প্রিয়জন❤Part-41

0
2638

প্রিয়জন❤Part-41
Writer-Moon Hossain

[গল্পটা পুরোপুরি ইসলামিক ভাবে লিখিনি। গল্প ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করেছি মাত্র। আশা করি সবাইকে বোঝাতে পেরেছি? একটি ভালোবাসার গল্প এটি ]
মোম সবার সামনে ঘুমিয়ে আছে সোফায়। রান্না করতে করতে সবাই হাঁপিয়ে পড়েছিল তাই যেখানে একটু জায়গা পেয়েছে সেখানেই শুয়ে পড়েছে।
আগুন বেচারা সারা রাত বেলকুনিতে ছিল আর একটু পর পর মোমকে দেখার জন্য সবার কাছে কাকুতি মিনতি করেছে বাট কোন লাভ হয়নি।মোম ছিল সবার ভেতরে আর বাকি মহিলারা ছিল দরজার সামনে তারা জানে একবার মোম তাদের হাত থেকে আগুনের হাতে পড়লে আর মোম কে পাওয়া যাবেনা।
মোম- কারও উষ্ণ স্পর্শ অনুভব করছি। একটু শীত শীত লাগছিল সোফায় ঘুমুনোর সময়। এখন আর তা লাগছে না বরং আরাম লাগছে খুব।
আজানের সুর ভেসে আসছে। খুব শান্তি অনুভব করছি। হঠাৎ আমি অনুভব করলাম কারও গায়ের গন্ধ, কারো বুকের হ্রদয়ের স্পন্দ, খুব নিরাপদ অনুভব করছি এখন আমি।
এমন টা শুধু উনার কাছে থাকলেই অনুভব করি। আমি উনার কাছে নেই তো? হঠাৎ চোখ খুলে দেখি আমি উনার বুকের মাঝে শুয়ে আছি। আর উনি ঘুমিয়ে আছেন।
আমাকে কখন নিয়ে এলেন কে জানে?
আজান শুনে আমি উনার বুক থেকে উঠে পড়তেই এক টানে উনি আমাকে উনার বুকে ফেলে দিলেন।
আমি একটু ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
উনি বলল- প্রিয়তমা শুভ সকাল। আমি কিছু না বলে উনার বুকে মুখ লুকালাম।
কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখি উনি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছেন।
আমি বললাম – আমাকে কিভাবে নিয়ে এলেন?
উনারা জেগে উঠলে আপনার খবর ছিল।
উনি আমার কপালে চুমু দিয়ে বললেন- তোমার জন্য আমি ৮টা -১২টার খবর হতেও রাজি।
আর শোন, এখন থেকে তোমার রান্না করার দরকার নেই। সবাই যেভাবে তোমাকে লুফে নিচ্ছিল নিজেদের কাছে আমি তো ভয়ে শেষ।
আমি হেসে বললাম- তা কি করে হয়। বাড়ির বউ রান্না করবে না? আমি ভালো রান্না না পারলে তাহলে না হয় রান্না করা থেকে বিরত থাকতাম।
উনি একটু মন খারাপ করো বলল- তোমার রান্না দেখছি আমার ভালোবাসার ক্ষেত্রে বিশাল একটা কাঁটা।
ইশশ, যদি পৃথিবীতে রান্না বলে কিছু না থাকত!
আমি শাওয়ার নিতে গেলাম। উনার ওয়াশ রুমটা খুব সুন্দর। বিশেষ করে বাথটাব। মেয়েদের কিছু শ্যাম্পু, সাবান ইত্যাদি আরও অনেক কিছু রাখা দেখলাম। আমার একটু ওয়াশরুম ভীতি আছে। হঠাৎ উনি দরজায় একটা টোকা দিয়ে বলল- প্রিয়তমা তোমার জন্য তোমার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা আছে দেখে নিয়ো।
আমি এখানেই আছি ভয়ের কিছু নেই।
আমার যে ওয়াশরুম ভীতি আছে এটা কি উনি জানেন?
গতকাল আমি খুব ভয়ে কোন মতে শুধু পানি ঢেলে গোসল করেছি।
.
.
আগুন – আমি দরজার পাশে দাড়িয়ে আছি ওর জন্য। ছোট বেলায় ওকে কখনো ওয়াশরুমে গোসল করানো যেত না। ওকে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলে চিৎকার করে কাঁদত হাত পা ছড়িয়ে।
