প্রিয়জন❤Part-34
Writer-Moon Hossain
আসলাম নামাজ পড়তে গিয়ে আগুনকে দেখতে পেলো। আগুন নামাজ পড়ার জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে দিচ্ছিল মসজিদে। মসজিদের ইমাম সহ আশেপাশের লোকেরা আগুনের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করলো আসলামের কাছে।
আগুন মসজিদে নামাজ পড়তে আসা সকলকে অজু করার জন্য পানি এনে দেয় নিজ হাতে চাপ কল চেপে।
আসলাম আগুনের সামনে যেতেই আগুন একবার তাকিয়ে আবার নিজের কাজে মন দিলো।
আসলাম বলল- বড়লোকের ছেলে হঠাৎ এখানে?
আগুন বলল- এখানে বড়লোক ছোটলোক বলে কেউ নেই। আমরা সবাই এক।
আগুন খুব কষ্টে রাগ চেপে রাখলো। আগুনের ইচ্ছে করছে আসলামকে তক্তা বানাতে নেহাত মসজিদ বলে। আগুন মসজিদের বাহিরে আসতেই আসলাম বলল- এখান থেকে আজকের পর যেন না দেখতে পাই।
আগুন বলল- এই জায়গা আল্লাহর। আল্লাহর জায়গা থেকে কেউ কাউকে যেতে বলতে পারেনা। এখানে সবার অধিকার আছে।
আগুন এক মূহুর্ত দাড়িয়ে না থেকে সোজা বালতি নিয়ে চাপ কল চাপতে লাগলো। আজানের সময় হয়েছে। কিছু ক্ষণ পানি তুলে সে আজান দিতে যাবে।
আসলাম বলল- কায়দার কথা খুব ভালো করো জানেন দেখছি। আপনার অভিনয় দিয়ে মোম ভুলতে পারে কিন্তু আমি ভুলব না। আপনার মতো মূর্খ ব্যাক্তির কাছ থেকে আল্লাহ তায়ালা দূরে থাকতে বলেছেন আমাদের মুমিনদের।
আগুন হেসে বলল – মুমিন কে?
-কেন আমাকে দেখে কি মনে হয়?
-তুমি মুমিন হলে ইবলিশ কে?
আগুনের সাথে থাকা কিছু ছোট লুঙ্গি পড়া ছেলেরা মুচকি মুচকি হাসতে লাগল।
আগুন আসলামের সামনে এসে চোখ বন্ধ করে আবার খুলে বলল- দেখ আসলাম আমি আগের আগুন খান নই। এখন আমি আনুশকা ইয়াসমিন মোম নামের একজন দ্বীনদার মেয়ের স্বামী। আমি ওর যোগ্য কিনা জানিনা বাট চেষ্টা করছি আল্লাহর পথে আসার। তুমি আমার জান, আমার প্রাণ, আমার প্রিয়তমার গায়ে হাত দিয়েছো। আমার শরীরে এখনো রক্ত গরম হয়ে আছে। তুমি একজন বিবাহিতা তার উপর পর্দাশীল একজন দ্বীনদার মেয়েকে স্পর্শ করতে পারো না। তুমি ভালো করে জান ও আমাকে আর আমি ওকে ভালোবাসি। আমরা দুজন দুটি শরীরের হলেও এক আত্মা, এক প্রাণ। আমি ওর এতোটুকুও অসম্মান সহ্য করিনা আর সেখানে তুমি…..।
তুমি আমাদের মাঝে এসো না দয়া করে প্লিজজজ।
আসলাম বলল- বিবাহিতা কে? মোমের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই মোমের উপর আমার অধিকার। তোমাদের বিয়ে হলো তোমার বাবার একটা খেলা। চাপে ফেলে বিয়ে হয়না। মোমের বাবা তোমার বাবাকে বাঁচাতে তোমাদের মতো পরিবারে মোমের বিয়ে দিয়েছিল। মোমের সেটা মনেও ছিলনা। মোম তো বুঝতে পাচ্ছিল না কি হচ্ছেটা কি! তাই তুমি যেটা কে বিয়ে বলে জানো সেটা বিয়েই না।
আগুন রেগে বলল – ঠিক আছে মোমকে আমি আবার বিয়ে করব। তাহলে তো তোমাদের আপত্তি থাকবে না।
