–ভারি গয়না সাথে লাল পাড় সাদা একটা বেনারসি পড়ে দৌড়াতে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তাও নিজের জীবনের শেষ রাক্ষা টুকু চাচ্ছি আমি।
এভাবে নিজেকে একটা রাক্ষসের হাতে তুলে দেওয়ার কোন প্রশ্ন ওঠে না।
এতো সময় দৌড়াতেআছি আমি কিন্তু আশেপাশে কিছুই আমার চেনা নয়।
কি করব কিছু বুঝে পারতেছি না।
হটাৎ সামনে শাড়িতে বেঁধে হোটচ খেয়ে নিচে পড়ার আগে কেউ পেছন থেকে কোমর
ধরে বসলো।
আমি পড়লাম না।
মুখ ফিরে তাকিয়ে চাঁদের আলোতে মানুষ টার মুখটা দেখে ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম।
–জান পালাবে তুমি (খুব নরম কন্ঠে)
ভয়ে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছি আমি।
তার হিংস্র রুপে আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম।
–কি হলো বলো?
–ন…না।
–না তবে এভাবে পালালে কেন জান আমাদের ত আজ বিয়ে তাই না।
–আপনি ক কি করে,
–আমি কি করে এখানে এলাম।
তুমি ত দৌড়াচ্ছ সেই কখন থেকে তোমার বার হবার পুরো ১৩ মিনিট পর আমি বার হয়েছি কিন্তু দেখ তাও ধরে ফেললাম।
–আমি আমাকে ক্ষমা।
–থাক তুমি ক্ষমা কেন চাচ্ছো ভুল করেছো বুঝি।
ওনার কথার ধরনে বুঝতে পারছি ঠিক কতোটা রেগে থাকতে পারেন উনি।
–অর্ন আমি,
–তুমি কি আদ্রি তুমি খুব ভালো কাজ করতেছো তাই। আচ্ছা বাকি কথা আমি তোমার সাথে আমাদের
বিয়ের পরে বলব ওকে। চলো আমার সাথে।
–আমি,
–আদ্রি অর্ন বলেছে বিয়ের পর সে তোমার সাথে বাকি কথা বলবে বলেছে কি?
–…….(নিশ্চুপ)
–কি হলো উত্তর দেও(ধমক দিয়ে)
–হ্যাঁ তাই।
–তাহলে কেন কথা বলার সাহস দেখাচ্ছো।
চলো।
অর্ন কথাটা বলে আমাকে টানতে টানতে নিয়ে এলো।
বাসায় এসে দেখি সব কিছু তচনচ করা হয়েছে।। এখানের একটা জিনিস ও আস্ত নাই সব ভাঙা।
অর্ন একটা কিছু আস্ত রাখে নি তা বুঝতে কোন রকম ভুল হলো না আমার।
–কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করুন।
কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করলো।
কবুল টাও বলা হয়ে গেল।
আমি এই রাক্ষস টার হয়ে গেলাম।
কিন্তু কি করে।
–আদ্রি দেখ ত তোমার মা বাবার সাথে শেষ দেখা করে এসো যাও।
–শেষ দেখা মানে।
–মানে হলো ওনারা তোমায় পালাতে সাহায্য করেছে না তাই এখন এই মুহুর্তে তোমার সাথে তাদের শেষ দেখা হবে।
–দেখুন আমি।
–অর্ন কিছু বলেছে আদ্রি।
আমি পদশ ফিরে দেখি মা বাবা অসহায় চোখে পানি ফেলছে।
দৌড়ে তাদের জড়িয়ে ধরলাম।
–মারে বাবা হয়েও কিছু করতে পারলাম না ক্ষমা করে দিস।
–বাবা আমি যাবো না বাবা।
আমার কথা শেষ হতে না হতেই বন্দুকের গুলির শব্দে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠলো।
ভয়ে মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
–চলো আদ্রি অনেক হইছে।
