অজানা_অনুভূতি
বোনাস_পার্ট
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat
ইভানঃ আজকে আমার বিয়ের সাথে সাথে আরহাম চৌধুরীর বিয়ে হবে।
আরহাম চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। সবাই কানাঘুঁষা করছে। আরহামকে স্বাভাবিক দেখে আরনাব অবাক। অর্পার বিয়েতে আদনান এসেছে সেও অবাক। আদনান সবার বড় এরপর আরহাম এরপর আরনাব । জেসিকা এই কথা শুনে চুপচাপ চলে যায়।
আরহামের বাবা আরহামকে টেনে সাইডে নিয়ে গেলো
আরহামের বাবাঃ মানে কি আরহাম তুমি আজকে বিয়ে করবে কাকে আর আমাদের বললে না কেনো।
আরহামঃ নিশ্চুপ
আরহামের মাঃ আরহাম শুনতে পাওনি তোমার বাবা কি বলেছে।
আরহামঃ হ্যা আমি শুনেছি আর আমি আজই বিয়ে করবো।
আরনাব চুপচাপ দাঁড়িয়ে ওর ভাইকে বোঝার চেষ্টা করছে। আদনান এসেও দাঁড়িয়ে আছে।
আরহামের দাদীঃ তোমার পছন্দ ছিলো জানতাম তাই বলে নিজের বোনের বিয়ের দিন বিয়ে করতে হবে এটা কেমন কথা
আদনানঃ আচ্ছা নানীমা থাকনা বাদ দিন।
আরহামের দাদীঃ তোমাকে আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি তুমি এভাবে আমাদের মাঝে কি করছো।
আদনানের মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
অর্পার বাবাঃ মা এসব পরে। আরহাম বিয়ে করবে কাকে সেটা নিয়ে ভাবুন।
আরহামঃ কিছুক্ষণ পর বউ আসবে অর্পার সাথে নিজেরাই দেখে নিয়েন।আর হ্যা আমার বিয়েতে কোনো রকম ঝামেলা চাই না।আমার বিয়ে না হলে অর্পার বিয়েও হবে না।
আরহাম চলে গেলো। সবাই চিন্তিত হয়ে আছে।
আরহামের দাদীঃ ছেলেটা দেশের বাহিরে পাঠিয়ে মোটেও ঠিক করিসনি। একজন অনেক নরম হয়েছে আরেকজন অনেক শক্ত। দুই ভাই ১৫ মিনিট এর ছোট বড় হয়ে আকাশ পাতাল তফাত। আমার কথা তোহ কেউ শোনোনি এবার বোঝ। চুপচাপ চল। আর আমার নাতী যা করে করুক।আমি আর এতে বাধা দিবো না। আগে বউ কে সেটা দেখি।
★★
কাজী এসে হাজির সবাই অপেক্ষা করছে আরহামের বউ জন্য কে সে।
বেশকিছুক্ষন পর অর্পা,আয়াত, আসছে ওদের সাথে ঘোমটা পরা একটি আসছে। আনিশ আর প্রিসা। বউ এর ড্রেস দেখে একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করছে। ইফাত ও ইশান কিছুই বুঝতেছে না।
আরহামের পাশে বসানো হলো একজনকে। আয়াত ঘোমটা তুলে দিলো সবাই অবাক।
প্রিসাঃ হায়াত।
আনিশাঃ আরহাম স্যার এর সাথে হায়াতের বিয়ে কিভাবে সম্ভব।
ইশানঃ মানে কি হচ্ছেটা কি
ইফাতঃ আমিও তাই ভাবছি।
কাজীকে বলা হলো বিয়ে পড়ানোর কথা। হায়াতের চাচা চাচী আর দাদী ইভানকে নানান প্রশ্ন করছে। ইভান ওনাদের চুপ করিয়ে রেখেছে।
২ ঘন্টা আগে
এই তোহ ইভানরা অর্পাদের বাসায় আসার পর। ইভান অর্পা ও হায়াতকে একটা রুমে নিয়ে যায়।
ইভানঃ আরহাম তোকে আজকে একটা কাজ করতে হবে।
আরহামঃ সকাল থেকে তোহ কাজই করছি।
ইভানঃ আমি এখন মজার মুডে নেই আরহাম।(রাগী ভাবে)