-যে নারী পরিবারের অধীনে থাকে সে তার পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে পিতামাতা সম্মতি না নিয়ে বিয়ে করলে সেটা বাতিল বলে ঘোষণা করেছে মহানবী (সাঃ)।
তাই তুমি মোমের আশা ছেড়ে দাও।
আগুন বুঝতে পাচ্ছেনা সে কি করবে। তার ইচ্ছে করছে বালতি দিয়ে আসলামের মাথা ফাটিয়ে দুই ভাগ করতে।
আগুন চলে যাচ্ছিল তখন আসলাম আবার বলল- চাচাজান আমার সাথে মোমের বিয়ে ঠিক করেছেন আর সেটা খুব তাড়াতাড়ি। কিছুদিন পর তো এমনিতেই মোমকে স্পর্শ করবো। তখন তুমি কিছুই করতে পারবে না। মোম তোমার স্ত্রী না সে আমার স্ত্রী।
আসলাম ইচ্ছে করে এমন এমন কথা বলে আগুনের রাগ উঠাচ্ছে। সে জানে আগুন রাগচটা। রাগের মাথায় কিছু করলে সেটা আসলামের কাজে লাগতে পারে।
আগুন নিজেকে কন্ট্রোল করে বলল – আল্লাহর কালাম পড়ে মোম আর আমার বিয়ে হয়েছে। পরিস্থিতি যেমন থাকুক ওর বাবা তখন রাজি হয়েছিল। জোর জবরদস্তি করেনি কেউ। আল্লাহর কালামকে নিশ্চয়ই মিথ্যা বলবেন না।
আগুন আসলামের পাঞ্জাবির কলার ঠিক করে দিতে দিতে বলল- আমার স্ত্রীর দিকে কেউ তাকালে তার চোখ উপড়ে ফেলব। আমার স্ত্রীর গায়ে আরেক বার কেউ স্পর্শ করলে তাকে আমি কোরবানির মতো জবাই দেব। আমার স্ত্রীর সম্মানের দায়িত্ব আমি নিয়েছি। ওর সম্মানের জন্য আমাকে তোমায় জবাই দিতে হলে সেটাই করব। মহান আল্লাহ নিশ্চয়ই আমার পক্ষে থাকবেন।
সো আমার প্রিয়তমার কাছ থেকে দূরে থাকবে। খোদার নামে শপথ করে বলছি ওর গায়ে স্পর্শ করলে তোমাকে জবাই করব নিজ হাতে।
আসলাম মনে মনে ভয় পেয়ে গেলো।
আগুন যাওয়ার আগে ফিরে তাকিয়ে বলল- তুমি মোটেও দ্বীনদার নও। তুমি ইসলামি শিক্ষায় বড় হয়েছো কিন্তু ইসলামের পথে এসেও পথ ভুলে যাচ্ছো। শয়তান তোমাকে সুন্দরী নারীর প্রলোভন দেখিয়ে পথ ভ্রষ্ট করেছে।
বিবাহিতা স্ত্রীর বা পরনারীর দিকে তাকিয়ে তাকে কামনা করলে সেটা কিসের অন্তর্ভুক্ত হয় সেটা নিশ্চই জানো?
তুমি সরে এসো শয়তানের পথ থেকে। মোমকে ছেড়ে একজন মুমিন দ্বীনদার নারী কে বিয়ে করো।
.
.
আগুন আজান দিচ্ছে। মোম ছাদ থেকে পরিষ্কার বুঝতে পারলো এটা তার আগুনের গলা।
মোম -আমার প্রিয়তমা এতো সুন্দর সুরে আজান দিতে শিখেছে আল্লাহর অশেষ দয়ায়।
আহা! কি মিষ্টি ধ্বনি।
এজন্যই তো উনি বলছিলেন আজ একটা বিশাল কান্ড ঘটবে। যেটা শুনে আমি চমকে যাব আর খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাব। উনার কন্ঠ আমি চিনতে পারব এই বিশ্বাস ছিল উনার। আমাকে এতো বিশ্বাস কেন করেন উনি?
আমার চোখ থেকে পানি পড়গে শুরু করেছে।
“হে আল্লাহ উনাকে হেদায়েত দান করো। উনি একটু ছেলেমানুষী, একটু দুষ্টু, একটু রাগী, জেদি কিন্তু মনের দিক থেকে ভালো সেটা তুমি জানো?
