প্রেমনগর পর্বঃ১ +২

0
6114

#প্রেমনগর
পর্বঃ১ +২
লেখাঃনীলাদ্রিকা নীলা
.
ইদানীং আফতাফ চৌধুরী তার পুত্রদের নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে রয়েছেন। আফতাফ চৌধুরীর তিন পুত্র। আকাশ চৌধুরী, মেঘ চৌধুরী, রৌদ্র চৌধুরী। তিন পুত্রই দেখতে মাশাল্লাহ মারাত্মক সুদর্শন। বড় ছেলে আকাশ চৌধুরী পেশায় একজন ডাক্তার। বয়স ছাব্বিশ ছুঁই ছুঁই। শুধুমাত্র পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ছাত্রজীবনে প্রেম করার সময় পায়নি। মেডিকেলের অনেক সুন্দরী তরুণীরা তার পিছু পিছু ঘুরেছে। এমনকি এখনো তার বাড়িতে মেয়ের বাবারা তার সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত বিয়ের প্রস্তাব সামলাতে সামলাতে আফতাফ চৌধুরী হিমশিম খান। রোজ রোজ বিভিন্ন মেয়ের বাড়ি থেকে টেলিফোন আসে৷ কিন্তু আকাশের মতামত ছাড়া তো আর বিয়ের দিকে এগোনো যায় না। বহু নারী আকাশের মন জয় করার জন্য পাল্লা দিয়ে উঠেছে। কেউ কেউ আকাশের রুপের পাগল আর কেউ কেউ তার উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের। তাদের একটাই লক্ষ্য আকাশের সাথে প্রেম করা।
আকাশ রুগী দেখার জন্য চেম্বারে এসে বসলো। মধ্য বয়স্ক এক ভদ্রলোক একটা অল্পবয়সী মেয়েকে নিয়ে চেম্বারের ভিতরে এসে বসলেন। উনার শুকনো মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি উনার মেয়েকে নিয়ে খুবই চিন্তিত।
সব গুলো রিপোর্ট দেখে আকাশ বলে উঠল, সব কিছু তো নরমালই আছে।
মেয়েটা আকাশের দিকে তাকিয়ে খিলিখিল করে হাসতে হাসতে বললো,আমার কোনো সমস্যা নেই তো! আপনি শুধু শুধু সময় নষ্ট করছেন।
ভদ্রলোকঃ আমার মেয়ে অহনা রুমের ভিতর একা একাই নিজের সাথে কথা বলতে থাকে।সব সময় অদ্ভুত আচরণ করে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ছে। সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকে।পড়াশোনা ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না!কতবার বলেছি একটু বাহিরের হাওয়া বাতাস লাগা। কিন্তু কারো কোনো কথাই শোনে না।
আকাশঃ হুম বেশি পড়াশোনার চাপেই হয়তো এমনটা হয়েছে।
ভদ্রলোকঃ বাড়ি থেকে ওকে এখন বিয়ে দেওয়ার কথা বলছে। রোগ বেড়ে গেলে যদি আর কেউ পাগলী ভেবে বিয়ে না করে৷
আকাশঃ দেখুন ওরকম পড়াশোনা আমিও করেছি। আমাদের দেখতে হবে ওর আচরণের ধরনটা কেমন। তারপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপাতত ওকে কয়েকদিন পড়াশোনা থেকে দূরে রাখতে হবে। আমরা উনাকে হাসপাতালে এডমিট করছি৷
অহনাঃ উফ বাবা! আমার বান্ধুবিরা আমাকে বলেছে একটা প্রেম করতে। তাহলে নাকি আমি পড়াশোনা থেকে একটু দূরে থাকব। প্রেম নিয়ে ব্যস্ত থাকবো। হিহিহি আমি তো একটা প্রেম করার চেষ্টাই করছি! হাহাহা। আচ্ছা বাবা আমি যদি অনেক গুলো প্রেম করে ফেলি তাহলে আমি অনেক ব্যস্ত থাকবো তাইনা!
ভদ্রলোকঃ দেখুন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যাচ্ছে আমার মেয়ে! আপনি আমার মেয়েকে ভালো করতে পারলেন না?
আকাশঃ আমি কোনো কাজে ব্যর্থ হইনা। ভরসা রাখুন।
অহনা হাসতে হাসতে বললো, বাবা ডাক্তারটা খুব হ্যান্ডসাম তাইনা! আমার সাথে চলবে? আমি উনার সাথেই প্রেম করবো৷ করবোই করবো! আচ্ছা ডাক্তার, প্রেম কিভাবে করে?
