অজানা_অনুভূতি পর্বঃ২

1
8233

অজানা_অনুভূতি
পর্বঃ২
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

হায়াতের রুমে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে ইফাত। ওর সামনেই বসে আছে হায়াত ও আয়াত।

ইফাতঃ এবার মাফ করে দেও বোনু। আর করবো না।

হায়াতঃ আমার ফেসওয়াশ দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করেছিস আর এমনি এমনি মাফ করে দিবো।

আয়াতঃ আচ্ছা বাথরুম পরিষ্কার করার জন্য কি আমাদের ফেসওয়াশই পাইছো আর কিছু কি ছিলো না।

ইফাতঃ আরে পাইনি তাই তোহ ফেস ওয়াশ দিয়ে। এইবার তোহ যেতে দেও বোনুরা।

” কি হচ্ছে এখানে””(ইভান)

হায়াত আর আয়াত ইভানকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। ইফাত কান ছেড়ে দাড়ালো।

ইফাতঃ আসলে ভাইয়া তেমন কিছুই না। আমরা..

ইভানঃ তোকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি আমি। আর তুমি(হায়াতকে) দিন দিন অসভ্য বেয়াদব হয়ে যাচ্ছো কোনো কান্ডা জ্ঞান নেই নাকি বড়দের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানো না। নাকি এটাও ভুলে গিয়েছো। দিন দিন তোমার অভদ্রতামি বেড়েই চলছে। এসব ছেড়ে পড়াশোনায় মন দেও।(হালকা রেগে জোরে বলল)

হায়াত চুপচাপ হাত বাজ করে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। ইফাত ও আয়াত চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। ইশান ইভানের আওয়াজ শুনে রুমে আসলো।

ইশানঃ কি হয়েছে বড় ভাই এভাবে চিল্লাচ্ছো কেনো?

ইভানঃ তোরা একে(হায়াতকে উদ্দেশ্য করে) আদর করে করে মাথা উঠিয়ে ফেলছিস। আর তুমি কান খুলে শুনে রাখো কলেজ থেকে যদি কোনো রকম অভিযোগ আসে তাহলে আর একমূহুর্ত দেরি করবো না এই বাড়ি থেকে বিদায় করতে।

হায়াতের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। তারপরও ইভানের দিকে এক নজরও তাকালো না।

ইশানঃ আচ্ছা বড় ভাই বাদ দেও তোহ। চলো।

ইশান ইভানকে টেনে নিয়ে গেলো। ইফাত হায়াতের কাছে এসে মাথায় হাত ভুলিয়ে চলে গেলো।
আয়াত চুপচাপ বসে আছে। হায়াত দৌড়ে বাথরুম এ চলে গেলো।

আয়াতঃ ২ ঘন্টা শাওয়ার নিবে এখন। এটা তোহ নতুন না ডেইলি হচ্ছে। জানি না সব কিছু কবে ঠিক হবে।

দরজার বাহির থেকে হায়াতের দাদী সব দেখে শুনে নিজের রুমে গিয়ে বসলো।

আয়াতের মাঃ আম্মা আপনি কাদছেন কেনো। ওরা তোহ বাচ্চা মানুষ সব ঠিক হয়ে যাবে। দেখলেন না আমাদের হায়াত কতো ভালো একটা জবাবও দেয়নি ওর বড় ভাই ইভানকে।

হায়াতের দাদীঃ এটাই তোহ সমস্যা ছোট বউমা। ৪ বছর ধরে হায়াত আর ইভান একে অপরকে দেখতে পারছে না। হায়াত ওর বাবা মা মরার পর থেকে ইভানের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। ইভান হায়াতকে দোষারোপ করে বেরাচ্ছে। দিন দিন ওরা একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ছোট বউমা আমার বড় ছেলে আর বড় বউ তোহ চলে গেলো সংসারটাকে এলোমেলো করে গেলো।(কাদছে)

আয়াতের মাঃ হ্যা মা সব কেমন এলোমেলো হয়ে আছে। জানিন্স কবে ঠিক হবে ওদের ঝামেলা। আম্মা আর যাই বলুন ওরা সবাই একেঅপরকে ভালোবাসে। ওরা পাচ ভাইবোন কখনো একে অপরের ক্ষতি করবে না যতই মান অভিমান হোক না কেনো। ইভান আর হায়াত একে অপরেকে ভালোবাসে কিন্তু প্রকাশ করছে না। আপনি চিন্তা করবেন না এতে আপনার প্রেসার লো হয়ে যাবে।

