#সুগন্ধা [২]
প্রভা আফরিন
চৈত্র মাসের গা জ্বা’লানো রোদের পর একটি ঝুমঝুম বাদল দিন। পরিবেশটা আর্দ্রতার শীতল মমতায় মোহাচ্ছন্ন। বৃষ্টির ছাঁটে উড়ে আসা বাতাসে প্রশান্তি খেলে গেল চারিদিকে। যেন বহু প্রতিক্ষার পর বুভুক্ষু বন, ভূমি, ধুলোমাখা প্রান্তর ও প্রান্তরের প্রাণীরা সজীবতা ফিরে পেল। নিজেকেও আমার সেই চাতক প্রান্তর মনে হলো। ধুলোর পাহাড় উড়িয়ে এক পশলা বৃষ্টি আমার অস্তিত্বে নতুন ঢেউ তুলে গেল। মা বলেছিলেন আমার জন্ম হয়েছিল এক তুমুল ঝড়ের রাতে। প্রসব বেদনার্ত মাকে হসপিটালে নিতে গিয়ে সেকি ছোটাছুটি। বজ্রপাত, এলোমেলো বাতাসের ঝাপটা ও ভারী বর্ষণের তোরে রাস্তায় কোনো গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না। বাবা সেই ঝড়ের মাঝে নিজেই ভ্যান চালিয়ে মাকে সদরে নিয়ে গিয়েছিলেন। অন্ধকার কিংবা প্রকৃতির রোষাগ্নি মূর্তি উনাদের একটুও ভীত করেনি। বরং ভীত ছিলেন নতুন প্রাণের সুস্থভাবে আগমনের জন্য। শুনেছি আমাকে প্রথম কোলে নিয়ে বাবার কেঁদে ফেলার গল্প। সময়ের সাথে ক্রমশ রাগী হয়ে ওঠা বাবা অবশ্য সেই কথা শুনতে এখন বিব্রতবোধ করেন। আমাকে বিদায় দেওয়ার বেলায় সকলের কান্নার মাঝে বাবাকে সেই একই রকম বিব্রত মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম। অভিমান নিয়েও ভেজা চোখে তাকিয়ে ছিলাম তিনি আসবেন। বিদায়বেলা একবার হলেও আমার মাথায় হাত রাখবেন। কে জানে হয়তো চোখে চোখ মেলাতে না পেরেই আসেননি।
সকলের ওপর এক আকাশ অভিমান নিয়েই শ্বশুরবাড়ি এসেছিলাম আমি। প্রথম রাতে আসিফ আমার কাছে ছোটো একটা আবদার করে বলেছিলেন,
“মা বিছানায় পড়ার পর থেকেই এই সংসারে বিষন্নতার গন্ধ ঘুরে বেড়ায়। আগলে রাখার জন্য একজন মমতাময়ীর প্রয়োজন ছিল। আমার মা আপনার ছবি দেখেই বলেছিলেন আপনার দুচোখে মমতা আছে। আপনি কি পারবেন সেই মমতার সুবাসে বিষন্নতার গন্ধ দূর করতে?”
