গুটি গুটি পায়ে বাচ্চা মেয়েটা এগিয়ে এলো। অয়ন ওকে কোলে তুলে নিলো। আয়াত রহমান সাঁঝ। অয়ন ও কামিনীর মেয়ে। বাচ্চাটার বয়স দুই বছর। আয়াত যখন বাবার কোলে বসে আছে, খেলা করছে অয়নের সাথে। তখন কামিনী রুমে এলো। হাতে সুজির বাটি। কামিনীকে দেখে আয়াত হাত বাড়ালো কোলে ওঠার জন্য। মেয়েরা নাকি বাবা পাগল হয়, অথচ আয়াত মা পাগল। কামিনী হেসে কোলে তুলে নিলো মেয়েকে। অয়ন সুজির বাটি হাতে নিলো। অল্প অল্প করে চামচে সুজি তুলে খায়িয়ে দিলো আয়াতকে।
রাত হয়েছে এখন। সকলে রাতের খাবার খেয়ে শুতে গেলো। আয়াত কবিতার সাথে থাকার বায়না ধরলো। বাধ্য হয়ে অয়ন তাকে মায়ের রুমে রেখে এলো। তারপর রুমে এলো। কামিনী বসে ছিলো বিছানায়। একটা গল্পের বই হাতে। অয়নের গোমড়া মুখ দেখে বই রাখলো পাশে। বললো,
-“কি হয়েছে?”
-“কি হবে! আয়াত মায়ের সাথে ঘুমাতে গেছে। এখন দেখবে মাঝরাতে কান্নাকাটি করবে তোমার কাছে আসার জন্য।”
কামিনী হাসলো। এমন করে আয়াত মাঝে মধ্যেই। প্রথমে দিদার সাথে থাকতে যায়। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে মায়ের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে।
অয়ন বারান্দায় দাঁড়ালো কামিনীকে নিয়ে। কামিনীকে হাতের বেষ্টনীতে আটকে ফেললো। তারপর কামিনীর মুখের দিকে তাকালো। বলল,
-“উফ! কামিনী ফুল। তুমি এত সুন্দর কেন?”
-“কে জানে!”
অয়ন নিজে থেকেই আবার বলল,
-“আমার এখনো মাঝেমধ্যে বিশ্বাস হয় না, আমরা বাবা-মা হয়ে গেছি। আয়াত ইজ আ ব্লেসিং ফর আস। ”
কামিনী মিষ্টি করে হাসলো। কিছু বলল না। অয়ন বারান্দায় থাকা কামিনী গাছ থেকে একটা ফুল ছিঁড়ে ফেললো। কামিনী কানে গুঁজে ফিসফিসালো,
-“ধন্যবাদ আমাকে সুন্দর একজন পরী দেওয়ার জন্য। তাকে ধন্যবাদ আমার স্ত্রী হওয়ার জন্য। আমার কামিনী ফুলকে ধন্যবাদ আমার হওয়ার জন্য”
#সারপ্রাইজ পর্ব
#প্রেমাচ্ছন্ন সেই বিকেল
#ফারহানা চৌধুরী