আঁধারের_আলো
পর্ব_২
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat
শাওনদের বাড়ির পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে সবাই। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আলোর দিকে। আলোও করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে। আলোর শাশুড়ী সবাইকে বলছে
শাশুড়ী ঃ দেখছো শাওনের বাপ আমার পোলার কষ্টের টাকা কেমনে নষ্ট করে। আলো এতো গুলো ভাত বাড়ির পিছে কেন ফালাইলা।(চিল্লিয়ে)
আশেপাশের মানুষ এসে তামাশা দেখছে।
আলোঃআমি ফালাইনি মা।
রুপাঃতুমি ফালাওনি তোহ কি উড়ে এসেছে ভাত গুলো।
আলোঃ মা সত্যি আমি ফালাইনি। আমি কেনো ফালাবো।
শাওনের বাবাঃ আচ্ছা এতো গুলো ভাত এখানে। অন্য কারোরও তোহ হতে পারে।
শাওনের মাঃ অন্য কারো হইবো না। পাতিলে গিয়ে দেখেন। পুরো পাতিল খালি। তুই এতো গুলো ভাত এনে ফালাইলি কেন। প্রতিদিন বেশি বেশি করে ভাত রান্না করস তারপরও ভাত পাই না।
আলোঃ হ্যা মা আমিও বুঝতে পারছি না। প্রতিদিন ভাত সর্ট পড়ে। রাতে ওনি(শাওন) খাওয়ার পর আর ভাত থাকে না।হয়তো অল্প করে খেয়ে নেই নয়তো না খেয়ে থাকি। তাই তোহ প্রতিদিন একটু বেশি করে রান্না করি তারপরও কম পড়ে আজ বুঝলাম কেনো কম পড়ে। কিন্ত সত্যি আমি ফেলে দেইনি বিশ্বাস করেন আমি ফেলে দেইনি। কেন আমি ফেলে দিবো। ( মনে মনে বলছে। কারন তার কথা শোনার যে কেউ নেই। নিজের দুঃক্ষ গুলো মা, ভাই এর কাছে বলার স্বাধীনতা নেই)
শাওন এতোক্ষন চুপ করে ছিলো। কিছু না বলে চলে যায়। শাশুড়ী আর রুপা মিলে আলোকে আরো অনেক কথা শুনিয়ে এক সময় তারাও চলে যায়। শ্বশুর আলোর দিকে চেয়ে চলে গেলো।
আলো সেখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। পাশের বাসার চাচাতো ভাবি আলো কাছে এলো।
ভাবিঃ আলো আর কতো অপমান সহ্য করবা। তুমি কিছু বলোনা কেনো।
আলো মুচকি হেসে বলল
আলোঃ প্রতিবাদ করা যে কেউ শিখায়নি। মানুষের কথা হজম করাটা ঠিকই শিখিয়েছে।
বলেই চলে গেলো। এভাবে কিছুদিন কেটে গেলো। একদিন আলো সকালে রান্না করছে উঠানে বসে আছে শাশুড়ী। হঠাৎ পাশের বাসার চাচী এসে বসলো। দুজনে মিলে গল্প করছে। আলো রান্না ঘর থেকে স্পষ্ট সব শুনতে পাচ্ছে। কথার মাঝে চাচী তার পুত্র বধুর কথা বলল, আসলে ইনিয়ে বিনিয়ে শাশুড়ীকে খোচা দিচ্ছে,
চাচীঃ ভাবি জানেনি ৮০ হাজার টাকা দিয়া বউ এর বাপে খাট বানায় পাঠায়ছে যাতে তাগো মাইয়া ভালো ভাবে থাকতে পারে।
শাশুড়ীঃকউ কি এতো দাম দিয়া।
চাচীঃ হও বুঝেন না এইগুলো হলো সামাজিকতা। সাথে ফ্রিজও দিছে। আপনে কই পোলাডারে বিয়া করাইলেন। ভালো জাগায় করাইতে পারলেন না। আমগো বউ এর কিন্তু বাচ্চা হইবো।
শাশুড়ীঃভালা তোহ
চাচীঃ হো আর আপনে না কি বিয়া করাইলেন।এতদিনে নাতীর মুখও দেখতে পারলেন না। কবিরাজ দেখান ভালা দেইখা।