‘মমতার সুবাস!’ কথাটা একটু ভারী মনে হয়েছিল আমার। পরে বুঝলাম মায়ের গায়ের গন্ধকে তো মমতার সুবাসই বলে। পারব কিনা না বুঝেও আমি সম্মোহিতের মতো সায় দিয়ে বলেছিলাম,
“সংসার তো সন্তানেরই মতো। আর সন্তানকে মমতা দেওয়া অনিবার্য। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাব।”
জড়তার ফলে একটা বাক্য বিড়বিড় করেছিলাম,
“যদি আপনি পাশে থাকেন।”
অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ ও একে অপরের সম্বন্ধে বিশেষ না জানার দরুন এবং উনার স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্য দেখে প্রথম প্রথম উনাকে আমি অকারণেই ভয় পেতাম। ফলে সম্পর্কতা সহজ হয়েও যেন হচ্ছিল না। অস্বস্তিতে জড়িয়ে ছিলাম। ভালোবাসার ভ্রমর উঁকি দিয়েও ঠাঁই নেওয়ার জায়গা পাচ্ছিল না দুজনের মাঝে। বার্ধক্যজনিত রোগে বিছানায় শায়িত শ্বাশুড়ি টের পেলেন বিষয়টা। আমার হাত ধরে আফসোস করে বললেন,
“বুঝছো বউ, ছেলে আমার শান্তশিষ্ট হলেও হাসিখুশি ছিল খুব। ছোটো বয়সে আব্বা ম’রার পরে সংসারের দায়িত্ব সামলাইতে সামলাইতে, দুইখান ভাইবোন স্বাবলম্বী বানাইতে গিয়া হাসিটাই হারাইয়া ফেলছে। তুমি ওরে কোনোদিন কষ্ট দিয়ো না মাগো। ওর সুখটা সবাইরে বিলাইতে জানে। কিন্তু দুঃখ, মন খারাপ, অভিমান মনে মনেই রাখে। জানতেও দেয় না।”
তীব্রভাবে টের পাচ্ছিলাম অহেতুক ভয়, লজ্জা কিংবা জড়তাটা কাটাতে হবে। যেকোনো একজনকে এই দ্বিধার দেয়াল ভাঙতে হবে। উনার সান্নিধ্যে, যত্নে, দায়িত্বশীলতায় প্রতিনিয়ত বুঝতে পারছিলাম আমি প্রেমে পড়ছি। তীব্র ভালোবাসার তেষ্টা নিয়ে যার অপেক্ষা করছিলাম আসিফই সে। তবুও হীনমন্যতায় ভোগা মনে একটা খচখচানি হতো,
“উনার তীব্র ভালোবাসার মানুষটা আমি হতে পারব তো?” খোলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে সেসব ভেবে ভেবে কখন যে বৃষ্টির ছাঁটে ঘর ভিজিয়ে ফেলেছি টেরই পাইনি।
“বেলী, জানালাটা আটকে দিন। ঘর ভিজে যাচ্ছে। স্লিপ কেটে পা ভেঙে বসবেন পরে।”
চমকে পিছু ফিরলাম। সেই প্রথম দিনের মতো আজও উনার কণ্ঠস্বরে আন্দোলিত হই আমি। ফলস্বরূপ হড়বড়িয়ে কোনো না কোনো কান্ড বাধিয়ে ফেলি। বলাবাহুল্য এই মুহূর্তেও ভদ্রলোকের কথা সত্যি করে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পা পিছলে গেল। আসিফ ঢাল হয়ে আগলে নেন আমায়। বুকের ভেতর হতে পিছলে পড়া স্বস্তির নিশ্বাসে পাওয়া যায় যত্নের আবেশ। আসিফের দৃষ্টি স্থির। যে দৃষ্টির কবলে পড়লে লজ্জায় হিম হয় হৃদজমিন। আমি চোখ নামিয়ে নেই। আর উনি কন্ঠে ক্ষীণ অসন্তোষ ঢেলে প্রতিবারই বলেন,
“আপনি ভীষণ উদাসী।”
কথার বিপরীতে আমি প্রতিবারই ক্ষীণ হাসি ফিরিয়ে দেই। উদাসী হয়ে যদি একটু সান্নিধ্য মেলে, ক্ষতি কি!
