ভালোবাসি তোকে ❤পর্ব- ৩০
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
.
চোখের নিরব ধারায় পরতে থাকা জল কিছুতেই থামাতে পারছিনা। কান্না অনেক সময় সুখেরও হয়, এটা শুনেছিলাম কিন্তু আজ তার প্রমাণ নিজেকে দিয়েই পেলাম। আমি এক হাতে চোখ মুছে জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস ফেলে নিজেকে সামলে নিয়ে দরজায় নক করলাম। ওনারা চুপ হয়ে গেলেন। আদ্রিয়ান বললেন,
— ” কে?”
আমি দরজা খুলে উঁকি দিয়ে বললাম,
— ” আমি অনিমা।”
আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে বললেন,
— ” রুমটা তোমারও অনি। পার্মিশন নেওয়ার কী আছে?”
— ” ন্ না আসলে আপনারা কথা বলছিলেন তাই।”
— ” সে যাই হোক নেক্সট টাইম যেনো এমন না হয়।”
আমি মুচকি হেসে মাথা নেড়ে ভেতরে গিয়ে ওনাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম। আদিব ভাইয়া হেসে আমার হাত বললেন,
— ” বাহবা। ভাবিজির হাতে বানানো কফি খাবো। কী সৌভাগ্য আমার।”
আদ্রিয়ান হেসে দিয়ে বলল,
— ” তুই সেই আসাতেই ঘুমো। ও করবে কফি? সেই কফি আবার আমরা খাবো। তাহলেই হয়েছে। নিজের বউয়ের হাতের রান্না খাওয়ার কপাল করে কী আমি এসেছি?”
ওনার কথাটা শুনে একটু খারাপ লাগলো। সত্যিই তো এ বাড়ির বউ কিন্তু কোনো কাজই করতে পারিনা। আমি মুখ গোমড়া করে ওনার দিকে কফির মগটা এগিয়ে দিতে দিতে নিচু গলায় বললাম,
— ” আমার কী দোষ? অামাকে কিছু করতেই দেয়না ওনারা, আমিতো শিখতেই চাই।”
উনি আমার হাত ধরে বসিয়ে দিয়ে একহাতে জড়িয়ে ধরে বললেন,
— ” আরে পাগলি আমি মজা করছিলাম। তোমার এখন এসব কিচ্ছু করার দরকার নেই। যখন দরকার হবে তখন নিজের হাতে সব শিখিয়ে দেব আমি।”
আদিব ভাইয়া একটা সিটি বাজিয়ে বললেন,
— ” জিও! ইয়ে হুয়ি না বাত। কী প্রেম, কী প্রেম।”
আদ্রিয়ানও আদিব ভাইয়ার কথা শুনে হেসে দিলেন। আমিও লজ্জা পেয়ে ওনাকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তুতলিয়ে বললাম,
— ” অব্ আমায় মামনী নিচে ডাকছে আমি গেলাম।”
বলে ওনাদের দিকে না তাকিয়ে দ্রুতপদে ওখান থেকে চলে এলাম। এমন কেনো ওনারা? এভাবে ইচ্ছে করে আমায় লজ্জায় ফেলেন।
_________________
আদ্রিয়ান আদিব ভাইয়ার সাথে একটু বাইরে গেছেন। এই সুযোগে আমি আরামে বেডে উপর হয়ে শুয়ে একমনে গেমস খেলছি। একদম মনোযোগ দিয়ে খেলছি কারণ আরেকটু হলেই নেক্সট লেবেলে পৌছে যাবো। হঠাৎ কেউ মাথায় টৌকা মারলো। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,
— ” ডোন্ট ডিস্টার্ব। খেলতে দাও তো?”
কিন্তু আবারও মাথায় টোকা পরতে বিরক্ত হয়ে বললাম,
— ” আরে ভাই লেভেলটা কম্প্লিট করতে দে।”
— ” ভাই না বড় হই তোমার।”
সাথে সাথে চমকে উঠলাম আমি। এটা তো আদ্রিয়ান। আমি হকচকিয়ে উঠে বসে ওনার দিকে তাকালাম। তারপর থতমত খেয়ে বললাম,
— ” অ্ আপনি চলে এসছেন?”