.
অহনার বাবা এবার কান্নায় ভেঙে পরলেন। টেবিলের ওপর বারি দিতে দিতে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলেন৷ উনার কান্নার শব্দে দুইজন নার্স ভিতরে চলে এলো। অহনা খিল খিল করে হেসেই যাচ্ছে৷
অহনার বাবাঃ দেখছেন তো ওর অবস্থা! দেখলেন তো!এসব জানাজানি হলে ওকে আর কে বিয়ে করবে চাইবে। অবস্থা তো যা খারাপ হওয়ার তা তো হয়েই গেলো। বাড়িতে ওর মা ওর চিন্তায় বার বার জ্ঞান হারাচ্ছে।
আকাশঃ আচ্ছা শান্ত হন৷ কাঁদবেন না। আপনার মেয়ের দায়িত্ব আমি নেব৷
.
এই কথা শোনার সাথে সাথে অহনার বাবার মুখ উজ্জ্বল হয়ে যায়। শুকনো মুখে হাসি ফুটে ওঠে। কারণ দায়িত্ব নেওয়ার কথাটায় উনি ভেবে নিয়েছেন ডাক্তার আকাশ চৌধুরী তার মেয়ে অহনাকে বিয়ে করবেন। মেয়েকে নিয়ে গিয়ে তিনি হসপিটালের একটা কেবিনে ভর্তি করালেন। আর বাড়িতে ফোন করে অহনার মাকে বললেন, অহনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ফোনে কথা বলার সময় একজন নার্স এই বিষয়ের সবটা শুনে ফেললো। আর সাথে সাথে সে গিয়ে হসপিটালের ম্যানেজারকে এই সংবাদটা দিয়ে দিলো৷
.
ম্যানেজার সাহেব ডাক্তার আকাশ চৌধুরীর বাড়িতে ফোন করলেন।
ম্যানেজারঃ স্যারতো একজন মানসিক রোগীকে বিয়ে করছেন। স্যারকে আটকান।
আফতাব চৌধুরীঃ কিহ! আমাদের না জানিয়েই বিয়ে করছে!
.
পাশেই আকাশের মা মনিরা বেগম দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি চেচিয়ে বললেন, কে বিয়ে করছে!
আফতাব চৌধুরীঃ তোমার বড় ছেলে নাকি তার হসপিটালেরই একটা রোগীকে বিয়ে করছে।
আকাশের মা চিল্লিয়ে বলছেন, এইসব হয়েছে তোমার জন্য! কবে থেকে বলছি ছেলের বিয়ে দেও। বিয়ে দেও! আমার কথা শুনলে আজ এই দিন দেখতে হতো না।
আফতাব চৌধুরীঃ চুপ করো তুমি!তোমার ছেলেরা তো কখনোই কোনো কথা শোনে না। শুনবে কিভাবে! লাই লাই দিয়ে তো ছেলেদের মাথায় তুলে ফেলেছো।
মনিরা বেগমঃ একদম আমার ছেলেদের নামে উল্টো পাল্টা কিছু বলবে না বলে দিলাম।
.
ওপর পাশ থেকে চেচামেচির আওয়াজ শুনে ম্যানেজার সাহেব তাড়াতাড়ি কলটা কেটে দিলেন। আকাশের বিয়ে নিয়ে প্রেমনগরের চৌধুরী মহল এখন খুবই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে।
.
আফতাব চৌধুরীর মেজো পুত্র মেঘ চৌধুরী। ভার্সিটির বায়োলজি ডিপার্টমেন্টের খুবই অ্যাকটিভ ছাত্র।বয়স সবে চব্বিশ। তার সুন্দর চেহারা আর আকর্ষনীয় বডির প্রতি ভার্সিটির প্রতিটি মেয়ের নজর। বাইক নিয়ে যখন সে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢোকে, প্রতিটা মেয়ে তখন হা করে ড্যাবড্যাবিয়ে চেয়ে থাকে। চোখে সানগ্লাস,গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি আর মায়া মায়া ভরা হাসিটা দেখলে মেয়েদের বুকে ঝড় উঠে যায়। ল্যাবে ব্যস্ত থাকার সময় মেঘের মোবাইল ফোন বেজে উঠল। মেঘ একটু সাইডে গিয়ে কলটা রিসিভ করে।
ফোন রিসিভ করার সাথেই…
মনিরা বেগমঃ সর্বনাশ হয়ে গেছে বাবা! তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আয়।
মেঘঃ কেন মা কি হয়েছে? ড্যাড কি কিছু করেছে?
