আড়ালে_অন্তরালে #মাহমুদা_লিজা পর্বঃ২২

0
406

#আড়ালে_অন্তরালে

#মাহমুদা_লিজা

পর্বঃ২২

বড্ড হাসফাস লাগছে রায়হানের। তানভীরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে অস্হির কন্ঠে বলল – তানভীর, এতরাতে বাসায় যাস না। তোর এ অবস্থা দেখলে চাচু হঠাৎ নিতে পারবে না। তাদের বলিওনি আজ তুই ফিরবি। তুই বরং আমার ঘরে চল, কেউ নেই।
তানভীর মুখ ফসকে বলল – মায়া!
রায়হান শান্ত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বলল – অনেক ভালবাসিস?
তানভীর ঠোঁট টিপে হেসে বলল – তোকে বলে বুঝাতে পারব না, ঠিক কতটা ভালবাসি। আমার প্রতিমুহূর্তে ওকে চাই।
রায়হানের বুক চিরে বেরিয়ে আসে এক দীর্ঘনিঃশ্বাস। কিছুটা উত্তেজনার স্বরে বলে – এত ভালবাসায় কারো নজর পড়ে গেলে অনেক ক্ষতি, তানভীর। যদি হারিয়ে যায়?
রায়হানের কথাটা তানভীরের কানে যেতেই তার নিউরনগুলো যেন আন্দোলন করে উঠল। সে চেঁচিয়ে বলল – না, মায়া হারিয়ে যাবে না। ও হারিয়ে গেলে তার ফাহিম বেঁচে থেকে কি লাভ হবে?
রায়হান মৃদু হেসে বলল – এত হাইপার হচ্ছিস কেন? আমি তোর বড় ভাই, এখনো বিয়েই কপালে জুটল না আর তুই বউ নিয়া কত ফুটানি দেখাস। এই দিনও যে দেখতে হবে তা ভাবিনি।
তানভীর ফিক করে হেসে দিল। সে টের পেল রায়হানের অস্হিরতা।
গাড়ি থামতেই রায়হান তাকে নামতে বলল। নিজে নেমে দুহাতে তাকে আগলে ধরে ড্রাইভারকে নির্দেশ দিল ইমতিয়াজ আর রিহানকে পৌঁছে দিতে।
রায়হানের কথায় যেন আদেশের উপস্হিতি স্পষ্ট। ইমতিয়াজ আর রিহান কথা বাড়ালো না। গাড়ি চলে গেল সামনের দিকে। রায়হান তানভীরকে নিয়ে নিজের ঘরের দিকে এগোল। বন্ধ দরজাটা খুলে তানভীরকে বলল – আমার রুমে চল।
কোনমতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে রায়হানের রুমে এসে বসে পড়ল তানভীর। ছোট্ট করে বলল – ঘুমাবোরে ভাই।
রায়হান ঈষৎ হেসে বলল – কিছু খাবিনা?
তানভীর মাথা দুলিয়ে না বলল।
রায়হান আলতো করে তার মাথায় হাত রেখে বলল – নিরুপমাকে আহত করা হয়েছে, তানভীর। বাজেভাবে আহত করা হয়েছে। অচেতন হয়ে হাসপাতালে পড়ে আছে। কে করেছে জানিস?
তানভীর অবাক চোখে চেয়ে আছে। তার উৎসুক চোখজোড়া জানতে চায় কে আঘাত করেছে।

রায়হান ধিক্কারের স্বরে বলল – ফারহান, তোর সেজ জ্যেঠুর ছোট ছেলে। মেয়েটার ঘাড়ের পেছনে আর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি।
তানভীর বলল – আমি যাব।
রায়হান তাকে থামিয়ে দিল। আলতো করে তার মাথায় হাত রেখে বলল – আমি যাচ্ছি। ফারহানকে অবশ্য তারা ধরে ফেলেছে। কোথায় যেন নিয়ে গেছে। তার খোঁজ পাইনি।
তানভীর চমকে বলল – মেয়েটা ভয়ংকর, রায়হান ভাই। বেশ ভয়ংকর।
রায়হান হেসে দিল। মুখে হাসি রেখে বলল – তুই থাক, আমি ওকে দেখে আসি।
তানভীরকে রেখে রায়হান বেরোল। নিজের বাবা আর ভাইয়ের অপকর্মের কথা মনে হলেই ঘৃণায় তার মাথা নিচু হয়ে আসে।
বাড়ির সামনে থাকা গাড়িটায় উঠে বসতেই ড্রাইভার বলল – ম্যাডামের জ্ঞান ফিরেছে।
রায়হান হেসে বলল – ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
গাড়ি চলতে শুরু করল। রায়হানের মনে শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সত্যিটা সামনে আসলে কি হবে?

