#কন্যা_সর্বনাশী (পর্ব -৪)
নীলা বাড়ি এসে প্রথমেই ভাবির জেরার মুখে পড়ল। পুলিশের সাথে থেকে থেকে ভাবিটাও পাক্কা পুলিশ হয়ে গেছে যেন। কী কথা হলো না হলো সব বলতে হলো। সব শুনে ভাবি খুশি হয়ে বলল-
-যাক এতদিনে তোমাকে বাড়ি থেকে তাড়াবার ব্যবস্থা হচ্ছে। শান্তি… শান্তি।
-ইসস… আমাকে তাড়াবে। আমি সিন্দাবাদের ভূত হয়ে তোমার ঘাড়ে ঠিক চেপে থাকব।
-একটা কথা বলব?
-বলতে কিছু বাকি রাখছ নাকি? আসার পর থেকে তো জেরার মুখেই রেখেছ।
-আজ তোকে অনেক খুশি লাগছেরে… এমন আনন্দে ঝলমল করতে তোকে খুব একটা দেখা যায় না। বিয়ে হয়ে গেলেই তো চলে যাবি… মনে হলেই বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে!
-নীলা উঠে গিয়ে ভাবিকে জড়িয়ে ধরে বলল “এভাবে কেন বলছ? আমি তোমাদের থেকে দূরে কোথাও যাব না। তুমি সব সময় আমাকে কাছে পাবে।”
-ভাবির চোখে তখন পানি চলে এসেছে…
-উফফ এসব ইমোশনাল ড্রামা বন্ধ করো তো। আমার বিয়ের দিনের জন্য ওসব চোখের পানি জমিয়ে রাখো। এত বড় একটা গিফট বক্স পাঠিয়েছে চলো দুজনে মিলে খুলে দেখি?
-ধ্যাৎ… তোকে স্পেশাল গিফট দিয়েছে তুই একা দেখ। পরে আমাকে বললেই হবে। আর যদি দেখানো যায় তো দেখাস। আমি যাই। বলেই ভাবি চলে গেল। নীলার মনে খানিক বিষণ্ণতা ভর করল… ভাবিকে সে ভীষণ মিস করবে… এবাড়ির সবাইকেই সে ভীষণভাবে মিস করবে।
বিছানায় বসে সে আনমনে ভাবল, এতগুলো দিন পর হঠাৎ করে এসে আবির টুপ করে এত সহজে তাকে এভাবে দখল করে নেবে নীলা কি আদৌ তা ভেবেছিল কোনদিন? তার ভাবনার জগতটাও আবির কেমন সহজেই বন্দি করে নিল! মনের অজান্তেই আবির কি তবে তার ভেতরে জায়গা করে নিয়েছিল? বুকের ভেতর জমে থাকা অস্পষ্ট অন্ধকারে আবির খুব সহজেই জ্বেলে দিল নরম আলো। তার জীবনের অমীমাংসিত অধ্যায়টা কেমন হুস করে মিলে গেল! জীবন বড়ো অদ্ভুত… ভাসতে ভাসতে কোথায় গিয়ে আটকে যায় কেউ বলতে পারে না। এসব ভাবতে ভাবতে সে আবিরের দেয়া গিফট বক্সটা খুলতে বসল। খুলেই দেখে ভেতরে অসংখ্য ছোট বড় বক্স র্যাপিং করা। প্রত্যেকটায় চিরকুট লাগানো আছে। সে একটা একটা করে চিরকুট পড়ে দেখল গত ৩ বছরে যতগুলো বিশেষ দিন গেছে সেই প্রতিটি দিনের জন্য আলাদা আলাদা গিফট! তার জন্মদিন, ভালো রেজাল্টের জন্য, প্রথম যেদিন নীলাকে দেখেছিল সেই দিনটার জন্য, নতুন বছরের জন্য, ঈদের জন্য, বর্ষার ঝুম বৃষ্টির দিনের জন্য, মন কেমনের ক্ষণের জন্য, বসন্তের শুভেচ্ছা নিয়ে, মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় বিশেষ ভাবে মনে পড়ার জন্য!!! ইসস… কেউ কারো জন্য বুকে এত ভালোবাসা লালন করে? নীলার চোখে পানি এসে যায়… আবির যেন তার জীবনকে তীব্রভাবে রাঙিয়ে দিতে চাইছে। সে তখন আবিরকে ফোন করতে গেল আর তখনই মনে পড়ল আবিরের নাম্বারটা নেয়া হয়নি! এটা কোন কাজ হল? ভাবির কাছে নিশ্চই আছে আর না থাকলেও ভাইয়ার কাছ থেকে নিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু ওরা তো মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে গেছে! কিন্তু নীলার তো কথা বলতেই হবে… সে ভাবিকে একটা ম্যাসেজ পাঠাল “ঘুমিয়ে গেছ?”
