তাহারেই_পড়ে_মনে
পর্ব দুই
মিষ্টি বরাবর ইন্ট্রোভার্ট, ঘরের কোণে বসে পড়াশোনা, ছবি আঁকা, গান শোনা এইভাবেই দিন কোথা থেকে কোথায় যে কেটে যেতো। অচেনা বা অল্পপরিচয়ের কারও সাথে কথা বলতে,মিশতে সবসময়ই দুনিয়ার অস্বস্তিতে ভোগে। চুপচাপ নিজের মতো করে, আপন মনে থাকতেই ভালোবাসে, এর জন্য কপালে অহংকারী তকমাও জুটে গেছে। তার উপর বাবার বদলির চাকরির সুবাদে বন্ধুও হয়নি কেউ কখনো। স্কুলপার্টি, কলেজের অনুষ্ঠান বা পিকনিক সবকিছুতেই অনীহা, ওইসব পার্টি ফার্টির মাঝেও ও নিজেকে একাকিই আবিষ্কার করে, পিকনিকে যাওয়ার চেয়ে ঘরে ঘুমানো বেটার অপশন মনে হয়। আর এখন তো মিঠির দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ায় আরও সময় পায়না। কলেজের ক্লাসশেষে পাঁচমিনিট গসিপ করার চাইতে মিঠির মুখটা দেখার জন্য মন উতলা হয়ে যায়। একে একেবারেই মিশতে পারে না নতুন কারো সাথে তার উপরে প্রিন্সের মতো এরকম স্ট্রেট কথা বলা লোকের সামনে একেবারেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে তাই ওর মনে হলো ওদের সামনে না পড়াটাই বেটার। জাফরিন একবার মেয়েকে ডাকতে এলেন, ‘মিষ্টি আয়তো তাড়াতাড়ি, টেবিলটা চট করে সাজিয়ে দে, আমি দুটো ডিমভেজে ছেলেদুটোকে খেতে দেই।’ মিষ্টির ইনস্ট্যান্ট অজুহাতের রেডি টু কুক উত্তর মুখে এসেই বসেছিলো। ও মাথা নাড়িয়ে বললো ‘তোমার আব্বারা মিঠির ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছে আম্মু, কাঁচা ঘুম ভেঙে কেমন ছটফট করছে দেখো। এখন কিছু করাই সম্ভব না আমার। ডিম ভাজবা নাকি তোমার মুন্ডু সে তুমিই করো গিয়ে, আমি নেই এর ভিতর।’
‘একটা বড় মেয়ে থাকলে নাকি মায়েদের কষ্ট কমে যায়, আমার কি সেই কপাল?’ জাফরিন দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলেন। আরও খানিক বকাঝকাই হয়তো কপালে জুটতো মিষ্টির কিন্তু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেয়েকে বকার চাইতে তাড়াতাড়ি টেবিলে খাবার দেওয়াই শ্রেয়তর মনে হলো জাফরিনের।
দুইপা মেলে দিয়ে বসে, হাঁটুর উপর বালিশ বিছিয়ে সেখানে মিঠিকে শুইয়ে দিয়ে পাদুটো একসাথে ডানে-বামে নাড়তে নাড়তে মিঠি ঘুমিয়ে গেলো একটু বাদেই। মিষ্টিরও ব্যবস্থা করা আছে। নেকপিলো রেডি থাকে হাতের পাশেই, সেটাকে ঘাড়ে সেট করে দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে ও নিজেও দিব্যি ঘুমাতে পারে। সাইডে দু’একটা হ্যান্ডনোটও থাকে। চোখ বুলিয়ে নেওয়া যায় সহজেই। সবকিছু টিপটপ রেখে রুটিন মেনে, ঘড়ির কাঁটা সেকেন্ডে সেকেন্ডে মিলিয়ে চলার অভ্যাসটা ওর একদম ছোটবেলার। অন্য কাজে অলসতা থাকলেও পড়াশুনায় সবসময়ই খুব সিরিয়াস টাইপ মেয়ে মিষ্টি। আজকে মন বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে, গেস্ট আসলে ও তাদের সামনে যায়না, কখনো নিতান্তই বাধ্য হলে গিয়ে একবার সালাম দিয়ে আসে কিন্তু সব সাজানো গোছানো রুটিন এলোমেলো হয়ে যায়, ওর একেবারেই ভালো লাগে না। যেদিন পড়া একটু কম হয় ওর খুব খারাপ লাগে, ঘুমই আসতে চায় না।
ইংরেজি নোটটা টেনে নিলো সামনে। ইউজেস অফ প্রিপোজিশন – এইজায়গায় এসে সবসময়ই ধরা খায় ও। কিছুতেই এপ্রোপ্রিয়েট প্রিপোজিশনটা মাথায় আসেনা। একটা শব্দ, যাস্ট অতি ক্ষুদ্র একটা প্রিপোজিশনের জন্য একটা বাক্যের মিনিং পুরো পাল্টে যায়! তাও তারা কোনো রুল মেনে চললেও তো চলে বাবা, ঠাডা মুখস্থ করা ছাড়া উপায় দেখে না ও!
