মামাতো_বোন_যখন_বউ part_7
#writer_মুজাহিদুল_ইসলাম
#collected
তারপর মেয়েটি আমার পাশে এসে বসলো,
আচ্ছা আমি এই কলেজে নতুন এসেছি,কাউকেই তেমন চিনিনা,আমাকে কি আপনার বন্ধু বানাবেন..?
মাহফুজ,হা অবশ্যই কেন নয়,
মেয়েটি,হাত বাড়িয়ে দিয়ে হাই আমি তায়েবা,
মাহফুজ,আমিও মুচকি হেসে হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডসেক করলাম,হাই আমি মাহফুজ,
ঠিক সেই মুহুর্তে জারা আমাদের সামনে চলে আসলো,
আমি তখনও তায়েবার হাত ধরে বসে আছি,জারা হঠাৎ করে চলে আসায় হাতটা ছাড়তে মনে নাই,
জারা,ওও তাহলে এখানে এই কাজ চলছে..! মাহফুজ তুমি কি করে পারলে আমার সাথে এইরকম করতে..?
মাহফুজ,আমি তো জারার কথায় কিছুই বুঝতে পারতেছি না? কি হইছে জারা কি বলতেছো এইসব,
জারা,কি বলতেছি মানে..? তুই বুঝতে পারতেছিস না,আমার অবর্তমানে তুই এই মেয়ের সাথে রিলেশন করতেছিস, আবার হাত ধরে বসেও আছিস,আর এখন সাধু সাজা হচ্ছে যে কিছুই বুঝতে পারতেছিস না,
মাহফুজ,জারার কথা শুনে তো আমার চোখ কপালে উঠে গেলো,আমি তখনই তায়েবার হাত ছেড়ে দিলাম,কি বলতেছে এইসব,জারা তুমি ভুল বুঝতেছো.. আমাদের মাঝে কোনো কিছুই নাই,আজকে জাস্ট মেয়েটা আমার ফ্রেন্ড হলো,
জারা,তোকে বিশ্বাস করাটাই ভুল ছিলো,থাক তুই এই মেয়েকে নিয়ে,আমি চললাম বলেই জারা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো,
মাহফুজ,এই জারা আমার কথাটাতো শুনো বলে অনেক ডাকলাম,বাট কোনো কথা না বলে চলেই গেলো,সাধারন একটা চোখে দেখা বিষয় নিয়ে এমন করলো,
তায়েবা এতোক্ষন বসে বসে আমাদের কাহিনী দেখতেছিলো,তায়েবা তো অনেক অবাক হয়ে গেছে,তারপর বললো,
সরি মাহফুজ? আমার জন্য তোমাদের সম্পর্কে খাদ তৈরি হলো,আমি যদি এখন না আসতাম তাহলে এমন হতো না..!
মাহফুজ,আরে তুমি মন খারাপ করতেছো কেনো..? এটা তেমন কোনো বিষয় না,আসলে জারা আমাকে অনেক ভালোবাসে তো তাই এমন করেছে,জারা আসলে বিষয়টা বুঝতে পারে নাই,
জারাকে ব্যাপারটা বুঝালেই ঠিক হয়ে যাবে,
তায়েবা,হুমম
মাহফুজ,আচ্ছা ঠিক আছে তুমি এখন বাসায় যাও,আর আমি জারাকে ঠিক করি বলে আমি বাসার দিকে রওনা দিলাম,
একটু পর বাসায় পৌছে গেলাম,বাসায় গিয়ে কলিংবেল দিলাম,তারপর আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো,ভিতরে ঢুকতেই আম্মুর প্রশ্ন..!
আম্মু,কিরে মাহফুজ জারার সাথে তোর কি হইছে..? জারা বাসায় এসে কাদতে কাদতে উপরে চলে গেলো..!
মাহফুজ,কিছু হইনি আম্মু,সাধারন একটা ব্যাপার নিয়ে রাগ করছে,ও ঠিক হয়ে যাবে,
আম্মু,ওহহ ঠিক আছে,
তারপর আমি রুমে চলে গেলাম,গিয়ে দেখি জারা রুমে শুয়ে আছে,আমি কিছু না বলে ফ্রেস হতে চলে গেলাম,তারপর নিচে গিয়ে খেয়ে আসলাম,
খাওয়ার পর্ব শেষ করে আবার রুমে চলে আসলাম,পাগলিটা এখোনো একইভাবে বিছানায় শুয়ে আছে,এতোক্ষন আমি বাসায় এসেছি একবারও আমার দিকে ফিরেও তাকায় নি,
বুঝলাম পাগলিটা আমার উপর অনেক রাগ করে আছে,আমিও পাগলিটার পাশে গিয়ে শুয়ে পরলাম,আমি শোয়ার পরে জারা আমার থেকে একটু দুরে সরে গেলো,বাব্বাহহহ এতো অভিমান আর রাগ একসাথে জমা করে রেখেছে..?
