বৃষ্টি মাখা রোদ্দুর?,part:21
Writer:TanjiL Mim?
.
.
?
“আরুকে দেখেই রিয়াদ ভাইয়া রেগে গিয়ে বলে উঠলঃ
————-“তুই এখানে কেন??
“বিনিময়ে আরু কিছু বলার আগেই আমি বলে উঠলামঃ
————“রুমে ঢুকতে পারমিশন নিতে শুরু করলি আবার কবে থেকে….,,
“আরু কি বলবে বুঝতে পারছে না!চুপটি করে দাঁড়িয়ে রইল সে দরজার কাছেই’!!আরুকে চুপ থাকতে দেখে আবারো বলে উঠলাম আমিঃ
———–“কি হলো এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন আয় ভিতরে….
“আমার কথা শুনে রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠলঃ
————“ওহ এখানে এসে কি করবে,ওকে আসতে হবে না….
“তানজুর কথা শুনে দু-পা এগিয়ে দিতে গিয়েও রিয়াদের কথা শুনে আবার পিছনে চলে যায় আরু’!!আমি আরুর কাজ দেখে আবারও বলে উঠলামঃ
————“তুই ভয় পাস না চলে ভিতরে কি বলবি বলে ফেল…..
“আমার কথা শুনে রিয়াদ ভাইয়া আবারো বলে উঠলঃ
————-“এখন কিন্তু তুই বেশি বারাবারি করছিস “তানজু”(রেগে)
“আমি রিয়াদ ভাইয়ার হাত ধরে বলে উঠলামঃ
————-“প্লিজ ভাইয়া রেগে যেও না,,আগে শুনে তো নেও ও কি বলতে এসেছে…..
“বিনিময়ে রিয়াদ গম্ভীর আওয়াজে বলে উঠলঃ
————-“ঠিক আছে…….
“হাল্কা হাসলাম আমি’!!তারপর আবার আরুকে বলে উঠলাম আমিঃ
————-“এখন তো আয়?
“আমার কথা শুনে আরু মাথা নিচু করে আসলো আমার কাছে’!!তারপর বিছানায় বসে পরল সে’!!আমি নিজেই আরুর হাত ধরে বলে উঠলামঃ
————-“এখন বল কি বলবি?
“আরু রীতিমতো অবাক হচ্ছে তানজুর কাজে’!!কিছুক্ষন চুপ থেকে আরু আমার হাত ধরে বলে উঠলঃ
————-“সরি বোন!সত্যি আমি খুব বড় ভুল করে ফেলেছি!জানি আমি যেটা করেছি সেটা হয়তো ক্ষমার অযোগ্য তারপরও বলবো প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে’!!আমি কথা দিচ্ছি আর কোনোদিন তোর আর রিয়াদের মাঝখানে আসবো না’!!আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি,জোর করে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না’!!তাই আমিও ভেবে নিয়েছি আর তোদের মাঝখানে আসবো না’!!সবাই আমার উপর রেগে আছে’!!কেউ কথা বলে না আমার সাথে’!!এতে খুব কষ্ট হচ্ছে আমার’!!এই মুহূর্তে রিয়াদকে না পাওয়ার যন্ত্রণা থেকে আমার আপনজনদের ব্যবহার খুব কষ্ট দিচ্ছে’!!তাই প্লিজ সবাই আবার আগের মতো হয়ে যা না প্লিজ আমি আর কখনো কোনো ভুল করবো না’!!বলেই ঠুকরে কেঁদে উঠল আরু……!!আমি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছি কিন্তু কেউ ক্ষমা করছে না আমায়…..!!তুই অন্তত কর….???
||
“এদিকে আরুর কথা আর ওর চোখের পানি দেখে আমারও খুব কষ্ট হচ্ছে’!!মানুষ মাএই তো ভুল হয়’!!আরুও করেছে’!!হয়তো ভুলের মাএাটা একটু বেশি ছিল’!!কিন্তু ও ওর ভুল বুঝতে পেরেছে এটাই অনেক বেশি’!!আমি হাল্কা হেঁসে ওর হাত জড়িয়ে ধরেই বলে উঠলামঃ
————“ঠিক আছে আর কাঁদিস না,সব ঠিক হয়ে যাবে……!!
“হুট করেই বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালাম আমি’!!আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠলঃ
———–“কোথায় যাচ্ছিস তুই……
————“আরে চলো না গেলেই দেখতে পাবে!
“বলেই আরু আর রিয়াদ ভাইয়া দু’জনের হাত ধরে আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসতে লাগলাম আমি’!!
||
“সোফায় বসে আছে নানাভাইসহ সবাই’!!আমাদের এইভাবে আসতে দেখে অবাক হয় সবাই’!!নিচে নেমেই আরু, রিয়াদ দুজনের হাত ছেড়ে দিয়ে আস্তে আস্তে চলে গেলাম আমি নানাভাইর কাছে'”!! চুপটি করে নিচে বসে নানাভাইর হাত ধরে বলে উঠলাম আমিঃ
———–“আচ্ছা নানাভাই যারা ভুল করে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে যদি ক্ষমা চায় তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত না……
———–“অবশ্যই উচিত……
————“তাহলে তোমরা কেন আরুকে ক্ষমা করতে পারছো না…..