আসিফকে আমি ভদ্রলোক বলে সম্বোধন করি। বিয়ের দিন কয়েকের মাঝেই বুঝতে পারলাম একটু বেশিই ভদ্র গোছের মানুষ তিনি। বাড়িতেও পরিপাটি হয়ে থাকেন। যেকোনো মেজাজেই নম্র স্বরে কথা বলেন। হাঁটা-চলা, খাওয়া-দাওয়া সবই শব্দহীন প্রক্রিয়ায় সাড়েন। পারলে বোধহয় কথাও নিঃশব্দে উচ্চারণ করতেন। কথা না বললে কিংবা দেখা না দিলে বোঝার উপায় নেই বাড়িতে আরেকজন মানুষ থাকেন। ভদ্রলোকের চেহারার প্রতিটি লোমকূপে যেন রাজ্যের গাম্ভীর্য ঠাসা। ভারিক্কি ভাব অঙ্গভঙ্গিতে। আমার চেয়ে গুনে গুনে আট বছরের বড়ো। তামাটে ত্বক হলেও বলিষ্ঠ গড়নের আকর্ষণে লোক সমাজের রূপের পাল্লায় উতরে যান অনায়াসে। কাছাকাছি হয়েও কেন জানি আমার গায়ের রঙটা উতরে উঠল না। আসিফের কোনো কোনো আত্মীয় পরিজনকে শ্বাশুড়ি আম্মার কাছে ফিসফিস করে বলতে শুনেছি,
“আসিফের জন্য একটা সাফ রঙের বউ আনতে পারলা না? ভবিষ্যত নাতি-নাতনির গায়ের রঙটা একটু সাফ হইত।”
কথাগুলো আমাকে অনিরাপত্তায় ভোগায়। রূপের হীনমন্যতায় ঢুলুঢুলু মনটা নিজেকে ভালোবাসতে ভুলে গিয়ে ভালো বউ হতে উঠেপড়ে লাগে। কাজ দিয়ে, যত্ন দিয়ে অন্যের ভালোবাসা আদায় করে নিতে উদগ্রীব হয়। মধ্যবিত্ত শ্বশুর বাড়িতে স্বামী, অসুস্থ শ্বাশুড়ি, কলেজ পড়ুয়া দেবর, ননদ নিয়ে সংসার আমার। সংসারের দায়িত্ব আসিফ একা সামলায়। বিলাসিতা না থাকলেও অভাব নেই। একমাত্র ননদ জেসমিন আপার বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু নতুন বউটা মায়ের সেবা করে নাকি অবহেলা তার তদারকি করতে মাসের বেশ কয়েকদিন বাবার বাড়িতে এসে থাকেন। সম্পর্কে ছোটো হলেও জেসমিন আপা আমার বড়ো। আমি উনাকে সমীহ করে চলি। যথাসাধ্য চেষ্টা করি আপ্যায়নে। তবুও জেসমিন আপা কেমন মুখ কুচকে থাকেন।
ভদ্রলোকের একটা দিক আমায় ভীষণ মুগ্ধ করে। প্রতিদিন বিকেলে অফিস থেকে ফিরেই আগে নিজ হাতে চা বানাবেন। এরপর মায়ের ঘরে গিয়ে গল্প করবেন। সেই সময়টায় উনাকে ভীষণ স্নিগ্ধ দেখায়। আড্ডায় আমাকেও সামিল করা হয়। উনার হাতের চায়ের লোভে, গোগ্রাসে কথা গেলার লোভে আমি রোজ সন্ধ্যার অপেক্ষা করি। কোনো বই পড়ে ভালো বা মন্দ লাগলে উনার সঙ্গে সেই বিষয়টা নিয়ে আলাপ করি। কিন্তু সমস্যা হলো উনার অনুভূতির প্রকাশ বেশ শক্ত। আমার কথায় বিরক্ত হোন কিনা তাও বুঝে উঠতে পারি না। হাসিটা যেন কদাচিৎ উঁকি দেয়। একদিন বিরক্ত হয়ে কবিতা আবৃতি করার ভান করে বলেই বসলাম,
“রামগরুড়ের ছানা, হাসতে তাদের মানা।”
সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যুত্তর পেয়েছিলাম,
“হাসি অনেকটা ছোঁয়াচে রোগ। একজন হাসলে পাশেরজনের মাঝেও ছড়িয়ে যায়, না ছড়ালেও সৌজন্য দেখিয়ে হাসতে হয়। কাজেই আপনি হাসিখুশি না থাকলে আমি সৌজন্য কী করে দেখাই বলুন?”
