প্রেমনগর
পর্বঃ২৩ এবং শেষ
লেখাঃনীলাদ্রিকা নীলা
.
অহনাঃ তো তুই ওদের লেবুর শরবত খাওয়া!
অহনার কথা শুনে তুলির মুখের আকৃতি বদলে গেল। কান্না থামিয়ে দিয়ে ঠোঁট দুটো গোল করে অহনার দিকে চেয়ে আছে।
তুলিঃ ওরা আমার বুকটা জ্বালায় দিছে আর আমি ওদের শরবত খাইয়ে ঠান্ডা করমু?
অহনাঃ ওরাও তো জ্বলবে! মরিচের জালায় জ্বলবে! ওদের লেবু দিয়ে মরিচের শরবত খাওয়াবি!
তুলি চোখের পাতা কয়েকবার পিট পিট করে বললো, ঠিক বলছিস আপা? কিছু হইবো না তো!
অহনা হাসতে হাসতে বললো,আরে না,একদম ঠিক!যাহ্ যাহ্ রান্না ঘরে গিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বানিয়ে নিয়ে গিয়ে খাওয়া! যাহ্ তাড়াতাড়ি যাহ্!
.
তুলি রান্নাঘরে গিয়ে লেবু রসের সাথে কাচা মরিচের পেশা পেস্ট পানিতে মিশিয়ে শরবত বানালো। শরবত বানানোর সময় কাজের মহিলা কুরমুরি চোখ বড় বড় করে শরবত বানানো দেখছিলো। তুলি শরবত বানিয়ে নিয়ে ড্রইংরুমের কাছে আসতেই রাফির চোখে পরলো।
রাফিঃ এ্যাই এদিকে এসো!
তুলি রাফির সামনে এসে দাঁড়ালো৷ রাফি শোফা থেকে উঠে দাঁড়ায়। তুলির হাতে একটি ট্রে আর ট্রেতে পাঁচটি গ্লাস।
রাফিঃ কি এগুলো!
তুলিঃ লেবুর শরবত। উনার বান্ধুবিদের জন্য বানায় আনছি!
শুনে রাফির মুখ চকচক করে উঠলো, তুমি বানিয়েছো! তুমি!! দেও দেখি একটু খাই!
তুলিঃ আরে এইগুলান আপনের জন্য না! ম্যাডামদের জন্য!
রাফিঃ আরে রাখো তোমার ম্যাডাম! তোমার হাতে বানানো শরবত আমি তো একটু খাবোই!
.
রাফি লোভ সামলাতে না পেরে ট্রে থেকে একটা গ্লাস হাতে উঠিয়ে নিলো৷ আর ফোন বের করে শরবতের একটা ছবি তুলে সেটা ফেসবুকে মাইডে দিলো। সেখানে লিখলো প্রিয়তমার বানানো মিষ্টি শরবত! তারপর হাসতে হাসতে মুখটা গ্লাসের কাছে নিয়ে গিয়ে ঠোঁট গ্লাসে দিয়ে ফেললো। এক ঢোক খেতেই রাফি মুখ থেকে গ্লাস নামিয়ে ভর্য়াত দৃষ্টিতে তুলির দিকে তাকালো! তারপর সাথে সাথে বড় করে হা করে লাফাতে থাকে!
রাফি হা করে মুখের সামনে হাত দিয়ে বাতাস করছে আর জোরে জোরে লাফাচ্ছে! তখনই আফতাব চৌধুরী এদিকে আসছেন, আফতাব চৌধুরীকে এদিকে আসতে দেখে তুলি শরবতের ট্রে টা টেবিলের ওপর রেখেই দৌড় দিলো।
আফতাব চৌধুরী এদিকে এসে হাসতে হাসতে বলছেন, বুঝলে বাবা আমার ছেলে গুলো যদি তোমার মতো দায়িত্বেবান হতো!
বলতে বলতে উনি পিছন থেকে রাফির পিঠে চাপড় দিয়ে দিলেন, তুমি বড়ই ভালো ছেলে বাবা!
.
রাফি এদিকে ফিরলো।
আফতাব চৌধুরী রাফির দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করে বললেন,একি বাবা তুমি হা করে আছো কেন?
রাফি কিছু না বলে শুধু হা করে মুখের সামনে বাতাস করছে।
আফতাব চৌধুরী টেবিলের দিকে তাকিয়ে শরবতের ট্রে টা দেখে বললেন, এগুলো কি! শরবত?
