পদ্মাবতী,পর্ব-৫
নাহার
পদ্ম মাথাটা চেপে ধরে বেঞ্চের পাশে বসে আছে। চিটচিটে রক্তে হাত মোজা, নেকাব ভিজে যাচ্ছে। তারপরেও কাউকে পাশে ঘেষতে দিচ্ছে না। সৌরভ বারকয়েক চেয়েছে কোলে তুলে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যেতে। কিন্তু কেউ পাশে আসলে পদ্ম হুলুস্থুল কান্ড বাজিয়ে দিচ্ছে। সৌরভের বাকি বন্ধু দুইজন চিন্তায় পরে গেলো। এভাবে ব্লিডিং হতে থাকলে বড়সড় দুর্ঘটনায় ঘটে যেতে পারে। দিশ না পেয়ে সৌরভের মেয়ে ফ্রেন্ড চারজন পদ্মকে ধরে সিএনজিতে তুলে তারা হসপিটালের জন্য রওনা হলো। সৌরভরা পিছনে আরেকটা সিএনজি নিয়ে রওনা হলো।
কালরাতে সৌরভের মেসেজের পর দ্বিধাদ্বন্দে পরে ঘুমিয়ে যায়। সকালে আবার চারটা মেসেজ আশায় পদ্ম না চাইতেও চলে এলো তথাকথিত জায়গায়। এসে দেখলো শুধু সৌরভ নয় তার বন্ধু বান্ধুব সবাই আছে। বলতে গেলে তাদের গ্রুপের সবাই আছে। পদ্ম তো অনেক আগেই এই গ্রুপটা ছেড়ে দিয়েছে। পদ্ম আসতেই প্রথমে কেউ চিনতে পারেনি। কারণ পদ্ম সম্পূর্ণ পর্দায় নিজেকে ঢেকে রেখেছে। এসেই পদ্ম সালাম দেয় তাদেরকে। পদ্মের গলার আওয়াজে চিনতে পারলো সবাই। তাদের গ্রুপে দিয়া, সুমি, রিনি এবং পদ্ম মিলে ছিলো চারজন মেয়ে ফ্রেন্ড। কিন্তু আজ অন্য একটা মেয়ে আছে। যাকে পদ্ম চিনতে পারছে না। দিয়া পদ্মকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে ব্যঙ্গ করে বললো,
— “বাহ্ বস্তায় ঢুকিয়ে ফেলেছো নিজেকে? ঢুকিয়ে কি লাভ আমরাতো দেখেই ফেলেছি..।”
সবাই একসাথে হেসে দিলো। পদ্ম এসবের জবাব না দিয়ে সৌরভের দিকে একবার তাকিয়ে দৃষ্টি নামিয়ে নিয়ে বললো,
— “কেনো ডেকেছেন সেটা বলুন।”
সৌরভ পদ্মের সামনে দাঁড়িয়ে বললো, “আমার ভুল হয়ে গেছে পদ্ম। আমাকে ক্ষমা করে দাও। তোমার ভালোবাসা আমি এখন খুব অনুভব করতে পারি। প্লিজ ফরে এসো।”
— “আমি এখন আর আপনাকে অনুভব করি না। আর কখনো করতেও চাইনা।”
— “এভাবে বললে? আমায় ভালোবাসো না?”
— “জ্বী এভাবেই বললাম। আর বিয়ের আগে প্রেম ভালোবাসা হারাম। এটা সম্পূর্ণ জিনা। আর আপনি এখন আমাকে জিনার দিকে ডাকছেন। কিন্তু আপনার ডাকে আমি ফিরেও তাকাবো না।”
— “আগে তো ভালোবাসতে।”
— “আগে এসব জানতাম না। বেহায়াপনা করেছি। আর মানুষ সবসময় একরকম থাকে না। মানুষ ভুল করে এবং সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে সংশোধন করে। আমিও ভুল করেছি। নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছি। আপনিও করে নিন।”
— “বেশ কথা শিখেছো। আগে এভাবে কথা বলতে না।”
— “বললাম তো আগের মতো বেহায়াপনায় লিপ্ত নেই। আগে বেয়াদবের বেয়াদবিকে ব্যাক্তিত্ব ভেবেছি।”
সৌরভ একটু নড়ে দাঁড়ায়। পদ্মের কথাটা গায়ে লেগেছে। ভীষণ লেগেছে। সুমি এগিয়ে এসে সৌরভের কাধে এক হাত রেখে বললো,
— “শুনলাম তুই নাকি আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়ে গেছিস।”
— “হয়ত। আল্লাহর ইচ্ছায় হয়েছি।”
— “তা একটু দেখতে পারি?”
