#অব্যক্ত প্রেমাসুখ
#আদ্রিতা নিশি
।২।
[ অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ ]
–“ বিয়ের আসর থেকে কোথায় পালিয়ে গিয়েছিলে? আমাদের মান সম্মানের কথা একবারও ভাবলে না? ”
আহিয়াদ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল বধূবেশে সামনে নত মস্তকে দাঁড়িয়ে থাকা আযহার দিকে। তার অদ্ভুত লাগছে এটা ভেবে বিয়ের আসর থেকে কনে পালিয়ে সুই সাইড করতে গিয়েছিলো।তারমানে বিয়ে হয়নি!মীরাতের চক্ষুদ্বয় ছলছল করে উঠলো। আসলেই কি সে মান সম্মান ক্ষুণ্ন করেছে?হয়তো সকলের চোখে সে অপ রাধী হয়ে গেছে।কিন্তু এ ছাড়া তার কিছু করার ছিলো না। ঠকেছে দেখে আত্ন হ ত্যা করতে যাওয়া উচিত হয়নি। এটাই মস্ত বড় ভুল হয়েছে।
মুন্সি সাহেব রে গে বললেন–“ তুমি জানো! তোমার জন্য আজ তোমার পরিবারের সকলে অপমা নিত হতে হয়েছে। আমিও অপ মানিত হয়েছি।গ্রামের সকলে তোমায় নিয়ে এখন নানা কথা রটাচ্ছে। এতোটা বোকার মতো কাজ করলে কীভাবে?
আফিয়া বেগম পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অনুতপ্তের স্বরে বললেন–“ চাচা আমার মেয়েটা ভুল করে ফেলেছে। আমার মন বলছে হয়তো কিছু হয়েছে সেই কারণে বিয়ে করতে চাই নি।তাই এমন কান্ড ঘটিয়েছে।”
–“ তোমার মেয়ে ছোট নেই আফিয়া। সে মস্ত বড় ভুল করেছে। গ্রামের লোকজন তুমি আর তোমার মেয়েকে শান্তিতে থাকতে দিবে না। এখন আসতে পারো তোমরা।”
আবসার, আসাদ,লিমা বেগম আর আরিশা নিশ্চুপ হয়ে আছে। তাদের এই মুহুর্তে কিছু বলার ভাষা নেই। আযহা কাজই এমন করেছে।আহিয়াদ ঠান্ডা মাথায় সবটা বোঝার চেষ্টা করছে।তার মন বলছে হয়তো বড়সড় গন্ডগোল হয়েছে সেই কারণে মেয়েটা বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে ছিলো।
মীরাত অশ্রুসিক্ত নয়নে মুন্সি সাহেবের দিকে তাকালো।সে বুঝতে পেরেছে মানুষটি তার ওপর রে গে আছে।এটাই হওয়ার কথা। সে চোখ মুছে অপ রাধীর ন্যায় মুন্সি সাহেবকে বললো–“ দাদাজান আমার ভুল হয়েছে। মাফ করে দাও।আমি আর কখনো এমন কোনো কাজ করবো না যার কারণে তোমরা অপ মানিত হও। আমি কেনো বিয়ের আসর থেকে চলে গেছিলাম আবার ফিরেও এসেছি। সবটা বলবো তোমায় একটু সময় দাও।
–“তোমার কোনো কথা শুনতে চাই না আমি।আফিয়া তোমার মেয়েকে নিয়ে যাও আমার সামনে থেকে।”
মীরাত করুণ চোখে তাকালো।দাদাজান কখনো তার সাথে রুঢ় গলায় কথা বলেনি অথচ আজ বাজে পরিস্থিতির জন্য এভাবে কথা বলছে। তার ভীষণ ক ষ্ট হচ্ছে। কীভাবে বোঝাবে তার হৃদয়ের কথা? ভাবতে অশ্রু গাল বেয়ে গড়িয়ে পরলো।
আহিয়াদ আযহার অশ্রুসিক্ত চোখ দেখে কিছুটা মায়া হলো।একপাক্ষিক ঘটনায় সবটা বিচার করা যায় না। হয়তো গোপনে আরও কাহিনি আছে। সে মুন্সি সাহেবের উদ্দেশ্যে শান্ত কন্ঠে বললো–“ নানাজান আপনি এতোটা হাইপার হবেন না।চোখের সামনে যা ঘটেছে তা দিয়ে পুরো কাহিনি বিচার করা যায় না। মেয়েটা এখনো বিধ্ব স্ত। সে না হয় নিজেকে একটু সামলে নিক তারপর সবটা ক্লিয়ার করবে। অন্তত কিছুটা সময় মেয়েটাকে দেন যেনো সে আসল ঘটনা বলতে পারে।
