বৃষ্টি মাখা রোদ্দুর?,part:05

0
4787

বৃষ্টি মাখা রোদ্দুর?,part:05
Writer:TanjiL Mim?
.
.
?
“বৃষ্টির মধ্যে মাঝরাস্তায় জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে রিয়াদ ভাইয়া’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি পুরো চমকে দাঁড়িয়ে আছি’!!কি হলো কেন হলো সবকিছু যেন মাথার উপর দিয়ে গেল”!!
“কয়েক মুহূর্ত আগে বৃষ্টির মধ্যে দৌড়াচ্ছিলাম আমি’!!হর্ঠাৎ কোথা থেকে রিয়াদ ভাইয়া এসে হুট করে জড়িয়ে ধরল’!!খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে রিয়াদ ভাইয়া’!!মনে হচ্ছে ছেড়ে দিলেই আমি পালিয়ে যাবো’!!একটু ভয়ে আমিও ছিলাম এই মুহুর্তে সব ভয় চলে গেছে’!!আমি নিজেকে শান্ত করে হুট করে বলে উঠলামঃ

———–“কি হয়েছে ভাইয়া…..

“বিনিময়ে রিয়াদ কিছু বললো না’!কিছুক্ষন পর……

“ভাইয়া আমায় ছেড়ে দিয়ে বলে উঠলঃ

———–“বৃষ্টি পরছে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তুই চোখে দেখিস না’!!এইভাবে দৌড়াচ্ছিলি কেন???

———–“আসলে ভাইয়া একটু ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই আর কি…..

“ভাইয়া রেগে গিয়ে বলে উঠলঃ

————-“ঠাটিয়ে একটা কানের নিচে দিবো,ভয় পাচ্ছিলি তাহলে ভার্সিটি থেকে বেরিয়েছিস কেন??

————-“আসলে ভাইয়া অনেক দেরি হয়ে গেছে তারওপর ভার্সিটিতেও তেমন কেউ ছিলো না তাই…..

————–“তাই একা একা বেরিয়ে পড়েছিস…..
আমায় একটা ফোন করতে পারতি না…..

————“তুমি তো বলে ছিলে বিজি থাকবে আজকে তাই তো…..

“তানজুর কথা শুনে রিয়াদ নিজের ওপর নিজেই রেগে গেল’!!কেন বলে ছিল সে,…..

“এবার রিয়াদের জড়িয়ে ধরার কারনটা বলা যাক…..

||

“রিয়াদের অফিসের কাজ প্রায় শেষ করে বের হবে এমন সময় তানজুর আম্মু ফোন করে বলে তানজু এখনো বাড়ি ফেরে নি….
আম্মুর কথা শুনে রিয়াদ রীতিমত অবাক হয়’!!পরক্ষণেই আম্মুকে চিন্তা করতে না বলে ফোনটা কেটে দেয়’!!এদিকে আকাশের অবস্থায়ও খুব খারাপ তুমুল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে সাথে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে’!!রিয়াদ এটাও জানে তানজু আকাশের বিদুৎ চমকানোতে ভয় পায়’!!এতে সেও একটু ঘাবড়ে যায়’!!দ্রুত গতিতে রিয়াদ গাড়ি চালাচ্ছিল’!এমন সময় দূর থেকে তানজুকে দৌড়াতে দেখে ভয় পায় রিয়াদ’!!পরে আর কি দৌড়ে গিয়ে তানজুলে জড়িয়ে ধরে সে…….!কারন সে বুঝতে পেরেছে তানজু ভয় পেয়েছে…..

||

“রিয়াদের ভাবনার মাঝে তানজু বলে উঠলঃ

———–“বলছিলাম কি ভাইয়া আর কতোক্ষন বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকবো চলো বাসায় যাই আমার প্রচুর শীত করছে…..

“বিনিময়ে রিয়াদ কিছু না বলেই তানজুর হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিল……

||

“পুরো শরীর কাঁপছে আমার’!!মনে হচ্ছে আজ রাতে জ্বর আসবেই’!!পুরো শরীরের পশম দাঁড়িয়ে গেছে আমার’!!একদম কাচুমাচু হয়ে বসে আছি আমি গাড়িতে’!!এখনি বাসায় গিয়ে কাঁথা মুড়ি দিতে না পারলে ভালো লাগবে না আমার…….

||

“এদিকে রিয়াদ বুঝে গেছে তানজুর প্রচুর শীত করছে’!!হুট করেই রিয়াদ গাড়ি থামিয়ে দেয়….