— “আমার সৌন্দর্য কোনো সন্দেশ নয় যে, জনে জনে বিলি করে খাওয়াবো। আমার সৌন্দর্য শুধু নির্দিষ্ট একজনের জন্য।”
— “তা সেই একজনটা কে?”
— “আল্লাহর ইচ্ছায় যিনি আমার স্বামী হবেন।”
সৌরভ পদ্মের দিকে এককদম এগিয়ে আসলে পদ্মও এককদম পিছিয়ে দাঁড়ায়। সৌরভ বললো,
— “প্লিজ আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দিও না। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। খুব ভালোবাসি পদ্ম।”
পদ্ম কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলো। তারপর বললো,
— “আপনি চারবছর পর ফিরে এসে বলছেন আপনি আমায় ভালোবাসেন। এতোবছর কোথায় ছিলো আপনার ভালোবাসা? এতোবছরে একবারো খেয়াল হয়নি আপনার, কেউ একজনকে আপনি খুব ঠকিয়েছেন। খুব অপমান করেছেন৷ যাক সেসব কথা। এতোবছর পর ফিরে এসে বলছেন আপনি আমায় বিয়ে করবেন। কিসের জন্যে? ভালোবেসে? উম! আমার তো মনে হচ্ছেনা সেটা। আমিতো এখানে দৈহিক চাহিদা ছাড়া আর কিছুই দেখছি না।”
পেছনের মেয়েটি এগিয়ে এলো যাকে পদ্ম চেনে না। সে পদ্মের দিকে তাকিয়ে বললো,
— “আমি আনিকা। সৌরভের প্রাক্তন ছিলাম। এখন বান্ধুবি। আমরা খুব ভালো বান্ধুবি। দেখো সৌরভ তোমাকে খুব চায়। ফিরে এসো।”
পদ্ম হাসলো। কিন্তু নেকাবের কারণে সেটা দৃষ্টিগোচর হলো না। তাই কেউ বুঝতেও পারেনি যে পদ্ম হাসলো। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললো,
— “দেখুন আনিকা আপু এখন এই মুহুর্তে এসব কথা কৌতুকের মতো লাগছে আমার। আর আমি আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। আশা করি আর বিরক্ত করবেন না। আসি আমি।”
— “সৌরভ তোমাকে ছাড়া ভালো থাকবে না।”
— “তাকে ভালো রাখার জন্য আপনি আছেন তো। বন্ধুত্বের প্রেম ভালোবাসা দিয়ে ভালো রাখবেন।”
পদ্মের ইঙ্গিত আনিকা এবং বাকি সবাই বুঝতে পেরেছে। পদ্মের সাথে যখন সৌরভের রিলেশন ছিলো তখন সৌরভ বললো তার প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে তাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হয়েছিলো। তাই পদ্ম এভাবেই ইঙ্গিত করে কথাটা বললো। আনিকার মাথাটা গরম হয়ে গেলো। খুব রাগ উঠেছে। এবং সেই রাগ ঝারতে সে পেছন থেকে পদ্মকে ধাক্কা দেয়। আনিকার ধাক্কায় পদ্ম সামনের একটা বেঞ্চের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে এবং লোহার বেঞ্চের সাথে মাথাটা ধুম করে লেগে ফেটে যায়। যার ফলে অনেকটা ব্লেডিং হয়েছে।
.
