অজানা_অনুভূতি পর্বঃ৬

0
5670

অজানা_অনুভূতি
পর্বঃ৬
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

আয়াত দাঁড়িয়ে আছে একটা রেস্তোরাঁর সামনে। ভাবছে ভেতরে যাবে কি না। রেস্তোরাঁর নাম শুনেই বুঝে গিয়েছে যে এটা চৌধুরীদের রেস্তোরাঁ।

এইতোহ ৩০ মিনিট আগে আরনাবের কল দেওয়ার পর এক প্রকার দৌড়ে এসেছে আয়াত। কল তোহ দেয়নি দিয়েছে হুমকি।

৩০ মিনিট আগে
আয়াতের ফোন ভাজচ্ছে। আয়াত ধরবে কি ধরবে না দোটানায় আছে। এইসব ভাবতে ভাবতে কোথায় থেকে হায়াত আসলো আর ফোনটা ছিনিয়ে নিয়ে কল রিসিভ করলো

হায়াতঃ হ্যালো স্যার কেমন আছেন। আমি তোহ একদম টেস্টি আছি। তোহ কি মনে করে কল দিয়েছেন হুম।

আরনাবঃ ওহ মিষ্টি তুমি দেও তোমার বোনকে কল দেও।

হায়াতঃ আমার বোনকে দিয়ে কি করবেন।

আরনাবঃ দেখো হায়াত..

হায়াতঃ আরে স্যার দেখাদেখি পড়ে হবে তোহ আপনি আপনার যা কাজ তাতে মন দিন।

আয়াত ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে তা দেখে হায়াত দাত বের করে হেসে দিলো।?

হায়াতঃশুনেন আরনাব স্যার আমার কাছে ম্যাজিক আছে তাই আমি সব জানি তোহ এতো না ভেবে আয়াতের সাথে কথা বলুন আমি গেলাম বাই।

হায়াত আয়াতকে ফোন দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।

আয়াতঃ নিশ্চুপ

আরনাবঃ হ্যালো আয়াত কয়টা বাজে তোমাকে কি বলেছি মনে নেই যলদি চলে আসো নয়তো আমি এসে তুলে নিয়ে কিডন্যাপ করে ফেলবো বলে দিলাম। ২৫ মিনিটের মধ্যে তুমি চৌধুরী রেস্তোরাঁয় চলে আসবা।

ফোন কেটে দিলো। আয়াত এক প্রকার দৌড় বোরকা পড়ে দিলো দৌড়।

★★
আয়াতকে বাহিরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে একজন স্টাফ এসে ভেতরে যেতে বলল। আয়াত সাহস নিয়ে ভেতরে গেলো।

আয়াতঃ এমা পুরো রেস্তোরাঁ এমন ফাকা কেনো। সত্যি সত্যি কি আমাকে কিডন্যাপ করবে নাকি (ভাবছে আয়াত)
হঠাৎ কাদে কারো স্পর্শ পেয়ে ভয় পেয়ে যায় আয়াত মুহূর্তেই দূরে সরে পেছন ফিরে দেখে আরনাব দাঁড়িয়ে আছে।
তা দেখে আয়াতের কলিজা শুকিয়ে গেলো। আরনাব যদি ওকে মেরে এখানে কবর দিয়ে দেয় তখন। আরনাব স্যার এখানে কেনো আসতে বলল ভাবছে আয়াত।

আরনাবঃ বসো আয়াত।

আয়াতঃ জিইই।

আরনাবঃ বসো।
আয়াত ধপ করে পাশের চেয়ারে বসে পড়লো তা দেখে আরনাব মুচকি হাসলো। আয়াত ভয়ে একাকার।

১০মিনিট পর
১০ মিনিট ধরে আয়াত ৩ প্লেট ফুসকা খেয়ে ফেলেছে।
আয়াতঃ (আজ মনে হয় আমাকে ফুসকা খাইয়ে মেরেই ফেলবে সয়তান)স্যার আমায় কি কিছু বলবেন। সেই ৫ মিনিট ধরে বসে আছি। কিছু তোহ বলছেন না