মনিরা বেগমঃআরে না! আকাশ নাকি তার হসপিটালেরই এক রোগীকে বিয়ে করে ঘরে আনছে।
মেঘঃ হাহাহা….মা তুমি এসব কি বলছো। ভাইয়া এমন কাজ কখনোই করবে না। সো রিলাক্স থাকো। মা আমি একটু ল্যাবে কাজ করছি।তোমার সাথে এই বিষয়ে পরে কথা বলবো৷ এখন রাখি মাই ডিয়ার সুইট মাদার।
মনিরা বেগমঃ হ্যালো হ্যালো……ধ্যাত কেটে দিয়েছে।
.
মনিরা বেগম এবার ছোট পুত্র রৌদ্র চৌধুরীকে ফোন করলেন৷ রৌদ্র চৌধুরী দেখতে যেমন স্মার্ট তেমনি কথাবার্তাতেও বেশ স্মার্ট। তার রুপ আর কথার জাদুতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্য যেকোনো অতি রূপবতী নারীও পটে যায়। বয়স মাত্র একুশ বছর। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে৷ এখনো পর্যন্ত কোনো প্রেম না করলেও মেয়েদের সাথে তার মেলামেশা প্রচুর। কিন্তু কেউ তার মনে জায়গা করে নিতে পারেনি। ফ্রেন্ড সারকেল নিয়ে হ্যাং আউট করার সময় মনিরা বেগম তাকে কল করেছেন৷ রিং হয়েই যাচ্ছে কিন্তু রিসিভ করছে না। এভাবে কয়েকবার দেওয়ার পর রৌদ্র চৌধুরী যখন পকেট থেকে ফোন বের করে সেলফি ওঠাতে যাবে তখনই মায়ের কল আসছে দেখে সাথে সাথে সেটা রিসিভ করলো।
রৌদ্রঃ উম্ম সরি মামমাম ফোন সাইলেন্ট ছিল তাই দেখতে পাই নি৷ এখন আদেশ করুন আমার মাতা আমায় কি করতে হবে!
মনিরা বেগম এবার কড়া হয়ে ধমক দিলেন,কোথাই তুই! এক্ষুনি বাড়ি আয়৷
রৌদ্রঃকেন মা কি হয়েছে!
মনিরা বেগমঃ তোর ভাই তো কান্ড বাধিয়ে ফেলেছে। বাড়িতে গন্ডগোল চলছে। আকাশ হসপিটালের একটা রোগী মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে আসছে।
রৌদ্রঃ ওয়াট!ভাইয়াকে কিছু বলোনি?
মনিরা বেগমঃ বলার সুযোগ আর পেলাম কই। ফোনে তো ওকে পাচ্ছিনা। নিশ্চয়ই আমার ভয়ে বিয়ের খবরটা গোপন রাখতেই ফোন বন্ধ করে রেখেছে।
রৌদ্রঃ ওকে ওকে। আমি আসছি।টেনশন নিও না।
.
আকাশের ফোনে চার্জ নেই। বাহিরের কিছু কাজ সেড়ে,দুপুরের খাবার খেয়ে আবার চেম্বারে এসে বসলো। আর ফোনটা চার্জে লাগিয়ে দিল। নার্সটা চেম্বারের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো,স্যার আসবো?
আকাশঃ হ্যা এসো ।
নার্সঃ স্যার আপনি কি সত্যি সত্যি বিয়ে করছেন?
নার্সের কথা শুনে আকাশের চোখ কপালে উঠে যায়।
আকাশঃ আমি বিয়ে করছি মানে! কি বলছো এসব!
নার্সঃ স্যার তখন যে রোগীটা এডমিট হলো যাকে আপনি দায়িত্ব নেয়ার কথা বললেন।
আকাশঃওহ হো আমি কি বিয়ে করার কথা বলেছি নাকি! আমি তো ওকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিতে চেয়েছি।
নার্সঃ কিন্তু উনার বাবা যে উনার বাড়িতে ফোন করে বললেন আপনার সাথে উনার বিয়ে।আপনি উনার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন। আর এটা শুনে তো আমিও…
আকাশঃ কি আমিও?
নার্সঃ ম্যানেজার সাহেবকে বলে দিয়েছি।
আকাশঃ আর ম্যানেজার আমার বাড়িতে ফোন করে সবটা জানিয়ে দিয়েছেন তাই তো!
