অজানা_অনুভূতি পর্বঃ১০

0
5490

অজানা_অনুভূতি
পর্বঃ১০
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

আজ হায়াত ও আরহামের বিয়ের ৬ মাস পূর্ন হলো।
আরহামের জন্য আজ এক নতুন সকাল সে হায়াতকে তার অনুভূতির কথা জানাবে।

সকালে ৭ টা ঘরির এলামে ঘুম ভাঙ্গলো আরহামের। আরহাম বিরক্ত নিয়ে এলাম বন্ধ করলো। ঘড়িতে ৭ টা বাজে দেখে অবাক।আজ হায়াত তাকে কেনো জাগালো না। তা নিয়ে তার হালকা রাগ হলো সকাল সকাল মুড নষ্ট করতে চায় না তাই ফ্রেশ হতে বাথরুমে গেলো। গোছল করে ফ্রেশ হয়ে বের হলো। বের হয়ে অবাক আজ হায়াত তার ড্রেস আয়রন করে রাখলো না কেনো এবার প্রচুর রাগ লাগছে নিজেই ড্রেস বের করে পড়লো। ঘড়ি রুমাল কফি কিছু আজ হায়াত নিয়ে আসলো না তার জন্য রাগ লাগছে আরহামের এই ৬ মাসে হায়াতের কাজ গুলো একদম অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। অভ্যাসের হালকা পরিবর্তন হলে আমাদের রাগ লাগে। তেমনি আজ আরহামের ভালো লাগছে না।

আরহাম রেডি হয়েছে। শার্ট পরবে এমন সময় দরজায় নক। আরহাম ভাবলো হায়াত এসেছে। দরজা খুলে আচ্ছা মতো বকবে ভেবে নিলো।

দরজা খুলে আরহামের মুখটা মলিন হয়ে গেলো। কারন দরজায় মিনা(কাজের মেয়ে) দাঁড়িয়ে আছে।
আরহাম কিছু বলার আগে মিনা বলল

মিনাঃবড় ভাইজান বউমনির কি শরিল খারাপ নাকি আজকা যে রান্ধন ঘরে আইলো না।

মিনার কথা অবাক হলো আরহাম,। ভাবলো হয়তো অন্য কোথাও হবে।
আরহামঃ হায়াত তোহ রুমে নেই হয়তো বাড়ির পেছনের রাস্তায় হাটাহাটি করছে।

মিনাঃ না ভাইজান পেছনে তোহ বড় নানী(আরহামের দাদী) আর বড় খালাম্মা(আরহামের মা) সেই সকালে হাটতাছে।

আরহামঃ আচ্ছা তাহলে অন্য কোথাও হবে তুমি খুজে দেখো। বাগানে হতে পারে।

মিনা চলে গেলো আরহামের টেনশন হচ্ছে। আরহাম খাটের উপর বসে নিজে ফোন হাতে নিয়ে হায়াতের নাম্বার ডায়েল করলো। কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় ফোন বন্ধ। আরহাম টেনশনে পড়ে গেলো। হায়াত কোথায়। কিছুক্ষন পর মিনা এসে জানালো হায়াত কোথায় নেই। আরহাম টেনশনে মাথা ফেটে যাচ্ছে। যলদি অর্পার নাম্বারে ফোন দিলো।

অর্পাঃ হ্যালো হ্যা ভাইয়া কেমন আছো।

আরহামঃ অর্পা হায়াত কি তোর ওখানে গিয়েছে।

অর্পাঃ হায়াত এখানে কেনো থাকবে। কি হয়েছে ভাই তোমার গলা এমন ভারি ভারি লাগছে কেনো

আরহামঃ অর্পা আমি পরে কথা বলছি।

আরহাম যলদি বের হলো সারাবাড়ির আনাচে কানাচে খুজলো। আরহামের চাচী বলল আরহামের দাদী ও মা আসেনি তাই হয়তো ওনাদের সাথে গিয়েছে। আরহাম স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রুমে এসে বসলো। প্রচুর ঘামছে আরহাম।। মাথার উপর ফ্যান চলছে। আরহাম উঠে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়ালো চুল ঠিক করে হাতের ঘড়ি নিতে গিয়ে চোখ পরলো একটা কাগজে। যা আরহামের ঘরির নিচে ছিলো। অন্যান্য সময় কাগজ ফেলে দিতো কিন্তু আজ হাতে নিলো। খুলে দেখলো চিঠির মতো চোখ ভুলিয়ে শেষ এ হায়াতের নাম দেখলো। তারাতারি বসে পড়া শুরু করলো।