আরনাবঃ তুমি তোমার ফুসকা শেষ করো। খুব তোহ ফুসকা খাওয়ার সখ। আর কি জেনো বলেছিলে ওই ছেলে কে তা যেনে আমি কি করবো তাই না।

আয়াতঃ ইয়ে মানে স্যার আসলে।

আরনাবঃ স্যার স্যার করবে না। আরনাব বলো।

আয়াত আরনাবের এমন ব্যবহার বিষম খেলো। আরনাব তারাতারি পানি এগিয়ে দিলো। একদম অস্থির হয়ে আছে আরনাব। মনে হচ্ছে কষ্ট আয়াতের না আরনাবের হচ্ছে।

বেশ কিছুক্ষণ পর জেনি রেস্তোরাঁতে ডুকলো। আরনাব ও আয়াতকে পাশাপাশি দেখে প্রচুর রাগ হলো কিন্তু প্রকাশ করলো না। আয়াত ও আরনাব দাঁড়িয়ে গেলো।

জেনিঃ আরু বেবি (বলেই জড়িয়ে ধরতে নেয়
কিন্তু আরনাব মাঝে আয়াতকে টেনে নিয়ে আসে তাতে জেনি আয়তকে জড়িয়ে ধরে)
জেনি রেগে আয়াতকে ছেড়ে দেয়।

আরনাবঃআহা ননদ ভাবির কতো মিল। বাহ জেনি বোন তোর কি ভাবিকে অনেক পছন্দ হয়েছে নাকি.. (হেসে বলল)

আরনাবের কথায় জেনি ও আয়তা দুজনেই অবাক হলো।

জেনিঃ মানে।

আরনাব আয়াতের বাহু ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। আয়াত অবাক হয়ে চেয়ে আছে।

আরনাবঃ মানে তোকে একজনের সাথে দেখা করাবো। আয়াত এ হলো তোমার আরেকটা ননদ। আমার ধর্মের বোন। আর জেনি এ হলো আমার হবু বউ আয়াত আহমেদ।ওকে আমি ভালোবাসি। তোর হবু ভাবি হয়( হেসে রাগী দৃষ্টিতে জেনির দিকে তাকালো)

আয়াত অবাকের শেষ পর্যায় চলে গেলো। বলে কি আমি নাকি হবু বউ। আয়াত একবার জেনির দিকে আরেকবার আরনাবের দিকে তাকাচ্ছে। জেনি কিছু না বলে আয়াতের দিকে রাগী দৃষ্টিতে চেয়ে দৌড়ে চলে গেলো।

আয়াত জেনির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আরনাবকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিলো।

আয়াতঃ কি ভাবেন নিজেকে স্যার হয়েছেন বলে কি কিছুই বলবো না। বুঝলাম জেনির সাথে আপনার ঝগড়া হয়েছে। জেনিকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এই ড্রামা করলেন। আচ্ছা এই ড্রামা করার জন্য কি আর কাউকে পেলেন না আমার সাথেই করতে হলো।

এই বলে চলে যাচ্ছিলো। আরনাব আয়াতের হাত ধরে ফেলে আয়াত ফেছন ফিরে না।
আরনবাঃ তুমি কি শুনতে পাওনি আমি জেনিকে কি বলেছি।

আয়াতঃ হ্যা শুনেছি বলেছেন আমি আপনার হবু বউ আমাকে আপনি ভালোবাসেন। বলে আবার হাটা দিয়ে কয়েককদম যেয়ে থেমে গেলো। পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আরনাব হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে। আয়াত নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আরনাব তা দেখে হাসলো। আয়াত আস্তে আস্তে আরনাবের সামনে এসে দাড়ালো।

আয়াতঃ আমি আপনার হবু বউ। আপনি আমায় ভালোবাসেন এটা কি সত্যি বলেছেন(অবাক হয়ে)

আরনাবঃ আমি তোমায় ভালোবাসি আয়াত আহমেদ।

আয়াত নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছে না। কি বলছে আরনাব সে আমায় ভালোবাসে।

আয়াতঃ স্যা..র আপনি আমায় ভালোবাসেন?