হসপিটালে পৌছার পর নার্স কয়েকজন মিলে পদ্মকে স্ট্রেচারে শুয়ে দিয়ে একটা মেইল ডাক্তারের রুমে নিয়ে গেলো। তারা অনেক বলে কয়েও পদ্মের নেকাব সরাতে পারেনি। পদ্ম বামহাতে মাথা চেপে ধরেছে। ডান হাতে নেকাব শক্ত করে চেপে ধরেছে। তার একটাই কথা, “আমি পুরুষ ডাক্তারের কাছ থেকে কোনো চিকিৎসা নিবো না। আমি মহিলা ডাক্তারের কাছে যাবো।” ডাক্তারও অনেকবার বুঝিয়ে বলেছে, “আপনার অনেকটা ব্লাড লস হয়েছে। এভাবে জেদ ধরলে আরো ক্ষতি হবে। আপনি নেকাবটা সরান আমি ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি।” কিন্তু পদ্ম নাছোড়বান্দা। সে কিছুতেই এই পুরুষ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাবে না। তাই বাধ্য হয়ে পুরুষ ডাক্তার নিজেই হসপিটালের একজন ভালো মহিলা ডাক্তার সাজেস্ট করলো। স্ট্রেচারে করে তাড়াতাড়ি সেই ডাক্তারনির কাছে আনা হলো। পদ্ম নেকাব খুলার আগেও সর্তক চোখে আশেপাশে ভালো করে দেখলো কোনো পুরুষ আছে কিনা। সৌরভরা রুমে ঢুকতে নিলেই পদ্ম চিৎকার করে বললো,
— “বেরিয়ে যাও তোমরা। বেরিয়ে যাও।”
নার্স তাদের বের করে কেবিন লক করে দিলো। ভেতরে শুধু মেয়ে চারজন রইলো। পদ্মের নেকাব সরিয়ে মহিলা ডাক্তার ব্যান্ডেজ শুরু করে। তিনিও খুব অবাক হয়েছেন পদ্মের জেদ দেখে। এই জেনারেশনে এমন মানুষ খুব কম দেখেছেন তিনি। তাও আবার এতো রূপবতী কন্যা। পদ্মের নেকাব সরানোর পর থেকেই আনিকা একধ্যানে পদ্মকে দেখছে। কিছুতেই পলক পরছে না। পদ্মের ছবি দেখেছিলো একবার। কিন্তু বাস্তবে আজ প্রথম দেখছে। এতোটা মায়া, এতোটা মাধুর্য এই চেহারায় চোখ ফেরানো দায় হয়ে পরেছে। পদ্ম এমন চোখ ধাঁধানো রূপবতী হয়েছে যে বাকি তিন বান্ধুবিরও চোখ ফেরানো দায় হয়েছে। নার্সটা পর্যন্ত পদ্মের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। খাড়া নাক, রক্তজবার ন্যায় লাল ঠোঁট, ভ্রু দুটো কিঞ্চিৎ বাঁকা তবে একদম কালো কুচকুচে, চিবুক দুটো পদ্মফুলের পাপড়ির ন্যায়। ডাক্তারনি ব্যান্ডেজ করছে আর বারবার পদ্মের মায়াবী মুখশ্রীর দিকে তাকাচ্ছে। পদ্ম চোখ বন্ধ করে কিছুটা কুঁচকে রেখেছে। আনিকার বারবার পদ্মের বলা একটা কথা কানে বাজছে আর তা হলো, “আমার সৌন্দর্য কোনো সন্দেশ নয় যে জনে জনে বিলি করে খাওয়াবো। আমার সৌন্দর্য শুধু নিদিষ্ট একজনের।” পদ্মকে দেখে আনিকার তাই মনে হচ্ছে। এই সৌন্দর্য জনে জনে বিলি করার নয়। এই সৌন্দর্য শুধু একজনের। নিদিষ্ট একজন পুরুষ। সেই নিদিষ্ট পুরুষ হবে ভাগ্যবান যে এমন চোখ ধাঁধানো নারীকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাবে।
