গল্প : একটি লাল গোলাপের হাসি
পর্ব : ৫ (শেষ পর্ব)
লেখক – Riyad Ahmod Bhuiya
তানহা মেসেজ দিলো,
-আচ্ছা, বিয়েটা কি ভেঙ্গে দেয়া যায়না?
ওর এমন মেসেজ দেখে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। বললাম,
-কি বলছেন এসব! আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
তানহা,
-দেখুন, আমি যা বলছি সব ভেবেচিন্তেই বলছি। দয়া করে এটি করুন আপনি। আর হ্যাঁ, আরেকটি কথা।
আমি,
-বলুন!
তানহা,
-জানতে চাইবেননা কেন আমি বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে বলছি?
আমি,
-আপনি আসলে কি বলছেন আর কেন এমন করছেন তার কিছুই মাথায় ঢুকছেনা আমার। দয়া করে সবকিছু ক্লিয়ারলি বলুন তো কি হয়েছে!
তানহা,
-আমি একধরণের ক্যানসারে আক্রান্ত। আজই এটা নিশ্চিত হলাম। এখনো পরিবারের কারোর কাছে বিষয়টি বলিনি। আপনি দয়া করে আর কোন প্রশ্ন না করে বিয়েটা কেন্সেল করে দিন! প্লিজ!
এবার আমি বললাম,
-ভালোবাসা বুঝেন?
তানহা,
-বাদ দিন তো আপনার এসব আবেগের বিষয়! আমি সবকিছু জানার পরও আপনাকে এভাবে ঠকাতে পারবোনা। আর আপনি যদি বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে না পারেন তাহলে আমি নিজেই ভেঙ্গে দিব।
ওর এসব কথা শুনে এবার বললাম,
-আচ্ছা, বিয়ে করতে হবেনা আমাকে। এবার বলুন আপনার কিসের ক্যানসার হয়েছে?
তানহা,
-মাফ করবেন। এসব কথা বলা যায়না।
আমি রেগে গেলাম এবার। বললাম,
-বলা যায়না মানে? আপনি মরে যাবেন আর সেটা আপনি বলতে পারবেননা? বলুন কি ক্যানসার হয়েছে আপনার?
অনেক জোড়াজুড়ির পর এবার তানহা মুখ খুললো। ও বললো,
-আমার ব্রেস্ট ক্যানসার হয়েছে। আজকেই বিষয়টি নিশ্চিত হলাম। আমি জানি এর কোন প্রতিরোধ নেই। এর থেকে বাঁচার আর কোন উপায় নেই আমার। আমাকে বিয়ে করে অযথাই নিজের জীবনটা বরবাদ করবেননা।
এবার আমি বললাম,
-কে বলেছে এর কোন প্রতিকার নেই? আমি আপনাকে ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ, সনাক্তকরণ, চিকিৎসা, প্রতিকার নিয়ে একটি লিখা পাঠাচ্ছি সেটা পড়ুন। আর হ্যা, বিয়ে হবে। এবং যথাসময়েই হবে। আপনার চিকিৎসা আমি করাবো।
কথাগুলো বলে ওকে লিখাটি পাঠালাম যেখানে কিনা, স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা ও প্রতিকারের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন ডা. হাসান শাহরিয়ার কল্লোল ও ডা. সানজিদা হোসেন।
ডা. হাসান শাহরিয়ার কল্লোল। বর্তমানে তিনি ঢাকার প্রেসক্রিপশন পয়েন্টে সার্জারি ও ক্যানসার সার্জারি বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
“প্রশ্ন : স্তন ক্যানসার কী? এর সচেতনতা বলতে আসলে কোন বিষয়গুলো পড়ে?