শাশুড়ীঃ অনেক দেখাইছি কোনো কাম হয় না
চাচীঃ আইচ্ছা বাদ দে মাইয়ারই কোনো দোষ আছে। আইচ্ছা এইবার ঈদে আমগো বউ এর বাড়ি
থেকে বাজার পাঠাইছে। আপনের বউ এর বাড়ি থেকে কি কি পাঠাইছে।
শাশুড়ী চুপচাপ কথা গুলো শুনছিলো। কোনো মতে কথা কাটিয়ে ঘরে চলে গেলো। এইদিকে আলো হালকা হাসলো। একটা মেয়েকে তার শশুরবাড়িতে নিচু করার জন্য পাশের বাড়ি চাচী আর সমাজই দায়ি। আমার শাশুড়ীর এইসবে লোভ নেই কিন্তু যখন শুনে ওমুকের বউয়ের বাড়ি থেকে এটা দিছে সেটা দিছে। সেখানে যে কেউর মাথা নষ্ট হবে। রাগ উঠবে লোভ জাগবে। তারা যৌতুক নিবেও ঢোল পিটিয়ে মানুষকে জানাবে আবার যারা নিবে না তাদের কানে বিষও ঢেলে দিবে। জানি না চাচীর এইসবের কথার ফল কি হবে। কি আর হবে আস্তে আস্তে এইসবের প্রভাব আমার উপর পড়ছে। আমার ভাই এতো দামের খাট দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ছোট মানুষ পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করছে সাথে সংসারের হাল ধরেছে। আমি কিভাবে স্বার্থপরের মতো বাবার বাড়ি থেকে কিছু চাইবো। তার উপর আমি যে বেচে আছি নাকি মরে গেছি সেই খোজই তোহ কেউ নেয় না। আবার তাদের কাছ থেকে কি আশা করবো। আমার ভাই এর সাথে আমার কখনো মিল ছিলো না। ও আমার সাথে কথা কম বলতো এখনো বলে না।আমি নিজে থেকেই ওকে কল দিয়ে থাকি। শুনলাম ওর বউ এর নাকি বাচ্চা হবে। শুনে খুবই খুশি হলাম আবার দুঃক্ষ লাগছে যদি মেয়ে হয় তাহলে কি সেই মেয়ের সাথেও আমার মতো আচরণ করবে। ভয় হয় খুবই ভয় হয়।আল্লাহ যেনো তাকে পুত্র সন্তানই দান করে।
যাইহোক আমার শাশুড়ী পরিবর্তন এর জন্য এইসব চাচীরাই দায়ি। শুরুতে কিছুই বলতো শাশুড়ী কিন্তু এইসব শুনতে শুনতে উনি আমার সাথে এমন ব্যবহার করে।
—————————————-
একদিন বিকালে শাওন বাসায় এসে আলো তখন কাজ করছিলো।
শাওনঃ আলো আলো
আলোঃ জিই আসছি।
আলো রুমে আসার পর আলোর হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে বলে
“তোমার জন্য উপহার”
আলো খুশি হলো। এই দেড় বছরে প্রথম শাওন তাকে কিছু কিনে দিলো। প্যাকেট খুলে দেখলো একটা ছোট ডায়মন্ড এর নাক ফুল। আলো এতোদিন পাথরের নাক ফুল পড়তো। শাওন বলল পড়তে আলো বলল পড়ে পড়বে। এরপর শাওন দোকানে চলে গেলো। আলোর অনেক খুশি লাগছে। প্রায় ৫ মিনিট ধরে নাক ফুলের দিকে চেয়ে আছে।
অন্যদিকে
আঁধার এলাকায় একটা দোকান দিলো ঔষধ এর দোকান। সে খেয়াল করলো সব আছে কিন্তু ঔষধ এর জন্য অনেক দূরে যেতে হয় তাই সে এই দোকান দিলো। আজ থেকে দোকানে মালামাল এনে সব ঠিক ঠাক করবে।
আঁধার নিজের রুমে বসে হিসাব করছে। এমন সময় তার দরজায় কড়া পড়লো।
আঁধার দরজায় তাকিয়ে দেখলো তার বউ ভাবি দাঁড়িয়ে আছে।
আঁধারঃ ভাবি আপনি?
