যেমনটা_তুমি Part 1+2
Ayusha Akter Usha
আজ আমাকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে।তাই কাজিনরা আমাকে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখে গেছে।আর আমি ও সেই ভাবেই বসে আছি।শুনেছি পাত্র নাকি বাবার বন্ধুর ছেলে।কোনো এক কালে আমার বাবা আর ছেলের বাবা অনেক ভালো বন্ধু ছিল।গ্রামের একই সাথে পড়াশোনা করেছে।কিন্তু ওরা গ্রামের ধনী ফেমিলি হওয়ায় শহরে গিয়ে টপ বিজনেস ম্যানদের মধ্যে নিজের নাম লিখেন।আর বাবা গ্রামের টপ কৃষকদের মধ্যে একজন হয়ে পরিচিত হন।কোনো এককালে উনাদের খুব শখ ছিল যে ওরা একে ওপরের বেয়াই হবে।যার কারনে আজ আমাকে এইভাবে বসিয়ে রেখেছে।
এরই মধ্যে নিতু(আমার কাজিন)দৌড়ে এসে আমার ঘরে ঢুকল।আমার পাশে খাটের ওপর বসে হাপাতে হাপাতে উত্তেজিত গলায় বলল
-আপু পাত্রপক্ষ এসে গেছে।এইমাত্র তাদের রাস্তায় দেখে এলাম।জানো আপু ইয়াআআ বড় বড় গাড়ি নিয়ে এসেছে।আর ছেলে???তাকে দেখে তো প্রায় বেহুঁশ হওয়ার অবস্থা আমার।কি হ্যান্ডসাম গো।গ্রামের সবাই তো সেখানেই পাড়ি জমিয়েছে।বাবা আর চাচু তাদের আনতে গেছে।সবাই তোমার বর পক্ষ কে দেখতেই পাগল।এত ধনী কেউ আমাদের গ্রামে এসেছে।তাও আবার আমাদের বাড়িতে।।।এটা কি ভাবা যায়???I am soo exited apuuuu…..
আমি এতক্ষণ হা করে নিতুর কথাই শুনেছিলাম।এই মেয়ে পাগল হলো নাকি।এমন করছে কেন।আর ওরা যদি এত ধনী আর হ্যান্ডসাম ই হয় তবে ওঁরা আমাকে উনাদের বাড়ির বউ করবে কেন?নিতুর কথা শুনে তো আমার মনে নিশ্চিত আমাদের বাড়ির সবার মানসম্মান হারাতে হবে তাদের সামনে।তখনই বাইরে লোকজনের কোলাহোল শোনাগেল।
-আপু ওরা বুজি চলে আমি গেলাম ওদের দেখতে।তুমি এখানেই বসে থাকো।
বলেই নিতু এক দৌড়ে বাইরে।বাইরের কোলাহল শুনে মনেই হচ্ছে তারা বাড়ির ভেতরে ঢুকে পরেছে।আর এত চেচামেচি মনে হচ্ছে পুরো গ্রাম ভেঙে এসেছে।হয়তো কোনো এক এলিয়েন এসেছে তাকে দেখতেই হবে না দেখলে চলে না এদের।উফফ এরা পারেও বটে সত্যিইই।শব্দ শুনে মনে হলো ওদের সবাইকে আমার পাশের ঘরটাতে বসানো হয়েছে ।আসলে টিনের বাড়ি তো তাই এ ঘর ও ঘরের পার্থক্য শুধুমাত্র একটা টিনের বেড়া।ওরা নিজেদের মধ্যেই কথা বলছে।ওরা কথা বলুক।এর মধ্যে আমি আমার পরিচয় টা দিয়ে দেই।
আমি নুরাইমা ইসলাম।সবাই নূর নামেই ডাকে।আমি ছোট মফস্বল গ্রামের মেয়ে।খুবই সাধারন মেয়ে।আমার উচ্চতা 5.1″।আর আমার weight 55 kg.এটাই ভাবছেন তো আমি আমার ওজন কেন বললাম।বললাম কারন আমি অন্য মেয়েদের মতো না।আমি একটু মোটা।আমি মোটা বলে স্কুল লাইফে অনেক কথাই শুনতে হয়ছিল আমায়।সবার হাসির পাত্রী ছিলাম আমি।তাদের খোঁটা শুনেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম
যে আমি তাদের দেখিয়ে দেব আমি কোনো কিছুতেই তাদের থেকে কম নই।তাই মন দিয়ে পড়াশোনা করেছি।study শেষ করার পর অনেক কষ্টে আমি একটা জব পাই ঢাকার এক বড় কোম্পানিতে।কোম্পানিটা অনেক ভালো।যার কারনে চাকরিটা হাতছাড়া হতে দিতে পারিনি।বাবা খুব স্বাধীন মনের মানুষ তাই বাবাকে একটু জেদ দেখাতে উনি আমাকে গ্রাম ছেড়ে শহরে যাওয়ার পারমিশন দেন।ঢাকায় এখ ফুপুর বাড়িতে থেকে আমি জবটা করছি। প্রায় এক বছর ধরে জবটা করছি আমি।এই বছর আমাদের কোম্পানি বিজনেস অফ দ্যা ইয়ারের আওয়ার্ড পেয়েছে। খুব ভালোই ছিলাম তার মাঝেই বাবা আমাকে ফোন করে বাড়িতে আসতে বলে।এসেই এখানে ফেসে গেছি।সাজিয়ে গুজিয়ে বসিয়ে দিয়েছে।
কিছুক্ষণ পর আমার চাচী আর পাশের বাড়ি এক বড়আম্মু এসে আমাকে উনাদের সামনে নিয়ে গেল।আমাকে একটা চেয়ারে বসতে দেওয়া হলো।আমি মাথা নিচু করে উনাদের সামনে বসে আছি।আমাদের ঘিরে অনেকেই দাড়িয়ে আছে।উনারা আমাকে একের পর এক প্রশ্ন করছে।আর উনাদের প্রশ্নে আমার হার্টবিট বারছে।এমন সময় ছেলের বাবা বলে উঠল
-আমার ছেলে নিজের তাগিদে চার বছর কঠোর পরিশ্রম করে খান ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আর এমডি হয়ে নিজের বিজনেস সামলাচ্ছে।এমন দায়িত্ববান ছেলে তোরা খুব কমই পাবি রে রায়হান(আমার বাবা)।
আমি উনার মুখে মুখে খান ইন্ডাস্ট্রিজ এর নাম শুনে চমকে যাই।খান ইন্ডাস্ট্রিজ এর এমডি মানে???আমি বিস্ময় ভরা চোখে পাত্রের দিকে তাকালাম।ছেলেকে দেখেই আমার চোখ রসোগোল্লা বনে গেল।প্রায় ছয় ফূট লম্বায় ফিট বডি গায়ের রঙ ফর্সা আর মুখে চাপার দাড়ি আর একরাশ বিরক্তি ভাব নিয়ে আমার সামনে বসে থাকা ছেলেটাকে দেখে আমার মুখ থেকে অস্ফুট কন্ঠে বেড়িয়ে এল…
– SK sirrrrr…….
to be continue…..
(গল্পটা একটা মোটা গ্রামের মেয়ের আত্নজীবন কাহিনী।যাঁরা সবার কাছে সবসময় তাচ্ছিল্যতাই পেয়ে থাকে।তাদের নিয়ে নিয়েই গল্পটা লিখছি।আমি গল্পের মাঝে বোঝাতে চাই ভালোবাসা শুধু সুন্দরী মেয়েদেরকেই নয় নূরের মতো মেয়েদের ও বাসা যায়।তাঁরাও কোনো কিছুতে কম নয়।আর যাঁরা ভাবছেন যে একটা মোটা মেয়ের গল্প কতটাই বা ইন্টারেস্টিং হবে??তাদের বলছি একবার পরুন।আমি আমার সাধ্য মতো সুন্দর করে দেওয়ার চেষ্টা করব।ধন্যবাদ )
#যেমনটা_তুমি
Ayusha Akter Usha
“”2″”
আমার মুখে স্যার ডাক শুনে সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো।আমি সবার দিকে ফ্যালফ্যাল চোখে তাকালাম।
-নূর মা তুমি সোমকে চেন?
অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন স্যারের মা আয়না খান।আমি ওনার দিকে তাকিয়ে মাথা উপর নিচ করে সায় দিলাম।
-সোম তুই চিনিস নূর কে?
স্যারের বাবা মিরাজ খান স্যার কে উদ্দেশ্য করে বললেন।
-না চেনার কি আছে আমার অফিসের স্টাফ কে আমি তো চিনবোই এতে অবাক হওয়ার কি আছে।
একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললেন স্যার।
-তোর অফিসের স্টাফ মানে?নূর তোর কোম্পানিতে জব করে?আর এই কথাটা তুই আমাদেল এতক্ষণ বললি না কেন?