কখনো কারও উপর তিনি অন্যায় করেনা। উনাকে তোর নূরে আলোকিত করো। আমাকে সুযোগ দাও যেন, আমি উনার সেবা করার সৌভাগ্য পেতে পারি। উনাকে সুখে রাখতে পারি। উনাকে সন্তান দিতে পারি। উনার ঘরকে তোমার নূরে আলোকিত করতে পারি। আমিন।
.
.
মোমের বাবা গাঙিনার পাড় শহরে এসেছে মোটামুটি ছোট একটা আয়োজনের জিনিস পত্র কিনতে। তিনি দেরি না করে মোমকে আসলামের হাতে তুলে দিতে চান। তাহলেই তার শান্তি। আসলাম আরমান সাহেবের সাথে এমন ভাবে থাকে তার মনে হয় আসলাম একজন প্রকৃত দ্বীনদার মুমিন লোক।
আসলাম অবশ্য এমন দ্বীনদার ছিল হঠাৎ করে কি হলো সে নিজেও জানেনা।
আসলাম আগুনের বলা কথা গুলো নিয়ে ভাবছে। সে কি ভুল কিছু করেছে? না না আগুন বড় হয়েছে বিদেশি কালচারে। সে মারপিট, জুয়া, মদ্ধ পানে আসক্ত ছিল। তার মতো লোকের জাল থেকে মোম কে বের করে আনা এক মুমিন ব্যক্তি হিসেবে এটা তার করণীয়। তার উপর মোম কে ভালোবেসে ফেলেছে খুব।
সামনে এগিয়ে মোমের সাথে দেখা হলো আসলামের। মোম রেডি হয়ে নিশ্চয়ই আগুনের কাছে যাচ্ছে।
আসলাম বলল-আসসালামু আলাইকুম!
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।
-আজ আগুনের সাথে দেখা হয়েছিল। ভালো অভিনয় করতে জানে সে।
-উনি কোন অভিনয় জানেন না। জানলে অনেক আগেই বাবার চোখে ধুলো দিতে পারতেন তিনি।
উনি যা উনি তাই সবাইকে দেখান। সব ধর্মের ভেতরেই মানব ধর্ম থাকে। আপনার মধ্যে সেই মানব ধর্ম খুব কম। কিন্তু আল্লাহর রহমতে উনার মধ্যে মানব ধর্ম কিছু একটা আছে।
আসলাম বলল- আমাকে অপমান করছো?
– না না। আমি অপমান করার কে? তবে মিথ্যে অহংকার করা ভালো না। আপনি যে শুধু মাত্র নামে মাত্র মুমিন লোক সেটা জানেন নিশ্চয়ই।প্রকৃত মুমিন কখনো এমন জঘন্য কাজ করতে পারে না। ভয় নেই আপনার কাজ গুলো বাবা কে বলব না। ভাববেন না ভয় পেয়েছি। বাবা জানলে কষ্ট পাবে তার পছন্দ পাত্র ধর্ম শিক্ষা নিয়ে বরাই করে। অহংকার করে। অসহায় মেয়েদের গায়ে স্পর্শ করে।
-মোম ভুল বুঝেছো তুমি। ঐ ঘটনার জন্য আমি দুঃখীত।
আমি নিজেও জানিনা হঠাৎ এমন হয়ে গেলাম কেন।
মোম সোজা বাংলো থেকে বের হয়ে গেলো। বাংলো থেকে মসজিদ তিন মিনিটের পথ। মোমদের বাংলোর দারোয়ানের ৬ বছরের হাবিবা নামের মেয়ে আছে তাকে নিয়েই আজকাল মোম বাহিরে বের হয় আগুনের সাথে দেখা করতে।
আগুন মোমের হাতে কিছু গরম গরম জিলিপি দিলো।
মোমের জিলিপি খুব পছন্দ। আগুন বলল – জানো আগে আমি জিলিপির স্বাদ সেভাবে খেয়াল করিনি কিন্তু এখন মসজিদে জিলিপি খেয়ে বুঝতে পারলাম এর স্বাদ।
মোম বলল- এখন জিলিপি নিয়ে আপনার মতামত?