আরনাব বলা শুরু করলো

আরনাবঃ যেদিন তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা হয় ওইদিন আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম একটি মেয়ের দিকে যে কিনা অনেক গুলো বই নিয়ে নাচতে নাচতে ধপাস করে পড়ে যায়। তখনি দৌড়ে তার কাছে যাই আর দেখি সে তার চশমা খুজছে আর নিজের মতোই বকবক করছে। তাকে চশমা পড়িয়ে তার সাথে কথা বললাম। এরপর প্রায়ই তার সাথে ইচ্ছে করে তর্ক করা আরকি। সে পারেও বটে হাহাহা। তার প্রতিটি বলা শব্দ আমায় পাগল করে ছিলো। আমি তাকে সব সময় ফলো করতাম। তার ফুসকা নিয়ে মারামারি সবই আমার মনে গেথে গিয়েছিলো। আর সবচেয়ে সুন্দর লাগতো যখন তারা ৫ জন এক সাথে থাকতো। টিফিন টাইমে সবাই ক্যানটিনে থাকে বা ক্লাসে থাকে তারা সবাই মাঠের মাঝে বসে থাকে। আমি সব সময় তার আশেপাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তাকে বোঝার চেষ্টা করেছি। তাকে না দেখে থাকতে পারতাম না তাই তোহ রাত বিরাতে তাকে কল দিয়ে এটা সেটার বাহানা দিয়ে কথা বলতাম। তার জন্য আমার মনে এক অজানা_অনুভূতি জন্ম নেয়। সেই অনুভূতিটা কালকে উপলব্ধি করলাম যখন তার পাশে অন্য কাউকে দেখলাম। তাই অবশেষে একটা কথাই বলব ভালোবাসি তোমায় আয়াত আহমেদ। অনেক অনেক ভালোবাসি। (আরনাব পকেট থেকে রিং বের করে হাটু ঘিরে বসলো) হবে কি আমার রাজ্যের রানী। আমি তোমাকে আমার অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে চাই। আমি তোমাকে আমার পাশে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত চাই। উইল ইউ মেরি মি.

আয়াত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সে কি সপ্ন দেখছে নাকি। আয়াত আর কিছু না বলে হাত বাড়িয়ে দিলো।

আয়াতঃ হ্যা আমিও আপনাকে ভালোবাসি স্যার।

আরনাব ঃস্যার (রেগে)
আয়াত হেসে দিলো। আরনাব রিং পড়িয়ে দিলো। ওদের উপর গোলাপের পাপড়ি পড়ছে। দুজন দুজনের দিকে চেয়ে আছে।

তালির শব্দে ধ্যান ভাঙ্গলো। ওরা তাকিয়ে দেখলো হায়াত,আনিশা,অর্পা,আরহাম,ইভান,ইফাত,ইশান আসছে। হায়াত তালি দিচ্ছে।

আয়াত অবাক হয়ে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। হায়াত এসেই আয়াতকে জড়িয়ে ধরেছে। আরনাব অর্পার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো অর্পা হেসে দিলো মানে অর্পা সবাইকে বলে দিয়েছে আরনাবের প্ল্যান।

হায়াতঃ অবশেষে প্রেম করার সুযোগ হলো আপনার তাই না(কানে কানে বলল)
আয়াত হেসে দিলো।
আয়াত ওর ভাইদের দিকে তাকিয়ে আছে।

