ভালোবাসায়_পাগলামি Part:4+5

0
5161

ভালোবাসায়_পাগলামি
Part:4+5
Writer:Maliha Islam Tafsi
.
আফরান যাওয়ার পর ফ্লোরে বসে কান্নায় ভেঙে পড়ল সাবিহা । কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না সাবিহা । ও যে আশফাত কে ভালোবাসে । আশফাত কে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে চায় না সে। মোবাইল টা তো আফরান ভেঙে ফেলেছে এখন কিভাবে ফোন দিবে সে আশফাত কে। হঠাৎ তার মাথায় আসল বাবার ফোন দিয়ে কল দিবে কিন্তু তার বাবা যে শুধু আফরান অর্থ্যাৎ স্যার এর কথা শুনে। তার বাবা কি দিবে তাকে? যেভাবেই হোক আশফাত কে ফোন করতে হবে নাহলে যে কাল আফরান ওকে জোর করে বিয়ে করে ফেলবে।

সাবিহা তার বাবার রুমে এসে মোবাইল খুঁজতে লাগল। তারপর মোবাইল টা বিছানার ওপর দেখতে পেল। তাড়াতাড়ি করে মোবাইল টা নিয়ে আশফাত এর নাম্বারে ডায়াল করল সাবিহা

– হ্যালো
– হ্যালো আশফাত!!!!আমি সাবিহা
– হ্যাঁ সাবিহা বলো । তুমি আমার ফোন রিসিভ করো নি কেন? আর তোমার নাম্বার বন্ধ দেখাচ্ছে কেন?

-আশফাত! ! ( কান্নায় ভেঙে পড়ল সায়নী )
– তুমি কান্না করছো কেন?
– স্যার আমাকে কালকেই বিয়ে করবে বলছে। বাবা কে বলেছে বিয়ের আয়োজন করতে। আর এইটা বাবার নাম্বার । তুমি আমাকে এখান থেকে দূরে কোথাও নিয়ে যাওপ্লিজ । আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না।

– ঠিক আছে। তুমি যেইভাবেই পার আজকে রাত এগারো টার দিকে তোমাদের বাড়ির পিছনের রাস্তায় থেকো আমি তোমাকে ওইখান থেকে নিয়ে যাবো ।

– ঠিক আছে।

আশফাত এর কথা মতো সাবিহা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় বিশ মিনিট পরে আশফাত আসল । আশফাত কে দেখে সাবিহা খুশিতে এগিয়ে গিয়ে দেখল তার পাশে গাড়িতে একটি মেয়ে বসে আছে। মেয়ে টি কে দেখে অবাক হয়ে যায় সাবিহা । মেয়ে টি দেখতে খুব সুন্দর কিন্তু কেমন যেন খারাপ ড্রেস পড়ে আছে মেয়েটি । সাবিহা আশফাত কে জিজ্ঞাসা করল মেয়ে টি কে?

– আমার গালফ্রেন্ড । ( মেয়েটির গালে কিসকরে)

– তোমার গালফ্রেন্ড মানে?*(কান্না জড়িত কন্ঠে)

– তুমি কি ভেবেছিলে তোমার মতো মেয়েকে বিয়ে করব আমি? হাহাহা । আমি তো শুধু তোর মতো মেয়েকে ব্যবহার করে ফেলে দেই। আর তুই কি জানিস তুই তো আমার টাকার মেশিন ছিলি

-মানে??? (অবাক হয়ে)

– আফরান চৌধূরী কে জিজ্ঞেস করিস। আপাতত এখন আমার সাথে চল । তুই আমার সাথে গেলেই তো টাকা আসবে আমার কাছে।

– না কোথায় ও যাবো না আমি( চিৎকার করে)

বাসরে বউ সেজে বসে আছে সাবিহা । চোখ দিয়ে শুধু অশ্রু জরছে তার।

বাসরে বউ সেজে বসে আছে সাবিহা। চোখ দিয়ে তার অশ্রু ঝরছে। কারো দরজা খোলার শব্দে সে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখল আফরান প্রবেশ করছে রুমে । আফরান কে দেখে তার গলা শুকিয়ে গেল। আজকের হয়তো আফরান মেরেই ফেলবে ওকে।
.
.
.
.
আফরান দরজা লাগিয়ে সাবিহার কাছে এসে বসল
সাবিহা আফরান কে দেখে ভয়ে ঘুঁটিসুটি মেরে বসল। আফরান সাবিহার দিকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল খেয়ে নাও পানি টা। সাবিহা ভয়ে ভয়ে গ্লাস টা আফরান এর হাত থেকে নিয়ে একটানে খেয়ে ফেলল। আফরান সাবিহার কে জিজ্ঞাসা করল আর খাবে কিনা? সাবিহা না করল।

-কেন কালকে আশফাত এর সাথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলে তুমি? (রাগে)

-আমি ওকে ভালোবাসতাম তাই।(ভয়ে)

– ও কি ভালোবাসে তোমায়? ও তো টাকা কে ভালোবাসে। কালকে আমি না গেলে ও তোমাকে বিক্রি করে দিতে তুমি জান?

