কাননে ফুটিল ফুল — ১২

0
13

কাননে ফুটিল ফুল — ১২ (১৬৫০+ শব্দ)

আফরোজা বেগম প্রথমে অমত করেছিলেন ছেলের কথায়। যতই হোক, বাড়ির বড় ছেলের বিয়ে৷ তাছাড়া নৈশীরও তো একটা শখ আহ্লাদ আছে।

কিন্তু সারজিমের ইচ্ছের কথা জানার পর নৈশী অমত তো করলই না বরং প্রচন্ড খুশি হলো। আরেকবার আল্লাহর কাছে ও শুকরিয়া জানাল এরকম সুন্দর মনের একটা মানুষকে ওর সাথে মিলিয়ে দেওয়ার জন্য।

আন্দালিবকে আগেই কিছু জানাতে বারণ করেছিল নৈশী। তাকে শুধু জানানো হয়েছিল সারজিমদের বাসায় রাতে দাওয়াত। অফিসিয়াল কিছু কাজের চাপ থাকায় ওর যেতে খানিকটা দেরি হলো। সন্ধ্যার পরপরই নায়কের মতো সেজেগুজে সারজিমদের বাসায় উপস্থিত হলো সে। সবচেয়ে বড় চমকটা পেল সে বাসায় ঢোকার আগেই সিঁড়ির সামনে। রায়হান এগিয়ে এসে বলল, “কি ব্যাপার হে! বেস্ট ফ্রেন্ডের বিয়ে, অথচ তোমার কোনো খোঁজ নেই। এত দেরি করলে চলে?”

“কার বিয়ে? সারজিমের!”

“সেকী! তুমি জানো না? বাদ মাগরিবই তো হয়ে গেল বিয়েটা। এখন নতুন বর বউকে পাশাপাশি বসিয়ে মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে। যাও, গিয়ে দেখা করে আসো।”

আন্দালিব ছুটে গেল বসার ঘরে। প্রথমেই যে দৃশ্যটা চোখের সামনে ভেসে উঠল, সেটা দেখার পর ওর পৃথিবীটা দুলছিল। সারজিম নৈশীর কানের কাছে মুখ নিয়ে কিছু একটা বলছে আর নৈশী লাজুক হাসছে। সারজিম ওকে দেখে বলল,
“আন্দালিব, এসেছিস। এতো লেট কেন করলি? তোকে তো বলেছিলাম বিকেলেই চলে আসতে।”

সব রকম পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নেওয়া আন্দালিবও আজ খেই হারিয়ে ফেলল। সারজিমের কথার প্রত্যুত্তরে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল শুধু। পরক্ষনেই তার চোখ গেল নৈশীর দিকে। লাল টকটকে বেনারসিতে কী অপূর্ব লাগছে ওকে, ফর্সা মেহেদিরাঙা দুখানা হাত প্রমাণ দিচ্ছে, সে নববধূ। খুব সাধারন সাজসজ্জা, তারপরেও আজ এই আসরে এক টুকরো চাঁদের মতো উজ্জ্বল আলোয় দীপ্তিমান হয়ে আছে নৈশী। নৈশী সেজেছে তবে সেটা শুধু সারজিমের জন্য। আজকের রাতে নিজের এই সবটুকু সৌন্দর্য সে উৎসর্গ করবে সারজিমকে। অথচ এরকম একটা রাত ওর সাথে থাকার কথা ছিল নৈশীর। এই যে নৈশীর সাধারন অথচ বিধ্বংসী সাজ, এই নতুন এক নৈশীকে নিজের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে ওর সবটুকু আদ্রতা শুষে নিতে ইচ্ছে করছিল আন্দালিবের। কিন্তু সেটা আর সম্ভব না। আন্দালিবের ইচ্ছে হলো সব ভেঙেচুরে আজকের এই সব আয়োজন নস্যাৎ করে দিতে। পা থেকে মাথা অব্দি ক্রোধ আর প্রতিহিংসা নিয়ে জ্বলজ্বলে দুটো চোখে শুধু ওদের দুজনকে দেখতে থাকল আন্দালিব।