উনি ভ্রু কুচকে বললেন,
— “গেমস খেলছিলে তুমি? পড়া সব কম্প্লিট?”
আমি একটু হেসে তারপর একটু হাসার চেষ্টা করে বললাম,
— ” না আসলে একটু বোর লাগছিল তাই..”
তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম গেম ওভার হয়ে গেছে। ইস্ একটুর জন্যে লেভেলটা কম্প্লিট হয়নি। দূর ভাল্লাগেনা। কত কষ্ট করে আমি মুখ ফুলিয়ে তাকালাম ওনার দিকে। উনি ফোনটা আমার হাতে নিয়ে ফোনের দিকে একবার তাকিয়ে আবার আমার দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দিয়ে বললেন,
— ” কাম অন অনি। মেডিকেল স্টুডেন্ট তুমি। এখনও তোমার বাচ্চামোটা ছাড়তে পারলেনা। যাও টেবিলে যাও। গো!”
আমি ছোট্ট একটা শ্বাস নিয়ে উঠে টেবিলে গিয়ে বসলাম। আগে রাগ হলেও এখন ওনার এসব শাসনে আর রাগ হয়না আমার। কারণ আগে না জানলেও এখন খুব ভালোকরে জানি ওনার এই ছোট ছোট শাসনে অনেক অনেক ভালোবাসা লুকিয়ে আছে। ওনার ‘ভালোবাসি তোকে’ কথাটা যে এখনও আমার কানে বাজে। আমি বই খুলে টেবিলে বসলাম আর উনি ওয়াশরুমে গেলেন। আমি যতক্ষণ পড়েছি ততক্ষণ উনি ল্যাপটপ কাজ করছিলেন। রাতে ডিনার করে আপির সাথে একটু গল্প করে রুমে গিয়ে দেখি উনি শুয়ে পযেছেন আর আমার ফোন ঘাটছেন। আমি অবাক হয়ে বললাম,
— ” আমার ফোন দিয়ে আপনি কী করছেন?”
আদ্রিয়ান ফোন দেখতে দেখতেই বললেন,
— ” চুপচাপ এসে শুয়ে পরো।”
আমি অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে লাইট অফ করে শুয়ে পরলাম ওনার পাশে। কিন্তু ম্যাসেঞ্জার এর টুংটাং শব্দ শুনে বুঝতে পারলাম যে ডেটা অন করা। কিছুক্ষণ পর উনি বললেন,
— ” রূপ মেসেজ করেছে তোমায়? জিজ্ঞেস করছে কেমন আছো? কী বলব?”
আমি অবাক হয়ে গেলাম। রূপ মানেতো ঐ ছেলেটা। সে আমার আইডি কোথায় পেলো? আমায় মেসেজ করেছেন কেনো? আমি এসব ভাবতে ভাবতেই আদ্রিয়ান বললেন,
— ” কী হলো বলো? কী বলবো?”
ওনার কন্ঠে রাগের আভাস স্পষ্ট পাচ্ছি আমি। তাই কিছু না বলে চুপ করে রইলাম। কী বলবো সেটাই এখনও বুঝতে পারছিনা। উনি হঠাৎ করেই একটানে আমাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বেডের সাথে চেপে ধরে শক্ত কন্ঠে বললেন,
— ” তোমার আইডি কোথায় পেলো ও? আর মেসেজ করার সাহস কীকরে পেলো?”
আমি ওনার এমন হঠাৎ রেগে যাওয়াতে ঘাবড়ে গেছি। তাই তুতলিয়ে বললাম,
— ” অ্ আমি জানিনা তো।”
উনি আমায় আরেকটু চেপে ধরে বললেন,
— ” জানোনা মানে কী? জানতে হবে।”
আমি অবাকের ওপর অবাক হচ্ছি ওনার আচরণে এতো রেগে যাওয়ার কী আছে সেটাই বুঝতে পারছিনা এখনও। উনি আবার বললেন,
— ” আর প্রোফাইলে এতো ছবি দিয়ে রেখেছো কেনো? সবাইকে দেখাতে লুক হাউ বিউটিফুল আই এম?”