…………

”আচমকা ভাইয়া গাড়ি থামিয়ে দেওয়াতে অবাক হলাম আমি’!!শীতে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলাম আমিঃ

————“কি হলো ভাইয়া গাড়ি থামিয়ে দিলে যে বাসায় যাবে না……

————-“তুই বস পাঁচ মিনিট আমি এক্ষুনি আসছি……

“বলে আর দু মিনিট দাঁড়ালো না ভাইয়া হন হন করে গাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে গেল সে’!!আমি হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম ভাইয়ার যাওয়ার পানে…..

“উফ এক্ষুণি যাওয়া লাগলো হাচ_চু….?কাম সারছে রে আজকে আর তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না তানজু জ্বর তোর আসবেই….হাচ_চু?

“উফ ভাইয়া তাড়াতাড়ি আসো……..হাচ_চু?

_______________

“অল্পকিছুক্ষন পর…….

“ভাইয়া আসলো হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে’!!ব্যাগটা আমার হাতে দিয়ে বলে উঠলঃ

———-“এটার ভিতর একটা ড্রেস আছে তাড়াতাড়ি পড়ে ফেল……

“আমি কিছু না বলে ব্যাগটা হাতে নিয়ে নিলাম’!!ব্যাগটা হাতে নিতেই ভাইয়া বলে উঠলঃ

————“তুই বস আমি একটু আসছি……

“ভাইয়া যেতেই আমি আবার বলে উঠলাম…..

———–“ভাইয়া…….

“রিয়াদ তানজুর দিকে না ঘুরেই বলে উঠলঃ

———-“কি বল জলদি…..

———-“বলছি কি ভাইয়া তুমিও ড্রেসটা চেঞ্জ করে নেও না হলে তোমারও ঠান্ডা লেগে যাবে হাচ-চু..?

“তানজুর কথা শুনে মনে মনে খুশি হলো রিয়াদ’!!আবার তানজুর অবস্থা দেখে বলে উঠলঃ

———“সেটা দেখছি আমি তুই তাড়াতাড়ি চেঞ্জ কর…..

“বলেই চলে গেল রিয়াদ…….

||

“ব্যাগটা খুলতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার’!!খুব সুন্দর একটা সাদা রঙের চুড়িদার’!!দেখতে অসম্ভব সুন্দর…..এটা আমার, ভাবতেই খুশি লাগছে খুব……

||

” বেশ কিছুক্ষন পর…….

“একটা yellow রঙের টিশার্ট আর ব্লাক জিন্স পরে আসলো রিয়াদ’!!বৃষ্টির রেশ এখন অনেকটাই কমে গেছে’!!রিয়াদ হাতে দু-কাপ গরম চা নিয়ে এসে দাড়ালো গাড়ির সামনে উল্টো দিকে ঘুরে’!!কিন্তু কিছু বললো না……

“ভাইয়া গাড়ির সামনে আসতেই আমি বলে উঠলামঃ

———-“হয়ে গেছে ভাইয়া এখন তুমি তাকাতে পারো আমার দিকে…….

“বিনিময়ে রিয়াদ বলে উঠলঃ

————“এই চা টা খেয়ে নে তাড়াতাড়ি……

“আমিও কিছু না বলে নিয়ে নিলাম’!!কারন এটার দরকার ছিল……

——–“তুমি কি করে বুঝো আমার মনের কথাগুলো “প্রিয়”….(মনে মনে)
“আনমনেই হেঁসে উঠলাম আমি’!!

_________________________________________

____________________

“কলিংবেল বাজতেই দরজা খুলে দিল আফরিন আপু’!!তাকে দেখে রীতিমতো অবাক হলাম আমি’!!আমায় দেখে খুশি হয়ে আফরিন আপু জড়িয়ে ধরে বলে উঠলঃ

———“এতোক্ষণে তোর আসার সময় হলো!কতোক্ষন যাবৎ ওয়েট করছি তোর জন্য……

“এমন সময় পিছন দিক থেকে রুহি আর তিশা চেঁচিয়ে বলে উঠলঃ

———-“সারপ্রাইজ…….

“ওদের দেখে রীতিমতো চোখ গরম হয়ে গেল আমার’!!আফরিন আপুকে ছেড়ে দিয়ে বললামঃ

———–“শয়তান দুইটা তোরা এখানে তারা কইছি আজকে তোগো একদিন কি আমার একদিন……

“বলেই ব্যাগটা সোফার উপর’ রেগে আমি দৌড়’!!দুটোকে কয়েকটা না মারতে পারলে আমি শান্তি পাবো না……..

||

“এদিকে রুহি আর তিশা’ দুজনেই তানজুকে দৌড়াতে দেখো তারাও দৌড় দিল উপরে……

“একপর্যায়ে তিনজনে একসাথে তানজুর রুমে ঢুকে পরলো’!!হাতে একটা বালিশ নিয়ে দুটোকে ইচ্ছে মতো মারতে মারতে বলে উঠলাম আমিঃ

———–“তোরা আজকে ভার্সিটি যাবি না আমায় বলিস নি কেন,,তোদের জন্য আজকে বৃষ্টিতে ভিজতে হলো আমায় হাচ-চু?,,শুধুমাএ তোদের জন্য হাচ-চু?,,আমার হাচ-চু?,ঠান্ডা লেগে গেল হাচ-চু ?বলতে বলতে বসে পরলাম আমি’!!