অর্পাঃ ইভান কিছুক্ষণ পর আমাদের বিয়ে আর তুমি কি বলতে ডেকেছো পরেও তোহ বলা যাবে তাই না।
ইভানঃ না এখনই বলতে হবে।
হায়াত চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। ইভান একবার হায়াতের দিকে তাকালো।
ইভানঃ আরহাম তুই হায়াতকে আজ বিয়ে করবি।
আরহামঃ হহাহাহাহা কিযে বলছিস এখন কি মজা করার সময় নাকি।
ইভানঃ আমি মজা করছি না এখন আমার ও অর্পার বিয়ের সাথে তোর আর হায়াতের বিয়ে হবে এটাই শেষ কথা। তুই যদি হায়াতকে বিয়ে না করিস তাহলে অর্পাকে আমি বিয়ে করবো না।
আরহামঃ কিসব বলছিস ইভান। এটা তুই কি বলছিস। তুই তোহ অর্পাকে ভালোবাসিস তাহলে এটা কেনো। তুই কি মজা করছিস। দেখ এমন বিষয় এ ফাজলামি করা ঠিক না।
হায়াতের চোখে পানি টলমল করছে সবার আড়ালে পানিটা মুছে ফেলল। অর্পা রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।
ইভানঃ আমি কোনো ফাজলামির মুডে নেই। আর আমি যা বলেছি তাই হবে আজ বিয়ে হলে আমাদের চারজনের বিয়ে হবে নয়তো আমরা বাসায় চলে যাবো।
আরহামের রাগ মাথায় উঠে গিয়েছে। আরহাম রেগে ইভানের কলার ধরে ফেলল। ইভানও আরহামের কলার ধরে আছে।অর্পা ইভানকে আর হায়াত আরহামকে ধরে ছুটিয়েছে।
হায়াতঃ কি করছেন কি বাড়ি ভর্তি মানুষ আর আপনারা এভাবে। আপনাদের এভাবে দেখলে মানুষ কি বলবে।
আরহামঃ মানুষ কি বলবে তা জানার দরকার নেই আমার। আমি এক কথায় এই বিয়ে করতে পারবো না মানে পারবো না। কারন..
হায়াতঃ কারন আপনি জেসিকাকে ভালোবাসেন তাইতোহ।
আরহামঃ হ্যা আর তুমি এইভাবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছো কেনো বোঝাও তোমার ভাইকে।
হায়াত ইভানের দিকে তাকালো
হায়াতঃ আপ..নি যদি আজ আমায় বিয়ে না করেন তাহলে অর্পারও আজ বিয়ে হবে না। সব সময় নিজের কথা ভাববেন না।একজনের জন্য সবাইকে কষ্ট দেওয়া টা বেমানান হয়ে যায়।(স্বাভাবিক ভাবে বলল)
আরহাম অবাক চোখে তাকিয়ে আছে হায়াতের দিকে এরমানে হায়াত এই বিয়েতে রাজি কিন্তু কেনো ভাবছে আরহাম। আরহাম একবার অর্পার দিকে তাকালো।
অর্পা আরহামকে ধরে কান্না করছে। কান্না করতে করতে হেচকি উঠে গিয়েছে।আরহাম অর্পাকে সোফায় বসালো।
অর্পাঃ ভাই আমি ইভানকে ছাড়া বাচবো না।
আরহামঃ অর্পা বোন আমার কাদিস না। শান্ত হো আর বল আমি এই বিয়ে করলে কি তুই খুশি।তুইকি হায়াতকে আমার সাথে বিয়ে দিতে চাস। তুই যা বলবি তাই হবে( অর্পার কান্না সহ্য করতে পারছে না আরহাম। ওদের বংশের দুটি মেয়ে একটা আদনানের মা আরেকটা অর্পা সবার চোখের মনি তাই তোহ ইভানের সাথে বিয়ে দিতে অর্পার দাদীও মানা করেনি। সবাই অনেক ভালোবাসে অর্পাকে। আরহামের অনেক সখ ছিলো একটা বোনের আর ওরা অর্পাকে অনেক ভালোবাসে। তাই কি করবে আরহাম বুঝতে পারছে না)
অর্পা একবার হায়াত ও ইভানের দিকে তাকিয়ে মাথা ঝাকালো মানে সে এই বিয়েতে রাজি।