রাফি মুখ হা করেই হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ালো।
আফতাব চৌধুরীঃ ভালোই হলো গলাটা শুকিয়ে এসেছিলো।
আফতাব চৌধুরী ট্রে থেকে একটা গ্লাস হাতে উঠিয়ে নিতেই রাফি চোখ বড় বড় করে আফতাব চৌধুরীর দিকে তাকালো!
আফতাব চৌধুরী এদিকে ফিরলেন,তুমিও একটা নেও বাবা!
রাফি মুখ হা করেই না বোধহয় মাথা নাড়ালো। আফতাব চৌধুরী গ্লাসের কাছে মুখ আনতেই রাফি বলে উঠলো, আমি এখন আসি আংকেল!
বলেই রাফি অতি দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড় দিলো৷
আফতাব চৌধুরীঃ আহা শরবত!
আফতাব চৌধুরী শরবতের এক ঢোক খেতেই ঝালে মুখ থেকে শরবতের পানি বের করে ফেলে দিলেন আর কাশতে শুরু করলেন। তারপর শরবতের গ্লাস ট্রেতে রেখে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন কাজের মহিলাকে শায়েস্তা করতে। এটা কি শরবত বানিয়েছে সে! কিন্তু অতিরিক্ত ঝালের কারণে রান্নাঘর পর্যন্ত না যেতেই ডাইনিং রুমে এসে আটকে গেলেন । ঝালে তার মুখ পুড়ে যাচ্ছে। উনি গ্লাসের পর গ্লাস পানি খেয়ে যাচ্ছেন আর ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে মুখে পুরে দিলেন৷
.
তুলি ড্রইংরুমে উঁকি দিয়ে ঘটনা কি ঘটছে তা দেখার চেষ্টা করছে। রৌদ্রের ঘর থেকে ওর সুন্দরী বান্ধুবিরা মুখ কালো অন্ধকারের মত করে বের হয়ে সিড়ি দিয়ে নামছে। ওরা ড্রইংরুমে আসতেই মনিরা বেগম ঘর থেকে বের হলেন।
মনিরা বেগম ওদের দেখে বলে উঠলেন, একি তোমরা চলে যাচ্ছো নাকি! কিছু না খেয়েই যাবে!
রৌদ্র ওদের আজ চরম অপমান করেছে তাই একেক জনের মুখের অবস্থা খুবই খারাপ।
রাইসাঃ না না আন্টি কিছু খাব না!
.
তখনই কাজের মেয়ে কুরমুরি শরবতের ট্রে টা টেবিল থেকে সরাতে আসে।
মনিরা বেগমঃ এগুলো কি!
কুরমুরি মাথা উপরের দিকে না তুলেই নিচের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে উত্তর দেয়, শরবত আম্মাজান!
মনিরা বেগম সাথে সাথে বলে উঠলেন, কিছু না হয় না খেলে,শরবতটা অন্তত তোমরা মুখে দিয়ে যাও!
এই কথা শোনার সাথে সাথে কুরমুরি শরবতের ট্রে টা টেবিলের ওপর রেখেই ওখান থেকে দৌড় দিলো।
মনিরা বেগমঃ নেও তোমরা শরবত নেও!
মেয়েগুলো বিরক্ত হয়ে মনিরা বেগমের জোরাজুরিতে শরবতের গ্লাস হাতে নিয়ে মুখে দিতেই ঝালে চোখ মুখ জ্বলে লাল হয়ে যায়! তারপর এক আরেকজনকে টানতে টানতে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।
মনিরা বেগম একা একাই বলে উঠেন,কি অসভ্য মেয়েগুলো। যাওয়ার সময় ভালো ভাবে বলেও গেল না!
.
মেঘ নীলার সাথে নীলাদের বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। নীলা কি বলছে মেঘের কানে কিছুই যাচ্ছে না। মেঘের মাথার মধ্য বিভিন্ন চিন্তা জটলা পেকেছে। হঠাৎ ফোনের রিংটন বেজে উঠতে দেখলো তার পিতা আফতাব চৌধুরী ফোন করেছেন, ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই আফতাব চৌধুরী বলে উঠলেন, কোথায় তুই বাবা! আজ বাড়ি আসবিনা!
ভয়ে মেঘ একটা ঢোক গিললো।
মেঘঃড্যাড!
আফতাব চৌধুরীঃ মেরি বেটা, আগে বাড়ি আয়! বিয়ের ডেট ফিক্সড হোক তারপর নীলা বৌমার সাথে চুটিয়ে প্রেম করিস!
শুনেই সাথে সাথে মেঘের চোখ গুলো রসগোল্লার মতো হয়ে গেল, মানে!!
