ভালোবাসায়_পাগলামি
Part:2+3
Writer :Maliha Islam Tafsi
সাবিহা বলে চিৎকার করে রুমে গিয়ে ডাকতে শুরু করল আফরান। কিন্তু সাবিহা রুমে কোথায় ও নেই । সারাবাড়ি তন্ন তন্ন করে খুজল আফরান সাবিহা কে কিন্তু কোথায় ও নেই সে। কোথায় গেল মেয়েটা এই অসুস্থ অবস্থায় তা ভেবে চিন্তায় পড়ে গেল আফরান । চিৎকার করে আফরান ডাকতে লাগল সব সার্ভেন্ট দের কে। সবাই করে জিজ্ঞাসা করতে লাগল সাবিহা কোথায়? আমি একটা কাজে বাহিরে গেছি আর তোমরা একটা মেয়ে কে পাহারা দিয়ে রাখতে পারলে না?
– স্যার আমরা পাহারা দিয়েছি ঠিকভাবেই । আর ম্যাম কে আমরা কোথায় ও যেতে দেখে নি । ( একজন গার্ড বলল)
– তাহলে সাবিহা গেল কোথায়?
রাগে ড্রইং রুমের সবকিছু ভাঙা শুরু করল আফরান । সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে ভয়ে। কারণ সবাই জানে আফরান কে থামানোর সাহস কারো নেই । আফরান ফুলদানি টা ছুরে সামনের দিকে মারতে যাবে তখনি সাবিহা সামনে এসে দাঁড়াল । সাবিহা কে দেখে আফরান টেনে ওকে রুমে নিয়ে চেপে ধরল দেয়ালের সাথে। আফরান চোখ দুটি রাগে লাল হয়ে আছে মনে হচ্ছে যেন আগুনে জ্বলতেছে।
সাবিহাকে খুব জোরে দেয়াল এর সাথে চেপে ধরেছে আফরান । সাবিহা যে ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে আছে সে দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই তার।
– কোথায় ছিলে তুমি? ( ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করল আফরান )
– আআআ খুব লাগছে আমার। প্লিজ ছাড়ুন আমাকে।
– আগে বল আমার অনুমতি ছাড়া কোথায় গিয়েছিলে তুমি? (রেগে)
– ছাদে গিয়েছিলাম। রুমে কেমন যেন দম আটকে যাচ্ছিল তাই খোলা আকাশের নিচে গিয়েছিলাম। এখন প্লিজ ছাড়ুন আমাকে ক্ষত জায়গায় আর কত আঘাত করবেন ।
সাবিহার কথায় আফরান সাবিহা কে ছেড়ে দিয়ে বারান্দায় গিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে শুরু করল। সিগারেট এর গন্ধ পেয়ে সাবিহা বারান্দায় গিয়ে বলতে শুরু করল-এইসব বাজে অভ্যাস আপনার মতো ছেলেদের ই হয়। এখন খাওয়া বন্ধ করে দিন তাহলে সুস্থ থাকবেন এইসব খেলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
আফরান সিগারেট টা ফেলে দিয়ে সাবিহা কে বলল- তুমি কবে থেকে আমার জন্য এত চিন্তা কর?
-আপনার জায়গায় অন্য কেউ হলেও এই কথা টা বলতাম।
– অন্য কেউ মানে? (রেগে গিয়ে )
– কেউ না।।
(সাবিহা ভয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ঢুকল)
আফরান ওয়াশরুমের দরজায় নক করে বলল- তাড়াতাড়ি বের হয়ে নিচে খেতে আসো নাহলে খুব খারাপ হবে।
আপনি আর কি ক্ষতি করবেন আমার মি. আফরান । আপনার কারণে আমি আমার ভালোবাসার মানুষ কে হারিয়েছি। আমি আপনাকে কখনও ভালোবাসব না কখনও না। আপনি ও বুঝবেন একদিন ভালোবাসা না পাওয়ার কষ্ট । ( মনে মনে বলল সাবিহা )
সাবিহা নিচে এসে দেখল আফরান খাবার নিয়ে বসে আছে। সাবিহা ও চেয়ার টেনে বসে পড়ল।
– তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও। তোমাকে বাসায় নিয়ে যাব।
– সত্যি??? ( খুশি হয়ে)
– খুশি হওয়ার কিছু নেই । তোমার বাবার সাথে দেখা করে আমার সাথে আবার চলে আসবা তুমি ।
– মানে???? ( অবাক হয়ে )
– মানে টা খুব সোজা। এখন থেকে তুমি আমার বাসায় থাকবা ।
– থাকব না আমি। কখনও না।
– যদি আর একটা কথা বেশি বল তাহলে তোমার আম্মুর চিকিৎসা বন্ধহয়ে যাবে।
সাবিহা আর একটা কথাও বলল না। কারণ তার আম্মুর চিকিত্সা যে খুব গুরুত্বপূর্ণ । তার আম্মুর কিছু হলে বাঁচবে না সে।
চলবে…….
#ভালোবাসায় পাগলামি
#part: 3
#writer:Maliha Islam Tafsi
সাবিহা বাসায় এসে জরিয়ে ধরল তার বাবা কে। তার বাবা তাকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিল। তারপর সাবিহা কে জিজ্ঞেস করল স্যার আসে নি তোর সাথে? তুই কি একা এসেছিস মা?