“বিষ্ময় চোখে তাকালো নানাভাই আমার দিকে…..!!তারপর বলে উঠল সেঃ
————“এই কথাগুলো তুমি বলছো……
————-“দেখো নানাভাই মানুষ মাএই তো ভুল করে আরুও করেছে’!!আর আমার তো কিছু হয় নি তাই তোমরা এখনো ওর ওপর রেগে আছো কেন,তোমরা কেউ ওর সাথে কথা কেন বলছো না বলো’!!
“এমন সময় আরু দৌড়ে আসে নানাভাইর কাছে বসে তার হাত জড়িয়ে ধরে’!! কেঁদে কেঁদে বলে উঠল সেঃ
————-“সত্যি আমার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে নানাভাই’!!আর কখনো এমন ভুল হবে না’!!দয়া করে এইবারের মতো মাফ করে দেও আমায়’!!আমি কথা দিচ্ছি আর কখনো এমন ভুল হবে না আমার’!!প্লিজ তোমরা আবার আগের হয়ে যাও না…….
“আরুর কান্না দেখে আমি আবারো বলে উঠলামঃ
———-“প্লিজ নানাভাই ওকে ক্ষমা করে দেও!আর ও তো বলেছে আর এমন ভুল করবে না!এই বারের মতো ক্ষমা করো নানাভাই…….
||
“সবাই থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল!কেউ বুঝতে পারছে না নানাভাই কি বলবে’!!কিছুক্ষণ পর……
“নানাভাই হাল্কা হেঁসে বললোঃ
———-“ঠিক আছে নানাভাই,,তোমার জন্য আমরা ওকে ক্ষমা করে দিলাম’!!
“নানাভাইর কথা আরু শুনে খুশি হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলে উঠলঃ
———“থ্যাংক ইউ নানাভাই,,এই আরু তোমায় কথা দিচ্ছে আর কোনোদিন আরু কোনো ভুল করবে না,,সরি নানাভাই…..
“নানাভাইও মুচকি হেঁসে আরুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিল’!!এদের ভালোবাসা দেখে আমি একটু অভিমানি স্বরে বলে উঠলামঃ
———-“এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না নানাভাই তুমি শুধু আরুকে আদর করছো কেন??
“হাসলো সবাই’!!তারপর নানাভাই বলে উঠলঃ
———-“তুমিও আসো তাহলে…..
“ব্যস আমিও খুশি হয়ে নানাভাইকে জড়িয়ে ধরলাম!
“সবাই আবারো আগের মতো হয়ে যাচ্ছে…..
_________________________________________
____________________
“সন্ধ্যা_৭ঃ০০টা……
“সবাই বাড়ির ফেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবো আমরা’!!সবাই সেজেগুজে তৈরি বেশ’!!আমি হাল্কা মাপের একটা ড্রেস পড়েছি,,আর চুলগুলো উচু করে ঝুঁটি করা’!!শরীর এখনও ক্লান্ত আমার’!!এমন সময় রুমে আসলো রিয়াদ ভাইয়া’!!আচমকা ওনাকে দেখে কিছুটা চমকে উঠলাম আমি’!!আমি কিছু বলার আগেই রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠলঃ
———-“আর কতোক্ষন লাগবে তোর…..
———–“এই তো হয়ে গেছে আমার’!!দেখো….
“ভাইয়া কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে দেখে বললোঃ
————-“এটা কেমন সাজে সেজেছিস তুই……
“আমি অবাক হয়ে বললামঃ
————-“কেন ভালো লাগছে না…….
————-“না তেমনটা নয়…..
————-“তাহলে…..
————“wait…..
“বলেই আমার সামনে এসে টান মেরে চুল খুলে দিল’!!আমি অবাক হয়ে বললামঃ
———–“এটা কি করলে…..
————“যা করেছি বেশ করেছি তোর মাথায় এমনিতেই ব্যাথা তারওপর আবার এত শক্ত করে কেনো চুল বেঁধেছিস তুই…..
“বিনিময়ে কিছু বলার সাহস হলো না আমার’!!ভাইয়া চুলগুলো সুন্দর করে আঁচড়িয়ে দিল আমায়’!!তারপর বাচ্চাদের মতো একটা হেয়ার ব্যন্ট মাথা দিল’!! চোখে হাল্কা কাজল আর ঠোঁটে সামান্য লিপস্টিক’!!দিয়ে ভাইয়া বলে উঠলঃ
—————-“এইবার ঠিক আছে……..
“বলেই আয়নার দিকে ঘুরিয়ে দিল আমায়’!!নিজেকে আয়নায় দেখে হাল্কা হাসলাম’!খারাপ দেখাচ্ছে না তো শুধু……
—————“আচ্ছা মাথায় হেয়ার ব্যন্ট দিলে কেন আমি বাচ্চা নাকি……..
“হাসলো রিয়াদ’!!তারপর আমার দু-গাল চেপে ধরে বললো সেঃ
—————“তুই তো বাচ্চাই……
“বলে আবারো হাসলো রিয়াদ’!!