আফতাব চৌধুরীঃ নীলার বাবা মানে বেয়াইব সাহেব একটু আগে আমায় ফোন করে জানিয়েছেন তুমি ওখানে!
মেঘঃ মানে? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা!
আফতাব চৌধুরী সব ঘটনার বিস্তারিত খুলে বুলতেই মেঘ কথার মাঝেই ফোন না কেটে দিয়েই খুশিতে নীলাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিতে শুরু করে।
আর ওপর পাশে আফতাব চৌধুরী ছেলের কান্ডতে হাসতে হাসতে ফোন কেটে দিলেন।
.
এদিকে সারাদিনের খাটা খাটুনিতে নীলার বাবা রেজা খান খুব তাড়াতাড়িই আজ ঘুমিয়ে পরেছিলেন। কিন্তু নীলা আর মেঘ তাকে ঘুম থেকে তুলেই তাকে সালাম করে তার দোয়া নিলো।
.
২ মাস পর
আজ বাড়িতে মিষ্টির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। অহনা প্রেগন্যান্ট। আফতাব চৌধুরীর বড় ছেলে আকাশ বাবা হতে যাচ্ছে। সেই খবর পেয়ে বাড়ির সবাই আজ মিষ্টি মুখ করছে। কিন্তু তুলির মনটা খুব খারাপ। বাড়ি থেকে খবর এসেছে তাকে এবার বাড়ি ফিরতেই হবে। কিন্তু তুলি তো এতোদিনে রৌদ্রকে ভালোবেসে ফেলেছে ওকে ছেড়ে কিভাবে যাবে সে!
.
আজ চাঁদনী রাত। চাঁদটা আজ পরিপূর্ণ ভাবে গোল হয়ে রুপালী আলো ছড়াচ্ছে। মুখ শুকনো করে ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে তুলি। হঠাৎ কাধের ওপর কারো হাত পরতেই চমকে উঠে তুলি পিছনের দিকে তাকিয়ে রৌদ্রকে দেখতে পেল। রৌদ্র এখন পুরোপুরি সুস্থ। রৌদ্রকে দেখে তুলি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না!
রৌদ্রঃবাড়িতে আজ সবাই কত মজা করছে আর তুমি এখানে দাঁড়িয়ে কাঁদছো?
তুলিঃবাড়ি থেকে খবর আইছে,আমার যাইতে হইবো! আমি আপনারে ছাইড়া কোথাও যাইতে চাইনা!
বলেই তুলি কাঁদতে শুরু করলো,
রৌদ্রঃ তোমাকে যেতে বলেছে কে! আমিও তোমাকে কোথাও যেতে দেব না। ভাবি মাকে দিয়ে তোমার বাড়িতে ফোন করিয়েছিলো! আর ভাবি বলেছে তোমাকে এখন থেকে এখানেই রাখবে আর এখানেই একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দেবে।
তুলি জোরে চিল্লিয়ে বললো, সত্যি!!
রৌদ্রঃ হুম! আর মন খারাপ করে থেকো না প্লিজ!
রৌদ্র সাথে সাথে তুলির সামনে হাটু গেড়ে বসে তুলিকে গোলাপ দিয়ে প্রপোজ করে তুলির হাতে একটি আংটি পরিয়ে দেয়। লজ্জায় তুলি রৌদ্রের দিকে তাকাতেই পারছিলো না। কিন্তু খুশিতেই হঠাৎ করে তুলি রৌদ্রকে এবার জরিয়েই ধরলো। রৌদ্রও তুলিকে জরিয়ে নেয়। ছাদে থাকা লেবু গাছের গন্ধ নাকে আসছে। পরিবেশটা খুব ভালো লাগছে।
.
এদিকে তুলিকে আজ প্রপোজ করার জন্য রাফি আবার এই বাড়িতে এসেছে। মনিরা বেগমের কথা শুনে রাফি সোজা ছাদে চলে এলো আর ছাদে এসেই রৌদ্র আর তুলির একে অপরের জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থাটা দেখে ফেললো। রাফির মাথায় সাথে সাথে বাজ পরতে শুরু করে। সামনে আর তাকিয়ে থাকতে পারলো না রাফি। রৌদ্র তুলিকে জরিয়ে ধরে লিপ কিস করতে শুরু করেছে৷ রাফি আস্তে আস্তে পা পেছাতে থাকে। রৌদ্র আর তুলির চুম্বন দৃশ্য দেখে রাফি আস্তে আস্তে সিড়ি দিয়ে প্রেমে ছ্যাকা খাওয়া পাবলিকের মতো করে সিড়ির রেলিং ধরে ধরে নিচে নেমে এলো। তারপর চুপচাপ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেল। কারণ সে ভালো করেই জানে তুলি এখন অন্যের। তাকে আর কোনদিন পাওয়া সম্ভব নয়। তুলি এখন তার ভালোবাসার মানুষের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
.