মুন্সি সাহেব নাতীর কথার মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করলেন। কিছুটা সময় পর বললেন–“ বিয়ের আসর থেকে কনে পালানো এটা মোটেও ভালো কিছু নয়। তবুও কেনো পালিয়েছিলে দুই দিন সময় দিচ্ছি তার মধ্যে কারণটা জানতে চাই। এই প্রথম কেউ আমার সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। আর যেনো এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।”
মুন্সি সাহেব আর এক মুহুর্ত সেখানে দাঁড়ালেন না।রা গে গজগজ করতে করতে নিজ রুমের উদ্দেশ্যে চলে গেলেন।আবসার আর আসাদ ও নিজ নিজ রুমের দিকে পা বাড়ালো। লিমা বেগম আর আরিশা আযহার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
লিমা বেগম আযহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন–“ এমন কাজ কেনো করলি রে মা! মানুষ তো ছিঃ ছিঃ করছে। একবার আমাদের বলতে পারতি তোর বিয়েতে মত নেই। তাহলে তো বিয়ে দিতাম না।”
মীরাত নিরুত্তর। নির্জীব হয়ে তাকিয়ে আছে মেঝেতে। অনুভূতিশূন্য হয়ে মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
লিমা বেগম কোনো হেলদোল না দেখে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে হাত নামিয়ে আফিয়া বেগমকে বললেন–“ আযহা নিয়ে বাড়ি যাও। তোমার ওই দেবর আর দেবরের বউয়ের থেকে মেয়েকে আগলে রেখো।ওগুলো প শুর দল।”
আফিয়া বেগম মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো। তিনি মীরাতের হাত ধরে থমথমে মুখে বললেন–“চল বাড়িতে যাবি।”
আফিয়া বেগম মেয়েকে টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলেন।মীরাত টাল সামলাতে পারছেনা। শাড়ির সাথে বারবার পা বেঁধে যাচ্ছে।হাত শক্ত করে ধরায় কাঁচের চুড়িতে প্রচন্ড ব্য থা লাগছে তার। জ্বলু নি অনুভব হচ্ছে। সে বুঝতে পেরেছে তার মা ভীষণ রে গে আছে।আযহা দাঁতে দাঁত চেপে ধরে ব্য থা সহ্য করতে লাগলো।
আযহাকে এমন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া মোটেও পছন্দ হলো না আহিয়াদের। আফিয়া বেগম যে আযহার হাত শক্ত করে ধরেছে তা দৃষ্টি গোচর হয়নি আহিয়াদের কাছে। সে বলে উঠলো–“আন্টি আযহার হাতটা স্বাভাবিক ভাবে ধরুন আর আস্তে ধীরে নিয়ে যান। ”
আফিয়া বেগম থেমে গেলেন। অপরিচিত কারো কন্ঠস্বর শুনে পেছনের দিকে তাকালেন। তিনি এতোক্ষণে খেয়াল করলো যুবকটিকে। কিছুটা চেনাচেনা মনে হলো তার কাছে। আহিয়াদ তাদের দিকেই কাঠিন্য মুখে তাকিয়ে আছে।মীরাত ও ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো মানুষটির দিকে।
আরিশা দৌড়ে গিয়ে আফিয়া বেগমের হাত থেকে মীরাতের হাত ছাড়িয়ে দিলো। তখনি কাঁচের চুড়ির ভাঙা অংশ মেঝেতে পরে ঝনঝনিয়ে বেজে উঠলো। হাত অনেকটা কে টে গেছে। র ক্তের ফোটা গুলো হাত বেয়ে মেঝেতে পরতে পরছে। আরিশা ভ য় পেয়ে গেলো।হাতের অনেকটা অংশ র ক্তে ভিজে গেছে। সে ভয়া র্ত গলায় বলে উঠলো –“ র ক্ত। হাত কেটে গেছে।”
লিমা বেগম উদ্বিগ্ন হয়ে ছুটে গেলেন। দেখলেন বেশ অনেকটায় কেটে গেছে। আহিয়াদও কিছুটা উদ্বেগ নিয়ে এগিয়ে গেলো। আযহার হাতের ক্ষ তস্থান পর্যবেক্ষণ করে বললো–“ আরিশা ফার্স্ট এইড বক্স আছে?”