এখনো নিশ্চয়ই ওর এই ভীতি আছে। হয়ত লজ্জায় মুখ ফুটে বলতে পাচ্ছে না।
মোম বের হতেই আগুন খেয়াল করলো কালকের মতো এবারও শাড়ির কুঁচি ঠিক হয়নি।
আগুন মোম কে বলল সে শাওয়ার করে এসে ঠিক করে দেবে কুঁচি।
আগুন শাওয়ার শেষ করে একটা গোলাপি পাঞ্জাবি পড়ে বের হয়ে এলো।
মোম একটু তাকিয়ে আবার চোখ নিচে নামিয়ে ফেলল আগুনের চোখে চোখ পড়তেই।
আগুন মোমের কাছে এসে মোম কে দাড় করিয়ে শাড়ির কুঁচি করে মোমের হাতে দিলো।
ভোরের আবছা আভায় মোম কে খুব পবিত্র লাগছে। মনে হচ্ছে কোনো জান্নাতি নূর আগুনের ঘরকে আলো করে রেখেছে। আগুন মোমের গালে হাত দিয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হলো।
.
.
এক সপ্তাহের মধ্যে মোম আর আগুনের বিয়ে সমস্ত সামাজিকতা শেষ হলো।মোম কে নিয়ে সব মেহমানরা টানাটানি করে এই এক সপ্তাহ। রাতেও আগুন মোম কে ঠিক মতো পায়নি তার কাছে।
আগুন একদিন সবার সামনে বলল- আগে জানলে লুকিয়ে বাড়ির বউ কে বাড়ি নিয়ে আসতাম। কাউকে বলতাম না। সব দোষ বাবার। কেন যে অনুষ্ঠান করতে গেল আর এতো মেহমান কে দাওয়াত করলো।
উপস্থিত সকলেই আগুনের কথা শুনে গড়াগড়ি খাচ্ছে হাসতে হাসতে যেন আগুন কি না কি মজার কথা বলেছে।
এক সপ্তাহ পর আগুন মোমকে ভালো করে দেখতে পেলো।
আগুন মোম রুমে নিয়ে এসে বলল- আমি এখন পর্যন্ত তোমাকে মন ভরে দেখতে পারলাম না। আমার দূর্ভাগ্য!
মোম হেসে আগুনের গালে হাত রাখতেই আরু সোজা ওদের মাঝে চলে এলো।
আরু সরাসরি মোমের হাত ধরে নিয়ে যেতে থাকলো। আগুন কে যেন দেখতেই পেলো না।
আগুন জোরে বলল- এটা কি ধরনের অভদ্রতা! নক করে ঢুকিসনি তার উপর হুট করে ওকে নিয়ে যাচ্ছিস কেন?
-উফফ, দাদাভাই আমাদের কুয়েতের কাজিন রা এসেছে। ওরা যা মনে করে নিজেদের কে। মনে করে মিস ওয়ার্ল্ড! তাই ভাবি কে নিয়ে ওদের মিথ্যে অহংকার ভেঙে দিতে চাচ্ছি।
মোম বলল- ছিঃ আরু আপু। এসব বলেনা। সবাই একরকম সুন্দর।
-দেখ ভাবি।আমি তোমার মতো এতো ধার্মিক নয়। যেদিন হব ঐদিন থেকে তোমার মতো ভাববো। যেটা সত্যি সেটা আমি প্রমাণ করব।
আগুন বলল- আমি এক মিনিট কথা বলতে পারি?
আরু জোরে বলল তার সময় নেই।
আগুন বলল- অনুমতি না নিয়ে তুই ওকে নিয়ে যাচ্ছিস কেন?
আরু এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল – কার কাছ থেকে অনুমতি নেব?
উফ দাদা ভাই অফিসে যাও তো। ভাবিকে একটু একা থাকতে দাও।
আগুন কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ালো যদি বোন একটু ভয় পায়।
কোথায় কি আরু মোম কে নিয়ে সোজা চলে গেলো।
.
.
রাতে মোমের পাশে শুতে শুতে বলল- আরুর লক্ষ্যণ ভালো না। ও আমাদের মাঝে ভিলেন হয়ে ঢুকতে চাচ্ছে। ভেবেছে আমি হিরো সাইলেন্ট থাকব। না সেটা হবে না। ওকে বাড়ি থেকে বিধায় করতে হবে।
মোম আগুনের চুলে বিলি কেটে কেটে আগুন কে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।কি নিষ্পাপ নূরানী চেহেরা আগুনের।