ভাবিঃআসতে পাড়ি।
আঁধারঃ হ্যা হ্যা আসুন। কোনো দরকার।
ভাবি এসে বসল।
ভাবিঃ আঁধার ভাইয়া আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
আঁধারঃ হ্যা বলুন কি হয়েছে। ভাইয়ার সাথে কি ঝগড়া হয়েছে নাকি?
ভাবিঃ না তেমন কিছুই না। আসলে আমার বিয়ের ৫ বছর হলো। আপনাকে দেখছি আপনি খুব চুপচাপ থাকেন। হঠাৎ করে একদিন বললেন বিদেশ যাবেন।পড়াশোনা করবেন না। তোহ আপনার ভাই আপনাকে তার কাছে নিয়ে গেল। সেখানে ৪ বছর থাকলেন। অনেক ছুটি থাকার পর দেশে আসেননি। একটাই কথা টাকা কামাতে হবে। এরপর ১ বছর আগে আসলেন। আর হুট করে সিদ্ধান্ত নিলেন বিয়ে করবেন না। ঠিক বুঝতে পারছি না। কি হয়েছে খুলে বলুন। আমাকে ভাবি নয়। বড় বোন বা বন্ধু মনে করুন।
আঁধার চুপচাপ তার ভাবির কথা শুনছিলো। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলা শুরু করলো। এতোদিনের মনের চাপা কষ্ট গুলো আজ বলতে যাচ্ছে কাউকে।
আঁধারঃ আমি একজনকে ভালোবাসি। এখন থেকে নয়। যখন আমার বয়স ৭ বছর তখন থেকে। আমরা একই ক্লাসে পড়তাম। সমবয়সী আমরা সে আমার ২ মাসের বড় হাহাহা। ছোট বেলায় এই কথা বার বার মনে করিয়ে দিতো।হালকা চাপা স্বভাবের ছিলো কিন্তু আমার সাথে কথা ঝুড়ি ফুটতো। আমাকে সব সময় বকা দিতো কারন সে আমার বড় ছিলো তাও দুই মাসে এই কথা দিনে ১৫ বার আমাকে শোনাতো। হাহাহা
বলেই আঁধার হাসছে। ভাবি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। এই প্রথম আঁধারকে হাসতে দেখলো। শাশুড়ীর কথায় আজ দেবরের সাথে খোলাখুলি কথা বলতে এসে অবাক হচ্ছে।
ভাবিঃ ওম বেশ তোহ সে কোথায়, নাম কি, কোথায় থাকে?
ভাবির এমন প্রশ্ন আঁধারের চেহারায় হতাশ ছেয়ে গেলো।নিজের মনের চাপা কষ্ট গুলো বের হয়ে চেহারায় স্পষ্ট ফুটে উঠছে।
আঁধারঃ আলো তার নাম আলো। বর্তমানে সে শ্বশুরবাড়িতে। ১৪ বছর হয়ে গেছে তার সাথে দেখা হয় না কথা হয় না।
আচ্ছা ভাবি আমি আসি আমার কাজ আছে।
কোনো মতে কথা কাটিয়ে চলে গেলো আঁধার। ভাবি যাওয়ার পথে চেয়ে আছে। আঁধারের মা এসে বসল।
আঁধারের মাঃ বউমা কি বলেছে আঁধার আর এইভবে তারাহুরো করে যে চলে গেলো।
আঁধারের ভাবিঃ আলো নামের এক মেয়েকে ভালোবাসে। আলো নামে কাউকে চিনেন কি মা?
