তোকে_চাই
পার্ট_৪
#লেখনীতে_সুহাসিনী_চৌধুরী(ছদ্মনামের লেখিকা)
হসপিটালের করিডোরে বসে আছে সবাই।সবাই কান্না করছে।কিন্তু রিক্ত এখনো চুপ করে বসে আছে।আর তার চোখ দুটি স্হির হয়ে আছে আইসিইউ রুমের দিকে।কখন অপারেশন কমপ্লিট হবে তার অপেক্ষা করছে।রিক্তর বুক ঢিপঢিপ করছে।কেন করছে তা রিক্ত জানেনা।
এসইপি সাহেব অর্থাৎ মিস্টার খান,রোজের গুলি লেগেছে এই খবরটা তাকে এখনো দেওয়া হয়নি।মূলত এতোসবের মধ্য থেকে এই ব্যাপারে কেউ জানাইনি তাকে তার উপর রাইতার ব্যাপারটা তো আছেই!সব মিলিয়ে এখানে আর কোনো গন্ডগোল চায়না কেউ।তাই রোজ আর রাইতার ব্যাপারে শুধু ১২জনের এই টিম ছাড়া আর কেউ জানেনা।
এর মাঝেও একটা ভালো খবর হচ্ছে ঐ পাচারকারী গ্যাংকে ধরতে সক্ষম হয়েছে সিআইডি টিম।ইতোমধ্যেই তাদের সবাইকে পুলিশের কাছে হ্যান্ডওভার করা হয়েছে।কিন্তু রিক্তকে যে ছেলেটা গুলি করতে যেয়ে রোজকে শ্যুট করেছে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তাকে ধরার আগেই পালিয়ে যায় সে।আর বাচ্চাদেরসহ সকল মেয়েকে সুন্দরভাবে তাদের মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
রোজের ট্রিটমেন্ট চলছে।রোজের বুকের পাশে লেগেছে গুলিটা।অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে।বুকের পাশে লেগেছে বিধায় সবাই ভয়ে আছে যদি খারাপ কিছু হয়ে যায়?এর মাঝেই অপারেশন রুম থেকে তারাহুরো করে বেরিয়ে আসলো একজন নার্স।এসেই বলতে লাগলো,
“এখানে ‘ও’ নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের কেউ আছেন?পেশেন্টের অবস্থা খুব খারাপ।এখনই যদি দুই ব্যাগ রক্ত না দেয়া হয় তবে তাকে বাঁচানো খুব মুশকিল হবে আপনারা যত দ্রুত সম্ভব রক্তের ব্যবস্থা করুন।”
এই বলেই চলে গেল নার্স।
শুভ বসা থেকে দাড়িয়ে বললো,
“এখন কি হবে?’ও’ নেগেটিভ রক্ত তো খুব রেয়ার।”
মিরা কাঁদতে কাঁদতে বললো,
“প্লিজ শুভ,শান্ত তোমরা কিছু করো।”
মেরিন বললো,
“যে করেই হোক আমাদের রোজকে বাঁচাতে হবে।”
সাইফ রাইতাকে চেকআপ করাতে গিয়েছিল এই হসপিটালেই।যখন রাইতাকে নিয়ে করিডোরের সামনে আসলো তখন শুনতে পেলো রাইসা বলছে,
“আমাদের এক্ষুণি সব ব্লাড ডোনেশন গ্রুপ গুলোই খোঁজ নিতে হবে।সবাই বাকি হসপিটাল গুলোতে গিয়ে চেক করো।”
রাইতার কাঁদতে কাঁদতে গলা বসে গেছে।ভাংগা ভাংগা গলায় বললো,
“রক,রক্তের গ,গ্রুপ কি?”
সাহাফ চট করে বলে উঠলো,
“‘ও’ নেগেটিভ”
রাইতা কান্নার মাঝেও আলতো হেসে বললো,
“কাউকে কোথাও যেতে হবে না।আমি রক্ত দিবো।”
এই কথা শিনে সবাই যেন দেহে প্রাণ ফিরে পেলো।কিন্তু সেখানেও ঘটলো আরেক বিপত্তি।
রিক্ত এতোক্ষণ চুপ করে ছিলো।কিন্তু রাইতার কথা শুনে কঠোর কন্ঠে জবাব দিলো,
“সাইফ ওকে বলে দে বারাবাড়ি না করতে।ও নিজেই দুর্বল।তুই ওকে নিয়ে হোটেলে ফিরে যা।”
সাইফ বললো,
“কিন্তু ভাইয়া তাহলে রোজের কি হবে?”