থাক এখন আর ওকে বিরক্ত করবো না,একটু পরে এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে,এভাবে ওর পাশে শুয়ে থাকলাম,এভাবে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলো,তারপর শোয়া থেকে উঠে বসলাম,দেখি পাগলিটা ঘুমিয়ে গেছে,তাই ওকে আর ডাকলাম না,
তারপর ফ্রেস হয়ে বাইরে গেলাম একটু ঘুরতে,কিন্তু ঘুরতে ইচ্ছে হচ্ছে না আজকে,প্রত্যেকদিন জারাকে নিয়ে ঘুরতে যায় তো,আজ জারা নাই তাই ভালো লাগছে না,অনেকসময় আনমনে ঘুরলাম, তারপর সন্ধ্যার দিকে বাসায় চলে আসলাম,
বাসায় এসে রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিলাম,কিন্তু জারাকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না,কই গেলো মেয়েটা,বেলকনিতে গেলাম কিন্তু সেখানেও নাই,
তারপর মনে পরলো জারার মন খারাপ থাকলে ছাদে গিয়ে দাড়িয়ে থাকে,
তারপর আমিও ছাদে গেলাম জারা আছে নাকি দেখতে,ছাদে গিয়ে দেখি জারা ছাদের রেলিং ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে,
তখন আমিও জারার কাছে গেলাম,গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম,
জারা পিছন ঘুরে আমাকে দেখে ঝটকা মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো,
জারা,তুই কোন সাহসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিস..? যা গিয়ে ওই মেয়েটাকে জড়িয়ে ধর,আমার কাছে এখন কেনো এসেছিস..?
মাহফুজ,জারা তুমি ব্যাপারটা ভুল বুঝতেছো,মেয়েটা শুধু মাত্র আমার বন্ধু,
জারা,হা এখন তো আমাকে এসবই বুঝাবি,আমিই ভুল করে ছিলাম তোকে ভালোবেসে,
মাহফুজ,ঠাসসসস ঠাসসস করে জারাকে দুইটা চড় মেরে দিলাম,ওই তোকে কতোবার বলবো যে আমি কোনো রিলেশনে নাই,মেয়েটা আজই কলেজে নতুন এসেছে,তাই ওর সাথে কথা বলতেছিলাম,তখন থেকে একই কথা বলে যাচ্ছিস,আমাকে কি তোর একটুও বিশ্বাস হয় না..? এতোটায় খারাপ ভাবিস আমাকে,
প্রচন্ড রাগের জন্য এক নিঃশ্বাসে সব গুলো কথা বললাম,জারার দিকে তাকিয়ে দেখি মুখে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে,মুখটা একদম লাল হয়ে গেছে,আসলে রাগের জন্য বোধ হয় চড়টা জোড়েই মারা হয়ে গেছে,
মাহফুজ,জারা আমার দিকে তাকাও,
জারা,কান্না করে দিছে,
মাহফুজ,এই জারা আমার দিকে তাকাতে বলছি কিন্তু..? না হলে কিন্তু এবার খারাপ হয়ে যাবে,
জারা,এবার সোজা আমাকে জড়িয়ে ধরলো,কেদে কেদে বলছে মাহফুজ তুমি আমাকে মাফ করে দাও,আমি বিষয়টা বুঝতে পারি নাই,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, তাই তুমি যখন ওর হাত ধরে ছিলে আমি সেটা মেনে নিতে পারি নাই?
মাহফুজ,আমি সেটা বুঝতে পারছি আমার পাগলিটা,হা এখন আর একটুও কাদবে না,জারার চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে দিলাম? হা এবার একটু হাসো তো দেখি,জানো তো তোমার হাসি আমার অনেক ভালো লাগে?