***
প্রিয় নীলবাবু

আশা করি ভালো আছেন। আজ নীলবাবু বললাম কারন কি জানেন আজ আমাদের বিয়ের ছয়মাস পূর্ন হলো। আপনি হয়তো সকালে উঠে প্রচুর রেগে গিয়েছেন আপনাকে কেনো জাগায়নি।তাইতো এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম।এখন থেকে এটাই ব্যবহার করবেন। আর হ্যা আমার চিঠিটাকে গরুর রচনা মনে করবেন না।অনেক কথা তোহ তাই বড় করে লিখলাম। যাইহোক আপনি বলেছিলেন কাগজে সিগনেচার করে কবুল বলে বিয়ে করলেই বিয়ে হয় না মন থেকে মানলে বিয়েটা পূর্ন হয়। আজ আমি বলবো তেমনি কাগজ কলমে ডিভোর্স দিলেই ডিভোর্স মন থেকে মেনে দিতে হয়। অবাক হবেন না আচ্ছা একটা কথা বলুন তোহ আমার কি দোষ ছিলো বলতে পারবেন নাহ পারবেন না। আপনি বলেছিলেন আমি বিয়েতে মানা কেনো করিনি জানেন আপনি যেই পরিস্থিতির শিকার ছিলেন আমিও তেমন পরিস্থিতির শিকার। যাক আমি বেশি কিছু লিখবো না কারন অনেক রাত আর আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। আপনি কিন্তু ঘুমের মাঝে নাক ডাকেন হু। হাহাহাহা। ওম আচ্ছা আপনি কি সত্যি জেসিকাকে ভালোবাসতেন নাকি মোহে পড়েছিলেন। আচ্ছা জেসিকা যদি অন্য কোনো ছেলের সাথে হেসে কথা বলতো তখন কি আপনার অনেক রাগ লাগরো নাকি স্বাভাবিক ভাবে নিতেন। একবার ভাবুন জেসিকা গায়েব হওয়ায় আপনার কেমন লেগেছে আর আমার ওইদিন গায়েব হওয়ায় তখন কেমন লেগেছে। আমাদের দুজনকে এক ভাববেন না। একটু আমার কথা গুলো ভাববেন। অফ আমিও না। আমি জানি নীলবাবু আপনি আমার সাথে যা যা করেছেন তা বাধ্য হয়ে করেছেন। আপনি আপনার ফুপ্পিকে খুব ভালোবাসেন৷ জেসিকা ও তার পার্টনার আদনান ভাইয়ার বাড়িতে একটা মেয়েকে কাজের মেয়ে হিসেবে পাঠায় যে জেসিকাকে আপডেট দিতো। ওই তো কিছুদিন আগে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন আর আপনাকে ছোট খাটো ট্রেলার হিসেবে আদনান ভাইয়ার মাকে সিড়ি থেকে ফেলানো হয়েছিলো। আমি আসলে তার জন্যে সত্যি দুঃক্ষিত আমার কারনে ফুপ্পিমায়ের পা মচকে গিয়েছিলো। আমি জানি আপনি যা যা করতেন সব ওই জেসিকা ও ওর পার্টনার আপনাকে দিয়ে করাতো। জেসিকা আর তার বোন জেনির প্রতিশোধ যে নিতে হবে। আমি সব জানি আর আপনাকে তার জন্য ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু একবার আমাকে বলতে পারতেন।আচ্ছা আমাকে না বলতেন আরনাব ভাইয়া আছেন যেহেতু আয়াতকেও এর মাঝে আনা হয়েছে, নয়তো আদনান ভাইয়াকে বলতেন। আপনি নিজের কোনো বুদ্ধি খাটালেন না।যেভাবে নাচিয়েছে ওইভাবে নেচেছেন। আপনাকে তোহ মুলার জুস খাওয়ানো উচিত।আবার আমাকে বলেন আমি কম বুঝি ।আর আপনি আমাকে কখনো ইচ্ছে করে কষ্ট দিতে চান নি আপনার মনে আছে কক্সবাজারের কথা জেসিকা রুমে এসে আমায় বের করে দিতো আর আমি সমুদ্রের পাড়ে বসে থাকতাম আর আপনি দূর থেকে আমাকে পাহারা দিতেন। আমি দেখেছিলাম আপনাকে।জানেন আমার বড় ভাই বলতো আমার চোখ নাকি বাজ পাখির মতো দূর থেকেও দেখতে পাই। আপনাকে জেসিকা অনেক বেশি শাস্তি দিয়েছিলো। আপনাকে দিয়ে কাপর ধোয়াতো৷ রান্না করাতো। সব আমি জানি ভাবছেন কিভাবে বলবো বলবো। ওহ এই পেজ তোহ শেষ আরে আরে দাড়ান আমার গরুর রচনা শেষ হয়নি। আমার বালিশের নিচে আরো ২ পাতা আছে। (আরহাম বাকি পাতা গুলো নিলো ওর চোখ ঝাপসা হয়ে আছে।আবার পড়া শুরু করলো।)
নীলবাবু জেসিকাকে হঠাৎ গায়েব হওয়ার পেছনে আমিই ছিলাম।একেবারে কিডন্যাপ করে ফেলেছি। ওর কাছ থেকে সব জেনেছি। আর জানেনই তোহ আমি হায়াত আর হায়াত ইট এর জবাব ইট দিয়েই দেয় কারন পাথর খোজার সময়৷ এই হাহাহা। জানেন আদনান ভাইয়া অনেক ভালো আমায় অনেক সাহায্য করেছে। এখন আর টেনশনের কিছু নেই আপনার ফুপ্পিকে কিছু করতে পারবে না। জেসিকাকে ওর জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছি। জেনি নাকি ওর বাবামায়ের কাছে বিদেশ ভালো জেসিকার কাছে থাকলে হয়তো ওর মতোই হতো। আপনি অনেক ভাবছেন জেসিকা কেনো এমনটা করলো। সত্যি বলতে জেসিকা আপনাকে কখনো ভালোবাসেনি। অনেকটা অহংকারী মেয়ে ছিলো যার ফলে ওর বাবা ওর বিয়ে দিয়ে দিতে চাচ্ছিলো। জেসিকা তখন বলল আপনার সাথে রিলেশন আছে আপনি কিছু করলে বিয়ে করবে। তাই ও আপনার পেছনে পড়েছিলো। এরপর যখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো ওর অবস্থা খারাপ তাই আর কোনো রাস্তা না পেয়ে আপনার উপর জুলুম করেছে। কারন এখন ওকে বিয়ে করতে হবে ও আরহাম একবার আমায় বলতেন যে হায়াত আমি অনেক বেশি সমস্যায় আছি। একবার কাউকে বলতে পারতেন।