নার্সটা এবার মাথা নিচু করে উত্তর দিল, না মানে আসলে স্যার, আপনার বাবাই তো সব সময় এখানের সব খবর উনাকে জানাতে বলেন।
আকাশঃ হুম জানি। বাবা এই কাজ আগেও করেছে। ঠিকাছে তুমি যাও এখান থেকে৷ খুব ভালো গন্ডগোল বাঁধিয়ে দিয়েছো। নাউ জাস্ট গেট আউট!
নার্সটা তড়িঘড়ি করে চেম্বার থেকে বেড়ি গেল। আর আকাশ কাপালের ওপর দুই হাত দিয়ে বসে রইলো। কারণ বাড়িতে এখন এটা নিয়ে তিঁল থেকে তাল হয়ে যাচ্ছে।
.
মেঘ চৌধুরী ল্যাব থেকে বের হতেই নীলা এসে মেঘের হাত ধরে ফেললো৷
নীলাঃ এ্যাই কোথায় যাচ্ছিস? তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
মেঘঃ এসব কি করছিস হাত ছাড়! এখানে এভাবে কেউ দেখে ফেলবে। আর আমাকে যেতে হবে। তোর কথা আমি পরে শুনবো।
নীলাঃ আজ বিকালটা তুই আমাকে সময় দে না। প্লিজ।
মেঘঃ উফ! আমাকে এক্ষুনি প্রেমনগর যেতে হবে।
নীলাঃ প্রেমনগর মানে!
মেঘঃ তোর মাথা! প্রেমনগর মানে আমার বাড়ি। বাড়িতে একটা বিষয় নিয়ে গন্ডগোল চলছে। আমাকে গিয়ে সামলাতে হবে৷ আসছি।
নীলা ভ্রু কুচকে মেঘের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
.
সময় রাত ৮ টা। আকাশ চেম্বারে বসে আছে। বাড়িতে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। হঠাৎ মনে হলো অহনাকে একবার দেখে আসা উচিত। নিজের চিন্তায় ওর ব্যপারটা মাথা থেকেই বেড়িয়ে গেছে। অহনার কেবিনে গিয়ে দেখলো। সে বেডে বসে আছে আর তার সামনে বসা কাকে যেন সে বলছে।
অহনাঃ না আমি আগে প্রেম করবো তারপর বাকিসব কিছু…
.
অহনার বাবা তখনই কেবিনের ভিতরে ঢুকতে গিয়ে আকাশকে এখানে দেখে বলে উঠলেন,ওইতো আমাদের জামাইবাবা! যাও বাবা ভিতরে যাও।অহনার খালাতো বোন এসেছে।
.
গ্রাম থেকে আসা অহনার খালাতো বোন তুলি এদিকে ফিরে চিল্লিয়ে বলে ওঠে,দুলাভাই!
এটা শুনে আকাশ জিব্বাহতে ছোট করে একটা কামড় দিল। অহনাকে দেখতে এসে আকাশ এক রকম লজ্জাজনক অবস্তুয়াতেই পড়ে যায় ।
.
আকাশ কি করবে বুঝতে পারছেনা। অহনার বাবা বিয়ের ব্যাপারটা বাড়িতে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের প্রস্তুতিও নাকি নেয়া শুরু হয়ে গেছে৷ উনি মেয়েকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে শশুড়বাড়ি পাঠাতে পারলেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। মেয়ে যে দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছে।কথায় কথায় প্রেম প্রেম করে। শেষে চরিত্রের দোষ ভেবে যদি আর কেউ বিয়ে না করে! অহনার বাবা আকাশের হাত ধরে বলছেন,তুমি আমাকে অনেক বড় বিপদের হাত থেকে বাঁচালে বাবা। বিয়েটা যত তাড়াতাড়ি সেরে নেবে ততই ভালো। আমি এখন আসি৷ বাড়িতে সব আয়োজন ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা দেখতে হবে।
আকাশ কিছু না বলে মুখে জোর করে একটু হাসি এনে মুচকি হাসার চেষ্টা করলো।
.
চলবে….
#প্রেমনগর
পর্বঃ২
লেখাঃনীলাদ্রিকা নীলা
.
অহনার বাবা তুলিকে নিয়ে হসপিটাল থেকে চলে গেলেন। আকাশ এবার অহনার দিকে তাকানোর সাথেই দেখতে পেলো অহনা আগে থেকেই আকাশের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আকাশঃ কি হলো আপনি আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
অহনাঃ আপনি অনেক ভালো। আমার বাবার একমাত্র চিন্তা ছিলাম আমি।
আকাশঃ তো?