রাতে খাবারের টেবিলে সবাই বসে খাবার খাচ্ছে হায়াত বাদে। আয়াত নিজের আর হায়াতের খাবার নিয়ে রুমে যাচ্ছিলো।

ইভানঃ আয়াত তুমি কোথায় যাচ্ছো। যার খাবার খাওয়ার সে নিজে আসবে তুমি এখানে বসেই খাবে।

আয়াতঃ স্যরি ভাইয়া যতদিন আমি আর হায়াত এই বাড়িতে আছি আমরা এক সাথেই খাবার খাবো। আর বার বার এক কথা বলতে ইচ্ছে করে না।

আয়াতের মাঃ আয়াত এটা কোন ধরনের ব্যবহার। নিজের বড় ভাই এর সাথে কেউ এমন ব্যবহার করে।

আয়াতঃ সেটাই তোহ নিজের ছোট বোনের সাথে কি কেউ এমন ব্যবহার করে। আমি খাবার নিয়ে যাচ্ছি। যদি তোমাদের আপত্তি থাকে তাহলে হায়াতের সাথে সাথে আমাকেও এই বাড়ি থেকে বিদায় করে দিও।

আয়াতের বাবাঃ আয়ায়াত (রেগে)

ইশানঃ ছোট আব্বু বাদ দেও তোহ। সবাই খাবার খাও।

ইফাতঃ হ্যা ছোট আব্বু। ওরা এখনো অনেক ছোট তাই ওদের কিছু বলো না।

ইভান খাবার রেখে চুপচাপ উঠে চলে গেলো। সবার চেহারা মলিন হয়ে গেলো।।

চৌধুরী বাড়িতে★★
খাবার টেবিলে বসে আছে আরহাম। খাবার নিয়ে নাড়াচাড়া করছে তা দেখে আরহামের মা বলল

আরহামের মাঃ কি হলো আরহাম খাবার খাচ্ছো না কেনো। খেতে ভালো লাগছে না বুঝি।

আরহামঃ না মানে আম্মু আসলে।

আরহামের বাবাঃ যা বলার সোজাসাপটা বলো। (খাবার রেখে আরহামের দিকে তাকালো)

আরহামঃ আসলে বাবা আমি কলেজে টিচিং করতে চাচ্ছি না।

আরজামের বাবাঃ কেনো এতে কি সমস্যা?

আরহামঃ সমস্যা নেই মানে বাবা বাহির থেকে পড়ে আসছি কি কলেজে টিচিং করার জন্য নাকি আমি অন্য কাজ করতে চাই।

আরহামের বাবাঃ তোমাদের দুই ভাইকে আমি যা বলেছি তাই করবা। আমার কথার অবাধ্য হবা না। সব কথা মেনে আসছি তোমাদের তাই আমি যা বলবো তাই শেষ কথা। চুপচাপ খাবার খাও।

আরহাম রেগে উঠে নিজের রুমে চলে গেলো। অর্পা ওর চাচাতো ভাই আরনাব চৌধুরীকে খোচা দিলো।

অর্পাঃ ভাইয়া আজকে তুমি কলেজে কেনো আসোনি।

আরনাবঃ ফ্রেন্ডসদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম তাই।

অর্পাঃ তুমি জানো আজকে আরহাম ভাইয়া আমাদের সাথে কি করেছে।

আরনাবঃ কি করেছে?