অর্পার উত্তর এ আরহাম দাঁড়িয়ে ইভানকে বলল বিয়ে সব রেডি করতে। যেভাবে আছে ওইভাবেই বিয়েটা করবে। হায়াত নির্বাক হয়ে শুধু চেয়ে দেখছে। কারন তার যে কোনো উপায় নেই। অর্পাদের বাসায় আসার আগে ইভান হায়াতকে বলেছে সব। আর বলেছে যদি রাজি না হয় তাহলে আয়াতের আথে আরনাবের, ইশানের সাথে প্রিসার, ইফাতের সাথে আনিশার আর নিজের সাথে অর্পার বিয়ে হবে না। অনেক কষ্টে নিজের বিরুদ্ধে গিয়ে হায়াত রাজি হয়েছে বিয়েতে। একটা কথাও বলেনি ইভানকে। আসলে বলার কিছুই নেই। জানে না সে কেনো তার ভাই এমন করছে তার তোহ কোনো দোষ নেই। কেনো ইভান তারা বাবা মাউএর মৃত্যুর কারন হায়াতকে দেয়। আর হায়াতও কেনো বলে না কিভাবে তার বাবা মা মারা গিয়েছে।
হায়াত ওয়াশরুমে গেলো। আরহাম বাহিরে চলে গেলো।
অর্পা ইভানকে একটা গুতা দিলো।
অর্পাঃ তোমার কারনে আমার কাজল নষ্ট হয়ে গেলো। কতো খরচ করে ৮ হাজার টাকা দিয়ে সেজেছি।
ইভানঃ সমস্যা নেই তোমাকে আমি টাকা ফেরত দিয়ে দিবো হু। বাসর ঘরে সব ফেরত দিবো।
অর্পাঃ আর আমার চোখে পানি সেটা কে দিবে। আমি তোহ বিদাইয়েও এতো কান্না করতাম হলে না যতটা কান্না তোমার এই প্ল্যানে করতে হচ্ছে।
ইভানঃ আস্তে বলো। আমার বোন ওয়াশরুমে আছে শুনতে পারে আমাদের করলাভাজি বানিয়ে ফেলবে।
অর্পাঃ ঠিক আছে চলো। আচ্ছা আমার এক্টিং টা সুন্দর ছিলো না।
ইভানঃ হ্যা অনেক সুন্দর।
ইভানেরা বের হয়ে অবাক।
অর্পাঃ আরহাম ভাই তুই।
আরহাম ওদের দিকে তাকিয়ে তারপর বলল
আরহামঃ আমার ফোনটা রেখে গিয়েছিলাম।
★★
হায়াত ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো আরহাম দাঁড়িয়ে আছে। হায়াত আরহামকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলো। আরহাম হায়াতকে টেনে দেয়ালে আটকে ধরে।
আরহামঃ তুমি বিয়েতে না করলেও পারতে। আমি তোহ বাধ্য ছিলাম তুমি কেনো না করোনি।
হায়াত চুপচাপ আরহামের দিকে চেয়ে আছে। তার যে কিছুই বলার নেই। অনেক সময় কাছের মানুষদের খুশির জন্য নিজের খুশিকে বিসর্জন দিতে হয়। হায়াত আরহামকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়
হায়াতঃ সব কিছুর উত্তর থাকেনা মিস্টার আরহাম।
আরহাম হায়াতের দিকে চেয়ে আছে। আজকের হায়াত ও আগের হায়াতের মিল খুজে পাচ্ছে না আরহাম। পরক্ষনে কি ভেবে উত্তর দিলো
আরহামঃ তুমি জেসিকাকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এমন করছো না।দেখো জেসিকা তোহ তোমায় স্যরি বলেছে।
হায়াতঃ আজকে আমাদের বিয়ে। আজ থেকে ঠিক ছয় মাস পর আমাদের ডিভোর্স হবে। অর্পার জন্য হলেও বিয়েটা করে নিন। কারন আপনাদের ছেলেদের ডিভোর্সি হলে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু আমাদের সমাজ ডিভোর্সি মেয়েদের কি ভাবে তারাই ভালো জানে। আর হ্যা বিয়ে হবে আজই হবে আর ডিভোর্সও হবে। আর শুনুন এই ছয় মাস আমি আপনার স্ত্রি আপনি মানেন আর না মানেন। আজকের এই কথা জেনো আমাদের মাঝেই থাকে মিস্টার আরহাম।
