লেডি_ডন
পার্টঃ১০
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
লিজাঃ রুহি কি হয়েছে বলোতো?
রুহি সব বলল,
লিজাঃ রুহি শোন, মনি তোমাকে পছন্দ করে না তুমি ওর কাছে বেশি যেও না, বলতে বলতে লিজা রুহিকে ক্রিম লাগিয়ে দিল ।বেশি পুড়ে নি একটু ছ্যাকা লেগেছে
কিন্তু,ক্রিম লাগাতে গিয়ে লিজা অনুভব করল রুহির জ্বর এসেছে তাই রুহিকে লিজা নিজের রুমে এনে শুয়িয়ে দিল।রুহি এত কাজ করে আর সারারাত না ঘুমিয়ে খুব ক্লান্ত তাই বিছানায় শুয়েই ঘুমিয়ে পড়লো।
লিজা গিয়ে আদিকে বলল রুহি অসুস্থ হয়ে পড়েছে,
আদি লিজার কথা শুনেই অস্থির হয়ে পড়ল, তাড়াতাড়ি রুহির কাছে গেল।
রুহিকে ঘুমন্ত অবস্থায় একদম পড়ীর মত লাগছে আদি আস্তে করে গিয়ে রুহির কপালে চুমু খেল।তারপর ওর পাশে বসে জলপট্রি দিতে শুরু করল।
রুহি যতক্ষন ঘুমিয়েছে আদি তার পাশেই বসে ছিল।
রুহির ঘুম ভাংগতে বিকাল হয়ে গেল,
রুহি ঘুম থেকে উঠে আদিকে পাশে দেখে চমকে উঠল,
রুহিঃ স্যার আমি ইচ্ছা করে এখানে আসি নি। লিজা আমাকে নিয়ে এসেছে মারবেন না প্লিজ….
রুহির কথা শুনে আদির আবারো মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।সারাদিন যার সেবা করলাম সে কিনা বলছে আমি ওকে মারব?উফফ কি কপাল আমার এই মেয়ে কবে বোঝবে আমাকে ( মনে মনে)
আদি কিছু না বলে চলে গেল রুম থেকে
,
,
,
আদি সবাইকে রেডি হতে বলল কারন, কারোরেই আজ খাওয়া হয় নি বাড়িতে কোন কাজের লোক নেই রুহিও অসুস্থ তাই রান্নাও করা হয় নি সবাই এখন খেতে যাবে।
আদি রুহিকেও যেতে বলল,
আদি রুহিকে গাড়ির সামনে তার পাশে বসতে বলল কিন্তু রুহি বসল না আদির তাতে রাগ হল।
আদিঃরুহিকে একটা সাজা দিতে হবে।রাস্তার পাশে গাড়ি থামালো সবাইকে নামতে বলল।
সবাই মিলে একটা আইস্ক্রিম বারের কাছে গেল আদি সবাইকে আইস্ক্রিম কিনে দিল।
শুধু রুহি কে ছাড়া রুহির আইস্ক্রিম খুব প্রিয় তবুও আদি দিল না।
রুহির খুব লোভ হচ্ছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। খালি সবার মুখের দিকে দেখছে,
আদি রুহিকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাচ্ছে
রুহিঃআমার যদি টাকা থাকত আমিও কিনতাম? (মনে মনে)
সবাই খাওয়া শেষ করে আবার গাড়িতে গিয়ে বসলো।
একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে এসে গাড়ি থামলো
রেস্টুরেন্ট টা বেশ জাঁকজমকপূর্ন এখানে সব কিছুর এই অনেক দাম।
আদি অর্ডার দিল
ওয়েটার এসে খুব সুন্দর পাত্রে খাবার পরিবেশন করে দিল।সবাই খাওয়া শেষ করলো সব খাবার রুহির পছন্দের খাবার ছিল।আদি ইচ্ছা করেই রুহির জন্য অর্ডার দিয়েছিল। রুহির পাশেই মনি বসেছে।
খাওয়া শেষ করে আদি বিল দিতে চলে গেল লিজা সাওন মাহির গল্পে ব্যস্ত হঠাৎ করে কিছু একটা ভাংগার শব্দে তাদের গল্প থামল নিচে তাকিয়ে দেখে একটা সুন্দর পাত্র ভেংগে পড়ে আছে।
মনিঃ জীবনে দেখে নি তো তাই ভেংগে ফেলেছে ভিখারি কোথাকার।
রুহিঃ মনির দিকে তাকিয়ে আছে।
আদি বিল দিয়ে এসে বলল কি হয়েছে?
মনিঃ দেখোনা ডারলিং রুহি এটা ভেংগে ফেলেছে আসলে কখনো দেখে নি তো।
মনির কথায় আদির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।রাগ টা আসলে রুহির প্রতি না বরং মনির উপড় উঠেছে তাই বলল ভেংগেছে যখন এর দাম ওই দিবে চলো আমরা যাই।
রুহিঃ আমার কাছে তো কোন টাকা নাই স্যার…
আদিঃ ভাংগার সময় মনে ছিল না.?