-,,,,,,,,,,,

– ও মেয়েদের কে প্রেমের জালে ফেলে বুলিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয়।কালকে আমি না গেলে তোর কি অবস্থা হতো জানিস????এতোদিন যাবত ওকে প্রটেক্ট করেছি ওর থেকে। আর তুই ওর সাথেই পালানোর চিন্তা করলি???? ( সাবিহার চুলের মুঠি ধরে রাগে কথাগুলো বলল আফরান )

আজকে তোকে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে।

-কি শাস্তি? (কাঁপা গলায় বলল সাবিহা)
– ওয়েট,,,,,,

আফরান আস্তে আস্তে শরীরের পাঞ্জাবি খুলতে লাগল,,,
-কি করছেন আপনি এইসব?

সাবিহা কে আর কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আফরান ঝাপিয়ে পড়ল সাবিহার ওপরে । সাবিহা আফরান এর সাথে না পেরে দমে গেল।
.
.
.
.
সকাল বেলা সূর্যের আলো সাবিহার চোখে এসে পড়ল। সাবিহা চোখ খুলে দেখল আফরান তাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। ঘুমের মধ্যে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে আফরান কে। হঠাৎ ই তার মনে পড়ে গেল কালকে রাতের কথা গুলো। কিভাবে পারল আফরান নিজের স্ত্রীর সাথে এমনভাবে জোর করে কিছু করতে। সাবিহা আফরান কে সরিয়ে শরীরে কাপড় পেঁচিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছিল তখন পিছনে থেকে আফরান এসে সাবিহার ভেজা চুলে মুখ ডুবাল।

সরি,,,,,
-আপনি সরি কেন বলছেন স্যার?
– কালকে রাতে রাগে এইসব করে ফেলছি। তুমিই তো জানো আমি নিজের রাগ কনট্রোল করতে পারি না।
– হুম,,,,
-জানি কালকে রাতের জন্য রাগ করে আছো। আমি আর এমন করবো না যতদিন না তুমি মন থেকে আমাকে মেনে নিবা । আরেকটা কথা শুনো,,,,

– বলেন?

-আজকে থেকে আর স্যার বলবা না।আর তুমি তো জানো তুমি আমার আম্মুর অনেক পছন্দের মানুষ । আজকে আম্মু আসবে লন্ডন থেকে। তুমি আম্মুর সাথে ভালোভাবে কথা বলো আর আম্মু যেন কখনো না জানে তুমি আমাকে ভালোবাস না। জানলে আম্মু খুব কষ্ট পাবে।

– ঠিক আছে।

কথাগুলো বলে আফরান ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হওয়ার জন্য ।

সাবিহা একটা গোলাপি শাড়ি পড়ে খুব সুন্দর করে সেজে নিচে আসল নাস্তা বানাবে বলে। কিন্তু নিচে এসে দেখল সার্ভেন্ট রা সবকিছু রেডি করে টেবিল সাজিয়ে রেখেছে। সাবিহা একজন সার্ভেন্ট কে ডেকে বলল দুপুরের খাবার সাবিহা রান্না করবে,,,

-কিন্তু মেম,,,,স্যার যদি জানে তাহলে খুব রাগ করবে।
-কেন?
-স্যার বলেছে আপনাকে যেন কোনো কাজ করতে না হয়।
-কিছু বলবে না স্যার। দুপুরের রান্না আমিই করবো।তুমি এখন যাও।
-ওকে,,,

আফরান নিচে এসে একটা চেয়ার টেনে বসল। সাবিহা ও বসল আফরান এর পাশে। সাবিহা নাস্তা করছে আর আড় চোখে বার বার আফরান কে দেখছে। খুব সুন্দর লাগছে আফরান কে কালো ব্লেজারে।
.
.
.
.
আফরান নাস্তা শেষে সাবিহা কে বলল-

একটা জরুরি মিটিং আছে। দুপুরে চলে আসব । তুমি নিজের খেয়াল রেখো।
আফরান দরজার কাছে গিয়ে আবার ফিরে এসে সাবিহার কপালে একটা চুমু এঁকে দিয়ে বলল,,
ভালোবাসি তোমাকে অনেক বেশি বউ?

কথাটি বলে আফরান চলে গেল আর সাবিহা সেখানেই থ ,, হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।

চলবে,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here