ও আস্তে আস্তে গুণগুণ করতে থাকে ওভার, ওভার, উপর বুঝাতে ওভার বসে। যেমন- দেয়ার ইজ আ ব্রিজ ওভার দি রিভার। পারাপার বুঝাতে ওভার বসে। ফর এক্সাম্পল দে রান ওভার দি গ্লাস।
হঠাৎ খোঁপা খুলে কে যেন চুলগুলোতে টান দিলো। উফফ, অস্ফুট চিৎকার করে তাকাতেই মিষ্টি হতভম্ব হয়ে গেলো। প্রিন্স নামের ছেলেটা কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। এমনিতেই ওর চুলে কেউ হাত দিলে ও অসম্ভব বিরক্ত হয় তার উপর খোপাটা খুলে দিলো – চুল বাঁধাটাই ওর জন্য একটা আস্ত ঝামেলার কাজ! ও আগুনগরম চোখে তাকাতে গিয়েও চোখ ফিরিয়ে নিলো – ছেলেটা খালি গায়ে শুধু লুঙি পরে দাঁড়িয়ে আছে! সভ্যতা, ভদ্রতার ধার দিয়েও হাঁটেনা সম্ভবত! এভাবে উদোম হয়ে কারো সামনে যে আসা যায় না তাতো জানেইনা তেমনি অনুমতি না নিয়েই একটা মেয়ের ঘরে ঢুকে পড়েছে আবার ওর খোঁপাটাও খুলে দিয়েছে। এরকম চরিত্রের দেখা এতোটা জীবনেও পায়নি মিষ্টি।
‘কীরে ভদ্রতা কিছু শিখিসনি নাকি – বাসায় মেহমান এসেছে, কোনো খবর নেই। দাম দেখাস তুই, কিসের দাম তোর, কোথাকার রাণি তুই? এতো ভাব কোথা থেকে আসে? আয় উঠে আয়, তোদের বাসায় এসেছি, আদর-যত্ন করবি, উঠে আয়।’
মিষ্টি ক্ষেপে বেগুনী হয়ে গেলো, ‘যেমন সাবিহা খালা তার তেমনি ছেলে।’ মনে মনেই আওড়ালো ও, নিজের আজীবন ভদ্রতার শিক্ষা ওকে রুড হতে দিলো না। মুখে হাসি টেনে সুন্দর করে বললো ‘ভালো আছেন ভাইয়া?’