আহনাঃ আমার বিয়ের খবর শুনে বাড়িতে সবাই অনেক খুশি! কি যে চিন্তায় ছিলো আমাকে নিয়ে!আচ্ছা আমি বিয়েতে কোন শাড়ি পরবো বলুন তো। লাল শাড়ি না নীল শাড়ি!
.
আকাশ এবার হাসতে হাসতে বললো, কে বললো আপনি পাগল! আমি তো দেখছি আপনি একদম সেয়ানা পাগল। এরই মধ্য সব ঠিক করে ফেললেন!
আহনাঃ হুম শুধু প্রেমটা কিভাবে করতে হয় সেটাই জানিনা।
আকাশ আবারও হেসে ফেললো। এভাবেই দুচারটে কথা শুরু করতে করতে আকাশ সারারাত অহনার সাথে গল্প করলো আর অহনাকে পছন্দ করে ফেললো। দুজনে সারারাত হাসি ঠাট্টা করে কাটালো। এমন একটা মেয়েকে বউ হিসেবে পেলে তো জীবন হবে রসময়।
.
সকালবেলা নার্স কেবিনে ঢোকার সাথেই তার চোখ কপালে উঠে যায়৷ সে দেখলো আকাশ চৌধুরী অহনাকে খাবার খাওয়াচ্ছে। তাও আবার নিজের হাতে৷ এটার দেখার সাথে সাথে নার্স এক দৌড়ে চলে গেল রিসিপশনের ওখানে ম্যানেজারের কাছে খবরটা দিতে।
.
ঘন্টাখানেক পর আকাশ চৌধুরী প্রেমনগরের চৌধুরী মহলে ফিরলে ড্রইংরুমে বসা বাড়ির সকলেই চোখ বড় বড় করে আকাশের দিকে তাকায়।
আফতাব চৌধুরী তার হাতে থাকা নিউজ পেপারটা সরিয়ে বলেন, কোথায় ছিলি সারারাত!
আকাশঃ নাইট ডিউটি ছিল ড্যাড!
মনিরা বেগম চেচিয়ে বললেন, কি ডিউটি ছিল তা আমরা সকলেই জানি৷ মেয়েটি এখন কোথায়?
আকাশঃ ওকে বাড়ি নিয়ে গেছে। আর পরশু আমার বিয়ে। তোমরা সবাইকে খবর দিয়ে সব আয়োজন শুরু করে দেও।
.
এই কথা শুনে সবার চোখ গুলো তাদের কোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম হয়। মেঘ আর রৌদ্র চৌধুরী এক সাথে বলে উঠল, ভাইয়া তুই কি সত্যি সত্যি!
কথা শেষ করার আগেই মনিরা বেগম চিল্লিয়ে উঠলেন, একটা পাগল মেয়েকে আমি কিছুতেই আমার ছেলের বউ করবো না! তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে আকাশ!
আকাশঃ মা ও পাগল নয়! ও একদম সুস্থ মানুষ। পড়াশোনার কারনেই ওর মাথাটা একটু বিগড়ে গেছে এই আরকি। আর তাছাড়া আমি তো আছিই। আর আমি ওদের কথা দিয়ে ফেলেছি। এখন তোমরা যদি বিয়েতে মত না দেও আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাব৷
আফতাব চৌধুরী এবার হুংকার দিয়ে বলে উঠলেন, এই প্রেমনগর ছেড়ে কেউ কোথাও যেতে পারবে না। তোর বিয়ে ওর সাথেই হবে।
.
এটা শুনে বাড়ির সকলেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে৷ আফতাব চৌধুরীর একমাত্র দুর্বলতা তিনি তার ছেলেদের এই বাড়ি থেকে অন্য কোথাও যেতে দেবেন না। বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার অজুহাত দেখাতে পারলেই তিনি ছেলেদের অনেক বিষয়ই চোখ বন্ধ করে মেনে নেন। মনিরা বেগম রাগে ফুসতে ফুসতে উনার ঘরে চলে গেলেন।
.
আত্মীয় স্বজনদের খবর দিয়ে বাড়িতে আনা হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্য অনেকেই চলে এসেছেন। হঠাৎ করে বিয়ের খবর শোনায় আনন্দে বাড়িতে দিগুন পরিমাণ হৈচৈ হচ্ছে। বাড়ি সাজানো হচ্ছে। আগামীকাল সকালে গায়ে হলুদ হবে আর দুপুরের মধ্য বিয়ের সব কাজ কমপ্লিট করে বিকেলের মধ্যেই বউ নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরবে।
মেঘ আকাশের রুমে উকি দিয়ে দেখলো আকাশ হেসে হেসে ফোনে কথা বলছে। দরজা থেকে কাশি দিয়ে আকাশ বলে উঠল, ভাবী কি খুব হাসায় ভাইয়া!