উত্তর : আপনি খেয়াল করে দেখবেন, আমরা কিন্তু অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে দিবস পালন করি। স্তন ক্যানসারের জন্য সম্পূর্ণ মাস (অক্টোবর) বরাদ্দ করা হয়েছে, এর গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে।
সারা পৃথিবীতে যত ধরনের ক্যানসার রয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে ক্যানসারটিতে মেয়েরা আক্রান্ত হচ্ছে, সেটি হলো, স্তন ক্যানসার। এতে মারা যাওয়ার হারও বেশি। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো, আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যে ক্যানসার হয়, এটি নির্ণয় করা যায় না। আপনার যদি পাকস্থলীতে ক্যানসার হয় বা কোলোরেক্টাল ক্যানসার হয় বা লিভার ক্যানসার হয়, এটি সহজে বোঝা যায় না। অনেকটা সময় পরে গিয়ে সেটা নির্ণয় হয়, সেটি অগ্রবর্তী পর্যায়ে চলে যায়। চিকিৎসা করা যায় না। অথচ স্তন ক্যানসার এমন একটি বিষয়, যেটি হয় শরীরের বাইরে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী বিষয়টি বুঝতে পারেন। অথচ তারপরও দেখা যাচ্ছে এটি সহজে ধরা যায়। এরপরও ধরতে পারছে না। আর এটিতেই বেশি বেশি রোগী মারা যাচ্ছে। অথচ এর চিকিৎসা রয়েছে। এর কারণেই এর ওপর এতো জোর দেওয়া হচ্ছে। স্তন ক্যানসারের সচেতনতা নিয়ে আমাদের দেশে যতটুকু না আলোচনা হয়, এর চেয়ে বেশি হয় পশ্চিমা বিশ্বে। কারণ, আগে বলা হতো স্তন ক্যানসার পাশ্চাত্যের রোগ। তখন দেখা যেত, যারা ককেশিয়ান বংশোদ্ভুত মানুষ বা সাদা চামড়ার মানুষ আমরা যাদের বলি, তাদের বেশি হচ্ছে। তবে গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, সারা পৃথিবীতেই এই বিষয়টি বদল হয়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে, আফ্রিকান বা এশিয়ান মানুষের মধ্যে স্তন ক্যানসারের রোগী বাড়ছে। এর হয়তো জিনগত কোনো বিষয় থাকতে পারে। সবচেয়ে বেশি যেটি বলা হচ্ছে, আমাদের নগরায়ন। আমাদের জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আমরা আরো বেশি পাশ্চাত্যমুখী হচ্ছি, আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এখন দেখা যাচ্ছে পাশ্চাত্যে স্তন ক্যানসারের পরিমাণ কমে আসছে। কারণ হচ্ছে, মানুষ সেখানে অনেক সচেতন। আমরা পাশ্চাত্যকে অনুকরণ করছি, তবে রোগগুলোকে নিচ্ছি। আমরা কিন্তু তাদের মতো সচেতন হচ্ছি না। এটি নিয়ে আমাদের দেশে আরো অনেক আলোচনা হওয়া উচিত। অনেক প্রচারণা পাওয়া উচিত। কারণ, এটি এমন একটি ক্যানসার যেটি প্রতিরোধযোগ্য। এটি যদি আগেভাগে নির্ণয় করতে পারেন, তাহলে চিকিৎসা করা সম্ভব।
আগেভাগে চিকিৎসা করতে পারলে স্তন ক্যানসারের রোগী পাঁচ থেকে ১০ বছর বেঁচে থাকে। ক্যানসার চিকিৎসার পর একজন রোগী যদি বেঁচে থাকে, আমরা ধরে নিই, সে ক্যানসার থেকে মুক্ত হয়ে গেছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ট্যাবু ভাঙা।
ছেলেদেরও কিন্তু স্তন ক্যানসার হয়। তবে দশমিক পাঁচ ভাগ ক্ষেত্রে। ১০০০ জনে পাঁচ জনের এমন হয়। আমাদের দেশে কোনো গবেষণা নেই। আমাদের প্রতি বছর কতজনের স্তন ক্যানসার হচ্ছে, এর কোনো ডাটা নেই। কিন্তু সম্পূর্ণ যে ডাটা ১০০০ জনের মধ্যে পাঁচজন ছেলেও কিন্তু আক্রান্ত হতে পারে। আর বেশিরভাগ যেহেতু মেয়েদের হয়, তারা প্রথমে এড়িয়ে যায়, তখন তারা বুঝতে পারে, এই চাকাটা এড়িয়ে যাওয়ার নয়। তখনও কিন্তু দেখা যায়, তারা চিকিৎসকের কাছে আসে না।
তারা তাদের স্বামীকেই হয়তো বলছে না। আর স্বামীকে বললে সে হয়তো গুরুত্ব দিচ্ছে না। যেহেতু স্তন ক্যানসারের একটি সমস্যা হলো এর থেকে কোনো লক্ষণ তৈরি হয় না, একটি চাকা, যেই চাকার কোনো ব্যথা নেই, কোনো রক্তপাত হয় না, তাই অনেকে চিকিৎসকের কাছে যায় না।
স্তনে একটি চাকা, যাকে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, কোনো সমস্যা নয়, প্রাথমিক অবস্থায় খুব ছোট থাকে, মার্বেলের মতো। কারণ, বলা হয়, অন্তত দুই থেকে আড়াই সেন্টিমিটার না হলে কিন্তু এটি হাতে পাওয়া যায় না। আমরা তখন হয়তো মেমোগ্রাম করলে পেতে পারি। হাতে যদি পেতে হয়, তাহলে অন্তত দুই থেকে আড়াই সেন্টিমিটার পেতে হবে।
প্রশ্ন : সেল্ফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশনের মাধ্যমে কি চাকার অস্থিত্ব বোঝা সম্ভব?
