পতিতা পল্লী
৩য় পর্ব
ডালিয়া ঘরে ঢোকার পর খেয়াল করল ঘরটা বেশ সাজানো গোছানো।লোকটার বয়স ও বেশি না এই তো ৩৫ -৩৭ হবে।দেখতেও বেশ সুন্দর।আর বুঝায় যাচ্ছে অনেক টাকার মালিক।আর দেয়ালে একটা লিখা দেখে ডালিয়া থমকে যায়।দেয়ালে লিখা ছিল পৃথীবীর সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ হল মেয়ে মানুষ।এমনটা লিখার কারন ডালিয়া বুঝতে পারল না।ডালিয়া ঘরে ঢোকার সাথে সাথে অরণ্য ডালিয়ার হাতটা ধরে আছরে ফেলে দেয়।আর বলল
— আজকে থেকে আমি যা বলব তুই তাই করবি।আমার কথার নড়চড় হলে শেষ করে দিব।মেয়ে মানুষকে আমি সবচেয়ে বেশি ঘৃনা করি।দুনিয়ার যত মেয়ের জাত আছে সব মেয়েকে আমি ঘৃনা করি।তুই যদি আমার কথার বাইরে নড়িস তোর খবর আছে।তোকে আমি শারিরীকভাবে পাবার জন্য এখানে আনি নাই।তোকে এনেছি যখন কোন মেয়ের প্রতি আমার গৃণা জন্মাবে তখন তোকে একটা করে শাস্তি দিয়ে আমার রাগ মিটাবো।
—সে আপনি যায় করুন অরণ্য বাবু আজকে আমাকে একটু বিশ্রাম নিতে নিন।শরীরটা খুব খারাপ কালকে থেকে আমি আপনার সব কথা মেনে চলব।আমি পোয়াতি আপনি তো জানেনেই।
—নাহ।এখন কোন বিশ্রাম নাই তোর জন্য।আমার গা হাত পা টিপ।আমার কথার বাইরে গেলে তোর খবর আছে।
ডালিয়া শান্ত স্বরে চুপ করে বসে হাত, পা টিপতে লাগল।ক্লান্ত শরীর যেন আর কিছুই মানছে না।মনে হচ্ছে একটু চোখ বুজতে পারলে ডালিয়ার ভালো লাগত।এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ডালিয়া অরণ্যের পায়ের উপর ঘুমিয়ে গেল খেয়ালেই করে নি।হঠাৎ অরণ্য ডালিয়াকে এভাবে দেখে রেগেমেগে আগুন হয়ে যায়।জোরে ডালিয়ার পেট বরাবর একটা লাথি মারে।আর ডালিয়া খাট থেকে ফ্লোরে পড়ে যায়।সাথে সাথে ফ্লোরটা রক্তে মেখে যায়।ডালিয়ার বাচ্চাটা মিসক্যারেজ হয়ে যায়।আর ডালিয়া কাতরাতে থাকে যন্ত্রণায় আর বলে
—প্লিজ অরণ্য বাবু আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান না হয় আমার বাচ্চাটা মরে যাবে।এতটা নির্দয় হবেন না।এ বাচ্চাটা আমার কাছে অনেক কিছু।জীবনে প্রথম মা হয়েছি।অনেক কষ্ট পেয়েছি বাচ্চা হারানোর কষ্টটা আমাকে আর দিবেন না।আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
—হারামজাদী আমি নিয়ে যাব তোকে ডাক্তারের কাছে।আমি নিজেই একজন প্রাক্তন ডাক্তার। কিন্তু ডাক্তারি ছাড়তে হয়েছে তোদের মত নষ্টা মেয়ে মানুষের জন্য।হারামজাদী তোর বাচ্চাটা শেষ হলে তো তুই কষ্ট পাবি অনেক তাই না?
—হ্যা অরণ্যবাবু অনেক কষ্ট পাব।দয়াকরে আমার একটা ব্যাবস্থা করুন।আমার বাচ্চাটাকে বাঁচান।
—হাহাহা।তোর এ কষ্টটায় আমি উপভোগ করব।তুই কাদঁ আমি তোকে দেখি।এক ঘন্টা পর তোর বাচ্চা পুরোপুরি নষ্ট হলে তোর চিকিৎসা করব এর আগে না।হাাহাহা
ডালিয়া মেঝেতে কাতরাতে লাগল।ভাবল আর কত দুঃখ তার কপালে লিখা আছে।আর কত কষ্ট পাবে সে।শেষ পর্যন্ত নিজের বাচ্চা হারানোর যন্ত্রণাও পেতে হল।পেটের ব্যাথায় ডালিয়া চিৎকার করতে লাগল।কিন্তু সে কান্না শোনে অরণ্য শুধু হাসতে লাগল।১ ঘন্টা পর ডালিয়া নিস্তেজ হয়ে পড়ল।রক্তে সারা শরীর আর মেঝে মেখে গেল।ডালিয়া সেন্সলেস হয়ে গেল।
ডালিয়ার সেন্স ফিরার পর ডালিয়া খেয়াল করল ডালিয়ার হাতে সেলাইন দেওয়া।জেগে উঠার সাথে সাথে অরণ্য বলে উঠল
—চিন্তা করে লাভ নেই তোর বাচ্চা আর নেই।তোর বাচ্চাটা শেষ।তোর বাচ্চাটা মারা গেছে।তোকে কষ্ট দিতে পেরে কি যে আনন্দ হচ্ছে কি বলব।ইশ ডেইজির বুঝি খুব কষ্ট হচ্ছে।
—আপনি আমাকে কেন কিনে এনেছেন বলবেন?