মোম এর মধ্যে হঠাৎ বাবা মায়ের জন্য মন খারাপ করলো। আগুন মোম কে তৎক্ষনাৎ তাদের বাড়ি নিয়ে সারাদিন হইচই করে আবার মোম কে নিয়ে আসলো।
মোম খুব খুশি হলো। আগুন মোমের এই খুশির জন্যই সবকিছু করতে পারে। আগুনদের বাড়ির সব কাজের লোকেরা এখন মোমের মতো নামাজ পড়তে শিখেছে। সবাই মাথায় কাপড় দেয় এখন।
আগুনের বাবা এসব লক্ষ্য করেছে। আজান দিতেই যে যেখানে যে অবস্থায় আছে সেখান থেকে সোজা জায়নামাজ নিয়ে নামাজ পড়তে বসে অযু করে।
মোম নির্দিষ্ট সময়ে সবাইকে নিয়ে নিজের কামরায় বসে কোরআন তেলওয়াত করে শোনায় আর বিভিন্ন হাদিস নিয়ে আলোচনা করে।
আগুন প্রতিদিন অফিস থেকে বিকেলে এসে দেখে মোম খুব মনোযোগ দিয়ে সবাইকে শেখাচ্ছে নানান বিষয়।
মোম সবাইকে প্রথমে সিজদার নিয়ম কানুন শিখিয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (ছা) এর যেভাবে সিজদা দিতেন
____

সিজদা হল ছালাতের অন্যতম প্রধান রুকন। সিজদা নষ্ট হ’লে ছালাত বিনষ্ট হবে। অতএব জাল-যঈফ হাদীছ এবং মাযহাবী চেতনা ছেড়ে রাসূল (ছা) এর দেখানো পদ্ধতিতে সিজদা করুন।
রাসূল (ছা) এর পদ্ধতিতে সিজদা–

➡রুকূ হতে উঠে ক্বওমার দোআ (রব্বানা লাকাল হামদ——মুবারাকান ফীহ) পাঠ শেষে ‘আল্লা-হু আকবর বলে প্রথমে দু’হাত মাটিতে রেখে নাক সহ কপাল, দু’হাঁটু ও দু’পায়ের আংগুল সমূহের অগ্রভাগ সহ মোট ৭টি অঙ্গ মাটিতে লাগিয়ে সিজদা করবে (বুখারী হা/৮১২, ৮১৫, ৮১৬)।

➡মাটিতে প্রথমে হাটু রাখবেনা হাত রাখবে ( আবুদাঊদ হা/৮৪০ সনদ ছহীহ-আলবানী)। কারণ আগে হাঁটু রাখার হাদীছটি ‘যঈফ (আবুদাঊদ হা/৮৩৮ সনদ যঈফ-আলবানী; ইরওয়া হা/৩৫৭)।

-সিজদার সময় হাত দু’খানা ক্বিবলামুখী করে (মুওয়াত্ত্বা, মিশকাত হা/৯০৫) মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর (ফিক্বহুস্ সুন্নাহ ১/১২৩; আবুদাঊদ, তিরমিযী, নায়লুল আওত্বার ৩/১২১) মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে (বুখারী হা/৮২৮; মিশকাত হা/৭৯২, ৮৮৮) এবং কনুই ও বগল ফাঁকা রাখবে (বুখারী হা/৮০৭; মুসলিম হা/৪৯৪, মিশকাত হা/৮৯১)।

➡হাঁটু বা মাটিতে ঠেস দিবে না (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৮০১)।
সিজদায় দুই কনুই উঁচু রাখবে এবং কোনভাবেই দু’হাত কুকুরের মত মাটিতে বিছিয়ে দেওয়া যাবে না (বুখারী হা/৮২২; মুসলিম হা/৪৯৩; নাসাঈ হা/১০২৭; মিশকাত হা/৮৮৮)।

➡সিজদা এমন (লম্বা) হবে, যাতে বুকের নীচ দিয়ে একটা বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে (মুসলিম হা/৪৯৬, আবুদাঊদ হা/৮৯৮, মিশকাত হা/৮৯০)।

➡সহজ হিসাবে প্রত্যেক মুছল্লী নিজ হাঁটু হতে নিজ হাতের দেড় হাত দূরে সিজদা দিলে ঠিক হতে পারে।
➡সিজদা হতে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে এবং ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে ও আঙ্গুলগুলি ক্বিবলামুখী রাখবে (বুখারী হা/৮২৮, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৭৯২, ৮০১)।