অবাক হয়ে মিরাজ খান বললেন।
-বলার প্রয়োজন মনে করিনি তাই এতক্ষণ বলিনি।
-তা এটা তো আরো ভালোই হলো ছেলে মেয়ে দুজন দুজনকে চেনে।এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে কি বলিস রায়হান।
মিরাজ খান বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলল।
-হ্যা সেটাই তো দেখছি।দুজন দুজনকে চিনলেই ভালো আমাদের আর কি করার?
অবাক হয়েই কথাটা বলল বাবা।ওরা আবার ওদের কথায় মগ্ন হয়ে গেল।বাবা আর মিরাজ আঙ্কেলের কথা শুনেই মনে হচ্ছে তার কতোকালের একে ওপরের ভালো বন্ধু।কিন্তু আমি আছি আমার জ্বালায়।বিয়েটা যে হবেনা এটা আমি নিশ্চিত।বিয়ে নিয়ে আমাথ কোনো মাথা ব্যথা নেই আমার সব ব্যথা আমার চাকরিটাকে নিয়ে।এত ভালো একটা চাকরি আমার হাতছাড়া হতে যাচ্ছে।বাবা আর কাজ পেল না সরাসরি আমার বসকেই আমার সামনে বসিয়ে দিল।এখন কি হবে।লজ্জায় পুরো মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।যাকে বিয়ে করার জন্য মিসেস ওয়ার্ল্ড রা লাইন লাগিয়ে আছে উনি আমায় বিয়ে করবেন এটা একেবারেই ইম্পসিবল।উনার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে উনি এতকিছুতে কেতোটা বিরক্তি বোধ করছেন।আচ্ছা এটা কি শুধুই আমি দেখতে পাচ্ছি অন্য কারোর চোখে কি উনার বিরক্তি ভাবটা পরছেনা।উফফ উনি যদি বিয়েতে না বলে চলে যান আমার মান সম্মান প্লাস্টিক।কোন মুখে আমি ওনার সামনে গিয়ে দাড়াবো।নিজের সম্মান রক্ষার্থে চাকরিটাও আমাকে ছাড়তে হবে।চাকরি ছাড়ার কথা মাথায় আসতেই আমার কান্না চলে আসছে।জোরে জোরে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে।কিন্তু ওরা আমার ভাবনায় জল ঢেলে দিয়ে বিয়ে রাজী হয়ে বিয়ের ডেট পর্যন্ত ফিক্সড করে চলে গেলেন।এটা কি হলো।আমার যেন বিশ্বাসটি হচ্ছে না যে ওরা বিয়েতে রাজী হয়েছে।বিশেষ করে স্যার?স্যার ও তো কিছুই বললেন না।এটা কি হচ্ছে।আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে উনি উনার বাবার চাপে পরে বিয়েতে রাজী হয়েছেন।কেনো একটা সুযোগ পেলেই বিয়েটা ক্যান্সেল করতে দেবী করবেননা।অন্যদিকে আমাদের গ্রামের মানুষরা সবসময় সবদিক দিয়ে দু কদম এগিয়ে থাকে।এই বেলাও তাই হলো।পুরো গ্রামে রটে গেল যে আমি শহরে গিয়ে নিজের অফিসের বসকেই ফাঁসিয়ে বিয়ে করছি।নাহলে ওত বড়ো ধাঁচের মানুষ আমাকে বিয়ে করতে কেন রাজী হবেন।এই কথা শুনে বাবা আমাকে এককথায় বলে দিয়েছেন আমি যেন বিয়ের আগের আর অফিসে না যাই।বিয়ের পর ওঁরা চাইলে জব করব নয়তো নয়।আমার আর কি করার।মন খারাপ করে বাড়িতেই পরে রইলাম।আজ তিনদিন ধরে বাড়িতে বসে আছি।বসে বসে না আরো বেশি মোটা হয়ে যাই আমি।কিন্তু কি আর করার বসে বসে এখন হানি বানি কি গোলমাল দেখা ছাড়া আমার আর কোনো কাজ নেই।আজও বসে বসে হানি বানি দেখছি আর হেসে হেসে গড়িয়ে পরছি ঠিক তখনি আমার ফোন বেজে উঠল।ফোন হাতে নিয়ে দেখি unknown নাম্বার।কিছু না ভেবেই ফোনটা রিসিভ করলাম।
-হ্যালো আস্সালামুআলাইকুম।কে বলছেন?
-আপনি অফিসে আসছেননা কেন মিস নূর?
গলা শুনেই আমি লাফিয়ে উঠলাম।এটা তো স্যারের গলা।স্যার আমাকে ফোন করেছে?ভাবতেই অবাক লাগছে।
-স্যার আপনি?আপনি আমাকে ফোন করেছেন?
