ভেজাগোলাপ❤️ #লেখিকা-মালিহা_খান❤️ #পর্ব-৪

0
662

#ভেজাগোলাপ❤️
#লেখিকা-মালিহা_খান❤️
#পর্ব-৪

সোফায় বসে আছে নীরাদ।বেশ হাসসোজ্জল ভাবে কথা বলছে তার ভাইয়ের সাথে।”উনি এখানে কি করছেন?”প্রশ্নটা মাথায় আসলে মুখে বলার আগেই ভাবি পাশ থেকে বলল,

-তোর ভাইয়াই আসতে বলেছে,বুঝলি?ডিনারটা আমাদের সাথেই করতে বলেছে।সেদিন এত সাহায্য করল কিছু না করলে ব্যাপারটা খারাপ দেখায়।

-হুম,ভালো করেছো।

-তোর ফিরতে এত দেরি হলো যে?

-পরে বলবোনে ভাবি।এখন একটু ফ্রেশ হয়ে আসি?

-আচ্ছা যা।

ভাইয়ের সাথে দেখা করে,নীরাদকে সালাম দিয়ে নিজের রুমে চলে গেল রোদ্রি।

________________

অন্ধকার রুমে আধশোয়া হয়ে বসে আছে ফারহান।হাতে জলন্ত সিগারেট।পাশেই বিয়ারের কাঁচের বোতল।আজকাল এসবে তার নেশা হয়না।বোতলের পর বোতল বিয়ার খেলেও মাতাল হয়না সে।তার চোখেমুখে শুধু একটাই নেশা,আর সেটা হলো রোদ্রির নেশা।রোদ্রিকে কাছে পাওয়ার নেশা সে কিছুতেই কাটাতে পারে না।
গত একবছর থেকে রোদ্রিকে নানাভাবে কাছে পাওয়ার চেষ্টা করেছে সে।কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে গেছে।মেয়েটা অনেক ঘাড়ত্যাড়া।সামান্য ছুয়ে দিলে এত রাগের কি আছে বুঝতে পারেনা সে।বিছানায় নাহয় বিয়ের পরেই যাবে।

টেবিলে হরেকরকম খাবার সাজানো।নীরাদ বসে আছে চুপ করে।ভাবির কথায় মনে হচ্ছে সে এগুলো সব নীরাদকে খাইয়ে ছাড়বে।
“রোদ্রি কোথায় মিরা?”রিদানের প্রশ্নে মুখ তুলে তাকায় মিরা।ব্যস্ত কন্ঠে বলে,

-ডেকেছি…চলে আসবে।

মিরার কথা শেষ না হতেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামে রোদ্রি।নীরাদ কয়েক সেকেন্ড পলোকহীন তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ফেলে।একটা মেয়েকে সাধারণভাবেই এতটা অসাধারণ কিভাবে লাগে?এর আগে যে দুইদিন দেখা হয়েছিলো তখন রোদ্রির মাথায় ঘোমটা দেয়া ছিল।কিন্তু আজ নেই।চুলগুলো হাতখোঁপা করা।

নীরাদের একেবারেই সামনের চেয়ারটায় বসেছে রোদ্রি।রোদ্রির পাশে মিরা।টুকটাক কথা হচ্ছে তাদের মাঝে।মিরা বারাবার ওঠে এটা ওটা দিচ্ছে নীরাদের প্লেটে।
রোদ্রি একমনে খাচ্ছে।খাওয়ার সময় কথা তার পছন্দ না।হঠাৎই নীরাদ বলে উঠল,

-আপনার বোন তো আমাকে রীতিমত চোরই বানিয়ে দিয়েছিল ভাইয়া।

রোদ্রি স্থির দৃষ্টিতে নীরাদের চোখে চোখ রাখে।লোকটার চোখে দুষ্টুমি খেলা করছে।মুখে প্রশস্ত হাসি।

-কি বলো!! রোদ্রি নীরাদকে তুই চোর বলেছিস?

রোদ্রি রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ নীরাদের দিকে।

-আমি কি জানতাম নাকি তুমি হসপিটালে?একজনের ফোনে অন্যকারো কন্ঠ শুনে যে কেও চোর ভাবাটাই খুব সাভাবিক নয় কি?

শব্দ করে হেসে ওঠে রিদান আর মিরা।

-ও একটু বাচ্চামো সভাবের।তুমি কিছু মনে করো না।

-হ্যাঁ সেটা তো আগেই বুঝেছিই।

“নীরাদ,তুমিতো কিছুই নিচ্ছো না।বলে মিরা আবারও উঠতে গেলে রোদ্রি থামিয়ে দেয়।

-তুমি এতবার উঠোনাতো।আমি দিচ্ছি।বলে তরকারির বাটি হাতে নেয়।

নীরাদের প্লেটে তরকারি দিয়েই যাচ্ছে রোদ্রি।নীরাদ বারবার না করা সত্তেও দিয়ে যাচ্ছে।নীরাদ থামানোর জন্য বেখেয়ালিভাবে রোদ্রির হাত ধরে শক্তকরে।রোদ্রি থেমে যায়।চমকিয়ে নীরাদের দিকে তাকায়।নীরাদ দ্রুত ছেড়ে দেয়।অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে দুজনেই।তবে রিদান আর মিরার সামনে কিছু বলেনা।

খাওয়া শেষে সব গুছিয়ে রাখে রোদ্রি।নীরাদের দিকে পানি এগিয়ে দেয়।গ্লাস নেয়ার সময় নীরাদের চোখে স্পষ্ট জলজল করে উঠে রোদ্রির অনামিকা আঙ্গুলে পড়ানো সাদা পাথরের আংটি।মনে মনে দীর্ঘ:শ্বাস ছাড়ে সে।
রিদানের থেকে কথার ছলে জানতে পেরেছে মাত্র দেড় মাস আগেই ওর বাগদান হয়েছে।ইশশ..কেন যে আর কিছুদিন আগে তার সাথে রোদ্রির দেখা হলোনা?হলে হয়তো তার সাথে এই হৃদয়ের অসহ্য দহন যন্ত্রণার সাক্ষাত হতোনা।

চলবে??

[ভুল-ক্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,কেমন হয়েছে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here