাবে নিবে বিষয়টা।
– আপনার যা ভাবছেন এমন কিছুই হবেনা বাবা। আমার মন বলছে রবিন সব কিছু স্বাভাবিক ভাবেই নিবে। এবার উঠুন তো ফ্রেস হয়ে খেতে আসুন খাবার দিয়েছি সেই কখন।
– আচ্ছা তুমি যাও আমরা আসছি।
আমি গিয়ে টেবিলে বসলাম তার কিছুক্ষণ পর বাবা মা দুজনেই আসলো খেতে। রবিনও আসে প্রতিদিন দুপুরে খেতে কিন্তু আজ নাকি ওর মিটিং আছে তাই আসবেনা বললে একেবারেই রাতে আসবে। তাই আমরা তিন জন খাওয়া দাওয়া শেষ করে সব গুছিয়ে চলে আসলাম যে যার রুমে। শরীরটা খুব ক্লান্ত লাগছিলো তাই শুয়ে থাকতে থাকতে কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি। আসরের আজান কানে যেতে ঘুম ভাঙলো। উঠে নামাজ পড়ে রান্না রুমে গেলাম নাস্তা বানাতে।
কলিং বেল বাজতেই মা গেছে দরজা খুলতে। আমি জানি যে রবিন এসেছে ইচ্ছে করেই যাইনি দরজা খুলতে অনেক্ষণ পর মা গেছে খুলতে। মাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো,
– মা এখন শরীর কেমন আছে?
– এখন ভালো আছে বাবা।
বলেই মা সেখান থেকে দ্রুত সরে এলো। আমি রান্না রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখলাম সবটাই। রবিন রুমে চলে গেলো আমিও গিয়ে বললাম,
-তুমি ফ্রেস হও আমি নাস্তা বানিয়ে আসছি।
– আচ্ছা যাও।
আমি তাড়াতাড়ি নাস্তা বানানো শেষ করে। বাবা মাকে ডাক দিলাম নাস্তা করতে আসতে। ডেকে দিয়ে আমার রুমে এসে দেখি রবিন ফ্রেস হয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে বললো,
– মায়ের রিপোর্ট গুলো কই? দেখি রিপোর্ট গুলো দরকার পড়লে অন্য ডাক্তার দেখাতে হবে।
– রিপোর্ট মায়ের রুমে। টেবিলে নাস্তা দিয়েছি খেয়ে তারপর দেখো।
– আচ্ছা চলো।
এসে দেখি বাবা মা এখনো আসেনি বুঝতে পারছিলাম উনারা রবিনের সামনে আসতে চাইছেনা। তাই আবারও ডাক দিলাম। কিছুক্ষণ পর বাবা মা দুজনেই এসে বসলো। খেয়াল করে দেখলাম অন্যদিন বাবা মা যেমন রবিনের সাথে ফ্রী ভাবে কথা বলে আজ তাদের মধ্যে সেই জিনিসটা নাই। আজ রবিনই আগে বললো,
– আজ বাবা দেখি তাড়াতাড়ি চলে এসেছো? কখন আসলে বাবা?
– এই তো ২ টার দিকে চলে এসেছি।
– এতো তাড়াতাড়ি!! তোমারও কি শরীর খারাপ লাগছে নাকি? আর কতবার বলছি চাকরিটা ছেড়ে দাও আমাদের তিনজনের সংসার আমার ইনকামেই খুব ভালোভাবে সংসারটা চলে যাবে কিন্তু তুমি আমার কোনো কথাই শুনছোনা। এই বয়সে চাকরি করার কোনো মানেই হয়না।
– চাকরিটা করছি বলেই সময়টা কেটে যায়। তা না হলে সারাদিন করতামটা কি? শুয়ে বসে কি আর সময় কাটানো যায়!!
– কেনো কাটানো যানেনা? বাসায় থাকবে আর মাকে সময় দিবে দুজন গল্প করবে দেখবে সময় কোন দিক দিয়ে কেটে গেছে টেরই পাবেনা। সারাজীবন তো চাকরি বাকরি করেই জীবনটা পার করলে। এখন তো রেস্ট এর প্রয়োজন।
– এখনো তো চলতে ফিরতে পারছি। যতদিন পারি করতে থাকি, যখন আর চলতে পারবোনা তখন আর করবোনা।
– এবার তোমাদের দুজনেরই ভালো একটা ডাক্তার দেখানো দরকার। খোঁজ নিতে হবে কোথায় কোন ডাক্তার বসে। কি ব্যাপার মা তুমি আর সোহেলী দুজনেই যে আজ চুপ করে আছো কেও কথা বলছোনা যে।
– জানোই তো মায়ের শরীরটা ঠিক নেই তাই হয়তো চুপ করে আছে।
-ওহহ হ্যাঁ, আচ্ছা আমার নাস্তা শেষ আমি রুমে গেলাম। সোহেলী মায়ের রিপোর্ট টা নিয়ে রুমে এসো।
– আচ্ছা।
মা রবিনের কথা গুলো শুনে আমার দিকে তাকালো। আমি বললাম,
– এতো চিন্তা করার কোনো দরকার নেই মা।
মা কোনো কথা না বলে রুমে চলে গেলো বাবাও সাথে গেলো। আমি সব কিছু গুছিয়ে মায়ের রুমের সামনে গিয়ে বললাম,
– বাবা আসবো?
– হ্যাঁ মা এসো।
রুমে ঢুকে মায়ের কাছে রিপোর্ট গুলো চাইলাম। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম মা রিপোর্ট গুলো দিতে চাইছেনা কিছু একটা বলতে চাইছেনা। তাই আমি বললাম,
– মা, আমি জানি আপনি চাইছেন না যে রবিন জানুক বিষয়টা। কিন্তু কয়দিন না জানিয়ে থাকবেন আজ হোক বা কাল সবটাই তো জানবে।
মা আমার হাতে রিপোর্ট গুলো দিয়ে আর কোনো কথা বললেন না। আমিও আর কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম।
রুমে এসে দেখি রবিন শুয়ে আছে। আমাকে দেখে বললো,
– মায়ের রিপোর্ট গুলো আনো।
– এই নাও এনেছি।
রবিনের হাতে রিপোর্ট গুলো দিয়ে আমি রবিনের পাশে এসে বসলাম।
চলবে…..
কেমন হচ্ছে একটা কমেন্ট করে জানালে লেখার আগ্রহ বাড়ে। তাই কেমন লাগছে একটা কমেন্ট করে জানিয়ে যাবেন প্লিজ।