সারজিমও অন্ধ নয়। আন্দালিব যে ওই নোংরা দৃষ্টি দিয়ে এখনও নৈশীকে গিলে খেতে চাইছে সেটা ওর তাকানোর ভঙ্গি দেখেই বোঝা গেল। নৈশীও আঁচ করতে পারল ব্যাপারটা৷ কিশোরী বধূর মতো লাজুক আচরণ ওর নেচারের সাথে যায় না। সহজভাবে নৈশী বলল,
“ফটোগ্রাফির সেশন তো শেষ হলো। আমি তাহলে এখন উঠছি। অতিথিদের রাতের খাবারের তো ব্যবস্থা করতে হবে। খালামনি ওদিকটা একা সামলে উঠতে পারবে না।”

নৈশী উঠে চলে গেল আন্দালিবের চোখের আড়ালে। তার কিছুক্ষন পরেই সাব্বির একটা প্লেটে মিষ্টি নিয়ে হাজির হলো আন্দালিবের সামনে,
“আন্দালিব ভাই, নৈশী আপু স্যরি ভাবি তোমার জন্য মিষ্টি পাঠিয়েছে। এদিকে সবার বিয়ের মিষ্টি খাওয়া শেষ। তুমিই লেট করে এসেছে শুধু।”

আন্দালিব সাব্বিরের দিকে তাকিয়ে বলল, “নিয়ে যা, খাব না।”

সাব্বির সাথে সাথেই প্লেট সরিয়ে নিল। প্লেট থেকে একটা মিষ্টি তুলে নিজের মুখে দিয়ে বলল, “ওকে, তোমার ভাগেরটাও তাহলে আমিই খেয়ে নিচ্ছি।”

আন্দালিব সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। কাজে ব্যস্ত নৈশীর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,
“তোমাকে এখনও কংগ্রাচুলেট করা হয়নি। তাই এলাম। তুমি বলেছিলে, আমাকে সারপ্রাইজ দেবে। সেই সারপ্রাইজটা যে এভাবে পাবো সেটা ভাবিনি।”

“আপনাকে আসল সারপ্রাইজটা তো এখনও দেওয়াই হয়নি আন্দালিব ভাই।”

“এর চেয়েও বড় সারপ্রাইজ দেবে? ওয়েট, তুমি দেশে ফিরে এই বাসায় মানে সারজিমের কাছে এসে উঠেছ প্রায় দুই মাস হতে চলল। এখন নিশ্চই এটা বলবে না যে তুমি প্রেগন্যান্ট?”

নৈশীর ইচ্ছে করল পায়ের জুতো খুলে আন্দালিবের নোংরা মুখের উপর কয়েক ঘা বসিয়ে দিতে। প্রথম কথাটুকু বলে আন্দালিব সাথে সাথেই আবার বলে উঠল, “ডোন্ট মাইন্ড নৈশী, একটু ফান করলাম তোমার সাথে।”

“ইটস ওকে, আন্দালিব ভাই। আমি তো জানি আপনি মানুষটাই আপাদমস্তক ফানি। চাইলেও সিরিয়াস হতে পারেন না। এনিওয়ে, আমার সারপ্রাইজটা এর চেয়েও বেশি চমকপ্রদ হবে আপনার জন্য। এমন সারপ্রাইজ যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। যাই হোক, পরে কথা হবে আপনার সাথে, এখন কিছুটা বিজি দেখতেই পাচ্ছেন।”

নৈশী পাশ কাটিয়ে চলে গেল। বেশিরভাগ অতিথিরাই বিদায় নিল রাতের খাবার খেয়ে। অল্প কিছু আত্মীয়স্বজন থেকে গেল।