উত্তর : এটি এমন একটি পদ্ধতি যাতে কোনো টাকা খরচ হয় না। ঋতুস্রাব যে সময়ে হচ্ছে, সেই সময়ে পরীক্ষা করলে হবে না। বলা হয়, ১০ থেকে ১২তম দিনে পরীক্ষা করা সবচেয়ে ভালো। মাসে একটি দিনে আপনি নিজের স্তনকে একটু পরীক্ষা করবেন। যদি কোনো চাকার অস্তিত্ব খুঁজে পান দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। যখন একটি ছোট টিউমার কোথাও ছড়ায়নি, তখনো কিন্তু এর ভালো চিকিৎসা সম্ভব।
যেখানে স্তন ক্যানসার অনেক বেশি সেখানে তারা ম্যামোগ্রামকে স্ক্রিনিংয়ের পদ্ধতি হিসেবে নিয়েছে। ব্রেস্ট ক্যানসার সিঙ্গাপুর নামে তাদের আলাদা একটি প্রোজেক্টই রয়েছে। ৫০ বছর বয়সী নারীদের তারা স্ক্রিনিং করছে। সরকার একটি সাবসিটি দিয়ে খুব স্বল্প মূল্যে এটি করছে। প্রতিটি স্ক্যান একজন বিশেষজ্ঞকে দিয়ে তারা দেখাচ্ছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এই স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে প্রচুর রোগ নির্ণয় হচ্ছে। যখন একটি টিউমার শুধু ডট বা দানা, সেটিও কিন্তু মেমোগ্রাম দিয়ে নির্ণয় করা সম্ভব। মেমোগ্রামও এখন অনেক উন্নত হয়েছে। মেমোগ্রামে এখন টমোসিনথেসিস বলে একটি স্ক্যান রয়েছে, যেখানে যেই টিউমারগুলো এখনো তৈরি হয়নি, সেই পর্যায়েও নির্ণয় করা সম্ভব। আমাদের দেশে এখন এক থেকে দুটো সেন্টারে এটি পাওয়া যায়। আমাদের কিন্তু অনেকেরই সামর্থ রয়েছে। একটি মেমোগ্রাম করতে খুব টাকা লাগে না। হয়তো আমাদের সরকারি হাসপাতালে, এটি আমাদের জন্য সম্ভব নয়।
আমি প্রচুর রোগী পাই, যারা লেখাপড়া জানা। যারা কাজ করছেন, যারা কর্মজীবী নারী, যাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা রয়েছে, শুধু সচেতনতার অভাবে তারা কিন্তু এটি করছেন না। এমনকি লাম্প বা চাকা তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও তারা যাচ্ছেন না। সুতরাং সচেতনতার আসলে কোনো বিকল্প নেই। এটাই হলো, এই মাসে গুরুত্বপূর্ণ কথা। আমরা এই মাসটিকে আরো গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতে চাই। আমাদের দেশে হয়তো কোনো ডাটা নেই। তবে এখন ডাব্লিউএইচও বলছে, ১২ হাজার নতুন রোগী যোগ হচ্ছে। তাহলে এই যে বড় সংখ্যক দল, এদের আমরা কীভাবে চিকিৎসা করবো। সেই নীতিমালা নেওয়ার সময় আমাদের এসেছে।
প্রশ্ন : কখন স্তন ক্যানসারের স্ক্রিনিং করতে হয়?