সাহায্য নিতে পারতেন। আপনি নিজেও হাতের পুতুলের মতো নেচেছেন আমাকেও নাচিয়েছেন। জানিনা চিঠিটা আপনি কখন পাবেন। জানেন আমার বিয়ে নিয়ে অনেক সপ্ন ছিলো কিন্তু হুট করে এভাবে সব এলোমেলো হবে ভাবতে পারিনি। আপনি কখনোই আমাকে বোঝার চেষ্টা করেননি। আপনার অইচ্ছাকৃত অত্যাচার গুলো আমায় বড্ড কষ্ট দিয়েছে। আপনাদের কারনে আমি নিজেকে ভুলে গিয়েছিলাম। যখন আপনি আর জেসিকা মিলে আমায় অপমান করতেন তখন খুব খারাও লাগতো।আমি না কাদতে পারিনা।এই দেখুন এখনো কাদছিনা। যেদিন আপনি আমায় রাস্তায় নেমে দিয়েছিলেন খুব বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। নিজেকে তোহ শেষ করতে পারছিনা।আপনারা আমার মন তিলে তিলে মেরেই ফেলেছেন।ওইদিন আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম।চোখের পানি না থাক বৃষ্টি পানি তোহ আছে। ওইদিন প্রথম আপনি আমার সেবা করেছিলেন। আজকে আমি আপনার দেওয়া শাড়িটা পড়িছি যেটা আপনি কেটে ফেলেছিলেন। যাক কি বলবো আচ্ছা চিঠিতে কি আমার চেহারা ভেসে উঠছে না মানে অনেক ছবিতে দেখা যায়না চিঠিতে চেহারা ভেসে আসে তাই জিজ্ঞেস করলাম। আচ্ছা এতো এতো কথা বলছি আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না আমি এগুলো কেনো বলছি। আসলে অনেকদিন আগে জেসিকাকে আদনান ভাইয়ার সাহায্য নিয়ে গায়েব করে দেই এরপর ওর কাছ থেকে সব ইনফরমেশন নেই। সব খোলাশা হবে। আচ্ছা শুনুন আমি চলে যাচ্ছি অনেক দূর বহু দূর যেখানে থাকবেনা কোনো কাছের মানুষ যাদের বাচাতে নিজেকে করতে হয় ছোট। আমাদের হয়তো এতোটুকু এক সাথে থাকার ছিলো৷ হয়তো আর দেখা নাও হতে পারে। আরহাম চৌধুরী আমাদের বিচ্ছেদ টা জরুরি ছিলো। ভালো থাকবেন প্রিয়। আর হ্যা আমার ড্র‍য়ারে কালো রঙের ডায়েরি আছে। ওটা বের করবেন আর সবাকে বাসায় আসতে বলবেন সবার সামনে আমার বান্ধুবিদের ডায়েরিটা পরতে বলবেন তাতেই সব সমস্যা খোলাশা হবে। সবাই মানে আদনান ভাইয়াও আছে আর হ্যা আমার পরিবারের সবাইকে আসতে বলুন। আমি চলে যাচ্ছি বহুদুর নীলবাবু। ডিভোর্স পেপার কোনো এক সময় পাঠিয়ে দিবো। আমাদের সম্পর্কের তোহ কোনো নামই নেই হয়তো আমাদের বিচ্ছেদই লেখা ছিলো।আমি কোনো অবলা নারী নই আমি বাচতে পারবো। বাচতে চাই নিজের জন্য তাই তোহ সবার আলাড়ালে চলে যাচ্ছি নিজের সপ্ন পূরনের জন্য। ভালোবাসা নামক জিনিস বড় কষ্টের। তা থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারন ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকে বিচ্ছেদটা মেনে নেওয়াটা খুবই কষ্টের। আচ্ছা আমাদের জীবনটা এমন কেনো হলো। আমরা কেনো অন্য সব সুখী কাপলদের মতো থাকতে পারলাম। আচ্ছা আমাদের জীবনটা এমন কেনো হলো। ৬ মাসে আমার বর এর কাছ থেকে স্ত্রীর অধিকার, সম্মান,ভালোবাসা কিছুই পেলাম না। আমার সাথেই কেনো এমন হলো। এমনটাও তোহ হতে পারতো আমরা একসাথে সুখে থাকতে পারতাম। হয়তো পারতাম নয়তো না। আপনাকে মেনে নেওয়াটা অনেক বেশি কষ্টকর। আচ্ছা আমার কি স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার কোনো অধিকার নেই জানি আমাদের বিয়েটা নামে মাত্র বিয়ে ছিলো আচ্ছা আমাকে একটু ভালোবাসা পাওয়ারও কি অধিকার নেই। আমার সাথে এমনটা কেনো হলো আমার দোষটা কোথায় ছিলো বলবেন। আমাকে একটু সম্মান দিলেও পারতেন। আমারও আত্নসম্মান আছে। যাক আর কিছু নাই লিখলাম। আপনাকে একটা গান শুনাই