—বললাম তো তোকে মানসিক যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য।তোকে মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে শেষ করে দিব।
—আমাকে মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে আপনার লাভ?
—লাভ, ক্ষতি কিচ্ছু জানি না।এতে আমার শান্তি।
—কিন্তু কেন?
—কারন মেয়ে মানুষকে আমি ঘৃণা করি।মেয়ে মানুষকে কষ্ট দিতে পারলে আমি শান্তি পায়।তাই তোকে একের পর এক মানসিক কষ্ট দিব আর আমি মানসিক শান্তি নিব।হাহাহাহা।এবার খেয়ে নে।১৫ দিন তোকে কিছু করব না।যা করার ১৫ দিন পর করব।
ডালিয়া অরণ্যের কথা শোনে অবাক না হয়ে পারল না।ডালিয়া বুঝতে পারল না অরণ্যবাবুর মনে মেয়েদের প্রতি এত ঘৃনা কেন।আর ডালিয়াকে মেরে সে কি শান্তি পাবে।এসব ভাবতে ভাবতে ডালিয়া অস্থির হয়ে গেল।ডালিয়া বুঝতে পারল তার জীবনে সুখ শব্দটা আর নেই।ভেবেছিল অরণ্য বাবু হয়ত বুঝবে।কিন্তু পুরুষ মানুষ যে সব এক সেটা আবার প্রমাণিত হল।বাচ্চাটার কথা ভেবে ডালিয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।আচমকা সে জোরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগল।আর ডালিয়ার কান্না শোনে অরণ্য হাসতে লাগল।অরণ্যের হাসি শোনে যেন ডালিয়ার আরও বুক ফেটে কান্না আসল।
১৫ দিন অরণ্য ডালিয়ার আশে পাশেও আসে নি।খাবার গুলা শধু কাজের লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।এর মধ্যে ডালিয়া একটু সুস্থ হল।হাঁটতে চলতে পারছে।আচমকা ডালিয়া হাঁটতে গিয়ে সাবান পানিতে পিছলে পড়ল।ডালিয়ার মনে হল এবার কলিজাটা বের হয়ে গেল।ডালিয়া পড়ে ছটফট করতে লাগল।বুঝতে পারল না সাবানের পানিটা কে রাখল এখানে। হঠাৎ অরণ্য হাসতে হাসতে বলল
—ডার্লিং ব্যাথা পেয়েছ?সাবানের পানিটা আমি ঢেলেছি।যাতে তুমি পড়ে গিয়ে এভাবে ছটফট করতে পার আর আমি হাসতে পারি। হাহা।
—আপনি কেন আমার সাথে এমন করছেন?
—বলেছি তো মেয়ে মানুষ আমার সহ্য হয় না।তোকে কষ্ট দিতে পারলে আমার শান্তি লাগে।হাহাহা
ডালিয়া কোনরকমে মেঝে থেকে উঠে বিছানায় গেল।ডালিয়ার আজকে বুক ফেটে কান্না আসল আর কত কষ্ট তাকে পেতে হবে।আর কত কষ্ট তার কপালে লিখা আছে।এ কোন নরকে এসে সে পড়ল।ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেল।পরদিন সকালে ডালিয়া অরণ্যকে দেখে চমকে গেল কারণ..
লেখিকা-#শারমিন আঁচল নিপা
(পর্বটা দিতাম না।যারা ১ম দুই পর্ব পড়ে বলেছেন আমি কার জানি গল্প কপি করেছি তারা এবার বলেন ঐ গল্পের সাথে মিল এখন পাইছেন কিনা।১,২ পর্ব পড়ে এমন মন্তব্য করা ঠিক না।কিছু কাহিনীর থিম এক থাকায় মিল পাওয়া যেতেই পারে।তাই বলে এমন বলবেন?কারও গল্প কপি করে লিখার মন মানসিকতা আমার নাই।দরকার হলে গল্প লিখা বন্ধ করে দিব কিন্তু কপি করে কেন লিখব.)