এরমাঝে রিতুর বিয়েটা হয়ে গেল। আমি ভেবেছিলাম যাব না। আসিফ সবই জানতেন। তিনি আমার ওপর বিরক্ত হয়ে বললেন,
“তুমি তো কোনো দোষ করোনি। তাহলে তাদের লজ্জার দায় তোমার কেন? বেলী, তুমি নিজেকে অসহায় ভাবাটা বন্ধ করো। তাহলে দেখবে তোমার জীবনটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। তোমার অসহায়ত্ব কিন্তু অর্ধাঙ্গ হিসেবে আমার ওপরও বর্তায়।”
আমাদের আপনি আজ্ঞেটা সে যাত্রায় তুমিতে নেমে এলো। আমি গেলাম রিতুর বিয়েতে। মেরুদণ্ড সোজা রেখে, হাসিখুশি থেকেই বিয়ের কাজে হাত লাগালাম। অভ্রদের পরিবার, আমার বাবা-মা কেউ আমার চোখের দিকে তাকাতে পারেননি।
দিনের পর দিন আসিফের ওপর আমার মুগ্ধতা বেড়েই চলছিল। সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে ভাবনার বদলটাও আসছিল। কিন্তু আসিফ, উনি কী আমার ওপর মুগ্ধ হচ্ছে? আমি উনাকে বুঝেও বুঝতে পারি না। শুনেছি পেটের মধ্যে দিয়ে পুরুষ মানুষের মনের রাস্তা পাওয়া যায়। সেই চেষ্টায় নিজের হাতে সব রান্না করতাম আসিফের পছন্দমতো। এক ছুটির দিনে দুপুরবেলা তার পছন্দের রান্নাবান্না করে বেশ দুর্বল হয়ে পড়লাম। ইদানীং শরীরটা দুর্বল লাগে। আসিফ ব্যতিব্যস্ত হয়ে আমায় বিশ্রাম নিতে বলল। নিজে বসে থাকল আমার পাশে। ফলে সেদিন সকলের খাওয়ার পর আমরা দুজনে খেতে বসেছি। ইলিশ মাছের দুটো পিছ অবশিষ্ট ছিল। একটি আসিফের পাতে তুলে দিয়ে অন্যটা আমি না নিয়ে রেখে দিলাম। আসিফ জিনিসটা খেয়াল করল। জিজ্ঞেস করল,
“মাছ নিচ্ছো না কেন?”
ইতস্তত করে বললাম,
“তুমি তো ইলিশ মাছ খেতে ভালোবাসো। এটা রাতে খেয়ো।”
উনি স্থির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। বেশ বিরক্তি নিয়ে বললেন,
“বেলী, তুমি কি জানো তুমি ভালোমানুষি করে নিজের ক্ষতি করছ?”
থতমত খেয়ে গেলাম। বললাম,
“মানে?”
