প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো?
পর্ব_১৬
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
–এটা সম্ভব কি করে রাইমার এখন কোচিং এ থাকার কথা। আর তুমি বলছো ও নেই।
–স্যার ম্যাম সত্যি নেই। কোচিং ছুটি হবার ২ মিনিট আগে আমি এখানে আসছি কিন্তু ম্যাম নাকি অনেক আগেই অসুস্থ জন্য চলে গেছে।
–বেয়াদব গুলো একজনও কাজের না।
ফোন রাখো।
নীল ফোনটা কেটে দিয়ে নিজের সামনে থাকা টেবিলটা উল্টে দেয়।
–আআআ…….
রাইমা তুমি কাজটা ঠিক করো নি। আমি তোমায় ক্ষমা করবো না।
।
।
এক দিকে দৌড়াতেই আছে রাইমা লক্ষ তার মামা বাড়ি যদি এই অবস্থায় কোন হেল্প তারা করে আর তা ছাড়া রায়ান ভাই (রাইমার মামাতো ভাই)খুব ভালো তাকে খুব স্নেহ করে এতো বড়ো বিপদে রাইমাকে রায়ান হেল্প করবে সেটা রাইমার বিশ্বাস।
কিন্তু মামা বাড়ি এখান থেকে ৩ কি.মি দুরে রাস্তা বেশ চেনা তার এদিকে সে অনেক এসেছে কিন্তু দৌড়িয়ে আর পারছে না প্রচুর কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু না দৌড়ে তো আর উপায় নেই।
নীল যদি দেখে ফেলে এতো সময়ে নিশ্চিত বুঝে গেছে রাইমা নেই।
হটাৎ একটা ইটে হোচট খেয়ে রাইমা উবু হয়ে পরে।
–আউ মাগো।
রাইমা থুতনিতে বেশ ব্যাথা পেয়েছে।
–হে আল্লাহ আমাকে এখনি পরতে হলো কি করবো এবার।
আল্লাহ উনি যদি চলে আসে না না আমাকে যেতে হবে আমি ওনার সাথে থাকতে চাই না।
–কার সাথে থাকতে চাও না বৌ।
পেছনে নীলের কন্ঠ পেয়ে রাইমার হাত পা ঠান্ডা আর অবশ হয়ে আসছে।
নীল গিয়ে রাইমাকে তুলে।
–ইস থুঁতনি টায় ব্যাথা পেয়েছো চলো বাসায় চলো ব্যান্ডেজ করে দিবো।
রাইমা চুপ আছে নীলের ব্যবহার ভালো লাগছে না।
–কি হলো দাঁড়িয়ে রইলে কেন?
–আমি বাসায়,
–আমি তোমার গায়ে হাত তুলতে চাই না রাইমা আমার প্রিয় আমাকে আর রাগিও না এবার পরিনতি ভালো হবে না।
রাইমা চুপ হয়ে গেল।
নীলের সাথে চললো।
গাড়িতে বসে শুধু আল্লাহকে ডেকে চলেছে।
।
।
।
–পৃথুলা।
–জি মা।
–কিছু হয়েছে মা।
–না মা তেমন কিছু না।
–আমি জানি তুই রাইমাকে নিয়ে চিন্তিত কিন্তু তুই চিন্তা করিস না নীল ভালো ছেলে।
–তুমি কি করে বুঝতেছো মা।
–আমি আমি কি করে এসব বাদ দে তুই।
–মা তুমি কিছু লুকাচ্ছো।
–না মা কি লুকাবো বল।
–মা আমার রাইমা ভালে আছে তো।
–আমার তো মনে হয় খুব বেশি ভালো আছে।
–তাই যেন হয়।
–তুই এতো চিন্তা করিস না মা দিন দিন রোগাটে হয়ে যাচ্ছিস।
–কি যে বলো।
–সত্যি বলি পরের মাসে তোকে আর প্রেয়ন কে হানিমুনে পাঠাবো বুঝলি।
–পরের মাসে!
–হ্যাঁ ওমন৷ ভাবে বলছিস কেন?
–(পরের মাসে তো তোমার সাথেই থাকবো না গো মনে মনে)
–কি ভাবছিস পৃথুলা।
–কিছু না মা।
–আচ্ছা আমি এখন আসি প্রেয়ন আসবে একটু পর খাবার টা দিস হুম।
–আচ্ছা।
মা চলে গেল।
–কি অদ্ভুত তাই না পৃথিবীতে কিছুই আপন নয়।
–পৃথু।
কারোর চেনা কন্ঠ পেছনে শুনে ফিরে তাকালাম।
আমি পেছনে ফিরে প্রেয়নের অবস্থা দেখে আমি থ মেরে দাঁড়িয়ে রইলাম।
এক হাতা ভাজ ইন করা সার্ট এক পাশ বেরোনো।
হাতে মদের বোতল। ডুলছে সে।
–আপনি!
–ভালোবাসি পৃথু।
–কিহ!
–হা হা অবাক হচ্ছিস না?
অবাক হবারি কথা আমি জানি তুই অনেক রেগে আছিস কিন্তু সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসি।
–কেন ভালোবাসেন আমি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা রাখি না।
–হু জানিস তোকে ভালোবসেও কেন আমি দুরে সরিয়ে রাখি।
–না জানি না কিন্তু জানতে চাই সত্যি আমি জানতে চাই সবটা জানতে চাই।
–শুনবি আয় শোনাচ্ছি,
কথাটা বলে প্রেয়ন আর একটা কথা না বলে আমার কাঁধে ডলে পরলো।
–প্রেয়ন।
আজো উত্তর মিললো না।। কিন্তু এই প্রথম প্রেয়ন কে আমি ড্রিঙ্ক করতে দেখলাম।
কিন্তু কেন?
–উফ, সব কিছু কেমন এলোমেলো লাগছে।
এসবের উত্তর কে দিবে আমায়।
প্রেয়নকে শুইয়ে দিয়ে জুতা খুলে কম্বল টেনে দিলাম ওনার গায়ে।
ইচ্ছে হচ্ছে না এখন আর আমার কিছু করতে জীবনের সুতো গুলো পুরোই পেচিয়ে গেছে।
।
।
।
–খেয়ে নেও রাইমা।
–আম,
–আমি কথা বলতে বলি নি খেতে বলেছি যা আমি বলি শুধু তাই করবে দ্বিতীয় কোন প্রশ্ন বা কথা নয়।
রাইমা চুপচাপ খেয়ে নেয়।
কাঁদতে কাঁদতে।
–পড়তে বসো।
–প পড়া হ হবে ন না।
–কেন হবে না (ধমক শুরে)
–ভালো লাগছে না পড়া মাথায় ঢুকবে না (কেঁদে দিয়ে)
–এদিকে এসো।
রাইমা এক পা এক পা করে নীলের কাছে যায়।
নীল তার কোলে একটা বালিস দিয়ে রাইমাকে শুতে ইশারা করে৷
রাইমা শুয়ে পরে।
নীল হাত বুলিয়ে দেয়।
আস্তে আস্তে রাইমা ঘুমিয়ে যায়।
বীল রাইমার থুতনিতে মলমপটি করে দেয়।
মেয়েটা একেবারে বাচ্চা।
এই বাচ্চামিতে হয় তো নীল পাগল।
চলবে,