ইশানঃ এইভাবে তাকিয়ে লাভ নেই প্রেমে যখন পড়েছিস। এখন আমাদের ট্রিট দে।

প্রিসাঃ ইশ আসছে ট্রিট নিতে। এই তুমি কেমন ভাই বলো তোহ বোন প্রেমে পড়েছে সেই জন্য বোনের কাছ থেকে ট্রিট নিচ্ছো। ছি ছি ছি।

ইশানঃ ঢং করে লাভ নেই সারা রাস্তা আমাকে বকতে বকতে নিয়ে আসছো যে আয়াতকে যেনো কিছু না বলি আর এখন পল্টি খাচ্ছো।বাহ বাহ বাহ

প্রিসা ভেংচে কেটে আয়াতের কাছে গেলো।

ইফাতঃ হ্যা বাসায় গিয়ে আমার জন্য তোর হাতের বিরিয়ানির রান্না করবি অনেক দিন ধরে খাইনা।

আনিশাঃ বিরিয়ানি তুমি একা খাবে কেনো।আমাদের জন্য রান্না করবি আজকে তোদের বাসায় থাকবো।

ইফাতঃ কেনো তোমার কি বাসা নাই নাকি।

আনিশাঃ না নাই ওইটা আমারই বাড়ি দুইদিন পর তোহ ওই বাড়িতেই থাকতে হবে।(বলে চুপ হয়ে গেলো মুখ ফসকে বলে ফেলেছে)

ইফাত হেসে দিলো।ইভান চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আয়াত ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে।

অর্পাঃ একটা জিনিস দেখলাম আমার লাইফে যে বোন প্রেম করছে আর তার তিন ভাই সেটা জানে। আর তুমি কি এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবা ইভান তোমার বোনকে নতুন প্রেমে পড়ার শুভেচ্ছা জানাও।

ইভানঃ প্রেমে পড়ার শুভেচ্ছা কি জানাবো। আমি নিজেই একটা প্যারা নিয়ে আছি।সারাদিন খালি বকবক করে। এখনে তোহ এক প্রকার আমাকে টেনে নিয়ে আসছে। যাইহোক আয়াত বনু এই তোর ভাবি তোকে কিছু বলতে আমাকে মানা করেছে।সারা রাস্তা সে আমারে ভাষন দিয়েছে। (অর্পা ইভানকে একটা গুতা দিলো) তাই নতুন প্রেমে পড়ার শুভেচ্ছে।

সবাই হেসে দিলো। সবাই টেবিলে বসলো। হায়াতের পাশে আরহাম বসেছে।সবাই জোড়া জোড়া।
হায়াত গালে হাত দিয়ে গাল ফুলিয়ে বসে আছে।
আর সবার দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই যার যার কাপল নিয়ে ব্যস্ত। আরহাম ফোন টিপছে।

হায়াতঃঅফফো মনে হচ্ছে কোনো কাপল সোতে আসছি।কাপলই কাপল আমি যে এইখানে একটা সিংগেল মানুষ আছি।তা কি তোমাদের চোখে পড়ে না। থাক পড়া লাগবে না আমি আইসক্রিম খাচ্ছি হুহহ। মিংগেলদের মাঝে আমি সিংগেল এক অবলা নারী হুহহ।

আরহাম হায়াতের কথা শুনে ফোন ছেড়ে ওর দিকে তাকিয়ে হেসে কুটিকুটি। সবাই আরহামের দিকে চেয়ে আছে। অর্পা আর ইভান একে অপরের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসলো।

হায়াত অনেক গুলো আইসক্রিম অর্ডার দিয়ে খাচ্ছে।

আরনাবঃ আমার লাইফে প্রথম দেখলাম বাংলাদেশে যে তিন ভাই ও তাদের প্রিয়তমা। আমি আমার প্রিয়তমা। আমার বড় ভাই। আর একজন সিংগেল অবলা নারী এক সাথে বসে আছি।

