সেদিন_ছিল_শরৎের_এক_সন্ধ্যা পর্ব_০১

0
6618

–কাউকে সারা জীবন কষ্ট দেওয়ার সাহজ উপায় কি জানো মেঘ তাকে বিয়ে করে জীবনের জন্য নিজের কাছে বেঁধে রাখা।
আমার অতি নিকটে এসে কথাটা বললো আমান ভাইয়া।
ভয়ে হৃৎস্পন্দনের গতি তিব্র ভাবে বাড়ছে।
কি হচ্ছে টা কি আমার সাথে।
–চলো কবুল বলো সাইন করো।
আমি শুধু আমার চার দিকে মাথাটা এক বার ঘুরালাম। সব গার্ড রা হাতে রিভলবার নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
নিজের দোষে নিজে ফেসে গেছি আমি আজ
আমি কি করব কিছুই বুঝতেছি না।
–মেঘ সাইন ইট (ধমক দিয়ে)
আমান ভাই এর ধমকে দম যায় যায় অবস্থা। ভয়ে ভয়ে সাইন করে দিলাম।
আল্লাহ বিয়েটা হয়ে গেল কিন্তু কেমনে কি?
আজ যার সাথে আমার এই মুহুর্তে বিয়ে হলো সে আমার আপুর হবু স্বামী আজ এখন এই মুহুর্তে তার সাথে আমার আপুর বিয়ে হবার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তি এ কি পরিহাস করলো আমার সাথে।
অতিত,
,
,
–তোমার আপুর বিয়েটা হবে না যদি না তুমি তোমাকে আমাদের হাতে সপে দেও।
বিয়ের ঠিক ১ ঘন্টা আগে আমার হবু দুলাভাই আমাকে এ কথাটা বলছে৷
কথাটা শুনে আমার পায়ের তলা থেকে মাটি যেন ভাগ হয়ে যাচ্ছে।
–ভাইয়া আপনি কি বলছেন এগুলা বিয়েটা হবে না মানে।
–বিয়েটা হচ্ছে না তুমি আমার সাথে এখনি কোন কথা না বলে কোন প্রশ্ন না করে চলো যদি তুমি আমার সাথে যাও তবেই তোমার আপুর বিয়েটা হবে।
–ভাইয়া এগুলা কি বলেন আমি কি করে আপনার সাথে যাবো মানুষ কি বলবে আর আপনি গেলে বিয়েটা কে করবে।
–তুমি কি চাও তোমার আপু অকালে সুইসাইড করে মারা যাক বিয়েটা না করে?
–কখনোই না৷
–তবে আমি যা বলি তাই করো আর হ্যাঁ হয় চলো নয় বোনের মরা মুখ দেখো।
আমি ত কিছুই বুঝতে পারছি না হচ্ছে টা কি আমার সাথে এগুলা ।
আমি কি করব। কিছুই বুঝতে পারছি না।
আপু ত সত্যি সুইসাইড করবে বিয়েটা না হলে।
আর ভাইয়ার সাথে যদি এখনে আমি এখন যাই তবে বিয়েটা কে করবে।
আল্লাহ ত কিছুই বুঝতে পারছি না।
–মেঘ (ধমক দিয়ে)
–জ জি.
–চলো আমার সাথে।
–কিন্তু ভাইয়া।
–মেঘ চলো আমার সাথে।
–নাহ আমি আমার আপুকে এভাবে রেখে যাবো না।
–ওকে তবে মা কে বলে এখনি বিয়েটা ন হবার ঘোষণা দেয়।
–না।
–তাহলে চলো।
আমি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম আমান ভাই এর দিকে।
আমান ভাই পকেট থেকে ফোন বার করতে যাবে তখনি আমি বললাম,
–যাবো চলুন।
,
ওনার সাথে বেরিয়ে পরলম চাদরে জড়িয়ে।
উনি বেশ কিছুটা সময় ড্রাইভ করে আমাকে নিয়ে এলো একটা বাংলো বাড়ির সামনে।
আর এখানে এসেই এতো কিছু।
,
,
চারিদিকে পিন পিন নিরবতা বিরাজমান।