♩ ♩ ♩ ♩ ♩ ♩ ♩ ♩ ♩

Tujhe kaise pata na chala..

Ke mein tainno payaar kardi aan…

Tujhe kaise pata na chala

Ke Tera intezaaar kardian..

♩ ♩ ♩ ♩ ♩ ♩ ♩

গানটা শুনে নিয়েন। ভালো থাকুন নিজেকে নিয়ে। চলে যাচ্ছি বহু দূর কাছের মানুষ, নিজ এলাকা, পরিচয় শহরকে ছেড়ে এক অজানা জায়গায়। আর হ্যা একটা কথা এমনি এমনি হারিয়ে গেলে তাকে খুজে পাওয়া যায় কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছে করে হারিয়ে যায় তাকে খুজে পাওয়া অসম্ভব। আমাদের এক সাথে পথ চলা এতোটুকুই ছিলো হয়তো। আর হ্যা নিজের ও কাছের মানুষদের খেয়াল রাখবেন এমন হবে না তোহ যে কাছের মানুষদের অবহেলা নিতে না পেরে চলে যাবে অচেনা শহরে।

ইতি
হায়াত

আরহামের চোখ বেয়ে পানি পরছে। চিঠিটা বুকের সাথে জরিয়ে ধরে নিরবে কাদছে। কোথায় খুজবে হায়াতকে। কেনো সে হায়াতকে এতো কষ্ট দিলো যে তাদের সবাইকে ছেরে চলে গেলো। আরহাম যলদি উঠে হায়াতের ডাইরিটা হাতে নিলো। ডাইরিটা দেখে কান্নার মাঝেও হাসলো। মেয়েটা স্টিকার এতোই প্রিয় যে ডাইরির সব খানে স্মাইলি স্টীকার লাগিয়ে রেখেছে।

★★

আরহামদের বাড়ির ড্রইং রুমে এসে উপস্থিত ইভান – অর্পা, ইশান – প্রিসা, ইফাত- আনিশা আয়াত ওর বাবা মা হায়াতদের দাদী, আদনান আর আরহামের পরিবারের সদস্য।

ইভানঃ কি হয়েছে আরহাম এভাবে সবাইকে ডেকেছিস কেনো।

আরহামঃনিশ্চুপ

অর্পাঃ আরহাম ভাই হায়াত কোথায়।

আরনাবঃ হ্যা ভাবিকে দেখছি না সেই কখন থেকে ভাই ভাবি কোথায়।

আরহাম ডায়রিটা আয়াতের দিকে দিলো।
আরহামঃ তোমাদের চারজনকে হায়াত এই ডাইরি পড়তে বলেছে। সবাইকে পড়ে শোনাও।

আয়াত ডায়রি খুলে পড়া শুরু করলো। সবাই অবাক হয়ে আছে কিছুই বুঝতেছে না।

★★প্রথম পৃষ্ঠা

প্রিয় দাদীমা
হ্যা আমাদের দাদীমা আপনাকে বলছি।আমি আপনাদের হায়াত হয়তোএটাই আমার মনের বলা শেষ কথা। দাদীমা নিজের খেয়াল রাখবেন আর এতো চিন্তার কি আছে হুম আমি তোহ আছি আয়াত আছে আপনার দুইটা নাত বউ আছে। এতো টেনশনের কিছুই নেই শুধু শুধু চিন্তা করে প্রেসার লো করবেন না।আর হ্যা নিজের খেয়াল রাখবেন। আপনার হাতের ভাপা পিঠা আমার অনেক ভালো লাগে। মনে থাকবে আমার।