“আমি ব্লাড ডোনেশন গ্রুপ গুলোই খোঁজ নিচ্ছি।পেয়ে যাবো আশা করি৷”
রাইতা রিক্তকে কিছু না বলে সাইফের দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকালো।যার অর্থ এই,
“ভাইয়ু আমি রক্ত দেয় প্লিজ।”
সাইফ নিজেও নিরুপায়।ও যে রিক্তর মুখের উপরে কোনো জবাব দিতে পারবে না।
“কি হলো সাইফ?এখনো এখানে দাড়িয়ে আছিস কেন?যা ওকে নিয়ে চলে যা।”
সাইফ আর কোনো উপায় না পেয়ে রাইতাকে নিয়ে হোটেলে ফিরে গেলো।
অন্যদিকে সবাই এক প্রকার হতাশা নিয়েই খোঁজ নিতে লাগলো ব্লাড ডোনেশন গ্রুপ আর হসপিটাল গুলোতে।
~রাত ১টা~
কারো চোখে ঘুম নেই।সবাই চুপচাপ বসে আছে।রাত ১১ থেকে সাড়ে ১২ টা অবধি সব জায়গায় নেওয়া শেষ।কোথাও ‘ও’ নেগেটিভ রক্ত নেই।রিক্তর জন্য আজ রোজ নিজের জীবন বাজি রেখেছে।নিজের কথা একবারো ভাবেনি।অথচ আজ এই রোজের জন্যই কেউ কিছু করতে পারছেনা।নিজেদেরকে আজ খুব অসহায় লাগছে!
মিরা,রুমকি,জেরিন এখনো খুঁজে যাচ্ছে রক্ত।মেরিন আর রাইসা ওদের এফবি গ্রুপ গুলোতে পোস্ট করেছে যাতে রক্ত পাওয়া যায়।কিন্তু সেখানেও ব্যর্থ ওরা।’এ’ নেগেটিভ রক্তের স্যামপেল পাওয়া গেলেও ‘ও’ নেগেটিভ রক্তের কোনো খোঁজ এখনো অবধি পাওয়া যায়নি এদিকে রোজের অবস্থা খুবই ক্রিটিকাল।যে কোনো মুহূর্তে বাজে কিছু হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ডক্টর আলফাজ।
অন্যদিকে রিক্ত ভাবছে কি করবে।একদিকে ওর কলিজা অন্যদিকে ওর….ওর?আদৌ কি ওর?না তো।
,ওর তো কেউ হয়না রোজ।তবে তার জন্য কেন মনটা এতো অস্থির হয়ে উঠেছে?কেন মনের ভেতরে এমন ঝড় বইছে?রোজ রিক্তকে বাঁচাতে গিয়ে আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এ জন্য?হ্যা,এজন্যই হবে।তাছাঠা আর কিছুই না।এই বলেই নিজের মনকে সান্ত্বনা দিলো রিক্ত।
রিক্ত অনেক ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফোন দিলো সাইফকে।সাইফ ফোন রিসিভ করতেই বললো,
“রাইকে নিয়ে এক্ষুণি হসপিটালে আয়।”
“কেন?”