–“ আছে। ”
–“ দ্রুত নিয়ে আয়।”
আরিশা দৌড়ে গেলো ফার্স্টএইড বক্স নিয়ে আসতে। আফিয়া বেগম বিচলিত হয়ে মেয়ের হাত দেখতে ব্যস্ত হয়ে পরলেন। এখনো র ক্ত ঝরছে।
আযহা নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো। সে মলিন হেসে বললো– “ আমার বাহিরের ক্ষ ত তোমায় বিচলিত করে তুললো অথচ আমার মনের ক্ষ ত দেখেও তুমি ছিলে প্রতিক্রিয়াহীন। এই সামান্য ক্ষ ত আমার মনের ক্ষ তের সামনে কিছুই না। কিন্তু তুমি আমায় বুঝলেনা মা ।”
মীরাত আর দেরী করলো না সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো।সবকিছু এলোমেলো লাগছে।দম আঁটকে আসছে। দুর্বল পা ফেলে সদর দরজা পেরিয়ে চলে গেলো সে। শাড়ির লাল আঁচল জমিনের বক্ষে লুটোপুটি খাচ্ছে।
আহিয়াদ স্তম্ভিত হয়ে চেয়ে রইল আযহার দিকে।
★★
রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে। মীরাত এখনো ঘুমিয়ে আছে। গতরাতে চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে এসে শাড়ি পাল্টে বাড়িতে পরা একটা থ্রি পিস পরে চুপচাপ শুয়ে পরেছে। কারো সাথে এসে থেকে কথা বলেনি। সারারাত ঘুম না আসলেও ফজরের আযানের পর সে ঘুমিয়েছে। আফিয়া বেগমও মেয়ের ওপর রে গে আছেন। তাই একবারও খোঁজ ও নেননি। হঠাৎ কারো চিৎকারে মীরাতের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ধরফরিয়ে উঠে বসলো বিছানায়।দরজা ধাক্কাচ্ছে একজন।বাহির হতে ভেসে আসছে অশ্রাব্য ভাষা।
–“এই নবাবজাদি। আর কতোকক্ষণ ঘুমাবি। সকাল হয়েছে তোর রাণীর মতো মুখ খানা দর্শন করিয়ে উদ্ধার কর আমাদের।এতো কিছু ঘটিয়ে এখনো ঘুম আসে কি করে।এই তাড়াতাড়ি দরজা খোল। নাহলে দরজা ভেঙে ফেলবো কিন্তু। ”
মীরাতের বিরক্তিতে চোখ কুঁচকে এলো। অস হ্য মাথা ব্য থা করছে আবার সকাল সকাল চাচীর বাজখাঁই আওয়াজ। সব মিলিয়ে দমবন্ধকর পরিবেশ। সে গায়ে সুন্দর ভাবে ওড়না জড়িয়ে নিলো। বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলে দিলো।
তারা বেগম মীরাতকে দেখে জ্বলে উঠলো।মুখ বেঁকিয়ে বললো–“ কাল মান সম্মান ডুবিয়ে সকাল দশটা পর্যন্ত ঘুমানো হচ্ছে? নবাবজাদি কোথাকার। এই তোর লজ্জা সরম নেই? পালিয়ে গিয়ে আবার নাচতে নাচতে চলে আসলি ম রতে পারলি না?”