সারজিম ওর কথা রেখেছে। নৈশীকে ও বলেছিল আজকের রাতের মধ্যে ওদের সম্পর্কটাকে নতুন একটা নাম দেবে। সেদিন নৈশীর জন্য সারজিমের বলা কথাগুলো ছিল স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা। আর আজ সেই কথাগুলো হয়ে গেছে ধ্রুব সত্য। সব ব্যস্ততা শেষে নৈশীকে সারজিমের রুমে নেওয়া হলো। সারজিমের রুমে এর আগে হাতে গোনা কয়েকবার এসেছিল নৈশী, তারপরেও আজ সেই রুমটাকে অচেনা বলে মনে হলো ওর। পুরো রুমে ফুলের সমারোহ। গোলাপ, জারবেরা আর রজনীগন্ধার সুবাসে ম-ম করছে চারপাশ।

নৈশীকে রুমে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে সারজিমও রুমে গেল। রুমে ঢুকে সালাম দিল ও। নৈশীর থেকে সালামের জবাব পেয়ে প্রশ্ন করল,
“কেমন আছো, নৈশী?”

“ভালো।” উত্তর দিয়ে হেসে ফেলল ও।
হাসল সারজিমও, “নতুন শ্বশুড়বাড়ি কেমন লাগছে, ভেবেছিলাম এরকম প্রশ্নের বাহানায় স্ত্রীর সাথে প্রথম আলাপ শুরু করব। কিন্তু তুমি যেহেতু আগে থেকেই এখানে থাকছ, তাই ওই প্রশ্নটা অবান্তর। এই মুহূর্তে তাই এরচেয়ে ভালো কিছু মাথায় এলো না।”

“বুঝতে পারছি। প্রথমবার বিয়ে করেছেন তো। তাই হয়তো নার্ভাস একটু। পরেরবার ঠিক হয়ে যাবে।”

“মানে কী? আমি কি বছর বছর বিয়ে করব নাকি? এত সুন্দরী বউ আমার। বাইরের দিকে তাকানোর সময় কই।”

নৈশী চোখ বড় বড় করে তাকাল সারজিমের দিকে। বিষ্ময় ঝরে পড়ল ওর কন্ঠে, “ও মাই গড! আপনি ফ্লার্টও করতে পারেন? অথচ এতদিন আমার মনে হতো, আপনি আপাদমস্তক একজন রসকষহীন মানুষ।”

“আশ্চর্য!নিজের বউয়ের সাথে ফ্লার্ট করতে যাব কেন? আমি তো নিজের বউয়ের প্রশংসা করছি। আর ছেলেরা সাধারনত ফ্লার্ট করে মেয়েদের ইম্প্রেস করার জন্য। তোমাকে কি আমার ইম্প্রেস করার দরকার আছে। তুমি তো আগে থেকেই ইমপ্রেসড হয়ে আছো। তাছাড়া এসব ফ্লার্ট করা আমার নেচারের সাথে যায় না। বিশেষ কিছু চরিত্রের ছেলে থাকে যারা এসব করে। যেমন ধরো আন্দালিব।”

নৈশী অনুধাবন করল সারজিমের বলা প্রত্যেকটা কথা সত্যি। সারজিম ফ্লার্ট করার মতো ছেলেই নয়। নৈশী নিজেই তার বাস্তব প্রমাণ। মনে মনে পছন্দ করা স্বত্বেও কখনো সারজিম একদিন কথা বলেনি ওর সাথে, নৈশী দেশে ফেরার পরেও খুব কম কথা হয়েছে ওর সাথে সারজিমের। যেটুকু না বললেই নয়। চাইলেই অনেক বাহানা ছিল কথা বলার। কিন্তু সারজিম সেটা করেনি। অথচ এখন বিয়ের পরে কয়েক ঘন্টার মধ্যে সারজিমের কথার ধরন বদলে গেছে। সারজিমের কথা শুনে এখন মনেই হচ্ছে না ও গম্ভীর প্রকৃতির৷ বরং মনে হচ্ছে নৈশীর সাথে ওর যুগ যুগের হৃদয়ের বন্ধন।

“আচ্ছা নৈশী, এখন আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দেবে?”