“এই তোমরা কি ফুসুরফুসুর করছো চুপচাপ খাবার খাও”

অর্পা/আরনাবঃ জিই দাদীমা।

অর্পাঃ পড়ে বলবোনে।

আরনাবঃ আচ্ছা।

★★
আরহামের বাবার রুমে
আরহামের মাঃ আর কতো ছেলেদের সাথে এমন করবে ওদের যা ইচ্ছে তাই করুক।

আরহামের বাবাঃ আমি যা করছি ওদের ভালোর জন্যই করছি। শুধুমাত্র তোমার কথায় ওদের বিদেশে পড়ার জন্য পাঠিয়ে অনেক বড় ভুল করেছি। ওরা কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক সব ভুলে গিয়ে বেপরোয়া হয়ে আছে। তাই ওদের কলেজে পাঠিয়েছি হয়তো সেখান থেকে ওদের জীবন্টা পালটে সুন্দর হয়ে যাবে।

আরহামের মাঃ যদি তোমার এই সিদ্ধান্তে কোনো বড় ধরনের ঝামেলা হয় আমার মন্টা কেমন যেনো খোচখোচ করছে আরহামের বাবা।

আরহামের বাবার চেহারায়ও চিন্তার ছাপ কিন্তু তা প্রকাশ করেননি।

পরেরদিন সকালে
হায়াতদের বাসায় প্রিসা আর আনিশা আসছে। হায়াত ও আয়াত রেডি হচ্ছে।

প্রিসাঃ হায়াত তোর সয়তান ভাইটা কোথায়।

হায়াতঃ আমার কত নাম্বার ভাইকে খুজতেছিস।

প্রিসাঃ দূর প্রতিদিন এক কথা বার বার বলা লাগে নাকি। জানিস না কার কথা বলছি।

আয়াতঃ আমাদেরও একই কথা প্রতিদিন জেনেও বারবার জিজ্ঞেস করিস কেনো। ডাইনি ইশান ভাইয়া তার রুমে।

প্রিসাঃ ওকে।(বলে দিলো এক দৌড়)

আনিশাঃ আজকে আবার বকা খাবে। প্রতিদিন আগে আগে আসে যাতে ইশু ভাইয়াকে জালাতে পারে।

আয়াতঃ বেচারি এতো চেষ্টা করছে ভাইকে পটাতে কিন্তু ভাইয়াও নাছরবান্দা প্রেম করবে না মানে করবেই না।

হায়াতঃ প্রেম করার দরকার কি আমার ভাইকে ডিরেক্ট বিয়ে করাবো। (হালকা হেসে)

আনিশাঃ আচ্ছা আমি পানি খেয়ে আসছি।

আনিশা রুম থেকে বের হতে না হতেই কেউ এক টান দিয়ে সাইডে নিয়ে গেল। আনিশা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।

আনিশাঃ কি ব্যাপার ইফাত ভাইয়া আমাকে এইভাবে প্রতিদিন টেনে সাইডে নিয়ে আসেন কেনো। মানুষ দেখলে কি ভাববে হ্যা নিজেকে কি মনে করেন ( রেগে)

ইফাতঃ আমি তোমার কোন জনমের ভাই লাগি। খবরদার ভাইয়া বলবা না একদম…

আনিশাঃ একদম কি করবেন।

ইফাতঃ কিডন্যাপ করে ফেলবো।

আনিশাঃ ইশ আসছে আমার কিডন্যাপার। নিজেকে আয়নায় দেখছেন কখনো। ফু দিলে উড়ে যাবেন।

ইফাতঃ আয়না আমি প্রতিদিনই দেখি। আর ফু দিলে উড়ে যাবো তাই না দেও ফু দেও না যদি না উড়ি তাহলে তোমাকে কাচা টমেটোর ভর্তা খাইয়ে দিবো। (রেগে)

আনিশাঃ এইরে রেগে গেলো নাকি এখন কি হবে(মনে মনে) হাহাহা জিই আমি তোহ মজা করছিলাম আচ্ছা আমি আসি

বলে দৌড় দিতে নেয় ওমনি ইফাত হাত ধরে ফেলে।
আনিশাঃ হাত ছাড়ুন কেউ দেখে ফেলবে তোহ। এমন কেনো করছেন ছেড়েদিন আমার হাত।( আনিশা ভয়ে প্রচুর ঘামছে)

ইফাত নিজের মুখ আনিশার দিকে এগুচ্ছে তা দেখে আনিশা চোখ বন্ধ করে ফেলে।
ইফাত তা দেখে হেসে আনিশার কানের কাছে গিয়ে বলল
ইফাতঃ তোমার এই ভয় ভরা মায়াবী চেহারা দেখে আবারো প্রেমে পড়ে গেলাম।