-ভাবি তখন জেগেই ছিল তুলতুলিকে ঘুম পারাচ্ছিল। সে ম্যাসেজ দেখে নীলাকে ফোন দেয়… “কিছু বলবি?”
-হুম… ইয়ে আবির ভাইয়ের নাম্বারটা নেয়া হয়নি… তুমি একটু ভাইয়ার কাছ থেকে নিয়ে ম্যাসেজ করো না?
-ও… তাই তো বলি এত রাতে আমাকে হঠাৎ মনে পড়ল কেন? কিন্তু আবির ভাই! এই আবির ভাইটা কে?
-ভাবি মজা নিও না তো।
-ঠিক আছে নাম্বার দিব আগে বল তোর গিফটের ভাগ দিবি আমায়?
-অসম্ভব। আমার গিফট তোমাকে দিব কেন?
-তাহলে নাম্বার পাবি না যা। বলে ভাবি ফোন কেটে দিল!
-নীলার এত রাগ হলো… ভাবিটা যে কী? নীলার মনের অবস্থা বুঝেও মজা নিচ্ছে! আর তখনই ভাবির ম্যাসেজ এলো “আবিরের নাম্বার ***********। সারা রাত কথা বলে চোখের নিচে কালি ফেলে চেহারা পান্ডা বানিয়ে ফেলিস না। সামনে বিয়ে, চেহারা খারাপ দেখালে লোকে ভাববে নিশ্চই আমি তোকে টর্চার করি” নীলা ম্যাসেজ পড়ে হেসে ফেলল। সিরিয়াস মোমেন্টেও ভাবি ওর সাথে মজা নিতে ছাড়ে না। নীলা ফোন হাতে নিয়ে ৫ মিনিট ভাবল আবিরকে কী বলবে… ভেবে অবশ্য কোনোই লাভ হলো না। তাই সে ভাবাভাবি ছেড়ে ফোন করল… আবির ফোন ধরে বলল-
-যাক ফোন করার সময় হলো তাহলে? নাম্বারটা ভাইয়া দিয়েছে নাকি তুমি চেয়ে নিয়েছ?
-এতসব জেনে আপনার কাজ নেই। আমি একটা জরুরী কথা বলতে ফোন করেছিলাম…
-কী কথা?
-গিফটের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
-ব্যস এই???
-হুম, আর কী বলব?
-ঠিক আছে তাহলে ফোন রাখছি।
-না না, ফোন রাখবেন না…
-কেন আরও কোনো জরুরী কথা আছে?
-হুম… জরুরী কথা এটা যে, আমি শুধু জরুরী কথা বলতে ফোন করিনি…
-তাহলে?
-জানি না, তাহলে কী…
-হা হা হা… সেই কখন থেকে ফোন হাতে নিয়ে বসে আছি। এত দেরিতে ফোন দিয়ে আবার বলছ “ধন্যবাদ” দিতে ফোন করেছ! মেজাজ খারাপ হয় না নাকি?
-ফোন হাতে নিয়ে বসে না থেকে কল দিলেই তো পারতেন?