— ” ন্ না ওটাতো এম্ এমনিই..”
উফফ এই ছেলের ভয়ে ভয়ে আমিও একদিন শিউর তোতলা হয়ে যাবো। উনি ধমকের সুরে বললেন,
— ” নাহ দেবে না। এমনি ওমনি কোনোভাবেই দেবেনা। আর প্রোফাইলে সিকিউরিটি লক নেই কেনো? হ্যাঁ?”
উনি প্রতিটা কথা এভাবে ধমকে ধমকে বলছেন যে আমি কিছু বলার সাহসই পাচ্ছি না। উনি এবার লম্বা একটা শ্বাস ফেলে বললেন,
— ” যাই হোক আমি সব ছবি ডিলিট করে দিয়েছি। আর প্রোফাইলেও সিকিউরিটি লক দিয়ে দিয়েছি।এন্ড এরকমটাই জেনো থাকে।”
আমি অসহায়ভাবে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— ” প্রোফাইল পিকটাও ডিলিট করে দিয়েছেন?”
— ” হ্যাঁ? কেনো কষ্ট হচ্ছে? কেউ আর দেখতে পাবেনা। ওয়াও, গর্জিয়াস, লুকিং গুড কমেন্ট করবেনা তাই। কিন্তু কষ্ট হলেও কিছু করার নেই। যেভাবে আইডিটা সেট করে রেখেছি সেভাবেই জেনো থাকে নইলে ফোনটা যেমন আমি দিয়েছি নিয়ে নিতেও বেশি সময় লাগবেনা। ”
আমি কিছু বললাম না কিছু বলা মানেই এখন আগুতে ঘি ঢালা। তাই চোখ নামিয়ে রেখে দিয়েছি। উনি আমার কপালে সময় নিয়ে একটা চুমু দিয়ে আমার চুলগুলো কানে গুজে দিতে দিতে বললেন,
— ” তুমি আমার জন্য কতটা অমূল্য তুমি জানো? তুমি তো পুরোটাই আমার। আমি জানি হয়তো এগুলো একটু বেশিই করছি। কিন্তু আমি হেল্পলেস। তোমাকে দেখে প্রশংসা করার অধিকারটাও তুমি ছাড়া আর কাউকে দিতে পারবোনা আমি। সেটাও মেনে নেওয়ার ক্ষমতা নেই আমার মধ্যে। কী করবো?”
বলে উনি আমার গালে নিজের নাক দিয়ে হালকা করে স্লাইড করতে করতে বললেন,
— ” একটা সময় ভেবেছিলাম তোমাকে নিজের থেকে দূরে রাখবো কিন্তু এখন ভাবছি যে যদি সত্যিই তোমাকে দূরে সরাতে পারতাম আর তুমি অন্যকারো হয়ে যেতে তাহলে? তাহলে অন্যকারো সাথে তোমাকে কীকরে সহ্য করতাম আমি? তুমি অন্যকারো হয়ে গেছো সেটা কীকরে মানতাম। ভাগ্যিস বাবা জোর করে বিয়ে দিয়েছিল। নাহলে কোনো একদিন হয়তো আমাকে সুইসাইডই করতে হতো। তোমাকে ছাড়া একমুহূর্তও থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না এখন আর। আই ক্ কান্ট আই জাস্ট কান্ট।”