আরহাম রেগে দেয়ালে ঘুষি মারে এতে হায়া হালকা ভয় পেলেও প্রকাশ করেনি।
আরহামঃ ঠিক আছে। বিয়ে হবে আজই হবে। এর ফল তোমাকে পোহাতে হবে আগামী ছয় মাসে।
হায়াত হাসলো তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে চলে গেল কারন সে জানে আরহাম তার সাথে কতকিছুই করবে। যে বিয়ের আগে এত কিছু করতে পারে সে বিয়ের বিষয় নিয়ে কতো কি করবে। আরহাম হায়াতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে সব কিছু জেনো ধোয়াশার মধ্যে আছে।
কাজি বিয়ে পড়াচ্ছে। আদনান হায়াতকে দেখে বেশ অবাক হয়েছে। তার যেনো খুব খারাপ লাগছে। প্রথম প্রেমেই সে হেরে গেলো। চলে যাচ্ছে তার ভালোলাগার মানুষটি অন্যের হাত ধরে। আদনান নিজেকে সামলাতে না পেরে চলে গেলো।
আরহাম অবাক হলো যখন দেখলো ইভান বিয়ের কাগজ থেকে শুরু করে সব ঠিক করে আছে ওরা আসলো বসলো আর বিয়ে।কবুল বলে সাইন করে দিলেই কি বিয়ে হয়ে যায়। একে অপরের জীবনসঙ্গী হয়ে যায়।
হায়াত চুপচাপ বসে আছে। আয়াত হায়াতের ছবি তুলছে। ইশান ও ইফাত হায়াতের দিকেই চেয়ে আছে। ওদের খুব কষ্ট হচ্ছে। নিজের এতো আদরের বোনের বিয়েটা যে এভাবে হবে ভাবতে পারছে না। আয়াতকে বলা হয়েছে হায়াত নিজেই বিয়েতে রাজি তাই কেউ হায়াতকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করেনি কারন তারা জানে কিল ঘুষি ফেরত পাবে কিন্তু কারন পাবে না। আয়াত এসে বাকি সবাইকে বলল।
বিদায় হবার পালা অর্পার বিদায়।কিন্তু তার কান্না আসে না।কারন বিয়েটা যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবে হলো না মনে হচ্ছে সবাই শোক পালন করছে। অত:পর সবাই চলে যাচ্ছে। ইশান ও ইফাত তাদের বোনকে জড়িয়ে ধরে সেকি কান্না। হায়াতই মনে হয় প্রথম বধু যে নিজে বিয়ে করতে ছেলের বাড়িতে আসছে। তাও কফি কালারের লেহেঙ্গা পড়ে। যাওয়ার আগে ইভান একবার ওদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। এই হাসি বিজয়ের হাসি। হাসি দিয়ে অর্পার হাত শক্ত করে ধরলো। এই মেয়ে তাকে বুঝে তার কি দরকার না দরকার তাই তোহ তার একটা কথায় নাটক করতে রাজি হয়ে যায়। বড্ড বেশি ভালোবাসে অর্পাকে।অর্পা ইভানের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসলো। সেযে তার বোনের ভালোর জন্য এটা করেছে তা ভালো করেই জানে অর্পা। এক ডিলে ৫ পাখি মারা হলো।