-এর স্বাদ অতুলনীয়। তোমার পছন্দ জিলিপি। মনে হয় আমারও এজন্য জিলিপি খেতে ভালো লাগে।
ঠোঙা থেকে মোম একটু জিলিপি নিতে গিয়ে আহ! করে উঠে কারণ জিলিপি প্রচন্ড গরম ছিল।
-প্রিয়তমা কি করছো? দেখি দেখি তোমার হাত?
মোজার উপর দিয়েই হাতে তাপ লেগে লাল হয়ে গিয়েছে।
আগুন মোজা খুলে তাড়াতাড়ি মসজিদ থেকে মগ নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে দিলো।
– মাত্র মসজিদের পাশে দোকান থেকে দাড়িয়ে থেকে ভেজে নিয়ে এলাম। এতো গরম ছিল তার মধ্যে তুমি মুষ্টি দিয়ে জিলিপি টাচ করলে। আগুন মোমের হাতে বার বার পানি দিচ্ছে। ২য় বার আগুন মসজিদে গিয়ে পাশের ছোট ঘর থেকে একটা মলম নিয়ে মোমের আঙুল গুলোতে লাগিয়ে দিচ্ছে। আগুন কে খুব চিন্তিত লাগছে।
মোমের চোখ দিয়ে চিকচিক করছে পানিতে। ব্যাথার জন্য নয়। আগুনের কেয়ার দেখে।
আগুন মোমের হাতে অনেক গুলো চুমু দিয়ে বলল- এখন ভালো হয়ে যাবে আমার চুমুতে, হতেই হবে।
মোম মাথা নাড়ালো।
আগুন ফু দিয়ে দিয়ে জিলিপি ভেঙে মোমের মুখে দিলো। মসজিদের পেছন দিকে কোন লোকজন আসেনা নির্জন বলে কারণ এখান থেকে বিশাল জঙ্গল শুরু হয়েছে।
মোম জিলিপি খাচ্ছে।
আর বলছে আজকের জিলিপি অন্যরকম।
আগুন বলল- আমার হাত দিয়ে খাচ্ছো তাই অন্যরকম লাগছে।
মোম আগুনকে খাওয়ানোর জন্য জিলিপিতে হাত দিতেই আগুন রেগে তাকালো। এই তাকানোর অর্থ সে জানে।
আগুন জিলিপি ভেঙে মোমের হাতে দিল তখন মোম সেটা আগুনের মুখে দিলো।
আগুন বলল -আহ! জিলিপি নয় এটা, জিলিপির টুকরো গুলো এক একটা তোমার আদর মাখা ভালোবাসা প্রিয়তমা!
আগুন হাবিবা কে ডেকে বাকি জিলিপি গুলো দিয়ে দিলো। হাবিবা এতো জিলিপি পেয়ে খুব খুশি হলো।
মোম বলল -আপনি অবাক হবেন হাবিবার মেধা শুনলে। ও এখন আপনাকে শেখাতে পারবে অনেক কিছু। এখনই সব নিয়ম কানুন ইসলামের সব শিখিয়েছে ওর মা। সাত বছর পর থেকে এই মেয়ে কি হবে আল্লাহ জানে।
সন্ধ্যায় আগুন ডেইজি কে দেখে অবাক হয়ে যায়।
ডেইজি বলল – আমার সাথে চলো। নইলে আমি যাব না।
ডেইজি অতন্ত্য আপত্তিকর পোশাক পড়েছে।
অনেকে তাকিয়ে ডেইজি কে দেখছে।
আগুন একটা চাদর নিয়ে এসে ডেইজির গায়ে দিয়ে তাকে মসজিদের পেছনে নিয়ে আসে।
-আহ আগুন এটা কি গায়ে দিয়েছো? গরম লাগছে?
-এটা কি পড়েছো? এটা বাংলাদেশ তার উপর মসজিদ। এটা কোন হাই সোসাইটির পার্টি না।
-তাহলে শুধু লন্ডনে অথবা পার্টিতে এসব ড্রেস পড়ব?