‘হুম, ভালো তো আছিই, নইলে কি বেড়িয়ে বেড়াই? আয়, উঠে আয়, তোর বোনতো ঘুমিয়ে গেছে। ওটাকে শুইয়ে দিয়ে আয়।’ এমনভাবে বলে চলে গেলো যেন মিঠি কোনো মানুষ না, কোনো জড়পদার্থ! মিষ্টির মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। ও জেদ করেই আর উঠলো না। জাফরিন কয়েকবার ডাকলো, ও শুনতে পেলো কিন্তু সাড়া দিলো না।
মাগরিবের আজান মিলিয়ে যেতেই ওর বাবার শব্দ পাওয়া গেলো। সেও মেহমানদের সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছেন। ঘরের কাজে এমনিতেই মিষ্টি তেমন থাকে না, ওকে কেউ কোনকিছুতে আর ডাকলোও না। কিন্তু সন্ধ্যার চা আবার ওকেই করতে হয়। ওর মা চা বানাতে চায় না, আর বানালেও এতো দায়সারা সরকারি কাজের মতো করে বানায় যে সেই চা খাওয়ার মতো হয় না! মিষ্টি অনেকটা সময় নিয়ে চিনি মিশিয়ে দুধ জ্বাল করে তাতে পরিমাণমতো লিকার মিশিয়ে ফুটাতে থাকে মনের মতো রঙ না আসা পর্যন্ত। রঙটা যখন হালকা বাদামি থেকে কাঠরঙ ধরে এসেছে তখন আর একটু চাপাতা ফেলেই নামিয়ে ফেলে – কাঁচাপাতার সেই ঘ্রাণ নাকে এসে লেগে থাকে অনেকক্ষণ ধরে। আর স্বাদ – আঠার মতো জিভে জড়িয়ে যায় যেনো, না মিষ্টি না তেতো, হালকা একটা অনুভূতি। আর কোনো রান্না ও পারে না। এমনকি পেঁয়াজ কাটতেও পারে না! ওকে কেউ বলেও না কোনো কাজ করতে। জাফরিন সামনাসামনি বকলে বা অভিযোগ করলেও মনে মনে সেও জানে মিঠির জন্য যতটুকু করে মিষ্টি তা অনেক বেশি, জাফরিনের ঝামেলা আর কষ্ট অনেকখানিই কমে যায় তাতে। আর পড়াশুনা নিয়ে কোনরকম অভিযোগ তো কেউ করতেই পারবে না। একটু ঘাউড়া হলেও মিষ্টি যে একটা খুব ভালো মেয়ে তা ওর বাবা-মা মনেমনে জানে আর স্বীকারও করে!
মিষ্টির বাবা এর ভেতরই দুবার চায়ের জন্য ডেকেছে ওকে। ও বুঝলো এবার আর ঘরে লুকিয়ে বসে থাকা যাবে না। মিঠিও ঘুমাচ্ছে চুপচাপ। ছোট মশারিটা ওর গায়ের উপর টেনে দিয়ে মিষ্টি চা বানাতে কিচেনে ঢুকলো মুখ গোঁজ করে। কিচেনে গিয়েই ওর চোখে পড়লো, জাফরিন বাবলুর মা খালাকে নিয়ে মুরগি ছিলতে কাটতে ব্যস্ত। চারটে দেশি মুরগি আবার মাছও আছে কয়েক রকমের। রুই মাছ বাজার থেকে কেটেই আনা হয় সবসময়, পাবদা মাছ দেখা যাচ্ছে, তেলাপিয়া লাফাচ্ছে, পাশে পলিথিনের ব্যাগে গরুর মাংসও উঁকি দিচ্ছে। মিষ্টির রাগ হলো। ‘তোমার এই আব্বারা কতদিন থাকবে আম্মু? এরা কোথাকার রাজা-বাদশা যে এতো আয়োজন? তোমার না কোমর ব্যথা?’