আমি চোখ বন্ধ হালকা জোরে শ্বাস নিচ্ছি। হঠাৎ উনি আমার গলায় মুখ গুজে দিয়ে ধীরে ধীরে কয়েকটা শ্বাস নিলেন। আমি সাথে সাথেই বিছানার চাদরটা খামচে ধরলাম, নিশ্বাস ক্রমশ ভারী হয়ে আসছে আমার, এমন মনে হচ্ছে যেনো সম্পূর্ণ অবস হয়ে গেছি আমি, পুরো স্হির হয়ে আছি। ওনার এরকম ভয়ংকর একেকটা বাক্যই তো আমাকে ঘায়েল করে দেয় তারওপর ওনার এই ভালোবাসায় পূর্ণ স্পর্শগুলো শেষ করে দিতে যথেষ্ট । বেশ অনেকটা সময় পর উনি মুখ তুলে আমার দিকে তাকালেন। যদিও আমি চোখ এখনও বন্ধ করে আছি কিন্তু ওনার নিশ্বাস আমার মুখে পরায় সহজেই বূঝতে পারলাম সেটা। উনি আমার কপালে আবারও একটা চুমু দিতেই আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম ওনার দিকে। উনি পাশে শুয়ে আমাকে টেনে নিজের বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। এতোটা শক্ত করে ধরেছেন যে মনে হচ্ছে ছেড়ে দিলেই আমি হারিয়ে যাবো। আমিও কিছু না বলে চুপ করে চোখ বন্ধ করে লেপ্টে রইলাম ওনার বুকে। কেনো জানিনা এই জায়গাটাতেই অনেক বেশি শান্তি পাই আমি নিজেকে খুব নিরাপদ মনে হয়। মনে হয় এরচেয়ে সুরক্ষিত কোনো জায়গা আমার জন্যে হতেই পারেনা।
_________________
আদ্রিয়ান ড্রপ করে দেওয়ার পর মেডিকেলে ঢুকে আমাদের ক্লাসের বিল্ডিংটার সামনে গিয়ে দেখি সিড়ির ওখানে বসে আমার বান্দরনী মানে বান্ধবীরা বসে বসে বই পড়ছে। আমি গিয়ে ওদের কাছে বসে বসতেই অরু বলল,
— ” কী ব্যপার বলতো? লেট কুমারী এখন এতো টাইমলি পৌছে যাচ্ছে?”
ঐশি বলল,
— ” পৌছবে না কেনো বল, আমাদের জিজু যেই পরিমাণ পাঞ্চুয়াল। যে কেউ ওনার কাছে গেলে সুধরে যাবে।”
ইসু হেসে দিয়ে বলল,
— ” সবই কপাল। আমাদের জিজুর পাল্লায় পরে একদম ঠিক হয়ে গেছে। এতোদিন ছিলো ধনুকের মতো সোজা এখন তীরের মতো সোজা হয়ে গেছে।”
সবাই হেসে দিলো। আমি মুখ ফুলিয়ে কাধ থেকে ব্যাগ নামিয়ে নিজের কোলে রেখে ব্যাগ থেকে এপ্রোন বের করে গায়ে দিতে দিতে বললাম,
— ” হ্যাঁ হ্যাঁ তোমরাতো মজা লুটবেই। আমি তো জানি কী জ্বালা। সেই সাত সকালে টেনে ঘুম থেকে তুলবে। জীবণেও এতো ভোরে উঠিনি আমি। তারওপর ওনার পড়া নিয়ে শাসন, খাওয়া নিয়ে শাসন, ঘুম নিয়ে শাসন। কী প্যারায় আছি আমিই জানি।”
ইশু অবাক হয়ে বলল,
— ” তুই এটাকে প্যারা বলছিস? জিজু কত্তো কেয়ারিং ইয়ার।”
অরু বলল,
— ” এক কাজ কর আমার শান্তি তুই নিয়ে বিনিময়ে তোর বরটাকে দিয়ে দে।”
আমি রেগে কপাল কুচকাতেই ওরা আবারও হেসে অরু বলল,
— ” দেখ কী পসেজিভ। জেলাসি দেখেছিস? এ আবার জিজুর বদনাম করছে।-
আমি কথা ঘোরাতে বললাম,
— ” এই ক্লাসের দেরী হচ্ছেনা? চল?”