“কী প্রশ্ন?”
“সেদিন বলেছিলে আমাকে বিয়ে করতে চাওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে তোমার। তারমধ্যে একটা, তুমি আন্দালিবকে শিক্ষা দিতে চাও তাই, আরেকটা আমি তোমাকে পছন্দ করি তাই। এছাড়া আর কী কী কারণ ছিল? বলেছিল আমার সাথে বিয়েটা হলে সেই কারণ তুমি আমাকে বলবে।”
নৈশী হেসে বলল, “আপনি এখনও মনে রেখেছেন?”

“অবশ্যই। এখন কি বলা যাবে সেই বিশেষ কারন।”
নৈশী বলতে লাগল,
“তখন সবে টিনেজার্স আমি। মাঝমধ্যেই কথা হতো খালামনি আর সাব্বিরের সাথে৷ তার দুজন আমার সাথে কথা বললেও শুধু একজন বলত না। স্বভাবতই আমার কৌতুহল জন্মালো তার প্রতি। তারপর সেই কৌতুহল কখন জানি ভালোলাগায় বদলে গেল। আমি স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম তাকে নিয়ে।

সাব্বির মাঝেমধ্যে ফ্যামিলি ফটো পাঠাতো। আমি সেই ফটো থেকে বিশেষ একজনেরটুকু ক্রপ কর আমার ফোনে সেভ করা রাখতাম। কিন্তু আমি কিছুটা জেদি ছিলাম, যেহেতু সে আমার সাথে সেধে কখনও কথা বলত না, তাই আমিও কখনও নিজে থেকে তার সাথে কথা বলতে যাইনি। সাব্বির ফোন করলেই কথার ছলে তার সম্পর্কে জানতে চাইতাম৷ সাব্বির আমাকে বলত সেই মানুষটা সম্পর্কে৷ প্রচন্ড কনজারভেটিভ মাইন্ডের সে। উশৃঙ্খল জীবনযাপন পছন্দ করে না একদম। মানুষটা গম্ভীর প্রকৃতির, রাগী। কথায় কথায় সাব্বিরকে প্রশ্ন করতাম, বড় ভাইকে বিয়ে কবে করাবে। সাব্বির বলতো, তার ভাইয়ের মনের মতো মেয়ে নাকি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নিজের কিছু কাছের মানুষ ছাড়া নরমালি সে মেয়েদের সাথে কথা বলে না। বিশেষ করে এই আধুনিক যুগের মেয়েদের সে একদম পছন্দ করে না। সে চায় একজন রক্ষনশীল, সংসারী মেয়ে বিয়ে করতে। মনে মনে তার প্রতি ভালোলাগা আরও বাড়ল। সত্যি বলতে মেয়েরা এরকম ব্যক্তিত্ববান পুরুষই তো চায় নিজের লাইফ পার্টনার হিসেবে।

তারপরে ভাবতে ভাবতে অনেককিছুই এলো মাথায়। সে আধুনিক সভ্যতায় অভ্যস্ত মেয়েদের পছন্দ করে না অথচ আমি শুরু থেকেই ওয়েস্টার্ন কালচারে বেড়ে ওঠা একটা মেয়ে। যদিও মায়ের শাসন, এবং মুসলিম ফ্যামিলিতে বিলং করি বলে অন্যদের মতো বেপরোয়া হয়ে উঠতে আমার বিবেকে বাধত। তবুও দূর থেকে একজন মানুষের মাথায় এটাই আসবে, আমি বিদেশী সভ্যতায় বেড়ে ওঠা একটা মেয়ে। প্রশ্ন এলো আমার মনে, তাহলে কি এজন্যই সে আমার সাথে কথা বলে না? এই প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে একটা ব্যাখ্যায় এসে দাঁড়াল। আমি নিজেকে বোঝালাম, সে তোকে পছন্দ করে না নৈশী। তাই তুইও তাকে ভুলে যা। কিন্তু মন শুনল না সে কথা৷ তার প্রতি দুর্বলতা বাড়তে লাগল।

