গল্পঃ প্রতিশোধ
পর্বঃ ২৫
লেখাঃ #Mst_Liza
,
ডা.নাহিদ কেবিন থেকে বের হতেই তার নাকের সামনে সজীব একটা রুমাল চেপে ধরে।ডা.নাহিদ রুমালটা নাকের সামনে ধরার সাথেই সেন্সলেন্স হয়ে পরে যায়।মায়া, রুসা, মিতু নিধি এসে একটা মানকিটুপি ডা.নাহিদের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়।তারপর তাকে চাদরে মুড়িয়ে সবাই মিলে স্টোর রুমের কাছে যায়।সবাই যার যার মুখ থেকে ঢেকে রাখা চাদর সরিয়ে স্টোর রুমের চেয়ারে বসিয়ে ডা.নাহিদকে বাঁধে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
কিছুক্ষণ পর,
ডা.নাহিদের জ্ঞান ফেরে।সে মিট মিট করে চোখ মেলে চেয়ে দেখে সামনে মায়া, রুসা, মিতু, নিধি আর সজীব দাড়িয়ে আছে।রুসা একগ্লাস পানি ডা.নাহিদের মুখের উপর ছুড়ে মারে।সজীব যেয়ে ডা.নাহিদের চুলের মুষ্টি টেনে ধরে।মায়া ইনজেকশন নিয়ে সামনে আগাচ্ছে।মিতু, নিধি বেধে রাখা ডা.নাহিদের দু’পাশে দাড়িয়ে আছে।
ডা.নাহিদঃ প্লিজ ছেড়ে দাও আমায়।
মায়ার দিকে তাকিয়ে দেখে বলে, ওটা কিসের ইনজেকশন?
রুসাঃ পাগলের!
ডা.নাহিদ ভয়ে আমতা আমতা করে।
ডা.নাহিদঃ না আমায় ছেড়ে দাও। তোমরা কত্তো ভালো।তাহলে এমনটা কেনও করছো?
মায়া এসে রুসার হাতে ইনজেকশনটা দেয়।
রুসাঃ সব সত্যি কথা বলবেন নইলে এই পাগলের ইনজেকশন আপনাকে দিয়ে দেব।
ডা.নাহিদ ভ্যাবাচেকা খায়।
ডা.নাহিদঃ সত্যি কিসের সত্যি?
সজীব ডা.নাহিদের চুলের মুষ্টি ধরে এক টান দেয়।
সজীবঃ ন্যাকামো হচ্ছে? চুপচাপ আমাদের কথা শোনেন নইলে।
ডা.নাহিদঃ নইলে কি? তোমরা আমার সাথে এমন কেন করছো আমি কিন্তু এবার চিৎকার দেব।
সজীব ডা.নাহিদের মুখটা চেপে ধরে।
সজীবঃ চিৎকার দেবেন? তার আগেই আপনাকে আমরা পাগলা গারদে পাঠাবো।কিরে রুসা দারিয়ে কি দেখছিস? দিয়ে দে ইনজেকশনটা।
রুসাঃ হ্যাঁ, দিচ্ছি।
সজীব ডা.নাহিদের মুখটা ছেড়ে দেয়।
ডা. নাহিদঃ এমনটা করো না তোমরা।বল কি সত্য বলতে হবে?
রুসাঃ এই তো পথে এসেছেন। এখন বলেন দেখি শ্যামলি বসুর নকল ফাইলটা কে বানিয়ে ছিল?
ডা.নাহিদঃ আমি যানি না।যা করেছে ডা.মাহির করেছে।সে তো তার শাস্তি পাচ্ছে তাহলে আমার সাথে কেন তোমরা এমন করছো?
মায়া গিয়ে ডা.নাহিদকে একটা চর বসিয়ে দেয়।
-ঠাসসস।
মায়াঃ ডা.মাহির স্যার কিছু করে নি।যা করেছেন আপনি করেছেন।
ডা.নাহিদঃ কি প্রমাণ আছে তোমার কাছে যে আমি করেছি?