জাফরিন ব্যথিত হলেন মেয়ের কথায় ‘ছিঃ মা, মেহমান সবার বাসায় আসে না। মানুষকে খাওয়ানোর ভাগ্য সবাই পায় না। কাউকে খাওয়ার খোঁটা দিতে নেই।’
মিষ্টি একটু অপ্রস্তুত হয়ে বললো ‘সেতো গরিবদের খাওয়ালে সওয়াব হয়, আম্মু। এরা তো অনেক বড়লোক, আমাদের থেকে অনেক বেশি।’
জাফরিন হেসে মেয়েকে বোঝাতে গেলেন ‘সেইতো, ওরা কত বড়লোক। কিন্তু ওদের বাড়ি কি কেউ যায়? সেই তোমার বাবাকে খুঁজে খুঁজেই তো আসে সবাই। কেন আসে বলো? আন্তরিকতা পায়, তাই আসে। আর গরিব বা বড়লোক, কাউকে পেটপুরে খাওয়ানোতেই সওয়াব হবে, মিষ্টি। তুমি ওদের সাথে ভালো ব্যবহার করো। দুদিন বা তিনদিন থাকবে ওরা। এমন কিছু করো না যেনো ওরা কষ্ট পায় – তোমার বাবার এতো টাকা খরচ করে বাজার করাটা যেন বৃথা না যায়!’
মিষ্টি বুঝ মানলেও ওর মন মানলো না। তেলা মাথায়ই কেন যে সবাই তেল দেয় ওর বুঝে আসে বা। ও বিড়বিড় করতে করতে চা বানাতে মনোযোগ দিলো। এমনিতেই বাইরের কোনো মানুষ ওর ভালো লাগে না তার উপরে এই অসভ্য ছেলেটা যে কীনা আবার সাবিহা খালার মতো হিংসুটে, চাপাবাজ আর বদরাগী মহিলার ছেলে – তিনদিন সহ্য করা ওর জন্য মুশকিলই হয়ে যাবে! সাবিহা খালার চাপাবাজির কোনো লিমিট নেই। তাদের টাকা আছে এটা সত্য। দুটো সিনেমা হল, একটা ইটভাটা, অসংখ্য মাছের ঘের, বংশানুক্রমে পাওয়া প্রচুর জমি আছে একথাটা সত্যি হতেই পারে তার মানে এইনা যে তারা চাঁদে জমি কিনে ফেলেছে! নানির মুখে এই আজগুবি আষাঢ়ে গল্প শুনে মিষ্টি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো ‘কার কাছ থেকে কিনেছে? চাঁদের মালিক কে?’
মিষ্টির অশিক্ষিত পাড়াগেঁয়ে বৃদ্ধ নানিকে তার বোনঝি যেভাবে বুঝিয়েছে সেভাবেই তিনি উত্তর দিয়েছিলেন ‘কেন, বিল ক্লিনটনের কাছ থেকে কিনেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্টই তো চাঁদের মালিক!’ মিষ্টি তখন নানিকে সুন্দর করে বুঝিয়েছিলো চাঁদে মানুষের পা পড়েছে কীনা তাই নিয়ে এখনো আমেরিকা আর রাশিয়ার বিবাদ আছে আর চাঁদের জমি কেনাতো অনেক দুরের কথা! নানি ওকে বিশ্বাস সত্যিই করেছিলো কীনা ও বলতে পারবে না কিন্তু এই সহজ সরল মানুষদেরকে যে মহিলা এহেনও রামধাপ্পা দিতে পারে তাকে আদৌ পছন্দ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না! আর ছেলেটাও যে চুড়ান্ত অসভ্য তাও ঘন্টাকয়েকের মধ্যে কয়েকবার প্রমাণ দিয়ে ফেলেছে!
মিষ্টি বিরক্তমুখে, চশমার উপরে ভুরু কুঁচকে রেখে চা নিয়ে বসার ঘরে ঢুকলো। মিষ্টির বাবা ছাড়া আর দুটো ছেলের একজনও গায়ে গেঞ্জি বা শার্ট পরেনি। ওর তাকাতেও লজ্জা করলো কিন্তু ছেলেদুটির কোনো হেলদোল নেই – এটাই ওদের কাছে স্বাভাবিক।
আস্তে আস্তে চায়ের কাপগুলো ওদের হাতে পৌঁছে দিলো ও। বেরিয়ে আসবে এমন সময় ডাক পড়লো ‘এই, এদিকে আয়। বস এখানে। আমরা কি বাঘ- ভাল্লুক? সুন্দরবন থেকে এসেছি যে ভয় পাচ্ছিস। নাকি তোকে বিয়ে করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছি যে লজ্জা পাচ্ছিস! ছোটবেলায় আমার কোল থেকে তো নামতেই চাইতি না। মুতামুতিও আমার কোলেই করতি!’