আমার কথা শুনে জারা হেসে দিলো,আর তখন আমি ওর হাসি দেখে অন্য জগতে চলে গিয়েছিলাম,একটু মেয়ের হাসিতে যে এতটা মাদকতা থাকতে পারে, সেটা জারাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না, তারপর জারাকে কোলে করে নিয়ে রুমে চলে আসলাম,
তারপর রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম,কারন কালকে আবার কলেজে যেতে হবে,জারার সাথে খুনসুটি করতে করতে রাতে ঘুমিয়ে গেলাম,
সকালে জারার ডাকে ঘুম ভাংলো,তারপর ফ্রেস হয়ে ল্যাপটপ টা নিয়ে বসলাম,ল্যাপটপ টা অন করতেই তো আমার চোখ খুশিতে জলজল করে উঠলো,কারন আমি বিদেশে যে ভার্সিটিতে পড়ার জন্য আবেদন করেছিলাম,সেখানে আমাকে সিলেক্ট করে নিয়েছে,
আসলে আমার অনেক দিনের ইচ্ছা যে আমি দেশের বাইরে গিয়ে স্টাডি করবো,আর আজকে সেই সপ্নটা পুরন হলো আমার,কি যে খুশি লাগতেছে কি আর বলবো,
যাই হোক তারপর সকালের নাস্তাটা সেরে জারাকে নিয়ে কলেজে চলে গেলাম,কলেজে গিয়ে দেখি তায়েবা একা একা বসে আছে,তারপর জারাকে তায়েবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম,ভালো কথা হলো তায়েবাও জারার সাথে একই ইয়ারে পরে,আর ডিপার্টমেন্ট টাও এক,
তারপর ওদের থেকে বিদায় নিয়ে আমি ক্লাসে চলে আসলাম,আজকে স্যার এসে সবাইকে কিছু নোট দিলে গেলেন,২ টা ক্লাস করে বাইরে চলে আসলাম,তারপর দেখি মাঠের মাঝখানে জারা আর তায়েবা বসে গল্প করতেছে,
আমিও ওদের সাথে যোগ দিলাম,অনেক্ষন কথা বার্তা বলে দুপুরে বাসায় চলে আসলাম,তারপর রুমে গিয়ে শাওয়ার নিলাম,খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম,
ঘুম একেবারে বিকালে ভাংলো,উঠে দেখি জারা আমার বুকের উপর শুয়ে আছে,তারপর জারাকে ডাক দিতেই ঘুম থেকে উঠে গেলো,তারপর দুজনে ফ্রেস হয়ে বাইরে থেকে ঘুরে আসলাম,
তারপর রুমে চলে গেলাম,
রাতে খাবার জন্য আম্মু এসে ডেকে গেলো,
তারপর দুজনে মিলে খেতে চলে গেলাম,সবাই মিলে খেতে খেতে আমি স্টাডির কথাটা বললাম
মাহফুজ,আব্বু আমি দেশের বাইরে একটা ভার্সিটিতে আবেদন করছিলাম,আর আজকে ওরা আমাকে সিলেক্ট করছে,কিছুদিন পরেই আমাকে দেশের বাইরে চলে যেতে হবে,আমার কথা শুনে জারাকে দেখলাম মুখটা মলিন করে ফেলছে,
আব্বু,সে কিরে এসব কি বলতেছিস তুই,আমাদের ছেড়ে ওই বিদেশে গিয়ে পড়ালেখা করবি..?
মাহফুজ,আব্বু আমার অনেক দিনের ইচ্ছা যে আমি দেশের বাইরে লেখাপড়া করবো,তোমরা অবশ্যই না করবে না,
আব্বু,সেটাতো বুঝলাম কিন্তু জারা মা এতোদিন কিভাবে একা একা থাকবে,
আব্বু কথাটা বলার পর জারা মন খারাপ করে রুমে চলে গেলো,
আব্বু,দেখলি তুই জারা তোর কথা শুনে চলে গেলো,তুই তো দেশে থেকেই ভালো ভার্সিটিতে পরতে পারিস..?
মাহফুজ,দেখো আব্বু আমি যা বলেছি সেটাই ফাইনাল,আর জারাকে আমি বুঝিয়ে বলবো বিষয়টা,
আব্বু,ঠিক আছে তুই যা ভালো মনে করিস,
তারপর খেয়ে দেয়ে রুমে চলে আসলাম,জারাকে রুমে দেখতে পাচ্ছি না,নিশ্চয় ছাদে গেছে,তাই আমিও গেলাম,গিয়ে দেখি জারা মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে,তখন আমি গিয়ে জারাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম,
জারা,দেশের বাইরে কি না গেলে হয়না..? আমি এতো দিন কিভাবে একা থাকবো,
মাহফুজ,মাত্র তো তিনটা বছর,দেখতে দেখতে চলে যাবে,আর আমি তো তোমাকে প্রতিদিন এই ফোন করবো,কোনো সমস্যা নাই,
জারা,না তারপরও আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না,তুমি বিদেশে যাবে না এটাই ফাইনাল,
মাহফুজ,জারা আমাকে যেতেই হবে,কারন এটা আমার অনেক দিনের ইচ্ছা,
জারা,তুমি যাবে না,আমি তোমাকে যেতে দিবো না,আর এটাই ফাইনাল,না হলে আমি কিছু একটা করে ফেলবো,
মাহফুজের প্রচন্ড রাগ হয়ে যায় জারার কথা শুনে,আমি বিদেশে যাবো আর এটাই ফাইনাল, বলে মাহফুজ পিছনে সরে যেতেই ছাদ থেকে পিছলে যায়……..
চলবে…..
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
বিরক্তি কর next শব্দটি কমেন্টে লিখবেন না। পারলে একটা ভালো কমেন্ট করবেন।
#
#part_8
https://m.facebook.com/groups/459470204903112?view=permalink&id=693168174866646
#part_6
https://m.facebook.com/groups/459470204903112?view=permalink&id=692475488269248