উত্তর : বিভিন্ন দেশে তাদের বয়সের উপর নির্ভর করে এটি করা হয়ে থাকে। প্রতিটি দেশে যেই বয়সে স্তন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি, সেই দেশগুলো সেভাবে তাদের একটি গাইডলাইন তৈরি করে। যেহেতু আমাদের দেশে কোনো গাইডলাইন নেই, আমি হয়তো একটি বয়স ধরলাম, ৪০ বা ৪৫ বছর। এরপর আপনি প্রতি বছরে একবার মেমোগ্রাম করবেন। তো দুটো পদ্ধতি। একটি হলো প্রতি মাসে আপনি নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। খুবই সহজ। ইউটিউবে এখন প্রচুর ভিডিও রয়েছে। কেবল সেল্ফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন লিখে আপনি যদি খোঁজেন, ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও রয়েছে। এটি দেখে আপনি বুঝতে পারবেন, কীভাবে করতে হবে। কেবল একটি বিষয় আমি বলব, আপনি কখনো দুই আঙুলের মাঝখানে এটি পরীক্ষা করবেন না। আপনি যদি এভাবে চেক করেন, দুই আঙুল দিয়ে আপনি যেখানেই চেক করেন, মনে হবে চাকা রয়েছে। হাত সোজা থাকবে, কেবল সেটি চাপ দিয়ে দেখতে হবে।
দ্বিতীয় হলো, মেমোগ্রাম। মেমোগ্রাম হলো স্তনের এক ধরনের এক্স-রে। একটু অন্য রকম এক্স-রে। উচ্চ মাত্রার এক্স-রে। স্তনের ভেতরে কোনো রকম ডট বা মাইক্রোক্যালসিফিকেশন থাকলে, অর্থাৎ কোনো দানা তৈরি হয়ে থাকলে, এটা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা যায়। মাইক্রোক্যালসিফিকেশন যখন পাই, এর নির্দিষ্ট একটি ধরন রয়েছে, রেডিওলজিস্টরা বলে দেন এটি সন্দেহজনক। এর পর্যায় ভাগ করা রয়েছে। যদি সেরকম হয়, আমরা বলি মাইক্রোক্যালসিফিকেশন থেকে বায়োপসি নিয়ে বোঝা যায় ক্যানসার হয়েছে। আর আপনি যদি এরকম আগেভাগে ধরতে পারেন, তাহলে স্তন কেটে ফেলার কোনো দরকার নেই। এখন বাংলাদেশে আমরা ব্রেস্ট কনজারভিং সার্জারি করছি।
এটা শরীরের একটি অঙ্গ। আমরা কিন্তু এর মানসিক চাপটা চিন্তা করি না। জন্মের পর থেকে সে যেভাবে তার শরীরকে দেখে এসেছে সেটি পরিবর্তন হয়ে আসছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় থাকে না। কারণ, আমাদের কাছে যে রোগীগুলো আসে, তারা যে অবস্থায় আসে, সে অবস্থায় ব্রেস্ট কনজারভিং সার্জারির বিষয়গুলো ঠিকঠাক হয় না। সুতরাং যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে, তাহলে স্তন রেখে দেওয়া যায়। শুধু টিউমারকে আপনি যদি নিয়মমতো ফেলে দিতে পারেন তাহলে হবে। আমরা এখন অস্ত্রোপচারের সময়ই নিশ্চিত হতে পারি যে টিউমারটি ফেলে দিতে পারলাম কি না। তাহলে দেখুন, কেবল টিউমারটি ফেলে দেবেন, ফেলে দিয়ে রেডিয়েশন নিলে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন।
প্রশ্ন : স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে ব্যায়ামের ভূমিকা কী?
উত্তর : স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে ব্যায়ামের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। স্তন ক্যানসারের অন্যতম একটি ঝুঁকির কারণ হলো, স্থূলতা। সুতরাং একে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
প্রশ্ন : চিকিৎসা পরবর্তী কোনো পরামর্শ কি থাকে রোগীদের জন্য?