হায়াতকে সোফায় বসানো হলো। নিজেকে কেমন একা একা লাগছে।সবাই হায়াতের দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে।মেয়েদের নাকি আর কেউ থাক বা না থাক নিজের স্বামী সব সময় পাশে থাকে কিন্তু আরহামের কোনো খোজ নেই। আরহামের দাদী এসে সবার সামনে হায়াতকে সোনার বালা পরিয়ে দিল এতে সবাই অবাক। আরহামের মা ও চাচী মুচকি হাসলো কারন এর মানে আরহামের দাদী হায়াতকে মেনে নিয়েছে নাত বউ হিসেবে কিন্তু প্রকাশ করছে না। অর্পার ফ্রেন্ড হিসেবে সবাই চিনে সবাই পছন্দ করতো কিন্তু এই পছন্দ যে ছেলের বউ হিসেবে হবে ভাবতে পারেনি তারা। ওনারা ভেবেছিলো আয়াতকে আরহামের বউ হায়াতকে আরনাবের বউ করে আনবে। কিন্তু এখন তোহ উলটো হলো। তারপরও সবাই খুশি যে ভালো বউ পেয়েছে। দেশের মেয়েই বিয়ে করেছে আরহাম।
রাত ১২ টা
আরহাম এখনো রুমে আসেনি। হায়াত বিরক্ত হয়ে বসে আছে। ঠিক বসে আছে না নিজের ফোন দিয়ে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকশো ছবি তুলে আবার ডিলিট করে। ফুল ছবি তুলবে কিন্তু কোনো ক্যামেরা ম্যান নেই তাই আরনাব এর কাছ থেকে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড নিয়ে ডোরেমন দেখতে বসলো। কারন হায়াতকে বলেছে স্বামী না আসা পর্যন্ত ঘুমাতে না।
বেশ কিছুক্ষণ পর আরহাম আসলো। আরহাম এসে নিজে আলমারি থেকে ড্রেস বের করছে।
হায়াত ভ্রু কুচকে তাকালো। এরপর আরহামের কাছে গেলো
হায়াতঃ এতো দেরি হলো কেনো। আমি সেই কখন থেকে বসে আছি আপনার জন্য।
আরহামঃ আমি কি তোমায় বলেছি আমার জন্য অপেক্ষা করতে। তাহলে কেনো অপেক্ষা করছো। তোমার আর আমার মাঝে শুধু নামে মাত্র স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক।
এই বলে বাথরুমে চলে গেলো।হায়াত আলমারি থেকে আরহামের একটা শার্ট লেহেঙ্গার উপর কোনোরকম পড়েছে।
হায়াতঃ আমি কি তোমায় বলেছি আমার জন্য অপেক্ষা করতে। তাহলে কেনো অপেক্ষা করেছো। তোমার আর আমার মাঝে শুধু নামে মাত্র স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। হুহহ ঢং দেখলে বাচি না যেমন মনে হয় আমার স্মৃতিশক্তি দূর্বল যে বারবার এক কথা বলতে হবে।
আরহাম আসার আগে আগে শার্ট খুলে রেখে মেঝেতে বসে পড়লো। আরহাম ওয়াশরুন থেকে বের হয়ে হায়াতের দিকে একবার তাকিয়ে খাটে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
হায়াত বসে বসে গান গাচ্ছে।
হায়াতঃ তুমি করলা আমি মিস্টি দুজনে মিলে হয়ে গেলাম টেস্টি। লালালালাল্লা লুলুলুলু। তুমি করলা আমি মিস্টি আজকে আমরা হয়ে গেলাম টেস্টি(হালকা জোরে জোরে চিল্লিয়ে গান গাচ্ছিলো)
আরহাম বিরক্ত হয়ে উঠে বসলো।
আরহামঃ আচ্চাহ তুমি কি চুপ থাকতে পারো না আমায় ঘুমুতে দেও।
হায়াত এবার উঠে আরহামের কাছে গেল।
হায়াতঃ নীলবাবু থেকে ট্রান্সফার হওয়া বরবাবু আমার একটা কাজ করতে হবে তাহলেই আমি চুপ করবো।
আরহামঃ আর যদি না করি। (রেগে তাকালো)
হায়াতঃ তুমি করলা আমি মিস্টি দুজন মিলে হয়ে গেলাম টেস্টি ( আরহামের কানে জোড়ে বলল)
আরহামঃ কানে হাত দিয়ে আয়য়ায়া চুপ করো। কি চাও তুমি।
হায়াতঃ ক্যামেরাম্যান।
আরহামঃ মানে?