আঁধারের মা চিন্তায় পড়ে গেলো। নামটা বেশ শোনা শোনা লাগছে।
আঁধারের মাঃ নাম শুনেছি কিন্তু মনে পড়ছে না।
আঁধারের ভাবিঃ ওরা একই ক্লাসে একই স্কুলে পড়তো। একটু মনে করার চেষ্টা করুন।
আঁধারের মা ঃআচ্ছা আমি ভেবে দেখছি
★★
পরেরদিন বিকালে সব কাজ শেষ করে। নিজের ভাই এর ফোনে কল দিলো।
অনেক কষ্টে করে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কিনেছি এটাই ব্যবহার করি। তাও বাবার বাড়ি থাকতে স্টুডেন্ট এর বেতনের টাকা জমিয়ে কেনা ফোন। খুব যত্ন করেই রাখছি। আমি সব কিছুই যত্ন করে রাখার চেষ্টা করি তারপরও আমার যত্নে গড়া জিনিস হারিয়ে যায়।
পরপর ২ বার কল দিলাম ব্যস্ত বলছে।জানিনা যতবার কল দেই ততবারই ব্যস্ত বলে থাকে। তাই ভাই এর বউ ফাতেমাকে কল দিলাম। মেয়েটা গর্ভবতী কেমন আছে খোজ খবর নেই।
২ বার রিং হওয়ার পর রিসিভ করলো।
আলোঃ আসসালামু আলাইকুম ফাতেমা।
ওইপাশেঃ আমি ফাতেমার মা বলছি। কেন কল দিয়েছো আর কি চাই। ভাই এর কাছ থেকে খালি নেওয়ার মধ্যে আছো দেওয়ার মধ্যে নাই। জামাই কতো কষ্ট করে কাজ করে। টাকা জমাচ্ছে ফাতেমার ডেলিভারির জন্য আর তুমি লোভী মেয়ে আমার মেয়ের সুখ দেখতে পারোনি তাই না।
আন্টির কথার আগামাথা বুঝতে না পেড়ে ওনাকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
আলোঃআন্টি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাকে বুঝিয়ে বলুন।
ফাতেমার মাঃ কি বলবো। তোমার জামাইক্র যে পাঠিয়েছো টাকার জন্য। তোমার জামাই এসে বলেছে তোমার নাকি কিছু টাকা লাগবে চিকিৎসার জন্য। নিজে তোহ বাচ্চা জন্ম দিতে পারোনি আবার আমার মেয়ের বাচ্চা হবে তাই হিংসা হচ্ছে তাই না। লোভী মেয়ে হিংসুটে,অলক্ষি কোথাকার।
আরো অনেক কথা শুনিয়ে ফোন কেটে দিলো।আলোর চোখের কোনে নোনা জল জমে গেলো। তা গড়িয়ে পড়ার আগে মুছে ফেললো। বাবার মৃত্যুর জন্য আমাকে যখন দায়ি করেছিলো প্রচুর কেদেছিলাম। এরপর যখন স্কুলের যেতে পারবো না তখনও কেদেও কারো মন গলাতে পারিনি। মানুষ আমাকে সব অলক্ষি বলতো। এইসব আস্তে আস্তে সহে গিয়েছিলো। পৃথিবীতে দুইজন আমায় সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে এক আমার বাবা আরেকজন সে। যে আমার থেকে ১৪ বছর আগেই অনেক দূরে চলে গেছে। তার দেখা আর মেলেনি। বাবার মারা যাওয়ার পর নিজেকে এতোটাই গুটিয়ে নিয়েছিলাম যে প্রয়োজন ছাড়া কোথাও যেতাম না। মানুষ তোহ বাদই দিলাম আমার মা ও দাদী কথা শুনতে শুনতে তিক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে বাবা থাকলে হয়তো আজ আমি অনেক সুখি থাকতাম। বাবাকে আমার অবস্থার কথা বললে দৌড়ে আমায় নিতে চলে আসতো। কিন্তু নেই কেও নেই আমার। একটা ভাই যার সাথে আমার কথাই হয়না। মানুষ ঈদে বাবার বাড়ি যায়। বিয়ে হওয়ার ২ বছর হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ৫ বারও বাবার বাড়ি যেতে পারিনি। এক তোহ শশুরবাড়ি থেকে আমি চলে গেলে কাজ করবে কে আরেক হলো বাবার বাড়িতে আমি গেলে আমাকে খাওয়াতে তাদের খরচ হবে। মা আমায় কিছু বলতো না কিন্তু দাদী আর তার সাথে যোগ দেওয়া নতুন মানুষ আমার ভাই এর শাশুড়ী। আমি জানি আমার মা কখনোই সুখ পায়নি। পাবে কিভাবে প্রথমেই যে আমার জন্ম হলো কন্যা সন্তানের। সুখের আবেশ পেয়েছে আমার ভাই হওয়ার পর আমার মাকে মাথায় তুলে দিলো। এখনো হয়তো আমার জন্য মা কষ্ট পায়।