আফিয়া বেগম মেয়ের অপমান সহ্য করতে পারলো না। তিনি বললেন –“ তুমি কিন্তু বেশী কথা বলছো। ”
–“আপনি চুপ করুন ভাবি।মেয়েকে তো কোনোদিন শাসন করেননি। তাইতো উচ্ছন্নে গেছে। গ্রামের মানুষ তো বলে বেড়াচ্ছে কারো সাথে সম্পর্ক ছিলো তাই পালিয়েছিলো। ওই ছেলে বিয়ে করবে না তাই আবার ফিরে এসেছে।”
–“আমি জানি এমন কিছু হয়নি। তুমি একটু চুপ করো এসব কথা সহ্য হচ্ছে না।”
তারা বেগম রে গে চলে গেলো।দুই মা মেয়ের কাহিনী দেখলে গা জ্ব লে যায়। আরোও ঝগড়া করতো কিন্তু ইচ্ছা নেই এখন।
মীরাত ঘর থেকে বেড়িয়ে কলপাড়ে হাত মুখ ধুতে গেলো। তার চাচী সবসময় বাজে ব্যবহার করে। নিয়মমতো আজকের দিনও বাদ যায়নি। পোড়া কপাল তার। সবদিক দিয়েই সে অভাগী।
আরিশা একতলা বিশিষ্ট দালান বাড়িতে ঢুকলো। ভেতরে প্রবেশ করতেই আফিয়া বেগমের সাথে দেখা হয়ে গেলো তার। এতো সকালে আরিশাকে দেখে আফিয়া বেগম অবাক হলেন।
আরিশা একটু হেসে জিজ্ঞেস করলো –“ চাচী মীরাত কোথায়?”
–“কল পাড়ে হাত মুখ ধুতে গেছে। তুই এতো সকালে এলি যে কোনো দরকার আছে?।”
–“ হুমম। মীরাতকে দাদাজান ডেকেছে।”
–“কল পাড় থেকে আসলে কথা বলে দেখ যায় নাকি। আটটা বেজে গেছে রান্না হয়নি এখনো। আমি রান্না করতে গেলাম তুই ঘরে গিয়ে বস।”
–“আচ্ছা।”
★★
মীরাত চেয়ারম্যান বাড়িতে এসেছে একটু আগে। সোফায় আরিশা আর মীরাত বসে আছে। আরিশা এটা-ওটা বলে যাচ্ছে মীরাত অন্যমনষ্ক হয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে হা হু করে যাচ্ছে।
–“আরিশা নানাজান কোথায়?সকাল থেকে দেখতে পাচ্ছি না।”
আহিয়াদ আরও কিছু বলবে তার আগেই চোখ পরলো আরিশার পাশে বসে থাকা আযহার দিকে। তখনই চুপ হয়ে গেলো সে। মীরাত অল্প পরিচিত কন্ঠস্বর শুনেই অন্যমনষ্কভাব কাটিয়ে সিঁড়ির দিকে তাকালো। দেখলো টাউজার আর টি শার্ট পরিহিত আহিয়াদকে আর তার পাশে গাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলো সে সেই মেয়েটি। দুজনে পাশাপাশি নেমে আসছে।সে চোখ সরিয়ে নিলো।অস্বস্তি হতে লাগলো তার। আহিয়াদ আর জেনি এসে সোফায় বসলো।
আরিশা উত্তর দিলো–দাদাজান তো রফিক চাচার সাথে জরুরী একটা কাজে গিয়েছে। ”
আহিয়াদ বললো–“ ওহ আচ্ছা।”
লিমা বেগম খাবার টেবিলে সব খাবার সাজিয়ে সবাইকে ডাকতে এসেছেন। তিনি বললেন–“ আহিয়াদ, জেনি, আরিশা আর আযহা ব্রেকফাস্ট করে নাও।
আহিয়াদ বললো–“ বড় মামা, ছোট মামা আসুক আগে তারপর একসাথে খাচ্ছি।
মীরাত কি করবে বুঝতে পারছেনা। মেহমানরা এসেছে তাদের সাথে কীভাবে খাবে। তার বুঝতে বাকী রইল না লিমা বেগম দাদাজানের নাম দিয়ে সকালে খাওয়ানোর জন্য ডেকে এনেছে। হয়তো বুঝতে পেরেছে আজ সকালে তার কপালে খাবার জুটতো না। আর এভাবে কতোদিন চলবে? মীরাত সোফায় বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলো। সে ইতস্ততভাব নিয়ে লিমা বেগমকে বললে–“ চাচী আমি বাড়ি থেকে খেয়ে এসেছি।আমি এখন খাবো না।বাড়িতে যাচ্ছি আমি।মা হয়তো অপেক্ষা করছে। ”
মীরাত চলে যেতে নিলেই আরিশা উঠে খপ করে হাত ধরলো।মীরাত হাত মৃদু চিৎকার দিয়ে উঠলো তখনি।
আরিশা চমকে হাত ছেড়ে দিয়ে বললো –“কি হয়েছে? ”
আহিয়াদ আর জেনি সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে।
লিমা বেগম বিচলিত হয়ে বললেন – কি হলো? কোথাও লাগলো নাকী?”