?আরো বিস্তারিতভাবে—

?হাত, পিঠ, বুক যেভাবে থাকবেঃ?
✅এ সময় দুহাত (পাঁচ আঙ্গুল সহ হস্ত তালু) ক্বিবলামুখী করে মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে (বুখারী হা/৮০৭)।

✅হাঁটুতে বা মাটিতে ঠেস দিবে না। সিজদা লম্বা হবে ও পিঠ সোজা থাকবে। যেন বুকের নীচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে (মুসলিম হা/৪৯৬, আবুদাঊদ হা/৮৯৮, মিশকাত হা/৮৯০)।

✅দুই হাত কনুই পর্যন্ত মাটির সাথে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।
➡কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তুমি সিজদা করবে, তখন হাতের তালু মাটিতে এবং উভয় কনুই উঁচু রাখবে (মুসলিম হা/৪৯৪)।
➡অন্য বর্ণনায় এসেছে, উঁচু করবে এবং খাড়া করে রাখবে (ইবনু হিববান হা/১৯১৬; মিশকাত হা/৮৮৯)।
➡তিনি বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন (সিজদায়) কুকুরের ন্যায় যমীনে হাত বিছিয়ে না দেয়’ (বুখারী হা/৮২২; মিশকাত হা/৮৮৮)।

❎উল্লেখ্য যে, সিজদায় কুকুরের ন্যায় যমীনে হাত বিছিয়ে দেয়া মর্মে ‘মারাসীলে আবী দাঊদে’ বর্ণিত হাদীছটি নিতান্তই যঈফ (যঈফুল জামে‘ হা/৬৪৩)।

?দুই পা যেভাবে থাকবেঃ?
✅এ সময় দুই পা খাড়া, স্বাভাবিক থাকবে মিলিয়ে নয় ও আঙ্গুলগুলি সাধ্যমত কেবলামুখী থাকবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৩, মুস্তাদরাক হাকেম ১/৩৪০ পৃঃ, হা/৮৩২; ইবনু হিববান হা/১৯৩৩; মির‘আত ৩/২০৪)।

?সিজদায় যা নিষিদ্ধ?
❎সাত অঙ্গ দিয়ে সিজদা না করে ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প কিছু অঙ্গ দিয়ে করা (বুখারী হা/৮১২, ৮১৫, ৮১৬; মিশকাত হা/৮৮৭)।
❎কুকুরের ন্যায় যমীনে হাত বিছিয়ে দেয়া (বুখারী হা/৮২২; মিশকাত হা/৮৮৮)।
❎কনুই ও বগল ফাঁকা না রেখে দুই হাত কনুই পর্যন্ত মাটির সাথে ঠেকিয়ে রাখা (বুখারী হা/৮০৭; মুসলিম হা/৪৯৪)।
❎বুকের নীচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা না রেখে চেপে দেয়া (মুসলিম হা/৪৯৩, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৮৯০)

?সিজদায় মহিলারা যেসব ভুল করে থাকে?
❎অনেক মহিলা সিজদায় গিয়ে মাটিতে নিতম্ব রাখেন।
এই মর্মে ‘মারাসীলে আবুদাঊদে’ বর্ণিত হাদীছটি নিতান্তই ‘যঈফ (সুবুলুস সালাম শরহ বুলূগুল মারাম হা/২৮২-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য, ‘সিজদার অঙ্গ সমূহ’ অধ্যায়, ১/৩৭৩ পৃঃ ; যঈফুল জামে‘ হা/৬৪৩; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৬৫২)