পদ্ম নিজেকে ঠিক করে নেকাব বাঁধার আগে আনিকার সামনে এসে দাঁড়ায়। তারপর বললো, “জাজাকাল্লাহ খাইরুন।” আনিকা কিছু না বলে বেকুবের মতো চেয়ে রইলো। পদ্ম নিজেই বললো, “এর মানে হচ্ছে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক। আর এটা বলার কারণ আছে।” পদ্ম বাকিদের দিকে তাকিয়ে তারপর আবার আনিকার দিকে তাকিয়ে বললো, “যে ব্যাক্তির দেহ (কারো অত্যাচারের ফলে) ক্ষত-বিক্ষত হয়, অতঃপর তা সে সদকা করে দেয়, (অর্থাৎ, অত্যাচারীকে ক্ষমা করে দেয়) আল্লাহ তা’আলা অনুরুপ তার পাপ খন্ডন করে দেন, যেরুপ সে (ক্ষমা প্রদর্শন করে যে পরিমাণে) সদকা করে।” (সহীহুল জামে’ ৫৭১২)। আপনাকে এই কারণেই এই ছোট্ট দু’য়া করলাম। কারণ আপনি অজান্তেই আমার পাপ খন্ডনের পথ সহজ করে দিয়েছেন। ধন্যবাদের কোনো মূল্য নেই। এটা শুধু সৌজন্যতার জন্য দেয়া হয়। তাই ছোট্ট দোয়া এবং ধন্যবাদের বদলে “জাজাকাল্লাহ খাইরুন” বলা। পদ্ম হিহি করে হাসলো। যেটা দেখে চার বান্ধুবিই মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো। পদ্ম যখন হাসলো পদ্মের চোখ দুটো ছোট ছোট হয়ে গেছিলো। মুক্তের মতো দাঁতগুলো দৃশ্যমান হয়েছিলো। পদ্ম নেকাব ঠিক মতো পরে বেরিয়ে গেলো। রাস্তায় এসে রিকশা নিয়ে সোজা বাসায়।
সৌরভরা সবাই আবার আগের জায়গায় আসে। আনিকা এখনো কথা বলছে না। সৌরভ আনিকাকে বললো, “কি হয়েছে তোমার? কথা বলছো না কেনো?”
আনিকা ঘোরের মধ্যেই বললো, “এটা কোনো সাধারণ মেয়ে ছিলো না। মনে হলো জান্নাতের হুর আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলো। এতোটা স্নিগ্ধ। তাইতো পদ্ম নাম রাখা হয়েছে। কারণ সে দেখতেই একেবারে পদ্ম ফুলের মতো স্নিগ্ধ। ”
—————————–
বাসায় আসার পর থেকে নিলা এবং মনিরা দুজনে মিলে পদ্মকে প্রশ্ন করতে করতে কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে। পদ্ম হু হা ছাড়া কথাই বলছে না। মনিরা ফুপি চলে গেলে নিলা পদ্মকে বসিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
— “সত্যি বলবি মাথা কিভাবে ফেটেছে। নয়তো এক চুলও নড়তে পারবি না।”
পদ্ম নিলার হাত ধরে বললো, “আপু আমি তোমাকে মিথ্যে বলতে চাইনা। শুধু একটু সময় দাও আমায়। আমি সব বলবো তোমাকে।”
নিলা আর কিছু বললো। রান্নাঘরে গেলো কারণ আজ পাত্রপক্ষ আসবে পদ্মকে দেখতে। বিকেলে পদ্মের চাচা,চাচি, জেঠা সবাই এলো। পদ্ম এবং নিলা দুইবোন মিলে হরেক পদের নাস্তা এবং রান্না করলো। সন্ধ্যায় পদ্ম মাগরিবের নামাজ শেষ করে বসলো। তখন নিলা একটা মেরুন কালারের শাড়ি এনে পদ্মের হাতে দিয়ে বললো,
— “এটা পরে তৈরি হয়ে নে। পাত্রপক্ষ বসে আছে তোর জন্য।”
