গল্পঃ প্রতিশোধ পর্বঃ ২৮

0
2030

গল্পঃ প্রতিশোধ
পর্বঃ ২৮
লেখাঃ #Mst_Liza

,
মায়া আর মাহির তখনই হসপিটালে চলে আসে।কিছুক্ষণ পর মাহিরের বাবা-মাও আসে।মাহির এখন ও.টির মধ্যে আছে। ও.টির সামনের বেঞ্চটাতে মায়াকে নিয়ে বসে আছে মুফতি খান আর সাহেদ খান।

মায়া তার শ্বাশুড়ি মায়ের কাধেঁ নাথা রেখে কাঁদছে আর বলছে,

মায়াঃ এতো করে বললাম উনাকে আমি ভেতরে যাব, উনি শুনলেনই না।

মুফতি খান মায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিতে থাকে।

মুফতি খানঃ কাদিঁস নারে মা।বেয়ানের কিচ্ছু হবে না।ওই আল্লাহর রহমতে একদম সুস্থ হয়ে উঠবে।মাহির তো আছে ভেতরে।ওঠিক পারবে দেখিস।

তারপর সকলে অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে কখন অপারেশন থিয়েটার থেকে মাহির ভালো সংবাদ নিয়ে বের হবে।এমন সময় মাহির ও.টি থেকে বেরিয়ে আসে। মাহিরকে দেখেই সবাই উঠে দাড়ায়।মায়া তো ছুটে গিয়ে মাহিরের সামনে দাড়িয়ে জানতে চায়, মা কেমন আছে? মাহির কোনও কথা বলে না।মায়া আবার বলে, আমার মা কেমন আছে? মাহিরের কোনো উত্তর না পেয়ে মায়া কলারটি চেপে ধরে মাহিরকে জোড়ে জোড়ে ঝাকাতে থাকে।

মায়াঃ বলুন আমার মা কেমন আছে? বলুন না?

মায়া মাহিরকে জিজ্ঞেসা করতে করতে কেঁদে দেয়।যার জন্য একটা সময় পর মায়ার কান্না আর চিৎকারে গলাটা শুকিয়ে যায়।মায়া বিরবির করে বলে,

মায়াঃ আমি কিছু জানতে চাচ্ছি? চুপ করে থাকবেন প্লিজ। বলুন আমার মা কেমন আছে?

মাহির কলার থেকে মায়ার হাতটি ছাড়িয়ে শক্ত করে নিজের হাতের মুঠোয় চেপে ধরে রাখে।তারপর নিচু গলায় মায়াকে শান্ত হতে বলে।

মাহিরঃ শান্ত হও মায়া। আমরা ডাক্তার। আমাদের হাতে যতোটুকু সম্ভব আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেস্টা করি।তবুও কিছু ব্যাপার আমাদের হাতে থাকে না।

মায়াঃ মানে? কি হয়েছে আমার মায়ের?

মাহিরঃ মায়া…. মিরা মা!

মায়াঃ কি?

মাহিরঃ কোমায় চলে গেছে।

মায়া কথাটা শুনে অনেক বড় একটা ধাক্কা খায়।ঠিক সেই মুহূর্তেই এক চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মায়া।

মাহির মায়াকে পরে যেতে দেখে ধরে বসে।মায়াকে ডেকে দেখে মায়ার কোনও সারা নেই।তাই মায়াকে নিয়ে নিজের কেবিনে যায়। চোখে মুখে পানির ছিটা দিলে মায়ার জ্ঞান ফেরে।জ্ঞান ফিরতেই মায়া খুব উত্তেজিত হয়ে পরে।আর উত্তেজনায় আবল তাবল বকতে থাকে।মাহির মায়াকে শান্ত করার চেস্টা করে।কিন্তু পারে না।তাই বাধ্য হয়ে মায়ার গালে ঠাসসসস করে একটা চর বসিয়ে দেয়।তখন গিয়ে শান্ত হয়।নিশ্চুপ হয়ে গালে হাত দিয়ে মাহিরের দিকে তাকিয়ে থাকে মায়া।যা দেখে মাহিরের চোখেও পানি চলে আসে।মাহির মায়ার গাল থেকে হাতটি নামিয়ে দিয়ে একটা চুমু একেঁ দেয়।

মাহিরঃ সরি মায়া।বিশ্বাস করো তোমাকে আমি চর মারতে চায় নি?

মায়া কাঁদতে কাঁদতে বলে,

মায়াঃ আপনি পারলেন না আমার মাকে সুস্থ করে দিতে?

মাহির মায়ার হাত দুটো ধরে চেয়ারটা টেনে মায়ার সামনে মুখোমুখি হয়ে বসে।তারপর মায়াকে বোঝায়।

মাহিরঃ ডাক্তার হলেই কি সব পারা যায়? কিছুদিন পর তো তুমিও ডাক্তার হবে। একটাবার আমার জায়গাটায় নিজেকে রেখে দেখো, তাহলে বুঝবে আমার পরিস্থিতি টা কি।আমারও যে খুব কস্ট হচ্ছে তোমাকে এই অবস্থায় দেখে।

মায়া মাহিরকে জড়িয়ে ধরে।জোড়ো জোড়ে কাঁদতে থাকে।

মায়াঃ এমনটা কেন হলো বলুন তো? আমার মা কি দোষ করেছিলো যে আজ একটা জীবিত লাশের মতো তাকে এভাবে পরে থাকতে হবে? আমি যে এখন একা হয়ে গেলাম। আমার আর কেউ থাকলো না।

মাহিরঃ কে বলেছে তুমি একা? আমি তো সবসময় ছায়ার মতোন তোমার পাশে আছি।তাহলে এমন কথা কেন বলছো তুমি?


রাইসূলের কেবিনে,

রাইসূল সিকদারঃ হোয়াট?

ডা. মানহাঃ জ্বী স্যার, আমার কাছে তো প্রমাণও আছে।ওদের অন্তরগ্ন অবস্থার থাকা কিছু ছবি তুলে এনেছি।এই দেখুন স্যার হসপিটালের রুলসের কোনও তোয়াক্কা করে না ডা.মাহির খান। শেষ পর্যন্ত কিনা একটা স্টুডেন্টের সাথেই ছিঃ
কি লজ্জা! কি লজ্জা!

রাইসূল ডা. মানহার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে ছবিটা দেখে যেই ছবিতে মায়ার গালে মাহির চুমু এঁকে দিচ্ছে। তাছাড়াও মায়াও মাহিরের জোড়িয়ে ধরে রাখা আরও অনেক ছবি তুলে এনেছে ডা.মানহা।

ডা.মানহাঃ আরও আছে স্যার!

ডা.মানহা ফোনের স্ক্রীন টেনে টেনে রাইসূলকে ছবিগুলো দেখায়।

ডা.মানহাঃ স্যার এদের কিন্তু একটা বড় ধরনের শাস্তি দেওয়া উচিৎ।

চলবে…….

(আপনাদের বলে রাখি ডা.মানহা হচ্ছে ডা. নাহিদের স্ত্রী। স্বামী জেলে গেছে তো, তাই সেও ছলে বলে কৌশলে চেস্টা করছে প্রতিশোধ নেওয়ার)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here