________________________
“ট্রেনের দরজার বাহিরের দাঁড়িয়ে আছে সবাই’!! নানাভাই, নানু আরু সহ সবাই…..!!নানু তো আম্মু খালামনিদের ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছে’!!আরু একে একে সবাই হাত ধরে ক্ষমা চাচ্ছে খালামনি আম্মু আব্বু দিহান ভাইয়া’ আফরিন আপুর সহ আরো সবাইকে ধরে ধরে ক্ষমা চাচ্ছে’!!অবশেষে আরু এসে দাঁড়ালো রিয়াদ ভাইয়ার সামনে মাথা নিচু করে বলে উঠল সেঃ
———-সরি ভাইয়া,,সবাই ক্ষমা করতে পারলেও তুমি হয়তো পারবে না’!!তারপরও বলবো পারলে ক্ষমা করে দিও আমায়।
“বিনিময়ে রিয়াদ কিছু না বলেই সরে আসে আরুর সামনে থেকে’!!এতে আরু অনেকটাই কষ্ট পেয়েছে তারপরও কিছু বললো না’!!তারপর আরু ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যায় সোহানের সামনে’!!তারপর সোহানের সামনে গিয়ে বলে উঠল সেঃ
———–“ধন্যবাদ আপনাকে……
“সোহান অবাক হয়ে বললোঃ
————“কেন?
“আরু হালকা হেঁসে বললোঃ
———–“এমনি….
“বিনিময়ে সোহানও আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না’!!
||
“ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গেছে প্রায়’!!একে একে আমরা সবাই নিজেদের আসরে যাবো’!!নানাভাই রাও এখন চলে যাবে’!!সবারই মন খারাপ করছে’!!বলতে বলতে ট্রেন চলতে শুরু করল’!!আমরা সবাই নানাভাই,নানু আর আরুকে বিদায় জানালাম’!!যতক্ষণ তাদের দেখা গেল’!!সবাই তাকিয়ে রইলাম’!!আস্তে আস্তে স্টেশন থেকে অনেক দূরে পাড়ি জমাতে শুরু করলো ট্রেন’!!একে একে সবাই চলে গেল যে যার কেভিনে’!!আমি চুপটি করে এখনো দাঁড়িয়ে আছি ট্রেনের দরজার সামনে’!!মনটা আসলেই খারাপ লাগছে’!!সত্যি খুব মজা করেছি আমরা এই কদিন’!!এমন সময় পিছন থেকে কাঁধে হাত রাখলো রিয়াদ’!!তারপর বলে উঠল সেঃ
———–“কি হলো দাঁড়িয়ে আছিস কেন…..
————“তেমন কিছু নয় এমনি….
————“ওহ….
————“আচ্ছা ভাইয়া তোমায় একটা কথা বলি…..
————-“হুম বল না……
————-“আমি যদি সত্যি মরে যেতাম তাহলে তুমি খুব কষ্ট পেতে তাই না……
“তানজুর কথা শুনে রিয়াদের বুকের ভিতরটা দক করে উঠলো’!!রিয়াদ একটা রাগী লুক নিয়ে বললোঃ
—————-“আজকের পর যদি এই ধরনের কথা বলিস তাহলে ঠাটিয়ে দু-টো দিবো তোর কানের নিচে…..
“হাসলাম আমি’!!হর্ঠাৎ কি হলো আমার কে জানে,,হুট করেই রিয়াদ ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলাম আমি’!!
||
“আচমকা এমনটা হওয়াতে রিয়াদ পুরো ভিষণ খেয়ে গেল’!!পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলো সে…..
“কিছুক্ষণ পর……
”হুট করেই রিয়াদ তানজুর কানের কাছে তার ঠোঁট নিয়ে এসে বললোঃ
————“হুটহাট এতটা কাছে চলে আসলে আমি যে সত্যি পাগল হয়ে যাবো “প্রিয়সী”……
“রিয়াদের কথার জবাবে বলে উঠলাম আমিঃ
————-“একটু পাগল হলে মন্দ কি ”প্রিয়”……
“রীতিমতো অবাক রিয়াদ’!!তানজুর কথা শুনে……
________________________________
||
“খুব ভোরের ট্রেন এসে থামলো ঢাকা রেল-স্টেশনে’!!আফরিন আপু, দুলাভাই আর সোহান তিনজনই এখান থেকেই চলে গেছে তাদের গন্তব্যে’!!সবাই থাকতে বলেছিল কিন্তু দুলাভাইর কিছু কাজ থাকায় চলে যায় তারা’!!সোহান ভাইয়াও খুব একটা কথা বললো না আমার সাথে'”!! আমিও তেমন কিছু বলে নি’!!শুধু যাওয়ার আগে বলেছিল সেঃ
———–“ভালো থেকো তোমার ভালোবাসার মানুষের সাথে…..
“আমিও হাল্কা হেঁসে বলে উঠলামঃ
————“আপনিও ভালো থাকবেন ভাইয়া…..
“বিনিময়ে হাল্কা হাসলো সোহান’!!তারপর পাড়ি জমালো তাদের গন্তব্যে…….
চলবে…….