আনিশা ইফাতের কথায় চোখ খুলে তাকালো। ইফাতের নেশাভরা চোখের দিকে তাকালো কেমন যেনো নেশা নেশা লাগছে।
আনিশাঃ এই চোখের দিকে তাকালে আমার এক অন্যরকম অনুভূতি হয় এক অজানা_অনুভূতি। (মনে মনে)
ইফাত আনিশার হাত ছেড়ে হালকা দূরে দাঁড়িয়ে আছে।আনিশার বুক ধুকপুক করছে। ইফাতকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে এক দৌড়ে হায়াতের রুমে এসে পড়লো।ইফাত আনিশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

★★★
ইশানঃ এই মেয়ে তুমি এখানে কি করছো।

প্রিসাঃ আমি তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি।

ইশানঃ কোনো কমন সেন্স নেই এইভাবে একটা ছেলের রুমে ডুকে গিয়েছো।

প্রিসাঃ আরে এটা আমারও ঘর ভবিষ্যতে তোহ এই রুমেই থাকবো তাই না।

ইশানঃ দেখো প্রিসা এক কথা বার বার বলতে পারবো না। তুমি কিন্তু অনেক বাড়াবাড়ি করছো।

প্রিসাঃ আমি বাড়াবাড়ি না কাজ করছি। রুমের এই হাল করে রেখেছেন। ছি ছি ছি এমন উল্টো পালটা করে রেখেছেন কেন আমাকে কি কাজের বুয়া মনে হয় যে আপনার কাজ করে বেরাবো (রেগে)

ইশানঃ ইস ঢং দেখো না এমন ভাব দেখাচ্ছে মনে হয় আমার বউ। এই মেয়েকে কিছু বলতে পারিনা কেনো। ওকে দেখলেই আমার মনে কেমন যেনো অনুভূতি হয় এক অজানা_অনুভূতি। (মনে মনে)

প্রিসা ইশানের রুমে এসে দেখে ইশান বাথরুমে আর পুরো বিছানা এলোমেলো। প্রিসা তা ঠিক করে দিচ্ছিলো। রোজ রোজ এসে এমন করে প্রিসা ইশানও এইসবে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে কারন যতকিছুই বলুক না কেনো এই মেয়ে কিছুতেই শুনবে না।

প্রিসা ইশানের ঘর গুছিয়ে একটা শার্ট বাছাই করে দিলো যা ও রোজ করে।

প্রিসাঃ আজকে এই নীল রঙ এর শার্টটা পড়বেন আর খবরদার অন্য শার্ট যদি পড়েন তাহলে তোহ জানেনই কি করব।

ইশান মাথা ঝাকালো। মানে সে জানে। কারন এর সাথে তর্ক করে লাভ নেই। একবার প্রিসার পছন্দ করা শার্ট না পড়ায় ইশানের গায়ে পানি ঢেলে দিয়েছিলো।
বাসার সবাই জানে প্রিসা ইশানকে পছন্দ করে। তাই ওদের ব্যাপারে কেউ কিছু বলে না আর বেচারা ইশান প্রিসার অত্যাচার সহ্য করছে।

★★★
দেয়ালের উপর দিয়ে হাটছে ৪ বান্ধুবি হায়াত, আয়াত, আনিশা,প্রিসা।

আয়াতঃ হায়াত আমি আর যাবো না আমার ভয় করছে।

হায়াতঃ এর চেয়ে কি ভালো আইডিয়া তোর আছে নাকি। যদি থাকে তাহলে তুই ওইদিক দিয়েই যা।

আনিশাঃ আরে কথা বলিস না পড়ে যাবো তোহ।

৪ জন মেয়েকে দেয়ালের উপর দিয়ে হেটে যেতে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে একজন।

” এই মেয়েরা তোমরা এইভাবে দেয়ালের উপর দিয়ে কেনো হাটছো” একটি ছেলে

হায়াতঃ আরে আগে গান বন্ধ করেন কিছু বুঝি না( কানে হাত দিয়ে জোড়ে বলল)

গান বন্ধ হলো।
হায়াতঃ এই মিয়া আপনারা যে এইভাবে নাচানাচি রঙ্গারঙ্গি করছেন তাতে তোহ রাস্তা বন্ধ করে রাখছেন। আমরা কলেজে যাবো কিভাবে তাই দেয়ালের উপর দিয়ে যাচ্ছি। আজ যদি কলেজে যেতে দেরি হয় আর স্যার যদি বকা দেয় না আপনাদের আমি ছাড়বো না। ভুলেও আপনাদের দলকে ভোট দিবো না হু কিছুদিন পর আমারও ন্যাশনাল আইডি কার্ড হবে। বাই (এই বলে আবার হাটা দিলো)

