সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥পর্ব_০৯(wedding special ০২?)
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
সকালে সূর্য উদায় হবার সাথে সাথে একটা নতুন দিন আর নতুন জীবনের শুরু হলো।
আমি নমাজ পড়ে উঠতে দেখি আমান এখনো ঘুম।
ডাকবো নাকি না।
না ডাকা উচিৎ।
উনি কি নামাজ পড়েন না।
আমি গিয়ে হালকা হাতে তার পিঠে হাত দিলাম।
সে উবু হয়ে শুয়ে আছে।
–স্যার।
–হু(ঘুমের ঘোরে)
–বলছি নামাজ পড়বেন? না নামাজ পড়েন না?
আমার এমন প্রশ্ন শুনে সে আমার দিকে ঘুরে পিটপিট করে তাকালো।
তার চাহনি দেখে আমি অবাক।
কি মায়া আর মিষ্টি একটা মুখ।
আর এভাবে তাকানো যেন এক রাস মায়া।
–নামাজ!
–হ্যা নামাজ উঠুন নামাজ পড়ুন।
সে চোখ ঢলতে ঢলতে উঠলো।
তার পর সোজা বাথরুমে।
আমার কিছুটা হাসি পেল কিন্তু কারোর উপর হাসতে নেই বাবা বলে।
হি হি।
কিছু সময় পর তিনি বাইরে আসলেন,
–নামাজ অনেক দিন পড়া হয় না বদ অভ্যাস হয়ে গেছে
–এ মা সে কি কথা আজ থেকে রোজ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে
কোন কথা নাই।
সে আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল,
–যথা আগ্গা মহারানী।
উনি নামাজ পড়ে নিলেন।
–আচ্ছা আমার কিছু কাজ আছে আমি বাইরে যাচ্ছি তুমি বসো বাবা আসবেন একটু পরে।
কথাটা বলে উনি বেরিয়ে গেলেন,
,
,
,
এদিকে,
হাঁটতে বার হয়ে মেঘকে খুব মিস করছে ঋতু।
কিরনকে নিয়ে একটা গাছের তলে বসে তার কাঁধে নিজের মাথাটা দিয়েছে।
পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে শান্তির যায়গা কিরনের কাঁধ।
মাথা দিলে মনে হয় যেন সব কষ্ট ভুলে যাচ্ছে ঋতু।
–ঋতু।
–হুম।
–মেঘ কে মিস করছো না।
–হুম অনেক।
–তোমরা আসলে দুই বান্ধবী খুব বেশি একটা অটুট বন্ধুত্বের সম্পর্কে থাকো।
এটা ভালো লাগে।
–হুম মেয়েটার ইচ্ছের বিরুদ্ধে এক প্রকার বিয়েটা হয়েছে।
–কি আর করার বলো,
ওদের কথার মাঝে ঋতুর ফোন বেজে ওঠে,
–কিরন দেখো মেঘ ফোন করেছে,
–ফোন ধরো
ঋতু ফোন রিসিভ করে,
–হ্যালো দোস্ত। (ঋতু)
–কেমন আছিস? (মেঘ)
–এই ত ভালো তোকে খুব মিস করছি রে। (ঋতু)
–আমিও এখন আমাদের হাঁটতে বার হবার কথা ছিল না?
–হুম আমি তোর ভাইয়ার সাথে বার হইছি কিন্তু বসে আছি এক জায়গায় ইচ্ছে হচ্ছে না কিছু।
সব ঠিক আছে তো মেঘ?
–হুম সব ঠিক আছে কাল রাতে ভাবছিলাম সব ভুলে যাওয়া ভালো।
–হুম এটাই তো বলছি সেই কতো বার।
–এবার বল ভাইয়ার তো চাকরি হয়ে যাচ্ছে তোদের বিয়ে টা কবে হচ্ছে।
–আরে হবে হবে একটু সময় নিতে চাচ্ছি আমি।
–আচ্ছা তাই ভালো নেও নেও সময় নেও আজ আসবি ত?
–হুম আসবো পাগলি আমি না আসলে রিসিপশন হবে নাকি।
–তাই তো আই মিস উ।
–মি টু বেবু।
আচ্ছা নতুন সংসার যা গিয়ে আঙ্কেল কে চা করে দে।
–হ্যাঁ ভালো বুদ্ধি দিছিস।
–হুম যা রাখি।
–আল্লাহ হাফেজ।
ঋতু ফোনটা কেটে আবার কিরনের কাঁধে মাথা দেয়।
সারা দুনিয়ার শান্তি এক গুচ্ছ পদ্ধতিতে তার মনে নেমে আসে এই সময় টায়।
,
,
,
ঋতু বলল বাবা কে চা খাওয়াতে।
ভালোই বুদ্ধি।
যে ভাবা সে কাজ।
ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা রান্না ঘরে চলে এলাম।
খুঁজতে দেরি হলো না।
এসে সুন্দর করে এক কাপ চা বানিয়ে বাবার রুমের বাইরে চলে এলাম।
–বাবা।
বলে দরজায় টুকা দিলাম।
হ্যাঁ মা ভেতরে আয়।
আমি চায়ের কাপ নিয়ে ভেতরে গেলাম
বাবা কাজ করছিলেন,
–কাজ করছিলেন বাবা?