মায়া ডা.নাহিদের মুখের উপর ফিঙ্গার পেন্ট রিপোর্টটা ছুড়ে মারে।
মায়াঃ এই রিপোর্টটা দেখছেন? সেই নকল ফাইনালের হাতের ছাপ আপনার সাথে ম্যাচ করেছে।ফাইলটা আপনারই তৈরি।
ডা.নাহিদ ভয়ে ভয়ে তাকায়।
ডা.নাহিদঃ না মানে
রুসাঃ না মানে এইসব কি? যা বলার পরিষ্কার করে বলুন।আপনি এসব কেন করেছেন?
ডা.নাহিদ সব খুলে বলে যে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল হসপিটালের সুনাম নষ্ট করা।ডা.মাহিরকে বিপদে ফেলা বা শ্যামলি বসুকে মেরে ফেলা না।
ডা.নাহিদের বলা কথাগুলো নিধি রেকর্ড করে আর মিতু ভিডিও করে রাখে।
তারপর মায়া ও তার বন্ধুরা ডা.নাহিদকে টানতে টানতে থানায় নিয়ে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয় প্রমাণ সহ।মাহিরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মাহিরকে লকাপ থেকে বের করে ডা.নাহিদকে লকাপের ভেতরে ঢুকানো হয়।
সবাই খুব খুশী হয় মাহিরকে বাইরে দেখে।মাহির মায়ার ফ্রেন্ডের ধন্যবাদ জানিয়ে মায়ার সামনে এসে দাড়ায়।
মাহিরঃ মায়া তোমাকে আমি..
মাহির কিছু বলতে চাচ্ছিল মায়াকে হঠাৎ কোথা থেকে যেন স্নিগ্ধা চলে আসে।মাহিরকে স্নিগ্ধা জড়িয়ে ধরেই হাওমাও করে কেঁদে দেয়।
স্নিগ্ধাঃ জান তোমাকে এখানে থাকতে হবে না।আমি তোমাকে এখান থেকে নিয়ে যাবো।
মায়া এমন দৃশ্য চোখের সামনে দেখে সেই মুহূর্তেই দৌড়ে থানার বাইরে চলে আসে।
মায়া চলে যাওয়ার পর মাহির স্নিগ্ধাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দেয়।
মাহিরঃ চলে যাও স্নিগ্ধা।তোমার নাটক আমি আর দেখতে পারছি না।
স্নিগ্ধাঃ নাটক? আমার কস্টটাকে তোমার নাটক মনে হয়?
মাহিরঃ কিসের কস্ট তোমার? কাল সারাদিনে একবারও দেখতে এসেছো আমাকে? আজ এসে আবার তোমার এই মিথ্যে নাটক দেখাচ্ছো।
স্নিগ্ধাঃ বিশ্বাস কর মাহির কাল আমার কি হয়েছিল আমি নিজেই মনে করতে পারছি না।ঘুমিয়ে ছিলাম উঠে শুনি পুরো একদিন বিছানায় পরে পরে ঘুমিয়েছি।
মাহিরঃ আবার নাটক! দেখও স্নিগ্ধা অনেক হয়েছে আর না।এবার তোমার এই নাটক থেকে আমাকে মুক্তি দাও।
মাহির কথাটি বলে স্নিগ্ধাকে এড়িয়ে চলে যায়।থানার বাইরে গিয়ে দেখে মায়া রাস্তার এক পাশে দাড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে।
মাহির কান ধরে হাটু নুইয়ে মায়ার পিছনে বসে পরে।মায়াকে ডাকে।
মাহিরঃ মায়া
মায়া পিছনে ফিরে অবাক হয়ে যায়।মায়া কি তাহলে স্বপ্ন দেখছে? মায়া চোখদুটো হাতদিয়ে ভালো ভাবে ডলতে ডলতে মাহিরের দিকে তাকায়। না এতো সত্যি!
মাহিরঃ সরি মায়া।
চলবে……