★★ পরের পৃষ্ঠা
প্রিয় ছোট আব্বু আম্মু
ভালোবাসা নিও। সত্যি বলতে এমনটা খুব কমই হয় আমরা এতিম হওয়ার পরও আমাদের থেকে তোমাদের ভালোবাসার কোনো কমতি ছিলো না। যা চেয়েছি তাই দিয়েছো। আর ছোট আম্মু তুমি যে আমার মাথায় জোর করে তেল দিয়ে দিতে আর আমাকে বকা দিতে তা আমার সব সময় মনে থাকবে। ছোট আব্বু মনে আছে ছোট বেলা আমি আর আয়াত তোমার সাথে বাহিরে যাওয়ার বায়না ধরতাম আর তুমি আমাদের দুজনকেই কোলে নিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে আসতে বড় হবার পর আর যাওয়া হতো না কিন্তু আমার মনে থাকতো।

★★
প্রিয় সুন্দরী রেশমি চুড়ি
মানে দাদীমা আপনি এতো সুন্দর কেনো বলেন তোহ। যাক আপনাকে কিছু বলবো ধন্যবাদ আমাকে সব সময় সঙ্গ দেওয়ার জন্য। আপনার দেওয়া বালা গুলো আমি আরহামের রুমে রেখেছি নিজের কাছে রেখে দিয়েন অনেক দামি তোহ। আর হ্যা একটা কথা আদনান ভাইয়ার সাথে আর এমন করিয়েন না। আমি জানি আরহাম ও আরনাবকে যেমন আপনি ভালোবাসেন তেমনি আদনান ভাইয়াকেও। আমি জানি বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে আদনান ভাইয়ার আম্মু পালিয়ে বিয়ে করেছে আর তা আপনারা মেনে নেননি। আচ্ছা দাদী মা ওনারা না হয় ভুল করেছে আপনারা কি ঠিক করেছেন জোর করে বিয়ে দেওয়া মোটেও ঠিক কাজ নয় এর পরিনাম খারাপ হয় তাইতোহ ফুপ্পিমা পালিয়ে গিয়েছিলো। এবার না হয় তাদের মেনে নিন। আর কত ফুপ্পিমাকে শাস্তি দিবেন আর হ্যা জামাই আদরে জেনো কমতি না থাকে। আপনার একমাত্র মেয়ের জামাই হোক বুড়া তাতে কি। আর হ্যা আপনি তোহ একটা ছবিও ফুপ্পিমায়ের রাখেননি বলেছিলেন অথচ নিজের কাছে অনেক ছবি লুকিয়ে রেখেছেন। ছোট বেলার ড্রেসও রেখে দিয়েছেন আবার বলেন রেগে আছেন। এবার রাগটা সাইডে রেখে নিজের মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিন।

(সবাই আয়াতের পড়াটা মন দিয়ে শুনছিলো কেউ কিছু বুঝতে পারছে না। যে হায়াত ডায়রিতে এগুলো লিখলো কেনো) এবার প্রিসা পড়া শুরু করলো।

★★
প্রিয় শাশুড়ী আম্মু শ্বশুর আব্বু
আশা করি ভালো আছে আর ভালো থাকবেন। শাশুড়ী আম্মু জানেন আপনি না একদম আমার মায়ের মতো।আমার মা আমার কোনো কাজে ভুল হলে প্রথমে আমায় বকবে তারপর সুন্দর করে বুঝিয়ে দিবে। আপনার মাঝে আমি আমার মাকে খুজে পাই। আমি অনেক ভাগ্যবতী যে আপনার মতো মা পেয়েছে। আপনাদের ছেলের বিয়ে এভাবে হবে তা মানতে কষ্ট হয়েছিলো জানেন আমরা জানতাম না যে এভাবে আমাদের বিয়েটা হবে। যাক আপনার হাতে পায়েশ কিন্তু অনেক মজা। শ্বশুর আব্বু আপনাকে কি বলবো আপনাদের ভাই বোনের ভালোবাসাটা দারুন লাগে আমার। জানেন এত কিছুর পরও আপনারা আপনার বোনের সাথে থেকেছেন নিজেদের সন্তানের সাথে বোনের সন্তানের মিল করিয়েছেন। এমন ভাই যেনো আল্লাহ সবাইকে দেয়।