–হুম একটু আসলে তোদের বিয়ের ঝামেলায় কিছুই করা হয়ে ওঠে নি।
–ওহ চা নিয়ে এসেছি।
আমার হাতে চা দেখে বাবার চোখ দুটো চিকচিক করে উঠলো,
যেন বহু বছর তিনি এই রকম কাজের সাথে মেলামেশা বন্ধ করেছেন।
–তুই চা করেছিস আমার জন্য?
–হ্যাঁ বাবা।
–মেঘ তুই জানিস মা আজ ২০ বছর পর কেউ আমাকে এই সকালে চা করে দিলো।
তোর মায়ের কথা মনে পরে গেল।
ও সকালে আমাকে চা করে দিতো।
বাবার কথা শুনে খারাপ লাগলো।
ওনার পাশে বসে বললাম,
–এখন তোমার মেয়ে চলে এসেছে চিন্তা করো নারোজ চা করে দিবো।
বাবা খুব খুশি হয়ে গেলেন।
খুব আনন্দের সাথে চা টা খেলেন।
,তার পর আমি আমার রুমে চলে এলাম
বিছনায় বসে বসে পুরো বিয়েটার কথা ভাবছি।
হুট করে সব হয়ে গেল।
সব কিছু!
আমার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে হটাৎ আমান ঘরে এলো,
আমি তার দিকে তাকিয়ে হটাৎ থমকে গেলাম।
আমান মাক্স পরে আছে।
তার চোখ দুটো আমার যেন তার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
আমি তো কখনো এভাবে আমান কে খেয়াল করি নি।।
আমি অবাকের চরম পর্যায়ে আছি
আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে তরিঘরি করে মাক্স খুলে ফেলল,
–কি বলব বলো করোনা বেড়েছে মাক্স ছাড়া চলা সম্ভব না।
আমি উঠে ওনার দিকে এগোতে হাত বাড়িয়ে দিলে,
–না থামো ওখানে থামো আমি বাইরে থেকে আসছি গোসল না করা পর্যন্ত তোমার কাছে আসবো না।
সরে থাকো।
–করোনা নিয়ে এতো ভয়ের কি আছে বুঝলাম না।
–আমার আছে আমি গোসল করে আসছি আমার কিছু ধরবা না জুতাটা বাইরে আছে ওটা একটু পর সার্ভেন্ট এসে নিয়ে যাবে।
আমান জীবাণু নিয়ে খুব সেনসিটিভ।
সে সোজা বাধরুমে চলে গেল।
আমি বুঝলাম না সে এতো ভয় কেন পেলো।
আমি বসে পরলাম আবার।
কিছু সময় পর আমান বেরিয়ে এলো।
ভেজা চুল নিয়ে টাওয়াল কাঁধে।
এসে সোজা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন,
–তুমি আসতে চেয়েছিলে আমি বাঁধা দিয়েছি তার জন্য সরি।
আমি পুরাই থ হয়ে গেছি।
হুট করে এভবে জড়িয়ে ধরেছে তিনি আমাকে।
বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
আমি এতেটাও কাছে যেতে চাইনি ?।
–কি ভাবছো।
আমানের কথায় ধ্যান ফিরল।
–কিছু না।
–সন্ধ্যায় একটা ব্লাক শাড়ি পরবে।
–রিসিপশনে কেউ ব্লাক পরে।
–হুম পরে আমান খানের স্ত্রী। unique যে তুমি তাই।
কথাটা বলে সে আমার থেকে সরে আসলেন।
আসলে তিনি অদ্ভুত।।
দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা হলো,
আমাকে তার কথা মতো একটা ব্লাক শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হলো।
আমান রুমে এসে আমার দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো,
–তুমি দেখছি আজ মেরেই ফেলবা।
কথাটা শুনে লজ্জা পেলাম।
উনি আমার হাত ধরে নিচে সবার মধ্যে নিয়ে এলো।। অনেক মেহমান।
কিছু সময় পর আমার মা বাবা আর ঋতু চলে এলো।
ঋতু এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো,
–কুইন তোমায় অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে বেব।
–তোমাকেও বেব।
–স্যার অবশেষে আপনি দুলাভাই হয়ে গেলেন এবার আর বকা ঝকা শুনবো না।
–নাহ বকা ঝকা কমি দিবো এবার থেকে যতোই হোক শালি তো অর্ধেক ঘর ওয়ালি তাই না।
–হুম সেটাই তো।
সবার মুখেই মিষ্টি একটা হাসি।
ঋতুর ফোন বেজে উঠতে সে একটু আড়ালে গেল।
–আচ্ছা শুনেন। (মেঘ)
–জি বলেন,(আমান)
–মিহা আপুকে কিন্তু কাল আইসক্রিম দেওয়া হয় নি।
–তুমি তো মনে করো নি। ওনার জন্য তো আইসক্রিম আমি স্পেশালি অডার করেছি।
–হ্যাঁ আজ যদি না দিন তবে আপনার নামে মামলা হবে কিন্তু।
–এই যাহ ভুলে গেলে তুমি মামলা হবে আমার নামে এটা কেমন কথা।
–এটাই কথা আপনি আমার স্বামী না আমি ভুলে গেলে তো আপনি মনে করবেন।
–আচ্ছা জো আগ্গা মহারানী ওনাকে ওনার আইসক্রিম আমি দিবো।
চলবে,
(আমান কিন্তু আইসক্রিম দিয়ে দিছে?)