-অবশ্যই পারতাম… তবে তোমার সাথে আষাঢ়ে গল্প জমাবো বলে কত রাত আমি মির্ঘুম কাটিয়েছি এইদিনটার অপেক্ষায়… আর কয়েকটা মুহূর্ত বেশি অপেক্ষা করলে যদি তুমি নিজেই সাড়া দাও তাহলে তার চেয়ে মধুর আর কী হতে পারে? তাই অপেক্ষা করলাম।
-আমি যদি কল না দিতাম?
-তাহলে আর কী… আমার মন খারাপ আর অপেক্ষার ক্ষণ বাড়ত।
দুজনে অনেক রাত অব্দি গল্প করল। যদিও প্রায় সব কথাই আবির বলেছে আর নীলা মুগ্ধ হয়ে শুনেছে। দুবার “আবির ভাই” ডাকার কারণে বকুনিও খেয়েছে। গল্প শেষ করে আবির আজ অনেক দিন পর শান্তির একটা ঘুম দেয়। এত ভালো ঘুম হয় যে সকালে তাকে ডেকে তুলতে হয়! গত ৩বছরে যা হয়নি আজ তা হল।
সন্ধ্যায় নীলার ভাই ফোন করে আবিরের বাবার সাথে কথা বললেন। সামনের শুক্রবার সবাইকে বাসায় নিমন্ত্রণ জানায়। তারাও সাদরে দাওয়াত কবুল করেন। সরফরাজ খানের সাথে কথা বলে আবিরের বাবা আবিরকে ডেকে পাঠালেন। আবির আসতেই বললেন-
-কিরে ব্যাটা কী খবর তোর? নীলার ভাই ফোন করেছিলেন। শুক্রবার দাওয়াত দিলেন। সেদিন কী করা যায়?
-তুমি, মা যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।
-ও তাই নাকি! তা নীলার জন্য যখন পাগল হয়ে সন্ন্যাসী নিলে তখন আমাদের অনুমতি নেবার কথা কোথায় ছিল?
আবিরের মা বললেন- এই নীলা মেয়েটা আবিরের জীবনে এসেছিল বলেই তো ছেলেটা সুধরে গেল। এমন মেয়ে আমার ছেলের জন্য না তো কার জন্য হবে? আমরা শুক্রবার গিয়ে আংটি পরিয়ে বিয়ের দিন তারিখ পাকা করে আসব একেবারে। আমার ছেলেটা এইদিনের জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করেছে, আর না।
-আবিরের বাবা বললেন “তা তো অবশ্যই। তবে নীলা মাকে আমার এমনিতেই ভীষণ পছন্দ হয়েছে। এখন আল্লাহ্ পাক কবুল করলে সব তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করে ফেলব। শুক্রবারের জন্য তাহলে এই কথাই রইল, কী বলিস আবির?
-ঠিক আছে বাবা। আমি তাহলে সব ব্যবস্থা করছি।
পরের কয়েকটা দিন যেন আবিরের আর যেতেই চায় না… যে মেয়ে একদিন কড়া কথা শুনিয়ে আবিরকে ভরকে দিয়েছিল আজ তাকে নিজের ঘরে তোলার অপেক্ষা! সময় কত কিছু পালটে দেয়…
সময় আসলেই অনেক কিছু বদলে দেয়…
শুক্রবারকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারেই একটা উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে যায়। তারই প্রস্তুতি স্বরূপ আবির ওর মাকে নিয়ে এনগেজমেন্টের জন্য আংটি কিনতে যাচ্ছিল। হাতের মাপ লাগবে বলে আবির নীলাকেও ফোন করে আসতে বলে দিয়েছে। আবিরের মায়ের সাথে নীলার প্রথম দেখা হবে আজ। তারা দুজনেই এই নিয়ে এক্সাইটেড। নীলা শপিং মলে আসার পর আবিরের মা নীলাকে কাছে টেনে নিয়ে বললেন-
-কী মিষ্টি মেয়ে! মাশা-আল্লাহ আমার আবিরের পছন্দ আছে বলতেই হয়। তবে আমার আবিরও কোনো অংশে কম নয় কিন্তু।
-নীলা খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেল।
আবির বলল- দেখলে নীলা? আমার মা কিন্তু নিজের ছেলের প্রশংসা করতে ছাড়ল না।
-নিজের ছেলের প্রশংসা করব না তো কী? ছেলের যদি গুণই না থাকত তাহলে কী নীলার মত এমন মেয়ে পাওয়া যেত? চলো দাঁড়িয়ে না থেকে গল্প করতে করতে কেনাকাটা করি। তুমি কিন্তু একদম আনইজি ফিল করবে না। তোমার কোনো পছন্দ আছে? থাকলে বলো, সেভাবেই কেনাকাটা হবে। একদম আনইজি ফিল করবে না।
-না আন্টি, তেমন কোনো পছন্দ নেই।
-গোল্ড না ডায়মন্ড পছন্দ করবে?