-কোন জায়গায় না। এসব পাপ।
-তুমি তো আগে এসব মর্ডান ড্রেস পছন্দ করতে।
-কিন্তু এখন ভুল বুঝতে পেরেছি। তুমিও শুধরে যাও ডেইজি।
” ঐ সব নারী জাহান্নামি, যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ থাকে ।
হযরত মোহাম্মদ( সাঃ) ।
মনে রেখো আমাদের নবীর কথা।
ডেইজি বলল – মোমের মাঝে কি আছে যা আমার মাঝে নেই? ও আমার থেকে বেশি সুন্দরী মানলাম। কিন্তু আমি তো দেখতে খারাপ না। মোম তোমার যোগ্য না। জানিনা ও তোমাকে কোন জাদু করেছে।
ডেইজি চলে গেলো।
আগুন নিজেকে নিজে বলল- ভালোবাসার জাদু আছে ওর কাছে। ওর মাঝে আল্লাহর পথের নূর আছে।
তুমি নারী তাই তোমাকে কঠিন কিছু বলতে চেয়েও বললাম না।
মোম জানালা থেকে একটা চিরকুট পেলো ডিলের মাধ্যমে। ভয়ে ভয়ে খুলে এদিক ওদিক তাকিয়ে সে চিরকুট পেলো।
-ছাদে এসো প্রিয়তমা।তোমার স্বামী প্রিয়তমা।
মোম ছাদে যেতেই আগুন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
-আপনি এখানে ছাদে?
কেউ দেখলে কি বলবে?
-সেটা আমি বুঝব। আজ তোমার কাছে থাকতে ইচ্ছে করছে।
মোমের কোলে মাথা রেখো আগুন বলল – তোমার হাতে জাদু আছে।
মোম আগুনের মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে বলল – জানেন আপনার জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। ঘুম আসছে না কিছুতেই।
আগুন মোমের গালে হাত রেখে বলল – প্রিয়তমা আজ তোমাকে এমন একটা দোয়া বলব যেটাতে তোমার পেরেশানি দূর হয়ে যাবে।
#৯৯ টি সমস্যার সমাধান একটি দোয়ায়! ﻟَﺎ ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻟَﺎ ﻗُﻮَّﺓَ ﺍِﻟَّﺎ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ “লা ‘হাওলা ওয়ালা ‘ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” অর্থ, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ক্ষমতা নেই। এ দোয়াটি হল, ৯৯টি রোগের চিকিৎসা। যার মধ্যে সবচেয়ে ছোট রোগ হলো চিন্তা ও পেরেশানী। (মিশকাত শরীফ খ. ২, পৃ. ২৩, হাদীস নং ২৩২০) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়াটিকে জান্নাতের রত্নভান্ডার বলে আখ্যায়িত করেছেন। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৬৪০৯) যখন বান্দা এ দোয়াটি পড়ে তখন আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের বলেন, আমার বান্দা অনুগত হয়েছে এবং বিদ্রোহ ছেড়ে দিয়েছে। (মিশকাত শরীফ, হাদীস নং ২৩২২) হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) বলেছেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়াটি আমাকে বেশি বেশি পড়তে বলেছেন। কেননা এটা জান্নাতের রত্নভান্ডার। প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হযরত মাকহূল রহ. বলেছেন, যে ব্যক্তি ” ﻟَﺎ ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻟَﺎ ﻗُﻮَّﺓَ ﺍِﻟَّﺎ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻭَﻟَﺎ ﻣَﻨْﺠَﺎَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍِﻟَّﺎ ﺍِﻟَﻴْﻪِ ” “লা হাওলা ওয়ালা-ক্বুওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহি ওয়ালা মানজা মিনাল্লহি ইল্লা ইলাইহি” পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার থেকে সত্তর প্রকারের কষ্ট দূর করবেন। যার মধ্যে সবচেয়ে ছোট হল দারিদ্রতা। (তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ৩৬০১)
মোম বলল – আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এখন থেকে এটা পড়ব। যদিও মোম এটা পড়ে থাকে সব সময়।
আগুন শান্ত ছেলের মতো মোমের কোলে ঘুমচ্ছে। মোম হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আগুন জেগে থাকলে মোমকে জ্বালাতন করতো।
হঠাৎ আসলাম ছাদে প্রবেশ করেই এই দৃশ্য দূর থেকে দেখল। আবছা আলোতে দুটি ছেলে মেয়েকে দেখা যাচ্ছে। মোম আর আগুন এতে কোন সন্দেহ নেই।
.
.
চলবে……