হায়াতঃ দেখুন নীলবাবু থেকে ট্রান্সফার হওয়া বরবাবু। আজকে আমার বিয়ে আর আমার বিয়ে নিয়ে কতশত সপ্ন ছিলো সব মাটি হয়েগেলো। ভেবেছিলাম। একটা নম্র ভদ্র, যে আমাকে ধমক দিবে না আমার কথা শুনবে আমাকে রাগ দেখাবে না তাকে বিয়ে করবো কিন্তু তা আর হলো কই তার উপর বিয়েতে কতো সুন্দর করে সাঝ দিবো বিয়ের লেহেঙ্গা পরবো। বাসর ঘরে বেলিফুল দিয়ে সাজানো থাকবে আরো কতো কি।
আরহামঃ সবই বুঝলাম ক্যামেরাম্যানকে দিয়ে কি করবা।
হায়াতঃ কি করবো আবার ছবি তুলবো৷ কাপল পিক তুলবো দেখুন বরবাবু আপনি মানেন আর না মানেন আপনার সাথে এখন আমার বিয়ে হয়ে গেছে। তাই আগামী ৬ মাসে + আমার ফোনে কাপল পিক থাকবে। সবাইকে বলেছিলাম একবার বিয়েটা করি তারপর কাপল পিক কাকে বলে কতো প্রকার ও কি কি সব দেখিয়ে দিবো। তোহ এখন আপনি ক্যামেরাম্যান ডাকেন আর না ডাকলে আমি গান গাওয়া শুরু করলাম।
আরহাম মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। ভাবছে কি করবে। এই মেয়ের কি মাথার তার ছিরা নাকি স্ক্রু ডিলা। আজকে কতো ঝামেলার মধ্যে বিয়ে হলো আর সে আছে কাপল পিক নিয়ে। আরহাম রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ওইদিকে জেসিকাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। জেসিকার বাড়িতে গিয়ে জানলাম জেসিকা নেই। অনেক খুজে না পেয়ে বাসায় এসে এমন ড্রামা কার ভালো লাগে। কিছু বলতেই পারছে না কারন ডিভোর্স তোহ হায়াত ছয়মাস পর দিবে কিন্তু এই ছয়মাস এই পাগল এর সাথে থাকতে হবে। আরহাম আরনাবকে ফোন করে আসতে বলল
।
কয়েকশত কাপল পিক তুলেছে হায়াত তারপরও আরো বাকি।নানান পোজে ছবি তুলল। আরহাম বাধ্য হয়ে ছবি তুলছে।
রাত ২ টা বাজে
হায়াত ফোন টিপতে টিপতে ঘুমিয়ে গিয়েছে। আরহাম কাউচে ঘুমিয়ে আছে।
পরের দিন সকালটা ওদের জন্য কি হবে জানা নেই কারো। এই সম্পর্কের কি নাম দিবে। আদৌ কি সবাই জানতে পারবে।কোন পরিস্থিতিতে ওরা বিয়ে করেছে।
চলবে
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি রিচেক দেইনি। কেমন হলো জানাবেন।আপনাদের জন্য বোনাস পার্ট দিলাম। সবাই গগঠনমূলক মন্তব্য করবেন। )