মিষ্টির অসহায় লাগলো। ছিঃ, কি অশ্লীল ভাষা। অল্পবয়সী ছেলেরা কথা বলবে সুন্দর করে। তাদের কথায় থাকবে শালীনতা, মার্জিতভাব, বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা! এদের বাড়ির পরিবেশটাই হয়তো এরকম যে এসব কথা এভাবে বলাটা খুব স্বাভাবিক। আর মিষ্টি যে মোটেও বাচ্চা মেয়ে না, তাকে যে এসব কথা এভাবে বলা যায় না আবার ওর বাবাও যে সামনে বসে আছে – এসব কমনসেন্স এদের মোটেও নেই।
‘এই প্রিন্স চুপ কর। কিভাবে কথা বলিস? মেয়েটা লজ্জা পাচ্ছে।’ সাথে আসা ছেলেটা অসভ্যটাকে বকে দিলো। ‘তুমি আসো বুনডি, বসো, আমরা গল্প করি।’ এই আহবান এড়ানো ভদ্রোচিত হবেনা বলেই মনে হলো মিষ্টির। নিতান্তই অনিচ্ছাসত্ত্বে এসে খাটের পাশে সোফায় বসলো। ছেলেটির নাম রাজু। প্রিন্সের বন্ধু বললো যদিও কিন্তু মিষ্টির মনে হলো বড়লোক ছেলেদের আগেপরে যেমন লেজ থাকে একটা দুটো এ সেইরকম তোষামোদি এসিস্ট্যান্ট! কিন্তু একটু পরেই ও চমৎকৃত হলো ছেলেটির কথাবার্তায়। খুব সাধারণ দেখতে আর সাধারণ পরিবারের বলেই হয়তো রাজু, প্রিন্সের মতো অভদ্র নয় – এইটেই ওর সাথে কথা বলতে খুব আরাম দিলো মিষ্টিকে। আর রাজুর পড়াশোনাও আছে অনেক – রাজনীতি, ইতিহাস নিয়ে ধারণা খুব পরিষ্কার। মিষ্টি মজা পেয়ে গেলো – ইন্ট্রোভার্ট খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে কথা, তর্কর তুবড়ি ফোটালো ও নিজেও।
অনেক তর্ক-বিতর্ক, আর হাসিমজার ভিতর মিষ্টি প্রিন্সকে একেবারেই খেয়াল করেনি কিন্তু সে যে আছে সেই উপস্থিতি জানান দিলো খুব বিশ্রি করে খেঁকিয়ে উঠে ‘এই, এরকম কদুর বিঁচির মতো দাঁত নিয়ে খিকখিক করে হাসে কেউ? তুই হাসবি দুইঠোঁট টিপে- যেনো কেউ তোর দাঁত দেখে না ফেলে আর নইলে হাসবিই না। মেয়েদের এতো হাসাহাসির কি আছে?’
মিষ্টি একেবারে হতবাক। এভাবে মুখের উপর কেউ কাউকে অকারণ অপমান করতে পারে তা ওর সুশিক্ষার জ্ঞানের বাইরে। যদিও মিষ্টি খুব ভালো করেই জানে ওর মুক্তোর দানার মতো দাঁতের ঝরঝরে হাসিটা ওর নামের মতোই খুব মিষ্টি তবুও চোখটা ছলছল করে উঠলো- সে হয়তো বয়সেরই অভিমানে নইলে অনভিজ্ঞ অনুভূতির কষ্টে! ও নিজের ঘরে এসে বসে রইলো। আর ওই ছেলেগুলোর সামনে ও যাবেই না। না না না – কোনোভাবেই না।
চলবে…
afsana asha
আগের পর্ব
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2882873528608047/