অর্ন আমার হাত ধরে বসলো।
–মা আমি,
–তুমি কি চাইছো আদ্রি এখানে কিছু হোক
আমি তার কথার মানে বুঝতে পারলাম।
মায়ের হাত ছেড়ে তার সাথে চলে আসতে হচ্ছে
মায়ের অসহায় মুখটা আমার বুকের মধ্যে বার বার দেখা দিচ্ছে।
তাও কিছুই করতে পারলাম না।
গাড়িতে নিরব সময় কাটলো।
অর্নের বাসার সামনে আসতে অর্ন আমার হাত ধরে টানতে টানতে সোজা তার বেডরুমে এনে ফেললো।
ভয়ে কুচুমুচু হয়ে গেলাম আমি।
–তুমি ভয় পাচ্ছো কেন জান আমি ত কিছুই করি নি।
আমি নিঃশব্দ কেঁদে চলেছি।
–কি হলো কাঁদছো কেন আদ্রি আমি কিন্তু তোমায় কোন প্রকার কষ্ট দেয় নি।
অর্ন আমার কাছে এসে দু বাহু ধরে আমার তুলে তার মুখোমুখি দাঁড় করালো,
–আমি ত বলেছিলাম আদ্রি একটু ভালোবাসা চাই তোমার থেকে আমার আর কিছু চাই না।
তবে কেন আমার থেকে এভাবে পালাচ্ছো বলো না আদ্রি।
–আমি মায়ের কাছে যাবো। (কেঁদে)
–না আমার থেকে তুমি কোথাও দুরে যাবে না তুমি আমার কাছে থাকবে আমার শুধু আমার কাছে।
–আমি!
কথাটা বলা শেষ হতে না হতে আমার গালে তার ৫ আঙুল বসিয়ে দিলো অর্ন।
ছিটে অন্য দিকে গিয়ে গিয়ে পড়লাম।
মাথায় আঘাত পেলাম বিছনার কোনায় লেগে।
চারিদিক কপমন অন্ধকার হয়ে আসতে লাগলো।
তখনি অর্ন আমার গলা চেপে ধরলো,
–শুধু ভালোবাসা চাওয়াটা কি এতোই অন্যায়।
বল আদ্রি।
বল না বলিস ন কেন?
দম বন্ধ হয়ে আসছপ আমার চোখের সামনে ঝাপসা দেখছি কিন্তু অর্ন আমাকে ছাড়ছে না।
–কষ্ট হচ্ছে না অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তোমায় কেন আমি আবার সেই একি ভুলের শাস্তি দিচ্ছি আদ্রি কেন।
আমার চোখ লাল হতে দেখে অর্ন গলাটা ছেড়ে দিলো।
আমি কাশি শুরু করলাম।
প্রচুর কষ্ট হচ্ছে।
কিছুই বুঝার ক্ষমতা মস্তিষ্ক হারিয়ে ফেলছে।
ভালো মন্দ অনুভব হওয়া বন্ধ হয়ে এলো।
চোখের সামনে সব অন্ধকার।
আদ্রি সেন্স হারাতে অর্ন আদ্রিকে ধরে চোখের কোনে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু পানি ছেড়ে দিলো
–কেন এমন করো বিগত ৫ টা বছর তোমার অপেক্ষা তে কাটিয়েছি আমি।
কিন্তু তুমি আমাকে এভাবে কষ্ট দেও।
কেন দেও এতে কষ্ট আগে ত তুমি এমন ছিলে না আদ্রি আগে ত খুব ভালে ছিলপ তবে আজ কেন এতো কষ্ট দেও আমায়।
তুমি ত আগে বুঝতে আমাকে আমি কি চাই কি না চাই।
তবে আজ কেন এমন হলে আদ্রি।
,
অর্ন ডক্টর কে কল করে আদ্রি কে ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখে।
সারাটা রাত শুধু আদ্রির মুখের দিকে চেয়ে কাটায়।
–কি মায়া এ মুখে যা আমি আজো ভুলতে পারি না।
যে আমার থেকে পালাতে চায় তাকে বুকে রাখার চেষ্টায় আমি থাকি।
কেন এমন করিস আদ্রি তুই ভালোবাসি ত খুব কেন বুঝিস না।
চলবে,
বিনি_সুতার_মালা?
লামিয়া_রহমান_মেঘলা
পর্ব_০১
(আমাকে একটু জানাতে হবে গল্প টা ভালো না মন্দ।
ধন্যবাদ সবাইকে)