নিলা পদ্মের কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে গেলো। পদ্ম শাড়িটা সুন্দর করে পরে মাথায় ভালোমতো ঘোমটা দিলো। নিলা পদ্মকে দেখে বললো, “মাশাল্লাহ। আমার বোনটাকে একদম জান্নাতের হুরের মতোই লাগছে।” পদ্ম মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো। নিলার সাথে পদ্ম বাহিরে এলে মনিরা ফুপি এসে পদ্মকে পাত্রপক্ষের সামনে নিয়ে যায়। পুরুষ শুধু পাত্রই ছিলো। মহিলা শুধু পাত্রের মা এবং খালা ছিলো। তারা দুজন পদ্মকে দেখে বললো, “মাশাল্লাহ। মেয়ে একেবারে স্নিগ্ধ পদ্মের ন্যায়। আচ্ছা আমরা অন্যপাশে গিয়ে কথা বলি। ওদের দুজনকে এপাশে কথা বলতে দিন।” নিলা এবং মনিরা ফুপি সম্মতি জানালেন। পদ্মের খুব অস্বস্তি হচ্ছিলো। তার পাশের সোফায় বসা মানুষটা থেকে এক সুগন্ধি আতরের ঘ্রাণ নাকে আসছে পদ্মের। মিহি কণ্ঠে কেউ পদ্মকে সালাম দিলো। পদ্ম বিব্রতবোধ করলো। তারপর সালামের জবাব দিলো। সেই মিহি কন্ঠের লোক আবারো বললো,
— “আমি মেহতাব হোসেন সামির। আপনার নাম?”
— “প..পদ্ম।”
সামির শব্দ ছাড়া হেসে বললো, “পদ্মাবতী।”
পদ্ম কিছুটা কেঁপে উঠলো। সামির পদ্মকে বললো,
— “আমার আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে। এবার আপনি বলুন আপনার কথা।”
— “আমি আস..আসলে কিছু বলতে চাই।”
— “জ্বী বলুন। আমি শুনছি। তার আগে বলুন আপনার মাথায় ব্যান্ডেজ কেনো?”
— “দেখুন আমি আগে এমন ছিলাম না। হিপহপ স্টাইলের মেয়ে ছিলাম। বুঝতেই পারছেন আমার তখনকার চলাফেরার কথা। আমার একটা রিলেশন ছিলো। সেই প্রাক্তন প্রেমিক আজ আমার সাথে দেখা করেছিলো। আর তারই প্রাক্তন প্রেমিকা আমাকে ধাক্কা দেয় যার ফলে আমার মাথা ফেটে যায়।আমার.. আমার একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো যেটা আমার প্রাক্তন প্রেমিকের সাথের…। সেই ভিডিও হয়তো এখনো ইন্টারনেটে আছে। আপনি যদি আমায় বিয়ে করেন তাহলে আপনারই পরিবারের কেউ সেই ভিডিও আপনাকে দেখিয়ে উপহাস করবে আর আমি সেটা চাই না। আমি চাইনা আমার কারণে কেউ উপহাসের স্বীকার হোক। তাই বিয়েটা না হলেই…।”
সামির কিছুক্ষণ চুপ থেকে হালকা কেশে পদ্মকে বললো,
— “প্রথমত আপনার সম্পর্কে সব আমি জানি। দ্বিতীয় সেই ভিডিও আমি অনেক আগেই ইন্টারনেট থেকে ডিলিট করে দিয়েছি। আর সবশেষে বললো, আমার স্ত্রীকে আমি সবার সামনে প্রদর্শন করিয়ে বেরাবো না। আমার বউ কে? দেখতে কেমন? সেটা শুধু একমাত্র আমিই জানিবো। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।”
পদ্ম কিছুটা বিব্রত হলো। আস্তে করে বললো, “আপনি এসব কেন করেছেন?”
— “যদি বলি আপনাকে স্ত্রী করে পাবার জন্য।
পদ্ম লজ্জায় নত হয়ে রইলো। সামির ঠোঁট টিপে হাসলো।
চলবে,,,