❎সিজদার সময় মহিলারা স্বীয় পেটকে রানের সাথে মিলিয়ে রাখবে মর্মে তিনটি জাল ও যঈফ হাদীছ পাওয়া যায় (বায়হাক্বী হা/৩৩২৪, ৩৩২৫, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৬৫২, ত্বাবারাণী কাবীর হা/১৭৮৭৯, যঈফাহ হা/৫৫০০)। অতএব এভাবে সিজদা করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
আগুনের একজন মৌলোভীর কাছ থেকে কোরআন তেলওয়াত করা শেখার জন্য তার কাছে নিয়োগ হয়েছে। পাশাপাশি রাতে আগুন মোমের কাছে আবার কোরআন তেলওয়াতের টিউশন নেয়। মোম বলেছিল তাকে বেতন দিতে হবে। উওরে আগুন মোম কে জরিয়ে ধরে বলেছিল সব মাসের বেতন একেবারে দেওয়া হবে।
মোম জিজ্ঞেস করলো কিভাবে?
আগুন ফিসফিস করে বলল- তোমাকে মা বানাব আমার সন্তান দের। এটাই তোমার বেতন।
মোম তখন লজ্জা পেয়ে আগুনের বুকে স্বভাব মতো মুখ লুকায়।
আগুন অফিসের সব দায়িত্ব বুঝে নিয়ে তার বাবা কে অবসর দিয়েছে।
আরুও এখন মোটামুটি একজন ধার্মিক মেয়ে হিসেবে নিজেকে গড়ে নিয়েছে মোমের কাছে ট্রেনিং নিয়ে।
তবে আরু বেশ জ্বালাতন করে আগুন কে। আগুনের পেছনে লাগতে তার ভালো লাগে।
এই তো সেদিন আগুন মোমের ঠোঁটে স্পর্শ করতেই আরু এসে হাজির।
আরুর ক্লাসমেটরা এসেছে তাউ মোম কে লাগবে।
আগুন বলল- মোম কে আমার লাগবে।
আরু চিৎকার করে বলল- তোমার বউ তো সারাজিবন তোমার কাছেই থাকবে। আমি খেয়ে ফেলব না। আল্লাহর রহমতে আমার বাবা আর ভাইয়ের আমাকে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য আছে।
আগুন – যখন তখন ওকে নিয়ে যাবি। মামা বাড়ি আবদার?
আরু একটু হেস বলল- আমার সাথে লাগতে এসো না। আমি যা চাই তা দিয়ে দাও৷
– কি চাস তুই?
– খুব সিম্পল। আমি ড্রামা করবো। বাবা মা কে বলব আমি জ্বীনের ভয় পাই। ব্যাস বাবা মা অমনি তোমার বউ কে রাতে আমার সাথে থাকার আদেশ দেবে।
– নো নো।
-ইয়েস এটাই করব আমি। তারপর সারা রাত বসে বউয়ের বিরহে চোখের জল ফেল মাই ডিয়ার ব্রাদার।
আগুন হতভম্ব বোনের কথা শুনে! আরু যা বলে সেটাই করে দেখায়।