উত্তর : হ্যাঁ, থাকে। অস্ত্রোপচারের পরে স্থূলতা নিয়ে আমরা সাধারণত পরামর্শ দেই না। চিকিৎসার পর আমাদের ফিজিওথেরাপি লাগে। অস্ত্রোপচারের পর অনেকে হয়তো ব্যথায় হোক বা ভয়ে হোক, হাত ঠিকমতো নাড়াতে পারেন না, তখন একমাস বা দেড় মাস পরে হয়তো জায়গাটি শক্ত হয়ে যায়। এ জন্য আমরা ওই সময় ফিজিওথেরাপি নিতে বলি।
প্রশ্ন : খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে কোনো পরামর্শ রয়েছে?
উত্তর : আসলে বলা হয়ে থাকে, পশ্চিমা ধাঁচের ডায়েট। যেই খাবারগুলো পরিশোধিত, যেমন, সাদা ময়দা, মেশিনে ছাঁটা চাল, এগুলোতে আঁশ তেমনভাবে থাকে না। এগুলোর পরিবর্তে আমরা বলি, লাল আটা, লাল চাল খেতে। সারা পৃথিবীতে এখন কিন্তু বাদামি রুটি আবার চলে আসছে। সাদা রুটি মানে আপনি পরিশোধিত একটি খাবার খাচ্ছেন। এর মতো আঁশ থাকছে না। আঁশ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। বেশি বেশি করে পানি পানের অভ্যাস করতে হবে। এগুলোর সঙ্গে সরাসরি হয়তো স্তন ক্যানসানের সম্পর্ক নেই। তবে দেখা গেছে যে পশ্চিমা ধাঁচের খাবারের সঙ্গে স্তন ক্যানসারের সম্পর্ক রয়েছে। শুরুতে ধরতে পারলে স্তন ক্যানসার থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।”
(সোর্স- উপরোক্ত সাক্ষাতকারটি এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৯২ তম পর্বে প্রচারিত হয়।)
পুরো লিখাটি পড়ার পর তানহা রিপলাই দিলো।
-হুম, পড়লাম পুরোটা। কিছু বলার নেই আমার। আপনার যা ভালো মনে হয় করুন!
আমি বললাম,
-এবার ঘুমান।
তানহা,
-আচ্ছা, শুভ রাত্রি।
আমি,
-শুভ রাত্রি।
এরপর আর কোন বাঁধাই আমাদের বিয়েতে আর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। যথাসময়েই বিয়ে হয়। তবে, বাসরে ঘুমটা উঠিয়ে তানহার যে হাস্যোজ্জল মুখ আমি দেখি সেটাকে যদি সদ্য ফোটে ওঠা একটি লাল গোলাপের হাসির সাথে তুলনা করি সেটিও কম হয়ে যাবে!
———সমাপ্ত———
লেখকের কিছু কথা-
গল্পটি লিখার আগে আমার উদ্দেশ্য ছিল কোন একটি গল্পের মাধ্যমে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় কিনা যেগুলোকে সচরাচর সবাই এড়িয়ে যায়। আমি জানিনা কতটা সফল হয়েছি। পুরো গল্পে দেয়া তথ্যগুলোর সোর্স আমি সাথে উল্লেখ করে দিয়েছি। এর পেছনে অনেকটা খাটতে হয়েছে। আর যদি লজ্জার কথা বলেন তাহলে আমি বলব, মা-বোন সবারই আছে। শুধুমাত্র লজ্জার কারণে কিছু বিষয় সামনে না আসার কারণে অনেকেই মারা যান। আর হ্যা, গল্পের যথার্থতা নিয়ে পাঠকদের প্রতিক্রিয়া জানাটা প্রতিটি লেখকের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গল্প নিয়ে বা লিখার ধরণ বা উপস্থাপন নিয়ে আপনাদের ছোট থেকেও ছোট যেকোন গঠনমূলক সমালোচনা, মতামত বা পরামর্শ আমার লিখার পথচলাকে আরো মসৃণ করতে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস। চাইলেই রোমান্টিকতা আরো বৃদ্ধি করা যেত তবে, লেখকের উদ্দেশ্য যে গল্পে যেমন তার বেশি লিখা ফুটিয়ে তুলা দুষ্কর। অন্তত আমি পারিনা সেটা। পুরো গল্পে যত ভুলত্রুটি হয়েছে সবকিছুর জন্য আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। দোয়া করবেন আমার জন্য। ধন্যবাদ সবাইকে।
-রিয়াদ আহম্মদ
অনেক ভালো হয়েছে গল্পটা। অনকে কিছু জানতে পেরেছি তার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।