-কেনো কোনো প্রোবলেম আপনার।আপনি অফিসে তিনদিন ধরে আসছেন না।ছুটি নিয়েছিলেন?
খিটখিটে গলায় বললেন স্যার।
-নাআ আসলে স্যার…
-এটা আপনার মামার বাড়ি যখন ইচ্ছে হবে আসবেন আর যখন ইচ্ছে হবে আসবেননা।
-না মানে স্যা….
-কালকের মধ্যে আমি আপনাকে অফিসে দেখতে চাই got it…
-yyess sirr….
সাথে সাথেই ওপাশ থেকে ফোন কাটার শব্দ পেলাম।আমি অবাক কারন স্যার আমাকে নিজের থেকে ফোন করেছে।অফিসের কোনো স্টাফ অফিসে না এলে তাঁকে স্যারের পিএ অফিসের কন্ট্রাক্ট নাম্বার দিয়ে ফোন করে খবরাখবর নেয়।তাহলে আজ হঠাৎ স্যার আমাকে নিজের থেকে ফোন করলেন কেন।আর আমি যে তিনদিন অফিসে যাইনি এটাও স্যার খেয়াল করেছেন। আচ্ছা স্যার কি আমাকে কিছু বলতে চান।যার কারনে আমায় উনি এতদিন খুঁজেছেন।কি বলতে চান বিয়ে ভাঙার কথা।এই কথাটা বললে হয়তো আমি ওতটাও অবাক হব না।সে যাই হোক না কেন এখন আমি বের হলাম বাবার উদ্দেশে।বাবাকে এই সুখবর টা দিতে হবে তো।
বাবাকে অনেক বুঝিয়ে রাতের গাড়িতেই ঢাকা চলে এলাম।
সকাল সাতটায় বাস কমলাতলী এসে থামল।আমি বাসস্ট্যান্ড থেকে সোজা অফিসের দিকে রওনা হলাম।কারন এখন ফুপুর বাড়ি যাওয়ার সময় নেই।অফিসে দেরী হয়ে যাবে।আর ভাববেননা যে সারারাত জার্নি করে এখন কিভাবে অফিস করব।আমার সমস্যা হবেনা।কারন আমি বাসেও আরামে ঘুমিয়েছি।বাসস্ট্যান্ড থেকে অফিসে পৌছতেই একঘন্টা সময় লাগল।আমি অফিসে এসে আমার কেবিনে ব্যাগ রেখে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম।ওখান থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে কেন্টিনে গিয়ে কিছু খেয়ে এসে স্যারের সাথে দেখা করতে গেলাম।উনি আমায় অফিসে ছুটি না নিয়ে আসার জন্য কয়েকটা কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন।আর আমার মাসিক বেতন থেকে মাইনে কাটা হলো।আমি ভেবেছিলাম স্যার হয়তো আমাকে বিয়ে নিয়ে কিছু কথা বলবেন কিন্তু কিছুতেই কিছু না উল্টো আমাকে দু একটা কথা শুনিয়ে দিলেন ধুর। আমি মুখ ফুলিয়ে ওখান থেকে এসে নিজের কাজে মন দিলাম। সারাদিন কাজেই বি জি ছিলাম।তিনদিনে চাপ একদিনে পরে গেল।এসব নিয়ে ভাবার সময়েই পেলামনা।অফিস আওয়ার শেষে আমি সব কাগজপত্র গুছিয়ে রেখে আমার ব্যাগ নিয়ে অফিস থেকে বেড়িয়ে এলাম।অফিস থেকে বেরোতেই দেখি স্যার গাড়িতে হেলান দাড়িয়ে আছেন।আমি উনাকে উপেক্ষা করে চলে আসতে চাইলে উনি আমাকে পেছন থেকে ডাক দিলেন।
-মিস নূর..
আমি পেছনে ঘুরে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম।
-কিছু বলবেন স্যার।
– yes.come with me.
বলেই গাড়ির দরজা খুলে দিল।
আমি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বললাম।
-জ্বী স্যার কোথায় যাবো?