এই তোহ কলেজে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিয়েছিলো হায়াতরা মাঝ পথে থেমে যায়।কারন রাস্তায় অনেক মানুষ রঙ দিয়ে মাখামাখি করছে গান বাজাচ্ছে। পুরো রাস্তা ব্লক সামনে যাওয়ার কোনো পথ নেই। কলেজে যাওয়ার জন্য এই একটাই রাস্তা।

হায়াতঃ এই এরা এভাবে পাগলের মতো লাফাচ্ছে কেন। কার বিয়ে লেগেছে।

আনিশাঃ আরে বিয়ে না ভোট জিতেছে তাই এতো খুশি।

আয়াতঃ কে ভোট জিতেছে যে এতো খুশি।

প্রিসাঃ কে আবার নেতার ছেলে ভোটে দাঁড়িয়েছিলো সে জিতে গেছে।

হায়াতঃ যেই জিতুক আমাদের কি। চলতোহ।

আয়াতঃ কোথায় চল যাবি কিভাবে। এই ভিড়ের মাঝে গেলে গোছল হয়ে বের হতে হবে দেখিস না কিভাবে রঙ নিয়ে মাখামাখি করছে।

আনিশাঃএখন কি হবে আরহাম স্যার তোহ ভাববে আমরা পড়া কমপ্লিট করিনি তাই কলেজে যাইনি।(মন খারাপ করে)

হায়াতঃ আরে আমি আছি কোন দিনের জন্য। এক মিনিট দাড়া আমি ৫ মিনিট চিন্তা করি।(গালে হাত দিয়ে ভাবছে)

হায়াতঃ বেস্টুরা ম্যাংগোবার খাবি।(দুষ্টু হাসি দিয়ে)

হায়াতের হাসি দেখে ওরা বুঝে গেলো হায়াত কোনো আইডিয়া পেয়েছে।
আয়াতঃ শুরু কর কিভাবে যাবি।

হায়াত পাশে ইটের উপর পা রেখে দেয়ালে উঠে পরলো আর হায়াতের পিছু পিছু বাকিরাও উঠলো হায়াত ম্যাংগোবার খেতে খেতে আরামে হাটছে। আর বাকিরা ওর পিছু পিছুই।

★★★
হায়াতরা দেয়াল থেকে লাফ দিয়ে নেমে হাটা দিলো। কেউ একজন হায়াতের যাওয়ার পথে চেয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে। এই প্রথম কাউকে দেখে সে মুগ্ধ হলো।

কলেজে ঠিক সময়ে পৌছে ক্লাস করে টিফিন টাইমে মাঠের মাঝে বসে আছে হায়াত বসে বসে ম্যাংগোবার খাচ্ছে। অর্পারা সাইডেই বসে আড্ডা দিচ্ছে।

হঠাৎ করে আরহামকে এদিকে আসতে দেখে অর্পারা দিলো এক দৌড় হায়াতের সেই দিকে খেয়াল নেই সে নিজের মতো ম্যাংগোবার খাচ্ছে।

আরহাম হায়াতের কাছে এসে হালকা কাশি দিলো। হায়াত আরহামের দিকে তাকিয়ে ম্যাংগোবার খাওয়ায় মন দিলো। তা দেখে আরহাম আবার কাশি দিলো।

হায়াতঃ ডাক্তার দেখান।

আরহামঃ মানে?