মীরাত ব্য থাতুর কন্ঠে বললো–“ গতকাল রাতে কেটে গিয়েছিলো সেখানে একটু লেগেছে।”
আরিশা তড়িঘড়ি করে মীরাতের হাত দেখে রা গ দেখিয়ে বললো –“ ব্যান্ডেজ করিস নি কেনো?যদি কোনোভাবে ইনফেকশন হয়ে যায়? এতোটা কেয়ারলেস কেনো তুই বলতো?”
মীরাত ভরসার বাণী শুনিয়ে বললো–“তেমন কিছু হবে না।আমি ঠিক আছি।”
–“হয়েছে এবার চুপ কর।সবসময় নিজেকে অবহেলা করিস তুই।”
কথাটা বলেই আরিশা ফার্স্টএইড বক্স আনতে গেলো। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলো বক্স হাতে। কিন্তু সে তো ব্যান্ডেজ করতে পারে না।
আরিশা মুখ গোমড়া করে বললো–“আমি তো ব্যান্ডেজ করতে পারি না। ”
লিমা বেগম বললেন–“আমি তো পারি না।”
আরিশা একটু ভেবেই বলে উঠলো –“ আহিয়াদ ভাইয়া তুমি তো ব্যান্ডেজ করতে পারো।প্লিজ মীরাতের হাতে ব্যান্ডেজ করে দাও।”
মীরাত চোখ গরম করে আরিশার দিকে তাকালো। আরিশা তা দেখেও পাত্তা দিলো না।
লিমা বেগম সায় দিয়ে বললেন–“ আহিয়াদ মেয়েটার হাত ব্যান্ডেজ করে দাও। এই মেয়ের কোনো কিছুতেই খেয়াল নেই।”
আহিয়াদ মীরাতের অস্বস্তি ভরা মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বললো–“ঠিক আছে মামী। ”
আরিশা মীরাতকে সোফায় বসিয়ে দিলো। আহিয়াদ ফার্স্টএইড বক্সটা আরিশার হাত থেকে নিয়ে মীরাতের পাশে বসলো। মীরাত অস্বস্তিতে পরেছে। উসখুস করছে সে। আহিয়াদ মীরাতের এমন বিহেভের কারণ অনায়াসে বুঝে নিলো।
আহিয়াদ ব্যস্ত ভঙ্গিতে বললো–“ এদিকে দাও।”
মীরাত বোকার মতো বললো–“ কি দিবো?”
আহিয়াদ মীরাতের বোকাবোকা কথা শুনে গম্ভীর কণ্ঠে বললো–“তোমার হাত দাও। ”
মীরাত নিজের বোকামিতে লজ্জা পেয়ে গেলো। সে হাত বাড়িয়ে দিলো।
আহিয়াদ নিজ হাতে ব্যান্ডেজ করতে ব্যস্ত হয়ে গেলো। ব্যান্ডেজ করা শেষ করে মীরাতকে বললো–“ কারো জন্য আ ঘাত পেয়ে নিজেকে ক ষ্ট দেওয়া বোকামী ছাড়া কিছুই না।পরিস্থিতি যেমনই হোক নিজেকে ভালোবাসতে হবে।সাময়িক ক ষ্ট সহ্য করতে না পেরে নিজেকে শেষ করে দেওয়া বুদ্ধিহীনতার পরিচয়।আশা করি যতোই খারা প সময় আসুক পুনরায় যেনো একই ভুল না হয়। ”
মীরাত বিস্মিত নয়নে আহিয়াদের দিকে তাকালো।
[আজকের পর্ব কেমন হয়েছে সকলে জানাবেন।রিয়েক্ট কমেন্ট করবেন।ভুল ত্রুটি হলে মার্জনীয় দৃষ্টিতে দেখবেন।]
চলবে……