★★★
প্রিয় বড় ভাই আর ভাবি
ভাই যেদিন বাবা মা মারা গিয়েছিলো আর তুই আমায় দোষ দিয়ে আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলি আমিও তখন তোর উপর রাগ করেছিলাম তখন ভাবতাম নিজের দোষ আমার উপর চাপাচ্ছিস। ভাই তুই যতবার আমার ভালো করতে চেয়েছিস তত বার কেন যেনো সব উলট পালট হয়ে যায়। আগে আসি মা বাবার মৃত্যুর কাহিনি আরিয়ান ভাইয়ার কথা মনে আছে যে তোর দলের তোর কাছের বন্ধু। আসলে তোর বন্ধুই তোর পিঠে ছুড়ি মেরেছে। বাবামাকে আরিয়ান ভাইয়া মেরেছে তার প্রমান আদনান ভাইয়ার কাছ থেকে নিয়ে নিস। আর হ্যা আরিয়ান ভাইয়া কখনোই তোকে দেখতে পারতো না হিংসে করতো। সে চেয়েছিলো নিজে দলের নেতা হবে কিন্তু তোর কারনে পারেনি। সে আমায় পছন্দ করতো তুই রাজি হবিনা তাই দুইবার আমার উপর হামলা করায় কিন্তু তোকে ভয় দেখানোর জন্য আর তুই ভাবতি বিরোধী দলের কারসাজি। বিরোধী দলে আদনান ভাইয়ার বাবা ছিলো তাই তুই ভাবতি আদনান ভাইয়া আমার ক্ষতি করবে নারে ভাই আদনান ভাইয়া খুব ভালো মানুষ তার বাবাও ভালো। তোকে আরিয়ান ভাইয়া যা বলতো তুই তার কথা বিশ্বাস করে ফেলতি। শেষ ফলে কি হলো আমরা এতিম হলাম। তুই সব সময় আমার পাশে থাকতি। এমনকি আমার পেছনে লোক রেখে দিয়েছিলি যে আমার উপর নজর রাখতো আর তোকে খবর দিতো। আর তুই তুফানের গতিতে এসে পরতি। ভাই তোর রাজনীতি আমাকে ডুবিয়ে দিলো। আর অর্পা তোকে কি বলব ভালোবাসি তোরে কিন্তু তুইও ভাইয়ার সাথে থেকে আমার সাথে এমন করলি। ওইদিন বাথরুম থেকে তোর কথা শুনেছিলাম বলেছিলি ১ ঢিলে ৫ পাখি মারা। আমার ও আরহামের বিয়ে দেওয়ার কারন।
১. আরহামকে জেসিকার হাত থেকে বাচানো
২. হায়াতকে আদনানের হাত থেকে বাচানো।
৩. আদনান আরহামকে কিছু বলবে না তাই হায়াতকে আরহামের সাথে বিয়ে দেওয়া। কারন হলো আদনান ভাইয়ার বাবা হায়াতদের বাসায় বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলো।
৪.এমন সময় বিয়েটা দেওয়া যাতে কেউ অমত করতে না পারি।
৫. আরহাম হায়াতকে রক্ষা করবে। সাথে ওদের এক করা।

আরহাম ও জেসিকার সম্পর্ক ছিলো তা জেনেও যে আমাদের বিয়ে দিলি কেনো বল তোহ।
তোদের ধারনা যে কেমন আল্লাহ। তোরা ভেবেছিলি আমা আরহামের সাথে বিয়ে দিলে আদনান কিছু করবে না। তোরা ভেবেছিলি আদনান এর বাবা আমাকে মারার প্ল্যান করছে। যেহেতু দুইবার আমার উপর হামলা হয়েছিলো। আসলে কি বড় ভাই জানিস একবার আমার সাথে কথা বলাটা উচিত ছিলো আমাদেরকে জোর করেই তোরা বিয়ে করিয়েছিস। তোরা আমাদের ভালো চেয়েছিস। সত্যি কি আমাদের ভালো হয়েছি। এভাবে নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে আজ পরিস্থিতি কোথায় দাড় করালি। ইভান ভাই আর আরহাম আপনারা না সত্যি গাধা আপনারা আমার ভালো করতে করতে আমার হাল এমন করেছেন যে আমি নিজেই নিজেকে হারিয়ে গিয়েছি। যাইহোক আরহামকে কিছু বলিস না ভাই আরহামও পরিস্থিতির শিকার। জেসিকা ও আরিয়ান একে অপরের সাথে হাত মিলিয়ে আদনানের আম্মুকে মারার প্ল্যান করে আরহামকে ব্ল্যাক মেইল করতো। আর হ্যা সব প্রমান আমি আর আদনান ভাই কালেক্ট করেছি। আর কি লিখবো ভালো থাকিস তোরা। আর আমি জেনো খুব যলদি ফুপ্পি হয়ে যাই। আর অর্পা তোর মেয়ে হলে নাম রাখি অর্না কেমন। আর ইভান ভাই ঝগড়া কম করবি আমার বান্ধুবির সাথে। আর অর্পা আমার ভাইকে কিল ঘুষি কম দিস।

★★
প্রিয় ইশু ভাই আর প্রিসা
তোদের আর কি বলবো। প্রিসা তুই না সত্যি অনেক ভালো আমার কথা সব সময় শুনতি। আর হ্যা আমার ভাই এর খেয়াল রাখিস কিন্তু। তুই যে নতুন কেক বানিয়ে আমাকে খাইয়েছিলি অনেক টেস্টি ছিলো তখন বলিনি এখন বললাম। আর হ্যা সুন্দর মতো মিলে মিশে সংসার করবি। খবরদার আমার ভাইকে জালাবি না। আর ইশু ভাই প্রিসাকে একদম কম টাকা দিবি ও কিন্তু খালি খরচ করে বেরায়। আর ইশু ভাই আমি যে তোকে শার্ট দিয়েছি তোরা তিন ভাই একই রঙের শার্ট গুলো পড়ে আমার বার্থডে পালন করিস। আর হ্যা ভুলেও আমার সুন্দর করে ঘর মুছবি বলে দিলাম। আমার বান্ধুবিকে দিয়ে কাজ করাবি কম।