আকাশ চমকে উঠে পিছনে ফিরে বললো, ইয়ে মানে তুই এখানে কি করছিস! যা নিজের কাজ কর।
মেঘঃ নিজের কাজই তো করছি৷
বলেই একটা বাঁকা হাসি দিল। আকাশ উঠে এসে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়। মেঘের হাসি মুখটা বন্ধ হয়ে গেল। দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে মেঘ চেচিয়ে বলে ওঠে,নিচে তোকে ডাকাছে। কোন পাঞ্জাবিটা পড়বি সেটা দেখার জন্য! হুহ! তোর পিরিত শোনার জন্য আসি নাই।
তখনই মেঘের ফোনের রিংটন বাজতে শুরু করে। নীলা ফোন করেছে। ফোন রিসিভ করার সাথেই নীলার ঝাঝালো কন্ঠের আওয়াজ পাওয়া যায়।
নীলাঃ কতক্ষণ আগে মেসেজ দিয়েছি! কোনো রিপ্লাই করছিস না কেন! ইচ্ছা হচ্ছে তোর মাথাটা ফাটিয়ে দেই।
মেঘঃ তুই এতো রেগে আছিস কেন। কি বলবি বল।
নীলাঃ আজ ক্যাম্পাসে আসলিনা কেন?তুই জানিস না তোকে একদিন না দেখতে পেলে আমার মাথাটা খারাপ হয়ে যায়?এ্যাই তোর বাড়িতে এতো হৈচৈ কিসের রে?
মেঘঃ কাল ভাইয়ার বিয়ে এজন্যই এতো হৈচৈ।
নীলাঃ বিয়ে? কই আগে তো কিছু বলিসনি।
মেঘঃ হঠাৎ করেই।
নীলাঃ এ্যাই শোন না তুই আমাকে নিয়ে এরকম কিছু ভাবিস না? সত্যি বলবি কিন্তু
মেঘঃ কি ভাববো?
নীলাঃ কি ভাববো মানে? তোর মন কি চায় তা তুই জানিস না!
মেঘঃ না রে জানিনা।
নীলাঃ মেঘ! তুই আমায় বুঝিস না??
মেঘঃ মানে? কি বুঝবো!
.
রাগে নীলা কলটা কেটে দেয়। মেঘ ভ্রু কুচকে ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে থেকে তার রুমে চলে গেল। নীলা এবার শ্রাবনীকে ফোন করে।
নীলাঃআরে আমি তো বোঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু হচ্ছেনা। কি করলে মেঘের মন পাবো বলতো?
শ্রাবনীঃ তুই এক কাজ কর। কোনো কবিরাজের কাছে গিয়ে পানি পরা নিয়ে আয়।ওই পানি পরা খেয়ে মেঘের মনটা তোর জন্য গললেও গলতে পারে।
.
পরদিন সকাল বেলা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে কনের বাড়ি থেকে অহনার খালাতো বোন তুলি এলো।গ্রামে বড় হয়েছে সে।এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল।অহনার বিয়ের জন্যই তাকে গ্রাম থেকে আনা হয়েছে।অহনার সাথে থেকে তার দেখা শোনা করার জন্য।
চৌধুরী মহলে ফুলের ডালি হাতে নিয়ে তুলি দরজার কাছে আসতেই দরজার অপর পাশ থেকে কেউ একজন বের হতেই তার সাথে ঢাক্কা খেয়ে ডালিসহ নিচে পরে যাওয়ার আগ মুহূর্তেই ওই ঢাক্কা লাগা ব্যক্তিটিই তুলিকে ধরে ফেললো। সে তুলির কোমরে এক হাত আর অন্য হাত তুলির কাধে দিয়ে ধরে রয়েছে। তুলি রৌদ্র চৌধুরীর সাথে ঢাক্কা খেয়েছে।রৌদ্র তুলির শরীর থেকে হাত সরাতেই তুলি নিজেকে সামলিয়ে নিতে নিতে চোখ গোল গোল করে রৌদ্রের দিকে তাকালো।রৌদ্র তুলিকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকিয়ে তাকিয়ে এক নজরে দেখছে। তুলির ভীষণ লজ্জা লাগছে। অচেনা এক ছেলে মানুষ তার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে। তার ওপর আবার কয়েক সেকেন্ডে আগে যখন তার মুখের দিকে তাকিয়েছিল তুলি,তখন দেখতে পেয়েছিলো ছোট বেলায় দাদীর কাছে শোনা কোনো এক রুপকথার কল্পিত রাজকুমারের মতোই কেউ একজন তার সামনে এসে পরেছে।ভীষণ সুন্দর ছেলের মুখের দিকে তাকাতে তুলির খুবই লজ্জা করে।বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না৷ তুলি চোখ নিচের দিকে নামিয়ে নিলো। লজ্জায় তুলির মরে যেতে ইচ্ছে করছে। একটু আগে আবার তার সাথেই ঢাক্কা খেয়েছে। বডি স্প্রের তীব্র গন্ধ নাকে আসছে তুলির। লজ্জায় পা দুটো আর দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে দৌড়ে বাড়ির ভেতরে চলে গেল।
.