-নীলা কী বলবে বুঝতে পারছিল না। কারণ এসবে সত্যিই তার কিছু বলার নেই… নীলার চুপ করে থাকা দেখে আবিরের মা বলল- ঠিক আছে চলো আগে ডায়মন্ড দেখি। ওখানে ভালো না লাগলে তখন গোল্ড দেখব।
তারা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড এ ঢুকে পড়ল। কয়েকটা রিং আবিরের মায়ের পছন্দ হয়, সেখান থেকে নীলাকে একটা সিলেক্ট করতে বলে।
-নীলা কনফিউজড হয়ে যায় কোনটা নেবে? তখন সে আবিরের দিকে তাকায়… চোখে প্রশ্ন “আপনি পছন্দ করে দিন না?”
-নীলার প্রশ্নময় চাহনি আবির বুঝতে পেরে রিং সিলেক্ট করে দেয়।
-রিং কেনা হয়ে গেলে আবির বলল “এরপর কী কিনবে?”
-আবিরের মা নীলাকে জিজ্ঞেস করলেন তোমার আর কিছু কেনার আছে?
-নীলা বলল, আর কিছু তো কেনার নেই!
-আবিরের মা বললেন তাহলে চলো একটা শাড়ী কিনি।
শাড়ীর দোকানে বসে তারা অনেক শাড়ী দেখছিল কিন্তু নীলা কোনটা নেবে বুঝে উঠতে পারছিল না। আবিরের মা তো বলেই যাচ্ছে এটা নাও, ওটা তোমাকে বেশি মানাবে। নীলা শেষমেশ একটা মেরুন রঙের শাড়ীতে হাত দেয়, একই সাথে আবিরও ওই শাড়ীটাতেই হাত রাখে। দুজনই অবাক হয়। তারপর আবির হেসে ফেলে। নীলা বলল-
-আন্টি এই শাড়ীটা নেই?
-পছন্দ হলে অবশ্যই নেবে।
অবশেষে একটা মেরুন কালারের শাড়ী কিনে তারা তাদের কেনাকাটা শেষ করল। তারপর তারা ফুডকোর্ডে গিয়ে এক সাথে বসে খেতে খেতে অনেক গল্প করে। খাওয়া শেষ হলে আবিরের মা আবিরকে বলল-
-আমি গাড়ি নিয়ে চলে যাচ্ছি তুই নীলাকে পৌছে দিয়ে আয়। আবির মাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে নীলাকে নিয়ে রিকশায় উঠে পড়ে বলল-
-এটা আমাদের প্রথম একসাথে রিকশায় ওঠা, তাই না?
-হুম।
-আবির তখন ছোট্ট একটা প্যাকেট বের করে দিয়ে বলে এটা আজকের জন্য।
-এটা কখন নিলেন?
-নিলাম তো।
-আজ যদি একসাথে রিকশায় না ওঠা হত তাহলে?
-হবে না কেন? আম্মুকে যেভাবেই হোক পাঠিয়ে দিয়ে তোমাকে নিয়ে রিকশায় উঠে পরতাম। আর আমার মা কিন্তু মোটেই বেরসিক নয় সে ছেলের মন পড়তে জানে।
-আপনি সব কিছুর জন্য গিফট রাখেন সে হিসেবে কিন্তু আরেকটা গিফট হয়।
-কোন হিসেবে?