“এদিকে আমার অবস্থা দেখে হাসবে না কাঁদবে ভুলে গেছে রুহি আর তিশা’!!তারা রীতিমতো তানজুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললোঃ

————-“আমরা সত্যি বুঝতে পারি নি যে তুই ভার্সিটি চলে যাবি……..

————“হইছে হইছে আর বলতে হবে না আমার জন্য আদা দিয়ে চা বানিয়ে নিয়ে আয় হা-চু?

————“যাচ্ছি যাচ্ছি বলেই চলে যায় দু-জন……..

____________________

“এমন সময় রুমে নক করলো কেউ বলে উঠল সেঃ

———–“আমি কি আসতে পারি…..

“আচমকা কোনো ছেলের কন্ঠস্বর শুনে অবাক হয়ে তাকালাম তার দিক’!!ছেলেটিকে দেখে রীতিমতো অবাক হই আমি কারন ছেলেটি হলো আপুর ননদের দেওর সোহান(সেদিন ছোট্ট একটা মিসটেক হইছিলো আমার সেটা হলো সোহান ননদের ছেলে নয় দেবর হবে!টাইপিং মিসটেক তার জন্য সরি সবাইকে……)

“আমি অবাক হয়ে বললামঃ

———–“আপনি এখানে কখন এলেন……

————“এসেছি অনেক আগেই নিচেই ছিলাম তুমি খেয়াল করো নি……

————–“ওহ…..

————–“হুম…..!

“হর্ঠাৎই মনে হলো ছেলেটি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!যেটা মটেও পছন্দ হচ্ছে না আমার……!আমি হুট করেই বলে উঠলামঃ

————“বললাম কি নেভার মাইন্ড ভাইয়া আমার শরীরটা হাচ-চু…?ভালো নেই হাচ-চু..?আমরা কিছুক্ষণ পর কথা বলি হাচ-চু?

“সোহান তানজুর কথা শুনে একটু আনিজি ফিল করলো’!!পরক্ষণেই হালকা হেঁসে বললোঃ

————“ঠিক আছে আমরা পরে কথা বলবো……

————“জ্বি (হালকা হেঁসে)

“সোহান দরজার পর্যন্ত গিয়ে আবার ঘুরে বলে উঠলঃ

———–“কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি…..

“আচমকা সোহানের মুখে এমন কথা শুনে বলে উঠলাম আমিঃ

————“জ্বী বলুন ভাইয়া…..

————-“তোমায় এই সাদা রঙের চুড়িদারে অসম্ভব সুন্দর লাগছে…..

“সোহানের মুখে এমন কথা শুনে হালকা হেঁসে বলে উঠলাম আমিঃ

———–“থ্যাংকু ভাইয়া হাচ-চু?

“বিনিময়ে সোহান আর কিছু বললো না চুপ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল’!!

“সোহান যেতেই ড্রেসটার দিকে চোখ গেল আমার’!রিয়াদ ভাইয়ার দেওয়া গিফট ভালো তো লাগতেই হতো’!!আনমনে আসলাম আমি’!!এমন সময় আবারো চলে আসলো….,কি আবার………

——-“হাচচচচচচচচচচু……??

_________________________________________

____________________

“রাত_৮ঃ০০টা……..

“বিছানায় কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছি আমি’!!জ্বর না আসলেও হাঁচি দিতে দিতে অবস্থা বেজায় খারাপ হয়ে গেছে’!!অসম্ভব রকম ঠান্ডা লেগে গেছে আমার’!!এই নিয়ে দশবার আদা চা খাওয়া শেষ’!!বিকেলেও রুহি আর তিশার হাতে চা খেয়ে পার করে দিলাম……

“হর্ঠাৎই মাথায় আমার সাথে ভাইয়াও তো ভিজে ছিল ভাইয়ার কি কিছু হয় নি,,অবশ্য আমার চেয়ে কমই তো ভিজে ছিল……

“এমন সময় রুমে ঢুকলো রিয়াদ ভাইয়া…….

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here