একে তো নানাবাড়ির প্রতি একটা রাগ ছিল।তারপর আবার আমি যাকে চাইছি সে আমার দিকে ফিরেও তাকাছে না। এই অভিমানে তো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম দেশেই ফিরব না। মায়ের মৃত্যুর পর অবশ্য সিদ্ধান্ত বদলেছিলাম।

কয়েকটা বছর কাটল এভাবে৷ ম্যাচুরিটি এলো আমার মধ্যে। যদিও তখনও সেই মানুষটার কথা ভাবলেই আমার হার্টবিট বেড়ে যেত, তবুও আমি নিজেকে বোঝালাম, ওটা শুধুই একটি টিনেজার্স মেয়ের ইনফ্যাচুয়েশন ছিল। তারপর সময় গড়াল। একে একে মা, বাবা দুজনকেই হারালাম। যেহেতু আমি মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম যে আমাকে সে অপছন্দ করে তাই নিজের অনুভূতিগুলো সেধে প্রকাশ করতে চাই নি কখনও।

দেশে ফিরে জলদি বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। এর পিছনে দুটো মেজর কারণ ছিল। তার একটা কারণ এটাই। আমি ভেবেছিলাম নতুন কারও সাথে বাঁধা পড়লে আমি হয়তো মুভ অন করতে পারব। সেজন্যই আন্দালিব ভাইয়ের দেয়া প্রস্তাবটা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে আসতে চাইছিলাম। আর একটা কারণ ছিল বাবা। বাবা চেয়েছিল মারা যাওয়ার আগে আমার বিয়েটা দিয়ে যেতে। সময় স্বল্পতার জন্য সে সেটা পারেনি৷ বাবা এটাও বলে গিয়েছিল যদি সম্ভব হয় দেশে ফিরে আগে বিয়ে করে যেন তার আর মায়ের কবর দেখতে যাই৷ আমি বাবার সেই কথাটাও রাখতে চেয়েছিলাম।

আন্দালিব ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের পর প্রথমে মনে হলো মানুষটা খারাপ হবে না আমার জন্য। কিন্তু কিছু বিষয়ে সন্দেহ হওয়ায় আমি পিছিয়ে গিয়েছিলাম। তাছাড়া তার কিছু আচরণে প্রচন্ড স্বার্থপর বলে মনে হয়েছিল তাকে আমার। এই যেমন আপনি দেশে ফেরার দুদিন আগে আপনার অনুপুস্থিতিতে সাব্বিরকেও কিছু না বলে শুধু আমাকে ইনভাইট করল তাদের বাসার মস্ত পার্টিতে। অথচ সাব্বিরের কথানুযায়ী আপনাদের বাসার সামান্য আয়োজনটুকু হলেও আন্দালিব ভাই তাতে উপস্থিত থাকেন।

সব মিলিয়ে আমি যখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম তখন আমি আল্লাহর কাছেই এর সমাধান চাইলাম। তিনি আমাকে নিরাশ করেননি। আন্দালিব ভাইয়ের ভালোমানুষীর মুখোশটা আস্তে আস্তে খসে পড়ছিল আমার সামনে। এরমধ্যেই আন্দালিব ভাইয়ের সাথে আপনার সেদিন দুপুরের কনভার্সেশন শুনে ফেললাম৷ সেদিনই সিদ্ধান্ত নিলাম, সরাসরি আপনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেব। তারপর যা হবে সেটা দেখা যাবে।

এইতো, এটাই ছিল সবচেয়ে বড় কারণ। কিন্তু আপনি একটা কথা বলুন তো আমাকে। আপনি আমাকে মনে মনে পছন্দ করলে সেটা আরও আগেই কেন বলে দিলেন না? তাহলে ভুল মানুষের পিছনে দৌড়ে আমার এত সময় অপচয় হতো না আর।”

নৈশীর কথা শুনতে শুনতে কোথাও একটা হারিয়ে যাচ্ছিল সারজিম। শেষের প্রশ্নটা শুনে আবার হুঁশ ফিরল ওর। কথার পিঠে কথা জমে ওর মধ্যেও তো পাহাড় তৈরি হয়েছে।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here