একটা গোল আকৃতির ফুলে সজ্জিত খাটের মাঝে বসে আছি বৌ বেসে।
হটাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল। মাত্র কিছু মুহুর্তে আমি কারোর স্ত্রী হয়ে গেলাম।
কিন্তু কেন হলাম।
কি ভাবে আমি এই বোকামি টা করলাম।
আমার আপুর স্বামী কে বিয়ে করলাম আমি।
হে খোদা আমি কি করলাম এটা।
উনি এগুলা প্লান করে করেছে আমি জানি।
কিন্তু কেন করেছে।
,
আমার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে রুমে প্রবেশ করলো আমান,
মাথা তুলে তার দিকে তাকালাম,
–বাহ বধু বেশে বেশ মানিয়েছে তোমায়।
–কেন করলেন এমন আমার সাথে?
–কেমন করলাম?
–আপনি খুব ভালো করে বুঝতে পারছেন আমি কি বলছি।
–কেন করলাম? কি করলাম? কি জন্য করলাম? এগুলা প্রশ্নের উত্তর হয় ত তুমি জীবনে কখনো পাবে না।
আমার অতি নিকটে এসে হাত দুটো পেছনে মুচড়ে ধরে কথাটা বললেন তিনি।
ব্যাথার মুখ দিয়ে আহ করে শব্দ বার হলো,
–ব্যাথা লাগছে তোমার কষ্ট হচ্ছে?
–ছাড়ুন প্লিজ।
–ওকে,
আমাকে ছেড়ে দিলেন,
কিছু কাঁচের চুড়ি ভেঙে হাতে ঢুকে গেছে।
কিন্তু আমি অবাক হচ্ছি এটা ভেবে যে মানুষ টাকে আমি চিনি না জানি না সে মানুষ টা আমার সাথে এমন কেন করছে।
,
আমান ভাই তার বাম হাতের বেবি পিঙ্ক কালারের শাড়িটা আমার দিকে দিলেন,
–ফ্রেশ হয়ে নেও।
হাতের রক্ত চেপে উঠে দাঁড়ালাম।
বাধরুমের দিকে হাঁটতে উনি পেছন থেকে ধরে বসলেন,
কোন কথা না বলে ব্যান্ডেজ করা শুরু করলেন।
আমি চুপচাপ দেখতে থাকলাম।
ওনার আচরন গুলো আমাকে খুব ভাবাচ্ছে।
আপুর কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে ছি না আপু কি ঠিক আছে।
সব ধরনের চিন্তা এক সাথে গ্রাস করেছে।
উনি ব্যান্ডেজ শেষ করে আমাকে ছেড়ে দিলেন।
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে আসলাম।
খুব খারাপ লাগছে মাথার মধ্যে ঝিম ঝিম করছে।
আল্লাহ সব কিছু একটা ভয়ংকর স্বপ্নের মতো হতো তাহলে সব ভালো হতো।
মাথায় হাত দিয়ে বিছনায় বসে পরলাম।
,
–জানো এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলম আমি অনেক দিন ধরে।
আমান ভাই এর কথায় তার দিকে ফিরে তাকায়,
–তার মানে আপনি আমাকে আগে থেকে চিনতেন। সব আমার বিষয় তুমি এতো কিছু নিয়ে ভেবো না
–চেনা অচেনা সবটা আমার বিষয় তোমায় ভাবার দায়িত্ব দেয় নি।
–বিয়েটা কেন করলেন?
–প্রথমেই বলেছি কাউকে কষ্ট দেওয়ার সহজ উপায় তাকে বিয়ে করে জীবনের মতো বেঁধে রাখা।
#চলবে?
সেদিন_ছিল_শরৎের_এক_সন্ধ্যা পর্ব_০১
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা।

(গল্পটা আপনাদের ভালো লাগলে কন্টিনিউ করবো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here