সবাই হেসে দিলো। আর ওইদিকে হায়াত কারো কথা কান না দিয়ে আইসক্রিম খাচ্ছে

হায়াতঃ আপনাদের আইসক্রিম তোহ অনেক টেস্টি।(আরহামকে উদ্দেশ্য করে)

আরহামঃ তা তোহ হবেই করলা যখন মিস্টি জাতীয় কিছু খায় তখন তা টেস্টি হয়ে যায়।

হায়াতঃ আচ্ছা করলা আর মিস্টি এক সাথে মেশালে তা টেস্টি হয়ে যায়। তাহলে আপনি করলা আপনার বউ মিস্টি দুইজন মিলে হয়ে যাবেন টেস্টি। আহা কতো সুন্দর কবিতা। নিজেকে কবি কবি ভাব আসছে।

আরহাম আবার হেসে দিলো। সবাই খাচ্ছে কথা বলছে। পরিবেশটা খুবই সুন্দর। হঠাৎ সুন্দর পরিবেশে। তুফান এসে হাজির মানে জাটকা থুক্কু জেসিকা এসে হাজির। জেসিকা এসেই আরনাবের কলার চেপে ধরলো। আর আয়াত তা ছোটানোর চেষ্টা করছে আয়াতকে ধাক্কা দেয় আর আয়াত হায়াতের উপর পড়ে।

জেসিকাঃ তোর সাহস কি করে হয় এমনটা করার। আরনাব চৌধুরী।

আরহামঃ জেসিকা তুমি কি করছো এটা।

জেসিকাঃ দেখতে পাচ্ছো না কি করছি। তোমার ভাই আমার বোনকে কষ্ট দিয়েছে। আর সে এই নষ্টা মেয়ের সাথে বসে বসে ফুসকা খাচ্ছে।

আরনাবঃ জেসিকা নিজের মুখে লাগাম দেও।

উপস্থিত সবাই রেগে গিয়েছে। আয়াত হায়াতকে ধরে রেখেছে।যাতে হায়াত কিছু না করে।

আরহামঃ জেসিকা আরনাবের কলার ছাড়ো বলছি( জোড়ে)

জেসিকাঃ বাহ এখন আমায় জোর গলায় কথা শোনাচ্ছো তাই না। তোহ হঠাৎ এতো পরিবর্তন হলো কিভাবে। আগে তোহ এমন ছিলে না।

আরহামঃ আগে তুমিও এমন ছিলে না।জেসিকা এমন করছো কেনো

জেসিকাঃ দেখো আরহাম তোমার ভাই একটা ফালতু মেয়ের জন্য আমার বোনকে কষ্ট দিয়েছে। এই মেয়েই সেই মেয়ে না। তোকে তোহ আমি ছাড়বো না।

হায়াত টেনে আয়াতকে নিজে পাশে এনে সামনে দাড়ালো। আরহাম জেসিকাকে ধরে রেখেছি।হায়াত টেবিল থেকে আইসক্রিম এর বক্স হাতে নিয়ে সোজা জেসিকার মাথায় ঢেলে দিলো। সবাই স্বাভাবিক আছে।আরহাম অবাক হয়ে হালকা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আরহাম কিছু বলবে হায়াত ওইদিকে ভ্রুক্ষেপহী না করে বলা শুরু করলো।
হায়াতঃ আইসক্রিম দিয়ে মাথা ঠান্ডা করুন মিস জেসিকা। এতো তেজ ভালো নয়।এতে স্কিনের ক্ষতি হতে পারে। আর হ্যা কাকে নষ্টা মেয়ে ফালতু মেয়ে বলছেন। আমি চেনেন ওকে(আয়াতকে) কখনো কথা বলেছেন নাকি ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন ওকে।না চিনে আন্দাজে শুধু বলেই যাচ্ছেন। আপনার যেমন আপনার বোনের কষ্ট সহ্য হচ্ছে না তেমনি আমার বোনকে বলা আপনার প্রতিটা শব্দ সহ্য হচ্ছে না।(হালকা রেগে)