দরজাটা খুলে ভেতরে আসতেই মাথায় সাদা কাপড় পেঁচানো মেয়েটাকে বসে থাকতে দেখে হাসল রায়হান। টুল টেনে মেয়েটার মুখোমুখি বসে বলল – কি দরকার ছিল ওর সামনে যাওয়ার?
নিরুপমা ভ্রু কুঁচকে বলল – নইলে তো আপনার ভাইকে মাঝপথে ধরে বসত।
রায়হান এক নজর তার দিকে তাকিয়ে বলল – এখন কোথায় আছে?
নিরুপমা হেসে বলল – সার্জারী রুমে।
মাথা নিচু করে রায়হান দীর্ঘনিঃশ্বাস নিল। নিরুপমা ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে বলল – নিজের উপর সন্তুষ্ট থাকুন, তাদের কাজকর্মের দায়ভার তাদের, আপনার সেখানে দূর্বলতার কিছু নেই।
এই মেয়েটাকে রায়হান এজন্যই ভরসা করে। ভণিতা ছাড়া কথা বলে।
রায়হান খেয়াল করলো নিরুপমা কিছু বলতে চায়।
তার উশখুশ দেখে রায়হান বলল – ফাহিম এখন আমার ঘরে। আপনার ফা-টা মাথা নিয়ে তার সামনে গেলে সে ম-রে যাবে।
খানিক লজ্জা পেয়ে কথা ঘুরিয়ে নিরুপমা বলে – আমাকে রিলিজ করান, এখন যেতে চাই বেঈমানদের কাছে।
রায়হান তাকে আদেশের স্বরে বলল – আগে নিজে সুস্থ হও, নইলে তানভীর আমায় আস্ত রাখবে না।
নিরুপমা হেসে বলল – জীবন দিয়ে হলেও দায়িত্ব পালন করতে হবে, বড়ভাই। আপনার মনে আছে যেদিন সেলিম ধরা পড়ে, সেদিনের কথা? আপনি চিরকুটে সেলিমের কথা বলেছিলেন। তাকে মুরাদ নয়, অন্যকেউ পেছন থেকে আঘাত করেছে। আপনার সেই চিরকুট পেয়ে আমি সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করেছি। অবশ্য তখন ফাহিম আর তানভীরের পরিচয় জানতাম না।

রায়হান হেসে বলল – তানভীর যদি তোমার পরিচয় জানে?
নিরুপমা হেসে বলল – আমি শুধুই তার কাছে মায়া হয়ে থাকব। সে আমার পরিচয় কখনো জানবে না। আমি আড়ালে থাকব ভাইয়া।
রায়হান ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে বলল – একটা কাজ করে দিবে?
নিরুপমা জবাব না দিয়ে ইশারা করল। রায়হান বলল – আমার সামনে আমার বাবা কিংবা ভাইয়ের উপর থেরাপি চালিও না, আমার অবর্তমানে কাজটা তুমি করবে।
নিরুপমা কন্ঠে তেজ এনে বলল – স্বজনপ্রীতি ব্যাপারটা আপনার মন থেকে কঠোরভাবে দূর করুন স্যার। আই এম অন ডিউটি, সরি স্যার।
রায়হান হো হো করে হেসে উঠে বলল – গুড গার্ল, এটাই চেয়েছিলাম। দোষী যেই হোক থেরাপির ফর্মুলা প্রত্যেকটা যথাযথভাবে প্রয়োগ করবে।
এভাবে বেকায়দায় কা’বু হবে সেটা ভাবতেও পারেনি নিরুপমা।

______

রায়হানের রুমটায় একাকী লাগছিল তানভীরের। মনে জোর রেখে উঠে দাঁড়ালো। রুমটা ভালো করে দেখছে। রায়হান কত সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে। টেবিলের পাশে ছোট্ট বক্সে কতগুলো কাগজ রোল করা। তানভীরের খুব আগ্রহ হলো কাগজগুলো দেখার জন্য। তার ধারণামতে সে জানে এ ধরনের কাগজগুলো আর্টিস্টরা ব্যবহার করে।
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাগজের কাছে পৌঁছাল। একটা পেপার হাতে নিয়ে দেখলো রায়হান তার ছোটবেলার ছবি এঁকেছে। বাঁ পাশে ফারহান আর ডানেপাশে তার অন্তঃসত্ত্বা মা। তানভীরের হঠাৎ মনে পড়লো – তাহলে কি সেজ চাচী তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন?
সেটা রেখে আরেকটা কাগজ তুললো তানভীর।
রায়হান তার মায়ের ঝুলন্ত লা’শে’র ছবি এঁকেছে।
তানভীর মাথা ধরে বসে পড়ল। রায়হান নিজের কষ্টটা বুঝি এভাবে রঙ তুলিতে বেঁধে রেখেছে!