-সেটা গেলেই দেখতে পাবেন।এখন চুপচাপ গাড়িতে বসুন।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম।উনি ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করে শুরু করলেন।পুরো রাস্তা দুজনেই চুপচাপ ছিলাম।আমি ভাবছি উনি আমায় বিয়ে করবেননা বলে মেরে ফেলতে নিয়ে যাচ্ছেন না তো।সে যেখানেই যাক তা তো গেলেই দেখা যাবে।উনি একটা ক্যাফের সামনে গাড়ি থামালেন।আমাকে নামিয়ে উনি গাড়ি পার্ক করে এলেন।তারপর আমাকে নিয়ে ভেতরে গিয়ে বসলেন।ওয়েটার আসলে দুটো কফির ওর্ডার দিলেন।আমাকে একবার জিজ্ঞাসা ও করলেন না আমি কি খাবো।আমি কফি খাইনা ।এটা এখন উনাকে কিভাবে বলি।ওয়েটার কফি দিয়ে গেল।আমি কফি নিয়ে নাড়াচাড়া করছি।উনি কফিতে এক চুমুক দিয়ে বললেন।
-মিস নূর আমি আপনাকে এখানে কিছু কথা বলার জন্য নিয়ে এসেছি।বিয়ের ব্যাপারে।আপনি খুব অবাক হয়ে আছেন যে আমি কেন আপনাকে বিয়ে করতে রাজী হয়েছি।বিয়েটা আমি আমার dad এর কথাতে করছি।
এটা শুনে আমি একদমি অবাক হলাম না।এটা হওয়ার ই ছিল।আমি কোনো কথা না বলে উনার কথা শুনতে লাগলাম।উনি আবার বললেন।
-ডেড আজ কখনওই আমার কাছে কিছু চায়নি।সবসময় দিয়ে গেছেন।আমাদের ভালোর জন্য সারাজীবন পরিশ্রম করে গেছেন।এই প্রথম বার ডেড আমার কাছে কিছু চেয়েছে। আপনাকে আমাদের বাড়ির বউ হিসেবে দেখতে চেয়েছেন।বাবাকে আমি না বলতে পারিনি।তাই আমি বিয়েটা করছি।কিন্তু আমি কখনওই আপনাকে স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবোনা।এটার কারন নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়।এই বিয়েতে সমাজের সমনে আমরা স্বামি স্ত্রী হলেও আপনার আর আমার মাঝের সম্পর্ক শুধু একজন পরিচিত মানুষ হয়েই থাকবে।আপনি বুঝতে পারছেনতো আমি কি বলছি।আমি আপনাকে স্ত্রীর অধিকার দিতে পারব না।তাছাড়া আপনার অন্য কোনো অভাব থাকবেনা।আপনি আপনার ইচ্ছে মতো চলাফেরা করতে পারেন।আপনি আপনার মতো আর আমি আমার মতো।কেউ কারো পারসোনাল লাইফে ইন্টারফেয়ার করব না।আমি আমার আপনাকে বললাম।এর পরে আপনি কি করবেন এটা আপনার ডিশিসন।
বলেই উনি বসা থেকে উঠে দাড়ালেন।আবারো টেবিলের দু হাত রেখে একটু ঝুকে দাত কিড়মিড়িয়ে বললেন।
-আর আপনি যেই ডিশিসনটাই নিন না কেন ভেবে চিন্তে নেবেন।বিকজ আমার ডেড একজন হার্ট পেশেন্ট । আপনার ডিভিসনের কারনে উনার কোনো ক্ষতি হলে আপনি ভাবতেও পারবেন না আমি আপনার সাথে কি করব।
বলেই উনি আর একমূহুর্ত দাড়ালেননা।আমি উনার কথায় থ হয়ে গেছি।উনি বিয়েতে না বললেও আমি এতটা অবাক হতামনা যতটা অবাক এখন হলাম।এরকম ঘটনার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলাম না আমি।আমি এমন একটা সম্পর্কে কি করে যেখানে কোনো ভবিষ্যত ই নেই।না না এটা হতে পারে না।আমি কোনো লগ্নের নায়িকা নই যে উনি যা বলবেন আমিও বোকার মতো তাই শুনব।উনার বাবা হার্ট পেশেন্ট আমার বাবা তো নয়।তাই আমি আমার বাবাকে নিয়ে ভাঙার কথা বলতেই পারি।যেই ভাবা সেই কাজ।ফোন বের করে বাবাকে ফোন লাগলাম।কিছুক্ষণ রিং হয়েই বাবা ফোন ধরল।
-হ্যালো বাবা…
-হ্যা বল নূর ওখানে ভালো মতো পৌছে গেছিস তো।
-হ্যাঁ বাবা।বাবা আমার একটা কথা বলার ছিল।
-হ্যা বল না কি বলবি?
-বাবা আমি এই বিয়েটা করতে পারবনা……..
to be continue……
দুজনেই একরকম এদের ভাব ভালোবাসা হবে কিভাবে??