(প্রিসা কান্নায় ভেঙে পরলো। এসব কেনো পড়তে হচ্ছে ওদের। আরহামও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে আর চোখ মুছতেছে। এবার আনিশা নিলো)

★★
প্রিয় ইফাত ভাই ও আনিশা
ভাইয়া আমি তোকে খুব ভালো করে চিনি তুই একবার কিছু করার ইচ্ছা জাগলে তা করেই থাকিস তাহলে আজ কি হলো আনিশার বাবা তোর সাথে আনিশার বিয়ে দিতে মানা করায় তুই পেছনে ফিরে গেলি। তুই তোহ এমন না। আর আনিশা খবরদার উলটা পালটা কিছু করবি না। আর প্লিজ বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে পালিয়ে বিয়ে করিস না। শোন যত কষ্টই হোক না কেনো রাজি করিয়ে দুই পরিবার মিলে বিয়ে করবি। কেমন আর ভাই এটা তোকে করতেই হবে। জীবনে লড়াই করতে হয়।আর আমি জানি ইফাত ভাই আনিশার বাবাকে রাজি করিয়েই ছাড়বে। আর ইফাত ভাই খবদার আনিশাকে খাবার নিয়ে যদি কথা শুনাস তোহ একেবারে তেলাপোকার বাজি বানিয়ে ফেলবো বলে দিলাম।ভালো থাক তোরা

★★
প্রিয় আয়াত ও আরনাব ভাইয়া
তোমারা খুব যলদি বিয়েটা করে ফেল। আর আয়াত তুই না সত্যি অনেক ভালো। মায়ের পরে যদি কেউ আমার খেয়াল রেখেছে সেটা হলো তুই। আর শোন রাতে জোসনার মাকে দেখতে একা একা ছাদে চলে যাসনি। বাকিদেরও নিয়ে যাস। আর তোর হাতের বানানো আইসক্রিম খেয়ে আমি বেহুস ছিলাম। ইয়ে মানে ভালো হয়েছে এক কাজ করিস আইসক্রিমের দোকান দিয়ে দিস। আর যত টাকা কামাবি সব আমায় দিয়ে দিবি কখনো দেখা হলে।

{
প্রিসাঃকখনো দেখা হলে মানে(চোখ বেহে পানি পরছে)
আরহাম নিশ্চুপ করে আছে। সবার চোখে পানি। মন দিয়ে সব শনছে। এবার অর্পা পড়া শুরু করলো}

আরনাব ভাইয়া আমার বোনকে কখনো কষ্ট দিও না। আয়াত অনেক ভালো। আর শাশুড়ী আম্মু আয়াত আমার মতো নয় ও সব রান্না পারে। অনেকয়া গুছানো মেয়ে। চুপ থাকে আপনার মন এক তুড়ি বাজিয়ে জয় করে ফেলবে। আয়াত বোনু ভালো থাকিস আর দেরি না করে বিয়েটা করে ফেলিস। আর আরনাব ভাইয়া আপনারা জমজ ভাই মিলে মানুষকে বোকা বানাতে পারবেন এই কথাটা শেষ বারের মতো বললাম। হয়তো আর কখনো নাও বলতে পারি।

★★
প্রিয় বান্ধুবিরা
তোদের আমি অনেক ভালোবাসি। ছোট থেকে এক সাথে ছিলাম। আর অর্পা তোর সাথে আমাদের হাই স্কুলে দেখা। তোর বাড়ি দূরে হওয়ায় কম যাওয়া হতো। এক সাথে থাকা ফুসকা খাওয়া। মারামারি করা। দেয়ালের উপর দিয়ে হাটা কতো কি করেছি। আর স্কুলে যখন আমাদের মধ্যে একজনকে বাহিরে বের করে দেওয়া হতো বাকি সবাই ঝগড়া করে বের হওয়া পুরো ক্লাস ঘুরে বেরানো। আমাকে জোর করে কলেজে নিয়ে যাওয়া সব কিছু মিস করবো। ভালো থাকিস তোরা। আর মিলেমিশে থাকিস। বেশি বেশি করে ঝগড়া করিস। আর হ্যা অনেক অনেক অনেক বেশি মিস করবো। ভালো থাকি সুস্থ থাকিস আর হায়াতকে মনে রাখিস।