ওয়েটার এসে বলল স্যার এটার বিল ৫০০০ টাকা
আদিঃ রুহিকে দেখিয়ে বলল ওই ম্যাডাম দিবে আর যদি না দেয় পুলিশে দিয়ে দিও।
মাহিরঃ কি বলছিস এসব তুই? বাইরের মানুষের সামনে তুই রুহিকে অপমান করতে পাড়িস না।
আদি মাহিরের কানে কানে কি জানি বলল তখন মাহিরো চুপ হয়ে গেল।
রুহি হতাশ দৃষ্টিতে ওদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
রুহিঃ গরীবের এত বিলাশিতা করা ঠিক না।কেন যে এসেছিলি খেতে মনে মনে নিজেকে নিজেই বলছে।
এখন কি করব আমার কাছে তো ফোন ও নাই যে বাড়িতে বলব।
ওয়েটারঃ ম্যাম, মেনেজার আপনাকে ডাকছে।
রুহিঃ জ্বি চলুন
ম্যানেজারঃটাকা দিন
রুহিঃ আমার কাছে কোন টাকা নেই
ম্যানেজারঃ তাহলে আপনাকে পুলিশে দিতে বাধ্য হব।
রুহিঃ দাঁড়ান আমার কাছে একটা জিনিস আছে রুহি তার কোমড় থেকে একটা চেইন খুলে ম্যানেজারকে হাতে দিয়ে বলল এটার দাম নিজেই চেক করে নিবেন আর যদি কম হয় এড্রেস দিয়ে গেলাম বাসায় গিয়ে নিয়ে আসবেন এবার আমাকে যেতে দিন বলেই রুহি বেড়িয়ে গেল
রুহি যাওয়ার সাথে সাথেই ম্যানেজার আদি কে ফোন দিল।
ম্যানেজারঃ স্যার আপনি তো বলে ছিলেন, টাকা না দিতে পাড়লে ম্যাডামকে যেন ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেই কিন্তু উনিত….
আদিঃ উনিত কি?
ম্যানেজারঃ উনি একটা বেলি চেইন দিয়েছেন। প্লাটনামের উপড় অসংখ্য ডায়মন্ড দিয়ে কারুকাজ করা এটার দাম আমার কল্পনার বাইরে স্যার।
আদিঃ কি বলছেন এসব ওর কাছে এত দামি কিছু কিভাবে থাকবে আদি কথা শেষ করার আগেই লিজার ডাক শুনতে পেল।
লিজাঃআদি তাড়াতাড়ি এদিকে আয় রুহি এসব কি করছে দেখে যা।
আদিঃ টিভিতে চোখ রেখে হতবাক হয়ে গেছে রুহি রাস্তায় পুলিশদের মাড়ছে আর সেটা সবগুলি টিভি চ্যানেলে লাইভ টেলিকাস্ট হচ্ছে।
আদি সময় নস্ট না করে তাড়াতাড়ি সেখানে ছুটে গেল।গিয়ে দেখে রুহি তখনো মারামারি করছে।
আদি দৌড়ে গিয়ে রুহিকে জড়িয়ে ধরে বলল, কি করছো রুহি?পাগল হয়ে গেছো নাকি?
আদিকে এই এলাকায় সবাই চিনে তাই আদি রুহিকে জড়িয়ে ধরায় পুলিশ রুহিকে মারতে আসেনি।
একজন পুলিশের কাছে আদি জানতে চাইল কি হয়েছে? কারন রুহি রাগে ফুসঁছে কিছু বলার অবস্থায় সে নেই।রুহিকে বুকে জড়িয়ে রেখেই আদি প্রশ্ন করলো।
পুলিশটি বলল আসলে স্যার ম্যাডামের কোন দোষ নেই আজ এই রাস্তা দিয়ে ভিআইপি যাওয়ার কথা তাই রোড ব্লক করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে জ্যামে একটা এম্বুলেন্স আটকে ছিল তাই উনি পুলিশদের মেরে রাস্তার ব্লক খুলে দিয়েছেন আর ভি আ ই পি এসে এসব দেখে পুলিশকে বলেছিলেন ম্যাডামকে এরেস্ট করতে তাই তিনি রেগে গিয়ে সবাইকে মেরেছেন।
রুহিঃ কিসের ভি আই পি একজন মানুষের জীবনের চেয়ে ভি আ ই পির দাম বেশি আমরা গরিব বলে আমাদের জীবনের কোন দাম নেই? আজ তো এই ভি আই পি কে আমি দেখে নিব। চিৎকার করে বলছে রুহি।
আদির আর বোঝতে বাকি রইল না রুহিকে গরিব বলে মনি অপমান করেছে আর আদি নিজেও যা যা করেছে তার রাগ রুহি এখানে দেখিয়েছে….
আদিঃ আচ্ছা রুহি এদের ভুল হয়েছে তুমি শান্ত হও প্লিজ……
আদি কমিশনারকে উদেশ্য করে বলল আমি ওকে এখন নিয়ে যাচ্ছি কোন ফরমালিটি থাকলে বাসায় আসবেন তখন কথা হবে।
আদি রুহিকে নিয়ে চলে গেল
একজন এসে কমিশনারকে বললো স্যার উনাকে এরেস্ট করলেন না…???
কমিশনারঃ১ম কথা মিঃ আদিত্য চৌধুরী একজন ভি আই পি আর ২ য় কথা এই ম্যাডামকে এরেস্ট করলে পাবলিক আমাদের মেরে চাতু বানিয়ে দিবে কারন এখানে যা যা হয়েছে সব লাইভ টেলিকাস্ট হয়েছে। এরপর এই ভি আই পির পদ থাকে কিনা সেটা আগে দেখো।
,
,
,
চলবে।
(এই গপ্লের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই। যার ভাল লাগবে না Avoid করুন।
আমাকে গল্প লিখা শিখানোর দরকার নাই)