.
.
আগুন মোমের এতোদিনের জমিয়ে থাকা সকল ইচ্ছে পূরণ করে এক এক করে। যেগুলো মোম কখনো একা পূরণ করতে পারবে না।
মাঝরাতে মোমের ঘুম ভাঙিয়ে আগুন মোম কে নিয়ে লং ড্রাইভে যায়।
পাশাপাশি বসে দুজন একটাই আইসক্রিম খায়। দুজন একটাই ভট্টা খায় বেশি করে ঝাল দিয়ে।
আগুন একদিন হঠাৎ করে মোম কে জাগিয়ে তোলে বাড়ির সামনে নিয়ে যায়। মোম দেখতে পায় সেখানে আস্তো একটা ফুচকার দোকান। আগুন নিজে দোকানের মালিক এবং নিজেই ফুচকা বানাচ্ছে।
মোম কে একদিন তার বাবা বাড়ি থেকে নিয়ে আসার সময় রাস্তায় ফুচকার দোকান দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। যেটা আগুনের চোখ এড়ায়নি। আগুন তখনো জানেনা বাঙালি মেয়েরা ফুচকা পাগলি। এর আগে মোম কে নিয়ে আগুন ফুচকা খেতে গিয়েছিল অবশ্য। তখন মোম যা করে ছিল আগুনের মনে আছে। আগুন না জেনেও ঐ দিন বিকেলেও ফুচকা কেনার চেষ্টা করেছিল কিন্তু এতো ভিড় যে আগুন ধাক্কা ধাক্কি করে গিয়ে সোজা ড্রেনের কাছে পড়ে গেলো। বউয়ের জন্য ফুচকা কিনতে গিয়ে আগুনকে ড্রেনেও পড়ে যেতে হলো। অবশ্য আগের বার মোমের সাথে ফুচকা খেতে গিয়েও বিপদে পড়েছিল আগুন।
আগুন জাস্ট হতভম্ব!
এখন মাঝরাতে নির্জন রোডের সাইডপ ফুচকা পরিবেশন করে মোম কে খাইয়ে দিচ্ছে আর মোম খেয়েই যাচ্ছে। মোমও আগুন কে খাইয়ে দিতো চাইল। আগুন বলল বেড রুমে গিয়ে সে ফুচকা খাবে।
মোম কিছু না ভেবে ফুচকা খেতেই থাকল। বেচার আগুন পরিবেশন করতেই থাকল। খেতে খেতে ফজরের আজান দিয়ে দিলো।
বেড রুমে গিয়ে মোম যখন বলল এখন তবে খান।
আগুন মোমের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বলল – আচ্ছা তবে খাওয়া শুরু করি। এবার মোম হতভম্ব!
.
.
এভাবেই চলছিল আগুন মোমের সংসার। আগুন তার প্রিতিটা ফ্যাক্টরি আর অফিসে স্টাফ দের জন্য নামাজের ঘর বানালো এবং নামাজের ওয়াক্ত গুলোর সময়ও দিলো স্টাফদের। সবাই আগুনের ব্যবস্থায় খুশি হলো খুব।
এরমধ্যে শপিংমলে আসলামের সামনে দেখা হলো আগুন আর মোমের।
আসলাম মোমের দিকে তাকিয়ে বলল- এই লোক তোমাকে সুখি করতে পারবে না। দেখবে তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে। তোমার কদর ও করতে জানেনা। আমার কাছে চলে এসো মোম।
মোম রেগে তাকালো আর আগুন আসলামের পাঞ্জাবির কালার ধরেও ছেড়ে দিলো।
বাড়ি এসে আগুনকে খুব আপসেট দেখালো।
মোম আগুনের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল- ঐ লোক পাগল হয়ে গিয়েছে। আমি জানি আপনি কেমন। আমার জন্য আপনি কি ফিল করেন তা জানি।
.
.
মোম মা আর আরুর সাথে সময় কাটাচ্ছিল। মোম তার শাশুড়ী মাকেও নামাজ কালামের দিকে টেনে এনেছে।
হঠাৎ একটা কাজের মেয়ে এসে মোম কে জানাল আগুন তাকে ডেকেছে।
আরু বলল- দেখেছো কত দরদ তোমার উপর। একটু পর পর তোমাকে দেখতে চায়। দাদাভাই তোমাকে এক মূহুর্ত না দেখে থাকতে পারেনা।
মোমের শাশুড়ী বলল- আমার ছেলের দিকে খেয়াল রেখো। ও যাকে পছন্দ করে তাদের খুব যত্নে রাখে কিন্তু ও যখন রেগে যায় তখন কিছু হুশ থাকেনা।
.
মোম রুমে গিয়ে দেখে খুব অন্ধকার। চাঁদের আবছা আলোয় বিছানায় গোলাপ ফুল গুলো দেখা যাচ্ছে। গোলাপের সুভাসে চারদিক মৌ মৌ করছে।
আগুন কে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
হঠাৎ আগুন মোম কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
মোমের গলায় মুখ গুজে বলল- সারপ্রাইজ টা কেমন হলো?
মোম শ্লেষ মাখা কন্ঠে বলল – খুব সুন্দর।
আগুন মোমকে কোলে তুলে সোজা বেডে গেলো।
মোম হাত দিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে হালকা।
আগুন মোমের কপালে একটা চুমু দিয়ে মোমের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।
মোম আগুন কে চিমটি দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। আগুন তাতে মোমের দুই হাত শক্ত করে ধরে রাখে।
আগুন মোমের মাঝে হারিয়ে যেতে লাগল…. মোম আগুনের স্পর্শে শিহরিত হয়ে যায়। মোমের হ্রদয়ের স্পন্দ দ্রুত বাড়ছে। আগুন নিজের মাঝে নেই। হঠাৎ কি একটা আওয়াজ হলো খুব জোরে।আগুন শুনতে পায়নি বাট মোম শুনতে পেয়ে একটু ভয় পেলো। মোমের কি যেন হলো, মোম আগুনকে খুব জোরে ধাক্কা মেরে বিছানা থেকে ফেলে দিলো। আগুনের ফ্লোরে পড়ে যাওয়াতে মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে।
মোম লাইট অন করে আগুনের রক্ত দেখে চিৎকার করে উঠে। মোম আগুনের কাছে গিয়ে বলল- আমি ইচ্ছে করে এমন করিনি। আপনাকে আঘাত করতে চাইনি বিশ্বাস করুন।
আগুন মাথায় হাত দিয়ে মোমের ব্যবহার দেখে অবাক হয়।আগুনের চোখ নিমিষেই রক্ত বর্ণ ধারণ করে। মোম আগুনকে দেখে শিউরে উঠে। আগুন দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মোম আগুনের পেছনে ছুটতে থাকে আর তাকে আটকানোর চেষ্টা করে বাট আগুন সোজা গাড়ি নিয়ে রাতে বের হয়ে যায়।
চলবে…….

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here