“কারণ রোজকে রক্ত দিতে হবে।সারারাত খুঁজেও কেউ ‘ও’ নেগেটিভ রক্ত পায়নি।”
“আচ্ছা আসছি আমরা।”
রাত দুইটার দিকে সাইফ আর রাইতা আসলো হসপিটালে।তৎক্ষনাৎ রাইতাকে নিয়ে যাওয়া হলো হসপিটালের একটা রুমে।এবং সেখানে ওর ব্লাড টেস্ট করে ডক্টররা শিউর হয়ে নিলো যে রাইতার ব্লাড গ্রুপ আসলেই ‘ও’ নেগেটিভ কিনা।অতঃপর রাইতাকে একটা বেডে শুয়িয়ে দিয়ে নার্স ক্যানোলা লাগিয়ে দিলো রাইতার হাতে।আস্তে আস্তে রক্ত নিয়ে অতি দ্রুত ছুট লাগালো রোজের কাছে।
ঘড়ির কাটায় এখন ভোর পাঁচটা।সবাই চেয়ারে বসে বসে ঝিমাচ্ছে।শুধু দুই চোখের পাতা এক করতে পারছে না রিক্ত।মনটা কেমন ছটফট করছে।ওও শুনেছে মন খারাপ থাকলে নাকি নামাজ পড়ে আল্লাহ’র কাছে দোয়া করলে মন ভালো হয়ে যায়।তাই ফজরের আযান দেওয়ার সাথে সাথে রিক্ত হসপিটালের পাশের মসজিদে গিয়ে চট জলদি ওযু করে এসে নামায পড়তে লাগলো।নামায শেষে আল্লাহ’র দরবারে দুই হাত তুলে রিক্ত মোনাজাত করতে লাগলো।
“হে আল্লাহ!তুমি তো পরম দয়ালু।আমি কখনো সেভাবে নামায পড়িনি।কিন্তু আজ পড়লাম।আমি কখনো তোমার কাছে কিচ্ছু চাইনি তবে আজ চাইছি।তুনি দয়া করে রোজকে সুস্থ করে দাও।আমি জানিনা কেন এক মুহূর্তের জন্যও ওর মায়াবী মুখটা ভুলতে পারছি না।কেন ভুলতে পারছিনা?সেটা আমি জানিনা।আমি শুধু জানি ওর কিছু হয়ে গেলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।কারণ ওর এই অবস্থার জন্য যে আমি দায়ী।আমাকে বাঁচাতে গিয়েই তো রোজ আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।তাই তুমি ওকে সুস্থ করে দাও।”
এই বলেই রিক্ত মোনাজাত শেষ করে আবার হাঁটা দিলো হসপিটালের দিকে।হসপিটালে যেয়ে দেখলো সবাই কেমন থমথমে মুখ নিয়ে বসে আছে।কারো মুখে কোনো কথা নেই।
এর মধ্যেই ডক্টর আলফাজ বেরিয়ে এলেন।মুখটা গম্ভীর করে রেখেছেন তিনি।ডক্টরকে আসতে দেখেই সবাই উঠে দাড়ালো।রিক্ত ডক্টর আলফাজের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“ডক্টর রোজ এখন কেমন আছে?”
সবাই অতি আগ্রহের সহিত তাকিয়ে আছে ডক্টর আলফাজের দিকে।প্রত্যাশা একটায়!ডক্টর যেন ভালো কোনো সংবাদ দেয়।সবার অপেক্ষার প্রহরের সমাপ্তি ঘটিয়ে ডক্টর আলফাজ বললেন…..
চলবে???
বিঃদ্রঃআমি আসলেই বাকরুদ্ধ।গল্পের শুরু থেকেই অনেকের সাপোর্ট পেলেও বেশ কয়েকজন বাজে কমেন্ট করেছেন।তা মানিয়ে নিয়েছি আমি।কিন্তু Roast? আমিই হয়তো সেই ব্যক্তি যে কিনা প্রথম গল্প লিখতে গিয়েই Roast এর শিকার হয়েছি।আমি কি এতোটায় বাজে গল্প লিখছি যে আমাকে নিয়ে ট্রল করা হচ্ছে?যে ব্যক্তি আমাকে নিয়ে ট্রল করেছে তার উদ্দেশ্যে বলছি,আপনার কিছু ফ্যান,ফলোয়ার আছে বলেই যে অহংকারের বসে একজন নবীণ রাইটারকে নিয়ে Roast করবেন তা কিন্তু নাহ!নিজেকে বড্ড Roaster ভাবছেন আপনি।কিন্তু ভুলে যাবেন নাহ কাউকে নিয়ে বিনা দোষে তাকে হাসির পাত্র বানিয়ে তাকে Roast করার অধিকার আপনার নেই।
“অহংকার পতনের মূল”।
সত্যিই এফবিতে গল্প লেখার আর কোনো মন-মানসিকতা নেই আমার।?????