জেসিকাঃ চুপ নিজের এই ভাষন অন্য কাউকে শুনিয়ে দিস আমাকে না। আমি তোদের মতো মেয়েদের ভালো করেই চিনি যতসব লোভি। আর তুমি ছাড়ো আমায়(নিজেকে আরহামের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিলো) তোমার ভাইকে এর জন্য খুব পস্তাতে হবে। এই থার্ড ক্লাস মেয়েদেরকেও আমি দেখে নিবো। আর তুমি আমার কাছ থেকে দূরে থাকো আরহাম।

আরহামঃ জেসিকা তুমি কি বলছো।

জেসিকাঃ কি বলছি। এইরকম একটা লো ক্লাস মেয়ে আমার উপর আইসক্রিম ঢেলেছে আর তুমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছো।

ইভানঃ দেখুন আপনি কিন্তু খুব বাড়াবাড়ি করছেন।আমার বোনদের লো ক্লাস বলার অধিকার কারো নেই।

ইশানঃ হ্যা কখন থেকে আপনার কথা শুনেই যাচ্ছি।

ইফাতঃ যা নয় তাই বলে যাচ্ছেন।

আরহাম দোটানায় পড়ে গেল কি করবে বুঝতে পারছে না। কি সঠিক আর কি বেঠিক তা ঠিক করতে পারছে না।

আরনাবঃ মিস জেসিকা বুঝতেছিনা আপনি কেনো তামাশা করছেন তাই আপনাকে জানিয়ে দেই। প্রথমত আমি আরনাব আপনাত বোনকে বোনের চোখেই দেখতাম। আসলে দেখতাম না এখনো দেখি সামনেও দেখবো। আর হ্যা আপনার বোনকে কষ্ট দেওয়ার কিছু হয়নি বরং আপনার বোন আমার আয়াতকে কষ্ট দিয়েছে কালকে রাতে সে আমার ফোন নিজের কাছে রেখে আয়াতকে যা নয় তাই বলেছে।আমার ফোনে অটো রেকর্ড হয়। রেকর্ডিং শুনেছি আমি চাইলে আপনিও শুনতে পারেন। আর হ্যা ফালতু মেয়ে নষ্ট মেয়ে কাকে বলছেন। সি ইজ মাই উড বি উয়াইফ তাই রেস্পেক্ট দিয়ে কথা বলুন নয়তো আমাদের থেক দূরে থাকুন। চলো আয়াত।

আরনাব আয়াতের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো। ইশান, ইফাত, ইভানকে নিয়ে গেলো। আনিশা, প্রিসা,অর্পা দাঁড়িয়ে আছে।হায়াত হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।

আরহামঃ জেসিকা চলো বাসায়।(হাত ধরে)

জেসিকাঃ আমি বাসায় একা যেতে পারি তুমি বরং তোমার স্টুডেন্টদের নিয়েই থাকো।

জেসিকা হেটে চলে যাচ্ছে। আরহাম একবার হায়াতের দিকে তাকিয়ে জেসিকার পেছন পেছন যাচ্ছে।

★★
এরপর জেসিকা আর কোনো কিছুই করেনি। জেনির খবর পাওয়া যায়নি। জেসিকাও আরহামের সাথে সব নরমাল হয়ে গিয়েছে।জেসিকা নিজে এসে সবাইকে স্যরি বলেছে।

এভাবে দিনকাল যাচ্ছে। দেখতে দেখতে হায়াতদের টেস্ট পরিক্ষা এসে গেলো।

টেস্ট শেষ হওয়ার পর শুরু হলো নতুন কান্ড। অর্পা জেদ ধরেছে এখন ওর ১৮ বছর হয়েছে তাই ও বিয়ে করবে। সবাই অনেক বুঝিয়েছে এক্সাম এর পর কিন্তু মহারানী শুনতেই চাচ্ছে না। শেষ ফলে ওকে আরহাম বুঝিয়ে রাজি করালো।