পাশের কাগজটা তুলে খেয়াল করতেই তানভীরের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। রায়হান আয়েশার ছবি এঁকেছে কেন? বৃষ্টির স্নিগ্ধ জলের ফোঁটায় আয়েশার গালে যেন বিন্দু বিন্দু মুক্তো জমেছে। তানভীর খেয়াল করে ছবিটা দেখলো। ছবির এক কোণে আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে চিনতে বিন্দুমাত্র অসুবিধে হলোনা তানভীরের।

পেপারটা রেখে অন্য পেপার নিলো তানভীর। রায়হানের আঁকা ছবিটা দেখে সে যারপরনাই অবাক। এই কাগজটায় দেখা যাচ্ছে রায়হান হাত দিয়ে আলতো করে আয়েশার কানের পাশের চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে।
তানভীরের ভাবনাগুলো থমকে যাচ্ছে যেন। আরেকটা পেপার হাতে নিল সে। সেই পেপারটা খুলতেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। রায়হান এটা কি আঁকলো?

হাস্যোজ্বল রায়হানের বুকের উপর মাথা রেখে আকাশ দেখছে আয়েশা।
এই কাগজটা রেখে আরেকটা কাগজ হাতে নিতেই থমকে গেল তানভীর। আয়েশাকে নিয়ে এতদূর ভেবে রেখেছে রায়হান! কখনো বলেনি কেন? এভাবে গুমরে গুমরে ম’রা’র কোন মানে হয়?
ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আয়েশার ফোলা পেটটায় মাথা রেখে কিছু শুনছে রায়হান।
কাগজগুলো আবার পূর্বের ন্যায় তাদের স্হানে রেখে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল তানভীর। ছবির ব্যাপারগুলো ভাবতে তার অসহ্য লাগছে। রায়হান তাকে এতটা আগলে রেখেছে অথচ সে তার মনের কথা বুঝতেও পারেনি! এদিকে আয়েশাতো রায়হানকে দেখলেই যেন জায়গাটা খুঁড়ে ফেলবে।

এসব ভাবতে ভাবতে তানভীর উঠে গিয়ে বারান্দায় বসলো। বেশকিছু সময় বসার পর কাঁধে কারো স্পর্শ পেয়ে ঘুরে তাকিয়ে দেখল রায়হানকে। মৃদু স্বরে মায়াবী কন্ঠে বলল – ঘুমোস নি? এখানে বসে কি বউকে মিস করছিস?
তানভীর অপলক তাকিয়ে দেখছে রায়হানকে। একটা মানুষ নিজের অনুভূতি এভাবে লুকোতে পারে! তানভীরও দুষ্টুমির ছলে বলল – এখনো বউটাকে জড়িয়ে ধরা হলোনা, চুমু খাওয়া হলো না, তো মিস করাটাই স্বাভাবিক নয়?
রায়হান চোখ কটমট করে বলল – মুখে লাগাম টান, ভুলে যাস কেন আমি তোর বড়?
তানভীর হেয়ালি হয়ে বলল – আমিতো চুমু অবধি কল্পনা করলাম, দেখা যাবে তুই কচিকাচার কল্পনাও করে ফেলছিস।
তানভীরের মুখে অমন কথা শুনে চমকে উঠলো রায়হান। মুচকি হেসে বলল – নিরুপমা আজ প্রশ্নোত্তর খেলা খেলবে, তথ্যগুলো পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।
তানভীর কিছু একটা ভেবে বলল – কি রহস্য মেয়েটার? কে সে? আমাকে কেন এভাবে ফিরিয়ে আনলো?
রায়হান উদাস মনে বলল – এসব বেহুদা কেসের পিছনে নিজের সময় নষ্ট করে অন্যকে বাঁচানো তার কাজ।
তানভীর চোখটা বন্ধ করে কিছু ভাবতে নিল কিন্তু পারলোনা। তার চোখে ভেসে উঠলো মায়ার ঐ মায়াবী আদলখানা।