“এই যে কিছুদিন ধরে দুর্বল বোধ করছ সেটা কিন্তু নিজের ভুলেই। প্রতিটা মানুষের শরীর সুস্থ সবল থাকার জন্য নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য চাহিদা আছে। তুমি অন্যকে ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে, অন্যের যত্ন নিতে গিয়ে নিজের ভাগের মাছটা উপরি হিসেবে দিয়ে দিচ্ছো। নিজের শরীরকে আমিষের চাহিদা থেকে বঞ্চিত করছ। শরীর কিন্তু মমতা বোঝে না। কাজেই ঘাটতির প্রভাব আজ নয়তো কাল প্রকট হবেই। এর বড়ো উদাহরণ তোমার সামনেই উপস্থিত।”
আমি প্রশ্নবোধক চাহনি দিলাম। উনি আবার বলতে লাগলেন,
“আমার মাকে দেখছ তো, এই মানুষটা সারাজীবন নিজের পাতের মাছ, ডিম, মাং স আদর করে আমাদের জন্য তুলে রাখতেন। খাবারে কম পড়লে নিজে একবেলা কম খেতেন তবুও আমাদের পেট ভরা চাই-ই চাই। বলতেন আমরা খেলেই নাকি মায়ের খাওয়া হয়ে যায়। আমাদের তৃপ্তিতেই উনার তৃপ্তি। সেই তৃপ্তির ফল কিন্তু এই বয়সে এসে হাড়ে হাড়ে পাচ্ছেন। কি এমন বুড়ো হয়েছেন মা? অথচ বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেহে একদমই নেই। তিনবেলা মুঠো ভরে মেডিসিন নিচ্ছেন। ছেলে-বউদের সঙ্গে বসে ভালোমন্দ খেতে পারেন না। হজম শক্তি একেবারে দুর্বল। শরীরের নিত্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি মমতার মতো অন্যকে বিলিয়ে নিজে পেয়েছেন দুর্বলতা, অবসাদ, রোগ বালাই। এখন আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার নেই। ভালোবাসা শুধু নিজের জিনিস অন্যকে দেওয়ার মাঝেই থাকে না। আরো অনেকভাবেই ভালোবাসা দেখানো যায়। তুমি যদি নিজেই ভালো না থাকলে তাহলে আমাদের যত্ন করবে কি করে? আমাদের ভালোবাসতে হলেও তোমার নিজেকে সুস্থসবল রাখা উচিত।”
আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম। উনি নিজের মাছের পিছটাকে মাঝখান থেকে ভেঙে আমার পাতে দিতে দিতে বললেন,
“তোমার স্বামীর সামর্থ্য না থাকলে একটা পিছ প্রয়োজনে দুজনে ভাগ করে খাব। এতে আমার কিছু কম পড়ল না তুমিও আহামরি বেশি খেয়ে ফেললে না। বরং শেয়ার করলে কেয়ার বাড়ে। এটাও কি ভালোবাসার অংশ হতে পারে না?”
“পারে।”
“নিজেকে ভালোবাসো বুঝলে। তোমার অযত্ন কিন্তু ঘুরেফিরে আমার ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর। সেটা আমি মোটেও সহ্য করব না।”
কথাটা বলতে গিয়ে লোকটার ঠোঁটের কোণে একটা চোরা দুষ্টু হাসি উঁকি দিল। আমার কান, গাল গরম হয়ে উঠল। প্রত্যুত্তরে কিছুই বলতে পারলাম না। কিন্তু কথাগুলো আমায় নতুন করে ভাবালো।
আসিফের দিনদিন ব্যস্ততা বেড়ে চলেছে। এদিকে আমি সময়ের সঙ্গে মানুষটার প্রতি আস’ক্ত হয়ে পড়ছি। সারাটাদিন কাছেপিঠে থাকতে ইচ্ছে হয়। অফিসে গেলে কাজের মাঝে একটা ফোনকল পেতে মড়িয়া হয়ে থাকি দিনভর। আজ উনি একবারও ফোন করল না। নিজেকে বোঝালাম ভীষণ ব্যস্ত মানুষ। এরপরও অবাধ্য অভিমান ভিড় করে চোখের কোটরে। বিকেলে উনি বাড়ি ফিরতেই মুখ গোমড়া করে রাখলাম। জিজ্ঞেস করল,
“মুড অফ?”
আমার আবৃতি করার গুণটা এক্ষেত্রে মোক্ষম অ স্ত্র। উদাসী হয়ে সুর দিয়ে বললাম,
“আষাঢ়ি মেঘ একলা ভীষণ
বর্ষণ বুঝি নামে চোখের ধারে।”
“তবে আজ বৃষ্টিবিলাস হোক
তোমার ওই চোখের কিনারে।”
চলবে…