এরপর সবাই পড়া নয়ে ব্যস্ত।সাথে আছে ইশান প্রিসা,আনিশা ইফাত, আরনবা আয়াত ইভান অর্পা ওদের প্রেম চলছে। আরহাম জেসিকার সাথেও প্রেম চলছে।

এইচএসসি আগে বিদায় অনুষ্ঠানের দিন হায়াতেরা কলেজে ছিলো। সেখানে আদনান গেস্ট ছিলো। অনুষ্ঠান শেষ এ আদনান হায়াতের কাছে এসে দুই চারটা কথা বলছে আর কিছু বলার আগেই ইভান হাজির । এই নিয়ে ইভান ও হায়াতের মাঝে ঝামেলা হয়।
অত:পর এইচএসসি এক্সাম শেষ হলো।
অর্পা ইভানের বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হয়।

একদিন হায়াতরা ঘুরে বাসায় এসে অবাক। বাড়ির বাহিরে বড় বড় চারটা গাড়ি। ওদের বাড়ির মধ্যে এতো মানুষ দেখে আয়াত, হায়াত অবাক।

হায়াতঃ এতো মানুষ কেনো কি হয়েছে।

আয়াতঃ চল ভেতরে গিয়ে দেখি।

হায়াতরা ভেতরে যাওয়ার পর। ইশান হায়াতকে টেনে রুমে নিয়ে গেলো। হায়াতের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিলো না শুধু বলল বের হবি না। আয়াতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইফাত ইশারায় ভেতরে যেতে বলল

আয়াতঃ আমাদের বাড়িতে এতো মানুষ কেনো।

হায়াতঃ আগে এটা বল আদনানের বাবা এখানে কি করছে।

আয়াতঃ মনে হয় ইভান ভাইয়ের জন্য আসছে।

হায়াতঃ ইভানের জন্য কেনো আসবে।

আয়াতঃ আরে ভুলে গেছিস। অর্পার ফুফাতো ভাই হয় আদনান।

হায়াতঃ অহ হ্যা তাই তোহ আদনান বলেছিলো অর্পা ওনার বোন।

এরপর সবাই চলে গেলো কেউ কিছুই বলল না।হায়াতরাও জোর দেয়নি।

আস্তে আস্তে বিয়ের দিন চলে এলো। ইভান হায়াতকে বলেছে ওর বিয়ের কোনো কাজে যেনো হায়াত না থাকে। আর হায়াতও বলেছে সে তার বান্ধুবির বিয়েত থাকবে।

এভাবে গায়ে হলুদ শেষ হলো। হায়াতকে জোর করে ইভানের হলুদে বসিয়ে হলুদ দিয়েছে ওর দাদী। একটাই কথা ঘরের কথা ঘরেই থাকবে লোকজনকে জানানোর দরকার নেই তাই আত্নীয়স্বজন আছে বাধ্য হয়ে হলুদ দিলো।

পরের দিন বিয়ে পড়ানো হবে। সবাই রেডি এমন সময় খবর ইভান মাইক হাতে একটা এনাউন্সমেন্ট করলো তাতে সবাই অবাক।

ইভানঃ আসসালামু আলাইকুম আজকে আমার বিয়ের সাথে সাথে আরহাম চৌধুরীরও বিয়ে হবে

সবাই অবাক বলছে কি আরহামের বিয়ে কার সাথে। সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।

চলবে
(বর্তমানে যলদি আসবো। বর্তমান বর্তমান করছেন তাই তারাতারি নিয়ে আসছি। আর সবাইকে ইভান ও অর্পার বিয়েএ দাওয়াত আর হ্যা সাথে আরহামের বিয়ের দাওয়াত রইলো ??। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর হায়াতকে মনে রাখুন ধন্যবাদ। হ্যাপি রিডিং)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here