বাবা হওয়ার আনন্দে আকাশ আজকে হাসপাতালের সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছে তারপর অহনার জন্য এক গাদা গিফট নিয়ে বাড়ি ফিরলো। রুমে ঢুকেই আকাশ অহনাকে কোলে তুলে নিয়ে ঘুরতে শুরু করে।
অহনাঃ আরে আরে পরে যাবো তো! এবার ছাড়ো আকাশ! আমি পরে গেল কিন্তু আমার সাথে আমাদের বাবুরও ব্যথা লাগবে!
আকাশ অহনাকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে অহনার গাল টেনে বললো, ওরে আমার সেয়ানা পাগলী রে! এই পাগলীটাকেই আমি খুব ভালোবাসি। আর সারাজীবন ভালোবাসতে চাই।
অহনা হেসে আকাশকে জরিয়ে ধরলো।
.
মনিরা বেগম আর আফতাব চৌধুরী দুইজনই বারান্দায় বসে আছেন। বারান্দা থেকেই হঠাৎ নিচের দিকে তাকিয়ে মনিরা বেগম খেয়াল করলেন,মেঘ বাইক নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে!
মনিরা বেগমঃ আরে মেঘ না, কোথায় যাচ্ছে ও!
আফতাব চৌধুরী ওদিকে তাকিয়ে বারান্দা থেকেই মেঘকে জোরে ডেকে এবার জিগাসা করলেন, মেঘ কোথায় যাচ্ছিস?
মেঘ বাইকে বসেই পিছনে ফিরে বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে হেসে জোরে চিল্লিয়ে উত্তর দেয়,তোমাদের বৌমাকে আনতে!
বলেই মেঘ বাইক স্টার্ট দিয়ে দেয়৷
বাড়িতে এতো উৎসবের মধ্য থেকে মেঘের নীলার কথা মনে হচ্ছিলো। তাই নীলাকে প্রেমনগরে আনতে মেঘ বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরেছে।
.
আফতাব চৌধুরী আর মনিরা বেগম দুইজনেই হেসে উঠলেন। চেয়ারে বসতে বসতে মনিরা বেগম বলে উঠলেন, ছেলে বৌমাদের প্রেম সুখে থাকতে দেখে বড়ই আনন্দ হচ্ছে!
আফতাব চৌধুরীও হেসে বললো,আর কিছু দিন পর তো বাড়িটা নাতি নাতনি দিয়ে ভরে যাবে! হাহাহা….
মনিরা বেগমঃমনে হয় যেন এইতো সেইদিন আমি তোমার হাত ধরে এই প্রেমনগরে পালিয়ে এলাম! কিভাবে যে এতো বছর পেরিয়ে গেল! বুঝতেই পারলাম না। চোখের সামনে এখনো ওই দিন গুলোই ভাসে।
আফতাব চৌধুরী চেয়ারটা এগিয়ে নিয়ে এসে মনিরা বেগমের পাশে বসে মনিরা বেগমের হাত ধরলেন তারপর বললেন,পেরোক না বছর, আমার কাছে তো তুমি সেই ছোট্ট কিশোরী মনিরাই আছো। প্রতিদিন যেন নতুন করে তোমার প্রেমে পরি!
মনিরা বেগম হাসতে হাসতে বললো, কি যে বলো না তুমি!এখন বয়স হয়েছে!
আফতাব চৌধুরীঃ প্রেম ভালোবাসার আবার বয়স কি! শুধু সময় আর বয়সটাই বেড়েছে। কিন্তু তোমার প্রতি প্রেমটা তো আমার আগেই মতোই রয়ে গেছে।
মনিরা বেগমও আফতাব চৌধুরীর হাত ধরে তার কাধে মাথা রাখলেন। তারপর দুইজনই একসাথে তাকিয়ে রইলেন আকাশের ওই সুন্দর লোভনীয় রুপালী আলো ছড়ানো চাঁদটার দিকে। তারা তাদের চোখের সামনে যেন দেখতে পাচ্ছেন, যুবক আফতাব আর কিশোরী মনিরা সেই চির চেনা পুরোনো গলি দিয়ে হাটছে,যেখানেই তাদের হয়েছিলো প্রথম দেখা অতঃপর প্রেম।
.
<<<সমাপ্ত>>>