– না বাবা তোমার স্যার আসছে তো । বাহিরে আছে।
ওই তো স্যার আসছে বলল সাবিহার বাবা ফরিদ সাহেব।
স্যার কেমন আছেন?
– ভালো। আপনি কেমন আছেন?
– ভালো আছি।
– আপনার সাথে জরুরি কিছু কথা আছে।
– জ্বী বলুন স্যার ।
সাবিহা ভিতরে যাও বলল আফরান ।
ভিতরে যাব কেন? আমি এইখানেই থাকব।
– ভিতরে যেতে বলছি ভেতরে যাও (ধমক দিয়ে আফরান )
সাবিহা ভয়ে ভিতরে চলে গেল।
বানর হনুমান একটা আমাকে ধমক দেয় সবসময় । কি মনে করে নিজেকে? বানর কোথাকার ( একা একা বিড় বিড় করে কথা গুলো বলল সাবিহা )
(আফরান চৌধুরী একজন নামকরা বিজনেসম্যান । কোনো কিছুর অভাব নেই তার। সবসময় তার সাথে দশ বারো জন বডিগার্ড থাকে। সে বডিগার্ড নিয়ে চলাফেরা করতে পছন্দ করে না কিন্তু তার মায়ের আদেশ সবসময় সাথে বডিগার্ড রাখতে হবে। কারণ এত বড় বিজনেসম্যান শত্রু র তো আর অভাব নেই । মায়ের আদর্শ ছেলে সে। বাবা ছোট থাকতেই মারা গেছেন তখন থেকেই মায়ের আদরে বড় হয়েছে সে।)
( সাবিহা একজন সাধারণ পরিবারের মেয়ে।সাবিহার মা অসুস্থ প্যারালাইজড। তাঁর বাবাই তার দেখা শুনা করে। তার যেই অফিসে জব করে সেই অফিস এর বস হল আফরান )
আফরান : আপনাকে বলেছিলাম যে সাবিহা যেন বাড়ির বাহিরে না যায় যতদিন না আমাদের বিয়ে হচ্ছে ততদিন ( কঠোর ভাবে বলল)
-সরি,,,স্যার । আসলে ও খুব অনুরোধ করছিল তাই আর না করতে পারি নি ( নিচের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলল ফরিদ সাহেব)
– আর কখনও আমার পারমিশান ছাড়া আমার হবু বউ যেন বাড়ির বাহিরে না যায় । আজকে ক্লিয়ার করে বলে গেলাম।
– ওকে স্যার আর এমন হবে না।
– আরেকটা কথা শুনুন
– জ্বী স্যার বলুন?
– আপনার বাড়ির সামনে এখন থেকে আমার চারজন বডিগার্ড থাকবে। আর যেন কোনো ভুল না হয়।
– ওকে,,,স্যার ।
ওফফ ওই বানর টা এতক্ষণ ধরে কি কথা বলছে বাবার সাথে? ( বিড়বিড় করে বলল সাবিহা )
– বানর টা বুঝি তোমাকে খুব বেশি জালায়?
-,,,,,,,,,,,,,
– কি হল এখন চুপ করে আছো কেন?
– আসলে,,,,,,,,
– আসলে কি শুনি?
– আসল,,,,,,,,একটু দূরে যান প্লিজ (ভয়ে)
-কেন দূরে যাব কেন?
(কথা বলতে বলতে একদম সাবিহর কাছে চলে আসল আফরান । সাবিহা ভয়ে পিছনে যেতে যেতে একদম দেয়ালে গিয়ে পিঠ ঠেকল। আফরান সাবিহার ঠোঁটের দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আনল নিজের ঠোঁট । তারপর সাবিহার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিল। দশ মিনিট পর সাবিহা কে ছাড়ল আফরান । সাবিহা জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে আর বলছে- মাগো মা আমার ঠোঁট টা খেয়ে ফেলল রাক্ষস টা
– আমি রাক্ষস? (রেগে)
-না না,,,,,আপনি তো খুব ভালো।আর খুব স্মার্ট । সব মেয়েরা তো আপনার জন্য অনেক পাগল। আপনার নাম শুনলেই তো আমার ফ্রেন্ডরা খুশিতে পাগল হয়ে যায় ।
-তাই নাকি??? (সাবিহার দিকে ঝুকে বলল)
– হুম তাই।
আফরান সাবিহা কে কিছু বলতে যাবে তখনি সাবিহার ফোনটা বেজে উঠল। আফরান সাবিহার ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল আশফাত এর নাম।
( আশফাত সাবিহার বয়ফ্রেন্ড। আশফাত কে সাবিহা খুব ভালোবাসে। কিন্তু সাবিহা কে নিজের চেয়ে ও বেশি ভালোবাসে আফরান)
সাবিহার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে ফ্লোরে ছুড়ে মারল আফরান। ফোনটা ভেঙে গেল।
একি করলেন আপনি?
– তোকে কতবার বলছি যে ওর সাথে কোনো যোগাযোগ করবি না। তুই শুধু আমার । আর কান খুলে শুনে রাখ কালকে আমাদের বিয়ে।(রেগে)
সাবিহা কে বিছানায় ছুড়ে ফেলে রুম থেকে রাগে বের হয়ে গেল আফরান ।
আপনি বিয়ের আয়োজন করেন। কালই বিয়ে হবে।
– কিন্তু স্যার,,,,,,,
-কোনো কিন্তু না?
রেগে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল আফরান,,,,
চলবে,,,,,,,,,
–