____

অন্ধকার রুমটা হঠাৎ আলোকিত হলো। সবাই তাকিয়ে দেখলো কালো কোটে ঢাকা মেয়েটার দুপাশে মোট চারজন মানুষ। হাতে মোটা লাঠি।
হাত, মুখ বাঁধা মানুষগুলোর পায়ের সামনে অগণিত টুকরো কাঁচ।

বুট পায়ে মেয়েটা এগিয়ে এসে সাদমানের সামনে দাঁড়ালো। হাতে থাকা লাঠির মাথা দিয়ে মুখটা উপরে তুলে বলল – বয়ান শুরু কর।
সাদমান চিৎকার করে বলল – বেঈমান!
সঙ্গে সঙ্গে বুক বরাবর লাথিটা বসিয়ে সাদমানকে চেয়ার সমেত উল্টে ফেলে মেয়েটা বলল – আমি নিরুপমা, তোর জম।
মুখ দিয়ে বিশ্রী কথাটা বের করার আগ মুহূর্তে দ্বিতীয় লাথি বসিয়ে নিরুপমা বলল – বয়ান শুরু কর।

নিরুপমা মতিন খানের দিকে তাকাল। এগিয়ে এসে কাঁধের উপর আঙ্গুলের নখগুলো বসিয়ে বলল – শুরু থেকে শুরু করুন। ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাই। মিস্টার তানভীর মির্জার জীবনের সকল ঘটনা জানতে চাই।

হুট করে ফারহান চেচিয়ে বলল – তোর ঝাঁঝ এখনি মিটিয়ে দেব?
সঙ্গে সঙ্গে লাথি এসে পড়ল তার গালে। চিৎপটাং হয়ে পড়ে গিয়ে বিশ্রী শব্দ উচ্চারণ করে বলল – তানভীরের আশ্রিতা নাকি? ওর ঘটনা নিয়ে তোর এত জ্বলুনি?
এক পা দু’পা করে এগিয়ে এসে নিরুপমা ফারহানের সামনে বসলো পায়ে ভর দিয়ে। আচমকা তার গালটা চেপে ধরে তার নাক বরাবর ঘুষি বসিয়ে বলল -হিসাব বরাবর।
গলগল করে বেরিয়ে আসা লাল স্রোতটায় থু থু ছিটিয়ে নিরুপমা বলল – জেবিন খানকে হ’ত্যা’র পেছনে মতিন খান দায়ী। সাদমান এবং জামশেদ নামের দুই কুলাংগারকে ভাড়া করে তাকে রে’প করে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় খু’ন করার ভয়ংকর পরিকল্পনা মতিন খানের? ঠিক বলছি? মিস্টার মতিন?
বুড়ো লোকটা নিজের অপরাধ স্বীকার না করে সজোরে বলল – তোকেও তেমনই রে’প করে ঝুলিয়ে দিব কু*** বা***।
নিজেকে স্হির রাখতে না পেরে মতিন খানকে পেছন থেকে লাথি মে’রে টুকরো কাঁচের উপর ফেলে নিরুপমা বলল – আগে বেঁচে ফিরেন তো।
নিরুপমা আবার বলল – আপনার দ্বিতীয় বিয়ের কথা জেনে জেবিন খান প্রতিবাদ করায় তাকে ভয়ংকর মৃ*ত্যু-টা দিয়েছেন। আমি আপনাকে মা’র’ব না তবে যন্ত্রণা দেব।
নিরুপমা এগিয়ে গেল সাদমানের দিকে। লাঠিটা ফেলে রডটা হাতে নিয়ে নিরুপমা সাদমানের দিকে তাকালো। মৃদু স্বরে বলল – বিস্তারিত বলুন মিস্টার সাদমান।
জবাব না দিয়ে চুপ থাকা সাদমানের গালে টুকরো ব্লে’ড দিয়ে ঘ্যাচ করে এক টা ন দিল মেয়েটা। তরতরিয়ে লাল তরলটা বেরিয়ে এলো। সাদমান চিৎকার করছে। সঙ্গে সঙ্গে তার গালে ইটের টুকরোটা ঢুকিয়ে নিরুপমা বলল – কোন শব্দ নয়, কত দিন যাবত নারী ব্যবসায় জড়িয়েছিস, বল।

সাদমানের গালে কা’টা জায়গায় বালু ঘষতে ঘষতে নিরুপমা বলল – কি দোষ ছিল জেবিন খানের? কি দোষ ছিলো মারইয়ামের? কি দোষ ঐ শত শত মেয়েদের?
যন্ত্রণায় মন খুলে চিৎকার করতেও পারছে না সাদমান। তার কাছে মনে হলো মৃ:ত্যু হলে ভালো হতো।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here