-আজ আপনার মায়ের সাথে আমার প্রথম দেখা, সে হিসেবে।
-তাই তো! এটা তো মাথায় আসেনি!
-মাথায় সারাক্ষণ কে থাকে কে জানে! বলে নীলা মুখ টিপে হাসল।
-হুম কে যে থাকে…
-নীলা তখন তার হ্যান্ড ব্যাগ থেকে একটা প্যাকেট বের করে আবিরের হাতে দেয়। বলে- আজ আন্টির সাথে প্রথম দেখা তাই এটা তার জন্য।
-ও বাবা! আজ অব্দি আমার জন্য কিছু হল না আর আন্টির জন্য প্রথম দেখাতেই গিফট!
-সে আমাদের মা মেয়ের ব্যাপার আপনি এর মধ্যে ঢুকবেন না।
-ও তাই না? এখনই “মা-মেয়ে” হয়ে গেল আর আমি কী বানের পানিতে ভেসে আসা?
-নীলা খুব হাসল সেটা শুনে। বলল- সেটাই তো মনে হচ্ছে।
-মনে হওয়ার শোধ নেব। চিন্তা করো না।
নীলাকে নামিয়ে দিয়ে আবির বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে তার মায়ের হাতে নীলার দেয়া ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বলল- নাও, তোমার জন্য গিফট পাঠিয়েছে।
-কে পাঠিয়েছে?
-যে তোমাকে বশ করে তোমার স্বামী, সন্তান, সংসার এমন কী তোমাকেও নিজের কব্জায় নিয়ে ফেলতে চায়।
-কি আশ্চর্য, আমাকে কে কব্জা করতে চাইবে?
-নীলা চাইছে। এটা দিয়ে বলেছে আমি যেন তোমাদের “মা-মেয়ের মধ্যে না ঢুকি” এখনই আমাকে পর করে দিচ্ছে ভাবা যায়!
-আবিরের মা হাসলেন… আমাকে না দিয়ে তোর হাতে দিল কেন? দেখি কী পাঠিয়েছে? প্যাকেট খুলে দেখে ভেতরে একটা বক্স, তার উপর লিখা-
“আন্টি, আপনার সাথে আজ আমার প্রথম দেখা… কী নেব বুঝতে পারছিলাম না তাই ভাবলাম নতুন আর ভালো কিছুর শুরু মিষ্টি দিয়ে হয় তাই আপনার পছন্দের পুডিং বানালাম।”
বক্স খুলতেই বেরিয়ে এলো একটা ক্যারামেল্ড পুডিং। আবিরের মায়ের কাছে ব্যাপারটা খুবই ভালো লাগল। পুডিং আবিরেরও ভীষণ পছন্দ। নীলা পুডিং পাঠিয়ে আসলে আন্টি আর আন্টির ছেলে দুজনেরই ভালোবাসা পেতে চেয়েছে। মেয়েটা ভালো না হলে এত সুন্দর করে ভাবতে পারত না।
আবির রাতে নীলাকে ফোন করে বলল- তোমার দূর-অভিসন্ধি সাক্সেস।
-মানে?
-মানে আন্টির কাছে পুডিং পছন্দ হয়েছে।
-আর আন্টির ছেলের?
-পুডিং তো আন্টির ছেলের জন্য ছিল না।
-নীলা একটু আহত হল… সে তো দুজনের জন্যই পাঠিয়েছিল! সে শুকনো মুখে বলল- “ও…”
-আবির হেসে ফেলল, বলল- আন্টির ছেলে অবশ্য পুডিং মিস করেনি… তার পছন্দের জিনিস তার উপর হবু বউয়ের রান্না প্রথমবার খাওয়ার সুযোগ হয়েছে সেটা তো এমনি এমনি ছেড়ে দেয়া যায় না, বলো?
-ছোঁচা কোথাকার।
-রোমান্টিকও খুব।
চলবে…