রুপা আপু আমার বরকে পছন্দ করতো তা আমি আগেই বুঝে গিয়েছি তারপরও কিছু বলিনি কারন আমার বরের মেয়ের নেশার চেয়ে টাকা ও জুয়ার নেশা আছে। জুয়া খুবই ভয়ংকর নেশা মানুষকে তচনচ করে দেয়। রুপাকে আমার বর পছন্দ করে না কারন তার বোনেদের সাথে কখনোই ভালো ব্যবহার করেনি।তাই উনি আমায় বিয়ে করে যাতে তার বোনেরা ভালোভাবে থাকতে পারে বাবার বাড়ি আসার পর। উনি নিজের বোনদের অনেক ভালোবাসে। আমায় কখনো অসম্মান করেনি কিন্তু ওইযে জুয়ার নেশা যার ফলে আজ উনি আমায় না বলে ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিয়ে আসছে। নিশ্চয়ই জুয়ায় হেড়েছে।
রাতে
শাওন বাসায় আসে। তাকে পানি দিয়ে তার কাছে বসেছি।
আলোঃ আমার ভাই এর কাছ থেকে কত টাকা নিয়ে এসেছেন আপনি?(শান্ত গলায়)
শাওনঃ ওহ তাহলে তোমার ভাই বলেই দিয়েছে। হ্যা নিয়েছি টাকা আর তোমার জন্যই তোহ নিয়েছি। ওইযে তোমাকে উপহার দিলাম নাক ফুলটা। মনে করো তোমার ভাই এর দেওয়া উপহার। যাও গিয়ে খাবার নিয়ে আসো প্রচুর ক্ষিদে পেয়েছে।
বলেই বাথরুমে চলে গেলো শাওন। আলো চুপ হয়ে আছে। কেমন মানুষ ইনি ছি।
পরেরদিন
শাওনের মাঃ বউ আমার ব্লাউজটা সেলায় হয়েছে।
আলো কিছু না বলে ব্লাউজ তার হাতে দিয়ে দিলো। বাবার বাড়ি থেকে নিজের সেলাই মেশিনটা নিয়ে এসেছিলো। কারন ওখানে দুটো সেলাই মেশিন একটা মায়ের জন্য আরেকটা নিজের জন্য।
কয়েকঘন্টা পর
শাওন বাসায় এসে তার মায়ের রুমে গেলো।
শাওনঃ মা কি হয়েছে। ফোন করে আসতে বললা কেনো?
শাওনের মাঃ তোর বউ কি করছে জানোস।
শাওনঃ আবার কি করেছে
রুপাঃ রহমান চাচার বউ এর কাছে তোমার বউ তার সেলাই মেশিন বিক্রি করে। বাবার বাড়ি গেছে।
শাওনঃ মানে কি কেনো। আর বিক্রি করার সময় তোরা কোথায় ছিলি।
শাওনের মাঃ আমার ব্লাউজটা দিয়াই নিজেই বেচে গেছে গা একবারও বলে যায় নাই। এখন তোর বউওরে তুই কিছু বলবে।আমার তোহ দাম নাই।
রুপাঃ হ্যা অনেক হয়েছে শাওন ভাই এবার কিছু করো। বিক্রি করছে যাতে আমাদের জামা কাপর বানায় দেওয়া না লাগে।
শাওন প্রচুর রেগে আলোকে কল দিচ্ছে। কিন্ত ফোন বন্ধ।
১ ঘন্টা পর আলো এসে হাজির। এখান থেকে বাবার বাড়ি যেতে ৪০ মিনিট লাগে।
আলো কিছু না বলে নিজের রূমে পা বাড়ায়।
চলবে
( গল্পটা বাস্তব থেকে কিছুটা নেওয়া হয়েছে। আর অনেকে বলছে মেয়েরা এইসব সহ্য করে। হ্যাগো আমি নিজের চোখে দেখেছি কতো কতো মেয়ে মুখ বুঝে সহ্য করে। কারো বাবা নেই আবার কারো বাবা থেকেও মুখ বুঝে সহ্য করছে। আর আমার লেখায় কোনো ভুল হলে আমার ভুল ধরিয়ে দিবেন ধন্যবাদ)
পর্ব_১ লিংক https://m.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/3075020049393393/