এরপর ক্লাস শেষে বাইরে আসতেই ওরা সবাই বুয়েট ক্যাম্পাস ঘুরে দেখতে যাবে বলে ঠিক করল। প্রথমে রাজি না হলেও পরে ভাবলাম একটু সময়ই তো লাগবে ঘুরে আসি। বুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়ে ভালোই লাগলো। এর আগে আসিনি। ছোট হলেও বেশ সুন্দর করে সাজানো সব। হাটতে হাটতে অরু বলল,
— ” নবীন বরণের কথা মনে আছে তো?”
ইশু বলল,
— ” হ্যাঁ এই ফ্রাই ডে তেই তো। অনি তুই আসবি তো?”
আমি একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বললাম,
— ” যদি আমার বর মহাশয় আসতে দেয়।”
ওরা কিছু বলবে হঠাৎ করেই কেউ পেছন থেকে ডেকে উঠল,
— ” হেই অনিমা?”
আমি ভ্রু কুচকে পেছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। এ তো সেই কূপ না মানে রূপ। আমি বিড়বিড়িয়ে ওনার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতে করতে রূপ এসে বললেন,
— ” কেমন আছো?”
আমি মেকি হেসে বললাম,
— ” ভালো।”
— ” ওরা তোমার ফ্রেন্ড বুঝি? ইসরাতের সাথে তো কথা হয়েছে। তোমাদের পরিচয়টা বলো?”
হ্যাংলার মতো জেচে সবার সাথে আলাপ করে বলল,
— ” কোথায় আছো এখন?”
আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম,
— ” ঢাকা মেডিকেল।”
রূপ হেসে বললেন,
— ” ওয়াও গ্রেট। বাই দা ওয়ে তোমাকে তো এমনিতেই সুন্দর লাগে। হোয়াইট এপ্রোনে নিশ্চয়ই আরও ভালো লাগে। একটু পরে দেখাবে?”
— ” কেনো? এতো সুন্দর লাগা দিয়ে কী হবে? ওর জন্যে পাত্র ঠিক করবি?”
আমি চমকে পেছনে তাকিয়ে দেখি আদ্রিয়ান পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। উনি এখানে কীকরে? তবে ওনার ঠোঁটে হালকা হাসি থাকলেও চোখ দেখেই বুঝে গেছি খুব রেগে গেছেন। রূপ হেসে বলল,
— ” আরে এতো খোজাখুজির কী আছে। যখন আমার মত রত্ন চোখের সামনেই থাকে।”
আমি ভয়ে চুপ করে আছি। আজ হয় এই ছেলের কপালে দুঃখ আছে নইলে আমার কারণ উনি যখন কারো ওপর রাগ ঝাড়তে না পারেন তখন সেটা আমার ওপর এসেই পরে। উনি দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
— ” তাই নাকি?”
— ” একদম। কিন্তু তুই এখানে কী করছিস?”
আদ্রিয়ান ঠান্ডা গলায় বলল,
— ” ওকে নিতে এসছিলাম।”
রূপ একটু ভেবে বলল,
— ” ওহহ আচ্ছা। ওই কী তোর ছোট বোন নাকি? সেদিন পার্টিতেও তোদের সাথে এসছিল?”
আদ্রিয়ান শক্ত কন্ঠে বলল,
— ” ও আমার..”
আদ্রিয়ান কথাটা শেষ করা আগেই কেউ পেছন থেকে রূপকে ডাকলো। রূপ বলল,
— ” আচ্ছা ভাই আসছি আজকে। আবার কথা হবে।”
আমার দিকে তাকিয়ে আলাদা করে বাই বলে চলে গেলো। আমি এবার মাথা তুলে ভয়ে ভয়ে আদ্রিয়ানের দিকে তাকালাম। আদ্রিয়ান চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। অরু ওরা একে ওপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। আমি একটা ঢোক গিলে মনে মনে বললাম ” আল্লাহ এবারের মতো বাঁচিয়ে দাও। জীবনেও আর বুয়েটে আসবো না।”
#চলবে…