হায়াতঃ বলছি ডাক্তার দেখান। নাক কান গলার ডাক্তার এর কাছে গিয়ে কাশি দিন ডাক্তারবাবু আপনাকে ঔষধ দিয়ে দিবে। আমি কোনো ডাক্তারবাবু না যে এখানে এসে কাশি দিচ্ছেন ( এই বলে আবার নিজের ম্যাংগোবার খাচ্ছে)

আরহামঃ আমি যে তোমাদের স্যার সেটা কি ভুলে গিয়েছো। এমন ভাব করছো জেনো আমাকে চিনো না আর আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলো যে আমি তোমার টিচার না তুমি আমার টিচার। আর এভাবে রোদের মধ্যে মাঠে বসে ম্যাংগোবার খাচ্ছো কেনো।দাড়াও।(হালকে রেগে)

হায়াতঃ এই আর কিছু পারো আর না পারো রাগ দেখাইতে পারো তাইনা। আমি যে স্টুডেন্ট সেটা কি তুই ভুলে গিয়েছিস। নিজেকে যে কি মনে করে। আমি কি তোর কাছে গিয়েছি নাকি তুই আমার কাছে এসেছিস। আর হ্যা মাঠে বসেই তোহ ম্যাংগোবার খাচ্ছি বাথরুমে বসে তোহ আর খাচ্ছি না। বেটা খচ্চর দুইদিন হলো এসেছে আর আমার পেছনে হাত পা নাক কান গলা ধুয়ে পড়ে আছে। তোরে তোহ তেলাপোকার বাজি খাওয়াতে মন চাইছে। হিংসুটে নিজে তোহ ম্যাংগোবার খেতে পারে না তাই আমাকে দেখে হিংসা হচ্ছে( এমন হাজারো বকা দিয়ে যাচ্ছি মনে মনে কারন সয়তান স্যারবাবুকে কিছু বলতে পারমু না)

আরহামঃ ওহ হ্যালো মিস রেডিও কোথায় হারিয়ে গেলেন।
হায়াতের মুখের উপর তুরি বাজিয়ে।

হায়াতঃ জিই স্যার। ইয়ে মানে ম্যাংগোবার খাবেন। (একটা ম্যাংগোবার এগিয়ে দিয়ে)

আরহাম ম্যাংগোবারটা নিয়ে কিছু না বলে চলে গেলো। হায়াত আরহামের এমন ব্যবহারে অবাক হলো।

হায়াতঃ এমা কেনো এসেছিলো তা না বলেই চলে গেলো ঢং দেখলে বাচি না হুহ। আমার ম্যাংগোবার নিয়ে গিয়েছে হুহহ।

★★
আয়াত লাইব্রেরিতে গিয়ে এক এক করে অনেক গুলো বই নিচ্ছে।

আয়াতঃ আজ সব বই বাসায় নিয়ে যাবো। ভাগ্য ভালো নাস্তা মানে নাতাশা ডাইনিটা কলেজে আসেনি নয়তো আমার পছন্দ করা বই ছিনিয়ে নিয়ে যেতো আর হায়াত ম্যাডাম তা নিয়ে বিশাল কি যেনো বলতো হ্যা গিরিংগি লেগে যেতো। বুঝি না এই মেয়েটা এমন আজব কথা কোথায় পায়। নাতাশাকে৷ আস্তা ডাকে ঝামেলাকে গিরিংগি বলে। যাক আমি সব বই পেয়ে গিয়েছি। (আয়াত অনেক গুলো বই নিলো যার ফলে ব্যালেন্স করতে না পেড়ে উপুড় হয়ে পরলো) ওমাগো (বলে চিৎকার দিলো)

আয়াত আস্তে করে উঠে বসলো।
আয়াতঃ এই আমার চশমা কই গেলো কিছুই তোহ দেখি না। (আয়াত হাত দিয়ে চশমা খোজায় ব্যস্ত)

এরমাঝে কেউ এসেছে যা আয়াত ট্যার পেলো কিছু বলার আগেই আয়াতের চোখে চশমা পড়িয়ে দিলো।
আয়াত চশমা ঠিক করে সামনের মানুষটার দিকে তাকালো। আশেপাশে তেমন কেউ নেই সবাই টিফিন খাচ্ছে। আবার সামনের লোকটার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বলল,

আয়াতঃ আপনি আর…..

চলবে

(আচ্ছা গল্পটা কি আপনাদের কাছে ভালো লাগছে না। আপনাদের রেস্পন্স এ গল্পটা এগিয়ে নিবো নয়তো খুব যলদি শেষ করে দিবো। আর হ্যা কেমন হলো জানাবেন গঠনমুলক মন্তব্য করবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি হায়াত নিয়ে এসেছি নতুন গল্প নিয়ে। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। হ্যাপি রিডিং।)

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here