★★
আদনান ভাইয়া
আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দিবো। আপনি আমার অনেক উপকার করেছেন। জেসিকার হাত থেকে আরহামকে রক্ষা করার জন্য আমায় সাহায্য করেছেন তার জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ। আর হ্যা যলদি বিয়েটা করে ফেলেন আর কতো কুমার থাকবেন। আপনার আমাদের এলাকায় মেয়েরা লাইন ধরে আছে হাহাহহ। যাক আপনি যে যে প্রমান পেয়েছেন তা সবাইকে দেখাবেন কেমন। আর সবাইকে বলবেন জেসিকা ও আরিয়ানের ব্যাপারটা। আর জেসিকার বাবা মাকেও জানিয়ে দিয়েন জেসিকা কোথায়।

★★
এবার আসি আসল কথায়। সবাই ভাবছেন সবার জন্য এতো কিছু কেনো লিখলাম।কারন এটাই আমার শেষ কথা। আমি চলে যাচ্ছি বহুদূর। আমাদের বিচ্ছেদ হবে ভাবিনি কখনো। সবাইকে ছেড়ে চলে যাবো তাও ভাবিনি। আপনারা আরহামকে কিছু বলবেন না আর না ইভান অর্পাকে। আমি একটু খুশি থাকতে চাই নিজেকে নিয়ে। নিজেকে সময় দিতে চাই তাই সবার চোখের আড়াল হচ্ছি। কারো জন্য কোনো রাগ অভিমান নেই আমার। আমি চিন্তা মুক্ত হয়ে খোলা আকাশের পাখির মতো ঘুরে বেরাতে চাই নিজেকে ভালোবাসতে চাই। নিজের জন্য বাচতে চাই। তাই চলে যাচ্ছি বহুদূর এক অচেনা শহরে। যেখানে থাকবে না কোন প্রিয়জন যাকে হারানোর ভয়ে নিজের মনকে মাটি চাপা দিতে হয়। আর একটা কথা হারিয়ে যাচ্ছে নিজের ইচ্ছায়।আমাকে দয়া করে খুজবেন না কারন কি জানেন এমনিতে হারিয়ে গেলে তাকে খুজে পাওয়া যায় কিন্তু ইচ্ছাকৃত চাবে হারিয়ে গেলে তাকে খুজে পাওয়া অনেক বেশি কঠিন। যাক আমি চলেও যাওয়ার জন্য কেউ দায়ি নয় আমি যাচ্ছি নিজের জন্য। নিজেকে নিয়ে ঘুরে বেরানোর জন্য। নিজেকে সময় দেওয়ার জন্য। আমি কবে ফিরবো তা জানা নেই আমার। এভাবে হুট করে চলেও যাওয়াটা মেনে নিয়েন। আর আমারশেষ বলা কথা গুলো রাখবেন।ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন আর হায়াতকে ভুলে যান।

সবাই কাদছেন কেনো কাদছ জানা নেই তাদের। এভাবে হায়াত সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে ভাবতে পারছে না। কাকে কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না।

ইভান হঠাৎ করে আরহামের কলার চেপে ধরলো।
ইভানঃ বল আমার বোন কোথায়। কি করেছিস আমার বোনের সাথে।

আরহাম চুপ করে আছে কিন্তু ওর চোখ বেয়ে পানি পরছে। ওর যে অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। সবাই ইভানকে ছাড়িয়ে নিলো। ইভান আরহামকে জড়িয়ে ধরে কাদছে। আয়াত তোহ স্তব্ধ হয়ে আছে নিজের বোনের একি হলো। একবারও ওর মনের কথা বুঝতে পারলো না। এতো বেশি কষ্ট পেয়েছে যে এভাবে সবাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। ইফাত, ইশান কাদছে এমাত্র বোন এভাবে চলে গেলো। কোথায় খুজবে।

★★
বাসে এসে থামলো। বাস থেকে নেমে আসল হায়াত চলে এসেছে এক নতুন শহরে। হায়াত ভাবছে আজ সে স্বাধীন। সবাইকে ভালো থাকার জন্য চলে এসেছে বহুদূর এক অচেনা শহরে। সবাকে নিজের গুরুত্বটা বুঝিয়ে দিলো। হঠাৎ করে এভাবে বিচ্ছেদ হওয়াটা জরুরি ছিলো। নিজেকে ভালোবাসাটাও জরুরি। অবলা নারীর মতো অত্যাচার সহ্য করা উচিত নয়। নিজেকে খেলার পুতুল বানানো উচিত নয় অনেক সময় স্বার্থপর হওয়াটাও জরুরি এর ফলে কাছের মানুষগুলো আপনার গুরুত্ব বুঝবে।

চলবে
(জানি না কতোটা ক্লিয়ার করতে পেরেছি। এই পর্বে সব ক্লিয়ার করা আছে আপনাদের আর কনো কনফিউশান থাকলে জিজ্ঞেস করবেন। আজ প্লিজ দয়া করে গঠনমূল মন্তব্য করবেন। আপনাদের মন্তব্য ভালো করে লেখার আগ্রহ বাড়ে কেউ স্টিকার কমেন্ট না করে মতামত দিবেন ধন্যবাদ ?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here