ভিতরে গিয়ে বাড়ির অনেকের সাথেই তুলির কথা হয়। তুলিকে বাড়ির ছাদে যাওয়ার জন্য বলা হলো। ওখানেই গায়ে হলুদের স্টেজ সাজানো হয়েছে। সিড়ি দিয়ে ছাদে যাওয়ার সময় তুলি মেঘ চৌধুরীর মুখোমুখি পরে যায়। মেঘ তখন সিড়ি দিয়ে নিচে নামছিলো। তুলি মেঘের দিকে তাকানোর সাথেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল। আবারো সে আরেকজন সুন্দরমত পুরুষের সামনে পরেছে।
মেঘ বললো,মানে আপনাকে তো চিনতে পারলাম না৷ আপনি কি কনের বাড়ি থেকে এসেছেন?
লজ্জায় তুলি কিছু বলতে না পেরে আকাশের সাইড ঘেসে সিড়ি দিয়ে তারাতারি উপরের দিকে চলে যেতে লাগলো। আকাশ ভ্রু কুচকে তুলির চলে যাওয়ার দিকে একবার তাকিয়ে নিচে নেমে আসে।
.
বিকেল বেলা অহনাদের বাড়িতে বিয়ের সব কাজ কমপ্লিট হয়৷ এতক্ষন অহনা সাভাবিকই ছিল। কিন্তু এখন কেন জানি একা একাই দাঁত বের করে হাসা শুরু করেছে৷ এটা দেখে রৌদ্র মনের ভিতর কথা চেপে রাখতে না পেরে এবার মেঘের কানে কানে ফিসফিস করে বলেই ফেললো, ভাবি এভাবে হাসছে কেন রে?
মেঘঃ সেটা তো আমিও লক্ষ্য করছি। ভাইয়া কি সত্যি সত্যি কোনো পাগলী কে বিয়ে করে ফেললো নাকি!
মেঘের কথাটা একটু জোরেই ছিল তাই কথাটা আকাশের কানে যায়।
আকাশঃ তোরা তোদের নতুন ভাবীকে নিয়ে কি উল্টো পাল্টা কথা বলছিস! ক্ষমা চা! এক্ষুনি তোদের ভাবীর কাছে ক্ষমা চা!
অহনা ন্যাকামো করে বললো,এ্যাই কি হয়েছে?ওদের ওপর চিল্লাচ্ছো কেন?
আকাশঃ কিচ্ছু না জান! ওরা আমার ছোট ভাই। তোমার দুই দেবর। মেঘ আর রৌদ্র।
.
কনে বিদায়ের সময়ও অহনা দাঁত বের করে হাসছিলো।ছেলে পক্ষের মানুষ এটা দেখে একটু অবাকই হয়। প্রথমবার বাপের বাড়ি ছেড়ে শশুড়বাড়ি যাচ্ছে একটু কান্নাকাটি করবে তা নয়, নতুন বউ দাঁত বের করছে হাসছে। অহনার সাথে তুলিকে পাঠানো হচ্ছে। শশুড়বাড়িতে গিয়ে অহনাকে একটু দেখে শুনে রাখতে পারবে তাই। কিন্তু গাড়িতে ওঠার সময় তুলি বিগড়ে বসলো। আজকের সকালের কথা মনে করে তুলি এবার বলে ফেললো, আমি ওই বাড়ি যামু না! আমার শরম করে।
অহনার মাঃ ওমা, তোর আবার কিসের শরম। তুই তো যাচ্ছিস মেহমান হিসেবে।ওরা তোর খেতমতই করবে। আমি বিয়াইন সাহেবাকে আলাদা করে ফোনে বলে দিব৷ যা গাড়িতে গিয়ে ওট।
তুলি মাথা নিচু করে উত্তর দেয়, আমার শরম করতাছে খালা। আমি যাইবার পারুম না৷
অহনার মাঃ শরমের কিছু নেই। যা তো।
তুলি এবার অহনার কাছে গিয়ে বললো,আপা তুই একটু বোঝার চেষ্টা কর!
অহনাঃ কি বুঝবো? হুম? কি বুঝবো?
তুলিঃ তোর দুই দেবর…আপা আমি কইবার পারুম না। আমার শরম করতাছে।
তুলি সামনের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো, মেঘ আর রৌদ্র দুইজনই তুলির দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
অহনার মাঃ আরে যা তো। ওট।
অহনার মা জোর করে ঠেলে তুলিকে গাড়িতে তুলে দিলো।
.
প্রেমনগরে আসার পর চৌধুরী মহলে নতুন বউ অহনাকে বরণ করে ঘরে তোলা হয়। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর আত্নীয়সজনেরা যে যার মতো শুয়ে পরেছে। তুলি শুয়েছে অহনার শাশুড়ি মনিরা বেগমের সাথে। কারণ মনিরা বেগম একাই এক ঘরে এসে আছেন। অহনার শশুড়ের সাথে তার নাকি ঝগড়া হয়েছিল গত পরশু রাতে। ঝগড়াটা ছিল ছেলের বিয়ে নিয়েই। ঝগড়ার এক পর্যায়ে কথার মাঝে নাকি অহনার শশুড় তাকে অপমান করার চেষ্টা করেন৷ সেটার জেদ ধরেই তিনি একাই এই রুমে এসে শুয়েছেন। বাড়ি ভর্তি মেহমান থাকায় বউয়ের অভিমানও ভাঙানোরও সুযোগ পাচ্ছেন না আফতাব চৌধুরী। একা একাই নিজের রুমে চিন্তা করে পায়চারি করতে করতে কোনো সুযোগ খুঁচ্ছেন।
মনিরা বেগমঃ ওহো, রাতে শোবার আগে রৌদ্রকে এক মগ কফি দেবার কথা। আমি তো ভুলেই গেছি। মা তুলি তুমি রুমে থাকো। আমি কফিটা বানিয়ে তারপর ওকে দিয়েই জাস্ট আসছি। ভয় পাবে না কেমন। এক্ষুনি আসছি।
তুলিঃ জি আচ্ছা।
মনিরা বেগম কফি বানিয়ে রান্নাঘর থেকে বের হতেই আফতাব চৌধুরী সামনে এসে দাঁড়ালো। তিনি চোখ গরম করে উনার দিকে একবার তাকিয়েই পাশ কাটিয়ে হনহনিয়ে রুমে চলে এলেন।
মনিরা বেগমঃ তুলি মা, তুমি কফিটা একটু রৌদ্রের ঘরে দিয়ে এসো তো। উপরে গিয়ে সোজা বা দিকের কর্নারের রুমটা।রৌদ্রের বাবার সাথে আমার খুবই জরুরি কথা আছে।ঝগড়াও হতে পারে। উনি দরজার বাহিরে এখনো দাঁড়িয়ে ঘুর ঘুর করছেন।
তুলিঃ আচ্ছা আমি দিয়ে আসছি।
.
তুলি উপরে গিয়ে রৌদ্রের ঘরের দরজায় এসে দাড়াঁতেই দেখতে পেলো রৌদ্র বিছানায় বসে ল্যাপটপে ভিডিও দেখছে। ভিডিওতে মেয়ে গুলো সবাই শুধুমাত্র ব্রা আর প্যান্টি পরা। এটা দেখে তুলি লজ্জায় চোখ বন্ধ করে পেছাতে গিয়ে দরজার সাথে বারি খেল। শব্দ হওয়ার সাথে সাথে রৌদ্র পিছনে তাকায়। ভিডিও চলছে। বারি খেয়ে তুলি চমকে উঠে চোখ খুলতেই রৌদ্রকে তাকিয়ে থাকতে দেখেই কফির মগ হাত থেকে ফেলে দিয়ে দৌঁড় দেয়।
.
এদিকে নতুন বউ অহনা বাসর ঘরে বসে রয়েছে।আকাশ দরজা খুলে ভিতরে আসতেই অহনা দাঁত বের করে হাসতে শুরু করে দিলো।
আকাশঃ কি হলো এভাবে হাসছো কেন?
.
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here